১১ নভেম্বর ২০২০

শামসুল আলম সেলিম

বিশ্বাস 

বিশ্বাস পিরামিডের মতো 

উপরে উঠতে গিয়ে ছোট হতে থাকে শীর্ষে তার ভালোবাসা নাম অব্ক্ত্য যন্ত্রণায় কাতর,তবু ভিতরে উৎসব চলে -

স্বপ্নের বুদবুদ দেয়াল ঘেসে ওড়াউড়ি করে 

পা জড়িয়ে কাঁদে ছড়ানো সুখের লতা 

আমিও পিরামিডের মতো 

উপরে উঠতে উঠতে উঠতে কেবল ছোট হতে থাকে

রণজিৎ সরকারের তিনটি লিমেরিক



ফুলুর বাপ

ফুলুর বাপের উইথলা উঠা পিরাণডা চুখের জলে ভাসে

পাইক-পিয়াদা লিয়ে এসে লারু মহাজন হুমকি তালে হাসে

দাদন দিসি মাল ফালা

নয়তো খাবি কানমলা

হিসাব মত জমিনের ফসল আমার, ফুলুর বাপে কাইন্দা পড়ে হা-হুতাশে


ক্যামনে বাঁচি 

কই, আম খাইয়ো জাম খাইয়ো খাইয়ো না তার বিঁচি

পুলাপানের গুয়ার তলায় ভ্যান ভ্যন করে মাচি

নাকের পুঁটা মুইচ্ছা সবে

বড় হইব ক্যামনে কবে

নুক দ্যাকানি মুন খসানি মাইনসের লিগা ভয়ে ভয়ে বাঁচি


চাষারে আশা

সক্কাল থনে রাইত ওব্দি বইয়া থাহি পুলের নিচ্চে

কাম নাই যাম নাই কী হইব ভেরেণ্ডা বিচ্চে

পুলডা ভাঙুক আমার মাতায়

নামডা উঠুক মরার খেতায়

বাঁচপো তয় পাঁচির সোমসার সরকারি ট্যাহা ল্যাও খিঁচ্চে

রাহুল গাঙ্গুলী:শব্দরূপ

অস্পষ্ট প্রিজম-অস্থি & উপচানো দৃশ্যতন্ত্র


অংশতো  }}
                 প্রতি//অংশতো }     মেঘ

                                                  ||

                           এই        মেঘলা-দিন

   অক্ষর থেকে ~ উবুঘাসে    ছায়াজল

    ম্যাজিক-আয়না »»»
          
    ইদানীং  {{  খসে পড়ছে
                                       ]] (দেওয়াল)º থেকে
                                              আদর
                                                 ও
                                          ±❬উষ্ণতা❭

মেটে-কল্পনা 
                   }} ◑'র ৪ভাগই 
                                      ঘুম//ঘুমরং ______




সুবীর ঘোষ

দূরান্তর


মাটি তো জমাটই আছে , তাকে খুঁড়ে

উইপোকা কেন তুলে আনো

বুঝতে পারি না কোথায় আমার চোখ

হাতপায়ে সাড়াশব্দ নেই ।

বেদনার নীল ঘর পড়ে আছে

পরাজিত হরিণ আকারে ।

মারীচের সুসংবাদ আমাকে অপেক্ষায় রেখে

আগুনের ঝড় জমা হয় ।

ভূমির গভীরে নেমে আমি ব্রাত্য সাজি

সকাল বিকেল আসে মোচ্ছবের ভাসা গন্ধ নিয়ে

এমন বাহারি আশা গোপনে ও সংগমে

দূর থেকে দূরান্তর দেখে ।

নিবেদিতা নাগ মজুমদার


আদম


যে ভাবে দেখতে চেয়েছি তোমাকে

ঠিক সেই ভাবে হয়ত 

উঠে এসেছে বুদবুদ, উষ্ণ গভীর স্রোতে-


অগ্নুৎপাতের সময় ফুটন্ত লাভা

সবুজ কুরিয়ে ক্রমশ হয় পাথুরে ফসিল, 


শ্যাওলার জল ছুঁয়ে

তৈরী হয় অকৃত্রিম গুহাচিত্র, অন্ধকারে-


যেভাবে পাখির বাসায় 

গুঁজে রাখে একেকটা খড়কুটো

পুরুষ পাখির ঠোঁট-


আর রাতজাগা চোখ

চিনিয়েছে বালিশের ওম

ভিজে, স্যাঁতসেঁতে 


সেইভাবে,

আমার আদিম অপেক্ষারা তোমাকে স্পর্শ করে -

ঠিক যে ভাবে দেখতে চেয়েছি তোমাকে।

মাধবী দাস



ঝড় 

কিছু কিছু উপহার বোঝা হয়ে যায় 

কিছু কিছু খাওয়া এসে গলায় জমাট বাঁধে

বৃষ্টি চাইলে বৃষ্টি নামবে সেতো আত্ম প্রত্যয়িত স্বপ্ন


শরীরের ভাঁজে ভাঁজে ওপার বাংলার ক্রোধ 

রাগে টগবগ করে পূর্ব পুরুষের রক্ত

মনে হয় ধ্বংস করি লুকিয়ে জমানো স্মৃতি গুলো

আগুনে পুড়িয়ে ফেলি কুঞ্জনগরের মগ্নতাকে

শব্দের নিলাম করে ডেকে আনি তীব্র প্রতিবাদ


আমিতো দেখেছি একটা বড়োসড়ো ঝড়ের পরেও

নারকেল গাছের বল্লী নুয়ে থাকে শুধু ধৈর্য ধরে

ওদের কাছ থেকেই প্রতিদিন তিতিক্ষার পাঠ 

প্রতিটি ধাক্কায় গড়ি সাফল্যের ছোট ছোট ধাপ


বস্তাপচা সিলেবাস ঘাঁটাঘাঁটি করি বলে

আমি সব বুদ্ধি খেয়ে বসে আছি এমন ভেবো না

হে আকাঙ্ক্ষী জেনে রেখো দুঃখ বহনের ভার নিয়ে

জন্মাইনি এ-পৃথিবীতে , সুখের পায়রাও নই আমি।

পূর্ণিমা ভট্টাচার্য (টুকুন)



অচেনা মন

বিশ্বাসগুলো পাক খেতে খেতে অবিশ্বাসে ঘোরে,

সংশয়েরা মনের ভেতর ঢুকে যায় ধীরে ধীরে।

চিন্তাদের যতই ভাবি বাদ দেবো কেটে ছেঁটে,

কোথাথেকে দুশ্চিন্তা  এসে সব কিছু দেয় ঘেটে।

গভীর রাতে স্বপ্নের দল ভরে থাকে চোখ জুড়ে,

ভাবনারা দলে দলে এসে মাথা খায় কুঁড়ে কুঁড়ে।

পাল্টে যায় ছোটবেলার ছোট ছোট কল্পনা,

তবুও যেন লেগে থাকে কিছু কয়েকটি তার কণা।

শব্দ সাজালেই বাক্য হয় না হয় না যেমন কথা,

সুসংগত থেকেও আবার যায় না জীবনে জেতা।

মনটা এমন আজব বস্তু চিনিনা তেমন করে,

উজান টানেও কেমন করে চলে সে লক্ষ্য ধরে।

জয়ন্ত দত্ত




অভিযাত্রী 


গ্রামের কাঁচাপাকা পথ পেরিয়ে

হাইওয়ে ধরে গাড়ি ছুটে চলেছে।

চারপাশে নির্জন,হেমন্তের মধ্যরাত।

উইন্ডশিল্ডে আছড়ে পড়া বাতাস কেটে

টুকরো টুকরো হয় শো শো আর্তনাদে

ছড়িয়ে পড়ছে দুপাশে।কিছুক্ষন থেমে থেমে

এম্বুলেন্সের সাইরেন বেজে ওঠে।

এসব আর্তনাদকে তোমার কান্নার মত মনে হয়

যেন আমি চলে যাবার পর তখনো

তুমি লুকিয়ে বসে কাঁদছো


এ যাত্রা অন্তহীন...

নূপুর মণ্ডল

অতলান্ত


ভাবতে ভাবতে শেষ বিন্দু পর্যন্ত ভেবেও

ভাবনাগুলির অন্ত পাইনি আজও।

তোমাকে দুহাতে জাপটে ধরবো বলে

যে ভাবনাটি হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল

কেন পুড়ে গেল সে ভাবনার উত্তর পাইনি আজও।

সারাদিন বসে বসে তোমার ছবিটি দেখব বলে

যে ইচ্ছা চোখের ক্যানভাসে রঙিন হয়ে উঠল

সেই তোমার ছবিটি কেন ফ্যাকাশে জানা হল না আজও।

আসলে ভাবনারা অতলান্ত

সারাদিন ভেবে ভেবে একটি কবিতাও হয়ে ওঠে ক্লান্ত।

কৌশিক মিশ্র


ফিরে পাওয়ার আশা


 মাটির দ্বারা তৈরী ইটে,

আস্ত এক আমার ভিটে।

ভিটের ভিতর বন্ধী থেকে,

মেজাজ যে আজ বড়ই খিটখিটে।

আরে! মেজাজের কি আর দোষ আছে ভাই?

মনের ভেতর যে আর কোন শান্তি নাই!

আতঙ্ক নাড়ছে রোজ দরজায় কড়া;

দেশ যে আজ কঠিন জীবাণুতে ভরা;

আচ্ছা! আমরা কি আর পাবো না ফিরে?

সেই "ধন ধান্য পুষ্পে ভরা,

আমাদের ওই বসুন্ধরা...."

যাহার মাঝে মাঝে আছে সে দেশ...

যে দেশ আমাদের ভারতবর্ষ,

যে দেশ সকল দেশের সেরা...।।