২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"১৩





                                         টানাপোড়েন ( ১৩)

                                                         সমস্যা


সন্ধ্যে থেকে এত টানা বৃষ্টি চারিদিকে কিছু দেখা যাচ্ছে না ।ট্রেনে আসার সময় রেখা দেখতে পেয়েছিল জল থৈ থৈ করছে ।মাঠ সাদা হয়ে গেছে।ট্রেন থেকে নামার সময় রিম্পাদি দরজার কাছে এগিয়ে এসে লাগেজটা নিয়ে বললো  'সাবধানে যাবি ।তোর তো আবার একটুতেই ঠান্ডা লাগার ধাত আছে।'
রেখা শুধু মাথা নেড়ে সম্মতি জানায় আর মলিন হাসে বলল ,'তুমিও সাবধানে যেও। '
ট্রেনটা ছেড়ে দিল যতক্ষণ পর্যন্ত দেখা গেল রেখাকে তাকিয়ে থাকল রিম্পাদি ।রেখার অবস্থাও একই হাত নেড়ে নেড়ে।'ট্রেন বেরিয়ে গেলে দেখি অটোর খোঁজে গেল। কিন্তু কাছেপিঠে কোথাও একটা অটো পাওয়া গেল না ।একটু এগিয়ে গিয়ে অটোয়ালাকে জিজ্ঞেস করল  'যাবেন?'
অটোওয়ালা  'কোথায়? (বিরক্তি ভরে)ভেতর থেকে গলাটা বাড়িয়ে।'
রিম্পা কথা না বলে সরাসরি অটোতে উঠে পড়ল, আর বলল   'বুদ্ধ পার্ক।'
 অটোওয়ালা বলল 'আমি যাবো, কি যাবো না ,না বলে আপনি উঠে পড়লেন দিদি।'
রেখা বলল  'দেখতেই তো পাচ্ছেন ভিজে গেছি দাদা।চলুন না। (অনুরোধের সুরে)।
অটোওয়ালা বলল 'একজনকে নিয়ে যাওয়া যায় দিদি ,বৃষ্টি বাদলের দিনে?'
রেখা বলল  'হ্যাঁ ।সেটা বুঝতে পারছি। ঠিক আছে ।আমি একটু ধরে দেব, চলুন।'
অটোয়ালা বলল ।'কিছু মনে করবেন না দিদি ,বুঝতেই পারছেন  (খুশিতে ডগমগভাব।)ঠিক আছে আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি (হেসে হেসে)। '
রেখা অটোতে বসে সাত-পাঁচ ভাবতে লাগল- মনোজ একটা ফোন ও করল না ,।কী হলো, কে জানে ?ভাবতে ভাবতে নিজেই একটা ফোন করলো। পুক পুক করে আওয়াজ হয়েই যাচ্ছে। এরমধ্যে অটো বাড়ির কাছে নামিয়ে দিল। রেখা নেমে ঘরে ঢুকলো ।
পাশের বাড়ি চৈতালির মা বলল 'দিদি ,একদম তুমি ভিজে গেছো গো ।বৃষ্টিটা যা দিচ্ছে।কালকে রাত্রে দাদা আসে নি, না?কোথায় গেছে? '
রেখা বলল 'ওই তো আগের দিন বললাম না যে ছোট পিসি শাশুড়ির বাড়িতে গেছে ।ওখান থেকে অফিস করে বাড়ী ফিরবে।'
চৈতালির মা বলল ' ও আচ্ছা আচ্ছা'। 
রেখা বলল 'ঠিক আছে দিদি, আমি একটু চেঞ্জ করে নি, হ্যাঁ, পরে কথা বলব।'
চৈতির মা বলল ' না না না দিদি আপনি যান। কোন অসুবিধা হলে বলবেন।'
রেখা ঘার নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। কি বিরক্তি লাগছে পুটুটার কি হলো, কে জানে?'
বাথরুম থেকে বেরিয়ে ফোনটাতে দেখে বেশ কয়েকটি মিস কল। চেক করে দেখে, সোমদত্তার ফোন। রেখা একটু চিন্তিত হয়ে গেল আর ভাবলো  হঠাৎ করে সোমদত্তা এতদিন পর ফোন করলো? কাকু কাকিমার কিছু হলো? সেদিন বিপাশা বলেছিল একবার ঘুরে আসতে কিন্তু যাওয়া হয়ে ওঠে  নি। পরপর ঝামেলা লেগেই রয়েছে। এক কাপ কফি করে ফোনটা করল। দুবার রিং হয়ে গেল। ওপার থেকে কন্ঠ ভেসে এলো 'হ্যালো'।
রেখা বলল 'সমু আমি দিদি বলছি। সবাই ঠিক আছিস তো? পাবলো সোনা কেমন আছে?'
সোমদত্তা বলল 'পাবলো ঠিক আছে। আমি ঠিক নেই দিদি। আমি ও বাড়িতে যাবো ।তুই একটু মা-বাবার সঙ্গে কথা বলবি ।আমি ওখানে থাকবো।'
রেখা বলল 'যা না ঘুরে আয়। বলার কি আছে? কাকু কাকিমার ভালো লাগবে। কদিন গিয়ে থাকবি ওখানে।'
সোমদত্তা বলল 'আমি বরাবরের মতো যেতে চাইছি'।
রেখা অবাক হয়ে বলল 'মানে! কি আবোল তাবোল বকছিস? তোর গড়িয়ার বাড়িটা কি হবে? আর পার্থ ,ও কি করবে?'
এবার সোমদত্তা একটু চুপ করে থেকে বলল'আমি ওর সঙ্গে থাকতে পারবো না।'
রেখা অবাক হয়ে বলল 'কি বলছিস সমু থাকতে পারবি না ,মানে ,এটাই তো তোর আসল বাড়ি আর এই বুড়ো বয়সে এসে কাকু কাকিমাকে এখন মনে কষ্ট দিবি? কি এমন হয়েছে ?চল আমরা সবাই মিলে বসে একটা সমাধান কর‌ব। তোর সমস্যাটা কি?'
সোমদত্তা বলল  'দেখ দিদি ,সবাই তো আর মনোজ দা নয়।"
কথাটা যেন রেখাকে খোঁচা দিয়ে বললো।
রেখা বলল  'নদীর এপার কহে  ছাড়িয়া নিঃশ্বাস/ও -পারেতে সর্ব সুখ আমার বিশ্বাস।
'সোমদত্তা বলল,তোকে যা বললাম ,তুই সেটা আমার জন্য কর।'এর মধ্যেই পাবলো মায়ের কাছে এসে বায়না করছে 'আমি মাসিমনির সঙ্গে কথা বলব'। বলেই ফোনটা কেড়ে নিতে গেছে ,তখন সোমদত্তা রেগে গিয়ে বলল ' আঃপাবলো আমাকে কথা বলতে দাও।'শুনছে না বলে কষে এক চড় বসিয়ে দিল। 
রেখা স্পষ্ট শুনতে পেল। দিয়ে ফোনটা কেটে গেল।
রেখা মনে মনে ভাবছে  'সোমুর এত রাগ তো ছিল না ।কেমন বদলে গেছে ।ছেলেটাকে মারছে। কি এমন হয়েছে ওর?'ভেবে কফিতে চুমুক লাগাতে গিয়ে দেখে একদম ঠান্ডা জল হয়ে গেছে। এরই মধ্যে আবার ফোন।
রেখা ভাবল আবার সোমু ফোন  করল? ফোনটা রিসিভ করতে গিয়ে দেখে মনোজের ফোন। ফোনটা ধরেই রেখা বলল কি ব্যাপার বল তো ?এতটা রাত হয়ে গেল ,তুমি ফিরছ না কেন? বৃষ্টির জন্য আটকে গেছো। হ্যালো হ্যালো.. ও কি কিছু শুনতে পাচ্ছে না? এবার মনোজ টেক্সট করল। রেখা ,আজ ছোট পিসির বাড়িতে একটা মহা ঝামেলা হয়ে গেছে। এখন হসপিটালে আছি। জানি না আজকে বাড়িতে ফিরতে পারব কিনা?
রেখা লিখলো কি হয়েছে? ছোট পিসির কিছু সমস্যা হয়েছে?
মনোজ লিখলো 'বাবান..
কি হয়েছে ?রেখা বলল।
বাবান সুইসাইড এটেম করতে গেছিল।
রেখার যেন সব তালগোল পাকিয়ে যেতে লাগলো।
বাবান কেন সুইসাইড করতে গেল।
ওদিক থেকে মনোজ লিখল 'দুই ভাইয়ের মধ্যে গন্ডগোল।'
রেখা ভাবল 'ছোট পিসেমশাই মারা যাবার পর ছোট পিসি এমনিতেই ভেঙে পড়েছে।এবার ছেলেগুলোর মধ্যে যদি এরকম সমস্যা তৈরি হয় ।তাহলে তো ছোট পিসি সেটা মেনে নিতে পারবে না। মনোজ লিখল  'পরে গিয়ে সাক্ষাতে সব বলবো। তুমি নিজের যত্ন নিও ।গুড নাইট।'
রেখা ও গুড নাইট লিখল।
কিন্তু রেখা ভাবল আদপে রাত্রিটা কি ভালো যাবে?
যত দিন যাচ্ছে মানুষ যেন তত ধৈর্য  হারিয়ে ফেলছে ।হাজারো সমস্যা মানুষকে গ্রাস করছে 
কেউ ভালো নেই ।কেউ ভালো থাকার চেষ্টা করছে না। এদিকে বৃষ্টির রাত যেন রেখাকে গ্রাস করতে আসছে। আর ভাবছে বাবান যেন সুস্থ হয়ে যায় আর সোমদত্তা কি শেষ পর্যন্ত তার পুরনো প্রেমকে আঁকড়ে ধরতে চাইছে? তাতে কি ওর লাভবান হবে? কেন এই পাগলামীটা করছে ? আসলে প্রথম প্রেম তো ভোলা কষ্ট।





ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"১৩ ক্রমশ

দেবাশিস সাহা



ডাকনাম 


ডাকনাম ধরে ডেকে উঠলো জন্মগ্রাম।এখন যৌবন সূর্যাস্তের দিকে।একমাত্র ধুলাউড়ি জানে হাফপ্যান্ট, হাফ প্যাডেল আর তোতন এর গল্প।বাগানের রাস্তাটা এখন এডাল্ট।কোমর জড়িয়ে চলে যায়।পিছনে পড়ে থাকে পেট্রোলের পোড়া গন্ধ।সেই গন্ধ 
দিয়েই চিনতে পেরেছিলাম ফরিদের লাশ।জীবন থেকে মৃত্যু গহবরে যাবার শর্টকাট পথ আত্মহত্যা।
বন্ধু লোফফা ক্যাচ তুলে দিয়ে চলে গেলো।রেখে গেলো অংক খাতা।খাতা ভর্তি কাটাকুটি জীবন।

জাফর রেজা'র ছোট গল্প "ক্ষণিক বসন্ত "৩

স্বমহিমায় লিখে চলেছেন নতুন ধারাবাহিক লেখক জাফর রেজার ছোট গল্প "ক্ষণিক বসন্ত 
মতামত দিন  আপনাদের  একটি  কমেন্ট লেখকের ১০০ লেখার  সমান মূল্যবান। 




                ক্ষণিক বসন্ত 
                                                                          য় পর্ব 
 

কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড ঠান্ডা পরছে, তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে, এর মধ্যে আবার আমার গাড়ি খারাপ,  গ্যারেজে পরে আছে তাই অনেকটা পথ হেঁটে  বাসে উঠতে হয়।
কপালে নরম হাতের স্পর্শে  ঘুম ভাংল, দেখলাম বুলা আমার পাশে বসে, ওর একটি হাত আমার কপালে, আপনি কখন এলেন,  দরজা খুলে দিল কে ? 
-মন্টু ভাই। মন্টু  আজ কাজে যায়নি। মন্টুকে একটু ডাকবেন। না,  ওনাকে ডাকার প্রয়জন নেই উনি ঘুমাচ্ছে। বুলা আজ কি বার, সোমবার, আপনি কাজে যাবেন না, অফিসে বলে দিয়েছি আজ আসবনা, কেনো ? 
বুলা বেশ অভিমান নিয়েই বললো আপনি কেমন মানুয,  আজ ৩ দিন আপনি জ্বরে পড়ে আছেন, আমাকে একটা খবর দিলেন না। আপনার মোবাইল অফ, আমি যে কতবার কল দিয়েছি , শেষে দেখতে এলাম আমাকে না বলেই চলে গেলেন কিনা, ফোনে না পেয়ে আমি যে কি ছটফট করেছি, আপনি এমন কেন ?  বুলা আপনাকে দেখে আমার খুব ভাল লাগছে, মনে হয় অনেকটা ভাল হয়ে গেছি। থাক আর কিছু বলতে হবেনা, মন্টু ভাই বলেছেন ডাক্তার দেখান নি, উনি কিছু এন্টিবায়োটিক এনে দিয়েছে, তাই চলছে। হ্যাঁ তাতেই কাজ হয়েছে। বুলা বেশ রাগত স্বরে বলল আপনি কি ডাক্তার, কিছু বললাম না, বুলা আরও রাগত ভাবে বলল হাসবেন না,  আমি হাসির কিছু বলিনি। বুলা বাথ রুমে গিয়ে বালতিতে পানি নিয়ে এল।  আপনি উপর হোন, জিজ্ঞেস করলাম কি করবেন,  বলল কথা বলবেন না যা বলছি তাই করুন। আমার মাথা ভাল করে ধুইয়ে দিল, ভিজে টাওয়াল দিয়ে মুখ হাত পা মুছে দিল, আমি শুধু দেখলাম মেয়েরা প্রয়োজনে কত তারাতারি মায়ের ভুমিকা নিতে পারে। আমার খুব অস্বস্তি লাগছিল, বললাম বুলা কি কারণে
অফিসে যাবেন না তা কি ওদের জানিয়েছেন, অফিসে যাবনা মিনে করে ঘর থেকে বের হইনি, আপনি হারিয়ে গেলেন কিনা দেখতে এসে দেখি আপনার ঘরই শুধু অগোছালো নয় আপনি মানুষটাও অগোছালো , অফিসে বলে দিয়েছি হাসপাতালে এক বন্ধুকে দেখতে যাবো। আমি একটু বাইরে যাচ্ছি, ফিরে আসছি কিছুক্ষনের মধ্যে, আমি না আসা পর্যন্ত  চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন,  ঘরের চাবিটা নিয়ে গেলাম। বুলা চলে গেল।  এই প্রথম কারও জন্য আমি প্রতিক্ষায় রইলাম। আমার প্রতিক্ষার অবসান করে বুলা এল। 

চলবে...

মোঃহা‌বিবুর রহমান এ‌র লেখা "সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা"৮

ঘরের ভিতর থেকে কবি ধরেছেন দৃশ্যকথা গদ্যের ভাষায় ধারাবাহিক ভাবেই প্রকাশিত হয়ে চলেছে তাঁর অসাধারন সৃষ্টি। লিখতে সহোযোগিতা করুন লাইক ও কমেন্ট করে । পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল পাঠক পাঠিকা লেখক লেখিকা সকলের জন্য রইলো অনন্ত শুভেচ্ছা




সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা 
                                                                                               (ম পর্ব)


                                             পৃথিবী‌তে হ‌রেক রক‌মের সম্পর্ক বিদ‌্যমান আ‌ছে। মা, বাবা, ভাই, বোন, চাচা, চাচী, ফুফা, ফুফু, ছে‌লে কিংবা মেয়ে ইত‌্যা‌দি। সম্পর্কগু‌লি স্ব স্ব ক্ষে‌ত্রে ইউ‌নিক বা অনন‌্য। ত‌বে প্রধান সম্পর্ক হ‌লো দু‌টি।তাহ‌লো আপন ও পর। স্ত্রীর সা‌থে স্বামীর সম্পর্কটি ব‌র্ণিত কোন ক‌্যাটাগরী‌তে পড়‌বে তা বলাটা স‌ত্যিই মু‌স্কিল। 

হয়ত এভা‌বে বলাটা অত‌্যু‌ক্তি হ‌বে না যে, একজন স্ত্রী আর একজন স্বামীর মধ্যে সম্পর্ক হ‌লো স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক। এ সম্পর্কটি আপ‌নের চে‌য়েও আপন এবং অ‌তি মধুর। এজন‌্যই হয়তবা স্ত্রীকে বলা হয়ে থা‌কে সহধ‌র্মিণী বা ই‌ং‌রেজী‌তে বলা হয় (better half)। স্বামী হি‌সে‌বে স্ত্রী বা সহধ‌র্মিণীর উপর তার যেমন অ‌ধিকার বা হক আ‌ছে তদ্রুপ স্ত্রী বা সহধ‌র্মিণী হি‌সে‌বে স্বামীর উপরও ‌সমপ‌রিমাণ হক বা অ‌ধিকার আ‌ছে।

এই অ‌ধিকার ব‌লে একজন সহধ‌র্মিণী প্রয়োজ‌নে স্বামীর উপর চোখ রাঙা‌বেন কিংবা মা‌ঝে মা‌ঝে ছ‌ড়ি ঘুরা‌বেন আর এটা যেস্বামী প‌জি‌টিভ বা ইতিবাচক হি‌সে‌বে মে‌নে নে‌বেন তার সংসা‌রে হয়ত কোনদিনই খারাপ সময় আস‌বে না কিংবা অশা‌ন্তির সৃ‌ষ্টি হ‌বে না। এটাই বাস্তবতা। আবার অ‌ধিকার ব‌লে একজন সহধ‌র্মিণী য‌দি তার স্বামী‌ ব‌্যক্তি‌কে প্রয়োজন‌বো‌ধে খুনসু‌টির কায়দায় সং‌শোধন করার ‌চেষ্টা ক‌রেন ও পরামর্শ দে‌ন আর সেই বু‌দ্ধিমান এবং সু‌শি‌ক্ষিত স্বামী ব‌্যক্তি‌টি য‌দি সেটা‌কে প‌জি‌টিভ বা ই‌তিবাচক ভে‌বে আশীর্বাদ ম‌নে করেন তাহ‌লে ঐ সংসা‌রে দুঃখ আর অশা‌ন্তি বোধ ক‌রি এক‌ দৌ‌ড়ে পা‌লি‌য়ে সরাস‌রি শীত‌নিদ্রায় চ‌লে যা‌বে।

সাংসা‌‌রিক জীব‌নে প্রত্যেকের কিছু না কিছু চিন্তাভাবনার ফারাক থাক‌বেই। কারণ, নানা মু‌নির নানা মত (Many men many minds) হ‌বেই। ত‌বে উভ‌য়ে এ‌কে অপ‌রের মতামত‌কে শ্রদ্ধা জানা‌তে পার‌লে সংসা‌রে অশা‌ন্তির অবসান ঘট‌বেই। অার পরস্প‌রের প্রতি এমন শ্রদ্ধা‌বোধ সৃ‌ষ্টি হ‌লে উভয়েরই বুঝদার হবার পথ‌টি যে অ‌তি সহজতর হ‌বে সেটা সু‌নি‌শ্চিত । 

উপ‌রোক্ত প‌রি‌স্থি‌তি‌তে স্বামীর প্রতি সহধ‌র্মিণীর যে‌কোন হুঁ‌শিয়ারী বার্তা স্বামী মানুষ‌টি ই‌তিবাচক হি‌সে‌বে ভাব‌তে বাধ‌্য। অামা‌দের পুরুষ শা‌সিত সমা‌জে হয়ত স্ত্রীর এমন হুঁ‌শিয়ারী বার্তা আজও ই‌তিবাচক হি‌সে‌বে অ‌নেক পুরুষ বা স্বামীই মে‌নে নেবার মান‌সিকতা গ‌ড়ে তুল‌তে পা‌রেনি ত‌বে আ‌মি সুনি‌শ্চিত যে, সে‌দিন আর বে‌শি দূ‌রে নেই যে‌দিন একজন সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা প্রত্যেক‌টি স্বামীই ইতিবাচক ভে‌বে সা‌রিবা‌দি সালসা হি‌সে‌বে গ্রহণ কর‌বে।



ক্রমশ

রাবেয়া পারভীন এর ধারাবাহিক ছোট গল্প "কালো ক্যনভাস"


 আজ থেকে শুরু  হলো নতুন  ধারাবাহিক "ক্যানভাস "
লেখাটি পড়ুন এবং অন্যদের  পড়তে সহযোগিতা করুন  লেখককের মনের অন্দরমহলে জমে থাকা শব্দগুচ্ছ একত্রিত হয়েই জন্ম এই লেখার আপনাদের মূল্যবান কমেন্টে লেখককে  লিখতে সহযোগিতা করবে।    




কালো ক্যানভাস 
 
                                                 (ম পর্ব) 

                                       নীলার  মনটা খুব ফুরফুরে  হয়ে আছে। আজকে সে একটা সরকারী কলেজে  প্রভাষক হিসেবে যোগ দেবে। বেশ সময় নিয়ে শাড়ী বাছাই করছিলো । প্রথম দিন কোন শাড়ীটা পরবে। খুব সাধারণ কিন্তু ব্যক্তিত্বপূর্ণ  হতে হবে। শেষ পর্যন্ত হালকা নীল  চওড়া রুপালী পাড়ের একটা শাড়ী বেছে নিল সে। সাথে সাদা রংগের একটা ব্লাউজ । চোখে  কাজল ঠোটে  হালকা গোলাপী  লিপষ্টিক।  সাজগোজ শেষ হবার পর নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আয়নায় দেখল কয়েকবার। মুচকি হেসে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচাল নীলা।
" কি মাস্টারনী  কেমন লাগছে ? " তারপর জোরে হেসে উঠল। নীলার মা  চা নিয়ে এলেন মেয়ের  জন্য। হাসির শব্দে  জিজ্ঞাসু চোখে  মেয়ের দিকে তাকালেন, " কিরে!  নীলা একা একা হাসছিস কেন ? 
মায়ের দিকে চেয়ে  মায়ের হাতথেকে চায়ের কাপটা নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপরে রেখে হাত বাড়িয়ে মাকে বুকে জরিয়ে ধরে একটা ঘুরপাক খেল।
-আমার খুব আনন্দ লাগছে মা  তাই হাসছি । আজকে মনে হচ্ছে  আমিও পারি। পারব  পুরুষদের  পাশাপাশি তাঁদের সমমর্যাদার কাজ করতে।
ততক্ষনে মায়ের চোখেও চিক চিক  করছে আনন্দাশ্রু।
মেয়ের মাথায়  হাত বুলিয়ে দিয়ে  মেয়ের কপালে চুমু খেলেন।
- আমার লক্ষি মেয়ে,  অবশ্যই  পারবি। নে এবার চা টা খেয়ে  রওনা হ।  তোর আব্বু  গাড়ী  নিয়ে বসে আছেন  তোকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে যাবেন।
- এইতো যাচ্ছি  মা দোয়া করো। 
সেন্ডেল পায়ে গলিয়ে , বাইরে বেরিয়ে এলো নীলা। আব্বু অনেকক্ষন। ধরে  অপেক্ষা  করছিলেন
- সরি  আব্বু তোমাকে দেরি করিয়ে দিলাম। দেখতো আব্বু আমাকে কেমন লাগছে ?  
মেয়ের  আনন্দ দেখে খুব ভালো লাগলো  জালাল সাহেবের। সেই ছোট্ট নীলা  তার আদরের মেয়ে আজকে কলেজের লেকচারার। হয়েছে। বাবা হিসেবে  তাঁর বুক গর্বে ভরে উঠল। 

                                                                                                                                         চলবে...

গুলশান আরা রুবী




প্রবাস জীবন


প্রবাসের জীবন যাপন-
যেন সাহারায় রাত্রি যাপন !
স্বপ্নগুলো গুড়া গুড়া হয়
অসহনীয় অসমতার মতন। 

প্রবাসের জীবন যাপন-
উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে,
সর্বস্ব হারানো মানুষের মতন!
      
কত উদীয়মান কবি
লিখেছে এ বঞ্চনার ইতিহাস!
কবিতায় উপজীব্য করেছে,
প্রবাসীর করুন ক্রন্দন। 

কত শিল্পী এঁকেছে-
প্রবাসীর মনে লুকায়িত!
জন্মভূমির প্রতি লালিত স্বপন। 

কত সুরকার-গায়ক-
কণ্ঠে ধরেছে প্রবাসীর বিরহ!
আত্মীয়দের হতে দূরে থাকা শোক। 

রাষ্ট্র ভেবেছে কি শুদ্ধতায়-
ত কষ্টের প্রবাসের ডলারে!
প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক। 

দূর প্রবাসে বসে ভাবি একাকী-      
ফিরে কি পাবো নবযৌবন!
যে প্রেম রয়েছে মনে সঙ্গোপনে,
বুঝবে কি আমার আপনজন। 

তামসিক যতই গাঢ় হোক-
কুয়াশা ও মেঘের মতো
ডুবে আছি অবিরত...!
ঐ লাল সবুজের বুকে। 

প্রবাস জীবনে নেই অবকাশ-
রয়েছি নীরবে নিভৃতে ধ্যানে!   
আসস্ত কর মোরে জন্মভূমি,  
তুমিই প্রথম প্রেম,বাকি সব 
বনলতা ! 

প্রকৃতি সত্য কি?
প্রেমময় সুন্দর অখণ্ড
ক্ষুদ্র এ জীবনের স্বাক্ষর রেখে যাব!
চিরভাস্বর করে লাল    
সবুজের জন্য। 

তবেই স্বার্থক হবে প্রবাসের      
জীবন  যাপন। 
সবাই বলবে ধন্য ধন্য।

এন,এন,মুন



অব্যক্ত অনুভূতি
 

প্রকৃতিতে প্রভাতরাগ বিরাজমান 
বিস্মিত, পুলকিত মানব মন।
নতুন ফুলের প্রস্ফুটন,
চারদিকে ভ্রমরের গুঞ্জন। 
ঘাসগুলি লম্বা,স্নিগ্ধ কোমল 
প্রকৃতির কার্পেট, সবুজ  শ্যামল।
অতঃপর উত্তরীবায় 
সব বিবর্ণ হয়ে যায়।
ক্ষ্যপা আগুন তাদের পোড়াতে পারে
যদিও বসন্তে তারা পুনরায় জন্মাবে।
স্বপ্নেরাও  আত্মিক তাড়নায়
নিজ গতিপথ পাল্টায়।
আমি বিপর্যস্ত বুড়ো ঈগলের মতো
স্বপ্নিল জগৎ সাজাতে ব্যস্ত।
আজও খুব কষ্ট পেলে
এ মন তোকে খুঁজে ফেরে।
তুই আজ দূর আকাশের তারা
অলক্ষ্যেপথ দেখাও,দাও পাহারা 
সময়ের ছলনায় পরবাসী  আমরা 
অব্যক্তই থেকে যায় অনুভূতিরা।

সুবর্ণ রায়




বিপ্রতীপে 



সম্পর্ক কত 
সমান্ত রাল রেখা 
এঁকে এঁকে জীবন চলা। 

ঘাত ও প্রবাহে 
বহে চলা নদীর 
স্রোত যেমন। 

বিপ্রতীপে কে কার 
ঠিকানাহীন সাকিন সন্ধানে 
হারিয়েছে সময়

তাতে বেলা বাড়ার 
হিসাব ছাড়া নেই 
অন্য কোনো সন্তাপ।

মাধুরী বিশ্বাস



ডানা মেলেছি 

                          

ভিসুভিয়াসের চূড়ায় আমি পা রেখে দাঁড়াব,
পাল ভাঙ্গা নৌকায় তুফান খুঁজে বেড়াব,
দেখব কি হয় ? 
তোমার তো ভাবার কথা নয়।
তুমি আমায় নিয়ে ভাবছো কেন ?
সে অধিকার মাঝ গঙ্গার জলধারায়
অস্থি বিসর্জন দিয়েছিলে, 
সেই শ্রাবন্তী সন্ধ্যায় তুমি আমায় বৃষ্টি করেছিলে। 
তোমার চৌকাঠে বসে অপেক্ষায় মরেছি অনেক মৃত্যু, 
এক শতাব্দী গৃহবন্দী হয়ে আছো কিন্তু, 
দ্বার খোলোনি আমি বসে আছি বলে।
মুছে দিয়েছি আমার থাকার সমস্ত দাগ,
পবিত্র এখন তোমার চৌকাঠ 
চোখের জলে ধুয়ে দিয়েছি ।
বেরিয়ে দেখো.....
এখন আমি পরিযায়ী, সাত রঙের পাখি হয়েছি ।

gfdgg

LOVE

sdfg

LOVE