১৬ জানুয়ারী ২০২১

দেবব্রত সরকার


আমি এক নিরবিচ্ছিন্ন হাহাকার 


আমি এক নিরবিচ্ছিন্ন হাহাকার 

তাকে খুঁজি তাকে খুঁজি 

বয়স বেড়েছে তার

মিল নেই শরীরীপোশাকে 

মিল নেই ভাষা ভাঙাতাপে  

মিল নেই চোখচামড়াতে 

মিল নেই আমাতেতোমাতে 

তবু ফিরি এ হৃদয়ে বারবার 

কেন সব  ডাকাডাকি দল 

কেন সব করো কোলাহল 

কেন ভয় রক্তবিন্দুতে 

কেন ভয় জাতপাত হাতে 

কেন ভয় ঘাসফুলে ফুলে 

কেন ভয় পদ্মফুল তুলে 

সব ভুলে এসো জনগণ 

এক সাথে করি এক মন 

সব কথা ভেঙে করি ছারখার 

আমি এক নিরবিচ্ছিন্ন হাহাকার

আশিস চক্রবর্তী



প্রতিশ্রুতি


এখনো ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড়ে তোমার উপস্থিতি

 শরীরের ওপর চড়ে শোনাচ্ছো বাসি প্রতিশ্রুতি।


তোমার মঞ্চের তলায় রোদহীন হলদেটে ঘাস।

অমূল্য কার্পেটে হারিয়েছে সহস্র মানুষের শ্বাস।


বিশাল সম্ভাবনায় লেগেছে আজ মড়কের ঘ্রাণ

ছেঁড়া পকেটের নীচে ধুঁকছে ভবিষ্যতের প্রাণ।


দুর্গন্ধের মতো শোনায় তোমার সমস্ত ভাষণ।

অজান্তে উধাও দেখো তোমার সাধের আসন।


তোমার উদ্ধৃত দৈব বাণী যেন ধ্বংসের পরিচয়

তোমার হাতের রেখায় লেখা আসন্ন পরাজয়।


দিকে দিকে ওই শোনা যায় সময়ের ভ্রুকুটি

ভাগাড়ে শকুনের মতো ওড়ে বাসি প্রতিশ্রুতি।

জি এম কাউসার আলী (অষ্ট্রেলিয়া)




সেঁজুতি তোর প্রেম


সেঁজুতি তোর মনের সাদা ক্যানভাসে

আমার তুলির নতুন টান কি অনেক আসে?

রঙের উপর রঙ পরে রোজ রঙিন হলি

ঝাপসা হতে রঙিন করে তোর জলকে!

আমার রঙ্গিলা রঙ পড়ে কি ?

তোর মনের ওই ক্যানভাসে?

মন পাখি ঝাপসা হয়ে 

তোর রঙিন ঠোঁটে ঠোঁট ঘসে!!

সেঁজুতি তোর বৃষ্টি ভেজা 

শরীর যদি দেখতে পেতাম?

স্বপ্ন বুকের নরম রাতে 

তোর বুকে সব হারাতাম।

তোর হাসিতে মুক্ত ঝরে

কাঁদলে ঝরে মানিক;

চাঁদের গায়ে জোৎস্না লাগে

তোর কাছেতে ক্ষণিক!

আর পারিনা সেঁজুতি;

তুই একটিবার তো সামনেতে আয়

পরাণ হিয়া কুকড়ে কাঁদে,

তোকে দেখার পরম আশায়!!

বিশ্বাস কর সেঁজুতি?

তোর রূপ সাগরে রোজই ভাসি।

আর কিছু নয়, শুধু একবার বল?

আমি তোমাকে ভালোবাসি।

মোঃ হা‌বিবুর রহমান


 য‌দি এমন হ‌'ত


‌নিরালা ব‌'সে ব‌'সে ভাবি আ‌মি সদা

দিনরাত সমান হ‌'লে হ‌'ত কত মজা!

সূ‌র্য্যি মামা দি‌'ত কিরণ বার‌টা ঘন্টা,

বার ঘন্টা অন্ধকা‌রে থা'ক‌ত ধরাটা।


হ‌'ত মজা বেশ সব‌দে‌শেই দিনরাত,

সমান য‌দি হ‌'ত না হ‌'য়ে তা ফারাক।

আহা! কি মজা না হ‌'ত ফোন ক‌'রে,

কথা ব‌লে আ‌ছে যারা দূ‌র প্রবা‌সে।


ঈদ হ'ত একদি‌নে ম‌ুস‌লিম উ'ম্মার,

দূর হ'ত বি‌ভেদ ম‌ন-মান‌সিক'তার। 

হয়‌ত তা হবার নয় ধরাটা যে গোল,

স্রষ্টাই পা‌রেন এ সমস্যার উৎপাটন।

মমতা রায়চৌধুরী

 



এখনো ভালোবাসা আছে


এখনো ভালোবাসা আছে

 বেঁচে আছে আমার সেই

পৌষের উঠোনে মিঠে রোদ্দুর।

মাঝে মাঝে হাতছানি দিয়ে

 রাজপুত্তুর ডাক দিয়ে যায়,

ঠাকুমা -দিদার রূপকথার গল্পে।

গ্রাম্য নিকানো উঠোন ভেসে ওঠে

মায়াবী আবেশ রচনা করে।

শহুরে সভ্যতায় ফিকে হয় নি,

মেয়েবেলার ভালোবাসার স্বাদ, অকৃত্রিম অনাবিল গন্ধ।

আজও অনুরণিত করে

মনের গভীরে ঝড় তোলে

ভালোবাসার মেয়েবেলা।

শাহীন রহমান




ভেজা চোখ 


হাসি আমার দেখুক হাজার জনে,

অশ্রু আমি লুকিয়ে রাখি নিজে ! 

কান্না এলে প্রাণটা খুলে কাঁদি,

মুশল ধারার বৃষ্টি জলে ভিজে !! 


প্রাণের দোসর পারিসনি তো হতে,

তাতে আমার হয়নি ক্ষতি কিছু ! 

ছল করা মুখ লুকিয়ে ফেলিস তুই 

সামনে এলেই মুখ হয়ে যায় নিচু !! 


এই নয়ন ভরা একটা নদী জল,

সে জল আমি লুকিয়ে রাখি নিজে  । 

কান্না এলে পরাণ খুলে কাঁদি, 

বর্ষা দিনের বাদল জলে ভিজে। 


অশ্রু আমার কেউ দেখেনা কভু, 

এই হৃদয়ে গভীর নিরব কাঁদন ! 

আপন ভাবা সেই মানুষটা তুই 

ঘাতক হয়ে ছিড়লি মায়ার বাঁধন !!

ইকবাল বাহার সুহেল ( ইংল্যান্ড )

 



বিরল বরণ


তোকে ছেড়ে এসেছি 

ফেলে এসেছি অনেক দূরে

যেতে হবে বলে যাইনি ছেড়ে আসিনি ছুড়ে 

শান্ত-অলস-সুন্দরের তপোবন যেন গান লিখে সুরে সুরে। 


চোখের পাতা জুড়ে 

কোনো জানি তাড়াহুড়ো নেই এমন

তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছি যেমন

জীবনের এই মধু ক্ষণে

বিচিত্র তোর বিরল বরণ শুধুই কাছে টানে। 


কে যেন দূর থেকে বলে মোরে

চিনতে চেয়েছি প্রেম নতুন করে 

তোকে ছেড়ে এসেছি 

ফেলে এসেছি অনেক দূরে

যেতে হবে বলে যাইনি ছেড়ে আসিনি ছুড়ে 

শান্ত-অলস-সুন্দরের তপোবন যেন গান লিখে সুরে সুরে।

মোঃ রুহুল আমীন




আমরা মধ্যবিত্ত


ধোপা কাচানো শার্ট গায়ে

কালি করা স্যান্ডেল পায়ে

চশমাটা তুলে ঐ কপালে,

কিন্তু আসল কথাটি যাবেনা

বলা, আমরা মধ্যবিত্ত বলে।


করতে হবে বাজার ঘাট

মানিব্যাগটা গড়ের মাঠ

গিন্নির ফর্দ নিলাম তুলে,

কিন্তু সত্য কথাটি পারিনা

বলতে, আমি মধ্যবিত্ত বলে।


চাল ডাল আর নুন তেল

দাম বাড়ে সকাল বিকেল

দু'চোখ ভেজে তপ্ত জলে,

তবু খাটি কথাটি পারিনা

বলতে, আমি মধ্যবিত্ত বলে।


সহধর্মীনি করে প্যান প্যান

ছেলে মেয়েদের ঘ্যান ঘ্যান

পড়ে গেছি মহা গ্যাঁড়াকলে,

তবুও মুখ বুঁজে সব সইতে

হয়, আমরা মধ্যবিত্ত বলে।


মাস গেলে পাইনা বেতন

ব্যবসাটাও শিকেয় এখন

আল্লাহ জানে ক্যামনে চলে,

এ কথাও কাউকে পারিনা

বলতে, আমি মধ্যবিত্ত বলে।

রাইহানা আখন্দ্



ভুলি নাই তোমাকে


ভুলি নাই ইন্দ্রাণী সেন   

আজও ভালোবাসি তোমাকে,

নিষ্ঠুর পাষাণ পরানি তুমি   

ভুলে গিয়েছো আমাকে!

কত করে বলেছিনু মোর  

জীবন থেকে যেওনাকো চলে, এখন ইচ্ছে করে তোমার 

পা ধুয়ে দিই মোর কষ্টের জলে।


জাতে তুমি ছিলে সেন 

হায় আমি ছিলেম পাল,

তাইত হলনা মিলন 

আজি মোর মরণদশা হাল।


তুমি ডাক্তার আমি

ইঞ্জিনিয়ার কম ছিলাম কিসে ?

জাত শুধু বলে দিলো

তুমি সোনা আমি শীশে।


ইন্দু তুমিহীন এই পৃথিবী 

আজ বড্ড অসার লাগে,

প্রেম পেলনা মানবতার 

দাম কি কষ্ট বুকে জাগে।


নিশ্বাসে নিশ্বাসে মনে বাজে 

তুমি কেন আমার হলেনা ?

সোনায় মুড়িয়ে দিতে চেয়েছি 

তোমায় তবু কেন বুঝলেনা ? 

ধর্মতো একই ছিল হায়

জাত শুধু আলাদা করে দিয়েছে,

কেন ঘুণাক্ষরেও বুঝিনি 

জাতে শয়তানের ছোঁয়াচ

লেগেছে।


ভগবানকে যেমন কখনোই

আলাদা করা নাহি যায়,

বিশুদ্ধ প্রেমও ঠিক তেমনি 

পবিত্র মর্যাদা পায়।


হায় গো ধরার দুর্জয়িনী

অতি নিষ্ঠুরতমা মেয়ে,

হিয়ায় বসিয়েছ বিষদাঁত

বেদনায় আছি ছেয়ে। 


ইন্দ্রনীল পালের প্রণয়  

জেনো আজও নির্মল আছে,

ইন্দু ভুলি নাই তোমাকে 

যদিও তুমি নেইকো কাছে।