০৭ জানুয়ারী ২০২১

শ্যামল রায়




নতুন সকালের জন্য


নতুন সকালের জন্য হাত বাড়াও

সরে যাক পাথরগুলো

ফুল ফুটুক শুধুই ভালোবাসার

নতুন একটা সকালের জন্য।

দিগন্ত সরলরেখা বরাবর

সদ্য ফোটা অক্ষর গড়ে উঠুক

আগামী দিনের জন্য।

রামধনু-আঁকা হোক তোমার মুখ জুড়ে

মিছিলে মিছিলে হেঁটে বলবো

আমরা সকলেই এক

বিভেদ ভুলে দেশের জন্য।

ঘন কুয়াশা কেটে যাক

উঠুক রোদ্দুর, সকলেই তাপ নিয়ে বলবো

উষ্ণতার জন্য থাকবো বেঁচে

আমরা সকলেই অন্ধকার মুছে মুছে।

নতুন বছর আগামী দিন

তোমার আমার গল্পের সূচনা হবে

পলাশ বকুল কৃষ্ণচূড়া রঙে রঞ্জিত হবো

আমরা মানুষ ।ভারতবাসী ।জয় আমাদের হবেই।

অলোক দাস



মেঘে বজ্রপাত 



 বিমানে একটি ছোট্ট শিশু, খেলনা নিয়ে ব্যাস্ত । হটাৎ বাজ পড়লো বিমানে - বিমানটা হারালো ভারসাম্য I প্রাণের ভয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ ভয়ে অস্থির I সকলে জুড়ে দিলো চিৎকার I শিশুটি আপন খেলে যাচ্ছিলো I এক ব্যাক্তি খেয়াল করে শিশুটিকে I ব্যাক্তিটি জিজ্ঞাসা করলো "তোমার কেন ভয় নেই?" ছোট্ট মেয়েটি বললো, এই বিমানের পাইলট আমার বাবা I বিমানটি অবতরণ করলো নিরাপদে I তাই ভাবি বাবারা বেঁচে থাকুক, সব শিশুদের হৃদয়ে ভালোবাসায় ও যত্নে I

তাহমিনা সিদ্দিকা




বল সাধু তারে


যে তোরে বেশ্যা বলে তারে তুই বল সাধু,

আমি এক পাগলা কানাই পাগল বেশে সত্য জানাই।

তোর রূপ নয়নে দেখরে শয়নে খেলছে কেরে নিয়ে যাদু,ও তোর ত্রিবেনী তিন দরজায় কালো মেঘে বিদ্যুৎ গর্জায়।

কৃষ্ণ বলে বিষ্ণুলোকে চেয়ে দেখ ঐ যাচ্ছে রাধে,যে তোরে বেশ্যা বলে তারে তুই বলরে সাধু!

অর্কদীপ সরকার



আদর  


শীতের আদর, গরম চাদর 

কাঁচা ঘুম, ভাঙা চোখ । 

বুক ছোঁয়ানো, নরম ঠোঁটে 

আদরের জয় হোক ।।


বোতাম ভাঙা, সাদা জামা 

লিপস্টিকে হল লাল । 

ব্যস্ত অফিস, গরম টিফিনে 

আদুরে  সাতসকাল ।।


রোদে পিঠ পাতা, ছুটির দিন 

অগোছালো শাড়ী, সেফটিপিন। 

ঘুরতে যাওয়া, কফির ভাঁড়

আদুরে হাঁটা, রাস্তা পার ।।


মাথায় বালিশ, হাজার নালিশ 

খুনসুটি মাখা, কান ফিসফিস । 

কপালে চুমু, ঘুমে মাখা চোখ 

 আদরের জয় হোক।।

ফটিক চৌধুরী




মৃত্যুবর্ষ


এখনো বালিশের আরাম আর

ব্ল্যাঙ্কেটের ওম লেগে আছে সারা শরীরে

ধমনীতে এখনো লুকিয়ে রয়েছে উষ্ণতা

তাহলে এটাই কি ঠিক সময় পিকনিকের?

বুনো মুরগি ঝলসিয়ে জেগে উঠবে

                                      ফরেস্ট বাংলো?

না, তেমন সম্ভাবনা নেই এই শীতে।

বর্ষশেষের গানে মিশে আছে

                                    অতিমারির গ্লানি

মনখারাপের ধূসর ধুলো।

খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে কমলালেবুর মতো

পৃথিবীটা মধুর রসে নেই, বশেও নেই, যেন

মরুভূমির আকাশে ভাসে মেষপালকের গান।


বছরের ডানায় গজিয়ে ওঠে বিপর্যয়ের পালক

আমাদের দাবি এটা মৃত্যুবর্ষ বলে চিহ্নিত হোক।

নিলুফার জেসমীন রুমা




এই তো বেশ আছি


চাওয়া পাওয়ার হিসাব অনেকটাই ভুলতে বসেছি, 

এখন সব কিছুই বড্ড অনর্থক মনে হয়, 

কেউ বোধ হয় এক জনমে তার সবটুকু পায় না।


কিছু না পাওয়ার শূন্যতা সারা জীবন মানুষকে হতাশার বালুচরে বেঁধে রাখে,

তেমনি পাওয়াটুকুও মাঝে মাঝে ভারী হয়ে উঠে  ভালোবাসার রকমফেরে।


কান্না হাসির ভিতর দিয়ে বয়ে চলা জীবনের স্রোত আমৃত্যু টেনে নিয়ে যায় সামনে। 


ছোট ছোট সুখ বালুকণার মতো রোদের সোনালী আঁচে চিকচিক করে মনেরই অজান্তে। 


দীর্ঘশ্বাসের সাথে সবটুকু দুঃখ নিংড়ে ফেলে চোখ, বন্ধ করে অনুভব করি এই তো বেশ আছি।

সাবা সাবরিন




সিন্দুক


মনের অন্দরমহলে রাখা সুরক্ষিত 

লোহার সিন্দুকটা, মাঝেমাঝে কেঁপে কেঁপে উঠছে,

সিন্দুকের তালাটাও 

কাঁপছে ঠক্ ঠকা ঠক্ শব্দ করে।


নগন্য একটা সুখের অনুভূতি, 

সারারাত জাগিয়ে রেখেছে। নগন্য 

সুখটাকে বারবার উল্টে-পাল্টে, 

ভেঙে-চুরে, দুমড়ে-মুচড়ে, দেখতে 

দেখতে কখন যে আকাশ থেকে 

চাঁদ বিদায় নিয়েছে সেটাও অনুভব 

করতে পারিনি। পূব আকাশে আলো 

ফোটার আগেই নগন্য সুখটা আমার 

সর্বস্ব গ্রাস করে নিয়েছে। প্রতিটি 

শিরা উপশিরা দখল করে এখন 

প্রবেশ করেছে তালাবদ্ধ সিন্দুকের 

ভেতরে।


যে সিন্দুকে, অনেকদিন সুখের 

প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। নগন্য সুখটা 

কোনো এক অলৌকিক ক্ষমতা বলে 

ওখানে প্রবেশ করেছে। কী ভীষণ 

সাহস! যে আমার অনুমতি ছাড়াই 

আমার সিন্দুকে চিরস্থায়ী বসতি 

গড়েছে। 


এখন সিন্দুকের ভেতর থেকে 

ঠক্ ঠকা ঠক্ শব্দে আমায় আহ্বান 

জানাচ্ছে। শব্দটা আমার সবকিছু 

এলোমেলো করে দিচ্ছে। আমার 

আমিটা নিজের চতুর্দিকে বিস্তৃত 

ডালপালা সমস্তটা গুটিয়ে ধীরে 

ধীরে প্রবেশ করছে সিন্দুকে।

নার্গিস জামান




তোমার জন্য


মহাজগতিক সৃষ্টি সব তোমার জন্য, জানো তো? তুমি বিস্মিত হবে তাই নভোমণ্ডল। মোহিত হবে বলে ফোটে ফুল, পাকে ফল! তোমার প্রশান্তির জন্যই এই আঁচল। 


তুমি আসবে বলে, জেগে থাকা এই দীর্ঘ রাত! গানের কলি লুকিয়ে বলি, মৃদু পায়ে সতর্ক চলি; কান পেতে শুনি তোমারি ছন্দময় পদধ্বনি! 


জগত সংসার, সকল সমাহার, কপোলের তিল, হাসিমাখা ওষ্ঠদ্বয়। চিবুকের গোলাপি আভা, নেভিলের সরলরেখা, বুকের জমিনে কাঞ্চনজঙ্ঘা সবেতে সুলতানি সিলগালা!


সৃষ্টির সবই তোমার জন্য, তুমি আদম; তাই তো হাওয়া...

হুমায়ুন কবির সিকদার

 


শুভকামনা তার



তোমার প্রিয়া আজো কাঁদে

খুঁজে ফিরে তোমায়

ভালো নাকি লাগেনা তার 

এত সুন্দর গাঁয়।


কিশোরী জীবনে তুমি খেলার সাথী 

যৌবনে হৃদয়ের আয়না

পুরাতে তুমি তার কতশত 

হেয়ালী মনের বায়না।


তোমার হৃদয়ে তখন শুধু 

ছিল তারই বসবাস

শত দ্বিধা দ্বন্দ্বের মাঝেও ছিল

সীমাহীন আত্মবিশ্বাস।


বিশ্বাসের ঘরে একদিন 

হয়েগেল পুকুর চুরি

অন‍্যের ঘরের ঘরণী হয়ে 

পড়েছ কোমরে দড়ি ।


এতকাল পরেও তবু আজ 

বন্ধুকেই শুধু খুঁজে 

স্মৃতিরা নাকি এখনো অমলিন

হৃদয় মাঝে।


বন্ধু যতই ভুল তাকে 

বুঝুক বারংবার

বন্ধুর জন‍্য এখনো 

শুভকামনা তার।

এম.সাঈদ




পথশিশু



পথের ধারে আধূল গাঁয়ে

বস্তা হাতে রোজ।

সে'তো এতিম অসহায় এক

কোথায় পাবে ভোজ?


জীবদ্দশায় ভিক্ষে শেষে

সুপ্তি পথের ধারে,

কে বা কারা তাড়িয়ে দেয়,

অ-কারণে মারে!


প্রীতিলীলা পায় না যে সে,

যুগ-শতাব্দির পরে।


একমুষ্ঠি ভাত হবে কী ভাই?

জীবন বাঁচার তরে!


ঈদের পরে ঈদ চলে যায়,

জীর্ণ কাপড় পরে।

নতুনত্বের পায় না সে স্বাদ,

কেড়ে নিলো ঝড়ে?


শিক্ষা নামের পঙ্খিলতায়

তাহার সখ্য -শোক,

দিবস যেনো তাহার চোখে

স্বপ্ন-গড়া হোক।


হাসপাতালের ঐ চত্বরেও 

হয়না রে তার স্থান।

শান্তির নিবাস পাবে যখন,

কবর করে প্রস্থান।


কতো কষ্ট অনাদরে, 

গড়ে তাদের কায়া।

স্বেচ্ছাসেবী হৃদয়পটে

 আছে তাদের মায়া।


স্বেচ্ছাসেবী ভাই-বোনেরা

 নিচ্ছে তাদের খোঁজ,

পড়ার নীড়ে সপ্তাহ পরে

দিচ্ছে একটু ভোজ।


সরকার আমার মানব প্রিয়ো

রাষ্ট্র চালক চাবী,

মৌলিক স্বত্ব ফিরিয়ে দাও

এই-তো- আমার দাবী।