১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

মমতা রায়চৌধুরী'র উপন্যাস "টানাপোড়েন"৪

অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করবার মতো আকর্ষণীয়  মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন" পড়ুন ও অপরকে পড়তে সহযোগিতা করুন  




টানাপোড়েন 

দ্বন্দ্ব


                                    জকে বিপাশাকে ব্যাংকে যেতেই হবে। রোজই দীপকের কাছে ঝাড় খেতে হয়। কথা শুনতে শুনতে কানটা ঝালাপালা হয়ে গেল। 'আমি না থাকলে তোমার যে কি হবে? কে জানে? কি করতে লেখাপড়াটা শিখেছিলে? নাকি টুকে পাশ? ' এরকম হাজারোতর অভিযোগ। এজন্য বিপাশা ঠিক করেছে আর দীপকের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না। এবার নিজেকে প্রমাণ করার সময় এসেছে ।সে দেখিয়ে দিতে চায় ইচ্ছে করলে সব পারা যায়। কিন্তু কিছু কিছু সময়  মেয়েরা  সবকিছু  একজন বিশ্বস্ত কারও  ঘাড়ের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে দিন যাপন করতে চায়। আর সেটা দীপকের কাছে একটা উপহাসের পাত্র..? শুধু তাই নয় আজকাল ওর বন্ধুবান্ধব সকলের সামনেই যেন কেমন একটা অপদস্ত করতে চায়। একদিন তো ওর বন্ধু বিমল  বলেই ফেলল -'কি যে বলিস না? বৌদি পারবে না কেন? আসলে কোনদিন তো ঘরের বার হয়নি একা একা। হয়তো মনের ভেতর একটা ভয় কাজ করে এজন্য। ' আজকে বিপাশা একটা রেকারিং বই খুলতে গেছে ব্যাংকে। তাও নিজের হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে সেটা মাসে মাসে জমাবে ঠিক করেছে এবং বছর শেষে দীপককে সে একটা চমক দিতে চায়। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ।ব্যাংকে গিয়ে কি ঝক্কি-ঝামেলা রে বাবা কতক্ষন সে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ব্যাংকের ম্যানেজারের হাজারো প্রশ্ন? তার সঠিক জবাব দেয়া। ডকুমেন্টস সাবমিট করা। এরমধ্যে ফটো আনতে ভুলে গেছে। সে ভাবলে  বাড়ি যাবে কেন ?তার থেকে এখন তো কম্পিউটারের যুগ স্টুডিওতে গিয়ে কি সঙ্গে সঙ্গে ছবি পাওয়া যাবে না, নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। যা ভাবা তাই কাজ। ফটো নিয়ে এসে ব্যাংকে আসতে দেখা যায় সে যেখানে লাইন দিয়েছে সেখানে অন্য কেউ জায়গা করে নিয়েছে।কাজে কাজেই আবার তাকে শেষে গিয়ে দাঁড়াতে হয়। সে প্রথমে  তার নিজের জায়গায় দাঁড়াতে গিয়েছিল বটে কিন্তু সেখানে তাকে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। সে ঝগড়াও করে নি ।তাই তো তার যুক্তি ছিল সে তো লাইন ব্রেক করেই গেছে ।তাই তার পেছনে গিয়েই দাঁড়ান উচিত। ওদিকে টুবলু টুকাই এর স্কুল থেকে ফেরার সময় হয়ে গেল। বাড়িতে ফিরে এসে ছেলেরা দেখতে না পেলে কি কান্ড করবে কে জানে? লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কয়েকবার ভগবানকে ডেকে নিল। আসলে বিপদে পড়লেই তো ভগবানকে ডাক দেয়া। বিপদের মধ্যে দিয়ে যেটুকু ডাকা যায়। সারাদিন তো আর ডাকা যায় না ঈশ্বরকে। সেদিন ঈশ্বর তার কথাটা শুনেছ। সাড়ে চারটের মধ্যে সে বাড়ি ফিরে আসতে পেরেছে। টুবলু টুকাই ফিরেছে। ওদের খাবার টেবিলে খাবার দিয়ে ওদের স্কুলের সমস্ত টিচারদের কথা, হোমওয়ার্কের কথা সমস্ত কিছু শুনছিল? টুবলু টুকাই কেমন অবাক হয়ে গেল। এসব কথা তো তার বাবা ,আসলে তার মা তো কখনো শুনতে চায় নি।

আজকে কোন টিচার হোম ট্যাক্স করার ওপর গুড লিখেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

বিপাশা বলল  'আজ থেকে ওদেরকে‌ বাংলা বিষয়ের দায়িত্বটা ওর মা নেবে।'

 ছেলেরা বলল  -'না,মা। বাবাই তো বরাবর এসব বিষয়গুলো দেখে। তোমাকে আর কিছু দেখতে হবে না ।তুমি বরং যেমন রান্নাবান্না করো ঠিক সে রকমই ক'রো। '

বিপাশা অবাক হয়ে গেল এ যেন ছেলেদের কথা নয় অন্য কারওর শেখানো কথাগুলো তোতাপাখির মতো আওড়াচ্ছে। বিপাশা একটু হেসে বলল  -

'কেন রে, আমি তো বাংলায় এম এ ।আমি তোদের বিষয়গুলো দেখতে পারি না'।

 দুই ভাই দু'জনের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগলো ।তারপর বললো  'না মানে ,তুমি বুঝবে নাকি?

 বিপাশা কেমন অবাক হয়ে গেল ।ছেলেগুলোর মনেও যেন গেঁথে গেছে ,ওদের মা রান্না ছাড়া আর কিছুই পারে না। বিপাশার মনেও জেদ চেপে গেল । এবার কড়া শাসনের ধাঁচে বলল -

 'আমি যেটা বলছি আজ থেকে সেটাই হবে।'

 ছেলেরা চুপ করে গেল। বিপাশা আরো বলল "শোন,আজ থেকে সন্ধ্যে ছটায় তোমাদের পড়তে বসতে হবে। রাত নটা অব্দি পড়বে। আধঘণ্টার ব্রেক। টিভি দেখা বন্ধ।'এই বলে বিপাশা নিজের কাজে চলে গেল। টুবলু টুকাইয়ের কাছে আজকে যেন ওদের মা অচেনা ।যেন অন্য কারোর মা। সন্ধ্যে হল। দীপকের ফিরতে ফিরতে রাত্রি আটটা হবে। তার আগে ছেলেদেরকে হোমট্যাক্সগুলো কমপ্লিট করতে হবে। বিপাশা আর ছেলেদের কাছে বসে খাতাগুলো চেক করছে। তখনই নজরে আসে, বাংলা বিষয়ের উপর হোম ট্যাক্স পড়েছে' তোমার জীবনের সেরা দিন।' সম্পর্কে লিখে আনা। আজ বিপাশা নিজে বলে গেল আর ছেলেরা তা নোট ডাউন   করল। অন্যান্য বিষয়গুলিও দেখল। শুধুমাত্র সাইন্সের গ্রুপগুলোকে ওর বাবার জন্য রেখে দিল। দীপক বাড়ি ফিরে দেখল ছেলেরা যে যার পড়ার টেবিলে। একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল -' কিগো, আজকে কী নতুন টিচার রেখেছো নাকি?

 বিপাশা বলল -' কেন? 

না ,ছেলেরা এই সময় তো পড়ার টেবিলে থাকে না। 

বিপাশা দৃঢ়স্বরে বলল -'এবার থেকে থাকবে।'

 দীপক বলল -' তুমি বলছো একথা?

কেন ,তোমার সন্দেহ আছে নাকি? বিপাশা বলল।

 হ্যাঁ, তা তো আছেই। তুমি নিজের উপরই কতটা বিশ্বাস রাখো ,সেটা তো পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য। '

সেই খোঁচা মারা কথা। বিপাশা হজম করে নিল আর ভাবলো সবুরে মেওয়া ফলে। খাবার টেবিলে খাবার দেয়া হলো ।

দীপক দেখল- আজকের রান্নায় একটু অন্যরকম। তন্দুরি চিকেন ,নান পরোটা। দীপক মনে মনে একটু খুশি হলো। কিন্তু প্রকাশ করলো না। বিপাশা ভেবেছিল  'আজকে একটা বেস্ট কম্প্লিমেন্ট ওর কপালে জুটবে। কিন্তু না। শেষে নিজেই জিজ্ঞেস করল ' কিগো ,কেমন হয়েছে?

 হ্যাঁ, খারাপ হয়নি। বলে দীপক উঠে গেল।

 বিপাশা টেবিল পরিষ্কার করে নিয়ে ছেলেদেরকে খাবার টেবিলে ডাকলো। ছেলেরা খাবারটা দেখে অবাক হয়ে গেছে আর খুব তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছে।  শেষে থাকতে না পেরে বলেই ফেলল ছেলেরা -', মা কি সুন্দর বানিয়েছ তুমি? আমরা তো ভাবতাম তুমি শুধু বাঙালিরান্না গুলোই ঠিকঠাক পারো। এখন দেখছি মা তুমি এই খাবারগুলো ভালো বানাতে পারো। তুমি আমাদের বেস্ট মম'। 

তাই ?বিপাশা  ছেলেদেরকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে একটু আদর করে দেয়।

এভাবে দিন চলতে থাকে। 

এরপর আসলো সেই বার্ষিক ফলাফল। তাতে দেখা গেল বিপাশা যে বিষয়গুলো ছেলেদেরকে নিজে দেখাতো তাতেই সবথেকে বেশি নম্বর উঠেছে। বাবার দেখানো বিষয়গুলোতে কম পেয়েছে। মনের ভেতরে যে দ্বন্দ্ব ছিল ,যে টানাপোড়েন ছিল, তাদের মায়ের কাছে পড়ে তারা কতটা নম্বর পাবে? একটা সন্দেহ কাজ করেছিল। দীপক ও অবাক হয়ে গেছে। দীপকের থোতা মুখ ভোঁতা হয়ে গেছে। সব বিষয়ে বিপাশাকে আন্ডার এস্টিমেট করার অভ্যাস হয়ে গেছিল। এবার দীপক একটু বিপাশাকে সমঝে চলে। এইতো কদিন আগে দীপকের অফিসে পার্টি ছিল সেখানে প্রথম বিপাশাকে নিয়ে যায় এবং সেখানে বিপাশা এত সুন্দর একটা রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করে ,তাতে সকলে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। দীপক নিজেও জানতো না বিপাশা এত ভালো গান করতে পারে। অথচ চিরকাল বিপাশাকে অন্য সকলের স্ত্রীদের কাছে ছোট করে দেখে এসেছে। ইদানিং বিপাশা টিউশন শুরু করেছেএবং বছর শেষে তার যে ম্যাচুরিটি টাকাটা সেটা দিয়ে দীপক এর জন্য একটা ভালো গিফট কিনেছে। আস্তে আস্তে দীপক দেখছে তার স্ত্রী আজকাল অনেক কিছুই তার সাথে শেয়ার করে না সে অবাক হয়ে যায় এবং বলে সে কি করে টাকা জমালো। বিপাশা জবাব দেয় -' হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে ,আর টিউশন পড়িয়ে। আজকাল ছেলেরা মায়ের প্রতি বেশি ভরসা করে ।এখানেও দীপকের কেমন একটা ঈর্ষা কাজ করে। বিপাশা বুঝে পায়না যখন সব কিছু দীপকের উপর ছেড়ে দিয়েছিল। তখনো তাকে মর্যাদা দেয় নি। আবার এখন যখন সে নিজে স্বনির্ভর হতে চাইছে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছে ।তাতেও সে খুশি হতে পারছে না। তবে বিপাশা স্থির করে নিয়েছে ।এভাবে কারোর মন জেতা যায় না। আগে ভুল করেছে। এবার সে যেটা করছে সেটাই করবে। এইতো সেদিন ওর বন্ধু বিমল এসে বলল-

বৌদির মত যদি আমার বৌ টা হতো।দীপ তুই ভাগ্য করে পেয়েছিস।

আগের মত হলে হয়তো ক্রিটিসাইজ করত।কিন্তু এখন আগের মত বিপাশাকে কিছু বলতে পারে না বলে গা টা সারাক্ষণ  রাগে রিরি করে জ্বলতে থাকে।মেয়ে মানুষের এতটা ওড়া ভালো নয়।ছেলোগুলো এখন মায়ের নাওটা হয়েছে।আগেই ভালো ছিল ডমিনেট করা যেত।এখন তো অসহ্য লাগে।

বিপাশা জানে যে ওর স্বামী ওকে কোনদিনই পছন্দ নয় কিন্তু স্বামীর কাছে প্রিয় হয়ে ওঠার জন্য স্বামীর যা যা ভালো লাগে সে সবকিছু করার চেষ্টা করেছে কিন্তু নিট ফল জিরো। সব সময় মনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলেছে কিভাবে দীপকের প্রিয় হয়ে ওঠা যায়। এতদিন তো দীপক বিপাশাকে অনেক আন্ডারএস্টিমেট করেছে ওর দ্বারা কিছুই হবে না। যখন বিপাশা ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছে ও কিছু করতে পারে সেটা প্রমাণ রেখেছে তাহলে কেন দীপকের মনে এত দ্বন্দ্ব? নাকি দীপক নিজেই জানে না সে কি চায়? সহজ-সরল বিপাশা আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিকই মনের সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে। কিন্তু দীপকের মনের দ্বন্দ্ব কি কাটাতে পেরেছে?



ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন" ৪ ক্রমশ

সঞ্জয় আচার্য





মনা রাখাল


ধুলোতে বাজিয়ে নুপূর চলে গেছে দূর


আহা-হা-হা বাঁয়ে বাঁয়ে—মনা রাখালের দুপুর।



চৈতি মাঠ তারই শোকে পড়ে আছে অভিমানে


ঠিকানা বিহীন ফকিরের মতো এক কোণে।



যে পথে মনা  রাখালের ছায়া পেরিয়ে গেছে


সেই পথে


মেঘের কারুকাজ ভাঙে আর গড়ে।



তারই মাঝে এ পৃথিবী চেয়ে থাকে, কান পাতে


কবে কোন নিভৃত অবসরে


গোরুর ক্ষুরের শব্দ ভেসে আসে সাঁঝের প্রহরে।

aaaabcd

abcd



 

অনুবাদক - সজল কুমার মাইতি


 



এই হোক তোমার বাসনা 

মূল রচনা  - খলিল জিব্রান


প্রেমের কোন আলাদা বাসনা নেই 

প্রেমেই তার পূর্ণতা,

প্রেমই অন্তরের বাসনা

প্রেমেই তার পূর্ণতা।

প্রেমের ধারা ঝরতে থাকে 

ছুটে বেড়ায় নদীর বেগে,

তার সুরের ধ্বনি 

ভেসে বেড়ায় নিশিরাতে।

প্রেমের সেই পেলবতা

যন্ত্রণা তার অনেক,

বিদীর্ন হৃদয় প্রেমে আজ

হৃদয়ক্ষরন আনন্দে ও স্বেচ্ছায়।

অন্য এক নতুন দিনের মতো

ভালবাসায় ডানা মেলে,

ভাঙুক ঘুম নতুন উষার আলোয়

দুপুর শেষে প্রেমের ধ্যানে মগ্ন শুধু থেকো।

দিনের শেষে ফিরে এসে 

শুদ্ধ চিত্তে ভক্তিরসে নিদ্রা গ্রহণ,

হৃদয়ে থাকুক কেবল  প্রিয়ার স্মৃতি 

ঠোঁটে শুধুই সংগীতের স্তুতি।






[ খলিল জিব্রানের জন্ম হয় 1883 সালে লেবাননে। তার জীবনের অনেকটা সময় আমেরিকায় কেটেছে। তিনি একজন লেখক ও শিল্পী। আরবি ও ইংরেজিতে তার অনেক সাহিত্যকৃতি রয়েছে। 1923 সালে তার বিখ্যাত রচনা  ' দি প্রফেট' এর জন্য তিনি খ্যাতির শিখরে পৌঁছন। 1931 সালে তার মৃত্যুর মাধ্যমে এক বিরল প্রতিভার অবসান হয়।]

মূল রচনা 

Let These Be Your Desires

Khalil Gibran

শ্যামল রায়



কোন একদিন


কোন একদিন তোমাকে ছুঁয়ে দেখবো

কোন একদিন তোমার দু ঠোঁটে ঠোঁট দেব

দেখবো কতটা গভীরতা আছে

আমাকে নিয়ে তোমার অন্তরে।

কোন একদিন নদী পেরিয়ে পাহাড় যাব

তুমি পাশাপাশি থাকবে

হেঁটে যাবো দুজনা , উড়বে আঁচল

তোমার আঙ্গুল গুলো শুধুই আমার আঙুলে থাকবে।

কোন একদিন মাঠ পেরিয়ে সকাল খুঁজে নেব

ঠিক দেখতে পাবো পৌঁছে গেছি ঠিকানায়

সেখানে শুধু আমি আর তুমি

কোন হিসেব থাকবেনা, থাকবে শুধুই দুজনার ভালোবাসা।

কোন একদিন বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে বলবো

তুমিতো আমার প্রেমিকা

কত স্বপ্ন দেখি, কত ঝগড়া করি

আবার সমান্তরালভাবে মিশে যাই ভালোবাসায়। 

কোন একদিন নদীর পাড়ে এসে দাঁড়াই

জলস্রোত আঙুলগুলোয় ছুঁয়ে দেখি।

কোন একদিন তুমি আমার হয়ে উঠবে

ঘরের বিছানা গুলো এলোমেলো হবে

তুমি সকালবেলায় ডাইনিং টেবিলে এসে বসবে

চায়ের কাপে মুখ দিয়ে বলব শুধুই আমরা দুজন

শুধুই উষ্ণতার জন্য, ভালোবাসাবাসিতে বাঁচবো।


গোলাম কবির


 মানুষের দু'চোখ 


ভালবাসলে মানুষের দু'চোখ 
কতো আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখে, 
তখন কতো কাজ - যা আগে 
অসাধ্য মনে হতো একসময়, 
তা এখন হাতের মুঠোয় 
সূর্যকে ধরে রাখার মতো 
অলীক কল্পনা হলেও সহজ মনেহয়। 
ভালবাসা পেলে কখনো মানুষের
দু'চোখ আনন্দে হেসে ওঠে, 
কেউ কেউ তো নিজের যা কিছু আছে
 বিলিয়ে দিয়ে দু'চোখে নামায় ভাতঘুম। 
দুঃখ পেলে মানুষের দু'চোখে জমে মেঘ,  
জমতে জমতে কখনো ভীষণ বন্যা কিংবা  জলোচ্ছ্বাস হয় আবার কারো কারো 
দূ'চোখ মনেহয় একদমই পাথর হয়ে যায়। 
কারো কারো অন্য মানুষের সুখ
মোটেই সহ্য হয়না। 
ওর দু'চোখ তখন কেবলই ইর্ষা কিংবা 
হিংসার আগুনে দপদপ করে জ্বলে পুড়ে
 ছাই হয়ে হয় নিজেই শেষ হয়
অথবা হালাকু খানের মতো 
মানুষের সবকিছু ধ্বংস করে ।


 

মোঃ ইমরান হোসেন


প্রশ্ন


আমাকে তুমি কি কখনো খুঁজেছ ডুবুরি যেমনি খোঁজে?

কতবার করে আমায় পড়েছ পড়ার মতন করে!

দেখেছ কি কভু রাতের আঁধারে জমানো চোখের   জল?

শপথ করে কি রেখেছ তোমার ছড়ানো কথার দল?


হিশেব কাঁথায় নকশা এঁকেছ, দিয়েছ তাসের জোড়া

মনে করে দ্যাখো না বলা কথায় কত জনমের ব্যথা!

নাচিয়েছ তুমি তোমার চাওয়ায় পুতুল যেমনি নাচে

শুনোনি কখনো একলা মানুষ কেমন করে সে বাঁচে!


পরাজয় বলে একটি শব্দ বাজে নি তোমার কানে

আমাকেই আবার পরাজিত করে, ছুটেছ জয়ের পানে

পুরোনো ব্যথায় ছিটিয়েছ নুন, দেখতে চেয়েছ কি হয়

আঘাতের বানে বিক্ষত হিয়া, কাঁপেনি তোমার হৃদয়!


হৃদ - মন্দিরে জমানো মেঘের বৃষ্টি যখন নামে

রেখেছ কি তুমি আমার দেহকে তাল পাতার-ই তলে?

কত রাত আমি নির্ঘুম থেকেছি, ভেবেছি তোমার কথা

কতটুকু কাল আমার জন্য ছেড়েছ চোখের ধারা!


আষাঢ় শ্রাবণে নদীর পাড়ের মানুষ হারায় সবি

নদীর জলেতে শান্তি খুঁজেছ চালিয়ে তোমার তরী।


মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

আমাদের দেশ


এই দেশেতে জন্ম আমার,এই মাটিতে ঘর

এই মাটির দাম হলো,সোনার দামে দাম।

এই দেশেতে থাকবো মোরা,রাম-রহিম মিলে

মোদের দেখে শিক্ষা নেবে,ভিন্নদেশের লোকে।

তুলবো না কথা জাতিভেদের,মিলবো কাঁধে কাঁধে।

এদেশের একমুঠো মাটি নিলে,ছেড়ে দেবোনা তাকে।