১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ড,সৈয়দ আজিজ।




মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করো


মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করো 

কবে খেয়েছিল পেট ভরে ভাত?

তার সন্তানদের সাথে নিয়ে, 

যাকে ভ্যানে তুলে নিয়ে গেছে 

দায়িত্বশীল পুলিশ কাল রাত, 

ট্রেন থেকে বিনাটিকিটে যাত্রার দায়ে 

যে ছাই বিক্রির জন্য রোজ

ভোরের ট্রেনে চড়ে আসে 

ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় 

বিকেলের ফিরতি ট্রেনে আবার 

ফিরে যায় তার কুঁড়েঘরে, 

জিগ্যেস করো যখন তাঁর স্বামী 

তিনটি শিশু বাচ্চা রেখে 

যৌতুকের দায়ে তাড়িয়ে দিয়ে ছিল 

ভেঙে পাঁজরের শুকনো হাড় 

তখন কি ব্যবস্থা নিয়ে ছিল 

মহা দায়িত্বশীল পুলিশ?

কী ব্যবস্থা নিয়ে ছিল সরকার?

নিজেকে জিজ্ঞেস করো?

তিনটি বাচ্চার জন্য তাঁর 

বেঁচে থাকার আছে কি

কোনো মানবাধিকার!

শ্যামল রায়

 


জীবনেরে খোঁজে 


জীবনের জন্য জীবনের মানে খুঁজছি

দিগন্তের নীল  আকাশে

কিংবা সকল মানুষের মাঝে  খুঁজেছি জীবন,

শুনেছি  জীবনের নানান প্রতিমুহূর্তের কথা 

এখনো খুঁজে যাচ্ছি মানুষের মাঝে জীবনের খোঁজ।

একাকার করব সকলেই আমরা মানুষ

 নিজের জীবনের একটুকরো সুখকে;

যদি সুখ ভেবে নিতে জীবনের মানে হয়

তাহলে হয়তো সুন্দর হবে এ জগত।

তবু আমরা মনুষ্যত্বের জন্য জীবনের মানে খুঁজি।

কখনও বা নীল আকাশের অস্তিত্ব কে ধরে রাখতে চেয়েছি বার বার , খুঁজে নিতে জীবনের মাঝে সকালের ঠিকানা-------

দিগন্তের নীল আকাশে খুঁজেছি জীবন, 

জীবনের খোঁজে তোমরাও দু হাত বাড়াও

এস বেঁচে যেন থাকি ডাল-ভাতে

জাতপাত ভুলে মানুষেমানুষে----।

জীবনের খোঁজ হোক শুধু এখানেই!

সমিত মণ্ডল




 ফুড়ুত উড়ে যা


চড়ুই পাখি,চড়ুই পাখি

ফুড়ুত উড়ে যা

রামধনু রং মাখা চড়ুই

আমার সারা গা।


গাঁয়ের ধারে খালে বিলে

পদ্ম শালুক ফোটে 

মায়ের আদর লেগে আছে 

আমার নরম ঠোঁটে।


মনের উড়ান লিখছি আমি

মেঘের ভেলায় চড়ে 

ভুলিয়ে রাখার খেলাপাতি

অবহেলায় পড়ে।


চড়ুই পাখি,চড়ুই পাখি 

ফুড়ুত উড়ে যা

মায়া-রোদের স্বপ্নগুলো 

লুটোপুটি খা।


মাখামাখি রামধনু রং

আমার সারা গা

চড়ুই পাখি,চড়ুই পাখি 

ফুড়ুত উড়ে যা!

সাইফুল আলিম




কুয়াশার চাদরে



শীতের কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে পুরো পৃথিবী। 

সূর্য মামাকে গিলে খেয়েছে প্রতিটি প্রভাতী ভোর।

সবুজ মাঠে শিশির কনা জমে আছে গাসের ডগায়।

উষ্ণতার মোরগ উন্মোচনে আগুনের তাপ নেয় সাজ সকালে বৃদ্ধ,যুবক ও শিশু, সমবেত ভাবে।

শীতের আমেজে মগ্ন পল্লীর নানাবিধ শ্রেণির মানুষ। 

উৎসবে মেতে উঠে আজেই এই সৃজনশীল মুহূর্ত। 

রাতের আধারে জোৎস্নারা উঁকি মেরে তাকায় না।

ধুলায় উড়ানো  বালিকনার ন্যয় কুয়াশায় ঢেকে আছে পথঘাট।

কম্বলের নিচে ফুটবলের ন্যয় গোল হয়ে আছে বৃদ্ধারা। 

,কিশোর কিশোরীর শরিলে যেন যৌবনের সিদ্ধ জলের ধোঁয়া বের হয়, তবুও যেন পৌষের সীত।বাহার কিংবা আত্ম বড়াইয়ের কিছু নেই। 

এইটা প্রিয়ার কাছে বীর  হবার  কিছুই নয়

সময়ের সাহসিকতার আসল পরিচয়, 

নিজেকে সঠিক সময়ে খাপ খায়িয়ে নেওয়া। 

তাই সীতের ঘন কুয়াশার কাছের সেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে সুস্থ থকাই অধিকতর শ্রেয়।

আমিও তার ভিন্ন মাত্রার কোন গনিত  সুত্রের সমাহার নই।

যেমনটি চাঁদের জোৎস্নাকে ঢেকে রাখে ঘনমেঘ,

কিংবা কুয়াশার তুষার বৃষ্টি, 

তেমনি চাদরে ঢেকে আছে উষ্ণতার রক্ত মাংসের গড়া কোমল শরীর কোন এক বিনিদ্র রজনীতে।

হামিদুল ইসলাম




বার্তা


এখন কে কার কাড়ে রাতের ঘুম 

              শঙ্কিত মন

হঠাৎ কোথা থেকে কী হয়ে যায়

      অম্লান হৃদয়ের উপবন ।।


জঙ্গলের রাজত্বে আমাদের বাস 

                আমরা বেকুব

গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা খুন করে গণতন্ত্র 

       রক্তাক্ত প্রতিটি রোমকূপ ।।


ধীরে ধীরে পেরিয়ে যায় নৈঃশব্দের রাত

         জলে ভাসে আরশিনগর

বিন্দু বিন্দু ঘামে যুগে যুগে সিন্ধুর জন্ম 

         যুদ্ধে জড়িত গ্রাম শহর ।।


অন্নদাতারা প্রতিদিন রাস্তার উপর

       কোথায় দেশের স্বাধীনতা 

আমরা নিত‍্য ঐক‍্যের হাত রাখি হাতে 

         দিই রণ দামামার বার্তা ।।

ওয়াহিদা খাতুন




রৌদ্রস্নানে



মাথার উপর কোমল আলোর বিলি খেতে খেতে সর্বাঙ্গে দামাল সূর্যের স্পর্শে মেতে উঠলাম রৌদ্রস্নানে!

কবে ভিজেছি সেই মাঘ নিশিতের আঁচলাবৃত সূর্যে;

আরো একবার বসন্তের প্রাক্কালিন কুয়াশার উষ্ণ ঘ্রাণে --ডিম-কুসুম সূর্যের নরম শয্যায়--

মাঘের সুড়সুড়ি মাখা রৌদ্রের পরশে শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুখ-ঘুমের ছাওনি ছেয়ে গেলো মজ্জায়--!

আমার রেটিনা বেয়ে গড়তে লাগলো সেই মিষ্টি আলিঙ্গন!

গভীর সুখ কম্পনে এলিয়ে দিলাম আমার দেহ,তনু,মন;

এ কোন নৈসর্গিক স্পর্শে বিলীন হলাম;

সূর্যমুখী হয়ে আরো একবার সূর্যস্নানে হারালাম!


মোহাঃ হাসানুজ্জামান




স্মৃতির অন্তরালে


আসন্ন আরো একটি নির্ঘুম রাত্রি

মস্তিষ্কে তার স্মৃতির জ্বালাতন

শুস্ক চোখে হয়েছি অশ্রু হীন

বিষন্ন মনে ওস্ঠাগত প্রান।


দুঃখের সাগরে ভাষছি ক্রমাগত

প্রত্নলিপি তার একেছি বুকে

স্মৃতি তে জড়িয়ে বাঁচতে চাই আমি

থাকতে চাই আমি বীরঙ্গনার বেশে।


সুখের অন্বেষায় নই আমি চিন্তিত 

স্মৃতি দংশন করে বার বার,

নির্জন বনে আমি ঘুরছি ক্রমে

বুকে গাথা শুধু প্রতিচ্ছবি তার।


গোপন আবেগে রয়েছি জড়িয়ে

এ-যেন এক বিষন্ন অভিযান,

হৃদয়ের অন্তরালে কেন শুধু সে

নির্জনতায় বন্দি কেন শুধু আমার প্রান ?


অভিসারের অন্তিম-অপেক্ষায় এসেছি সবে

যানিনা পাব কিনা সেই সন্ধিক্ষণ,

ক্লান্তি-হীন মৃত্যু মিছিলে হাটবোনা আমি

বিরামহীনতাই আসবে অশান্তির নির্ঘুম।


প্রেমাংশু শ্রাবণ




অন্য জীবনের স্বাদ



এমন মায়াবী আলো

দেখিনি আগে।

চোখে রহস্যময় বিভ্রম লাগে। 


যুবা সূর্য -সতেজে,দশদিক ঝলমলিয়ে হেসে ওঠে --

উচ্ছল যুবতীদের মতন,

ঝলমলে প্রজাপতি পাখা।


ঝিঁঝি -ফড়িং এর লেজে সুঁতো বেঁধে ছুটে চলা দুরান্ত   বালকের মতো

মাঝে মাঝে আসে দমকা হাওয়া,

এই বেশ----

সত্য হোক চাওয়া।

সত্য হোক সকল প্রত্যাশা।

প্রকৃতি পুরুষ আর মহৎ ভালোবাসা।


হাতে হাত রেখে, নদীর তরঙ্গ গুনতে গুনতে 

চলো খুঁজি--

অন্য জীবনের স্বাদ।

অলোক দাস




পৃথিবী 



পৃথিবী আমারে চায় অবিরাম I ভোরের আকাশে উঁকি দেয় সূর্য I কিছু আলো নিয়ে নেয় পৃথিবী I কে যেন বলে এবার জাগো I পুবের জানলাটা খুলে দাও, দাও দরজাটাও খুলে I দেখো নয়ন মেলে নতুন দিন I পাখিদের কোলাহল, ঘাসের ওপর শিশির বিন্দু, সবুজের ছড়াছড়ি I বসন্তের আহ্বানে ফুলের মেলা I প্রেম সেতো চিরদিন I এমনি কোরে শুরু হোক পথ চলা I উদাস হয় মোন I এ যেন এক নদী I পাহাড় হতে ভেসে আসে জলকণা I কতো গ্রাম, শহর ভেদ কোরে মিশে যায় সাগরে I এ এক অনবদ্য !

স্বপন কুমার ধর




 একান্তে



যখন তার পাই না দেখা,

লাগে কেবল ফাঁকা ফাঁকা।

যখন সে কাছে থাকে,

মনে হয় যেন,সব কিছুই আছে।

যখন সে যায় চলে,

ভাবি মনে তলে তলে।

এরকম কেন,হয় যে আমার,

নুতন করে তাই,ভাবি আবার।


ভাবি অনেক আছে কথা,

বলতে হবে এবার সেটা।

কিন্তু যখন হয় দেখা,

বলতে পারিনা কোনই কথা।

কোনটা বলবো,কি করে বলবো,

না কী কেবল,ওর কথাই শুনবো।

আবোল তাবোল কী রে বলি,

গন্ডগোল সব হয়ে যায় খালি।

সময় এভাবে কেটে যায়,

বুঝতে পারিনা,সে কি ভাবছে আবার।