২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

মোঃহা‌বিবুর রহমান এ‌র লেখা "সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা"৯

ঘরের ভিতর থেকে কবি ধরেছেন দৃশ্যকথা গদ্যের ভাষায় ধারাবাহিক ভাবেই প্রকাশিত হয়ে চলেছে তাঁর অসাধারন সৃষ্টি। লিখতে সহোযোগিতা করুন লাইক ও কমেন্ট করে । পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল পাঠক পাঠিকা লেখক লেখিকা সকলের জন্য রইলো অনন্ত শুভেচ্ছা







সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা 
                                                                               (ম পর্ব)


                                             স্বামী ও স্ত্রী দু‌টি ‌বিপরীত লি‌ঙ্গের মানু‌ষ যারা আলাদা আলাদা সামা‌জিক প‌রি‌বেশ ‌থে‌কে এ‌সে‌ ঘর বাঁ‌ধে এবং যা‌দের পা‌রিবা‌রিক পটভূ‌মিও ভিন্ন থা‌কে। বলা বাহুল‌্য যে, স্বামী স্ত্রী উভয়ই মানুষ হ‌লেও সৃ‌ষ্টিকর্তা দু‌টি পৃথক লি‌ঙ্গের অ‌ধিকারী ক‌রে তা‌দেরকে সৃ‌ষ্টি ক‌রে‌ছেন। তাই তা‌দের উভ‌য়ের ম‌ধ্যে শারী‌রিক গঠনের ভিন্নতা ছাড়াও চিন্তা‌ চেতনার ম‌ধ্যেও ভিন্নতা থাকাটা খুবই স্বাভা‌বিক ও যু‌ক্তিসঙ্গত। 

বিবাহ নামক ধর্মীয় চু‌ক্তির মাধ‌্যমে এক‌জন মানব ও অপর এক মানবী আজন্ম একসা‌থে ঘরসংসার ক‌রে একসময় এ দু‌নিয়া থে‌কে চিরবিদায় নি‌য়ে পরকা‌লের অজানা ও অ‌চেনা এক জগ‌তে তা‌দের‌কে পা‌ড়ি জমা‌তে হ‌লে উভ‌য়ের ম‌ধ্যে পরস্পর হৃদ‌্যতা বিদ‌্যমান থাকার পাশাপা‌শি কার‌ণে অকার‌ণে ছাড় দেবার মন মান‌সিকতার বি‌শেষ প্রয়োজন হ‌বে। আর এমন মন মান‌সিকতার অভাব থাক‌লে দীর্ঘ দু‌টি জীবন একসা‌থে একই ছা‌দের নি‌চে কাটা‌নো কোনক্রমেই সম্ভব নয়।

কোথাকার কোন এক ছে‌লে অ‌চেনা এক মে‌য়ের সা‌থে পরস্পর বিবাহ বন্ধ‌নে আবদ্ধ হ‌য়ে আজীবন কা‌টি‌য়ে দেয়। এটা তা‌দের নি‌জে‌দের স‌দিচ্ছা, সংক‌ল্পে দৃঢ়তা ও স‌র্বোপরী সৃ‌ষ্টিকর্তার একান্ত ই‌চ্ছে ছাড়া কোনভা‌বেই সম্ভব নয়।

সহধ‌র্মিণীগণ ঘরসংসার সামলান ও সন্তান প্রতিপালন করেন। আবার কেউ কেউ চাকুরী বাক‌ুরীও যে ক‌রেন না সেটা বল‌বো না ত‌বে আমা‌দের বাঙালী সমা‌জে সচারাচর ছে‌লেরাই চাষাবাদ, চাকুরী কিংবা ব‌্যবসা বা‌ণিজ‌্য ক‌রে অর্থ উপার্জনের মাধ‌্যমে প‌রিবা‌রের সক‌লের ভরণ পোষণ সহ উত্ত‌রোত্তর আয় উন্ন‌তির দা‌য়ি‌ত্বে ন‌্যস্ত থা‌কেন।

সুতরাং, এসব‌কিছ‌ু বি‌শ্লেষণ কর‌লে এক‌টি সিদ্ধা‌ন্তে উপনীত হওয়া যায় যে, আস‌লে স্বামী বা সহধ‌র্মিণী কেউ কা‌রো চে‌য়ে কম নয়। সংসা‌রে উভ‌য়ের অবদান সমান সমান। প‌রিবা‌রের জন‌্য সহধ‌র্মিণীর অবদান যেমন মূখ‌্য তেম‌নি একজন স্বামীর অবদানও অনস্বীকার্য। একজন সু‌শি‌ক্ষিত ও বি‌বেকবান স্বামী তার স্ত্রী‌কে যেমন বুঝ‌তে পারেন অ‌তি দ্রুততার সা‌থে তেম‌নি সুন্দর ম‌নের প‌রিপক্ক একজন রমনী তার স্বামী‌কে জান‌তে বা চিন‌তে পা‌রেন খুব অনায়া‌সেই। 

ত‌বে সব‌চে‌য়ে যে বিষয়‌টি না বল‌লেই নয় সে‌টি হ‌লো-দু‌টি ম‌নের ম‌া‌ঝে অবশ‌্যই বিশ্বাস থা‌কতে হ‌বে অগাধ নই‌লে দৈবাৎ এক‌টি ঝড় এ‌সে সংসার নামক ঘর‌টি কাঁ‌চের ঘ‌রের মত সহসাই ভে‌ঙে খান খান ক‌রে ফেল‌বে যা আর কোন‌দিনই জোড়া লাগা‌নো সম্ভব হ‌বে না।


ক্রমশ

জাফর রেজা'র ছোট গল্প "ক্ষণিক বসন্ত " ৪

স্বমহিমায় লিখে চলেছেন নতুন ধারাবাহিক লেখক জাফর রেজার ছোট গল্প "ক্ষণিক বসন্ত 
মতামত দিন  আপনাদের  একটি  কমেন্ট লেখকের ১০০ লেখার  সমান মূল্যবান। 




                   ক্ষণিক বসন্ত 
                                                                                র্থ পর্ব 

                                   কিছু ফল আর কি কি জানিনা এনে টেবিলে রাখল। আমার পাশে বসে বলল আমি বিকাল পর্যন্ত আছি, এখন কিছু খাবেন তারপর কোন কথা নয় শান্ত ছেলের মত ঘুম। বললাম আপনি কি করবেন, বললো আমার অনেক কাজ আছে, কি কাজ জানতে চাইলে বললোএমন মানুযের পাল্লায়ই পরেছি যে অপরের জন্য কাজ তৈরি করে রাখে। বুলা এত জঞ্জাল আপনি একা পরিস্কার করতে পারবেন না, আমি কালকের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাব, তারপর একসাথে মিলে সব গুছিয়ে নেব। বুলা কিছু না বলে রান্না ঘরে গিয়ে আপেল আংগুর নিয়ে আমার পাশে বসল। সব গুলো খেতে হবে। খেতে ইচ্ছা করছিলনা তবুও যতটা পারলাম খেলাম। কপালে হাত দিয়ে বলল আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি এবার ঘুমান। এমনেতেই আমার খুব দুর্বল  লাগছিল,  কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানিনা। 
লম্বা ঘুম দিয়ে উঠলাম। 

এটা কি আমার ঘর, এই দেশে এতো পরিপাটি সাজানো ঘরে আমি কখনো ছিলাম না, সাইড টেবিলে নতুন ফুলদানিতে অনেক তাজা ফুল সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা।
বুলা আপনি এসব করলেন কখন, হেসে বললো আজ থেকে আর এলোমেলো ভাবে থাকা চলবে না, আমি প্রতি সপ্তাহে এসে ঘর গুছিয়ে দিয়ে যাবো, এবার উঠুন ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন, আমি খাবার দিচ্ছি।
জিজ্ঞেস করলাম মন্টু কি উঠেছে ? 
উনি কাজে চলে গেছেন তবে যাবার আগে যা বলে গেছেন তাতে আপনার শাস্তি পাওনা রইলো। আপনি কি কখন ওনার রুমে গিয়েছেন? 
-- কেন যাবনা 
ওনার রুমটা কি আপনি দেখেছেন কেমন পরিপাটি করে সাজানো।  

বুলার কথার উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম--- আপনি খাননি ? ---না কেনো ? 
--- এখন কয়টা বাজে, ৫ টা আপনি এতক্ষণ না খেয়ে আছেন ! 
বুলা হাসলো কিছু বললো না।
ওর জন্য মনের কোথায় যেন কিছু একটা অনুভব করলাম, ডাকলাম --- বুলা,  উত্তর নেই, আবার ডাকলাম বুলা --- এবারও উত্তর নেই শুধু মুখ তুলে তাকালো, বললো এখন আমাকে যেতে হবে, কাল আপনার কাজে যাওয়া চলবে না, আমি অফিস থেকে  বিকালে চলে আসবো। বুলা চলে গেল। আমি একা ঘরে পরে রইলা।   

বুলা কে যে আমার গতানুগতিক জীবনধারা এলোমেলো করে দিলো, নিজেকে এতো শূন্য মনে হচ্ছে কেন ? এমন অনেক ভাবনার জালে জড়িয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি জানিনা। 



ধারাবাহিক "ছোট গল্প " ক্রমশ 
     

রাবেয়া পারভীন এর ধারাবাহিক ছোট গল্প "কালো ক্যনভাস" ২

  নতুন  ধারাবাহিক "ক্যানভাস "
লেখাটি পড়ুন এবং অন্যদের  পড়তে সহযোগিতা করুন  লেখককের মনের অন্দরমহলে জমে থাকা শব্দগুচ্ছ একত্রিত হয়েই জন্ম এই লেখার আপনাদের মূল্যবান কমেন্টে লেখককে  লিখতে সহযোগিতা করবে।    





কালো ক্যানভাস 
 
                                                 (ম পর্ব) 



                                         নীলার দিকে তাকিয়ে মন ভরে গেল জালাল সাহেবের। বিগত দিনগুলিতে  কত কষ্টই না করেছে মেয়েটা। সব বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে এই পর্যন্ত যে আসতে পেরেছে সে জন্য  তিনি  মনে মনে আল্লার কাছে শুকরিয়া জানালেন।
- কৈ আব্বু  তুমি তো বল্লেনা  আমাকে কেমন লাগছে ?  
হেসে মেয়ের দিকে তাকালেন  জালাল সাহেব
-খুব সুন্দর লাগছে,  আমার মা বলে কথা । আমার মা পৃথীবির সেরা সুন্দরী।
- আব্বু !  বাড়িয়ে বলছো কেন ?
-দুর কেন বাড়িয়ে বলব, যা সত্যি  তাই বলেছি। বাবা মেয়ে দুজলেই  হো হো করে হেসে উঠল। মেয়েকে কলেজ গেটে নামিয়ে দিয়ে  জালাল সাহেব  চলে গেলেন। 
নীলা এসে অধ্যক্ষের  রুমে ঢুকল
-আসবো স্যার।?  
-আসুন নীলা ।  বসুন। 
সালাম দিয়ে  অধ্যক্ষের  সামনে  বসলো নীলা।
কুশল  বিনিময়ের পর  অধ্যক্ষ  নীলাকে সাথে নিয়ে  টিচারদের কমনরুমে এলেন।  বড় গোলটেবিল ঘিরে বসে আছেন সব শিক্ষকেরা। সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে অধ্যক্ষ সাহেব  বল্লেন 
-সবাই  আছেন  দেখছি, ইনি  নীলা  চৌধুরী, আপনাদের নুতন সহকর্মী । আজকেই জয়েন করেছেন। দেখতে  ছোট কিন্তু  বিসিএসে  খুব ভালো রেজাল্ট করেছেন।
সবাই  একসাথে নীলার দিকে তাকালো । নীলাও চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সবাইকে দেখছিলো। হঠাৎ  একজনের  মুখের  উপর  দৃস্টি  এসে আটকে গেল  তাঁর। এক মুহূর্তের  জন্য সারা শরীরে কাঁটা  দিয়ে উঠল । কে উনি ?  কে ?


                                                                                         চলবে...

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"১৪

কান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক।  তার নিত্যদিনের  আসা  যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন "।  





                                              টানাপোড়েন (১৪)

                                                                     দংশন

                                   সারা রাত রেখা দু 'চোখের পাতা এক করতে পারে নি। এরইমধ্যে ফোনটা বেজে চলেছে। রেখা ক্লান্ত শরীর ,তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে ফোনটা কোনরকমে ধরল এবং বলল'হ্যালো'।
ওপার থেকে সোমদত্তার কন্ঠে ভেসে এলো'দিদি, পার্থকে হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি । কেন কি হয়েছে ওর? হ্যালো হ্যালো।  ফোনটা কেটে দিলো ?'
এবার রেখা কি করবে? এ দিকে মনোজও ‌ বাড়িতে নেই ।সঙ্গে সঙ্গে মনস্থ করলো , মনোজকে ফোন করবে। ভেবে রিং করল।ফোনটা ওপার থেকে রিসিভ করে বলল ' হ্যালো কি হয়েছে বল?'
রেখা বলল  'কি করে জানলে কি হয়েছে?
মনোজ বলল  'এত সকালে তো তুমি ফোন করবে না তোমার তো কাজে থাকার কথা।'
রেখা বলল ' ঠিকই ধরেছো পার্থকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।এখন আমার কি করা উচিত ।এখন এই মুহূর্তে আমি ট্রেন তো পাবো না।
মনোজ বলল 'পার্থ! কোন পার্থর কথা বলছো?
রেখা এবার একটু রাগ আর বিরক্তির স্বরে বলল পার্থ ।পার্থকে চেনো না ।আমার ভগ্নিপতি।
মনোজ বলে ' যা কিছু মনে করো না। আসলে আমি ভেবেছি পাশের বাড়ির ওই পার্থ। কেন কি হয়েছে ওর?'
রেখা বলল  ' কি হয়েছে সেটা তো জানি না ।গতরাত্রে সোমদত্তা ফোন করেছিল ।তাতে‌ ও যা বলেছিল ,ওর নাকি পার্থর সাথে থাকা সম্ভব হচ্ছে না ।আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু আজকের মধ্যেই এই ঘটনা ভাবতে পারো?'
মনোজ বলল  'হ্যাঁ যাও ।তবে  কাকু কাকিমাকে এই মুহূর্তে কিছু বলার দরকার নেই। বয়স হয়েছে তো ?একে তো ছেলেটা অমানুষ ।সে তো মা বাবার খোঁজ খবরই রাখে না ।আবার এইদিকে মেয়েটারও এই অবস্থা ।ঠিক আছে ।আমি দেখছি। আমি পাশের বাড়ির পার্থকে বলে দিচ্ছি ।ও গাড়ি করে দিচ্ছে। তুমি বেরিয়ে যাও।'
রেখা বলল  'বাবান কেমন আছে?'
মনোজ বলল  'আগের থেকে ভালো আছে। বিপদের ঝুঁকি নেই ।এ যাত্রায় বেঁচে গেল।'
রেখা বলল 'যাক, তবু একটু আশার কথা শোনালে।'
মনোজ বলল 'ঠিক আছে তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও ।পুটু এসেছে?'
রেখা বলল   'না, কত জ্বালা হয়েছে বলো দিকি নি?'
মনোজ বলল  'ঠিক আছে। আমি বাড়ি যাই । তারপরে ওর বাড়িতে যাবো । খোঁজ খবর নেব ।না হলে অন্য লোকের ব্যবস্থা করতে হবে ।এখন তুমি মাথা ঠান্ডা করে ,যেখানে যাচ্ছ ,সেখানে যাও ।আমি এদিক দিয়ে বেরিয়ে যাব।'
রেখা শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল  'কি হবে? ঠিক আছে আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি।'
এরই মধ্যে গাড়ি এসে হাজির।বাইরে থেকে কয়েকবার বৌদি বৌদি করে ডাকার আওয়াজ।
রেখা জানলার পর্দা সরিয়ে জিজ্ঞেস করল কে?ও পার্থ।
পার্থ বলল   'নুতন ড্রাইভার কিছু সমস্যা হলে ব'লো।'
রেখা বলল  'কেন হাদুর কি হলো? এমনিতেই অসুবিধার মধ্যে আছি, আবার যদি কিছু গন্ডগোল হয়।'
পার্থ বলল  'না ,বৌদি চিন্তা ক'রো না ।এমনিতে ও পাকা ড্রাইভার। সেরকম হলে আমাকে একটু ফোন করে নিও।ঠিক আছে। গড়িয়া স্টেশনের কাছে সোমদত্তাদের  বাড়ি যাবে তো ?অনেকদিন আগে একবার গিয়েছিলাম ।আমিই নিয়ে গেছিলাম। ওর হাজব্যান্ড খুব ভালো মানুষ ।তাই না বৌদি? '
রেখা শুধু এক কথায় ' হ্যাঁ ,বলে সম্মতি জানালো।'
গাড়িতে উঠতে যাবে এমন সময় চৈতির মা বলল  'দিদি কোথাও বেরোচ্ছ? কারো কি কিছু হলো? রেখা শুধু বলল  'হ্যাঁ একটু বেরোচ্ছি ।'
চৈতির মা বলল  'ঠিক আছে সাবধানে।'
রেখা ভাবছে চৈতির মার একটু বেশি বেশি সব ব্যাপারে ।কোথায় যাবো ?কি করবো? সর্বক্ষণ যেন একটা নজর । বাবা রে কি বেয়াক্কেল মেয়ে । সোমদত্তা কে ফোন করে যাচ্ছি ।ফোনই ধরছে না ।কি মেয়ে জানে না ,যে চিন্তা হয়। ভাবতে-ভাবতে যাচ্ছে এমন সময় মনোজ ফোন করল   'কত দূরে আছে ।'
রেখা বলল 'এইতো প্রায় ঢুকবো ঢুকবো।'
 মনেজ বলল  'সে পৌঁছে গেছে।'
 রেখা বলল  'বাবা ,তুমি পৌঁছে গেছো ।ওদিকে কি ব্যাপার বুঝছ?পার্থ ঠিক আছে ?'
মনোজ বলল  ,'আরে পার্থ অব্দি পৌঁছাতে পেরেছি ?কোথায় বাড়িতে আসলাম -দেখি কেউ নেই । সমুকে ফোন করলাম ও ঠিকানা দিলে, সেখানে যাচ্ছি ।আমি তোমাকে টেক্সট করে দিচ্ছি। তুমি সেই ঠিকানায়  পৌঁছে যেয়ো কেমন,?'
 রেখা বলল  'ঠিক আছে। নির্দিষ্ট হসপিটালে গিয়ে পৌঁছালো ।সোমদত্তা আর ঐ ছেলেটাকে দেখতে পেল ।মাথা গরম হয়ে গেল কিন্তু মাথাটা ঠান্ডা রাখে। 
রেখা বলে  'পার্থ কেমন আছে রে? '
সোমদত্তা বলল  'যাও না দেখে এসো। 
রেখা বলল   'আমি তোকে জিজ্ঞেস করছি ,একটা কথা সোজা করে উত্তর দিতে পারিস না?'
সোমদত্তা বলল ' কি ভুল বলেছি ।তুমি যাও না নিজেই দেখতে পাবে ।আমার বলার চেয়ে নিজের চোখে দেখা টা অনেক বেশি বাস্তব বলে মনে হবে না? '
রেখা কথা না বাড়িয়ে সোজা ঢুকে গেল নির্দিষ্ট কেবিনে । দেখে মনোজ বসে আছে। 
রেখা  বলল  'কেন এমন করেছিলে?'
 পার্থর চোখে জল ।একটু হেসে কথা বলার চেষ্টা করছিল ,।
তখন মনোজ বলল  'এখন এসব কথা থাক।'
রেখা শুধু বললো  'সব ঠিক হয়ে যাবে।'
পার্থ ভরসার চোখে রেখার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
রেখার ও  চোখ ফেটে জল আসছিল।
মনোজ বলল ‌' তোমরা একটু কথা বল আমি একটু বাইরে থেকে আসছি।'
ফিরে এসে মনোজ ইশারায় রেখাকে যা বলল তাতে মোটেই প্রীতিকর ঘটনা কিছু ঘটছে না।যেভাবে সমু
ছেলেটার সঙ্গে ঢলে আছে, তাতে আমার ভীষণ বিরক্তি লাগলো ।ও পুরো নির্লজ্জ হয়ে গেছে, ওর স্বামী যেখানে ভর্তি।'রেখার কথাগুলো শুনে কান গরম হয়ে উঠলো এবং সঙ্গে সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসলো।
এসে যা দেখল ,তাতে রেখা মাথা ঠান্ডা রেখে বলল' 
'যা না তুই পার্থর কাছে। কাছে গিয়ে একটু বোস।'
সোমদত্তা বলল  'যা বলার তো তোমাকে গতকালকে দিদি বলেই দিয়েছি ।ওর সঙ্গে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়।'
রেখা বলল 'তোর কোথায় সমস্যা? তোদের ক্রাইসিস টা কি? কেন? সেগুলো আমাদেরকে বল। আমরা চেষ্টা করে দেখি। তাছাড়া পাবলো ছোট ওর একটা ভবিষ্যৎ আছে। নিজের সুবিধার জন্য তুই এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারিস?'কথা বলতে বলতেই দেখতে পেল ছেলেটা হাঁ করে সমস্ত কথাগুলো যেন গিলছে।
রেখা তার দৃষ্টি দিয়ে যেন ছেলেটিকে ভস্ম করতে চাইল ।বুঝিয়ে দিতে চাইল ।এখানে থাকাটা তার অনুচিত।
ছেলেটি বুঝতে পেরে সোমদত্তাকে বলল'তোমরা কথা বলো ।তোমাদের ফ্যামিলি মেম্বাররা আছে। এখানে থাকাটা আমার ঠিক নয়।'
সোমদত্তা রেখার দিকে' বিরক্তি ও জিজ্ঞাসা চোখে তাকিয়ে ছেলেটাকে বলল  'এখানে কেউ ফ্যামিলি মেম্বার নেই ।আমার যা বলার আমি শাশুড়ি মাকে বলে দিয়েছি।'
ছেলেটি একটু মুচকি হেসে পাশেই বসে রইল।
এত অসহ্য লাগছিল। রেখা শুধু বলেছিল  তুই এতটা নির্লজ্জ, বেহায়া ।আমি কখনো কল্পনা করতে পারি‌ নি যে আমাদের ফ্যামিলিতে এইরকম একটা কালচারের মেয়ে আছে? কাকু কাকিমা কতটা কষ্ট পাবে একবারও ভাবলি না ।ছোট্ট পাবলো নিষ্পাপ ওর কথা ও একবার ভাবছিস না।'
সোমদত্তা বলল 'দেখো দিদি আমি বাবা তোমার মত অত ভ্যালুজ ,মরালিটি বুঝি না। যা করতে মন চায় না আমার কাছে সেটাই অন্যায় ।কারণ মন ই  আমার কাছে গড ।আমার কাছে নীতি-টিতির কোন মূল্য নেই।'
কথাগুলোতে যেন রেখার মাথা বনবন করে ঘুরতে লাগল ।তার বুকে সজোরে এসে যেন ধাক্কা মারলো ।সে ধাক্কা তার কলেজ জীবনে সিদ্ধার্থ র প্রপোজ করার ধাক্কার চেয়ে অনেক বেশি। রেখাকে টানতে টানতে মনোজ নিয়ে আসলো আবার ভেতরে। আর মনোজ বলতে লাগলো  'পৃথিবী মনে হচ্ছে অনেক নিচে নেমে গেছে, নাকি পৃথিবীর মানুষগুলো অনেক নিচে নেমে গেছে ,।সবকিছু যেন ভেঙেচুরে দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে। মনোজ  বলল  'পার্থর সঙ্গে দেখা করে ,চলো বাড়ি ফিরতে হবে। তোমার অনেক ধকল গেছে। পার্থকে বিদায় জানিয়ে যখন রেখা ও মনোজ বেরিয়ে গাড়িতে বসলো ।তখন রেখার মনে হল সে যে পার্থকে কথাগুলো বলল সবকিছুই মেকি। আদৌ সেগুলো  বাস্তবায়িত হবে না। গাড়িতে বসার পর ফোন বেজেই যাচ্ছে। মনোজ ফোনটা দেখে বলল রিম্পাদি ফোন করছে ,রিসিভ করো। রেখা ঘাড় নেড়ে অসম্মতি জানালো। সে শুধু ভাবতে লাগলো কাকু কাকিমা কিভাবে নেবে ব্যাপারটা,? তাছাড়া ওইটুকু বাচ্চার কি রকম রিয়াকশন হতে পারে ?একবারও ভাবার চেষ্টা করল না ।রেখার ভেতরে যেন এই দংশন ক্ষতের আকার নিল। ছেলেটার বউ বাচ্চা আছে। ও কি সুখের সাগরে ভাসতে চলেছে কে জানে?


ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"১৪ ক্রমশ

ফাহমিদা ইয়াসমিন। ( ইংল্যান্ড )




আত্মমগ্ন


এখন আমি শান্ত মনে বসে থাকি
মনের সাথে মন মিলিয়ে কথা বলি
একলা হয়ে পথের দিকে চেয়ে থাকি
এখন আমি খুব গোপনে একা চলি।

এখন আমার চাওয়ার খাতা শূন্য প্রায়
পাওয়ার হিসেব আর কষি না 
বরং ভাবি এই জীবনের কি আসে-যায়
যদি মানুষ হতে পারি না।

গোলাম কবির

 


এমন হলো কেনো 


 প্রেমে পড়লে তো মানুষ কতো কিছুই করে!
 আমিই বা তারচেয়ে ব্যতিক্রম হবো কী 
 করে? প্রেমে পড়ার পর আমি দুঃখকে
 বলেছি - ভুলেও এদিকে পা বাড়িও না,
 যতো ছিলো পুরনো দুঃখের কালো মেঘ, 
 তাদের দু'হাতে সরিয়েছি, অথচ এখনো আমার 
 চারপাশে শুধু দুঃখের জমাট মেঘদল
 ঘুরঘুর করছে যখনতখন এবং এখনো
 আমার চারপাশে দুঃখের মালবাহী ট্রেন
 একটানা সিটি বাজিয়ে যাচ্ছে! 
 যে নদীকে আমি এতো ভালবাসি - 
 সেই নদীর কাছে গিয়ে বলেছি,
 আমার জন্য সবসময়ই বর্ষায় 
 যেমন থাকে তেজী, বেগবতী যৌবনা!  
 ঠিক তেমনি যেনো থাকে, ও কিন্তু তা
 থাকেনি কোনোদিনই, বরং এখন আরো
 সরু হয়ে গেছে, প্রায় মজে যাচ্ছে বলা যায়!
  প্রেমে পড়ার পর একবার আমি 
  খুব প্রবীণ বয়সী এক বটগাছকে 
  স্বাক্ষী রেখে বললাম, দেখিস এখন থেকে
  জীবন হবে উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত
  এক একটি দিনের মতো! 
  অথচ জীবনটা থেকে গেলো
 এখনো একদমই ম্যাড়মেড়ে,
  আলস্যে জড়ানো দুপুরবেলার মতো। 
  আসলে আমি মনেহয় প্রকৃত প্রেমেই
  পড়তে পারিনি, না হলে এমন হলো কেনো!

ইকবাল বাহার সুহেল ( ইংল্যান্ড )




আত্মোপলব্ধি বা উপলব্ধি ও চিন্তা 


                             পৃথিবীকে বদলানোর বৃর্থা চেষ্টা করার চেয়ে নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করুন তাতে তাড়াতাড়ি ফল পাবেন !
                             আপনি চাইলেই পৃথিবীর সব মানুষকে নিজের মত করে বদলাতে পারবেন না কিংবা তা সম্ভবও না !

                              প্রিয় মানুষ গুলো কখনো কখনো অপ্রিয় হয়ে যায়। চেনা মানুষের দেওয়া কষ্ট             মানুষকে খুব সহজে আঘাত করে। তার কারণ হয়তো একটাই, পরিচিত জনের কাছে সবসময় ভালো কিছু প্রত্যাশা। 

                              আপনাকে মানতেই হবে, যে মানুষটা আপনার সবচেয়ে বেশি কাছের, কেবলমাত্র সেই বলতে পারে কোন জায়গাটায় আঘাত করলে আপনি বেশি কষ্ট পাবেন। অথচ তার কাছে আপনার দুর্বলতা প্রকাশ করাটা ছিলো কেবলমাত্র আপনার বিশ্বাস।

                             সেই সাথে বলতে হয় চিন্তা চিন্তাধারার ফলে আসে ধারণা আর সেটাকে ধারণাবিন্যাস বোঝায়। 

                               যদিও চিন্তা করা মানবতার একটি অপরিহার্য কার্যকলাপ,একে সংজ্ঞায়িত বা এটা বোঝার কোনো সাধারণ ঐক্যমত্য নেই !

                               উপরের কথাগুলো মানুষের মনের কিছু সংগৃহীত চিন্তাধারা তার সাথে নিজেকে মিলিয়ে নিলে আমারা নিজে নিজেকে জানতে ও বুঝতে অনেক সহজ পাঠ্য হবো 

                                আমাদের সকলেরই আত্মোপলব্ধি বা উপলব্ধি হউক সত্য ও ন্যায়ের পথে .. অতীতের ভুল ভ্রান্তি হতে শিক্ষা নেই চলুন শুদ্ধ আত্মার চিন্তার প্রকাশ ঘটাই ..
                                আমাদের আগামীর পথচলা হউক মানবতার কল্যাণে .. শুভ কামনা সবার জন্য ..

হামিদ সরকার



স্বার্থপর মন


আঁড়ালে স্বার্থ, প্রসারিত সম্পর্কের দু'হাত,
অমাবস্যারাত্রির সমাপ্তিতে
চিরসত্য নবপ্রভাত।

ধূষরকালো ঠুনকো মেঘ
নীলাকাশটা জুড়ে,
তীব্র হাওয়ায় লক্ষ্য ব্যাহত
নীরবে সরেছে দুরে।

অশুভ ইচ্ছা প্রেমব্যানারে
লোভাতুর মনোভোগ,
আপনতুষ্টিতে মিথ্যে অপবাদ
অপ্রাপ্তির এক শোক।

ফারজানা আফরোজ


শূন্যতার সাগর 


চারিদিকে শূন্যতার অথৈ সাগর
শব্দহীন ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে।
তাহারে যেতে দাও যে আছে যাবার।
অপেক্ষারা আজ আর শ্রাবণের ন্যায়
ঝরায় না অশ্রু দু'চোখের পাতা ভরে।
কেউ ফিরবে ভেবে,পথপানে চেয়ে থাকার,
দিনগুলো গেছে যে ফুরিয়ে।
নয়নে নয়নে আছো তুমি,
তবু নয়নে দেখিতে না পাই।
অবুঝের মত মেঘেরও কোণে খুঁজে বেড়াই।
মেঘের বুকে শ্রাবণ লিখেছিলাম,
নদীর বুকে এঁকেছি ভাঙ্গনের ক্ষত।
আমি কাঁদতে চাই না আর
কেঁদেছি ভালোবেসে অনেক বেশী।
পুড়তে চাই না আর,
পুড়েছি ভালোবেসে দিবানিশি।
তোমরা যাহারে ভূলিতে বলো,
সেইতো আমারে ভাবায়।
দিবসে ভাবি রাখিব না মনে,
নিশীথে  আসিয়া জাগায়।
আজ তুমি নেই পাশে,
আমি একা পথে হাঁটি।
একা জেগে থাকি সারা রাত,
ছিলাম,থাকবো তোমারই চির সাথী।

bzhb

LOVE

wefwn

LOVE