১১ ডিসেম্বর ২০২০

হা‌বিবুর রহমান হা‌বিব



আঁচল ভেজা বর্ষা

বৃ‌ষ্টি ভেজা জোস্ন‌্যা রাত,

আকা‌শের নক্ষত্র গু‌লো জা‌নে, 

রাঙা সূ‌র্য্যের প্রভাত কত দূর ।

কাজল কা‌লো আঁ‌খির কো‌নে,

ঝ‌রে বাদল দি‌নের বৃ‌ষ্টির ফোঁটা,

যেন বর্ষায় দেখা প্রথম কদম ।

র‌ঙিন খোপা খু‌লে গে‌ছে,

কখন যে বৈরী হাওয়ায়,

ভি‌জে গে‌ছে কোমল পি‌ঠের প‌রে,

মে‌ঘে ভেজা কা‌লো চুল ।

ঝি‌রি ঝি‌রি মে‌ঘের ছোঁয়ায়,

সাদা আঁচল খা‌নি ধূপছায়া ময় ।

ভেজা উর্বসী কমল ফোঁটা দেহ,

শরী‌রের ভা‌জে ভা‌জে লে‌গে আ‌ছে,

ভেজা ভেজা নরম পর‌শের আঁচল খা‌নি ।

দেওয়ান ইকবাল



জনম জনমে পিছু পিছু


দুঃখ তুই কই থাকিস রে

তুই লুকাস কোথায়  

মন পিঞ্জিরায় নাকি ঘরের কোনায়? 

তুই মন ভাঙ্গিস নাকি 

মনের সাথে পাল্লা দিয়ে

মন পিঞ্জিরায় বাসা বাঁধিস?   

তোর জন্ম কোথায়?  

আদি নিবাস কোন অঞ্চলে?  

নিরবে ভিজাস চোখের পাতা। 

তোর আদি-অন্ত কোথায়?  

দল বেঁধে চলিস নাকি একা একা?  

অতি সংগোপনে ভাবনায় মিলাস  

সযতনে স্বত্বার সম্ভারে জাগিয়ে তুলিস  

বিচিত্র অনুভূতি দেশ থেকে দেশান্তরে। 

হৃদয় ক্ষত করিস জম্ম থেকে

মৃত্যু অবধি হার না মানা সংগোপনে।  

হিয়ার মাঝে লুকিয়ে আবিষ্কার করিস

জনম জনমের মহাশ্মশান।   

নাড়ীর টানে অস্তি মজ্জা বিস্ফোরণ ঘটাস

প্রতি কনা রক্তের সঞ্চালনে 

প্রবাহিত করিস তা শিরায় শিরায়।      

শেষ বিদায়ের দিনেও 

তুই  ছারিস না পিছু  

অবলিলায় সদলবলে নতুন এক

পৃথিবী গড়ে রেখে যাস  

অন্য এক কষ্টের উপলদ্ধিতে।

রাকা ভট্টাচার্য্য



ছুঁয়ে যাও


এখানে সোহাগী রাত ঘোমটার নীচে---অপেক্ষায় আছি মন ।


গভীর নীরবতা আমাকে শিখিয়েছে আরো গভীরে তোমার অনুভবে মিশে যেতে।


সমুদ্র লোনা বাতাস যেন তোমারই

ফেলে আসা আরামী নিঃশ্বাস,

 আদরে আদরে জড়ায় আমার গোটাটা শরীর।


স্নায়ুতে স্নায়ুতে রশির টানাটানি,

সমস্ত শিরা ধমনী জুড়ে রক্তের উদগ্রীব লাফালাফি।


হৃদপিণ্ডের কানে কানে অবিশ্রাম 

তোমারই ফিসফিস কথা।


একবার এ আঁধারে ছুঁয়ে যদি যাও মন ; আমার এ গাঙ ভাসি মনে,

ঢেউ হয়ে বার বার ভেঙে যাব তবে: তোমার হৃদয় তটভূমে।

মিলন ভৌমিক।



শিশু শ্রমিক

নবজাতকের জন্ম নি়য়ে

মধুর ২ স্বপ্ন থাকে,

মানুষের মনে.

ফুটফুটে ছেলেটি স্কুলে যাবে

বাবা মায়ের হাতধরে.

ধীরে ধীরে বড় হবে

দুঃখ,কষ্ঠ,লাঘব হবে.

সমাজের পিছিয়ে পরা

মানুষের কথা একটু ভাবো,

আছে স্বপ্নের ফেড়ি

সফল হয়না অথ'ভাবে.

দশ বছর হলোনা বয়স

বসে আছে ফুটপথে,

বাবুদের জুতো পালিশ করবে.

অফিস বাবুরা চলে যাচ্ছে

না দেখার ভান করে.

সরকারের আইন আছে

শিশুশ্রমিক নিষিদ্ধ এদেশে.

কাজ করানো যাবেনা যে.

গরিবী হঠাও দেশ থেকে

নেতারা সব বলে,

সত্তর বছর পরেও 

হলোনা সমাধান যে.

নববষে' সমাজ কে

নিতে হবে শপথ,

স্কুল ছুট,পথ শিশু

থাকবেনা এদেশে.

মানুষই পারে সমাজকে

পরিবত্তন আনতে.

সুমী শারমীন



প্রাক্তন


হঠাৎ কোন পাতাঝরা  বৈরী বাতাসে

যদি দেখা হয় তোমার সাথে 

চিনবে কি তুমি! 

ডাকবে কি পুরোনো আবেগের মিশেলে দেওয়া ভালোবাসার 

গোপন প্রিয় নামে ;

তাকাবে কি আগের মুগ্ধতায়,

নাকি,চশমার ফ্রেমে আটকে যাবে

চালশের মোহাচ্ছন্নতার ঘোর।


ঝুম বৃষ্টি সন্ধ্যা, কনে দেখা আলো 

পাতা ঝরা বিকেল,কিংবা

আলো আঁধারীর ডুবসাঁতার 

সবকিছু  কি ভেসে উঠবে

আর্কাইভ ক্যানভাসে।


যদি চোখ ভিজে যায়

অবেলার যমুনায়

তাহলে কি মুছিয়ে দেবে

যন্ত্রণাকাতর অশ্রুফোটা।

যে জলের লিখনে

 ছিলো না কোন ভুল,

ছিলো শুধু  হৃদমোহিনীর সুখবিসর্জন।


তোমাকে হারিয়েছি,নাকি

হারিতে জিতেছি

সে হিসেবটা তোলা থাক না হয়,

কোন এক কোজাগরী 

নিভৃত রজনীর জন্য।। 


ধ্রুপদী অস্পষ্টতায় কে কার থেকে

হয়েছি বিপন্ন বিচ্ছিন্ন, 

বড্ড গোলমেলে

 সে হিসেবের হালখাতা।। 


শুধু জানি,ভালোবাসায় ভরপুর

আমার তুমি আজ বড্ড অচেনা।

আজ আমার একটা চমৎকার 

উপাধি যুক্ত হয়েছে,উপমার আধারে

দুঃখবিলাসী প্রাক্তন।

ইসরাত জাহান, নিরু


নষ্ট সময় কষ্ট দেয়


একটা ব্যাক্তিগত অভিমান, দেয়াল

তুলে দিলো ভালোবাসার 

নির্ভরতার অভিমান,

বিশ্বাসের অভিমান,

একটা বৃত্তহীন অভিমান,

মরুদ্যানের জলের আলিঙ্গনের অভিমান।


অভিমানের দোয়েল, শীষ দেয় বুকের মাঝে;

অভিমানের ভগ্নস্তুপে দাঁড়িয়ে নিঃসীম শূন্যতা,

সহজেই ছুড়ে ফেলা যায়, এমন অভিমান হত;

যদি অভিমান গুলো জলে ভাসিয়ে

বলে ফেলো, আমারো বলার ছিল,

কিছু সুখ বাকী ছিল

তোমাকে দেবার মত!

যদি বলো, আমারো ভালোবাসা ছিল!

কন্ঠলগ্ন হয়ে প্রেমের সংঙ্ঘা ছিল

তুমি যে আমার মনের মত।


একরাশ স্নিগ্ধতা হাতে নিয়ে যদি বাড়াও হাত,

যেখানে অনন্ত এক কষ্ট হীন জীবন,

এমন অনেক কিছু হয়ত বা কখনো দেবার ছিল।

যেখানে দুঃখের উল্টোপিঠ

রাগ আর ঘৃনার উল্টোপিঠ।

চিরসুখী হই, স্বাগত জানাই সেই সুর;

রঙিন রথে অভিমান ভেঙ্গে,

আমরাও উড়ে, যাই বহুদূর।

মুন চক্রবর্তী



নিরক্ষর


অক্ষর বিহীন হলে নিরক্ষরতা 

অক্ষর পথে অবক্ষয় ছুটছে বিশ্ব ত্রাসে।

কতগুলো ইট পাথরে দাঁড়িয়ে থাকা ঘর

চারিপাশ শূন্য আবেগ বিবেক তো মরে গেছে।

বড় বড় ইউনিভার্সসিটির ডিগ্রির গোপন ফাইলে 

অক্ষর বিহীন ভালোবাসা ঝরা পাতার আলাপ।

লক্ষ কোটি বুক স্লেফে মানবিকতার অট্টহাসি

নিরক্ষর লাঙল কাঁধে,চিৎকার শিক্ষার অরাজকতার।

হত দরিদ্র সময় সংঘর্ষে, গাছের পাতায় লিখেছিল

নিরক্ষরতার অভিশাপ মুক্তির পথ,দীপান্তরের ছাল বাকলে।

অক্ষর আজ অস্ত্র বারুদ যুদ্ধের শেষ শিক্ষকতা

শিশির বিন্দুতে ঘাম ঝরে যাদের,সত্যি!নিরক্ষর!

জি এম কাউসার আলী, (অষ্ট্রেলিয়া)


 প্রতিক্ষায় থাকি


আমি প্রতিক্ষায় থাকি ঝড়ে ডানা ভাঙ্গা-

আহুত ডাহুক পাখির মত,

তুমি ফিরে এসে ভালোবাসার ছোঁয়ায় আমাকে-

সেবা যত্নে সারিয়ে তুলবে যত ক্ষত।


প্রতিক্ষায় থাকি মেঘ বৃষ্টিপানে চেয়ে থাকা-

পিপাসিত চাতকের মত,

তোমার স্বানিধ্যে পেলে আমি সিক্ত হবো-

প্রেম বর্ষনে অবিরত।


প্রতিক্ষায় থাকি নির্লিপ্ত হয়ে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকা-

চৈত্র্যের খরতায় চৌচির হওয়া ক্ষেত মজুরের মতন,

মেঘে মেঘে বর্ষনে বর্ষনে ধরা শান্ত করবে নিয়তি-

কৃষাণীর মুখে হাসি ফুটবে পেয়ে নবান্নের কেতন।


প্রতিক্ষায় থাকি বেদনার বালুচরে পলিতে পলিতে-

চাপা পড়া বিস্মৃত স্মৃতির অনলে পোড়া স্বজনের মত,

কালে ভদ্রে পেয়ে গেলে তোমায় জীবনে আবার-

থরে থরে সাজাবো আনন্দগুলো সুখ সারির মত।


প্রতিক্ষায় থাকি শুকিয়ে যাওয়া বাঁক হারা-

অবলা সেই খরস্রোতা নদীর মত,

শ্রাবণের বার্তা হয়ে এলে ঢলে ঢলে দুকূল প্লাবিত হয়ে-

নাব্যতা ফিরে পেতো অনুভূতি যত।


আমি প্রতিক্ষায় থাকি রাতের আঁধার ঘুচিয়ে ভোরের-

সোনালী দীপ্ত সুন্দর সকালের আলোর মত,

ভালোবাসার দৈন্যতা কাঁটিয়ে আবার মোরা-

কিন্নরি প্রেমের তরে হব অবনত।

অমর্ত্য সরকার



বন্ধুর প্রতি 

ব্যর্থতার ভীড়ে হারানো নিজেকে আবারও খুঁজতে চায়,

ভাঙা স্বপ্নের টুকরো তুলে আবারও গড়তে শেখায় ।

জানে সে, হয়তো লড়ব আমি আবারও হাত বাড়ালে,

সেইতো জানে কত কষ্ট লুকিয়ে আছে হাসিমুখের আড়ালে।

আমার কাজে কখনও কখনও সে রাগে, আমি জানি,

তবুও আমায় একলা ছাড়তে সে যে বড্ড অভিমানী।

সারাদিন যার খুনসুটিতে আমিও হাসিতে মাখি,

দিনের শেষে অশ্রুপাতেও তার কাঁধেই মাথা রাখি।

হাসি ঠাট্টা বেধে রাখি আড্ডাতে যার,

আমার লড়াইয়ে লড়াকু সে বন্ধু আমার ।


শিরিন আক্তার



রঙিন দেশ


ধ্যানে তুমি, মনে তুমি 

স্বর্ণশস্যশালিনীর দেশ।

ধ্যানে তুমি,মনে তুমি

  স্বাধীন বাংলাদেশ।


রক্ত -নদীর উজান বেয়ে, 

অনন্তপানে কেতন,তুলে;

জয় বাংলা, জয় বাংলা 

বলে,এসেছিলে তুমি।


ত্রিশ লক্ষ প্রাণ, আর

লক্ষী বোনের, সোনা মায়ের, 

ইজ্জতটা বিসর্জন করি,

বিনিময়ে আমরা বিজয় পেয়েছি। 


আজ! প্রভাতোর ঐ আদিত্য ;

নিশীথ রাতে পূর্ণ মাসীর 

আহ্লাদের মতোই এদেশ।

শিল্পীর সুর,ছন্দে রেস।


বসন্ত পূজারী, আর 

ভরা নদীর স্বাধীন চেতা, 

বিজয়ী রঙে- রঙ্গিন দেশ

আমার প্রাণের বাংলাদেশ।