পোস্টগুলি

ডিসেম্বর ১৯, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অনিন্দিতা মিত্র

ছবি
নির্বাসিত শব্দমালা        এক  তোমার চেরিডাউন ইস্টের বাড়িতে রোজ যাই আমি, ছুঁয়ে আসি তোমার কবিতার খাতা, তুমি দেখতে পাও না, সবকিছু  দেখা যায় না। ঝিলমিল ঝিলমিল রোদের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারে বৃষ্টিভেজা স্বপ্নরা, কঠিন থেকে কঠিনতর হয় বুকের তল। গ্রহ-উপগ্রহের নীল শিরায় শিরায় অচেনা জলছবির শিলালিপি, আত্মহারা হামিং পাখির দল উড়ে আসে তোমার টিউলিপের বাগানে, নাগরিক ক্লান্তি ভেঙে তুমি খুঁজতে চাও সমুদ্রমুখর দিন।                                         দুই তোমার দক্ষিণের বারান্দায় এসে ভিড় করছে নরম বসন্তমেঘ, গুঁড়ো গুঁড়ো বরফ জমেছে ফুরুস ফুলের পাপড়ি জুড়ে , মরা প্রজাপতির বিবর্ণ পাখায় স্মৃতির ক্ষতচিহ্ন। ফার পাইনের বনপথ ধরে হেঁটে চলে হরিণ শাবক, নির্জন ছায়াপথের  কোনো এক অন্ধকার বাঁকে সে হারিয়েছে জন্ম-জন্মান্তরের আক্ষেপ । তোমার হাতে  গীতাঞ্জলির হলুদ পাতা, গোধূলির রঙ মেখে নেমে আসবে আমার অভিমান তোমার কবিতা হয়ে।

হাননান আহসান

ছবি
বাঘের কাণ্ড বাঘটি ছিল সোঁদরবনের বিদঘুটে আর খেয়ালে সপাটে সে মারতো লাথি ইট-পাথরের দেয়ালে। মাথাটাকে করতো সাইজ জমকালো দুই শেয়ালে বাঘটি ছিল অন্য রকম উদ্ভটে আর হেঁয়ালে। বাঘু মামার নেশা ছিল ন্যাসপাতি আর ফলেতে আকাঙ্ক্ষা তার ভিতর জুড়ে বিরাট হবে দত্যি সে। আসল কথা, এই কসরত ফুটবলের-ই ছলেতে ইচ্ছে ছিল স্টপার হবে ময়দানের এক দলেতে।।

মোহাঃ হাসানুজ্জামান

ছবি
বিপ্লব চলন্ত মেশিনের শব্দ শ্রবণ শক্তি ক্ষীণ  বয়স প্রায় ষাট ছুঁই ছুঁই বিরামহীন পরিশ্রমে থাকি ডুবে। দু-মুঠো অন্নের সংস্থানে সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি শুকনো চোখে ভাঙ্গা কোমর হাত-পা দুর্বল নেই কব্জিতে জোর। আমরা করি আজীবন দাসত্ব কখনো বানাই আট্টালিকা দালান, শরীরে ঝরে রিক্সা টানার ঘাম এটা কি নয় জীবন বিপ্লব ? আমার স্মৃতিতে অন্ধকার অতীত ঝুপড়ি বস্তিতে করি বাস  মেঘের ও আছে জীবনচক্র আমাদের ভবিষ্যৎ কি আতঙ্কের আঁচল ? বিরহী হৃদয়ে অসীম ক্লান্তি বুকের ভেতর বিষাদের নৃত্য মনের অন্তবাসে ছুঁয়েছে আশা আসে যদি আবার নতুন বিপ্লব।

শাহীন চৌধুরী ডলি

ছবি
কবিতা, বিবর্ণ ধারাপাত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিতে রচিত  মীরজাফরের পালায় ভঙ্গুর স্বপ্নগুলো  রাতের নিকষ আঁধারে আছড়ে পড়ে মৌন মিছিলে। আলাভোলা চেহারার অন্তরালে  ক্রমশ প্রতীয়মান   ঠায় মিথ্যা স্বত্বার খেলা, ক্ষয়ে যাওয়া চরিত্রের  বিবর্ণ ধারাপাত। সন্তর্পণে অস্তিত্বের চৌদিকে অলংঘনীয় আবেষ্টনী সৃষ্টি, অনাবাদি স্বপ্ল দাফনে  শেষ পেরেকের ঠোকাঠুকি  কফিনের গায়।

রুমানা পারভীন রনি

ছবি
আঁধারের গান বুকের উঠোনে ঘনকালো সন্ধ্যা নামে আকাশ জুড়ে তারার মেলা বসে, তবুও উঠোন আলোকিত হয় না। তুলসি তলায় মঙ্গল দ্বীপ জ্বলে না। শ্যাওলার আস্তরনে হেঁটে বেড়ানো ডাহুকী মায়ের কান্নায় বাতাস ভারী হয়, ঢোঁরা সাপের মত কলমীলতা জলে ভাসে শুক্লপক্ষের চাঁদের ছায়া পড়ে রাত আরও গাঢ় হয়। শিশিরের শব্দের মত হীরকদ্যুতি ছড়িয়ে টুপটাপ ঝরে পড়ে জ্যোৎস্নার আলো। ভাঁটফুল ভুল করে সুরভী ছড়ায় উজার করে বাতাসে ভেসে বেড়ায় সুবাস তার। দাওয়ায় বসে রাত্রি যাপন করি মনের কোণে লুকানো বিষন্নতা উবে যায় আমি চাতকের মত রাতের সৌন্দর্য দেখি। রাতের এমন নয়নকাড়া রুপ আগে দেখিনি আমার ঘোর লাগে শুধু ।

মামুন সুলতান

ছবি
সশস্ত্র সালাম রাতে যেখানে ঘুমাই নিরাপদ নিদ্রায় শুয়ে থাকি কারো হানায় ভাঙে না তন্দ্রাচ্ছন্ন কাঁচাঘুম  হানাদার হায়েনার বুটের তলায় পিষ্ট হয় না- নির্মিত স্বপ্নের শত বছরের সুখ। রক্তিম নদী পেরিয়ে আমরা বিজয় পেয়েছি  নির্ঘুম রাতের ভয় এখন পুষ্পিত মহাকানন স্বতন্ত্র পতাকা নিয়ে দুনিয়া মাতিয়ে চলি আমাদের পরিচয় দুর্বিনীত দুনিয়ায় ওড়ে। আমাদের রক্তরঙ শিল্পমানে সুউচ্চ চূঁড়ায় এই রক্তে এঁকে চলি আমাদের বিজয়স্তম্ভ সশস্ত্র সালাম দিই বিজয়ীবীরের আত্মায় আনন্দ নদীর বুকে আমরা ভাসি মহাহিল্লোলে।

মধুমিতা রায় এর অনুগল্প

ছবি
বিশ্বাস... রবীন পৌনে ছটার বনগাঁ লোকাল ধরে তারপর সারাদিন ব্যাগ কাঁধে এ ট্রেন ও ট্রেন।বিক্রি মন্দ হয় না। তিনজনের সংসার মোটামুটি চলে যায়।ক্লান্ত পায়ে যখন সে ট্রেন থেকে নামে তখন রাত প্রায় বারোটা।সারাদিন চেচিঁয়ে তখন আর কথা বলার শক্তি থাকে না। গত ছমাস ধরেই প্ল্যাটফর্মের শেডের নীচে মেয়েটাকে দেখছে সে।চুপচাপ বসে থাকে, এলোমেলো চুল,বয়স তিরিশ বত্রিশ হবে,শাড়িটার রঙ সম্ভবত নীল ছিল। অত ভোরে মেয়েটিকে ওভাবে বসে থাকতে দেখে প্রথমে অবাক হয়েছিল পরে বুঝেছে মেয়েটি স্বাভাবিক নয়।চায়ের দোকানের মলয় বলছিল পাগলীটা কারও জন্য অপেক্ষা করে, কেউ নাকি বলেছিল ফিরবে।  কয়েকদিন হল রাতেও মেয়েটিকে দেখছে রবীন। রাত বাড়লে প্ল্যাটফর্ম ফাঁকা হতে থাকে। মদ জুয়ার ঠেক বসে এদিক ওদিক।মেয়েটির জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে কদিন ধরেই।পাথরের মত একটা মেয়ে, শূণ্য দৃষ্টি.... কেন যে! আজও ট্রেন থেকে নামতেই মেয়েটাকে দেখল। তেমনি বসে আছে।শীতের রাত। হাতে গোনা কটা লোক প্ল্যাটফর্মে। রবীন মেয়েটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আস্তে করে বলল..... তুমি বাড়ি যাও।অনেক রাত হয়েছে,বাড়ি চলে যাও। ...... তাহলে যে ও মরে যাবে! অবাক হয়ে রবীন বলল.... কে? মেয়েটি চোখ তুলে তাকালো তারপর দ

আরজু মুক্তা

ছবি
ভালো আছি ভালো আছি বলি কিন্তু ভালো নেই। ভিতরে হতাশার জং লেগেছে তাজা দীর্ঘশ্বাস, ভালোবাসা বিলীন হয়ে এখন কুয়াশা। চোখে উদ্বেগের কালি সারা দেহে ধূলির ঝড়, হৃদয়ে গোলযোগ। কোলাহল আর মিছিল বিক্ষুব্ধ শ্লোগান,  হরতাল। ব্যস্ত পথচারী থমকে আছে অনাহারপীড়িত এক দুর্ভিক্ষের মুখ আমি! ভিতরে উন্মাদনা, অস্থিরতা ভালো আছি বলি কিন্তু ভালো নেই।

শামীমা আহমেদ

ছবি
দ্বৈরথ দুটি ভিন্ন সত্ত্বার অনুভুতি,অনুরণন, অনুভব, অনুক্ষণ আমায় ঘিরে---  বারবার সামনে এসে দাঁড়ায়! আহবানে অনুরাগে আবেগে অনুরোধে---   টেনে নেয় আমায় দু'প্রান্তের সীমানায়। দুটি হৃদয়ের কথকতা আনে অস্থিরতা মননে। আবেশের যাত্রী হয়ে হেঁটে চলি দুটি ভিন্ন বন্দরে। বসি কিছুক্ষন নদী তটে--- এক জলধি নীরবতায় ডুবায় আমায় অস্ফুট স্বরে বলে যায়  কি যেন কি হারিয়ে!  রক্তিম আভায় অস্তরাগের ক্ষণে। বুঝে যাই, না পাওয়ার বেদনায়---- অবহেলার অনুশোচনা আজ বোবা কান্না হয়ে  ভাসায় তোমায় দূর সুদুরে----- আবার, মনের আর্শিতে ভেসে উঠে যার মুখচ্ছবি নয়নের ভাষায় এক গভীর চাহনী যার চঞ্চলতা আনে প্রজাপতির রঙিন পাখা। মুগ্ধতা ছুঁয়ে যায় আমায় ঘিরে-- যে দেখায় অলীক স্বপ্ন! আবার প্রাপ্তির আনন্দে করে দিশেহারা। নিজের ভেতরে চলে হৃদয়ের দ্বন্দ্ব। শূন্যতায় খুঁজে ফিরি পূর্ণতা। দোলাচলে মন। নিঃসীমে উড়ে  ভাবনার মেঘ। অজানা গন্তব্যে পথ চলা। কোন ডাকে সাড়া দেবে মন? সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজে মন প্রতিক্ষণ।

রেবেকা সুলতানা রেবা

ছবি
অজানা সুখ     মানুষ মানুষের তরে হারিয়েছে মানবতা পোড়া মন আর কতো সইবে অসহ্য যন্ত্রণা  স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রতিটি শিরা উপশিরা চার পাশের আপন হয়ে যাচ্ছে পর তারা একটু একটু করে হচ্ছে সব অচেনা, দিন দিন বাড়ছে দূরত্ব,কষ্ট, দুঃখবোধ একটু একটু বন্ধি হচ্ছি হতাশার বেড়াজালে মুক্তি পেতে চাই আমি খোলা আকাশে চলে যেতে চাই আমি দূর বহুদূর দগ্ধ হতে চাইনা আমি সর্বগ্রাসী দাবানলে নিতে চাই প্রান ভরে স্বস্তির নিঃশ্বাস  প্রেম /ভালোবাসা আন্তরিকতা নেই আমার বিশ্বাস। আমি যেতে চাই অজানা অচিনপুর যেখানে থাকবেনা কোন কোলাহল কারো জন্য জ্বলবে না আর  এ পোড়ামন হৃদয়ের গহীনে বইবেনা  আর রক্তক্ষরন, থাকবেনা কোন অবহেলার বিন্দু  বিশেষ  কাঁদাবে না আর ব্যাথার পাহাড়, আমায় মুখরিত করবে এক অজানা সুখ।