১৬ নভেম্বর ২০২১

আমিনা তাবাসসুম




প্রহরের পর প্রহর

 

একটা মৃত্যুর জন্য অন্তহীন অপেক্ষা

দিন পেরিয়ে রাত আসে
রাত পেরিয়ে ভোর

যার আসার কথা ছিল
সে আসে না
যার আসার কথা ছিল না
সেও আসে না

কেবল একটা কালো গোলাপ ফুঁপিয়ে কাঁদে
                          প্রহরের পর প্রহর...

গোলাম রববানী




সুখ গেছে নির্বাসনে 


সুখে থাকলে মানুষের ভূতে কিলায়
দুখে থাকলে মারে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা, আ!
মানুষের রক্তে মানুষ ডুবে যায়

জানো-তো রাস্তায় উঠলে কেরামতি বাড়ে
চায়ের দোকানে গেলে সরস্বতী ক্ষ্যাপে
আর মাঠে ময়দানে রাজপথে মোড়ে গৃহাঙ্গিণায়
মাৎস্যন্যায়ের মতো ওম্নি সব ঢোক গিলে খায়
স্পার্টাকাসেরা সব চিতাতলের ছাঁইপাষ হয়ে রয়

শুধু আমার এই বোবা মুখটি
সদ্য দাফন হওয়া ঘর গোরস্তানের ধুলোবালির 
মতো উড়ে উড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়
দুঃখিনী বর্ণমালা অক্ষম প্রতিবাদী শব্দ তৈরিতে

যুগে যুগে কালে কালে কতো কালানল হলো
জাহেলি কাল থেকে মহামারি কাল
এই আকালের মতো কোনো কাল দেখিনি মালিক

এ কেমন মানুষ জন্ম পেলাম মনিব ?

রুকসানা রহমান এর ধারাবাহিক উপন্যাস "উদাসী মেঘের ডানায়"২৮

চলছে নতুন  ধারাবাহিক  উপন্যাস "উদাসী মেঘের ডানায়
লেখাটি পড়ুন এবং অন্যদের  পড়তে সহযোগিতা করুন  লেখককের মনের অন্দরমহলে জমে থাকা শব্দগুচ্ছ একত্রিত হয়েই জন্ম  লেখার। 
আপনাদের মূল্যবান কমেন্টে লেখককে  লিখতে সহযোগিতা করবে। 



উদাসী মেঘের ডানায় 
                                     ( পর্ব ২৮


সকালে অপুর গায়ে হলুূদ  বুবলির আনন্দ বাপি মাকে খুঁজে পেয়েছে অস্হির হয়ে আছে একটু পর পর প্রশ্ন-
বাপি মাম্মা কথন আসবে বলোনা, আমি মম্মার কোলে উঠবো।
অপু- কাল আসবে সোনামনি।
বুবলি- চলে যাবে নাতো আর,মাম্মিকে আমরা অনেক
আদর করে দিবো আর যাবে নাতো।
অপু- না যাবেনা তোমাকে ছেড়ে মাম্মির অনেক কষ্ট হয়েছে আর যাবেনা হারিয়ে।
এমন সময় অপুর মা এসে নাতনীকে নিয়ে গেলো দুপুরে ঘুম পাড়াতে।
তৃষ্ণাদের বাড়িতে বিকেলে শুরু হলো গায়ে হলুদের পালা সবাই আনন্দে মেতে উঠেছে আর সামিয়া ভিডিও করছে অপু দেথতে চাচ্ছে। নাচ গানের পালা শেষ হলো রাত,নয়টায় তৃষ্ণা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে একটানা বিকেল থেকে বসা। তৃষ্ণার মা এসে সামিয়াকে বললো - সামিয়া তৃষ্ণাকে নিয়ে তুমি খেয়ে
নাও আজ রাতে তুমি ওর সাথে ঘুমাবে, একা রাখতে নেই।তৃষ্ণা কি আর করবে মার কথা শুনতে হবে আমার মন খারাপ সামিয়ার সামনে অপুর সাথে আজ আর কথা বলা হবেনা।
সামিয়া- মন খারাপ হলো আমি কান বন্ধ করে রাখবো
তুই কথা বলিস।
তৃষ্ণা- মন খারাপ হয়নিতো তুমি বেশি বুঝো।
ঠিক এই,সময় অপু ফোন করলো সামিয়া রুম থেকে রের হতে হতে বললো -দশ মিনিট সময় দিলাম কথা বল, তোকে ঘুমাতে হবে কালকে ও কিন্ত এভাবে বসে থাকতে হবে। আমি আসছি।




                                                                        চলবে...

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"৪৪

কান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক।  তার নিত্যদিনের  আসা  যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন "





টানাপোড়েন (৪৪)

প্রস্তুতি


                                                  জ রবিবার সুমিতা কাজে আসবে না ,তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পরেছে ।গতরাত্রে মনোজের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে নিয়েছে।একবার দেশের বাড়ি কাকা কাকিমার কাছে যেতে হবে। কাকু অসুস্থ ‌।কাকিমা ফোন করেছিল না গেলে খুব খারাপ দেখায় ।যদিও তার আগেই যাওয়ার দরকার ছিল কিন্তু সময় করে উঠতে পারে নি নানাকারণে । তাই আজকে কোনোভাবেই মিস না হয় সেজন্য রেখা সব প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।তাছাড়া জন্মভিটের প্রতি টানটাই যেন রেখাকে বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সেই সবুজে ঘেরা বাড়ি। সামনে মস্ত বড় উঠোন। যখন ছোট ছিল দেখেছে,সেই উঠোন গোবর দিয়ে মা,কাকিমা ,জেঠিমা কে ভালো করে লেপে দিতে। কাজের জন্য চন্দনা কাকিমা ছিল কিন্তু অতো বড় উঠোন কখনোই তাকে নিকাতে দেখা যায় নি। দুপুরবেলায় দোতলার ঘরগুলো মোছার নাম করে দেখা যেত ফ্যান চালিয়ে দিয়ে কাকিমা সেখানে ঘুমোচ্ছে। আজ কত স্মৃতি মনে পড়ছে। আজ কবি অরুণ মিত্রের কবিতার  লাইন মনে পড়ছে-
'আমার শ্রবণ একক স্বরের স্থিতি পায়।'
অথবা মনে পড়ে
'তবু তার আঁচলের হাওয়া আজও আমার নিভৃতে।'
রেখা আর সেইসব নিশানা ধরেই ফিরে যেতে চায় তার গ্রামের বাড়িতে। ভেতরে সারারাতের সেই উত্তেজনা কাজ করেছে,তাই ভোর পাঁচটায় উঠে পড়েছে। প্রাতঃক্রিয়া সেরে রাধা গোবিন্দর পূজো করেছে।মিলির বাচ্চাদের দুধ গরম করেছে। কিন্তু সমস্যা তার পিছু ছাড়ে না।চা করে মনোজকে ডাকবে বলে যেই ঘরের দিকে পা বাড়ায়।
 ঠিক তখনই রেখার জা চিৎকার শুরু করে দেয়' 'এখানে সেখানে নোংরা করে রাখবে, একটু যে সকাল বেলায় পুজোর থালা নিয়ে উপরে যাবো ,সেই উপায় নেই।'
রেখা কথাগুলো শুনতে পায়। আর মনে মনে ভাবে সকালবেলায় সিঁড়ির দরজা যখন খুলেছে ,সেখানে রেখা বাচ্চাদের মলমূত্র যা ছিল তা পরিষ্কার করে দিয়েছে ।
তা সত্ত্বেও একবার রেখা ছুটে গিয়ে দেখে আসে।
সেখানে গিয়ে রেখা দেখে 'না মিলির  বাচ্চাগুলো ঘুমিয়ে আছে। কোথাও নোংরা কিচ্ছু নেই।'
তখন রেখা বাধ্য হয়ে ওর জায়ের কাছে গিয়ে বলে' 'দিদিভাই, দিদিভাই কোথায় নোংরা গো?'
রেখার জা  দেখল হাতেনাতে ধরা পড়ে গেছে ।তাই তখন কথাটা ঘুরিয়ে বলে' না ,না ।নোংরা নয়। আমি বললাম  সিঁড়ির কাছে কে জুতো রেখেছে এলোমেলো করে ।পুজোর থানা নিয়ে যাব তো তাই?'
রেখা বলল ' কে রেখেছে  জুতোগুলো? কাদের ই বা জুতো?'
রেখার  জা বলল  'কে জানে?'
রেখা জানে কাদের জুতো। ওরা নিজেরাই নিজেদের জুতো রেখে দেয়, অথচ এমনভাবে কথা বলবে যেন মনে হয় ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না।শুধু শুধু পায়ে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করার মতলব।
রেখা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে কতটা সময় নষ্ট হয়ে গেছে। মিলির বাচ্চাদের দুধ ঠান্ডা হয়ে গেছে। আবার গরম করতে হবে। মনোজের চাও ঠান্ডা হয়ে গেল। কে জান তো এরকম একটা ঝামেলায় পড়তে হবে। প্রতিদিন ফ্লাক্সে চা টা রাখা হয়। আজ ভাবলো সঙ্গে সঙ্গে চা টা দিয়ে দেবে কিন্তু হবার উপায় নেই।
রেখা ভাবে 'আজকে কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙেছিল কে জানে?'
এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি গিয়ে কাজগুলো সেরে নিতে হবে।
ওদিকে মিলি এবং ওর বাচ্চারা চেঁচাচ্ছে ।রেখা কোন দিকে যাবে বুঝে উঠতে পারছে না ।
শুধু একবার হাঁক দিয়ে বলে  'যাচ্ছি চুপ কর।'
কিছুক্ষনের জন্যে চুপ করে।
এর মধ্যেই মনোজ চেঁচাচ্ছে 'রেখা রেখা রেখা...।
রেখা রান্নাঘর থেকে আওয়াজ দিল'  'কি হলো?'
মনোজ বলল  'ঘড়িতে কটা বাজে খেয়াল আছে?'
রেখা বলল  'আমার তো আছে কিন্তু তোমার কি আছে?'
আর কোন কথা না বাড়িয়ে রেখা মিলির বাচ্চাদের দিকে ছুটল।
মনোজ চুপ করে যায় আর মনে মনে ভাবে  'তাই তো ?'
রেখা বাচ্চাদের কাছে বলল 'কই রে আমার  পাইলট ,ক্যাপ্টেন ,কর্নেল ,মিলি সোনারা কই?'
মনোজ গিয়ে সেই দৃশ্যটা দেখছে রেখার ডাক শুনতে পেয়ে বাচ্চা গুলো কেমন সুন্দর ছুটে ছুটে আসছে। মানোজ থাকতে না পেরে ভিডিও করে ফেলল।
হঠাৎ পেছন ফিরে  রেখা দেখে  মনোজ দাঁড়িয়ে।
রেখা বলে  'কত কিছু কান্ড হয়ে গেল।'
মনোজ  বলল  'আমাকে তোমার ডাকার কথা ছিল না? '
রেখা বলল 'হ্যাঁ তোমাকেই তো ডাকতে যাচ্ছিলুম  ।কিন্তু এদিকে মহাভারত রচনা কৌশল তৈরি হয়েছিল। আমার অবস্থাটা কেমন হয়েছিল জানো,'পাগল মরে হেঁটে আর বোকা মরে খেটে'।'
মনোজ বলল ' কেন কি হয়েছিল?'
রেখা বলল 'কি আবার হবে।
 সেই সমস্যা মিলি আর মিলির বাচ্চারা, ওরা যেন ওদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে।
মনোজ বলল 'আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এবার কিছু বলতেই হবে।'
রেখা বলল 'দেখো আজকে যে চক্রবুহ্য তারা রচনা করতে চাইছিল, তাতে নিজেদের জালে নিজেরাই জড়িয়ে গেছে।'
মনোজ বলল' এরকমভাবে আর কতদিন সহ্য করব বল?'
রেখা বললো 'এসব কথা আর মাথায় নিও না তো ।এবার তাড়াতাড়ি তুমি চা টা খেয়ে ফ্রেস হয়ে নাও ।বেরোতে হবে তো?'
মনোজ বলল  'তোমার সব রেডি?'
রেখা বলল  'আমি তো গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করছি।
মনোজ বলল  'আজকে ওই ট্রেনটা পাবো না জানো তো ?তার থেকে চলো পার্থ কে বলি।'
রেখা বলল  'পার্থকে এখন পাবে তুমি ?পুজোর সিজিন ওর গাড়ী কত বুকিং থাকে।'
মনোজ বলল 'অত টেনশন নিও না তো ।পার্থকে ফোন করে দেখি না। ওর কাছে যদি গাড়ি না থাকে। ও কিছু না কিছু একটা ব্যবস্থা করে দেবে।'
রেখা বলল 'হ্যাঁ', পার্থ খুব ভালো ছেলে ।আমাদের সুবিধা -অসুবিধাগুলো ভালো বোঝে।'
মিলির বাচ্চাদের থালাটা নিয়ে এবার ও ছুটতে শুরু করল আর বলল  'তাহলে সেই ব্যবস্থাই করো আর তাড়াতাড়ি  যেন বেরোতে পারি , তুমিও তার প্রস্তুতি নাও।'


                                                                      (ক্রমশ )

লেখক শান্তা কামালী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "বনফুল"২৫

চোখ রাখুন স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শান্তা কামালী'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "বনফুল" 




বনফুল
( ২৫ তম পর্ব ) 


আস্তে আস্তে ছেলে মেয়েদের ভীড়  কমতেই জুঁই পলাশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল,পলাশ দৌড়ে এসে জুঁইয়ের হতে ধরে বললো জুঁই তুমি খুশি তো?  জুঁই তখন আনন্দে বাকরূদ্ধ হয়ে গেছে,জুঁইয়ের দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। পলাশ জুঁইকে প্রশ্ন করলো জুঁই তুমি কাঁদছো কেন? 
জুঁই পলাশের হাত ধরে বললো এমনিই, চলো আগে  গাড়িতে ওঠো, গাড়িতে উঠতে যাবে সেই সময় জুঁইয়ের মাথা ঘুরে চক্কর দিয়ে পড়ে যাচ্ছিলো।ঠিক সময়ে  তখন পলাশ জুঁইকে ধরে গাড়িতে উঠে বসতে সাহায্য করলো। গাড়িতে উঠে পলাশ জিজ্ঞেস করল জুঁই এর আগে ও আমি লক্ষ্য করেছি তোমার মাথা ঘুরে চক্কর দিতে! তুমি কি ডাক্তার দেখিয়েছো?  তখন জুঁই বললো আজ তোমার রেজাল্ট বের হবে বলে সারা রাত ঘুম আসেনি, হযতো সেই জন্য এমন হয়েছে, বাদ দাও তো এইসব কথা। চলো আগে কিছু খাই।
জুঁই ড্রাইভার কে রেস্টুরেন্টে যেতে বললো। ড্রাইভার ওদের পছন্দের রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল। ভিতরে ঢুকে নিরিবিলি দেখে এক সাইডে একটা সিঙ্গেল টেবিলে বসলো। আজ জুঁই পলাশের সব পছন্দের খাবার অর্ডার করলো, জুঁই পলাশকে বললো আজ আমি এতো খুশি যে তোমাকে বুঝিয়ে বলতে পারবো না...।
  পলাশ বললো জুঁই আমি বুঝতে পেরেছি,কিন্তু...
কোনো কিন্তু নয়,আগে খেয়ে নাও....।
ওয়েটার ঠিক সেই  সময়ে খাবার এনে রাখলো টেবিলে। 
পলাশ জুঁইকে খাবার পরিবেশন করছে দেখে জুঁই আশ্চর্য হচ্ছে....।
 পলাশ  নিজের খাবারও গুছিয়ে প্লেটে  নিয়ে প্রথম চামচ খাবার জুঁইয়ের মুখে তুলে দিলো.....দ্বিতীয় চামচ খাবার তুলে দিতে যাচ্ছে জুঁই বাধা দিতে চাইলো, তখন পলাশ বললো জান না একবার কিছু নিতে নেই। খাওয়া শেষ হলো ওয়েটার বিল নিয়ে এলো জুঁই ব্যাগ থেকে নোট বের করে দিলো।
পলাশ বললো জুঁই বিল আমি দিচ্ছি।জুঁই বললো একটাও কথা বলবে না,চুপ করে ভালো ছেলের মতো বসো তো। 
ওয়েটার বিল এবং টাকার চেঞ্জ নিয়ে এলো। জুঁই ট্রে তে একশো টাকা রেখে বাকি টাকা ব্যাগে ঢুকিয়ে বললো চলো,ওঠা যাক।
রেস্টুরেন্টে থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে জুঁই ড্রাইভারকে বললো ভালো মিষ্টির দোকানে চলুন। ভালো মিষ্টির দোকানের সামনে গাড়ি থামতেই জুঁই পলাশ দুজনেই গাড়ি থেকে নেমে দোকানে ঢুকে সবচেয়ে ভালো মানের মিষ্টি তিন রকমের তিনটে করে প্যাকেটে নিয়ে, দুই কার্টনে সমান ভাগ করে প্যাকিং করে নিলো।
 মিষ্টির দাম জুঁই দিচ্ছে দেখে পলাশ জুঁইয়ের হতে ধরে বললো জুঁই তোমাদের বাসার মিষ্টি দাম আমি পেমেন্ট করবো।
জুঁই বললো ঠিকআছে,করো।কি দারুণ মিল ওদের, জুঁই পলাশের বাসার জন্য মিষ্টি কিনলো আর পলাশ জুঁইয়ের বাসার জন্য। 
পলাশকে নামিয়ে জুঁই নিজের বাসায় পৌঁছে মিষ্টির কার্টন টেবিলে রেখে মাকে জড়িয়ে  ধরলো,মা বললেন, কি হলো রে জুঁই, মিষ্টির কার্টন! কিচ্ছু বুঝতে পারছি না তো বিষয়টা?
 জুঁই বললো আম্মু পলাশ রেকর্ড মার্কস নিয়ে পাশ করেছে, আর মিষ্টি পলাশ কিনে পাঠিয়েছে। 
মনোয়ারা বেগমের চোখেমুখে  খুশির বিদ্যুৎ খেলে গেলো।

শাহীন রহমান




আমি এখন খুবই একা
 


"জোষ্টি মাসের বকুল গুলো,ঝরছে এসে শেষ শরতে,
খুব কষ্ট লাগে,তুই কেবলি ঝরে গেলি কাল না-বুঝে!  
রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলো,থরেবিথরে সাজানো সব,
ভুলতে তোকে পারিনারে,হিয়ার মাঝে বেড়াই খুঁজে !! 

আকাশ জুড়ে শাওন মেঘের ঘনঘটার ভেজা উঠোন,
হারিয়ে গেছে কাদার মাঝে,পিছলে পড়ে গড়াগড়ি ! 
সেই ভর দুপুরে লুকোচুরি,পোড়োবাড়ির দরদালানে,
ঘাম ঝরানো নিঘাদ বেলা,বকুল ফুলের ছড়াছড়ি !! 

গভীর রাতে শিয়াল ডাকা,বুুকের মাঝে গুঁজিস মাথা,
বাঁশ বাগানের মাথার উপর,কোজাগরী পুর্নিমা চাঁদ! 
হারিয়ে যাওয়া হয়নিরে ঠিক,আমি এখন খুবই একা,
ভরা গাঙে কাটতে সাতার,আবার মনে জাগেরে সাধ !! 

শিউলি ফুলের লাল বোটাতে,সিঁদুর মাখা রক্তজবা,
কোন শহরে থাকিস এখন,সে দেশে কি বকুল ফোটে ! 
গোলাপ কাঁটায় রক্ত ঝরে, সরসে ফুলে মৌমাছিরা,
মধুর আশায় ব্যাকুল হয়ে,এ ফুল থেকে সে ফুল ছোটে !! 

সারাক্ষণই পায়রা গুলো,বাকুম বাকুম প্রেমের গানে,
আবার কিন্তু আসিস ফিরে,আমি এখন খুবই একা! 
আমার যাবার সময় হলে,আমি কিন্তু চলেই যাবো,
তখন শুধু কাঁদবি এসে,আর পাবিনা আমার দেখা।

মোঃ সেলিম মিয়া'র ছোট গল্প


 
প্রথম শীতের আভাস 
 




                                                  কিশোরী তুল্য নব যৌবন অধিকারিনী ঘণ কুয়াশা যেমন সাদা শাড়ির ঘুমটা পড়ে আন্দোলিত  নব যৌবনটা নিয়ে সরু কোমরটা দোলায়ে দোলায়ে কাঁচা নাচন নাচতে নাচতে সামনের দিকে  ধাপিত হচ্ছে আর খিল খিল হাসিতে নদীর দু'পাড় ঘেঁষে  প্রকৃতির নিয়মে জন্মানো  সাদা বকের পালকের ন্যায় সাদা সাদা পল্লবে কাশবন মাঠে আদরের পরশ বুলাতে বার বার হাসিতে আছর খাচ্ছে। তাই দেখে সূর্যী মামা  তার স্নেহের পরশ আরোও বাড়িয়ে দিতে মেঠু পথের দু'পাশে জন্মানো দূর্বাঘাস, কচুপাতা ও  পত্র পল্লবের উপর জমে থাকা শিশির বিন্দুতে  সকালের সু মিষ্ট রোদে গা বুলিয়ে দিতে কোন রুপ কার্পণ্য করেছে না। নবাগত শীতকে সাদরে সম্ভাষণ জানাতে সূর্যী মামার আদর স্নেহের  পরশ জুড়ি মেলা ভাড়! সাদা সাদা ঘণ কুয়াশা ও শির শির ঠান্ডা বেতাল হাওয়া ভেত করে  গ্রাম্য গেছু সহিষ ভাই দিগন্ত মাঠ জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা খেজুরের গাছ গুলিতে বুক চিড়ে খেজুরের রস তুলতে অনেক বেশি ব্যস্ত সময় পাড় করছেন । খেজুরের গাছ গুলিও তার সুমিষ্ট রসে প্রকৃতির সাথে নিবির সম্পর্কে একত্বা ঘোষণা করছে। গ্রামের মা জননী গণও  বিভিন্ন স্বাদে  পিঠা পল্লীর মাধ্যমে  নবাগত শীতকে বরণ করে নিতে  কোন রুপ কার্পণ্য করেছেন না। রাত ভোর মা বোনদের  ঢেঁকিতে আটা কোটার শব্দে শিয়াল মামাদের হুক্কা হুয়া ডাক ও নবাগত শীতের আমেজ জনমনে  হয়ে উঠছে আরো বেশি প্রানবন্ত। শীতের আগমনী বার্তাকে স্বাগত জানাতে প্রতিটি গ্রামে  জারি সারি পালা গানের প্রতিযোগিতা এবং তবলা, ঢুল,খন্জর, বাঁশি আর হারমনিয়ামের সুরে বয়াতি-বাউলদের কোমড় দোলানো নিত্য দেখে নবাগত শীত যেন লজ্জায় গদ গদ! শীতের আগমনী বার্তাকে জানান দিতে ঘণ কুয়োশায় লেপটে থাকা রজনী গন্ধাও প্রস্ফুটিত হয়ে আরো বেশী সুগ্রাণে আগমনী শীতকে বরণ করতে খুব বেশি মাত্রায় ব্যস্ত। অন্যদিকে নবাগত শীতের আগাম  প্রস্তুুতিতে ধনীদের মাঝে গরম কাপড় কেনাকাটায় এক মহোৎসব চলে এসেছে । গরীবদের দিকে ফিরে তাকানোর মতো সময় তাদের কারো নেই। গরীবের তাতে কি আসে যায়? গত বছরে জমিয়ে রাখা ছেঁড়া কাথা, রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত ছেঁড়া কম্বল  দিয়ে শীত পাড় করার মতো অদম্য সাহস তাদেরকে কোন মতেই শীতের আগমনী বার্তা  নিরুৎসাহীতো করার সুযোগ দেইনি। কেউ কেউ গোয়াল ঘরের পাশের উঠোনে খরকুঠো জ্বালিয়ে  আগুনে দু'হাত সেকে নবাগত শীতকে ঠেকানোর কসরত করছে মাত্র। 
তাইতো বিদ্রোহী কবি নজরুলের মতো কবিতার ভাষায় বলতে মানা নেই--

"শীত আসবে বসবে ঘরে,
গরীব দুঃখীর কুড়ে ঘরে! 
যতন করে বসতে দিবো,
কাঠ পুড়িয়ে আগুন জ্বেলে।
দু'হাত সেকে আগুন পুড়ে,
করবো বরণ পা জুড়িয়ে! 
ছেঁড়া কাঁথার গা জুড়িয়ে,
ফাটা ঠোঁটে আদ্র নয়নে"।

# পরিশেষে  বলতে চাই -আসুন সমাজের আনাচে-কানাচেতে পড়ে থাকা ছিন্নমূল গরীব দুঃখীর কথা স্মরণ করে আগমনী শীতকে এমন কায়দায় বরণ করি যাতে শীতের কনকনে হিমেল হাওয়ার পরশে ও  ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা না পড়ুক ছিন্নমূল গরীব দুঃখী মানুষ । আগমনী শীতকে বরণ করতে সামর্থ্যবান বিত্তবান সকলে মিলে একতাবদ্ধ হয়ে  গরীব দুঃখীদের মাঝে বাড়িয়ে দেই  গরম কাপড়ে শীতের আচ্ছাদন।  আর তাতেই দেখা মিলবে আগাম শীতের পূর্বাভাষে ঘুণ কুয়াশায় ভেদ করে এক চিলতে  স্মৃতি বিজুরিত অমলিন হাসি। এমন হাসিতে হয়তো ঝড়বেনা কোন মুনিমুক্তা; প্রকারন্তরে  প্রথম শীতের আভাসে কষ্ট সহিষ্ণু সুবিধা বঞ্চিত লক্ষ কোটি মানুষদের মুখের হাসি বাংলার ঐতিহ্যবাহি  শীত ঋতু  তার সঠিক ঐতিহ্য হিম হিম শির শির কুয়াশায় নিশ্চিত ফিরে পাবে শতভাগ বর্ণিল সজীবতা এটা আমি হলফ করে বলতে পারি!!!

গোলাম কবির




পাখি হলাম না কেনো 
  

 অনন্ত বিষাদের দীর্ঘ হিম হিম
 ছায়ায় ঘেরা শিশিরবিন্দু গুলো 
 জমে আছে বুকের ভিতর, 
 এখন এর রঙ হয়েছে 
 ঘণ হলুদ কফ যেমন ঠিক তেমনি।

 বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলায় 
 দুলতে থাকা মানুষের বিবেক পচনের 
 গাঢ় ক্ষত, ভাগাড়ে থাকা মানবিকতা
 এবং নৈতিক অবক্ষয় ও সাম্প্রদায়িকতার
 বিষবৃক্ষের মহীরুহ হয়ে ওঠা ঠেকাতে
 আমাদের ভালবাসা হোক আজ 
 তোমাতে আমাতে, জাতিতে জাতিতে, 
 দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে যাক সারা 
 বিশ্বব্যাপী- যতো দূর চোখ যায়, ততো দূর! 

 কেনো যে এই হানাহানি, রেষারেষি,
 হিংসা বিদ্বেষ ও ইর্ষা এবং মিথ্যে অহংকার
 বেড়ে যাচ্ছে সাধের এই সুন্দর পৃথিবীর
 মানুষ গুলোর মধ্যে অথচ প্রকৃত মানুষের
 তো এসব থাকার কথা ছিলো না। 
 তাই মাঝেমাঝে মনেহয় - বক, রাজহাঁস  কিংবা অন্য কোনো পাখি হলাম না কেনো!
 যাদের এসব কোনো কুৎসিত স্বভাবই নেই।

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক গল্প "অলিখিত শর্ত" ১৪

 স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শামীমা আহমেদ'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "অলিখিত শর্ত"



শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত 
                                              (পর্ব ১৪)
   শামীমা আহমেদ 


                                                        জ দুপুরেও প্রতি সপ্তাহের মত রান্নাবান্নার বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে।রাহাতের আজ ছুটির দিন।শুক্রবারও ছুটি থাকে কিন্তু সেদিন সে হালকা খাবারে অভ্যস্ত  আর সারাদিন  শুধু ঘুমিয়েই কাটায়। আর শনিবার দিন  থাকে খানাপিনায় মনযোগ। মায়ের হাতের  বিশেষ কিছু রান্নার জন্য সে সারা সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকে। শুকনা মরিচ দিয়ে আলু ভর্তা, ঘন মশুর ডাল,কাঁঠাল বিচি আর  ছোট চিংড়ি দিয়ে কচুর লতি, পটলের টক ঝাল মিষ্টির দোঁপেয়াজা, ইলিশ ভাজা,বড় কাতলের মাথা দিয়ে মুড়োঘন্টা,ডিমের কোরমা,ঝাল করে আলু মুরগির  মাংসের  পাতলা ঝোল,গরুর মাংস ভুনা আর শায়লার হাতের কিসমিস দেয়া ঝরঝরে পোলাও, রাহাতের প্রতি শনিবারের খাবারের মেনুতে এসব থাকতেই হবে।সারা সপ্তাহ অফিস করে এই একদিন মায়ের হাতের খাবার খেয়ে মনকে চাঙ্গা করে নেয়। নতুন সপ্তাহে কাজের জন্য নিজেকে তৈরী করে নেয়া। এই একই মেনু চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে।রাহাতের একটিই কথা মা আর শায়লা আপুর হাতের এই রান্না ছাড়া আর কিছুই তার মুখে রুচে না। রাহাত শায়লার খুবই আদরের ছোট ভাই।খুবই বাধ্যগত একটি ছেলে।শায়লা ভাবে কতজনের ভাইয়েরা কতভাবে বখে যায়, চালচলনে উশৃংখল হয়, আচার ব্যবহারে বেয়াদব হয়, সঙ্গদোষে  মাদকাসক্ত হয়,মেয়েদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে  কিন্তু শায়লার এই আদরের ভাইটাকে যেভাবে শায়লা গড়ে তুলতে চেয়েছে ঠিক তেমনটিই হয়েছে।শায়লার সব  কথা শুনেছে। বাবার শূন্যতাটা তাকে একেবারেই বুঝতে দেয়া হয়নি।খুব লক্ষী একটা ছেলে! ওর একই কথা, আপু কানাডায় চলে গেলে কে এত মজার মজার খাবার রান্না করে খাওয়াবে? শায়লা বলেছে  শীঘ্রই তোমার জন্য নতুন রাধুনীর খোঁজ করছি।তাকে সব শিখিয়ে দিবো।কিন্তু রাহাত চাইছে আপুর কানাডা যাওয়ার প্রস্তুতি শেষ হলে তবেই তার নিজের ব্যাপারে ভাববে।
খাবার শেষে মায়ের হাতের ঘন দুধের পায়েশের স্বাদ একেবারে সাতদিন মুখে লেগে থাকে। রাহাত অফিসে নিয়ে কলীগদেরও তা খাইয়েছে।সবার সেকি প্রশংসা! অবশ্য শায়লা মাকে রান্নাঘরে যেতেই দেয় না। চুপি চুপি নিজেই সব রান্না করে রাহাতকে জানায়, মা রান্না করেছে। শায়লা এত সুনিঁপুণ রান্না করে রাহাত একেবারেই তা ধরতেই পারে না। শায়লা রান্নায় মায়ের হাতটা পেয়েছে। 
মা আর শায়লা দু'পাশে বসে খুব যত্ন করে রাহাতকে খাওয়ালো। আমাদের সমাজে ছেলে সন্তানদের কদরই আলাদা! মেয়েরা যেদিন অর্থনৈতিকভাবে  আর পূর্ণ নিরাপত্তায় সমাজে চলতে পারবে সেদিনই এই বৈষম্য ঘুচবে।এ সময়ে কিছুটা অর্থনৈতিক মুক্তি মিললেও সামাজিক নিরাপত্তার কারণে আজো একটি মেয়ে পুরুষের সমান হতে পারেনি। রাত বিরাতে প্রয়োজনে বেরুতে হলে একটা ছেলে সন্তানের প্রয়োজন ভীষণভাবে অনুভব করতে হয়। 
বেশ  তৃপ্তি নিয়েই দুপুরের খাওয়া পর্ব শেষ করল রাহাত। আজ সন্ধ্যায় একটু বেরুবে।কলেজ ফ্রেন্ডদের সাথে একটা মিট আছে। ওরা সব উত্তরায় একই স্কুল কলেজ রাজউকে পড়েছে। আজ সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। শায়লারও নিজের ভাইকে নিয়ে গর্ব হয়।বাবা না থাকলেও সে তার ভাইকে মানুষের মত মানুষ করেছে।
দুপুরে মা একটু বিশ্রাম নেয়। শায়লা সবকিছু গুছিয়ে কাজের বুয়া রেনুর মাকে বক্সে খাবার দিল। ওরা কখনোই এখানে খায় না। বাসায় বাচ্চাদের রেখে আসে।যেটুকুই পায় তা সাথে করে নিয়ে যায়।
রেনুর মাকে বিদায় করতে গিয়ে শায়লা দরজা লাগাবে এরই মধ্যে নীচতলার রুহি খালাকে সিঁড়িতে দেখতে পেলো। শায়লার সাথে হাসি বিনিময় করে ওদের বাসায় ঢুকলো। মায়ের আর রেস্ট নেয়া হবে না আজ।এই যে এলো, গল্প শুরু হবে চলবে  সন্ধ্যা মাগরিব পর্যন্ত। শায়লা নিজের ঘরে চলে এলো।
শায়লা সেই যে সকালে রান্না ঘরে ঢুকেছিল, তখন থেকে মোবাইল ঘরেই পড়েছিল।হাতে নিয়ে চেক করতেই দেখা গেলো শিহাব সাহেবের মেসেজ।  তাও প্রায় আধ ঘন্টা আগের।এখন তিনটা তিরিশ বাজছে। শায়লা মেসেজ ওপেন করলো।
লাঞ্চ করেছেন?
শায়লা নিজের ঘরের দরজাটা লাগিয়ে বিছানায় এলো। শায়লার বিছানার সাথে জানালা।এই নগর জীবন শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখার বিলাসিতা!
শায়লা মেসেজের উত্তর দিলো
হ্যাঁ, এইতো লাঞ্চের পর আনুসাঙ্গিক সব সেরে এলাম।আপনি লাঞ্চ করেছেন? ভাবী আজ কি রাঁধল? 
কোন উত্তর এলো না।শায়লা অপেক্ষায়।
বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবনায় মন চঞ্চল হয়ে উঠল !
টুং করে রেসপন্স এলো।
সেইতো কখন লাঞ্চ সেরেছি। এখন চায়ের তেস্টা পেয়ে গেছে।এক মগ লেবু চা করে নিয়ে এলাম। 
বাহ! লেবু চা আমারও খুব প্রিয়।
শিহাব একটু জ্ঞান ঝাড়ল,
---তবে লেবু চা খাবেন লাঞ্চের পর ভরা পেটে।কখনোই সকালে নয়।
হু, শায়লা আবার সেই প্রশ্নটি রাখল
ভাবী কী রাঁধল আজ?
শিহাবের সরল উত্তর
ভাবী নেই, আমিই রাধুনি।
শিহাব শায়লাকে দ্রুতই খুব আপন করে  নিয়েছে।তাই সে আর শায়লাকে কথার লুকোচুরিতে রাখতে চাইল না।যেটা সত্য সেটাই জানালো।তবে সব নয়।এখুনি নয়।শায়লা ভাবতে পারে সিঙ্গেল সেজে কথা চালিয়ে যাওয়ার জন্য গল্প ফেঁদেছি।
ভাবী নেই কেন?
সে গল্প আরেকদিন বলবো।
আপনি এখানে একাই থাকছেন?
হ্যাঁ, আমার একার সংসার।
এবার শায়লার একটু চাপা আতঙ্ক কাজ করলো মনে! লোকটি কি তাহলে খারাপ কেউ যে বউ চলে গেছে কিংবা সংসার গ্রামে রেখে এসে বলছে ব্যাচেলর?
শায়লা একটু শংকিত হলো। কথা কি আর চালিয়ে যাবে?কিন্তু মনের ভেতর কোথা থেকে যেন একটা ভালোলাগা ঢেউ বয়ে গেল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বয়ং বিধাতাই সিদ্ধান্ত নেয়ার বুদ্ধিমত্তাটা তৎক্ষনাৎ দিয়ে দেন।ভেবে নিল, না সেতো কোন ভনিতা করেনি।পরিচয়ের দুদিনের মধ্যেই সত্যটা বলেছে।এখন ইচ্ছেটা আমার কথা বলবো কিনা?
শায়লা সহজভাবেই জানতে চাইল, তা কী কী রাঁধলেন? 
কী কী? নাহ, এভাবে মেনু হিসেবে নয়,সহজ উপায়ে যা করা যায় সেরকম একটা কিছু।
তা কতদিন যাবৎ এই জীবন চলছে?
তা প্রায় তিন বছর।
তিন বছর? ভাবী কি অভিমান করে আছে, তাহলে তাকে মান ভাঙিয়ে নিয়ে আসুন। 
এবার শিহাব একটুক্ষণ চুপ থেকে লিখল--
আচ্ছা এ প্রসঙ্গটা কি এখন বন্ধ রাখা যায়?
শায়লা খুবই লজ্জিত বোধ করলো।
লিখলো, অবশ্যই।
শিহাব জানালো, আজ বিকেলের পর সন্ধ্যায় একটি বেরুবো। বন্ধুদের সাথে একটু চা পানের আড্ডা আছে।
শায়লা এবার ভীত হয়ে গেলো!ভাবলো, আবার হোটেল বারে যাওয়ার অভ্যাস টভ্যাস আছে নাকি? কি জানি লোকটির গতিবিধিতে আমার ভয়ই লাগছে।
কি হলো চুপ কেন? 
না আপনি বলুন শুনছি।
আজ কী কী রাঁধলেন? ভাই সাহেব কেমন বাজার করেন? 
শায়লা কথাটা প্রথমে বুঝতে পারেনি,আর যখন বুঝলো, হাত ফস্কে লেখা হয়ে গেলো
ভাইকে কোথায় পাবো?
মা আর ছোট ভাইকে নিয়েই আমার এইসব দিনরাত্রি।
কেমন করে যেন সত্যটা বলা হয়ে গেলো।
আসলে মিথ্যে দিয়ে কোন সুন্দর সম্পর্ক হয় না।সে যদি 'সততায় শিহাব' হতে পারে আমি কেন তবে 'সত্যবাদী শায়লা' হতে পারবো না?
পাশের ঘর থেকে মায়ের ডাক ভেসে এলো।
নিশ্চয়ই রুহি খালার পানের ডাব্বা আনতে হবে তার বাসা থেকে।
শায়লা শিহাবের কাছে একটু সময় চেয়ে নিলো।
শিহাব জানালো তবে এখন আর না।রাতে কথা হবে।বন্ধুর কল এসেছে।
ঠিক আছে বলে শায়লা দরজা খুলে ঘর থেকে বের হলো। 



                                                                                 চলবে.....

অলোক দাস




আমরা 


গণন্ত্রন্তের রক্ষাকবজ বিরোধিতা, 
বহুততা বাদ তো থাকবেই - 
সবাইকে তো কেউ সন্তুষ্ট কোরতে পারে না I 
সবাই সমান হয় না I 
যার যা কাজ সে তো করবেই I 
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হোক সর্বত্র I 
সংবিধান তো তাই বলে I 
এখন যা খেলা চলছে, 
রাজনীতির ঢং না দেখে দেশের জন্যে কাজ কোরে যাওয়াই ভালো I 
মিনিস্টার না হোলেও দেশের কাজ করা যায় I 
মোনে রাখতে হবে যে প্রতিটি আঘাত আমাদের শিক্ষা দেয় I 
অনেকে অনেক কথাই বলবে,--, আমাদের যেটা ভালো আমরা করবোই I

ffrza

LOVE