২৮ ডিসেম্বর ২০২০

মোফাক হোসেন



আঁতুড় ঘর


জলের বিছানায় শুয়ে

কি করে ভালো থাকবো?

বড় বড় পাহাড় এসে 

চেপে বসে বুকে।

শ্রাবণের বৃষ্টি ধারা 

দু'কূল ছাপিয়ে ভিজিয়ে দেয়,

আমার সমস্ত শরীর।


অঝোর ধারায় কেঁদে উঠে,দ্বিবেনী

আপন করে নি কেউ!

প্রতিটা বিনিদ্র রাত

জীবনের দ্বারে দাঁড়িয়ে 

মহেন্দ্রক্ষণ জন্ম দেয় 

একটি কবিতার।

মনের জঠরে যন্ত্রণার 

আঁতুড় ঘরে অনন্ত প্রতীক্ষায়।

শুভ্র ব্যানার্জী

 


বিচ্ছেদ ও গিটার


সমস্ত বিচ্ছেদের আগের দিন তুমি একটা গিটার কিনলে সন্ধে হবার আগে পাখিদের নির্দিষ্ট ছন্দে দোল খাওয়া দেখে ফেলা যায়।

নতুন গিটার কিনলে তার সাথে একটা গিটার রাখার ব্যাগও পাওয়া যায়।সেটা বাড়তি পাওনা।তাতে একটা বড় পকেট থাকে।সেখানে ক্যাপো রাখতে পারো আর পিক কয়েকটা রাখা যায়।অথবা নতুন একটি নোটবুক।ছক কাটা কর্ডের নামতার বই।

ভারি মিষ্টি একটা গন্ধ থাকে ব্যাগটির গায়ে।বোধহয় বাজনাঘরের গন্ধ।প্রতিদিন যদি রাত্রে ঘুমোবার আগে ব্যাগে তুলে রাখা হয় এইসব গিটার তাহলে সকালে বের করার সময় নাকে এসে লাগে সেই আশ্চর্য গন্ধ।মনে হয় যেন দোকানের আরো কত ছোটো বড় গিটার, হারমোনিয়াম, ইউকিলেলেদের সাথে ব্যাগটির একটা সংসার ছিল অথবা গিটারটির।এ গন্ধটি সেইসব সঙ্গীসাথীদের গায়ের গন্ধ।

যে কোনো বিগিনার প্রথমেই নতুন বাদ্যযন্ত্র পেয়ে ভারি আনন্দ পায়।তুমিও পেয়েছ অথচ বাজাতে বসলে যখন কিছুতেই সেইসব সুর বাজাতে পারো না তখন মনে মনে কষ্ট হয়।মনে হয় এটাতে কিভাবে বাজবে সেইসব দুর্দান্ত ধুন!

আসলে প্রতিটি মানুষ খুব নিভৃতে বাজায় কিছু।কোনো না কোনো যন্ত্র সে নিজের মতো বাজায়।বাজাতে বাজাতে স্মৃতির গভীরে পৌঁছে নিজেকে অনেক দূর থেকে দেখতে থাকে।দেখতে দেখতে তার মাসল মেমরি বাড়তে থাকে।তারপর অনায়াসে বাজাতে থাকে।তখন সন্ধেবেলা একটা বিড়াল তাদের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে পায়ের কাছে।একটা মেয়ে স্কুল থেকে ফিরবার পথে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পড়ে।একটা ঘুড়ি নির্ঘাৎ তখন আকাশে সবে হাওয়া পেয়ে চোখ খুলল।

বাড়ি থেকে অনেক দূরে চলে যাওয়া যায় এইসব গিটার হাতে পেলে।ফিরবার কথা ভুলে থাকতে পারা যায়।যদিও কোথায় ফিরবে তুমি?রাত্রে ঘরের ভিতর জোনাকি ঢুকে পড়ত যে ঘরে সেই ঘরে!যে ঘরে রাজ্যের দুর্দশা বুকে  নিয়ে তুমি কেমন নির্বিগ্নে ঘুমিয়ে পড়তে।যে ঘরের বাইরে তখন কে যেন জ্যোৎস্নার আলোয় ডুবিয়ে ধরেছে এই পৃথিবীকে।সমস্ত বিচ্ছেদের ফাঁকে একটা গিটার তার ছটি তারের নিচে এইসব ফেলে আসা রাতের কথা লিখে রাখে।

I

 I

H

 H

G

 G

F

 F

D

 D

E

 E

C

 C

B

 B

এম.সাঈদ




পথশিশু


পথের ধারে আধূল গাঁয়ে

বস্তা হাতে রোজ।

সে'তো এতিম অসহায় এক

কোথায় পাবে ভোজ?


জীবদ্দশায় ভিক্ষে শেষে

সুপ্তি পথের ধারে,

কে বা কারা তাড়িয়ে দেয়,

অ-কারণে মারে!


প্রীতিলীলা পায় না যে সে,

যুগ-শতাব্দির পরে।


একমুষ্ঠি ভাত হবে কী ভাই?

জীবন বাঁচার তরে!


ঈদের পরে ঈদ চলে যায়,

জীর্ণ কাপড় পরে।

নতুনত্বের পায় না সে স্বাদ,

কেড়ে নিলো ঝড়ে?


শিক্ষা নামের পঙ্খিলতায়

তাহার সখ্য -শোক,

দিবস যেনো তাহার চোখে

স্বপ্ন-গড়া হোক।


হাসপাতালের ঐ চত্বরেও 

হয়না রে তার স্থান।

শান্তির নিবাস পাবে যখন,

কবর করে প্রস্থান।


কতো কষ্ট অনাদরে, 

গড়ে তাদের কায়া।

স্বেচ্ছাসেবী হৃদয়পটে

 আছে তাদের মায়া।


স্বেচ্ছাসেবী ভাই-বোনেরা

 নিচ্ছে তাদের খোঁজ,

পড়ার নীড়ে সপ্তাহ পরে

দিচ্ছে একটু ভোজ।


সরকার আমার মানব প্রিয়ো

রাষ্ট্র চালক চাবী,

মৌলিক স্বত্ব ফিরিয়ে দাও

এই-তো- আমার দাবী।