পোস্টগুলি

জানুয়ারী ১৬, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মমতা রায় চৌধুরী/৯৪

ছবি
উপন্যাস  টানাপোড়েন ৯৪ উচ্ছ্বলহীন নদী মমতা রায় চৌধুরী কি কুক্ষণে নদী স্বপ্ন দেখেছিল, তার স্বপ্ন যে বাস্তবায়িত হবে না সেটা তারা আগেই ভাবা উচিত ছিল। নইলে আজকে একটি বিশেষ দিনে কত কিছু ভেবে রেখেছিল, সে সবই চোরাবালিতে ডুবে গেল। মাকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন এঁকে ছিল মনের ভেতর ।হাজারো রং মশাল এর আলোতে জ্বলজ্বল করছিল তার মায়ের মুখচছবি । আজ একি দৃশ্য! মাকে যখন গাড়ি থেকে ধরাধরি করে নামাচ্ছিল, নদী অধীর আগ্রহে ছুটে গিয়েছিল সিঁড়ি দিয়ে তরতর করে নিচে । নদীর বিদ্যুৎ গতিতে নদীটাকে ঝরনা আটকানোর চেষ্টা করছিল । ঝর্ণা বললো 'কোথায় যাচ্ছো মামনি? কোথায় যাচ্ছ?' নদী কোন কথার উত্তর না দিয়ে শুধু সামনের দিকে গাড়িটাকে হাতের ইশারায় দেখিয়ে ছুটতে শুরু করল। ঝর্না বুঝতে পারল' আজ যেটা ঘটেছে সেটা কিছুতেই নদীর সামনাসামনি আসতে দেয়া যাবে না ।নদীকে আটকাতেই হবে।'  ভড়ন্ত বর্ষার নদী উদ্দাম তার গতিবেগ, উচ্ছ্বল তার জলধারা, তার গতিকে রুদ্ধ করবে  কে ? বাঁধ দিয়ে আটকাতে গেলেই সে  সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। ঝরনার নদীকে আটকানোর চেষ্টা বৃথা হল ।আর কপাল চাপড়ে বলতে লাগল 'এরপর কি হবে ? কে জানে? কিন্তু একি ন

মমতা রায় চৌধুরী/৯৩

ছবি
উপন্যাস  টানাপোড়েন ৯৩ ধূসর স্বপ্ন মমতা রায় চৌধুরী সারা সন্ধ্যে তো নদীর একটা উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে কাটলো। মায়ের জন্য ভালোবাসা ,মায়ের গন্ধ বারবার চোখে মুখে মেখে নেওয়া, মায়ের দেওয়া জিনিসগুলো বারবার ছুঁয়ে ছুঁয়ে  দেখা ।আজ শুধু তার হৃদয়াকাশে শুধু মা আর  মা । কখন মা আসবে? কেন মাকে এত ভুল বুঝেছে সে? এসব ভাবতে ভাবতেই সে বারবার ব্যালকনিতে গিয়ে উঁকি মারছে ।মায়ের গলা শুনতে পাবে বলে কিংবা যে গাড়ি এসে মাকে ছেড়ে দিয়ে যাবে ,সেই শব্দটা শোনার জন্য ইচ্ছে করছে। মা যখন আসবে মাকে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরবে । অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর,আবার ধীরগতিতে ঘরে  এসে ওয়ারড্রবটা খুলে মায়ের দেয়া সেই দুলটি পরছে । অনেকদিন আগে নদী বলেছিল ' তার একটা ইউনিক ডিজাইন এর দুল চাই?'  আর তার এইটিন ইয়ার্সএ প্রথম গিফট ,তার ভালোলাগার গিফট ,তার মা তাকে দিয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ যেন কেমন একটা তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব এসেছে । ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছে নদীর সেই ছেলেবেলার মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নেতারহাট। আবছা ভাবে মনে আছে নেতারহাট এর সেই উঁচু উঁচু গাছগুলো যেন নীল আকাশ ছুঁতে  চাইছে ,চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ উপ

মমতা রায়চৌধুরী /৯২

ছবি
উপন্যাস  টানাপোড়েন ৯২ আনমনে জন্মদিন মমতা রায়চৌধুরী নদীর মন খারাপের জানালাগুলো একে একে বন্ধ করে দিতে লাগল ।কারণ ক্ষনেকের খুশি ভালোবাসা তার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো । বিপাশা মাসিমনিকে নিয়ে কি ভুল ধারণাটা রেখেছিল সে। অথচ  তুলনা হয় না মাসিমনির। একটা কি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিপাশা মাসিমনি। মেসোমশাই তো একজন ঠক, প্রতারক , দুটো পুত্র সন্তান তার ভবিষ্যৎ কি হবে ? হাজারো চিন্তা মাসিমনির ।মনের ভেতরে রয়েছে দুঃখ-যন্ত্রণা, দুঃখ কষ্টগুলোকে যেন সে পাথর চাপা দিয়ে আছে, একেবারে হিমশীতল। তাই কথা না বাড়িয়ে ঝরনা মাসি যখন বলল 'মামনি খেয়ে নেবে এস ?' তখন শুধু নদী ওইটুকুই বলল ''ঠিক আছে তুমি খাবার টেবিলে আমাকে খাবার দাও।  আমি যাচ্ছি।' নদী ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে খাবার টেবিলে বসল।  খাবার টেবিলে বসে নদী জিজ্ঞাসা করল  'কি রান্না করেছ ঝরনা মাসি ? পায়েসের গন্ধ পেয়ে বলল 'মাসি পায়েস করেছ?' ঝরনা মাসি বলল' তা করবো না। আজকে যে তোমার জন্মদিন মামনি।' নদীর চোখে জল আসে ।'তোমাদের মনে আছে আজকে আমার জন্মদিন ।বাপি থাকলে রাত বারোটার সময় থেক

মমতা রায় চৌধুরী/৯১

ছবি
উপন্যাস  টানাপোড়েন ৯১ অবচেতনে  দাগ  মমতা রায় চৌধুরী সকাল থেকে নদীর মেজাজটা খাট্টা হয়েছিল।  আজকের দিনটা কি সকলেই বেমালুম ভুলে গেল? বাপি মারা যাবার পর থেকেই সবকিছুই যেন কেমন হয়ে গেছে তার জীবনে। মা ও তার কর্ম নিয়ে ব্যস্ত। নদীর কি প্রয়োজন,কি পছন্দ-অপছন্দ কিছুতেই এসে যায় না । মা আজকাল শুধু অফিস আর অফিস। আগের দিনগুলো কত ভালো ছিল ।মায়ের গন্ধ সারা দিনরাত মেখে থাকতো । আজকাল মায়ের গন্ধ মনে করতে সময় লাগে। কত জ্বরের ঘোরে ভুল  বকেছে, মাকে কাছে পায় নি। অথচ একটা সময় ছিল বৃষ্টির দিনগুলোতে মায়ের কাজ ছাড়া হত না ।শীতের  রাতগুলোতে মায়ের গায়ে গা দিয়ে না শুলে যেন নদীর কিছুতেই ঠান্ডা কাটতো  না ।আজ কোথায় গেল সেই সব দিনগুলো ? বাপি অফিস থেকে এসেই প্রথমে নদীর খোঁজ করত ।আজ খোঁজ করার জন্য ঝরনা মাসি। নদীর কাছে আসে ঝরনা মাসি ।এসে জিজ্ঞেস করে   'আর কি লাগবে, না লাগবে? কিন্তু ঝর্ণা মাসির ক্ষমতা কতটুকু তার দাবি মেটানোর? বিশাল সমুদ্রে এক ফোটা জল।' সারাদিন এলোমেলো ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে নদী। সে তো 18 বছরে পা দিয়েছে । তার স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা নিশ্চয়ই আছে ।সেও তো চায় শীতের রোদ্দুরে গায়ে তা