ইউএন মিশনে হাইতিতে গমন
( ১১ তম পর্ব )
মোঃ হাবিবুর রহমান
আজ লেখার শুরুতেই মনকে বললাম, "হে মোর মন আর কত পর্ব পর্যন্ত তুমি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চ'লবা? মন ব'ললো এইভাবে যায় যত দিন। মনের ভিতরে অন্য মনটি ব'ললো, আর কত দিন? অনেক তো লিখেছো, এবার এ যাত্রায় দেওনা কিছু সময় ক্ষ্যামা? অপর মনটি ব'ললো, কই আর এত দিন, চলছে চলুক না কেন, একেবারে শেষ করো মিশন আবধি। মিশন শেষে ফিরতি ফ্লাইট দিয়ে টানো ইতি; যেখান থেকে তুমি ক'রেছিলে শুরু সেই বঙ্গদেশের রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নামে খ্যাত স্থানটিতে ফিরে এসে হও তুমি ক্ষান্ত।
অন্য মনটি বললো, মন্দ নয় যেন প্রস্তাবটি, একেবারেই যেন খাসা, কিন্তু এত সময় পাবে তুমি কোথা? সত্যিই তো দেবে কি কেউ আমায় অমূল্য সময় ধার? কার অন্তরে আছে এত দয়া, কে আমায় দিবে অতি মূল্যবান সেই সময়টি ধার? কাজেকাজেই অবশেষে নিলাম সিদ্ধান্ত, শেষ ক'রতেই হবে যেকোন প্রকারেই আজ। আর যেই কথা যেন সেই কাজ। কেটেশেটে একদম ক'রলাম শর্ট, ফেইস বুকের এক বন্ধু বলেছিলেন মোরে, হয় যেন অতি সুন্দর আপনার শেষ পর্ব খানি।
যাহোক, মেজর সাখাওয়াৎ (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত), আমাদের জন্য মনোবল রক্ষার যেন একটা রক্ষা কবজ হিসেবে আবির্ভূত হ'লেন। তাকে দেখলেই আইএসডি টেলিফোনের কথা সর্বদা মনে পড়ে যেতো। একজন অত্যন্ত আন্তরিক ও দয়ালু অফিসার যাকে কোন কোন সময় দেখেছি নিজের ভাগের তিন মিনিটকালও তিনি আমাদেরকে দিয়ে বলেছেন যে, "স্যার, আমার নিজের জন্য বরাদ্দ তিন মিনিট আপনার জন্য, আপনি এখনই বাংলাদেশে আপনার পরিবার ও আপনজনদের সাথে কথা বলুন"।
যাহোক, এক এক ক'রে প্রতিদিনই আমাদেরকে তারা মিলিটারী কলা-কৌশল ও মিলিটারী অপারেশন সম্বন্ধে বৃটিশ রয়াল আর্মি ও ইউএসএ আর্মির অত্যন্ত যোগ্য ও চৌকস মিলিটারী অফিসারগণ তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিকটা শিক্ষা দিতেন। এই সময় মহড়ার মাধ্যমে মাঝে-মাঝেই বিষয়টি আরও সম্যক পরিস্কার ক'রে দিতেন। এধরনের কলা-কৌশল আমাদের জন্য নতুন কিছু না হ'লেও তাদের কারো কারো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের জন্য অবশ্যই অনুকরণীয় ও শিক্ষণীয় ছিল।
আসলে কথায় বলেনা "বিদ্যা বড় অমূল্য ধন" আর এই বিদ্যা শিক্ষার যেন শেষ নেই। প্রতিটি মূহুর্তে যে কোন বয়সেই যে কোন বিষয় শেখা যায় আরকি! দুপুর দু'টার পর আমরা ক্লাস শেষে সম্পূর্ণ ফ্রি হ'য়ে যেতাম। মজার সময়টা ঠিক তখন থেকেই শুরু হতো। আমরা ঝটিকা গতিতে মিলিটারী পোষাক পাল্টিয়ে (আমাদের জন্য এসি লিমিটেড বাস প্রস্তুতঃ থাকতো) আর আমরা এই বাসে ছওয়ার হ'য়ে সোজা ভু-করে এ দেশের রাজধানী একেবারে সানজোয়ানে পৌঁছে যেতাম।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ক্যাম্প সান্টিয়াগো থেকে রাজধানী যতদূর মনে পড়ে ৬০ মাইল কিংবা ৯৬ কিলোঃ এর মত হবে বোধ হয় হবে। এক ঘণ্টারও কম বাস ভ্রমণ। রাস্তার দু' পাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে ঠিক রাজধানী, সানজোয়ানে পৌঁছে যেতাম তা কোনদিনই টের পাইনি।
চলবে....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much