৩০ নভেম্বর ২০২০

ফাহমিদা ইয়াসমিন ( ইংল্যান্ড )



আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো নারী

ধর্ষণ কোন প্রেম নয় অত্যাচার 

নারীর প্রতি জঘন্য নখের থাবা

জানোয়ারের কামনা লালসার সুতীব্র লোভ

কামুক কাপুরুষের নির্লজ্জ হাসি।


দেশের বুকে শত শত নারীর সম্ভ্রম 

হায়েনার থাবায় বিনষ্ট হচ্ছে প্রতিদিন 

নারীর আর্তচিৎকারে প্রকম্পিত হচ্ছে আকাশ

বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত বিলাস।


কে যাবে কার কাছে

যে নারী ধর্ষিত হলো 

যে নারী শরীরে রক্তাক্ত ক্ষত নিয়ে 

বিচারের মুখোমুখি দাঁড়ালো 

সেই নারীই বিমর্ষ মনে কাঁদতে কাঁদতে 

ফিরে আসে নিজের ঘরে।

বিচারহীন এই দেশে ঘৃণায় ক্ষোভে 

অতঃপর আত্মহত্যা করে 

নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে চলে যায়

ঘৃণার জগত ছেড়ে।


হায় নারী 

তোমার বিমর্ষ মুখ আমার বুকে বিদ্ধ করছে

অভিশাপের জ্বলন্ত আগুন

আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো 

আমার অক্ষমতায় আমিও দগ্ধ।

অর্কদীপ সরকার



প্রিয় তুমি

ব্যস্ত থাকতে না চেয়েও ব্যস্ত হয়ে যায় 

পেটের ক্ষুধা, রোগদুর্ভোগে টাকা ছাড়া কিছু নাই!! 

ইচ্ছে হলেও পারিনা তোমায় অনেক সময় দিতে

ভালো রাখতে খুঁজে ফিরি টাকা, গ্রীষ্ম কিংবা শীতে!!


অভিমানী জমা তোমার মনে কোথাও আমি অপরাধী

বাথরুমে স্নানের মাঝে অনেকখানি কাঁদি!! 

এই শহরের রঙিন সন্ধ্যে হয়না আমার দেখা 

মোম গলেপড়া মোমবাতিটা আমার মতোই একা!!   

                                                  

                                               ইতি

                                         তোমার আমি। 

               

   

মুন চক্রবর্তী



গোধূলি


রজনীগন্ধার সকাল দেখে ফিরেছ

দেখছ শুভ্রমনন কালো চুলে 

মুক্তর কারুকার্য ফুল রাশিতে 

প্রেমের হাত ধরে হেঁটেছে কত দীর্ঘকাল

নিঃশ্বাসে বিমল বাতাস অর্ঘ্য প্রেমিকের

তার ছোঁয়া নিয়ে দিনান্তে বিকাল দিয়েছ ভরে

গোধূলি হলুদ বর্ণে রাঙ্গিয়া গেছ শতশতাব্দী

পূর্ণ তোমার আসা দিনের শেষে সন্ধ্যা মেলায়

লীনা দাস



আদিমতা

সব সময় শান্ত থাক কি করে বলোতো?

রাগের কথাতেও গলা চড়াও না,

হ্যাঁ,ঠিকই গলাটা একটু কঠিন হয়ে যায় তোমার,

আচ্ছা,বলোতো আমার উপর খুব রাগ না তোমার?

কোন সময় কি ইচ্ছে করে তোমার,কথা না বলার?


জানি তো,ভালবাস আমায়,

চোখ বুজে আমিও বিশ্বাস করি-

তোমায়,

আর এটাও জানি পৃথিবী রসাতলে

চলে গেলেও

তুমি যাবে না ছেড়ে আমায়।


তোমাকে যে এতো বকি,তোমার

রাগ হয় আমার পরে?

আহা!তুমি বকোনা বুঝি আমায়?

শোধবোধ তবে।


সামনের শ্রাবনে তুমি আর আমি

হাত ধরাধরি করে ভিজবই---

কথা নিয়ে রাখলাম তোমার কিন্তু,

কোনো অজুহাত?শুনব না যেন,

অভিমানিনী আমি,সেতো তুমি  জানই,


ঘনঘোর বরষার শ্রাবনী রাতে,

আমি চাই তোমার ঠোঁটের উষ্ণতা,

বুকের নিবিড় ওম আর....আর

আদিম মানব মানবী হয়ে যেতে----

ফটিক চৌধুরী



বিষম বস্তু

সমাপ্তি ঘোষণার আগে অনেকেই চলে যায়

আমি যেতে গিয়েও যেতে পারলাম কই ?

টানছে আমাকে কেউ টানছে

                              টেনে বসিয়ে দিচ্ছে

মায়া ? নাকি কোন প্রচ্ছায়া এসে

             গাছের নিচে বসিয়ে দিতে চায় !


আমরা ফিরে আসতে চাই কিসের টানে ?

শেকড়ের ? রক্তের ? নাকি ভালবাসার ?

আসলে ভালবাসাই অটুট রাখে সম্পর্ক।

ভালবাসা এমনই এক বিষম বস্তু 

হাসনা হেনা



তুমি এসো আমার ঘরে

আমার ঘরে চাঁদের আলোয় আলোকিত হয়ে এসো,,, 

বৃষ্টির মেঘ হয়ে এসো,, আকাশের নীল হয়ে এসো,,, 

সূর্যের কিরন হয়ে এসো,  সবুজের সমারোহ হয়ে এসো,, বাগানের ফুল হয়ে এসো,, সাগরের ঢেউ হয়ে এসো,, 

নদীর তীরে কাশফুল হয়ে এসো,, একমুঠো রুদ্র হয়ে এসো,, তুমি  আসলেই ,,চাঁদের আলোয়  আলোকিত হয়ে জ্বোস্নায় ভেসে যাবো,, দক্ষিণের জানালায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ হাসনা হেনা এবং  মাধবী লতা ফুলের ঘ্রাণ নেবো,,, নীল অপরাজিতা হেসে উঠবে  আরেকটি কবিতা লিখবো ইতিহাসের এবং  কট্টকময় জীবনের,, তোমাকে নিয়ে  রচনা হবে  শত শত কবিতা,  গল্প ,  স্টাটাস ,  ,, জীবনের শেষ অদ্ভুত  দর্শন হবে,,, গন্ধরাজ ফুলগুলো  তাদের  আশ্চর্য জাদুকরী ঘ্রাণ বিলিয়ে দিবে আমাদের,, বর্ষার অঝোর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দোলন চাপা ফুল গুলো আমাদের দিকে চেয়ে হাসবে,  কাঁদবে,, ভেজা ভেজা রঙন ফুল গুলো লাল রঙে রাঙিয়ে দেবে তোমাকে।

আজাদ রহমান



স্বপ্ন চাষাবাদ

জানি চলে যাবো, 

তবুও স্বপ্ন বুনে যাবো,

অন্তহীন আকাশে,

উড়ে চলা

দূরন্ত ঈগলের ডানায়।

সাতরে খুজে নিবো,

নিঃসীম নভে, 

বাতাসে তরঙ্গ ছুয়ে যাওয়া,

পালকের ভাজে ভাজে,

অপলক চোখে,

শিকারী ক্ষীপ্রতায় 

আমার স্বপ্ন হাজার।

দিন শেষে সন্ধ্যায়, 

আমিও পৌছে যাবো,

কোন এক বুড়ো বটের 

ডালে,

ভালোবাসার ছোট্ট নীড়ে।

আঁধার এর বুক ছুয়ে,

অবসাদ ক্লান্তি মুছুে নিবো,

খুজে নিবো, 

আগামীর স্বপ্ন বুননের

অন্য আকাশ।

মাকসুদুল আলম



বেদনার অসুখ

এখনো তো রাত হয়, এখানে দিন আসে,

তুমি সব বেদনাও ভুলে যাও, সুখ আষ্টেপৃষ্ঠে।

নিজেকে নিয়ে আমার ভাবার সময় কই?

তবুও তুমি ভালো থেকো সাথে তোমার সবই, 

আমি শুধু মোমবাতির মতোন পুড়ে পুড়ে ক্ষয় হবেই!

অরুণা দত্ত



তুমিহীনা ক্যানভাস বে-রঙিন

তুমি নেই তাই 

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন 

তুমি নেই তাই 

ফুলেরা মুর্ছিত 


তুমি নেই তাই

দীর্ঘ এ রাত 

তুমি নেই তাই 

বিবর্ণ রোজ ভোর 


তুমি নেই তাই 

বেহাল তারের সুর,

তুমি নেই তাই

বিরাট বনভূমি খরায় 


তুমি নেই তাই

ক্যানভাস রঙহীন 

তুমি নেই তাই চাঁদ পরবাসী  


তুমি নেই তাই 

বলা হয় না ....-ভালোবাসি

মেহেদি হাসান


তোদমার আমার অনুবাদ

মেঘের অনুবাদ করলে দাঁড়ায় বৃষ্টি।

রমনীর অনুবাদ করলে দাঁড়ায় "মা"।


পুরুষের অনুবাদ করলে দাঁড়ায় "বাবা"।

মানুষের অনুবাদ করলে দাঁড়ায় "লাশ"।


তোমার আমার অনুবাদ বড়ই জঘন্য!


তোমার আমার অনুবাদ মানে দূরত্ব,

তোমার আমার অনুবাদ মানে অন্ধকার অরণ্য।

যেখানে তুমি আমি নিখোঁজ!


তবু রোজ তোমাকে এক নৌকা মেঘ পাঠাতে ইচ্ছা করে,

মেঘ নিংড়িয়ে যে বৃষ্টি পাবে,

সেই বৃষ্টিতে একবার ভিজে নিয়ো একাএকা।


বৃষ্টিতে ভিজলে তোমাকে দারুন লাগে বর্ষা।

২৯ নভেম্বর ২০২০

সানি সরকার




তোমার চোখ  


যেখানে আগুন ও জল 

যেখানে হরিণের নিরীহ চলন

তোমার চোখ, সেখানেই

পাথরে পাথর ঘষে, আর 

প্রেমিক থেকে বাঘিনী হয়ে যায়

Chaitali Dey



OneQuestion


 I was never a writer and

 I don't aspire to be one either               

I was never a good reader

 and 

I don't know if I will ever be one..... 


but now

 I have been much more !


...... Everyday I woke up 

I tried to find reasons to live....

Every night , when I slept

 I tried to find reasons not to die .....


Every moment

I tried to find reasons to hope

 dream,n love.... But I never found them....

 until I met you !



...... I saw chaos, confusion

 n fear all around me

But not within me, after I met you !



...... Time decides our fate, our journey

 And when time changes

Everything changes 

Everything !



Sometimes for worse 

sometimes for better 

And sometimes for the best ....

I never believed that 

Until you happened to me !



....... You do not start, nor do not ever end

You are constant, yet ever changing

You are everywhere and yet just with me



You are my creator or my creation .....

I " Question " myself !! 

প্রেমাংশু শ্রাবণ কবির


কবিতার ফসল

চাঁদের আলোর উদ্ভাসে

ঠিকরে পড়ে সৃজনের পলি।


আমিতো কৃষক পুত্র 

লাঙলের তীক্ষ্ণতায় কাদাভূমি চষে চষে তুলে আনি

কবিতার ফসল।


কবির মত শব্দের শরীরে লিখি আগ্নেয়াস্ত্র। 


বউ হেঁটে যাই 

দুধরঙ ধরে ধানফুলে

বউয়ের নরম হাতে বাজে কাকনের মহিমা।


এ সুখের দ্বিঘাত সাম্যতায়

সুখবীজ সমাধান মন্ত্রে আসে ওম।

রঞ্জনা ভট্টাচার্য



 ত্রিধারা

ছিন্নমস্তার কাছে রক্তের পিপাসার কথা বলেছি, 

নিজেকে ছিন্ন করে বসিয়েছি কেদারায়, পেয়ালা 

পিরিচে ত্রিধারা, জাগ্রত ইনফার্নো কে শুনিয়েছি

উর্বরতার কথা, এখনও পেঁচিয়ে থাকা ঠাণ্ডা যন্ত্রণা

নিজেকে পান করে উষ্ণ হতে বলে, উষ্ণতা ছাড়া

কাম ও রতি শস্যদানা ছড়াবে না, তোমার খামার বাড়িতে

ওম রেখে এসেছি, রেখে এসেছি বীজ ভর্তি মাটির কলসি, 

 

আমার মস্তিষ্কের জায়মান কোষে ভরে দিও

মাটির ঘ্রাণ, সমস্ত রক্ত মাটি হয়ে যাক, আমার

চূর্ণ হাড় চূর্ণী নদী, তুমি কিছু বাতাস ভরে রেখো

খড়ের গাদায়, যিশু এসে কখনো যদি শুতে চান

জন্ম নেবার অছিলায়! 

এবার তাঁর শরীরে পেরেক পোঁতার আগেই আমি

ছিন্ন মস্তা হবো, তোমরা দেখে নিও-

মাহমুদুন্নবী জ্যোতি


সময় ও জীবন

তীব্র বেগে ছুটে চলা ধুমকেতুর মতোই

জীবন ছুটে চলে চিহ্নহীন সময়ের বাঁকে

শান্ত সমীরের বৈচিত্রময় প্রবাহের মতোই

জীবনকে ছুঁয়ে যায় আনন্দ-বেদনার ঢেউ

বাড়ন্ত দেহের অন্তরীক্ষে প্রষ্ফ‚টিত হয় 

সুবাসিত ফুলের সমাহার। আহ্লাদিত মঞ্জুরীতে

প্রেমার্ত অলির গুঞ্জণে বিমোহিত হয় হৃদয়

কখনো আবার আচমকা অজানা অচেনা

ঘূর্ণাবতে জীবনকে করে তোলে অস্তিত্বহীন

সাগরের মিলনে ধাবমান নদীর স্রোতের মতো

জীবনের মিলন ক্ষণ আর গন্তব্য সুনির্দিষ্ট

স্বচ্ছ জলের ন্যায় গতিপথে জীবন অনর্থক

যদি না জীবনকে ভরিয়ে দেয়া যায় শুদ্ধতার আবিরে

তাহমিনা শিল্পী


প্রতিজ্ঞাপত্র 

কথা দিচ্ছি- 

তোমাকে কোন গন্ধম খেতে দেবো না 

আমাকে প্রকম্পিত করতে বলবো না 

তোমার প্রণয়ের বৃষ্টিতে ভিজিয়ে ভিজিয়ে 

আমাকে সম্মোহিত করতেও বলবো না। 


আরেকবার এসো প্রিয় 

আমরা আবার আদিম সেই প্রাণী হয়ে যাবো 

আমরা কেবল জলের,বাতাসের গান শুনে যাবো 

আমরা প্রকৃতি হয়ে যাবো। 


বিগত পাপ মোচন করে 

আমাদের অভিশপ্ত সন্তানদের জীবন 

পরিশুদ্ধ করবো। 

জি এম কাউসার আলী‘ ( অষ্ট্রেলিয়া )



আসো ফিরে আবার 

এখনো মাঝ রাতে ঘুম ভাঙে 

তোমার শিহরনের ছত্রছায়ায়,

এখনো হাছনাহেনা  সুবাস ছড়ায়

তোমাকে বিমোহিত করার আশায়,

এখনো চাঁদ তাঁরা লুকোচুরি

করে তোমার রূপের ভয়ে !

এখনো জোনাকিরা জ্বলে নেভে

তোমার রূপ আলো ধার নেবে বলে !

এখনো ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকে থেমে থেমে

তোমাকে গান শোনাবে বলে ।

এখনো আকাশে ধুমকেতু ছুটে চলে

তোমাকে চমকে দেবে বলে !

এখনো পুর্ণিমা রাত জোৎস্না ছড়ায়

তুমি আমি জোৎস্না স্নাত হবো বলে ।

এখনো আকাশে মেঘ জমে 

বৃষ্টি ঝরবে বলে অবিরাম ধারায়,

দুজনে ভিজবো বলে পরম মমতায়;

এখনো আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় !!

ভয়ে তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরবে বলে ;

এখনো চেয়ে থাকি তোমার আগমনের আশায়!

এমনি করে আবার ভাসবো মোরা ভালোবাসায়।

আসোনা আবার তুমি যেকোন বাহানায়?

শ্রাবণের এই হরদম বর্ষনমুখর সন্ধ্যায়?

আসো না সপ্তর্ষীর পরিপূর্ণ চাঁদ হয়ে 

আমার হৃদয়ে বিকিরণ ছড়াবে বলে,

শবের তনুবল্লরী হয়ে সারসের কপটতায়!

যদি আসো তুমি বিষাদে হরিষ নামবে!

সজল চোখের গন্ড দিয়ে অশ্রু হয়ে।

পাঁজরের ভিতর বইবে বসন্তের বারতার পেলবতা ! 

আসো তুমি আবার নতুন রূপে চুষে নিতে ?

হৃদয়ের যত ভালোবাসার রঙিন স্বাদ পেতে ?

রেবেকা সুলতানা



মেয়ে মানেই 

ভালো আছি থাকার নাটক শতো

কষ্ট চেপে রেখে মিষ্টি  করে হাসা,

নিজেকে জ্বালিয়ে  অন্য কে আলোকিত করা,

নিজের ইচ্ছে মাটি চাপা দিয়ে 

অন্যের ইচ্ছে তেই নিজের  জীবন রাঙ্গীয়ে নেয়া,

জন্মের আগেই দূনিয়ার আলো

না দেখানোর নিষেধাজ্ঞা  আরোপ, 

নিজের সাজানো ঘর ছেড়ে

অজানা অচেনা ঘরকে আপন করে নেয়া।

অন্যের স্বাধ বুঝতে গিয়ে নিজের স্বাধ নেয়া বারন ,

বংশের বাতী নিভে যাবার করণ, 

যৌতুকের চিন্তা বাবার ঘাড়ে

১৮ হলেই ঘরের বোঝা স্বপ্ন দেখা   বারন

কল্পনার  জগতে হাবুডুবু খাওয়া 

বাড়ী আছে হয় বাবার না হয়  শশুরের

বৃদ্ধ  বয়সে ছেলের 

নিজস্ব বলে কিছু নেই।

মেয়ে মানেই পুত্র  সন্তান 

জন্মানোর বায়োমেট্রিক মেশিন।

নিজের ঘর থেকে  চিন্তাধারা 

বদলালে বদলে যাবে সমাজ।

পুত্র  সন্তান যদি একটি বংশের বাতি হয় কন্যা সন্তান কেন             দুটি বংশের বাতি  নয়??

নূরুজ্জামান হালিম



এক এককো দুই


আমিতে আমিতে কত লুকোচুরি 

ভিতরে বাহিরে বিস্তর কাড়াকাড়ি 

বাহিরের আমি নিরন্তর বদলায়

দিন গুণে গুণে সমাজ সামলায়।

আপনার  আমি বন্দি কঠিন বৃত্তে

স্বপ্নের দহনে মরমে মরে চিত্তে।

দুইকে নিয়ে তবুও চলতে হয়

নিজের কাছে নিজের পরাজয়।

মমতা রায় চৌধুরী


তুমি আমি মিলে হাঁটছিলাম

তুমি আমি মিলে হাঁটছিলাম

নির্জন প্রকৃতির কোল ধরে।

দু চোখে রঙিন স্বপ্ন এঁকে

প্রজাপতির ডানা মেলে।

ঘর বাঁধবো আর কি সব আছে

মনের কল্পনায় সেজে।

রামধনুর সাত রং মেখে

রঙিন হয়ে উঠব দুজনে যে।

দুজনের বাহুবন্ধনের ডোরে

একটু কাছাকাছি এসেছি সবে।

হঠাৎ ই চিৎকারে ফিকে হয়ে গেল 

রঙিন হয়ে ওঠার স্বপ্নগুলো যে।

সব কিছু বোঝার আগেই

এক কিশোরীর ওপর ঝাঁপিয়ে

পরলো নরখাদকের দল যে।

অসহায় নারীর চিৎকারে

আমরা হয়েছি দিশেহারা যে।

তখন দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে

ছুটে গেছি সেখানে।

এক পুরুষ পৌরুষত্ব দেখাতে

আমার স্বপ্ন হলো রক্তাক্ত।

অন্য জান্তব পুরুষরা

পৌরুষত্বে ফলালো দুটি নারীকে

প্রবৃত্তির সুখে নির্যাতিত করে।

তুমি আমি হাঁটছিলাম

একে অপরের ঢাল হয়ে।

তুমি আমি হাঁটছিলাম

জন্ম-জন্মান্তরে একসাথে

থাকবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে।

স্বপ্ন ,স্বপ্ন রয়েই গেল

কালিমালিপ্ত করে প্রকৃতিকে।

দু -চোখের রঙিন স্বপ্ন ঝলসে গেল

জান্তব মানুষ পশুর আক্রমণে।

রামধনুর সাত রং গায়ে  

না মাখতেই, বলি হলাম লালরঙে।

তুমি আমি হাঁটছিলাম

নির্জন প্রকৃতির কোল ধরে।

২৮ নভেম্বর ২০২০

জাফর রেজা



পৃথিবীর ভিড়ে 

কোনদিন যদি তার সাথে

দেখা হয় আবার 

পৃথিবীর পথে,

হয়তো তখন নীল হারিয়ে যাবে

আকাশকে সিঁদুর পরিয়ে

ক্লান্ত পাখিরা

ফিরে আসবে পৃথিবীতে।

জেগে উঠবে নক্ষত্র

খণ্ডিত চাঁদের ম্লান আলোয়

সেই  নারী জানতে চাইবে

কেমন ছিলে, কেমন আছো ?

মৃদু হেসে বলবো,অবশেষে ফিরে এলে , 

তোমাকে হারাইনি তবে

পৃথিবীর ভিড়ে ?

‌মোঃ হা‌বিবুর রহমান মুক্তগদ্যে তুলে ধরলেন মন-মানুষে কথা



অধরা মন

মন জা‌নে না ম‌নের খবর, কথাটা ঠিক আ‌ছে কিন্তু কিছু ব্যাপা‌রে মনটা আবার বেশ এক‌নিষ্ঠভা‌বেই কাজ ক‌রে আর মন ঠিকই তার পছন্দসই জি‌নিস‌টি, ম‌নের মানুষ‌টি বা একান্ত প্রিয় বস্তু‌টি বাছাই ক'র‌তে কিন্তু একদমই ভুল ক‌রে না।


মানু‌ষের দু‌'টি মন থা‌কে। এক‌টি প‌জি‌টিভ মন আর অপর‌টি নে‌গে‌টিভ মন। প‌জে‌টিভ মন মানু‌ষকে ভাল প‌থে চালায় আর নে‌গে‌টিভধর্মী মন‌টি মানুষকে মন্দ বা খারাপ প‌থে প‌রিচালনা ক‌রে থা‌কে। 


খারাপ ও ভাল ম‌ন্দের ঠেলা‌ঠে‌লি বা দ্ব‌ন্দ্ব চ‌লে রাত‌-দিন অহ‌র্নিশ। ‌শেষ‌মেশ এ‌দের জয়-পরাজয় নির্ভর ক‌'রে স‌র্বোপরী মানু‌ষের ইচ্ছাশ‌ক্তি বা 'Will Power' এর উপর। 


খারাপ মন‌টি কোনক্র‌মে ভাল ম‌নের উপর প্রভাব বিস্তার ক'র‌তে পার‌লেই কিন্তু ভাল মানুষ‌টি ‌নি‌জেই নি‌জের কাছে নি‌মি‌ষেই হে‌রে যে‌য়ে হ‌'য়ে যায় মুহূ‌র্তেই যেন একদম কু‌পোকাত বা ধরাশায়ী । 


ভাল-ম‌ন্দের এমন দোলাচা‌লে তাই মানুষ জয়ী হ‌'তে পার‌লেই কিন্তু তাঁরা একটা বেশ সন্মানজনক স্থা‌নে পৌঁছা‌তে পা‌রে আর এ কা‌জে যারা ব্যর্থ হয় তারাই প‌রিণা‌মে কিন্তু আস্তাকু‌ড়েই নি‌ক্ষিপ্ত হয়।

মতিয়ার মিল্টন



প্রথম বেলার রৌদ্র

প্রথম বেলার রৌদ্রের মত পথ চলার দৃপ্ত প্রত্যয়ে--অনেকটা পথ হেঁটে এসেছি।

পড়ন্ত বিকেলে,ঢলে পড়া সূর্যের মত পাটে বসে আয়ুস্কাল হাতছানি দেয়;

যেন জীবন থমকে যাবে গোধূলি বেলায়!


শেষ বিকেলের রৌদ্র ওম হয়ে মিশে থাকে রাতের শরীরে,

তাই সকালে সোনা হয়ে ঝরে।


অথচ জীবন থমকে যায় ট্র্যাফিক-জ্যামে,

রৌদ্রের মত নতুন করে যায় না বারবার শুরু করা।


গোধূলি লগ্নে এসে সোনালী অতীতও ফিকে হয়ে যায়।

তবু অপেক্ষায় থাকি --

রাত্রি সাগর পাড়ি দিয়ে প্রথম বেলার রৌদ্র হতে।


কিন্ত জীবন ডুব দেয় একদিন সাগরের বুকে, 

সূর্যের মতো ফিরে আসে না আর সকাল হয়ে।

আইরিন মণীষা


  প্রতীক্ষা

সেদিন তুমি এসেছিলে

ক্ষনিকের তরে ওগো তুমি,

কেন যে আমায় ভালো বেসেছিলে

এখনো প্রতীক্ষায় আছি আমি।। 


ভালোবেসে তুমি বলেছিলে

যাবে না তুমি আমাকে ছেড়ে,

প্রতীজ্ঞাবদ্ধ তুমি বেশ কেঁদেছিলে

নিয়েছিলে তুমি আমারি মন কেড়ে। 


যাবার বেলায় তুমি লিখেছিলে

আসবে তুমি ফিরে আমার জীবনে, 

আমার ক্রন্দনে তুমি খুব হেসেছিলে

আর বলেছিলে তুমি ফিরবে সৃজনে।


বিদায় বেলায় বলেছিলে

আজীবন তুমি রাখবে মোরে ধরে,

সত্যিই কি যে তুমি ভেবেছিলে 

তোমারি বিহনে আমি থাকব মরে পড়ে।

রেহানা বীথি



কমলা পাহাড়ের আগুন ও নক্ষত্র দৌড়

তারপর খুলে রাখলাম জলের বোতল 

আর চেয়ে দেখলাম 

কোনও কোনও হারিয়ে যাওয়া কিংবা আবির্ভাব 

যখন নক্ষত্রদের একান্ত দৌড়ের ভেতর 

আমরা তো কিংবদন্তি ভ্রমণ পিপাসু 

আমরা তখন তারাদের সাথে হাত মেলাচ্ছি... 

ক্যানভাসে এঁকে নিতে চাইছি  অর্ধসমাপ্ত সেই মুখচ্ছবি 

জলের বোতল থেকে বেরিয়ে আসছে বুদবুদ 

একটি শলাকা এবং বারুদের গন্ধে 

পুড়ে ছাই হতে হতে একটি কমলা পাহাড় 

নিজস্ব আগুন জ্বেলে দিচ্ছে সপ্তাহের জমানো স্তূপে

শ্যামল রায়



কবিতার জন্য প্রহর গুনছি 

কবিতার নাম আর কতক্ষণ

কবিতা তুমি কি করছো ---

খেয়েছো?

সব কাজ সেরে ফেলেছো?

আর কতক্ষণ!

আমাকে অপেক্ষা করতে হবে?

কবিতা তোমার সাজগোজ হয়েছে

আকাশী রঙের শাড়িটা

ঠোটে লিপিস্টিক

কপালে টিপ

এসবের কাজ

শেষ হয়েছে কবিতা!

আর কতক্ষণ

আমি তো অপেক্ষা করছি

অনুভবে অনুভূতিতে  প্রহর গুনছি

দু ঠোঁট এগোচ্ছে বারবার

ভালোবাসার কাছাকাছি

সম্মতি চাইতে----

কবিতা তুমি কোথায়?

তোমার চিঠিটা এখনো খামে আছে

মন বলছে ,চিঠির মধ্যে

 তোমার অনেক আদর সযত্নে রাখা

এখন শুধু অপেক্ষা রিংটোন এর

খুঁজি বৃষ্টির জন্য

উষ্ণতায় তোমার হাত দুটি ।

আঙ্গুলগুলোয় ছুয়ে দেখতাম

আর কতক্ষণ।

তোমার জন্য বালিশের কাছে

 রেখে দিয়েছি, গোলাপ

একটি রিংটোন পেলে

শরীরের ভেতর অনুরণন হতো

তাই প্রহর গুনছি

 অপেক্ষার পর অপেক্ষায়।

অলোক দাস এর আতিত জড়ানো মুক্তগদ্য



জেনারেশন 

অপূর্ব বিশ্লেষণ, এতো আমার জীবনের কথা, হ্যাঁ, কলেজ পাশ কোরে হটাৎ প্রফেসর দেখা দিলে রাস্তায়, সিগারেট অমনি মুখ থেকে পড়ে যেতো, ছেলে মেয়ে একসঙ্গে গুলি খেলেছি, ভাইবোন হারিকেনের আলোয় চিৎকার কোরে পড়াশুনা করেছি, পাঠশালাতে মাস্টারমশাই বেত দিয়ে মারতো যদি অঙ্ক ভুল হতো, বাড়ি এসে কিছুই বলতাম না, পাড়ার দাদারা কিছু অন্যায় করলে মারতো, বাড়িতে বলতাম না, বেশি সময় মাঠে খেলতাম, আজ আর মাঠটা নেই, দশতলা বাড়ি হোয়ে গেছে, পুকুরে ছিপ ফেলতাম, অনেক মাছ ধরতাম, পুকুরের মালিক এলে, জামা প্যান্ট সমেত পুকুরে জাপ মারতাম, ভোর চারটে উঠে দুই বন্ধু মিলে আম চুরি করতাম, মালিক বলতো কে? আমরা বলতাম তোর বাবারে, মালিক ভয়ে আলো নিভিয়ে দিতো, সেই গাছ ও মালিক ও নেই, বাড়ি হয়ে গেছে, পুকুরে বিনয় ও আমি দু ঘন্টা চান করতাম (বিনয় পাঁজা, মোহনবাগান ক্লাবের স্ট্রাইকার ছিলো ), বাড়ির পাশে জঙ্গল ছিলো, শিয়াল ডাকতো, স্কুল ছুটি দেবে না, এ কখনো হয়, সামান্য বৃষ্টি, সবাই মিলে সব বেঞ্চি জলে ভিজিয়ে দিতাম, হেডমাস্টার আসতো, মালি ঘন্টা বাজিয়ে দিতো, ছুটি ছুটি, আমাকে ভাড়া কোরে ক্রিকেট খেলতে নিয়ে যেতো অনেক ক্লাব, বন্ধুরা বাড়ি আসতো, চ আজ খেলা আছে, আমি হয়তো মাদুর পেতে পড়ছি, মাকে বল, মাসিমা আজ খেলা আছে, মাকে ভীষণ ভয় পেতাম, চার /পাঁচটা উইকেট বাঁধা ছিলো, কতো প্রাইজ, আজও আছে, হ্যাঁ, আমরাই শেষ জেনারেশন, বয়স্ক বৃদ্ধ, বৃদ্ধাদের সম্মান করেছি, আমরাই রেডিওতে BBC খবর ও গান শুনেছি, এখন আর ভেসে আসে না, আকাশবাণী, খবর বলছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, নমস্কার,

মাহমুদা রহমান ( যুক্তরাষ্ট্র )



ফেরিওয়ালা 

আমি ভালোবাসার ফেরিওয়াল

 নই ,

আপন মনে মনের কথা কই !

মন যে এক উদাসীন গায়ক পাখী ,

হৃদয়ের ধূলা মাখামাখি কাদা  

মুখ লুকিয়ে কাঁদি ! 

গাছের মত ছায়া আমার নাই ,

রৌদ্রজলে কাতর আমি তাই ,

সবার দুঃখে ভারাক্রান্ত হই 

জন্ম কেনো বিষন্নতা নিজের 

মনে সই।

আব্দুল কাইয়ুম (প্রিয়ম)


  ছ্যাঁচড়া যাযাবর

যার জন্যে বাঁধি ঘর

সেই আমারে করে পর।


হাতের তালুর উল্টো পিঠে মুঁছি চোঁখের জল

জলের মূল্য দিবে দেখি কেউ নাই এ ধরাতল!


কেঁটে ফেলা বৃৃক্ষের যে ঘোড়া 

অনেক কষ্টের পর

 ফের সেও দেয় জন্ম  ডাল দুই জোড়া।


ছোট গল্পের মতো শেষে রয় সে রেশ

সেখান থেকেই শুরু বেশ

ভাঙনে ভাঙনে ফের মনটা ভাঙাচোরা।


তার বহু বছরের ও পর

আসলো যে মেঘ বালিকা

প্রযত্নে দিলো মনোবল আমি তো আছি

নিজে যে করে নিলো ঘর

ভাবা যায় অতঃপর

খেলারত সেও করিলে শেষে পর।


মুখোশ পরিহিত  

নকল মানুষ দেখেছি জীবনভর


আমাকে রাত জানে ভালো আপন

জানে পথের ধুলাবালি অলিগলি তেপান্তর -


জানে আকাশের তারা

 মিটিমিটি জ্বলা নেভা জোনাকিরা

জানে শুল্কপক্ষের চাঁদের আলো ছু-মন্তর 

 আমি সব হারিয়ে  নিঃস্ব;  এক ছ্যাঁচড়া যাযা

প্রবীর বেপারী




 গোধূলী বিকাল

গোধূলী বিকালে বসেছি নির্জনে 

মিষ্টি রোধ বিদায় জানালো

আঁধার আসলো নেমে।


হঠাৎ দৃষ্টিতে সম্মুখে তাকাতে 

দেখতে পাই এক প্রতিচ্ছবি,

ধূসর কালো কেশে 

দাড়িয়েছে সকাশে

অধরে মৃদু হাসি।


হস্তে প্রদীপ পড়নে শাড়ী

মনে হয় যেন সে প্রেমের রাই কিশোরী।

কি অপরুপ দেখিতে সেই রুপ!

ভুলিতে নাহি কোনো কালে,

সে প্রেমের পূজারী দীন ভিখারী

আমি বন্দী তার মায়াজালে।

২৭ নভেম্বর ২০২০

পরাণ মাঝি



বাকি 


আজ আবার নতুন করে বর্ণমালা শেখালে 

সত্যি তো ডিগবাজি খায় লি - কার


বোঝা গুলো নেমে গেল ফাঁকা মাঠের দিকে


সঞ্চয় বড় সম্পদ 

আর তাকে রক্ষা করা আরো বিপদ 


আরো আরো অনেক পথ বাকি

আরো অনেক অনেক হাঁটা বাকি 


ভাবনা গুলো খুঁটে খায় জীবনের পাখি 

পথ তো তার মতো - সে কখনো সোজা হয় নাকি ?

রাহুল ঘোষ এর মুক্তগদ্য পড়লেই মন কেমনের গল্পঃ (পড়তেই হবে)



পুরোনো খসড়া থেকে

*১*.

রোগশয্যায় উবু হয়ে মেঘ ও মনকেমন লিখতে গিয়ে মনে পড়লো, এই লেখা দেওয়ালে লাগালেই আবার ঠাট্টার ঝড় উঠবে! তোমার সঙ্গে সেই গজব তামাশায় যোগ দেবে কাকেশ্বর কুচকুচে। অট্টহাসে মাতবে পুরোনো এবং নতুন হরিদাস পাল। অতএব আমি একটা রাগী লেখা লিখবো! কিন্তু রাগী লেখাটার জন্য একটা নিশ্ছিদ্র রাত চাই। আমি এখন সেই রাতের সন্ধানী।


বিনিদ্র রাতেরও নিজস্ব উদযাপন থাকে। রাতের বুক চিরে ধাত্রীশহর যাওয়ার ট্রেন থেকে শুধু সেই উদযাপন দেখবো বলে আমি জায়গা পাল্টে একটা সাইড-লোয়ার বার্থে চলে যাই। রাতের প্রকৃতি খুব মন দিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, কী এক আশ্চর্য খেলা! বুঝে গেলে আফশোস হতে পারে, কতটা সময় আমরা ঘুমিয়ে নষ্ট করি! হু-হু হাওয়া আর একের পর এক জনহীন স্টেশন পেরোতে-পেরোতে মনে পড়লো, কয়েকদিন আগেই একটা কবিতা-বই রিভিউ করলাম। নিরালা জংশন। বইটাও যদি নামটার মতো সুন্দর হতো! কিন্তু নাম তো বইয়ের মলাট। নাঃ, ঠিক বললাম না! নাম আসলে বইয়ের মুখের মলাট।


মুখের প্রসঙ্গে মনে পড়ে, নিজের 'মায়া-মায়া' মুখটাকে খুব অপছন্দ হচ্ছে ইদানীং! নার্সিসাস নই, কিন্তু মুখটাকে বেশ পছন্দই করতাম। কিন্তু এখন থেকে আমি নিজের একটা চালাক-চতুর মুখ রাখতে চাই। চশমার আড়ালে চাই মানানসই দুটো ধূর্ত চোখ। ওদের যেরকম আছে। ওটাই এখন দস্তুর। অর্ডার অফ দ্য ডে!


আজকাল অনেকেই বলে, দেওয়ালে লেখা লাগাতে নেই। এরকম ভুলভাল লিখলেও, না! লেখা চুরি হয়ে যায়। এমনকি বাক্যও! এমনকি শব্দও! এমনকি ভাবনাও! আমারও তাই মনে হয়। কিন্তু এটা আর লেখা হলো কই! বড়োজোর খসড়া। লেখা আর কাটা। কাটা আর লেখা। শেষমেশ শুধুই কাটা আর কাটা! কুচিকুচি করে। এইসব কাটাকুটি চুরি গেলে, যাক। যানে ভি দো ইয়ারোঁ! রাগী লেখাটা না-হয় পরে একদিন লিখবো। ওই কথাই রইলো তাহলে। চলো, ডান!


*২*.

ঘড়িতে তিনটে-চল্লিশ মানে 'বিফোর টাইম'। রাতের অন্ধকার চিরে ঝলমলে প্ল্যাটফর্মে রেখে দিয়ে গেল ট্রেন। আরও যারা নেমেছিল, তারা সব গেল কোথায়! একটু আগেভাগেই এসে পড়েছি, ধাত্রীশহর। এখনই ঘরের দিকে যাওয়ার কোনো মানে হয়! আমি বরং আরও কিছুক্ষণ রাতের অকপট রূপ দেখি। 


আমি স্টেশনের ভিতরে দাঁড়িয়ে কফি খাই, স্টেশনের বাইরে গিয়ে সিগারেট। খবর-কাগজ ছেপে নিয়ে আসতে শুরু করা গাড়িগুলো দেখি। তাদের কাছে নিজেদের ভাগ বুঝে নিতে হকারদের কী ব্যস্ততা! কালকেই কিন্তু এই কাগজগুলো ঠোঙার সমান হয়ে যাবে! আমি একমনে ওদের একদিনের আয়ু দেখি। এত রাশিরাশি অক্ষরের অপচয় দেখি। 


অপচয় অবশ্য চরাচরের সর্বত্র আছে। গমরঙের চড়াই-উতরাই থেকে আকণ্ঠ শুষে নেওয়া আলোর সব স্বাদ আমার লেখায় অজস্রবার আসে। আসতেই থাকে। সেও তো একরকমের অপচয়! অক্ষরের নয়; অনুভূতির। কারণ, তারপরেও যেমন চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকে এই আদিগন্ত, তাকে অন্ধকার ছাড়া আর কোনো নামে ডাকা যায় না। তবুও আমার তো চিরকালই 'বেচারা দিল ক্যায়া করে, সাওন জলে, ভাদো জলে'! 


ঋতুর কথা এল যখন বলি, নকল হেমন্তজাতকে ভরে গেছে পৃথিবী। মুখোশেরা সহজেই মানুষের রূপ ধরে থাকে তাই। মিথ্যার ব্যক্তিগত কুহক নিয়ে বেঁচে আছো ভ্রান্ত মানুষ! তবুও আমাদের যাবতীয় ছয়-নয় এবং নয়-ছয়ের দিব্যি, মুখোশদের ধারেকাছে তুমি যেয়ো না কোনোদিন। 


সকালের আলগা পায়ের শব্দে ঘুম আসে, কিন্তু ঘোর ভেঙে যায়। এখানে শহর জেগে উঠছে। ভোরের প্রথম ডাউন ট্রেন ঢুকবে এখনই। মর্নিং-ওয়াকারদের সঙ্গে পা মেলাবো আজ? নোটবুকের এই পাতাটিকে মুড়ে রাখবো। দূর থেকে আশা ভোসলে আবার ভেসে আসবেন, 'আসবো আরেকদিন, আজ যাই'!

প্রেমাংশু শ্রাবণ কবির



পদ্যবীজ

যে-দিন প্রেমের সঙ্গে থাকি 

পাল্টে নিই ঘুম সংজ্ঞা , 

ঘুণে ধরা রতিব্যাকরণ।


আমার অনন্তে তুমি 

তোমার অনন্তে আমি 

দেহ জলে ডুবে আছে---

ঝরে পড়া মন। 


ভুলে গেছো, যাও...

তবু আছে একটা ছোট্ট দায়, 

মনে রাখা শেখালে যখন 

এবার শিখিয়ে দাও 

ভোলার উপায়।

মধুমিতা রায়



সে


সেই ছেলেটা ভীষনরকম আবেগপ্রবণ

কঠিন খোলে ঢেকে রাখে নরম শরীর

সেই ছেলেটা একগুঁয়ে আর বড্ড সরল

বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখে কষ্টপ্রহর।


সেই ছেলেটা ইচ্ছে করে শুধুই ক্ষেপায়

ইচ্ছে করে বানিয়ে বলে গল্পকথা,

চোখের তারায় ঝিলিক ভরা দুষ্টুমি

সেই ছেলেটা ভীষন পচা, এক্কেবারে যা তা।


সেই ছেলেটা সত্যি ভালবাসতে পারে,

সত্যি পারে জিতে নিতে সব বাজি,

নিঃশব্দেও বলতে পারে সবকিছু

হয়ত সবই গভীর চোখের কারসাজি!


যাদুর কিছু ব্যাপার স্যাপার তার জানা

আঙুল ছোঁয়ায় ঝরায় কিছু শিউলিফুল

ঝুঁকে পরা চুলের ভাঁজে ভাঁজে

জমিয়ে রাখে মেঘগন্ধী মন ব্যাকুল।

অর্কদীপ সরকার



ব্যর্থ এ শৈশব


ঘাসের বুকে পা রেখে আকাশ পানে চেয়ে থাকা

বৃষ্টিভেজা শীল কুড়ানোর অনুভূতিরা বড্ড ফাঁকা।।


পুকুরঘাটে জলের বুকে দস্যি শিশুর উঠতো ঢেউ

অনলাইনে ক্লাস আছে যে, পুকুর ঘাটে যায় না কেউ!!


বিকেল বেলায় একটু খেলা কংক্রিটের ওই দালান টায়।

ছটার সময় ড্রয়িং আছে, তাড়াতাড়ি আসা চাই।।


মোবাইলের কীপ্যাডে ক্রিকেট আর ফুটবল

একলা ঘরে আটকে আজ নজরুলের তরুণ দল।।


পশ্চিমের অস্তাচল, বাসায় ফেরা পাখির ডাকে।

বঞ্চিত অনুভূতি! রবি, রুশোরা বইয়ের পাঁকে!!

নীলাঞ্জন কুমার



না হয় হলো সাদামাঠা কবিতা 

মেগা সিরিয়ালের মতো সাদামাঠা  কবিতার 

ভেতরে ছুটে আসে হাজারো কৌতুক , 


তা পড়ে নারীদের চাবুক অনুপ্রেরণা , 

পুরুষের ভেতরে উপেক্ষার শেড।


খাওয়া শোওয়া কামনার ভেতরের 

সহজ দিক জাপটে ধরলে 

কেন যে দমবন্ধ লাগে !


না হয় এলো সাদামাঠা কবিতা 

অন্তত একটি, কোন উদাসীন চাহিদায় ; 


হরেক দৃশ্যের থেকে প্রকৃত দর্শন 

নাই বা হল উচ্চারণ !


মাখো মাখো হাততালির ভেতরে 

অন্ততঃ একটু দুঃখ ছোঁয়া থাক।

ওয়াহিদা খাতুন


চাই সাম্যের অধিকার

ক্ষমতার সমতা হোক ন্যায্যের দাবি,

আর্য-অনার্য মিলে সবাই করি পণ,

মনুষ্যত্বের হাতে আসুক যক্ষ-চাবি;

ফসলের ভাণ্ডার হোক সম বন্টন,

কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ নয়--মন করো সাদা--

বিত্ত-ভৃত্যের পার্থক্য অনেক তো হলো;

বন্ধু,অন্তর দহনে আর নয় কাঁদা--

সবাই হেসে বাঁচবো উচ্চ শিরে বলো;


পুত্র-কন্যা,অজ্ঞ-বিজ্ঞ,সব তাঁর দান--

 জাতি-ঈর্ষা,উচ্চ-নীচ মুছে দাও ভাই-- 

নিছক ক্ষোয়াচ্ছ কেনো মানব কল্যাণ?

মনুষ্যত্বের উপরে আর কিছু নাই;


ভুলে যাও বৈষম্য সাম্যের করো জয়--!

মুক্তচিন্তায় বিশ্ব,হোক আলোকময়--!!



রচনাকাল:--২২/১০/২০২০ দুপুর ১টা ৩ মিনিট! (সনেট নং ৩০)

শাহীন রায়হান



একলা কাঁদে

একলা কাঁদে দোয়েল আমার

জুৃঁই চামেলি পাতা বাহার

জংলী পুকুর পাড় মেঘনা নদীর ধার

খুকুর প্রথম পাঠ

ছোট্ট গাঁয়ের হাট।


একলা কাঁদে ফুল পরী গাঁও

জোনাক পোকা পাল তোলা নাও

একটি তারা জলের ধারা

মেঘনা নদীর ঘাট

শেষ বিকেলের মাঠ।


একলা কাঁদে স্মৃতিগুলো

প্রজাপতি পথের ধুলো

মনটা আমার সোনা ধানে 

দোয়েল পাখির গানে গানে

ছোট্ট সবুজ গাঁয়

হারিয়ে যেতে চায়।

মনোয়ারা পারভীন


হেমন্তকাল

কার্তিক মাসে হেমন্তকাল

ঝরে গাছের পাতা,

আবছা শীতে সবার ঘরে

লাগে কিন্তু কাঁথা।


সকাল বেলা শিশির ভেজা

সবুজ দূর্বা ঘাসে,

চাদর গায়ে হিমেল হাওয়া

পূর্ব থেকে আসে।


বিলে ফোটে পদ্ম শাপলা

রাতে জোনাক পোকা,

দেখতে লাগে অনিন্দ্য সব

না দেখলে খাই ধোঁকা।


ঋতুর রাজা হেমন্ত কাল

নবান্ন যে আসে,

ঘরে ঘরে পিঠাপুলির

বাহার চোখে ভাসে।


পুলি ভাপা চিতল পাঠি 

কত রকম পিঠা,

দাদীর হাতে তৈরী পিঠা

খেতে লাগে মিঠা।


হেমন্তকাল শীতের আমেজ

নিয়ে ধরায় আসে,

হিমের হাওয়া বয়ে চলে

বাড়ির আশে পাশে।

দেবব্রত সরকার



হৃদয়শ্যাওলা 


দেখেছ লিখেছি কখনো কবিতা বলেছো কি তাকে একা 

আমিও কেমন হেরেছি একাই হারেনি তো তার দেখা 

সবুজ রাঙানো জলজ শ্যাওলা খেলছে কি একা জলে !

হৃদয়ে ছলকে শ্যাওলা গোপনে শুনেছে যে যায় বলে


তবুও আঘাত জড়িয়ে ছড়িয়ে বিষাদে কি ঢাকে মুখ 

আমার ঘরেতে ন"জন শুয়েছি  একলা তো নয় দুখ 

একলা তোনয় আমার প্রেমিকা দেখছো কি তাকে শুনি !

তোমার উপরে প্রেমের প্রলেপ দিয়েছি জানো কি তুমি 


যদিও জানলে জানার কথা না তাহলে কি তবে রূপ 

রূপের ঝলকে ঝলসে আঁধার হৃদয় যে হয় চুপ 

হাসছে পথিক আপন খেয়ালে হেসেছে কি একা একা 

দেখিনি তো তাকে একাই হেসেছে গোপনে যে কাঁদে দেখা

 

পথিক পথের ওপরে হারিয়ে ফেলেছে যে তার ঘর 

এপথে নজর দিয়েছে পথিক পৃথিবী তো নয় পর 

পথিক দিয়েছে পথের ঠিকানা সকলে কি বুঝে পাবে 

আপন খেয়ালে দিনের গুনতি গুনিয়ে সে চলে যাবে


পথিক খাবেনা খেতেও চায়না খাবার সে দিয়ে যায় 

আমরা যখন খাবার খেয়েছি খুশিতে সে ভরে যায় 

নিজের নামটা শুনতে চেয়েছে এটাও কি তবে ভুল 

মানব জনম আসেনা সহজে পথিক কি তবে মূল ?

 প্রাণকে এনেছে আপন ক্রোধেতে করেছে যে রিপু দান 

রিপুর জ্বালাতে মানুষ হেরেছে সত্যের কি বদ নাম 

পথিক চেয়েছে পথের ঠিকানা দিয়েছে যে এনে য্প 

যেজন মানুষ হয়েছে মনন বরণে সেজন তো করে তপ্

২৬ নভেম্বর ২০২০

রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ



মধ্যরাত্রির নিঃশ্বাস

আপনার মৃত্যুর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন যাঁরা

রাত কেটে ফুটিয়ে তুলছেন গুচ্ছ গুচ্ছ নিঃশ্বাস 

নকশা বেঁধে চলছে শুশ্রূষার চাষাবাদ... 


সকল বৃত্তান্ত-ই যেন ভীত অথর্ব 

এক একটা আছড়ে পড়া কান্না

থমকে যাচ্ছে


টিভির পর্দায় পোড়া কাঠের গর্জন

হাসপাতালের রৌদ্রস্নাত নার্সের হাতে 

সকল সংক্রমণ মুছে

বিছিয়ে দিচ্ছেন বেঁচে থাকার উপত্যকা 


আর,

মৃত্যুর ঢেউয়ে ডুবিয়ে রেখেছেন 

নিজের সমস্ত আয়ু

শুভমিতা বিশ্বাস



টান

তোমার আমার মধ্যে এক সেতু আছে 

যার নাম টান।

হৃদয়ের গর্ভে আমাদের অনুভূতির চারাগাছের জন্ম।


কান্নার মিছিল তোমার চোখে যখন হাঁটে

উন্মাদ হয় রুমাল।

দূরত্ব লেখার তুমি কে?

সরলরেখার বিন্দু তুমি

যেখান থেকে আমি পথ খুঁজে পাই।

দূরে এগিয়ে গেলাম

 বিন্দু পথে ।

অন্তরে মোচড় দিয়ে ওঠে

বুঝলাম বিন্দুর থেকে দূরে গেলে ছিঁড়ে যাবো।

সানি সরকার



প্রাগৈতিহাসিক 


এই সব শস্য ক্ষেতের ভেতর 

ভালো লাগে না আর 


আমাদের ঘুমের ভেতর

প্রতিদিন পাখিটি আসে যায়...

ডানার ভাঁজ থেকে ভাঁজে

পদ্মের কুঁড়ি আর কিছু 

হিরন্ময় আলো ভেসে ভেসে ওঠে 


আমরা চুপ করে থাকি 

আমরা খুলে ফেলি একলক্ষ উঁটের কুঁজ... 

অতঃপর এইসব সিমেন্ট-বালুর শরীরে

তেত্রিশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎতের জ্যাকেট পরে নিই 


ওই ওষ্ঠের মেখলাবৃত ঢাল থেকে ঢালে 

এইভাবে কবে যে আগুনের জন্ম হয়েছিল 

পৃথিবী মনে রাখেনি

মধুমিতা রায় এর মুক্তগদ্য পড়তেই হবে



মন নিয়ে


মন নিয়ে কতটুকু ভাব? এই যে অর্থ বৈভব প্রতিপত্তি আর প্রতিযোগিতার  জীবনে ডুবে যাচ্ছ, সাঁতার জান তো?


মনের কিছু সার জল হাওয়া চাই বোঝো তা? কেবল বাইরের শরীরটার জন্যই যত চিন্তা যত ভাবনা যত আয়োজন... আর যাকে অবহেলায় সরিয়ে রাখ সেই মনই একসময় মস্তিষ্ককে খেয়ে ফেলবে জান সেটা?


অবসাদ বড় মারাত্মক জিনিস। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে হেমলকের মতো। মনকে বন্ধু দাও সময় দাও খুশি দাও কান্নাও দাও আর হীরের টুকরোর মত ভালবাসা দাও।তারও তো ইচ্ছে করে ডানা মেলতে।


তুমি কি জান তোমার একটু কথা বা একটু হাসি আরেকজনকে ভালো রাখে যেমন তুমিও ভালো থাকো কারোর কথার ঝলকে।এই সম্পর্কগুলোকে যত্নে রাখো।কেমন আছ?...এই খোঁজটুকু রেখো পরিচিত জনের।তোমার সময় হয়ত খুবই মূল্যবান তবু তারগুলো ছিঁড়ে ফেলো না।ভেঙে ফেলা আঘাত করা খুব সহজ তাই বেশির ভাগ মানুষ তাই করে থাকে।ভালবাসতে শেখো।


ব্যস্ত থাকো সুন্দরের সাথে শিল্পের সাথে। মন আপনি ভালো হবে।এই তো একটুকরো জীবন।এত অহং এত ঈর্ষা না হয় নাই করলে।পৃথিবী  তো আজ শিখিয়ে দিয়েছে আমরা সবাই...  যার আছে সেও আর যার নেই সেও একই সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি।


ভালো থেকো, ভালো রেখো, আনন্দ খুঁজে নাও নিজের মতো করে। 


মনকে যত্নে রেখো।....

হাকিকুর রহমান



বিবর্ণ পত্র

নবীন প্রাতে নামলো পথিক পথে,

শিশির ভেজা ঘাসে যে তার ভিজলো দু’চরণ-

উদাস বাউল পায় না খুঁজে সুর,

ক্ষত বুকে তৃষার প্রলেপ দিয়ে কাঁদে কোন বিরহিনী।


রাতের কাজল এখনও মোছেনি কার আঁখি হ’তে,

পত্রপুটে বাসা বাঁধে কোন এক বাহারি প্রজাপতি-

কি মায়া লয়ে দাঁড়িয়ে থাকে অনামিকা গাঁয়ের বঁধু

কার অপেক্ষায়। কপোল বেয়ে নামে জল

ভরা তপ্ত নিঃশ্বাসে।


জীবনের পথে, জীবনটাতো আর চলেনা-

বিবর্ণ পত্রের ন্যায় ঝরে যায়,

না চলা পথের পরে।

দেবাশিস সাহা 'র দুটি কবিতা



মেয়ে ভারতবর্ষ 

মেয়ে ভারতবর্ষ জানে

আগুনের কোনো দোষ নেই


ওদের কয়লাজন্ম

পিঠে সারি সারি শলাকায়

বয়ে নিয়ে বেড়ায় আগুন


মেয়েভারতের গুহাপথ

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে 


মালগাড়ি, লোকাল, এক্সপ্রেস 

সবার অবাধ যাতায়াত 


যোনীদেশ ছিঁড়ে গেলেও

রক্ত ঝরেনা

মুষলধারে ঝরতে থাকে অন্ধকার 


মেয়ে ভারতবর্ষের কয়লাজন্ম

আগুনের কোনো দোষ থাকতে পারেনা। 


হত্যাতন্ত্র

১.

হাওয়া ধারণ করেছে ধর্ম

ধর্ম জমে জমে মেঘ

মেঘ ফেটে গেলে 

রক্তে ভিজে যায় মানুষ 


২.

পাথর জানেনা কার হাতে আছে

কার দিকে ছুটে যাচ্ছে আঘাত নিয়ে

হৃদয় পাথর হলেই

সে চলে আসে হাতে

দিগবিদিক ভুলে ছুটে যায়

ভাইজান বা মা-বোনের দিকে


৩.দেশের ভিতর দিয়ে 

ছুটে যাচ্ছে অগ্রন্থিত বিড়াল

অপমান পাড়া বলে যাকে ডাকো

সেই তো তোমার আমার বোনেদের আশ্রয় 

লালটুকু তুলে রাখো

আমাদের স্নেহজ ভেসে ভেসে

চলে গে ছে লাশের সংগে

আত্মীয়তা থাক শিমূলে পলাশে

মনকে মরতে দিওনা

একান্ত বাউল রাত ওর দখলে 


৪.কোনো কোনো কান্না 

একা একা ছুটে যায়

গাছহীন এক অরণ্যের কাছে

সেখানে মা'কে খোঁজে 


সবার কি মা হয় 


সবার কি মা থাকতে আছে 


কান্নাগুলো পরিত্যক্ত কামরার ভিতর 

কাকে খোঁজে 

বিন্দু বিন্দু রক্তে ভেজা 

একটা ছেঁড়া ভারতবর্ষ 

শুষে নিচ্ছে কান্নাগুলোর মা'কে।

দুর্গাদাস মিদ্যা।


অভিনয়

যেভাবে বোঝালে মনে হল

এর বুঝি কোনো বিকল্প নেই

ঠায় দাঁড়িয়ে বুঝিয়ে দিলে

হাতে নাতে ফল পাবে অচিরেই। 

অথচ আজ পর্যন্ত ফল ফললো  না। 

মিথ্যুক বলি তাও হয়তো নয় 

তবু কোথায় যেন থেকে যায় সংশয়! 

তুমি বলেছিলে -যদি এভাবে শুরু করা যেত

তবে কাঙ্খিত ফসলে ভরে যেত মাঠ

গোলাভরা ধান উঠে আসতো ঘরে। 

এখন বুঝি সেসব সত্য নয়

বলার জন্য বলতে গিয়ে 

করেছ মিথ্যে অভিনয়।

অলোক দাস



প্রতিশ্রুতি 


যদি আমি হই চেয়ারম্যান তোমাদের ভোটে, করে দেবই ব্রিজ এই এলাকাতে, সভা থেকে কে একজন বলে উঠলো এখানে এ গ্রামে কোনো খাল নেই, আপনি ব্রিজ করবেন কিভাবে? চেয়ারম্যান বললো ও নিয়ে ভেবো না, প্রথমে খাল বানাবো, তারপর ব্রিজ বানিয়ে দেবোই, ইনক্লাব, জিন্দাবাদ, এই না হলে চেয়ারম্যান?

মোঃ রুহুল আমীন



তোমাদের মুখে হাসি ফোটাতে


হাঁটতে শিখিয়েছে যে তোমাকে 

    ছোট্ট হাত দু'খানা ধরে

তোমাদের মুখে অন্ন তুলে দিত

    নিজে থেকে অনাহারে। 

    

তোমাদের মুখে হাসি ফোটাতে

    যে কষ্টের সাগরে ভেসে

কান্নাগুলো সব বুকে চেপে রেখে

    সে চলেছে কৃত্রিম হেসে।


তোমাদের অভাব করতে পূরণ

    দিন রাত করেছে কাজ

এখন তোমরা চলেছ এগিয়ে

   সে পিছনে পড়েছে আজ।


নিজেকে নিয়ে ভাবেনি কখনও

   তোমাদের রেখেছে ঘিরে

আজকে তোমরা অনেক উচুঁতে

   দেখ কি পিছনে ফিরে? 


তোমরা থাকো মহাসুখে আজ

     ওই অট্টালিকার পরে

তার ঘরে আজ খড়ের ছাউনি

     বৃষ্টির পানি পড়ে ঝরে।


আজও তোমাদের সুখ দেখে

     সুখের সাগরে ভাসে

তোমাদের কোন সফলতায় 

   সে তৃপ্তির হাসি হাসে।

***************************************

শশাঙ্কশেখর পাল



পাতালঘর 

নিজের বুকে লুকিয়ে আছে তুকতাক 

কথোপকথন কবর থেকে বারমুডা চশমার ফ্রেম 

সারল্য অজগরে পেটে হরিণ 

দুজনেই মরে যায় একে অপরের কৃতকর্মে..


বন্ধু অবন্ধুরা জলরঙ

                              টুং-টুং 

মোহিত আয়নার পারা সরে গেলে

বেরিয়ে আসে বিষ

রজ্জুতেও ভয় পাও ভয় পাও..


তোমার নিজের মধ্যে কবর আছে 

                                      তুকতাক..