২২ ডিসেম্বর ২০২১

কবি বিশ্বজিৎ মণ্ডল এর কবিতা





বিগ্রহ
বিশ্বজিৎ মণ্ডল


অনিচ্ছায় কতবার চলে গেছি, উপবনে....

তোলপাড় পাথরপরি জানিয়েছিল, আমাদের সংলাপ
ভুল স্বীকার করেই বলি,আদপে প্রেমিক নই
তোমার ডানার করতোয়া রং দেখে
ভুল মেপেছি____ভিক্টোরিয়া...

আসলে সতেরো বছর আগে হারিয়ে ফেলা সুগন্ধি 
রুমালের খোঁজে ,আজ আমি পাথর পাহারাওয়ালা...

রুকসানা রহমান






দু'চোখে যে অন্ধখনি


যতই তুমি থাকো দুরে, ছায়ার মতন জড়িয়ে আছো
আমার সাথে 
নিশুতরাতে চাঁদের ভিতর,
সেদিন কি আর ছিলো তোমার ভালোবাসা  
নেশা-পেশার সাজানো এক যজ্ঞবেদী...!
তবু কেন মন খারাপের জানালাতে দাঁড়াও এসে
নিত্য নতুন আয়না হয়ে...!? 
যতই তুমি অবহেলায় তুচ্ছ করো, আবেগী সব কথার
স্মৃতি বিনাসূতোয় কষ্ট কাহন মালা গাথি গহীন রাতে
থমকে দিয়ে আলগোছেতে খোঁপায় জড়াও
সোহাগ ভরে স্বপ্নে এসে।
লতায়- পাতায়  বাতাস যখন খেলায় মেতে, যায়  চলে যায় অবহেলায়, তাকে তখন বাধঁতে পারে...!

আমিও যে চাই ভুলতে তোমায়, চাইলে কি আর যায়
ভোলা যায়,ততই তুমি আঁকড়ে ধরো।
কোথায় তুমি, ছায়া হয়ে কান্না ভেজা জলে দেখি
ভাসতে ভাসতে যাও হারিয়ে। 
সেইতো কবে মনে আছে, নদীার জলে সন্তরণে
আকুল হয়ে ঢেউয়ের সুরে সুর তোলাতে
কাজল  আখিঁর পাতায় পাতায় কী মমতায় গভীর ভাবে ওষ্ঠ ছুঁয়ে, হারিয়ে যেতে রীতিনীতির দুয়ার ভেঙ্গে। 
অমৃত সেই নেশার ঘোরেই,বলতে শুধু আমার তুমি, তুমি আমার                                      জলজ দেহে কি মহিমায় আকঁতে ছবি
অনুরাগের স্পর্শকতায়।

আমি কেবল রয়ে গেলাম আজও শুধু তোমার হয়ে
এখনও কি  ব্যাস্ত ভীষণ, কি এসে যায় আমার কষ্টে!
 সব কিছু তো তোমার কাছে...ভুলে গেলে এমন করে? 
হয়তো হঠাৎ চলার পথে, দেখা হলে চিনবে তখন...!
বুকের ভিতর চিনচিনিয়ে অনুতাপের ব্যথায় কি সেই
 আগের মতন বাজবে আবার নিঠুর হৃদয়?

হাতটি তখন বাড়াও যদি,  শূণ্য তখন এ হাতখানি
হৃদয়টাও চৈত্রখরা,দু'চোখ ও যে অন্ধখনি 
 কী হবে আর দেখা হয়ে
 আমি যে এক জ্যান্ত মমি...!

মমতা রায় চৌধুরী/৭৪





উপন্যাস 



টানাপোড়েন ৭৪

একান্ত মনোভূমি

মমতা রায় চৌধুরী




রেখা সকাল থেকে একটা মনের ভেতরে আলাদা একটা প্রশান্তির জায়গা খুঁজে নিতে চাইছিল। ওদিকে পার্থর মা মানে মাসীমা আগের থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ধীরে ধীরে ফিরছেন সে দিক থেকে একটু টেনশন মুক্ত আবার এদিকে মনোজ ও  ধীরে ধীরে ক্রমশ উন্নত পর্যায়ে পৌঁছাছে স্বাস্থ্যের দিক থেকে, সে দিক থেকেও মনে একটা আলাদা ভালো লাগার জায়গা তৈরি হয়েছে। শীতের হিমেল হাওয়া গায়ে লাগছে ,তাই এক মুঠো সোনালী রোদ্দুর যেন চাই চাই।তাই ছাদে উঠে আসা। কিন্তু একা একা ভাল লাগছে না ছাদে পায়চারি করতে। 
দোলাচলতায় নিচে নেমে এসে ভাবল ' কি ব্যাপার ,আজকে মিলির বাচ্চাগুলোর কোন সাড়াশব্দ নেই কেন?'
 একটু উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করল। রেখা দেখল "আরে ওরা তো একটার উপর আরেকটা এভাবে শুয়ে আছে। ওদের তো বস্তা পেতে দেয়া হয়েছে। তার পরেও ওদের ঠান্ডা লাগছে।'
 দুধ রুটি খাওয়ার সময় হয়েছে  বলে রেখা সামনের গেটের ছিটকিনিটা যেই না খুলেছে,  ক্যাচ শব্দ কানে যেতেই তিনটে বাচ্চা ছুটে চলে এসেছে। এসেই লেজ নাড়তে শুরু করল আর ওদের ভাষায়' ভোউ ভৌউ..উঃ করতে লাগলো'। কিন্তু লিলিটা বেরোলো না। রেখার সন্দেহ হওয়াতে কাছে গেল ।কাছে গিয়ে লিলিকে কোলে তুলে নিল। দেখল চোখ বুজে আছে।
রেখা  প্রথমে ভাবছে  'কি জানি হয় তো ওর ঘুমোতে ভালো লাগছে ,একটা চোখ খুলে একবার দেখল বটে ।
রেখা মনে মনে ভাবল খাবার দেখলে ওরা সবাই ছুটে আসে আবার কিছুটা অভিমান থাকে কোলে চাপার। কোলে না নিলে ওরা কিছুতেই খেতে আসতে চায় না।
তাই রেখা ওর কাছে গিয়ে বললো' আর ঘুমোতে হবে না ।এসো এবার একটু দুধ রুটি খাও ।'কোলে চেপে বুকের ভেতরে মাথাটা রেখে চুপ করে রইলো।
আজকাল খুব অভিমান হয়েছে ।'ওদের খেতে দিলে প্রথমে কেউ খাবে না কিন্তু গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ওরা প্রত্যেকে এসে হাজির হবে খাবার সময় । অথচ খাবে না। ওদের উপরি পাওনা চাই তবে খাবে।
তখন রেখা ওদেরকে বলল' নে বাবা খেয়ে নে।'
সোনারে বাছারে বলে গায়ে হাত বুলাবে আর এক এক করে কোলে তুলে নেবে ।একজন করে কোলে থেকে নামাবে তারপর তারা খাবে। লিলি  খাবারটা খেলো তারপর আবার ঘরে ঢুকে গেল। কিন্তু মনের ভিতর একটা দুশ্চিন্তা রয়ে গেল, বাচ্চাটার কি হলো?'
রেখা ভাবল 'বেলা বাড়ুক তারপরে দেখা যাবে।'
রেখা বাচ্চাদেরকে খাইয়ে-দাইয়ে সবেমাত্র রান্নাঘরে থালাটা রেখেছে বেসিনে। ঠিক সেই সময় ফোন বেজে উঠলো'ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা..
ফোনটা খাবার টেবিলের কাছে রাখা ছিল, ফলে ফোনটা ধরতে অসুবিধা হয় নি রেখার। একবার রিং হতেই ফোনটাকে রিসিভ করতে গিয়ে দেখে বড়দির ফোন।
রেখা ফোনটা রিসিভ করে বলে 'হ্যালো বড়দি।'
বড়দি বললেন' রেখা 'আমি বড়দি বলছি।'
রেখা বলল 'আমি বুঝতে পেরেছি বলুন'।
বড়দি ওর বললেন '12 ক্লাসের প্রজেক্ট খাতা গুলো দেখা হয়েছে তোমার?'
রেখা বলল 'যারা জমা দিয়েছে বড়দি ।তাদেরগুলো দেখা হয়েছে।
'বড়দি বললেন 'কেন তোমার সব খাতা জমা পড়ে নি?'
রেখা বলল 'না। অনেকেই দেয় নি তো?"
বড়দি বললেন' সে কি? আমায় কিন্তু নম্বর দেবে আগামী সপ্তাহে ।বোর্ডে পাঠাবো।'
রেখা বলল" যারা দেয় নি তাদের কি করবো বলুন?'
বড়দি বললেন 'কিন্তু ঐ খাতাগুলো তো তোমাকে কালেক্ট করতেই হবে রেখা ।যেভাবেই হোক।'
রেখা বলল'দিদি আমি গ্রুপে মেসেজ করেছিলাম?'
বড়দি বললেন'কোন রেসপন্স পাওনি। খাতা জমা দেয় নি।'
রেখা বলল' না দিদি।'
বড়দি বললেন' তাহলে এবার ফোন করো?'
রেখা বলল'তাহলে এবার ফোন করব? দেখি কি হয়?
বড়দি বললেন হ্যাঁ সেটাই করো।:
রেখা বলল 'বড়দি অন্য  সাবজেক্টের কি সব প্রোজেক্ট পেয়েছে?'
বড়দি বললেন 'অনিন্দিতা তো বলছিল ইংরেজি প্রজেক্ট কিছু বাকি আছে?'
রেখা বলল 'ও আচ্ছা ‌আমি ভাবলাম শুধু আমার সাবজেক্টটাই বোধহয় বাকি আছে?'
বড়দি বললেন 'আসলে আমি তোমাকে আগে থেকে ইনফর্ম করলাম । তুমি তো স্কুলে আসছো না ।তোমার ক্ষেত্রে হয়তো অসুবিধা হবে এই জন্য।'
রেখা বলল 'হ্যাঁ দিদি ,ঠিকই বলেছেন।'
বড়দি বললেন' ঠিক আছে। সাবধানে থেকো ।ভালো থেকো। রাখি।'
রেখা বলল" দিদি ,আপনিও খুব ভাল থাকবেন।'
ফোনটা কাটার পর রেখা আপন মনে বলতে লাগল বাপরে বাপ আজকালকার মেয়েদের কোন রেসপন্সিবিলিটি নেই ।ওরা জানে যে প্রজেক্ট নম্বর জমা না পড়লে প্রজেক্টে পাস না করলে বিষয়েও ফেল। এটা কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না।
এরপর মনে হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাতা কালেক্ট করতে হবে।
মনোজ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলল 'তুমি কার সঙ্গে এত কথা বলছ গো?'
রেখা বলল 'আর কার সাথে কপাল চাপড়ে বলল 'কপালের সাথে।'
মনোজ হাসতে হাসতে বলল 'সেই কপালটা চাপড়ে কি বুঝতে পারলে তুমি?"
রেখা বলল 'এই যে ফোন করতে বসব এবার?'
মনোজ বলল 'কাদের ফোন করবে?'
রেখা বলল 'কাদের আবার, ছাত্রীদের।'
মনোজ বললো "ভালোই আছো?'
রেখা বলল' হ্যাঁ ভালোই তো আছি। সমাজের সব মানুষই তো এখন শুধু টিচারদের  দোষারোপ করে।টিচারদের কোন কাজ নেই ,টিচারদের স্কুল নেই। বাড়ি বসে বসে মাইনে আরো কত কিছু।
আমাদের যে কাজের পাহাড় কাকে বোঝাবো বলো?'
রেখা বলল 'এই শোনো তোমার নাস্তা খেয়ে নাও। আমি কিন্তু এখন ফোন করতে বসবো আমাকে ডিস্টার্ব করবে না।'
মনোজ বলল 'ওকে ম্যাডাম'।
রেখা বললো "ঠিকআছে। বসো দিচ্ছি খেতে।'
মনোজ বলল-'এই রেখা আজকের মেনু কি?'
রেখা বলল "বলা যাবে না । এটা সিক্রেট।'
মনোজ খাবার টেবিলে বসে ,রেখা খাবার প্লেটে খাবার বাড়ছে। তখনই গন্ধটা মনোজের নাকে আসলো।
মনোজ বলল "ঘ্রাণে অর্ধভোজন। ঠিক তুমি আমার স্পেশাল মেনু বানিয়েছ মেথিমালাই।'
রেখা বলল 'গন্ধ যখন পেয়ে গেছো ,তাহলে আর সিক্রেট কোথায় ?এই নাও খেয়ে নাও।প্লেটটা মনোজের সামনে রাখলো।
মনোজ বলল 'কতদিন যেন মনে হচ্ছে খাই নি।'
রেখা বললো 'ঠিক আছে নাও। এবার পেট ভরে খাও।'
মনোজ বলল 'এই তোমার খাবারটা নিয়েএসো তো কতদিন একসঙ্গে বসে খাই নি । '
রেখাকে হাত ধরে টেবিলে বসাল।'
রেখা বললো ' না ,এখন আমি খাবো না ।আমি কাজগুলো ততক্ষণ সেরে আসি।'
মনোজ বলল' তুমি না খেলে কিন্তু আমিও খাবো না।'
রেখা বলল  'ধেৎতেরি। মাঝে মাঝে এমন বায়না করো না, ভালো লাগে না।'
একটু বিরক্তি নিয়েই রান্নাঘরে গেল রেখা। তারপর রেখা নিজের খাবারটা নিয়ে চলে আসলে ,প্লেটটা নিয়ে বললো' নাও  শান্তি ,এবার খাও।'
মনোজ বলল" রাগ করছো রেখা ।দুজনে একসাথে আমরা কত গল্প করতাম আর খেতাম। শুধু তোমার আমার একান্ত মনোভূমি ছিল।'
রেখা বলল ' না গো রাগ করি নি।  একটা চাপ রয়েছে না মাথায় ?খাতাগুলো যদি না পাই ,কি করে কি করবো সেটাই ভাবছি।'
খেতে খেতেই রেখার আবার ফোন বেজে উঠলো 'ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা.।
রেখা বললো 'আবার কে ফোন করল ?কে জানে?'
মনোজ বললে'দেখ না ফোনটা কর?
 জরুরি কিছু হতে পারে।'
রেখা ফোনটা রিসিভ করে বলল 'হ্যালো'।
অপরিচিত ব্যক্তি বললেন' হ্যালো ম্যাম আমি সিঁড়ি পত্রিকার সম্পাদক বলছি।'
রেখা বলল 'বলুন?'
সম্পাদক বলেন নমস্কার ম্যাম।'
রেখা বলুন নমস্কার।
সম্পাদক বললেন' আপনার লেখা পাঠাচ্ছেন না তো?'
রেখা বলল 'আসলে লেখা হয়েছে সেটা পাঠানো হয়ে ওঠে নি ।আমি একটু অসুবিধার মধ্যে ছিলাম।'
সম্পাদক বললেন 'এবার পাঠিয়ে দিন ম্যাম? '
রেখা বলল 'হ্যাঁ দেব। আর বলল আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে দিলেই হবে তো?'
সম্পাদক বললেন 'হ্যাঁ আমার ওই নম্বরেই পাঠাবেন।'
রেখা বলল 'ওকে।'
সম্পাদক বললেন' ধন্যবাদ ম্যাম।:
রেখা বলল'আজকে যতটা পারছি পাঠাচ্ছি।'
সম্পাদক বললেন ' ঠিক আছে।'
রেখা ভাবল 'এরমধ্যে আর লেখা হয়ে ওঠে নি, আগের লেখা কিছু আছে, সেগুলোই পাঠাতে হবে। এই জায়গাটাই রেখার একেবারে একান্ত মনোভূমি।
এই স্বাভাবিক স্বচ্ছন্দ জীবনে পৌঁছাতে পারলে প্রয়োজন হয় না বন্ধু বান্ধবীর। নিজেকে মেলে ধরার জায়গা। প্রাণের জায়গা ,খুশির জায়গা।

শান্তা কামালী





বনফুল
(৪৬পর্ব) 
শান্তা কামালী

সৈকত অহনাকে পৌঁছে দিয়ে এসে ডিনার শেষে বললো খালাম্মা আমি কালকে ভোর বেলায় ট্রেন ধরবো। ভোর পাঁচটায় বাসা থেকে বেরোবো, আপনি আবার কোনো রকম কষ্ট করে নাস্তা বানাতে যাবেন না। আমি ট্রেনে উঠে নাস্তা করে নেব।
পলাশের আম্মু বললো আরেকটা দিন থেকে গেলে হতো ভালো বাবা।সৈকত বললো খালাম্মা আমাকে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সব গুছিয়ে আসতে হবে, যত তাড়াতাড়ি যেতে পারবো, আমার জন্য ভালো হবে। পলাশের আম্মু বললেন, আচ্ছা বাবা.....। 

প্রায় ১০ ঘন্টা জার্নি করে পলাশ মাল্টা এয়ারপোর্টে পৌঁছে চেকিং শেষ করে, একটা ক্যাব বুক করে ভার্সিটির হোস্টেলে এসে পৌঁছলো। গাড়ি থেকে জিনিসপত্র নামিয়ে রুমে ঢুকে দু'জন রুমমেটের সাথে  পরিচয় পর্বে জানতে পারলো একজন ইন্ডিয়ান। ভালোই হলো,মালপত্র এক সাইডে গুছিয়ে রেখে ওয়াশ রুমে ঢুকে শাওয়ার করে এসে দশ মিনিট রেস্ট নিয়ে ব্যাগ থেকে  কিছু খাবার বের করতে যাবে তখনই ইন্ডিয়ান রুমমেট রাহুল বললো, আমরা আছি আর তুমি কি না ড্রাই ফুড খেয়ে থাকবে এ আবার হয় নাকি! চলো আমাদের সাথে খাবে, পলাশ ভদ্র ছেলের মতো  ওদের সাথে বসে খাবার খেলো।তবে হঠাৎ অন্য দেশের খাবারের স্বাদ খুব একটা ভালো লাগেনি.....  তবুও খাওয়ার জন্য খাওয়া।

জুঁইয়ের ঘুম ভাঙ্গলো নয়টায়। হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে নেমে এলো। জুঁইয়ের আব্বু আম্মু ওর জন্য অপেক্ষা করছিলো। ওকে দেখতে পেয়েই ময়না টেবিলে নাস্তা  পরিবেশন করলো।
জুঁই বাবা-মার সাথে বসে বেশ ভালো করে নাস্তা খেলো। ময়না কফির ট্রে টেবিলে রাখতেই জুঁই ওর কফির মগ টা নিয়ে সোফায় বসে কফি খাচ্ছে, এমন সময় হঠাৎই জুঁইয়ের ফোন বেজে উঠল আন-নোন নাম্বারের থেকে কল এসেছে। ভয়ে ভয়ে রিসিভ করতেই পলাশের গলা!  অমনি জুঁই পাগলের মতো প্রশ্ন করতে লাগলো তুমি ঠিক ভাবে গিয়ে পৌঁছেছো তো? কিছু খেয়েছো,না-কি এখনো খাওনি? 
পলাশ বললো, জুঁই আমি ঠিক ভাবে পৌঁছে শাওয়ার করে নাস্তা খেয়ে তবেই তোমাকে ফোন দিচ্ছি। এখন  বলো জুঁই তুমি কেমন আছো? 
উত্তরে জুঁই বললো আলহামদুলিল্লাহ....
একবার আন্টি বা আঙ্কেলকে ফোনটা  দাও তো।
 জুঁই বাবা-মার কাছে ফোনটা দিয়েছে,স্পিকার অন করে দুজনেই কথা বললেন। জুঁইয়ের মা মনোয়ারা বেগম বললেন বাবা  যেতে তোমার কোনো সমস্যা হয়নি তো? পলাশ বললো জ্বি, না আন্টি। জুঁইয়ের বাবা পলাশকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তোমাদের বাসায় ফোন দিয়েছিলে?  পলাশ জ্বি, না আঙ্কেল, আপনাদের থেকে ফোন রেখেই বাসায় ফোন দিচ্ছি।  ওয়াজেদ সাহেব বললেন আমি রাখছি তুমি আগে বাসায় ফোন দাও। এই বলে জুঁইয়ের বাবা ফোন কেটে দিলেন।



চলবে...

শামীমা আহমেদ/পর্ব ৩৭






শায়লা শিহাব কথন
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৩৭)
শামীমা আহমেদ 





রাহাত আরো একদিন অফিস ছুটি বাড়িয়ে নিল। একটি কর্পোরেট অফিসে রাহাতের এটাই প্রথম জব চলছে। তা প্রায় বছর দুই হয়ে এলো। ছুটি নেবার মত কখনো এমন কোন সিরিয়াস বা ইমার্জেন্সি  প্রয়োজন পড়েনি। এবারই প্রথম আপুর জন্য ছুটি নেয়া।  শায়লার জন্য রাহাত  অন্তত এটুকু করতে পেরে নিজের উপর কিছুটা দায়িত্ববোধ হালকা করলো।
আপুর রুমটা ঠিকঠাক করে দিতে হবে। একটি  ইলেকট্রনিক্স শোরুমে কথা বলে  রাহাত ঘরে বসেই  একটা ছোট এসি শায়লার রুমের জন্য অর্ডার করে দিল। ওদের কোম্পানির লোক এসে সেটা সেট করে দিয়ে গেলো। শায়লার রুমের লকটা ঠিক করা হলো। রাহাত এবার বেশ উঠেপড়েই লেগেছে। শায়লার মনে যেন সবসময় একটা নিরাপত্তাবোধ কাজ করে রাহাত সে ব্যাপারটা নিশ্চিত করবে। সবশেষে দুজন লেবার গোছের লোক আর বাসার দাড়োয়ান নিয়ে আপুর রুমের জিনিদপত্রগুলোর একটু জায়গা পরিবর্তন করে দিলো। শুধু শায়লার আপত্তিতে রুমের খাটটা সরানো হলোনা। খাটটা ঠিক জানালার পাশে আছে। শায়লা বিছানায় শুয়ে শুয়ে জানালার পর্দা সরিয়ে আকাশ দেখে,পাখি দেখে মেঘ, বৃষ্টি,  চাঁদ দেখে, রাতের আঁধার দেখে, দিনের উজ্জ্বল  আকাশ থেকে ! রাহাত ভাবলো আপুর রুমের জন্য শীত আসবার আগেই একটা কার্পেট বসিয়ে দিবে। মোটামুটি রুমটা গোছানো হয়ে গেলে নতুন এসি ছেড়ে ভাইবোন খোশ গল্পে নেতে উঠল, যাক ! শায়লা এখন একেবারেই স্বাভাবিক হয়েছে। মা বেশ একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো । যে ভয় লাগিয়ে দিয়েছিল মেয়েটা ! 
রাহাত মায়ের কাছে দুই কাপ চা পাঠিয়ে দেয়ার বায়না করে মূলত রুম থেকে মাকে  সরিয়ে দিলো।রাহাতের ইচ্ছা আপুকে হালকাভাবে জিজ্ঞেস করে শিহাব সম্পর্কে  টুকটাক কিছু জানতে চাইবে।খুব ডিটেইলড কিছু না।আপুর প্রাইভেসীটাও মেইন্টেইন করতে হবে। 
ভাইবোন আলাপচারিতায় মেতে উঠলো। খুব হালকাভাবেই রাহাত জানতে চাইল,আচ্ছা আপু তুমি যখন অসুস্থ ছিলে মিঃশিহাব নামে একজন ভদ্রলোক বারবার তোমার খোঁজ নিচ্ছিল। তোমাকে দেখতেও আসতে চাইছিল। কিন্তু দ্রুতই তোমার রিলিজ হওয়াতে আর আসা হলো না ! রাহাত একটু বাড়িয়েই বললো।জানতে চাইল,আচ্ছা আপু
আমি কি  উনাকে চিনি ? কখনো দেখেছি কি ?
শায়লা হঠাৎ শিহাবের এমন প্রসঙ্গে একটু বিব্রতবোধ করলো। আর ভেবে অবাক হলো শিহাব নিয়মিত তার খোঁজ নিয়েছে? ছিঃ আর আমি তার সম্পর্কে কি না কি ভেবেছি !
যদিও এই অসুস্থতা পুরোটাই শিহাবের সেদিনের কথার কারনে হয়েছে  কিন্তু সবতো আর রাহাতকে  বলা যাবে না। শায়লা চাইবে না তার  ভাইয়ের কাছে শিহাবকে কোনভাবে ছোট করতে। আর তা ছাড়া শিহাবতো সে ধরনের মানুষ নয়। শায়লা 
শুধু হাল্কা স্বরে বললো, এইতো ফেসবুক ফ্রেন্ড। ফেসবুকে পরিচয়, তিন মাস হলো পরিচয় ।রাহাত বুঝে নিলো, তাহলে আপুর  বিয়ের পরে এ সম্পর্ক ।  তাহলে নোমান ভাইয়ের সাথে কী শায়লার যোগাযোগে নেই? এ কেমন কথা হলো ! আপু বিয়ের পরেও এমন সম্পর্কে  কেন জড়ালো।নাহ! এটা আপুর একেবারেই ঠিক হয়নি ।
আপু উনি কি করেন ? 
একে একে রাহাতের সকল প্রশ্নের উত্তর শায়লা অবলীলায় দিয়ে গেলো। রাহাত অবাক হলো ,সম্পর্ক তবে তো অনেকদূর গড়িয়েছে। শায়লা ইচ্ছে করেই শিহাব সম্পর্কে সবটাই জানালো।কিছুই লুকালো না। আসলে শায়লাতো এটাই চাইছে সবাই শিহাবের কথাটা জেনে যাক, নাহ ! শায়লার শিহাবকে নিয়ে আর কোন লুকাছাপা করবে না। সম্পর্কটা যে এখন শিহাবের ইচ্ছায় বন্ধুত্বে দাঁড়িয়েছে সেটাও বুঝিয়ে
দিলো । যদিও শায়লা খুবই একান্তভাবে শিহাবকে নিজের করে পেতে চাইছে কিন্তু সেটা আড়ালেই রেখে দিলো।তবে রাহাতের বুঝতে একটুও কষ্ট হলোনা যে, আপু ভীষণভাবে  শিহাব সাহেবের ঘোরের মধ্যে আছে । তাকে একান্তে  পেতে চাইছে ।খুবই  মুশকিল হবে এ সম্পর্ক থেকে আপুকে বের করে আনা। কিন্তু কানাডার বিষয়টির কী হবে? কেমন করে সেটা এভয়েড করবে বা আদৌ কি তা করা সম্ভব? যদিও এমন ঘটনা যে একেবারে ঘটে না তা নয়! কত প্রবাসীইতো নতুন বউ রেখে যায় আর বউ আরেকজনের সাথে প্রেম করে পালিয়ে যায়।অবশ্য রাহাত এতে দোষ দেখেনা।বিয়ে করা নতুন বউয়ের তো একা থাকা সম্ভব না একেবারেই। 
ওদিকে শিহাব সাহেবের কথাও শুনতে হবে।সে কি চাইছে?  আপুকে নিয়ে তার ভাবনাটা কি ? আপু যে বিবাহিতা সেটা উনি জানেন কিনা? তবে ফিলিংস্টা যে বেশ গভীরে সেটা বুঝাই যায়। খুবই সিরিয়াস হয়ে গেছে ব্যাপারটা। আত্মীয়স্বজনেরা তো ছিঃছিঃ করবে। তা করুক !  রাহাত এ ক্ষেত্রে একেবারেই লিবারেল।  যে কোন মূহুর্তেই মানুষ  কারো প্রেমে পড়তে পারে।তখন হয়তো নিজেদের পিছন বা অতীতটা আর ভাবা হয় না। 
মা চা নিয়ে এলো।  সাথে পাপড় ভাজা। শায়লা জানে শিহাবের খুব পছন্দ এই পাপড় ভাজা। শিহাবের কথা মনে হতেই শায়লা বলে উঠলো, আচ্ছা আমার মোবাইলটা কোথায় ? 
রাহাত বুঝতে পারলো এটা শায়লার শিহাবের জন্য আকুলতার কারনে! নয়তো এখন মোবাইল কোন জরুরি বিষয় নয়। 

রাহাত সরাসরিই জানতে চাইল,আচ্ছা আপা শিহাব সাহেব কেমন মানুষ ? শায়লা কথাটা শুনে  বেশ চমকে গিয়ে চোখ তুলে তাকালো। 
কিছুক্ষন নীরব থেকে বললো, শিহাব খুব ভালো একটা ছেলে রাহাত । ওর একটা কষ্টের অতীত আছে।আমাকে সবটাই বলেছে । আমরা এখন খুব ভালো বন্ধু হয়েছি । আমার সবকিছুই সে জানে ।
ওহ! রাহাত একটু আশ্বস্ত হলো । তাহলে শিহাব সাহেব যেহেতু সবই জানেন তবে আপার কানাডার ব্যাপারে আর কোন পিছুটান রইল না।  শায়লা চায়ে চুমুক দিলো।রাহাত চা খেয়ে বললো, আপু, তোমার  ফোনটা আমার রুমে । ফোনে একেবারেই চার্জ ছিল না তাই চার্জে দিয়েছি । শায়লা একটু টেনশনে পড়ে গেলো মন হচ্ছে ।কিন্তু রাহাত চাইছে না এখুনি আপার হাতে ফোনটা দিতে ।
চার্জ হলে মোবাইল আমি নিজেই দিয়ে যাবো।চা শেষ  করে রাহাত শায়লাকে এসি চালানোয় রিমোটের  নিয়মকানুনগুলো বুঝিয়ে দিয়ে রুম থেকে বেরুলো আর ভেবে নিল আজ বিকেলেই শিহাব সাহেবকে কল দিবে। তার কথাতেই বুঝা যাবে আসলে সম্পর্কটা কতদূর গড়িয়েছে,, একদিকে একজন সেন্সলেস হচ্ছেন আরেকদিকে উৎকন্ঠায় আরেকজন বারবার ফোন করেই যাচ্ছিল! হু বুঝা যাচ্ছে,,, ডাল মে কুচ কালা হ্যা !



চলবে...

জাবেদ আহমেদ




চাঁদের কণা ধরায়


না জানি এই আদরের লিলায় কোন উত্তাল সাগরে আমি ডুবি নাজানি!
কবির কলমে কেন বারবার তোমার অপরুপ মুখখানি। 
এই কেমন অনুভূতির খোয়াবে খোলা চোখে শুধুই তোমারে দেখি!
না জানি কোন পাষন্ডের রাজ্যে আমি আছি
না জানি !
সবুজে ঘেরা অবণ্যের মাঝে বনলতার সন্ধানে আমি না জানি ।
কত দুর্গম গিরিখাতের পাড়ি দিয়ে তোমার আশায় বাধি নীড় নীড়পাতায় না জানি!
কত অসীম তোমার দুরত্ব না জানি !
আমার শৈশবের দেখা নন্দিনী 'র মত কেন তুমি নাজানি কোন দুঃদর্শ যুদ্ধের সমুক্ষে আমি নাজি কোন কিয়ামতের নমুনা তুমি নাজানি।ওগো চাঁদের বুড়ি এক টুকরো ঝড়ে পড়েছ কেন ধরায় না জানি।

মোঃ হা‌বিবুর রহমান/১১ তম পর্ব 




ইউএন মিশ‌নে হাই‌তি‌তে গমন 
( ১১ তম পর্ব ) 
মোঃ হা‌বিবুর রহমান

আজ লেখার শুরু‌তেই মন‌কে বললাম, "হে ‌মোর মন আর কত পর্ব পর্যন্ত তু‌মি খুড়ি‌য়ে খুড়ি‌য়ে চ'লবা? মন ব'ল‌লো এইভা‌বে যায় যত‌ দিন। ম‌নের ভিত‌রে অন্য মন‌টি ব'ল‌লো, আর কত‌ দিন? অ‌নেক‌ তো লিখ‌ে‌ছো, এবার এ যাত্রায় দেওনা কিছু সময় ক্ষ্যামা? অপর মনটি ব'ল‌লো, কই আর এত‌ দিন, চলছে চলুক না কেন, এ‌কেবা‌রে শেষ ক‌রো মিশন আব‌ধি। মিশন শে‌ষে ফির‌তি ফ্লাইট দি‌য়ে টা‌নো ই‌তি; যেখান থে‌কে তুমি ক‌'রে‌ছি‌লে শুরু সেই ব‌ঙ্গদে‌শের রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জা‌তিক বিমান বন্দর নামে খ্যাত স্থান‌টি‌তে ফি‌রে এ‌সে হও ত‌ু‌মি ক্ষান্ত। 

অন্য মন‌টি বল‌লো, মন্দ নয় যেন প্রস্তাবটি, একেবা‌রেই যেন খাসা, কিন্তু এত সময় পা‌বে তু‌মি কোথা? স‌ত্যিই তো দে‌বে কি  কেউ আমায় অমূল্য সময় ধার? কার অন্ত‌রে আ‌ছে এত দয়া, কে আমায় দি‌বে অ‌তি মূল্যবান ‌সেই সময়টি ধার? কা‌জেকা‌জেই অব‌শেষে নিলাম সিদ্ধান্ত, শেষ ক'র‌তেই হ‌বে যে‌কোন প্রকা‌রেই আজ। আর যেই কথা যেন সেই কাজ। কে‌টেশে‌টে একদম ক'রলাম শর্ট, ফেইস বু‌কের এক বন্ধু ব‌লেছি‌লেন মো‌রে, হয় যেন অ‌তি সুন্দর আপনার শেষ পর্ব খা‌নি।

যা‌হোক, ‌মেজর সাখাওয়াৎ (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত), আমা‌দের জন্য ম‌নোব‌ল রক্ষার যেন একটা রক্ষা কবজ হি‌সে‌বে আ‌বির্ভূত হ‌'লেন। তা‌কে ‌দেখ‌লেই আইএস‌ডি টে‌লি‌ফো‌নের কথা সর্বদা ম‌নে পড়ে যে‌তো। একজন অত্যন্ত আন্ত‌রিক ও দয়াল‌ু অ‌ফিসার যা‌কে কোন কে‌ান সময় দে‌খে‌ছি নি‌‌জের ভা‌গের তিন মি‌নিটকালও তি‌নি আমা‌দেরকে দি‌য়ে বলে‌ছেন যে, "স্যার, আমার নি‌জের জন্য বরাদ্দ তিন মি‌নিট আপনার জন্য, আপ‌নি এখনই বাংলা‌দে‌শে আপনার প‌রিবা‌র ও আপনজন‌দের সা‌থে কথা বলুন"। 

যা‌হোক, এক এক ক‌'রে প্র‌তি‌দিনই আমা‌দের‌কে তারা মি‌লিটারী কলা-কে‌ৗশল ও মি‌লিটারী অপা‌রেশন সম্ব‌ন্ধে বৃ‌টিশ রয়াল আ‌র্মি ও ইউএসএ আর্মির অত্যন্ত যোগ্য ও চৌকস মি‌লিটারী অ‌ফিসারগণ তা‌ত্ত্বিক ও ব্যবহা‌রিক দিকটা শিক্ষা দি‌তেন। এই সময় মহড়ার মাধ্য‌মে মা‌ঝে-মা‌ঝেই বিষয়টি আরও সম্যক প‌রিস্কার ক‌'রে দি‌তেন। এধর‌নের কলা-‌কৌশল আমা‌দের জন্য নতুন কিছু না হ‌'লেও তা‌দের কারো কা‌রো ব্য‌ক্তিগত অ‌ভিজ্ঞতাগ‌ুলো আমা‌দের জন্য অবশ্যই অনুকরণীয় ও শিক্ষণীয় ছিল। 

আস‌লে কথায় ব‌লেনা "বিদ্যা বড় অমূল্য ধন" আর এই বিদ্যা শিক্ষার যেন শেষ নেই। প্র‌তি‌টি মূহু‌র্তে যে কোন বয়‌সেই যে কোন বিষয় শেখা যায় আর‌কি! দুপুর দু'টার পর আমরা ক্লাস শে‌ষে সম্পূর্ণ ফ্রি হ‌'য়ে যেতাম। মজার সময়টা ঠিক তখন থে‌কেই শুরু হ‌তো। আমরা ঝ‌টিকা গতি‌তে মি‌লিটারী পোষাক পা‌ল্টি‌য়ে (আমা‌দের জন্য এ‌সি লি‌মি‌টেড বাস প্রস্তুতঃ থাক‌তো) আর আমরা এই বা‌সে ছওয়ার হ‌'য়ে সোজা ভু-করে এ‌ দে‌শের রাজধানী এ‌কেবা‌রে সান‌জোয়া‌নে পৌঁ‌ছে যেতাম। 

প্র‌শিক্ষণ কেন্দ্র, ক্যাম্প সা‌ন্টিয়া‌গো থে‌কে রাজধানী যতদূর ম‌নে প‌ড়ে ৬০ মাইল কিংবা ৯৬ কি‌লোঃ এর মত হ‌বে বোধ হয় হ‌বে। এক ঘণ্টার‌ও কম বাস ভ্রমণ। রাস্তার দু' পা‌শের নয়না‌ভিরাম দৃশ্য দেখ‌তে দেখ‌তে কখন যে ঠিক রাজধানী, সান‌জোয়া‌নে পৌঁছে যেতাম তা কোন‌দিনই টের পাই‌নি।

চলবে....

অলোক দাস




লিপি 

 


  মানব ও মানবী সম্পর্ক মানেই বিধিলিপি I 
সম্পর্ক তৃতীয় নয়নের খোঁজে - যা মেলে না, 
তাই তৃতীয় সম্পর্কে মিলে যায় I 
যা অচিনকে চিনে নেয় I 
অব্জ্ঞা, আঘাত না পাওয়ার বেদনা থেকেই I 
আপেল কেড়ে নেয় তৃতীয়া নয়ন I 
হয়তো এটাই প্রকৃতির ধৃষ্টতা I 
এ এক জটিলতা I 
শ্রীস্ট্রিকারিও জানেন না, এ তৃতীয়া নয়নের চতুরতা I

সেলিম সেখ

  



শীত



গ্রীষ্ম অতিবাহিত হয়ে
আসলো যে শীত, 
তাইতো আজ ধরেছি মোরা
সাম্যের সেই গীত। 

শীতের ওই দখিন হাওয়ায় 
কেঁপে ওঠে মোদের বুক,
প্রাণীরা সব যায় যে বাসায়
থাকে না মনের সুখ।

শীতের সকালের রোদ
লাগেজে ভারী মিষ্টি,
সন্ধ্যাবেলায় কাঠের আগুনে
যায় যে সকলের দৃষ্টি।

শীতের ওই মোটা পোশাক
পরেছি মোদের অঙ্গে,
বেরিয়েছি যে শীতের রাতে
ভয় নেই কাঁথা আছে সঙ্গে।

শীতের ওই খেজুর রস
যেই পড়েছে পেটে সকালে, 
হাড় কাঁপানো শীতের দিনে 
প্রাণ যায় যেন অকালে। 

শীতের সকালে খাওয়ার শেষে
ছুটে চলি আগুনের কাছে,
হাত পাখানা সেঁকে নিয়ে
মনরে বলি লেপ-কম্বল আছে।

শীতের নিশি কাল রাতে
চলি যখন আমি একা,
রাস্তা থাকে পুরো ফাঁকা
পাইনা যে কারো দেখা।

শীতের সকালের ঘন কুয়াশায়
যায় না যে কিছু দেখা, 
কুয়াশা থেকে ধোঁয়াশা হয়
হল যে মোদের শেখা। 

শীতের সব শাকসবজি
সবুজ করেছে মাঠ কে, 
শীতের ওই শাকসবজি
ভরিয়ে তুলেছে হাট কে।

শীতের দিনের সকালের সেই 
ধুকি পৌষ পিঠার কথা, 
ভুলিবো কেমনে সেই স্বাদ
মনে আছে যে গাঁথা। 

তাইতো বলি ওরে ভাই
করিও না শীতকে হেলা, 
গ্রীষ্মের পর শীত আসে
এত ঋতুর সব খেলা। 

কপিল কুমার ভট্টাচার্য্য

 

     



       নতুন দিনের প্রতীক্ষায় 
     

        সাঁঝের পাখি ফিরছে বাড়ি 
         সন্ধ্যা হয়ে এল,
         সারাদিনের ক্লান্ত রবি                   
         অস্তাচলে গেল--------
         পথিকেরা ফিরছে ঘরে
         ফিরছে পশুর পাল, 
         বাসায় ফিরে রাত কাটিয়ে 
        বেরোতে হবে কাল ,
       উঠবে আবার নতুন সূর্য্য 
       আসবে নতুন দিন 
       জাগবে মনে আশার আলো
       কেউ হবে না ক্ষীণ ।।