অন্ধকার-রোদ্দুর আর টিন চশমা
মেয়েটাকে বরাবর আমি দেখে এসেছি , কাছ থেকে , খুব কাছ থেকে ;
দূরবীনের কাঁচের মসৃণ আঁচে আমি ওকে ছুঁয়ে ও দেখেছি প্রচন্ড উত্তাপে---
ভিজে চুলের জলে যখন সদ্যোস্নাত গ্রীবা রোদ পোহাতে এসেছে সবে,
আমি তখন ও ওকে ছুঁয়েছি।
ও রাগে, কৌতুহলে বিষ্ময়ে বলেছে, আমার চোখের সামনে যে জমাট বাঁধা কালো,তা নিয়ে ঠাট্টা করেন?
ও বিশ্বাসই করে না, আমি প্রতিটা স্পর্শের পঙ্গুত্বে ওকে ছুঁয়েছি।
বিকেলের রোদ এসে পড়ে আমার নিথর জানলার কাঠে;
ঠিক পাশেই ঘুমিয়ে থাকে আমার অবশ শরীর, বুড়ো কলমের নিব, আর সেই দূরবীন!
বোধ হয় তার স্নিগ্ধতায় ভেসে ওঠে একটা হাত;
আমি তাকে ছুঁই,আলগা খোঁপায় জুঁই!
আর থাকে রোদ্দুর ওর ঠোঁটে।
তাও পাগলিটা বলে, ভালোবাসেন বলেই মিথ্যে বলেন?
না, মিথ্যে বলে বাকি সব, এই ঘর, এই লোক, এই পাড়া!
অবুঝ আঙুল হাতড়িয়ে ও বলে, কি মিথ্যে বলে ?
আমি এমন সময়ই বোবা হয়ে যাই,
সঙ্গে সঙ্গে উগ্র সন্ধ্যা নামে,
ওই জানলার কাঁচে মুখ মিলিয়ে যায় ইলেকট্রিক আলোয়,
সব সুবাস কেড়ে নেয় ওদের আধুনিক শব্দ।
চোখের সামনে হুড়মুড়িয়ে নেমে পড়ে টিনচশমার আবছা ধূসর ছবি।
জানলার দুই পারে পড়ে থাকে দুটো নিস্তব্ধ পঙ্গু ভালোবাসা।