২০ এপ্রিল ২০২২

মমতা রায়চৌধুরীর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ১৫৭





উপন্যাস 


টানাপোড়েন ১৫৭
ওয়ার্কশপে রেখার নাম
মমতা রায়চৌধুরী



মনের ভেতরে একটা কেমন গোপন যন্ত্রণা কুরে কুরে খাচ্ছিল রেখা ভেবে পাচ্ছিল না আসলে সেই যন্ত্রণাটা কি ?
আসলে কিছু কিছু যন্ত্রণা থাকে যেগুলো বোধের অতীত, শুধু নস্টালজিক হয়ে ফিরে আসে, ভাবায় কষ্ট দেয় ,কখনও বা সেই যন্ত্রণাগুলো সুখের স্বর্ণালী স্মৃতি হয়ে ফিরে আসে।
বড়দি ফোন করেছিল অনিন্দিতা ওর বাচ্চাটাকে নিয়ে খুব মানসিক কষ্টে আছে। কথাটা শুনে রেখার ভেতরে কেমন যেন একটা কষ্টের বোধগুলো দানা বেঁধে উঠেছে অথচ অনেক দিন অকারণে রেখার সাথে কত মনে দাগা দিয়ে কথা বলেছে। আজকে সে সব কষ্ট মনেই হচ্ছে না।  মনে হচ্ছে  এখানে একজন মায়ের কষ্ট অনেক বেশি।শুধু  একজন মা তার সন্তানকে ভালো দেখে তার যে মানসিক শান্তি হয়, সেই শান্তিটুকু ফিরে পাব অনন্দিতা। ঈশ্বর করুন ওর বাচ্চার যেন সব স্বাভাবিক থাকে ,ভালো থাকে, সমাজের উপযোগী হয়ে ওঠে। 
এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ মনে হল' স্বপ্নীল কেমন আছে কে জানে? কার থেকেই বা খবর পাবে?'
এত ভাবনা চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, ঘুম কিছুতেই আসতে চাইছে না ।অথচ কখন যে একসময় ঘুমিয়ে পরেছে বুঝতেও পারেনি।  ঘুম ভাঙ্গলো  অ্যালার্ম ঘড়ির আওয়াজে।
উঠতে ইচ্ছে করছে না ।শরীর ক্লান্ত ।ঘড়িটা দেখে নিয়ে এলার্ম টা বন্ধ করে আবার শুয়ে পড়লো।
শুয়ে থাকতে থাকতে মনে হল যে 'সে ঘুমায় নি অথচ ঘুমিয়ে পড়েছে ।এবার ঘুম ভাঙলো কলিং বেলের আওয়াজে। "ওম জয় লক্ষ্মী মাতা,, মাইয়া জয় লক্ষ্মী মাতা...।'এটা আবার কাদের বাড়ির কলিংবেলের আওয়াজ।  ভালো করে কান খাড়া করে শুনল। কাদের বাড়ির কলিংবেলের আওয়াজ এটা তো রেখার বাড়িরই । যা বাবা এটা আবার কবে হলো।
এবার না উঠে পারা যাচ্ছে না। উঠতে তো হবেই। স্কুলে  যেতে হবে। মাসি এসেছে নিশ্চয়ই।
ঘুমের জড়তা কাটিয়ে আস্তে আস্তে দরজাটা খুলল। রেখা অবাক হয়ে দেখে আর ভাবে
"ও মা মাসি কোথায়?'
পার্থ খুব হেসে হেসে বলল
'কি বৌদি অবাক হয়ে গেলেন?'
রেখা চোখ দুটো ভালো করে হাত দিয়ে রগড়ে  নিয়ে বললো  'না মানে ,আমি ভেবেছি মাসি ..।
এত সকালে তুমি আসবে বুঝতে পারি নি।'
"আরে আমি কি জানতাম?
ঠিক আছে ভেতরে এসো পার্থ ।
'ভেতরে যাবো না বাড়িতে গিয়ে এগুলো দিই।'হাতে ধরে থাকা শাক গুলোকে দেখিয়ে।
পার্থর হাতে দুই আঁটি পাটশাক।
আরে সকালবেলায় টাটকা পেলাম নিয়ে যাচ্ছিল এক মাসি। পরতা হল তাই নিয়ে নিলাম।
একদিন বলেছিলে যে পাটশাক খেতে ইচ্ছে করছে।তাই…।'
"বাববা ,পার্থ তোমার মনেও থাকে " একগাল হেসে রেখা বলল।
"'কেন মনে থাকবে না বৌদি?"
'ঠিক আছে ,এসো ভেতরে।  চা খেয়ে যাও।'
'না বৌদি, যাই ।আমাদের বাড়িতে কাজের মেয়েটা আসলো কিনা দেখি।'
"ঠিক আছে, তাহলে এসো।"
"অন্য দিন এসে চা খেয়ে যাব।"
"তাই হবে।"
দরজা বন্ধ করতে যাবে এমন সময় মাসী বললো 'ও বৌমা দরজা বন্ধ ক'রো না, এসে গেছি।'
"হাতে কি ওগুলো বৌ মা।"
"পাটশাক গো পার্থ দিয়ে গেল।"
"মাসি শাকগুলো নিয়ে যাও তো একটু কেটে দিও তো।"
ঘাড় নেড়ে পাট শাকের আঁটি  নিয়ে চলে গেল।
ওই দেখো ভুলে গেলাম?
মাসি বললো' কি ভুলে গেলে বৌমা?'
আরে সেদিন ইলিশ মাছ এনেছিল ।ওকে তো টাকা দেয়া হয়নি ।টাকাটা তো দিতে হবে ।কাজের কথা কিছুই বলতে পারলাম না।
মাসি বললো 'দেবে পরে।'
'আসলে ও আসলে এত হুটোপাটি করে না ,সবকিছুই ভুলে যাই।'
বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে গোপালকে ভোগ চাপিয়ে নিচে নেমে আসলো চা করতে। যা হয়ে গেলে একে একে ফ্রিজ থেকে কাটা সবজি গুলো বের করে রান্না চাপিয়ে দিল। রুটি হলো তারপর মিলিদের খাবার হল ।তারপর নিজেদের খাবার রেডি করল। এরই মাঝে মাসিকে চা জলখাবার দিয়ে দিল। আজকে মাসি খুব তাড়াতাড়ি কাজ করে চলে গেল। কোথায় যাবে তাড়া আছে।
এবাবা  মনোজ এখনো ঘুম থেকে উঠলো না।
কি কুম্ভকর্ণের ঘুম রে বাবা?
আজকে অফিস যাবে না, নাকি?
বলেই রেখা শোবার ঘরের দিকে পা বাড়ালো। বাইরে মিলিদের চিৎকার শোনা গেল। আপন মনেই রেখা বললো সবুর কর। খাবার আনছি রে বাবা। চেঁচাস না।'
রেখা ঘরে গিয়ে দেখে নাক ডেকে বিন্দাস ঘুমোচ্ছে।
রেখার দুই গালে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ বসল বিছানার উপর তারপর শেষে জোরে একটা ধাক্কা দিলো নাম ধরে ডেকে 
মানুষতো ঘুমের থেকে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো বড় বড় চোখ করে তারপর বলল 'কি হচ্ছে ?কি করছো?'
"তুমি উঠবে না আজকে?'
'হ্যাঁ, উঠব তো বলে আবার ঘুমিয়ে পড়ল।'
"তাহলে তুমি আজকে অফিস যাচ্ছ না?'
মনোজের কানে কথাটা গেল তারপর ধরফর করে বিছানার উপর উঠে বসে বলল মানেটা কি অফিসে যাব না মানে?
মনোজ  দিকে তাকিয়ে রেখা  মাথা নেড়ে বলল' সে তো বটেই ।কখন অফিসে
 যাবে ?ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখো?'
মনোজ তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে বাথরুমের দিকে ছুটল , আর বলতে লাগল বলতে গেল'তুমি আমাকে ডেকে দাও নি।'
'কতদিন বলেছি আমাকে ঠিক টাইমে ডেকে দেবে?'
রেখা বলে এটাই কপাল বুঝলে তুমি ঘুমোবে আর দোষ চাপাবে আমার ওপর?'
অন্যদিকে মিলিদের চিৎকারে আর টিকতে পারছে না দরজা মনে হচ্ছে ভেঙে ফেলবে।
রেখা বললো 'না  আগে ওদের খাবারটা দিয়ে আসি।'
ঈদের খাবার টা দিয়ে এসে বিছানাপত্র ছেড়ে নিয়ে মনোজের ব্রেকফাস্ট রেডি করে ফেলল তারপর ওয়ারড্রব খুলে মনোজের ড্রেস বের করে রাখল সোফার ওপর।
মনোজ বাথরুম থেকে বেরিয়েই বলল 'আমার ড্রেসটা বের করো রেখা তাড়াতাড়ি আর ব্রেকফাস্ট টা দাও।"
রেখা বললো' তুমি যত তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আস্ তে  পারবে ,তত তাড়াতাড়ি তোমার ব্রেকফাস্ট দেবো।'
"আমি রেডি হয়ে গেছি।"
"আমিও তোমার খাবার নিয়ে বসে আছি।"
মনোজ তাড়াতাড়ি এসে খাবার টেবিলেই বসল আর এত তাড়াতাড়ি খেতে লাগল তাই দেখে রেখা বলল" এত তাড়াহুড়া করছো কেন তুমি ?"
মনোজ বলল' আমাকে এই ট্রেন পেতেই হবে।'
রেখা বললো "ঠিক পাবে ।এমন কিছু সময় নষ্ট হয় নি।"
মনোজ বলল 'পেলেই ভালো বুঝলে?"
রেখা নিজে ব্রেকফাস্ট না খেয়ে টিফিন বক্সে নিয়ে নিল আর সঙ্গে সঙ্গে টিফিন ভরতে ভরতে মনোজকে বলল' তুমি লাঞ্চে কি খাবে আজকে ?তোমাকে কি দিয়ে দেবো বাড়ির খাবার?"
মনোজ বেসিনে মুখ ধুতে ধুতে বলল", না না ,না ।আমি আজকে বাইরে খেয়ে নেব।"
মনোজ রেখাকে টাটা করে বেরিয়ে গেল।
রেখাও রেডি হয়ে সেন্টুদাকে মিলিদের খাবার বুঝিয়ে দিয়ে, ঘরগুলোতে তালা লাগিয়ে দিয়ে শুধু গেটের চাবিটা সেন্টু দার হাতে দিয়ে অটো ধরবে বলে ওয়েট করতে লাগলো।
অটো পেয়েও গেল ।যথারীতি নির্দিষ্ট টাইম স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনে উঠে বসলো।
ট্রেনে উঠে যথেষ্ট ভিড় থাকায় বড়দিকে ফোন করতে পারলো না।
রেখা মনে মনে ভাবল' ভিড়টা কমলে জায়গা পেলে, দিদির কাছ থেকে জেনে নিতে হবে কোথায় ওয়র্কসপ টা হচ্ছে?'
কালকে বড়দি এত কথা বললেন অথচ ওয়ার্কশপ কোথায় হচ্ছে সেটা বলতেই ভুলে গেছেন আর আমারও জিজ্ঞেস করা হয়ে উঠলো না।'
এসব ভাবতে ভাবতেই ট্রেনের ভিড় ঠেলে ঠেলে সিটের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করল এর মধ্যে একজন মহিলা এমন ধাক্কা মারলো রেখা প্রায় একটা ছোট বাচ্চার উপর উল্টে পড়ে যাবার উপক্রম হল।
 রেখা বলল' দিদি, একটু ঠিক করে দাঁড়াতে পারেন না। কেউ এইভাবে ঠেলা মারে বলুন তো?'
তবে যাই হোক রেখা এতসব কথা বলার পরেও ভদ্রমহিলা একটা কথাও বলল 
না।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে-থাকতে সামনের কয়েকটা স্টেশন আসার পরই ফাঁকা হয়ে গেল।
অন্তত ঠিক করে দাঁড়াতে পারল রেখা তারপর জিজ্ঞেস করতে লাগল কে কোথায় নামবে?
জিজ্ঞেস করতে করতেই সিটে বসে থাকা প্রথম ভদ্রমহিলা উঠে দাঁড়ালেন বললেন "আপনি এখানে বসুন আমি সামনেই নামবো।"
এ যেন রেখার কাছে মেঘ না চাইতে জল।
রেখা এখন মনে মনে ভাবছে বসে একটু জল খেয়ে ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করেই বড়দিকে ফোনটা করবে এমন সময় রেখার ফোন বেজে উঠলো। রেখা ফোনটা রিসিভ করতে গিয়ে দেখল 'বড়দির ফোন?'
"হ্যালো দিদি,'
', হ্যাঁ, রেখা আমি বড়দি বলছি।"
"বুঝতে পেরেছি বলুন।'
আজকে ওয়ার্কশপটা কোথায় হচ্ছে সেটা তো তোমাকে বলা হয়নি ,তুমি যাবে কি করে ওখানে? এইজন্য ফোন করলাম।"
"আমিও ঠিক একই কথা ভাবছিলাম যে আপনাকে ফোন করে জানবো।তার
আগে আপনি ফোনটা করে ফেললেন।"
বড়দি হেসে বললেন' তাই কি টেলিপ্যাথি দেখো?'
'শোনো তুমি ডন বক্স স্কুলে চলে আসবে।'
'ঠিক আছে দিদি।
ওখানে গিয়ে অনিন্দিতার নামটা কাটিয়ে তোমার নামটা লিখে নিতে বলবে কেমন? 'Ok দিদি।'
"যে কটা দিন ওয়ার্কশপ হবে তুমিই যাবেi'
Ok
বড়দি হেসে ফোনটা নামিয়ে রেখে বললেন' বেস্ট অফ লাক।'
'থ্যাংক ইউ দিদি'।

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ৯৪ 





ধারাবাহিক উপন্যাস 


শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৯৪)
শামীমা আহমেদ 



আজ সন্ধ্যার পর থেকেই রুহি খালা শায়লার মায়ের পাশে আছেন। শায়লার মায়ের দেখভাল করছেন। কানাডার বিষয়টি নিয়ে  শায়লার মায়ের কাছে তিনি যেমন লজ্জিত হয়েছেন তেমনি নোমান বাবাজির কান্ডে ভীষণ মর্মাহতও হয়েছেন। এমনটি বুঝাতে তিনি শায়লার মায়ের আশেপাশে ক্ষমার্হ আবেদনে ঘুরঘুর করছেন। এমন একটা বয়সে মেয়ের বিয়ে নিয়ে এমন কেলেংকারী তাও লোকজন আত্মীয়স্বজনের সামনে, কি জানি এতটা ধাক্কা তিনি সামাল দিতে পারবেন কিনা ?এসব ভেবেই রুহি খালা নিজের অপরাধবোধে নিজেই তাই অনুশোচনায় দগ্ধ হচ্ছেন। তবে শায়লা পারতপক্ষে রুহি খালার সামনে পড়ছে না।তাকে এড়িয়েই চলছে। যদিও এহেন ঘটনা তাকে দারুনভাবে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তাইতো শিহাবকে আপন করে পাওয়ার স্বপ্নে সে বিভোর রয়েছে। যদিও  শিহাবের নীরবতায় তা অনিশ্চয়তার  মধ্যেই রয়েছে।
শায়লা নিজের ঘরে বিছানায় শুয়ে মোবাইলে  একদৃষ্টে শিহাবের ছবিটির দিকে তাকিয়ে রইল। কখন কোন অজান্তে তার চোখ জলে ভরে উঠলো। তার মনে নানান প্রশ্ননের উদয় হচ্ছে। কেন শিহাব আজ সারাদিন এতটা নীরব হয়ে আছে ? কানাডার বিষয়টি হয়তো তাকে অনেক উৎকন্ঠায় ফেলেছে। কিন্তু তাকে সবকিছু জানাতে রাহাত বারবার কল করে যাচ্ছে।হয়তো অভিমানে মোবাইল বন্ধ রেখেছে। শায়লা নিজের কাছেই নিজে প্রশ্ন করলো,আমি এখন কি করবো ? কিভাবে শিহাবকে বুঝাবো,তুমি যা ভাবছো তার কিছুই ঘটছে না এখানে। কেন তুমি মোবাইলটা বন্ধ রেখে সব যোগাযোগ বিছিন্ন করে রেখেছো ? শায়লার চোখের কোণ থেকে কান্নার ধারা গাল বেয়ে বিছানার বালিশে পড়ছে। শায়লা ফুল দিয়ে সাজানো খাটে মখমলী চাদরে শুয়ে একা একাই সময় পার করছে ।  অতৃপ্ত মনে বারবার শিহাবকে খুঁজে ফিরছে।শিহাবতো আজ তার পাশে থাকতে পারতো। নিবিড় বন্ধনে খুব কাছে নিতে পারতো। দুজনে আজ উন্মাতাল রাত কাটাতে পারতো। সেতো তাকে তেমন করেই চেয়েছিলো। কিন্তু কেন চাওয়া পাওয়ার মাঝে এতটা দূরত্ব হলো ?  শিহাব  তাকে এতদিন যত যত মেসেজ পাঠিয়েছে  শায়লার  মোবাইলের মেসেঞ্জারে সবগুলো তেমনিভাবেই আছে। শায়লা ভেবেছিল নোমান সাহেব এলে তাকে সব দেখাবে। তার জন্য শিহাবের মনে কতখানি ভালোবাসা আছে তা জানাবে। সেও যে শিহাবকে পাওয়ার জন্য কতটা  আকুল হয়ে আছে নোমান সাহেবকে সেটাও বুঝিয়ে দিবেন। আর এসব দেখে নিশ্চয়ই উনি আর শায়লাকে কানাডায়  নিয়ে যেতে চাইতেন না। কিন্তু  অসম্ভব এক সুসংবাদে এসবের কিছুরইতো প্রয়োজন পড়েনি। নোমান সাহেব স্বেচ্ছায় সরে গেছেন। উনি  এতে শায়লার কাছে ক্ষমা চাইলেও এটা তো শায়লার জন্য শাপে বর হয়েছে । আর এতো বিধাতারই খেলা।  আর এতেই শায়লা বুঝে নিয়েছে আর কোন বাধা রইল না। শিহাব শুধু  তারই হবে। কিন্তু শায়লা ভাবছে সবকিছু এত সহজেই সমাধান হলেও এত কাছে থাকা দুটো মানুষ কেন এক হতে পারছিনা ? কেন একটা দমবন্ধ করা পরিস্থিতিতে তাদের পড়তে হচ্ছে। শায়লা এটা খুবই খেয়াল করছে যে বুবলী  আপ্রাণ চেষ্টা করছে সবকিছুকে একটা সমাধানে আনতে কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। শায়লা জানে না কেন তার জীবনটা সরলরেখায় চলছে না। কেন বারবার তাকে বাধার সন্মুখীন হতে হচ্ছে। কই,নায়লার জীবনটাতো আর দশটা মেয়ের মতই এগুলো।পড়ালেখা, প্রেম, বিয়ে, ধনী পরিবারের বউ, স্বামীকে নিয়ে সুখী সংসার আর এখন অনাগত সন্তানের আনন্দে বিভোর ! যদিও নায়লার এই সুন্দর জীবনের জন্য শায়লাকে তার জীবনের অনেক স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে । শায়লা জানেনা, কেন কিছু মানুষের জন্য সুখটা চিরকাল মরীচিকা হয়ে থাকে।শায়লা শিহাবের মেসেজগুলো দেখছিলো আর কান্নায় ভেঙে পড়ছিলো।
শিহাব বারান্দায় বসে একে একে বেশ কয়েকটি  স্টিক একের পর এক টেনেই যাচ্ছিল। ধীরে ধীরে  আশেপাশের বাড়ি ঘরের বাতিগুলো নিভে যাচ্ছিল।মানুষ ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। কিন্তু শিহাবের চোখে একফোঁটাও ঘুম নেই।রাস্তায় নাইটগার্ডদের বাঁশি বাজিয়ে রাস্তা টহল দেয়া শুরু হয়ে গেছে। কিছু কুকুর একটানা ঘেউঘেউ করেই যাচ্ছে। শিহাব বুঝেনা এত নাইট গার্ডদের পাহারাতেও কেমন করে কুকুরগুলো ডেকে যায় ! অবাধ্য কুকুরগুলো হয়তো কিছুর প্রতিবাদ জানায়। শিহাব ভাবলো তবুওতো ওরা ওদের গলার স্বর উচ্চরবে কিছু বলতে পারে কিন্তু সে ? তার সামনে দিয়ে শায়লা আজ অন্যের বাহুলগ্না হয়ে গেলো কিন্তু সে কোন প্রতিবাদই করতে পারলো না।এই সমাজ সংসারকে চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে বলতে পারলো না,তোমরা ভুল করছো। দুইটি সুন্দর মনের চাওয়াকে তোমরা গলা টিপে হত্যা করছো। শিহাবের চোখের সামনে বারবার শায়লার মুখটি ভেসে উঠছে !  আজ সকালে শায়লাতো চলে আসতেই চেয়েছিল।তার ভুল সিদ্ধান্তে আজ তার শায়লাকে হারাতে হলো। শিহাবের নিজের ভুলের কারণেই সবটা নয়,এতে রাহাতের বিশ্বাসঘাতকতাও দায়ী।  তার মনটা রাহাতের প্রতি ভীষণ অভিমানী হয়ে উঠলো। কেন রাহাত তার বোনের মনের দিকটায় দেখলো না। কেন সবকিছু জানানোর পরেও রাহাত তাকে এড়িয়ে গেলো।শিহাবের ভেতরে শায়লার জন্য অসহিষ্ণু মনটা ছটফট করতে লাগলো। আরেকটি সিগারেট ধরিয়ে সে গভীর ভাবনায় ডুবে রইল। কিন্তু হঠাৎই কোথা থেকে যেন তার মনটা বিদ্রোহী হয়ে উঠলো।
প্রতিবাদে ভেতর থেকে সাড়া মিললো। নাহ ! যে করেই হউক শায়লার একটা খবর তার নিতেই হবে। সেই দুপুরে একটা মেসেজ হয়েছে।মানুষের জীবনে মিরাকল অনেক কিছুইতো ঘটে!  নিশ্চয়ই শায়লা এখনো তারই অপেক্ষায় আছে ।  শিহাবের দৃঢ় বিশ্বাস  শায়লা কিছুতেই কানাডায় যাওয়া মেনে নিবে না। নিশ্চয়ই জোর করে কেউ তাকে নিয়ে যেতে পারবে না।শায়লাকে এতটা জানার পড়েও  যদি এখন সে নীরব থাকে তবে সারা জীবন এর জন্য পস্তাতে হবে। শিহাব ভাবলো, তার কি কোথাও কোন ভুল হচ্ছে ? তার এই আজকের ভুল যদি ভবিষ্যতে তাকে শায়লার কাছে কোন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় ? যদি তাকে অপরাধী করে ?  এই দোটানায়  যদি শায়লা যদি অন্যরকম কোন সিদ্ধান্ত নেয় ? তবেতো সে  কোনদিন শায়লার ক্ষমা পাবে না।নাহ, শিহাব আর ভাবতে পারছে না। সে চট করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। নাহ, তার মন বলছে শায়লা তার জন্য  আকুল হয়ে আছে,তার মন বলছে শায়লা তারই পথপানে চেয়ে আছে ।  শিহাবের মন বলছে শায়লাকে একান্ত করে শুধু তারই পাবার অধিকার আছে কেননা সে শায়লাকে অনেক ভালোবাসে। সে এখুনি শায়লাদের বাসায় যাবে এবং যা হবার হবে,চাইলে ওরা থানা পুলিশও করতে পারে, শিহাব  তার পরোয়া করবে না। শায়লা যদি স্বেচ্ছায় তার কাছে আসে কেউ তাকে ফেরাতে পারবে না। মনের ভেতর এমনি 
এক সাগর ভালোবাসার আবেগের শক্তির জোরেই সে শায়লাকে তার করে নিবে। শিহাব  তৎক্ষনাৎ তার হাতের জলন্ত সিগারেটটি এস্ট্রেতে গুঁজে নিয়ে দ্রুততম পায়ের চলায় তার বেডরুমে চলে এলো। আলমারি খুলে নেভিব্লু ফুল স্লিভ একটি শার্ট 
বের করলো সাথে আয়রন করা  অফ হোয়াইট  কটন ফেব্রিকের একটা প্যান্ট। শিহাব খুবই ক্যাজুয়াল ভাবে শার্টটি পড়ে নিলো। শার্টের ফুল স্লিভ তিনটি  ভাঁজ করে গুটিয়ে নিলো।আজ আর শার্ট ইন করে পরার ইচ্ছে নেই। শিহাব তৈরি হয়ে আয়নায় একবার তার চোখ পড়তেই নিজেই যেন নিজের চোখের কাছে শপথ করে নিলো।শায়লাকে আমার করতেই যাচ্ছি। শায়লাকে নিয়েই আজ আমি ফিরবো। শিহাব মোবাইল চার্জার থেকে খুলে হাতে নিলো। পায়ে ক্রস বেল্টের জুতা পরে নিলো।বাইকের চাবি,হেলমেট  নিয়ে দরজা লক করে চাবি পকেটে পুরে সিঁড়ির দিকে এলো। বাড়ির লোকজন ঘুমের অতলান্তে। এত রাতে লিফট বন্ধ থাকায় শিহাব  একে একে সিঁড়ির বাতি জ্বালিয়ে নীচতলায় চলে এলো।কেয়ারটেকার বিল্লাল তার ঘরে গভীর নিদ্রায়। আজ হাসান সাহেবের বাসায় বেশ ভালোমন্দ খেয়ে আরামের ঘুম দিচ্ছে । শিহাব তাকে  ডেকে তুললো।যদিও তার চোখেমুখে বিস্ময় !  এতরাতে স্যার কোথায় যায় ? তবে কি তার মায়ের বাড়ির কোন খারাপ খবর ?  বিল্লাল শিহাবের দিকে তাকিয়ে কোন প্রশ্ন করার সাহস পেলো না। সে চাবি নিয়ে এসে দৌড়ে গেট খুলে দিলে শিহাব বাইকে স্টার্ট দিয়ে হর্ণ বাজিয়ে নিজের বাসা উত্তরা সেক্টর চোদ্দ থেকে সেক্টর সাতের দিকে ছুটে চললো। এত রাতে রাস্তা বেশ ফাঁকা। শিহাবের পৌঁছাতে পাঁচ মিনিটের বেশী লাগবে না। কিন্তু নাইট গার্ডের প্রশ্নের কাছে আজ তাকে একটা মিথ্যা কারণ  দেখাতে হলো। শিহাব ভাবলো, ওদেরকে  বললে ওরা বুঝবে না তার জীবনে এই রাতটায় কি ঘটে যাচ্ছে, কিভাবে তাদের বুঝাবে আর একটু সময় ক্ষেপণ করলে তার জীবনটা মূল্যহীন হয়ে যাবে। শিহাব ঊর্ধ্বশ্বাসে বাইক নিয়ে এগিয়ে গেলো। 

শায়লাদের বাসায় ছাদে গায়ে হলুদের স্টেজ করা হয়েছে।তা কাঁচা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। বাড়ির লোকজন সবাই যার মত জায়গা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। শুধু রাহাত আর বুবলী  ছাদের এই ফাকা হলুদের স্টেজের সামনে চেয়ার পেতে বসে আছে । দুজনেই  শায়লাকে ভেবে বেদনায় ডুবে আছে। রাহাত শায়লার আজকের এই পরিণতির জন্য  বারবার নিজেকে দায়ী করছে । বুবলী তাকে বুঝানোর চেষ্টা করছে।আশা ছাড়তে নিষেধ করছে। সে শুধু বলছে আমরা আরেকটু অপেক্ষা করি। নিশ্চয়ই কোন কারণে শিহাব ভাইয়ার মোবাইল বন্ধ আছে।আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।এত রাতে আর নয় সকাল হলে আবার কল দিয়ে দেখতে হবে কল রিসিভ করে কিনা। মোবাইলটা কোন কারণে মিসিংওতো হতে পারে। বুবলীর কথা রাহাত কানে তুলছে কিনা বুবলী তা বুঝতে পারছে না। রাহাত আর বুবলী  দুজনে পাশাপাশি বসে আছে, এতে যেন বুবলীর মনে অন্যরকম এক ভাললাগা কাজ করছে। এতটা কাছে এমন রাতের নির্জনতায় রাহাতের সাথে কোনদিন তার সময় কাটবে সে তা কোনদিনই ভাবে নি।যদিও সে ছোটবেলায় কল্পনায়  রাহাতকে নিয়ে সে অনেককিছুই ভেবেছিলো। ইশারা ইঙ্গিতে তা বুঝিয়েও ছিলো। কিন্তু তখন রাহাতদের পরিবারে এক দুঃসময় চলছিল।রাহাতের বাবার মৃত্যু তাদেরকে হঠাৎই দারিদ্র্যের মাঝে ফেলে দিয়েছিল। বুবলী তার মায়ের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সেই দুঃসময়ে রাহাতের পাশে দাঁড়াতে পারেনি।তাদের স্বচ্ছল পরিবারের পক্ষ থেকে এতটুকুও সহযোগিতা করতে পারেনি।কিন্তু তবুও আজো রাহাতের প্রতি বুবলীর সুপ্ত ভালোবাসাটা তা জানান দিয়ে যায়। যদিও আজ রাহাতদের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে আর সেই সাথে রাহাতও কেমন যেন বদলে গেছে। আর তার জীবনেও পাভেল এসেছে । তাকে ভালবাসার কথা জানিয়েছে। তবে বুবলী তাকে ফিরিয়ে দেয়নি।বুবলী জানে কেউ যখন কাউকে ভালোবাসার কথা জানায় মনের কতটা গভীর থেকে তা জানায় আর তার সাড়া না মিললে মনটা কতটা ভেঙে চুড়ে যায়। তাইতো বুবলী পাভেলকে ফিরিয়ে দেয়নি।পাভেল যেন তাকে পেয়ে জীবনের পূর্ণতা পায় বুবলীর সেটাই চাওয়া।তাইতো বুবলীর আঙুলে পাভেলের মায়ের পরিয়ে দেয়া আংটিতে সে ভালবাসার বন্ধন ধরে রেখেছে। বুবলী আর পাভেল ওরা সহপাঠী । মাস্টার্স শেষ হলেই ওদের বিয়ে। তবে আজ রাহাত ভাইয়ার এত কাছাকাছি এসে শায়লা যেন তার সেই অতীতেই বারবার ফিরে যাচ্ছে।
শায়লার প্রতি এমন একটা ভুল করে রাহাত বুবলীর কাছে সান্ত্বনা খুঁজে ফিরছে । এক সময় সে কান্নায় ভেঙে পড়ে।যদিও রাহাত ভাবছে তার এই নির্ভরতায় বুবলী আবার অন্য মানে করছে কিনা। তাহলেতো আবার অন্য কোন ভুল বুঝাবুঝি হতে পারে। কিন্ত রাহাত নিজেকে কিছুতেই প্রবোধ দিতে পারছে না। একসময় সে ভীষণ আপ্লুত হয়ে বুবলীর হাতে হাত রাখে। বুবলী চমকে উঠে ! তবে এটা যে রাহাত তার অবচেতন মনেই করেছে বুবলী  তা বুঝতে পারে। বুবলীর এক কাজিন রাহাতের কলীগ।তার কাছ থেকেই বুবলী জেনেছে,রাহাত তার অফিস কলীগ একটি মেয়ের সাথে ভীষণ ভাবে ইনভলভড।হয়তো তারা বিয়ে করবে।মেয়েটির নাম দিহান। বুবলী সবটা জেনেই রাহাতের প্রতি তার দূর্বলতাটাকে মন থেকে সরিয়ে ফেলতে চাইছে। রাহাত তখনো বুবলী থেকে হাত ছাড়িয়ে নিচ্ছে না। এতরাতে ছাদে দুজনে একাকী হাত ধরে বসে থাকাটা কেউ দেখে ফেললে ভীষণ একটা হৈচৈ পড়ে যাবে। বুবলী  হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,চলো রাহাত ভাইয়া আমরা ওখানে ছাদের কিনারার দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে গল্প করি। রাহাতের যেন সম্বিৎ ফিরে এলো ! সে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে একটু দূরত্ব করে দাঁড়ালো।এরপর দুজনে হেঁটে হেঁটে ছাদের কিনারায় গেলো। দোতালার ছাদ থেকে বাসার সামনের রাস্তার বাতিতে সবই দিনের আলোর মত ঝকঝক করছিলো। রাহাতদের বাড়ির বিপরীতে  "স্বপ্নবাড়ি" এপার্টমেন্টে র সামনেই একটা লাইটপোস্টে র বাতিতে বাড়ির সামনে আলোর বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎই রাহাত দেখলো, বাইকে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে শিহাব মোবাইল দেখছে !

শিহাব তার মোবাইল হাতে নিলো। সে  অনেকক্ষণ পরে তার মোবাইল চেক করছিলো, সে ভীষণ অবাক হলো ! তার মোবাইলে সন্ধ্যা থেকে রাহাতের পাঁচটি মিসড কল আর শায়লার তিনটি মিসড কল। কেন ওদের এত কল শিহাব বুঝতে পারছে না। তার মনে নানান ভাবনার উঁকি দিচ্ছে। তবে কি ওদের পরিবারে কিছু ঘটেছে ? তা জানতে এত রাতে কল দেয়া কি ঠিক হবে ? 

শিহাবকে বাসার সামনে দেখে রাহাত আর এক মূহুর্তও  দেরী না করে বাতাসের বেগে নিচে রাস্তায় নেমে এলো। বুবলী  রাহাতের এমন কান্ডে অবাকের চেয়েও আরো  বেশী  কিছু হয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে রইল।


চলবে....

কবি কংকা চৌধুরী গুপ্তা এর কবিতা "ভালোবাসার কবিতা"





ভালোবাসার কবিতা
কংকা চৌধুরী গুপ্তা
( ইংল্যান্ড ) 

আমি, তোমার কাছে একটু 
ভালোবাসা গচ্ছিত রেখেছিলাম। 
আর তুমি দিয়েছো 
আমাকে বেঁচে থাকার জন্য প্রেরণা।

আমি , তোমার কাছে ভরসা করে 
এক মুঠো বিশ্বাস জমা রেখেছিলাম।
তাইতো আমি বিশ্বস্ত হয়েছি।
আর তুমি হয়েছো আদর্শ।

আমি, তোমার কাছে কিছু অভিমান লুকিয়ে রেখেছিলাম।
আর তুমি অনুযোগ না করে
পুঞ্জীভূত অভিমান সরিয়ে 
 বাড়িয়েছো ভালোবাসার হাত।

আমি , কিছু কান্না জমা রেখেছিলাম।
কিন্তু তুমি কান্না সরিয়ে 
আমাকে অনন্ত সুখ দিয়েছো।
কান্না চেপে নিরবে হৃদয়ে।

আমি , অনেক খানি সুখ 
তোমায় দেব বলে যতনে রেখেছিলাম।
কিন্তু তুমি আমার সুখেই 
সুখি হয়ে দিয়েছো মহত্ত্বের পরিচয়।

 

কবি তাহের আহমেদ লস্কর এর কবিতা "বৃথা স্বপ্ন "




বৃথা স্বপ্ন 

তাহের আহমেদ লস্কর 


উড়ি স্বপ্নের শহরে   
ভর করে স্বপ্ন ডানা,
কে দেবে আমারে 
স্বপ্নপুরের ঠিকানা ?

স্বপ্নে লাগে প্রেমবাতাস   
স্বপ্নে হৃদয় হয় শীতল, 
স্বপ্ন মম কষ্টের আকাশ   
স্বপ্ন যোগায় বুদ্ধি বল । 

স্বপ্নের ঘোড়া স্বপ্নে চড়ি  
স্বপ্নে গড়ি তাজমহল,  
স্বপ্নে বৃথা প্রেমে পড়ি  
স্বপ্নে পুড়ায় প্রেমানল । 

স্বপ্নভোরে রঙিন ফুলে  
গাঁথি স্বপ্নের মালা, 
স্বপ্নে মম হৃদয় জ্বলে 
স্বপ্ন দেয় জ্বালা ।