পোস্টগুলি

ডিসেম্বর ৬, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সুচিতা সরকার

ছবি
মূল্য অর্ধনগ্ন শরীরটায়, দাউ দাউ করে জ্বললো আগুন। ত্রাহি ত্রাহি চিৎকারে ভরলো বাতাস,  কাঁদলো জমি, ফাটলো গগন। শয়তানের চোখগুলিতে উল্লাসের অট্টহাসি, ঘিরে দাঁড়িয়ে জীবন্ত চিতায় ঢালে ঘি । দরজার ওপারের কানগুলিতে তখন,  কালঘুমের পলি। চোখগুলি অন্ধ, এক একটা অথর্ব প্রাণী। কালো ধোঁয়ায় আছন্ন ঘর,  একটু একটু করে প্রাণটা হয় দূর্বল। অষ্ট বর্ষীয় ছেলেটার চোখে ঘুম নাই। লক্ষ্মীর ঝাঁপি ভেঙে বাবাকে দেয় অর্থ, ভয়ার্ত ঠোঁটে কাঁপে এক টুকরো শর্ত- "আমার লাট্টুর সব মূল্য নাও নিয়ে। আর মেরো না, এবার মা কে দাও ছেড়ে।"

চৈতালী দে

ছবি
চিঠি   স্নেহের মালবিকা ,                  আজ ভীষন ভাবে মনে পড়ছে তোকে ...... কেন মনে পড়ছে সেটা পরে বলছি । এর আগে তোকে কখনো চিঠি লিখিনি । লেখার কোনো কারণ ও ছিল না । বলতে পারিস তোকে আমি অনেকটাই ভুলে গেছিলাম , তবে বোধহয় পুরোটা ভুলিনি ! তাই আজ বহু বছর পর তোকে মনে পড়লো  , মনে পড়লো তোর আর আমার একসাথে বড়ো হওয়া ...... তোকে যখন প্রথম দেখি তখন তুই অনেক ছোটো , আর আমি তোর থেকে একটু বড় । তোর সাথে কেউ খেলতো না বলে আমি রোজ স্কুল থেকে ফিরে তোকে ডাকতে যেতাম খেলার জন্য , আর তুই আমাকে দেখেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে হাততালি দিতিস । তারপর তুই আর আমি যেতাম খেলার মাঠে ..... সেখানে তোকে দেখে সবাই ভয় পেতো , কেউ কেউ আবার মজা করে বলতো , " মালা পাগলী এসে গেছে " ..... তুই কিছুই বুঝতিস না , ওদের মজাটা খেলা ভেবে জীব বার করে জোরে জোরে হাততালি দিতিস !  আমার খুব রাগ হতো জানিস ! ..... বাড়িতে এসে মাকে নালিশ করতাম , বলতাম " মা ! মালবিকার ওপর সবাই হাসে কেন ? ওর সাথে কেউ খেলে না কেন ? " মা কোনো উত্তর করতেন না , শুধু বলতেন " সন্ধ্যে হয়ে গেছে .... পড়তে বসো " । পরের দিন তোর সাথে আমি আবার খে

মিলন ভৌমিক

ছবি
বাঁচবো কিভাবে ভুখাপেটে পরিবার সব রয়েছে পৃথিবীতে, নিঃস্ব,নিরন্ন বাঁচবো কিভাবে। সবল,শক্ত,কম'ঠ হয়ে রুজি রোজগার নেই  গ্রামে, গ্রামে দূর্ভিক্ষের চেহারা আনাচে কানাচে। লেখাপড়া হয়নি অদৃষ্টের পরিহাসে এ জীবনে ভুল পদে পদে। জীবন যন্তনা অন্তযা'মী জানে, সেই কটা দিন থাকবো পৃথিবীতে?. চোখের সামনে সন্তানদের একমুঠো ভাত নেই পাতে ইচ্ছা নেই বেঁচে থাকতে এ জগৎ সংসারে। রোগ,শোক, দুঃখ, বেদনা সব যাবে ঘুচে অন্ন  চাই গৃহে।

অলোক দাস

ছবি
স্বপ্নের সিস্ট্রি  এ ভুবন জয় হবেই, যখন খোলা সব মোনের জানলা ।  আর নেই বন্ধন, দেহ, মোন ও মুক্তি ।  মুক্তির সন্ধানে যাবো চলে বহুদূর, হয়তো লাল মাটির দেশে, যেখানে শুধু বনাঞ্চল, যেখানে হাট বসে আজও,  যেখানে সোনা যায় বাউল সংগীত, একতারার সাধনা,  শান্ত মাটী, শান্ত বাতাস, সেই বটবৃক্ষ, শিশুরা দেয় দোল । আর সব শব্দ নিস্তব্দ ।  ওখানেই আমার নীড়, নাম দিয়েছি "স্বপ্নের সিস্ট্রি '।

লীনা দাস

ছবি
ফেসবুকে কেন লিখি আমরা? এই প্রশ্নটা আজকাল খুব মনে আসে। সত্যিই তো কেন লিখি?  প্রায় পাঁচ বছর ধরে ফেসবুকে লিখে চলেছি।  কবিতা, গল্প বা সমাজ সচেতনতার পোস্ট। পাঠকের সংখ্যা খুব বেশী না। ওঠানামা করে।  সব লেখা সবাই পড়েন ও না।  তবু লিখি। মন খারাপ হলে লিখি,মন ভাল থাকলে লেখার ইচ্ছে অন্তত আমার বেশী জাগে। লাইক পেতে ভাল লাগে। অসাধারণ, সুন্দর,দারুণ,অনন্য,ফাটাফাটি  মন্তব্যগুলি ও মন্দ  লাগে না। যদিও বুঝতে পারি  মন্তব্যগুলি না পড়েই করেন অনেকে।সবাই না,অনেকে সুচিন্তিত মতামত দ‍্যান।তাতে এই আপাত উদ্দেশ্যহীন লেখালেখির কিছুটা সার্থকতা খুঁজে পাই।ভাল লাগে মন। এই ফেসবুক আমাদের মত কিছু শখের লেখিকা লেখকদের জন্য অনেকগুলি দরজা খুলে দিয়েছে। কেউ কবিতা লেখেন, কেউ গল্প বা প্রবন্ধ লেখেন। আরও অনেকে অনেক কিছু করে।  আমার মনে হয় ফেসবুকে লেখালেখি মূলস্রোত সাহিত্যের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। কিন্তু সেই প্রশ্ন ,কেন লিখি ? আমার মনে হয় আমাদের মত লেখকের সবচেয়ে বড় সমস্যা  কেন  লিখি তার উত্তর পাওয়া। কাজের ফাঁকে, রান্নার ফাঁকে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ফাঁকে যে লিখি কিন্তু কেন? পাঠক সংখ্যা হাতে গোনা। তাও শুধু ফেসবুকে । ফেসবুকের বাইরে পৌঁছ

পার্থ ব্যানার্জ্জী

ছবি
  ফেরাবে তোমার দু'চোখের আলতো ঢেউ দেখে ধরতে হাত বাড়ালাম তুমি পাখি হয়ে উড়ে গেলে, আকাশকে কতো ডাকলাম সাড়া দিলো না, চুপচাপ।  বাতাসকেও ডাকলাম, চুপ। কাকে ডাকবো, ভেবে পাচ্ছিলাম না, হঠাৎ মনে পড়লো আলোর কথা, গাছেদের কথা, পাহাড়ের কথা। ওরা নিশ্চয় শুনবে, আমাকে বুঝবে, ভালোবাসার ইচ্ছাকে সমুদ্র হয়ে বারবার ঢেউয়ের দোলায় দুলিয়ে ফিরিয়ে ওকে আনবোই, আনন্দ নিয়ে বাঁচার নাম জীবন, সেটা ওকে দেখিয়ে দিতে হবে,  পারবে ওরা, আমার প্রিয় বন্ধুরা, ওকে হারিয়ে যেতে দেবে না, পালিয়ে যেতে দেবে না কিছুতেই, বিশ্বাস বারবার জোর দিয়ে বলছে, ফেরাবোই প্রিয়ার ওষ্ঠের ললিত স্বর আর তোমার ভালোবাসা, দেখেছি ওদের চোখে একরাশ আশা, ফিরিয়ে আনার ভরসা। ফিরিয়ে আন বন্ধুরা প্রিয়তমাকে। : সারাটা রাত এক চাদরে শ্যামল রায় আমাকে তুমি চিনতে পারলে না রোদ্দুরে মোড়া একটি চিঠি পাঠালাম তুমি একটা আকাশ দিয়ো বৃষ্টি দিয়ো আমি শিশির বিন্দু তে বৃষ্টি ফোটা দেখব। তুমি নতুন শাড়িতে, প্রদীপ হাতে তুলসী তলায় দাঁড়িয়ো-- আমাকে চিনতে পারবে তো? আমি নীল খামে চিঠি ছিলাম তোমার পড়ার টেবিলে ডাইরির ভিতরে সাদা কাগজে নানান অক্ষরে সেজে উঠেছিলাম। তুমি আমাকে চিনতে পারোনি আমি একদিন

শ্যামল রায়

ছবি
কবিতার কাছাকাছি যেতে কবিতার খুব কাছাকাছি যেতে রোজ পার হচ্ছি অথৈ জল কবিতার কাছে আছে আঁচল কবিতার কাছে  নীল শাড়িতে যত্নে রাখা আদর রেখা যাকিনা রংতুলিতে ছবি হয়ে আছে। কবিতার কাছে সত্য শব্দ সাজাতে কলম নিয়েছি হাতে খুঁজে নিতে বাংলা কবিতায় নারীমুখ। জানি নিভে যেতে পারে সলতে দিকনির্দেশ হারাতে পারি তবুও খুচরো সব ঝরা পাতাগুলো জড়ো করি, উড়িয়ে দিই খুঁজে নিতে সূর্যের আলোয় পথ। কবিতার কাছাকাছি যেতে রোজ পার হচ্ছি অথৈ জল রোজ ভোর দেখে নিতে। দুঃখ মুছে দিয়ে পৌঁছে যেতে চাইছি ভোরের আলোয় ঘেরা ঠিকানাতে তাই সত্যকে সাদা পাতায় অক্ষর সাজাতে কলম নিয়েছি হাতে পৌঁছে যাব, কবিতার খুব কাছাকাছি শিহরণ জাগাতে,শরীর জুড়ে।

শর্মিষ্ঠা মাজি

ছবি
কিসের ভাবনা হবে না পুজো নষ্ট এবার  আনন্দ আসবে ফিরে , যতই বিছাক করোনা জাল  আতঙ্ক কে ঘিরে।  ফুটছে শিউলি ,দুলছে কাশ শরত হাওয়ায় বইছে আশ,  উবে যাবে সমস্ত ভীতি হবেনাক কারো ক্ষতি।  যতই ছড়াক মারণ ভয় আছে শিউলির  সুগন্ধ এই কটাদিন পাড়ায় পাড়ায় কুড়াবো পুজোর আনন্দ।  ঢ্যাং কুরা কুর বাজছে ঢাক  নতুন জামা নাই বা থাক,  সাজবে এবার সবার নাক  ঢ্যাং কুরা কুর বাজুক ঢাক । অবাক হয়ে ভাবছি সবাই করোনার একি ফন্দি,  জীবন বাচার মাস্ক পরে কি জীবন হবেই বন্দি !

সুচি রহমান

ছবি
লাঞ্চিতা   লাঞ্চিতা মেয়ের ব্যথার কৃপা  কেউ বা করে বলো, দুঃখ হতাশা তার বুঝতে  জ্বলেছে অবিরত।  সূর্যের মতো জ্বলতো সে-যে চাঁদের জ্যোতি মেখে,  লাঞ্চিতার ব্যথা বুকে লয়ে  আজ মুখ লুকিয়ে কাঁদে।  কাব্যছন্দের সুর মিলিয়ে  নিত্য করতো অনির্বাণ সেই মেয়ে আজ লাঞ্চিতা হয়ে  মুখ লুকিয়ে কাঁদে আঁধারে নেই কোন সমাধান।   তোমরা হে ভাই পুরুষ জাতি  নারী ছাড়া কি বা গতি, তুমি ও তো মায়ের সন্তান  সেই মায়ের জাতিকে কেন করো ভাই  রাস্তা ঘাটে অপমান ?  দুঃখ রাখি কোথায় আমি  তোমরা পুরুষ তোমরা বলবান,  নারী তোমায় জন্ম দিয়েছে  নারী কে করো সম্মান ।  আইন বিচার যাই হোক ভাই  নিজেকে রেখো সামলিয়ে,  বিবেকহীন মস্তিষ্ক নিয়ে  পরো নাকো ঝাপিয়ে।  নারী তোমায় জন্ম দেই নারী তোমার মা, সেই নারী কে রাস্তা ঘাটে  করো না লাঞ্চনা।

তালুকদার ইমরোজ

ছবি
আয়না কত কিছুই তো আবিষ্কার হলো সভ্যতা এগুলো কত দিকেই, তবুও অনেকটা ঘোর অন্ধকারে আজও রয়ে গেল মানুষ।  বিবেক এগুলো কত ইঞ্চি, কত ইঞ্চি এগুলো মানুষের মন; তা জানা যায় না খুব সহজেই… আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন খুব যত্ন করে নিজেকে দেখি, পরিপাটি করে সাজিয়ে নেই ঝলমলে মেকি অবয়ব। মাঝেমধ্যে ভাবি,আহারে  এমন একটি আয়নার যদি আবিষ্কার হতো  যেখানে মানুষের মনের পশুগুলো দেখা যেত অনায়াসে, প্রত্যেকেই নিজেকে দেখে ঘৃণায় ঘৃণায় হয়ে উঠত পরিশ্রুত।