১৪ জুলাই ২০২১

কবি সানি সরকার

স্বরচিত কবিতা পাঠে কবি সানি সরকার 


আপনারাও পাঠান আপনাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করে অবশ্যই প্রকাশ পাবে স্বপ্নসিঁড়ি পত্রিকার পেজে ।





আজ কবিতায় কবিরা হলেন কবি দেলোয়ার হোসেন সজীব , ফিরোজ আহমেদ জুয়েল, ওয়াহিদা খাতুন , বাহাউদ্দিন সেখ , ফরমান সেখ, শ্যামল রায়, শিবনাথ মণ্ডল,

 
দেলোয়ার হোসেন সজীব


শুন্য যাযাবর


আমি জীবন কে তাল গাছের মত ভাবি

যার প্রতিটি পরদে বাবুই পাখির বাসা দেখি,

আমি দেখি স্বপ্ন আশা,অটাল ভালোবাসা

বেঁচে থাকার যুদ্ধে আমি তাতে পাই ভরসা।

আমার চারপাশে অজস্র বাবুই পাখি উড়ে

মুখে কিছু খরখুটো,  খুব যতনে বাসা বুনে,

ওরা আমার মত গরীব ডালভাতে সুখি

আমি ভাবি হায়  হতাম যদি বাবুই পাখি।

আমার ইচ্ছে করে মুক্ত বিহঙ্গ উড়ে বেড়াতে

পাখির মত সামান্য খরখুটো তে সুখ পেতে,

আমি প্রকৃতি প্রেমী, এক শুন্য যাযাবর

লক্ষাধিক জায়গা রাখি বুকের ভিতর।

আমি কবিতা লিখি, কবিতায় মিশি

কবিতায় ডুব দেই,কবিতা ভালোবাসি,

 কবি ও কবিতা দুইয়ে মিশে থাকা

আর আছে ভালবাসার দুই পাখা।





কলমে-ফিরোজ আহমেদ জুয়েল


ভয়


ভয়-ভয়-ভয়,চারিদিকে ভয়,

আসলে ভয়ের নেইতো কিছুই,

আত্মবিশ্বাসের দুর্বলতায় হৃদয়ের ক্ষয়,

প্রতিহত হয় ভয়,বিশ্বাসের অটুট ধারায়,

মন যদি রাঁঙ্গে বিজয়ের চেতনায়।


ভয়!

আছে নিরবে মিশে,প্রতিটি হৃদয় জুড়ে,

শারিরীক ভয়,মানষিক ভয়,

স্মৃতিতে ভয়,দুঃস্মৃতিতে ভয়,

হারানোর ভয়,চেতনায় ভয়,

সম্ভাবনায় ভয়,পেয়ে হারানোর ভয়,

চারিদিকে শুধু ভয়ের শ্বাসন,

নিরবে নিভৃতে মিশে প্রতিটি হৃদয়ে,

তিলে তিলে করে দেয় হৃদয়টা ক্ষয়।


ভয়!

কিশোর বেলায় ভয়,বাবার শাসন,

স্কুলেতে ভয় শিক্ষকের,

পরীক্ষাতে ভয় ফেল-পাশের-আর,

খেলার মাঠে ভয় পরাজয়ের;

সবখানে ভয় করেছে শাসন,

দেয়নি ছেড়ে মুক্তির অবসান,

তবুও সহসায় হারিয়ে পেয়েছে,

বিজয়েরী জয়।


ভয়!

যুবক বেলাতেও দেইনিতো ছাড়,

পাড়ার দাদাদের দৌরাত্মের ভয়,

প্রেমে পড়ে প্রিয়ার,সন্তুষ্টিতে ভয়,

ভয় ভয় ভয় চারিদিকে ভয়,

রুখতে পারনি তবু,ভয়ের দুঃশাসন

অবশেষে হয়েছে বিজয়ের  জয়।


ভয়!

ভালোবেসে প্রিয়াকে হারানোর ভয়,

ভালোবাসি কথা বলতে যেন ভয়,

প্রিও কিছু পেয়ে হারানোর ভয়,

অনুভবের আবেগের নিয়ন্ত্রনে ভয়,

স্বপ্নকে নিয়ে রাঙ্গাঁতে ভয়,

ভয়-ভয়-ভয়,চারিদিকে ভয়,

আসলে ভয়ের নেইতো কিছুই,

আত্মবিশ্বাসের দুর্বলতাই,

শুধু হৃদয় ক্ষয়ে যায়।


ভয়!প্রতিহত হয় ভয়,বিশ্বাসের অটুট ধারায়,

প্রেমিক-প্রেমিকার মিলন মেলায়,

সোনালী স্বপনে আকাঁ,স্বার্থক জীবন,

পূর্ণতার সাধ পায়,বিজয়ের মিলন,

ভয় বলে নেইতো কিছুই,সবি হৃদয়ের ভ্রম।









ওয়াহিদা খাতুন


রমজানের খশবু  (গজল)

(রচনাকালঃ-১৩/০৪/২০২১ রাত ৯টা ২১ মিনিট। )


রমজানেরি খশবু এলো পাপেরি ধরায়,

আদর করে চুমে নেরে মাখরে সারা গায়;

হৃদয় খুলে যে যা পারিস দুহাতে দান কর,

জ্বিন,ফেরেশতা খুশিতে আজ সিজদাতে লুটায়!

রমজানেরি খশবু এলো পাপেরি ধরায়!


মর্জিমতো চলাফেরা ছেড়ে দে সবাই ;

রোজার মাসে যাদের ঘরে খাবার টুকু নাই,

খুরমা,খেজুর কেনার মতো পয়সা যাদের নাই,

দুঃখী জনের মুখে হাসি ফোটা ভালোবাসি, 

নিজেকে আজ বিলিয়ে দে  তাদেরি সেবায়!

রমজানেরি খুশবু এলো পাপেরি ধরায়!


বেহেশতে আজ যেতে যে চাস মওলারি দরবার ;

শুকিয়ে থেকে রোজা রেখে ফায়দা হবেনা,

সাচ্ছা মনে না চলিলে কিছুই হবেনা,

অন্ধ হয়ে অহংবোধে ভুল পথে না চলে;

চক্ষু খুলে দেখবো আগে শরীয়ত কি বলে;

রোজার মাসে তওবা করো থাকতে রে সময়!

রমজানেরি খুশবো এলো পাপেরি ধরায়!

আদর করে চুমে তারে মাখরে সারা গায়!!




বাহাউদ্দিন সেখ


পরিণাম



"রয় হে প্রিয়তমা,মনের গভীর তলে এক অদ্ভুত ময়ী প্রেম-প্রীতি রহস্য"

ধ্বনি দিকভ্রান্ত কৃষ্ণ চূড়া বাসন্তবাতাসে ভেসে ওঠে যৌবন ব্যাকুলতার হাস্য।

"দিক দিনান্তরে যৌবন তাহার অস্থির ভেসে তরী পশ্চিম বাতাসে,

চঞ্চল প্রেম স্মৃতির ঝর্ণা বৃষ্টিতে ভাসে পরিপূর্ন দুর্দান্ত নয়ন জল ঊর্ধ্বশ্বাসে।"

দিন প্রতি নির্জলা মিথ্যাচার যৌবন তাহার দুর্লভ উড়নচণ্ডী

রাশি রাশি রত্ন প্রভাত হাসি, যুগল যুগ্ল মিলন মৃত্যু দন্দী।

"অনন্ত দিগন্ত যেথা দূর প্রান্ত সেথা চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা,

অস্তিত্বহীন প্রেম উর্বর মৃত্তিকা ভূমি, নিম্ম অন্ততমিল ধারা।"

"অতীত প্রেমময় অগ্নী  দীপ্তশিখা প্রখর প্রভাস লয় বক্ষে তোমার নাম,

শত রুপে শত বার লাবাণ্য প্রেম পিরিতি,নাহি দিলে তাহা উচ্ছ্বাস পূর্ণ পরিণাম।






ফরমান সেখ


স্বপ্নের সিঁড়ি 


নীলাকাশে আমার হৃদয় উড়ে বেড়ায় রোজি,

মেঘের কোলে রবির আলো সারাদিনই খুঁজি।

সবুজ মাঠের  সবুজ আভা পাগল করে মোরে,

হিমবাহের হেম-কান্তি চোখের নজর কাড়ে।

মরুভূমির তপ্ত-বালি আমার হৃদয় টানে-

ঘুরে বেড়ায় মনটা আমার সুনালী-গম-ধানে।

নানান রকম ফুলের শোভায় মন যে আমার হারায়।

ভেসে বেড়ায় মোনানন্দে নদীর কল ধারায়।

ঘুরে বেড়ায় সাগর-নদী কত কানন-গিরি,

পাহাড়-পর্বত চড়ি আমি দিয়ে স্বপ্নের সিঁড়ি।

তবু মনে তৃপ্তি নাহি আরো উড়তে থাকি,

মনে মনে নানান কত স্বপ্নের ছবি আঁকি।




শ্যামল রায়


জন্মেই করেছি ভুল


নানান রঙে রঞ্জিত হয়ে বেঁচে থাকব

এমনটাই ছিল জন্মের সত্য কথা

তারপর বুঝতে শিখে ,বলছি

জন্মেই করেছি ভুল!

মৃত্যু আসছে বারবার

পরাধীন খাচ্ছে গিলে

আমরা অবাক, নামে শুধু স্বদেশ ভূমি।

নেইকো কারো বেঁচে থাকার

অন্য জীবনের গল্প

এ যেন বেঁচে থাকা আমার কাছে

আগুনে পুড়ে যাওয়া এক মর্মান্তিক গল্প।

জন্মেই করেছি ভুল

হিসেবটা বড় গোলমাল

বড্ড বেমানান

শুধুই অবাক করার ঘটনা, অবাক হচ্ছি রোজ!

মনে হয় জন্মেই করেছি ভুল

শুধুই পদাঘাতেই জীর্ণ হচ্ছি রোজ

বিদ্রোহ দেখছিনা চারিদিক কখনো

অবাক পৃথিবী, অবাক হচ্ছি রোজ।

নেইকো বাঁচার গল্প কথা

নেইকো প্রেমে ভালোবাসা

নেই সত্যের প্রতিবাদ, বিদ্রোহী কথা

এই ভাবেই বেঁচে থাকা

বিপ্লবদা হবে কবে ? দেখছি নাতো

চারিদিকে বিদ্রোহ, জনম নিয়ে করেছি ভুল

এ পৃথিবী অবাক পৃথিবী ।অবাক হচ্ছি রোজ।।





শিবনাথ মণ্ডল


মিষ্টির হাঁচি


ট্রেনের মধ্যে ভিড়ের মাঝে

উঠলো একটি ফেরিওলা

কাঁধে ঝোলানো জলেরকৌট

হাতে মিষ্টিরথালা।

বাঁ হাতের তালুতে বসানো মিষ্টিরথালা

ঠেলালেগে গেল পড়ে

ট্রেনযাত্রি একটা ফুগলা বুড়ো

ঘুমাচ্ছিল হাঁ করে।

একটা মিষ্টি ছিটকে পড়ল বুড়োরমুখে

বুড়ো বলল কেরেপাজী

কথা শেষ হতেনাহতেই

বুড়োর মুখে উঠল হঁচি।

মুখে থেকে মিষ্টি ছিটকে পড়ল

এক চশমাপড়া ভদ্রলোকের নাকে

আচমকা ফলতেগিয়ে পড়ল

এক মাষ্টার মশায়ের টাকে।

মিষ্টি গেল গড়াগরি

লাগলো লোকের হুরোহুরি

রসভর্তি জামাকাপড় 

করছে সবাই ঝাড়াঝুরি।।