১৯ মার্চ ২০২১

অর্কদীপ সরকার




চাকরি 


সবটুকু উজার করেও, ব্যর্থতা প্রতিক্ষনে 

কলমে আসেনা কথা, শব্দেরা অনশনে। 

লেখার টেবিলে ছেঁড়া চিরকুট, স্বপ্ন বুনে কাঁদে 

ঘড়ির কাঁটায় বয়স বাড়ে, চাকরিতে বাঁধসাধে।।


লালবাতি গাড়ি মিটিং-মিছিল, ব্যর্থতা অবিরত 

মদের বোতলে গ্রাস করেছে বেকারত্বের ক্ষত। 

ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া ডিগ্রীগুলো মেধাতালিকায় বাদ সিগারেটের কালো ধোঁয়ায় বেকারের আর্তনাদ।।

জারা সোমা




ঘুম


কোলাহল শুরু হতেই পাখি 

   খুঁজতে থাকে বাসা


 মরানদীতে আচমন সেরে

   ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যের জমায়েত 


অবাধ্য স্বপ্নভঙ্গের চাবুক কষিয়ে 

    ঘা লাগাতেই,ঘোর কাটে 


হরকা সময় ভাসিয়ে দেয় হরেক

 বায়ানাক্কা শেষপ্রায় বিন্দু ছুঁলেই 


 পালা বদলের খেলার জমজমাট আসরে

     বেচতে থাকি  মুখোশ ও  মালা 


কানহা মুঠো খুলে কালো ফাগ ছুঁড়তেই 

   চাঁদকে বলি একটা জম্পেশ  চুমু খেতে 


    কলঙ্কের কোলে মাথা রাখলেই

        বড্ড ঘুম পায় .....

মিলন ভৌমিক


 


শিশু শ্রমিক


নবজাতকের জন্ম নি়য়ে

মধুর ২ স্বপ্ন থাকে,

মানুষের মনে.

ফুটফুটে ছেলেটি স্কুলে যাবে

বাবা মায়ের হাতধরে.

ধীরে ধীরে বড় হবে

দুঃখ,কষ্ঠ,লাঘব হবে.

সমাজের পিছিয়ে পরা

মানুষের কথা একটু ভাবো,

আছে স্বপ্নের ফেড়ি

সফল হয়না অথ'ভাবে.

দশ বছর হলোনা বয়স

বসে আছে ফুটপথে,

বাবুদের জুতো পালিশ করবে.

অফিস বাবুরা চলে যাচ্ছে

না দেখার ভান করে.

সরকারের আইন আছে

শিশুশ্রমিক নিষিদ্ধ এদেশে.

কাজ করানো যাবেনা যে.

গরিবী হঠাও দেশ থেকে

নেতারা সব বলে,

সত্তর বছর পরেও 

হলোনা সমাধান যে.

নববষে' সমাজ কে

নিতে হবে শপথ,

স্কুল ছুট,পথ শিশু

থাকবেনা এদেশে.

মানুষই পারে সমাজকে

পরিবত্তন আনতে.

মমতা রায়চৌধুরী




আগে দেখা হলে



আরো আগে দেখা হলে,

অনেক কিছু ঘটতে পারতো।

অনেক বসন্ত একসঙ্গে

কাটাতে পারতাম।

অনেকগুলো সূর্যমুখী

সকাল উপহার দিতাম।

আরো আগে দেখা হলে ,

নদী, সমুদ্র, পাহাড় হয়ে

নানা রূপে ধরা দিতাম।

আলতো ছোঁয়ায় পরতে পরতে 

ভালোবাসার গান ছড়িয়ে

দিতাম হৃদয়বীনায়।

আরো আগে দেখা হলে,

হয়তো ঘর বাঁধতাম।

হয়তো বা ভালোবাসার

 কুঞ্জবনে আনন্দ উচ্ছ্বাসে

ঢেউ তুলতাম।

অলোক দাস




বলতে পারো      


সবায়ের কোরো যাওয়া সেবা, হয় নাকো বার্থ I যদিও মোন জানে, কেউ আমার নয় I বলতে পারো কে সেই পুরুষ এনেছিলেন নোবেল বিদেশ থেকে প্রথম I বলতে কি পারো কে সেই বীরপুরুষ বলেছিলেন, যে কাজ করি, সেখানে একটা ভুল থাকবেই I কে বলে যার যা কাজ সে করবেই I কে বলেছিলেন না  বলে কিছুই নেই I আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি, এ বাণী কার I তুমি আসবে বলে, পুলিশ টা ঘুষ খায় নি I সবই পরিষ্কার শুধু তোমারি জন্যে I

স্বপন কুমার ধর




নারী, তুমি স্বপ্নে 


তোমায় আমি যতই দেখি,

করি ততই কল্পনা,

মনের ফানুস উড়িয়ে দিয়ে

বাড়িয়ে দিই জল্পনা।

কখনো দেখি শিশুর মত,

কাঁদছো একা ঘরে,

কখনো আবার প্রেয়সীরুপে,

জড়িয়ে ধরছো মোরে।

কখনো দেখি মাতৃ রুপে,

করছো শিশুর পালন,

কখনো আবার রুদ্ররুপে,

করছো তাদের শাসন।

কখনো দেখি অন্যায়ের বিরুদ্ধে,

প্রতিবাদের ধ্বজা ধরো,

কখনো আবার মানিয়ে নিয়ে,

সংসার প্রতিপালন করো।

দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন,

তুমিই করতে পারো,

মানব সৃষ্টির চলমান ধারা,

গর্ভে ধারণ করো।

দেখি স্বপ্নে এত রুপ তোমার,

বিশ্বাস করা দায়,

বাস্তবে আজ ও শোষণে পিষ্ট,

তুমি যে নারী, হায়!

ওয়াহিদা খাতুন




সনেট  রজনী-সুখ


প্রকৃতির ঘুমচোখে রজনী নিঃঝুম;

শীতের কাঁথা মুড়ে বিশ্ব ঘুমাচ্ছে শুয়ে--

জ্যোতিস্ক-জ্যোৎস্নায় তন্দ্রাপুরী যায় ছুঁয়ে--

মহাকাশ-তলী শহরে নেমেছে  ঘুম;

মরণকাঠিতে তন্দ্রাচ্ছন্ন জীবকুল--

নিশিস্বপ্নে ভেসে সুখমগ্নে করে খেলা;

তন্নি নদীর তীরে কাটে কামনার বেলা;

দংশিত কীটের দহনে স্খলিত ফুল--!


নিদ্রাসুখে শ্রান্ত শরীর রজনী কোলে ;

নিশুতি চাদরে প্রণয়ের শয্যা মেখে--

মধুচন্দ্রিমা বিরহ কাব্যকথা লেখে--

নক্ষত্র-আসরে রতিশাস্ত্র পৃষ্ঠা খোলে;


অভিসার-অভিধানে শুধু প্রিয়-মুখ--!

ব্যথিত চিত্তে চলে যায় রজনী সুখ--!।


রচনাকালঃ-১২টা ১৬ মিনিট (সনেট নম্বর ৯৬)

মোঃ হা‌বিবুর রহমান



 তু‌মি আস‌বে ব‌লে তাই


আকু‌তি নি‌য়ে চে‌য়ে‌ছিলাম 

তোমার সুদূর প‌থ পা‌নে,

দীর্ঘ সময় প‌রে হ‌বে দেখা 

বহুদিন ধ‌রে ভে‌বে‌ছি তাই।

অ‌পেক্ষায় প্রহর গু‌ণে‌ছি

তু‌মি আস‌বে ব‌লে তাই।

ভে‌বে ভে‌বে তন্দ্রায় প‌ড়ে‌ছি 

বেশ অ‌নেক অ‌নেকবার।

মা‌ঝে মা‌ঝে সু‌যোগ বু‌ঝে 

ছোট দু'ডানার দূর্দান্ত মশারা

তন্দ্রার ভিত‌রেই খে‌য়েছে রক্ত

বেশ ‌বেশ কয়েকটি বার,

তাদের ছোট্ট পেট ভ‌'রি। 

তু‌মি আস‌বে ব‌লে তাই 

অ‌নেকগু‌লো রাত ক‌'রে‌ছি গুজরান,

কখনও জে‌গে কখনও বা অর্ধঘু‌মে।

অব‌শে‌ষে আস‌লে যখন তু‌মি

দে‌খেই হ'লাম একদম ‌নিশ্চুপ হতবাক। 

যেমন‌টি কল্পলো‌কে এঁ‌কে‌ছিলাম তোমা‌য়

হুবহু একটুও ফারাক হয়‌নি 

তোমার চাঁদ বদনখা‌নি।

আকুবাকু হৃদয়‌টি হ‌লো শীতল ঠান্ডা

মনটা হ‌লো ভীষণ খুশী

তোমার চাঁদ বদন‌টি হে‌রিয়া।

সুলতানা চৌধুরী পারু ( ইংল্যান্ড )




 শত বাধা 


আহ্লাদি মেয়ে কত যে সখ ছিল 

ছবি আঁকবে বলে ,পারেনি সে আর

তার ছবি আকা বারণ ছিল ! মুখেতে নেকাব

মেয়েদের ছবি অংকন নাকি পাপ ! সেই তো মহাপাপ !


গাছে উঠবে পাখির ছানাদের সাথে 

কথা বলবে ! কত কি ? 

সেই কথাটিও কাউকে তার আর বলা হয়নি 

হয়তো সেটিও পাপ কিংবা মহাপাপ ! সে বুঝতে পারেনি !


পাখিরা যে নিষ্পাপ  

কাউকে ধোঁকা দিতে জানেনা 

যা কিছু শুনে নিজের মনেই রাখে 

তাইতো মেয়েটির পাখি এতো প্রিয় ! খুব প্রিয় বলবে কাকে !


কত যে সখ  ছিল মেয়েটির 

পুকুরে সাঁতার কাটবে প্রতিযোগীতা করবে

কিন্তু তাও কি সম্ভব কত মতবাদ ! শত অপবাদ 

সে যে শুধুই মেয়ে ! মেয়ে হয়ে জন্মিয়েছে সেটাই তার অপরাধ !


আহ্লাদি মেয়ে সারাক্ষণই অপেক্ষার প্রহর গুনে  একদিন সে বড় হবে ! স্বামির ঘরে যাবে আল্পনায় ছবি আকবে ..

তবে কি সেখানেও অপবাদ তার পিছু নিবে ! নিজের মনের স্বাধীনতা কি থাকবে !

শাশুড়ির রক্ত চোখ ! শাড়ি পড়তে হবে ! সংসার ধরম মেনে চলতে কি তার হবে !

আজও তার নারী হিসেবে যেভাবে চলতে হয় ! হয়তো সেই ভাবেই বাকি জীবনটা একদিন মানিয়ে নিবে !