ধারাবাহিক উপন্যাস
শায়লা শিহাব কথন
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৯৪)
শামীমা আহমেদ
আজ সন্ধ্যার পর থেকেই রুহি খালা শায়লার মায়ের পাশে আছেন। শায়লার মায়ের দেখভাল করছেন। কানাডার বিষয়টি নিয়ে শায়লার মায়ের কাছে তিনি যেমন লজ্জিত হয়েছেন তেমনি নোমান বাবাজির কান্ডে ভীষণ মর্মাহতও হয়েছেন। এমনটি বুঝাতে তিনি শায়লার মায়ের আশেপাশে ক্ষমার্হ আবেদনে ঘুরঘুর করছেন। এমন একটা বয়সে মেয়ের বিয়ে নিয়ে এমন কেলেংকারী তাও লোকজন আত্মীয়স্বজনের সামনে, কি জানি এতটা ধাক্কা তিনি সামাল দিতে পারবেন কিনা ?এসব ভেবেই রুহি খালা নিজের অপরাধবোধে নিজেই তাই অনুশোচনায় দগ্ধ হচ্ছেন। তবে শায়লা পারতপক্ষে রুহি খালার সামনে পড়ছে না।তাকে এড়িয়েই চলছে। যদিও এহেন ঘটনা তাকে দারুনভাবে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তাইতো শিহাবকে আপন করে পাওয়ার স্বপ্নে সে বিভোর রয়েছে। যদিও শিহাবের নীরবতায় তা অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়েছে।
শায়লা নিজের ঘরে বিছানায় শুয়ে মোবাইলে একদৃষ্টে শিহাবের ছবিটির দিকে তাকিয়ে রইল। কখন কোন অজান্তে তার চোখ জলে ভরে উঠলো। তার মনে নানান প্রশ্ননের উদয় হচ্ছে। কেন শিহাব আজ সারাদিন এতটা নীরব হয়ে আছে ? কানাডার বিষয়টি হয়তো তাকে অনেক উৎকন্ঠায় ফেলেছে। কিন্তু তাকে সবকিছু জানাতে রাহাত বারবার কল করে যাচ্ছে।হয়তো অভিমানে মোবাইল বন্ধ রেখেছে। শায়লা নিজের কাছেই নিজে প্রশ্ন করলো,আমি এখন কি করবো ? কিভাবে শিহাবকে বুঝাবো,তুমি যা ভাবছো তার কিছুই ঘটছে না এখানে। কেন তুমি মোবাইলটা বন্ধ রেখে সব যোগাযোগ বিছিন্ন করে রেখেছো ? শায়লার চোখের কোণ থেকে কান্নার ধারা গাল বেয়ে বিছানার বালিশে পড়ছে। শায়লা ফুল দিয়ে সাজানো খাটে মখমলী চাদরে শুয়ে একা একাই সময় পার করছে । অতৃপ্ত মনে বারবার শিহাবকে খুঁজে ফিরছে।শিহাবতো আজ তার পাশে থাকতে পারতো। নিবিড় বন্ধনে খুব কাছে নিতে পারতো। দুজনে আজ উন্মাতাল রাত কাটাতে পারতো। সেতো তাকে তেমন করেই চেয়েছিলো। কিন্তু কেন চাওয়া পাওয়ার মাঝে এতটা দূরত্ব হলো ? শিহাব তাকে এতদিন যত যত মেসেজ পাঠিয়েছে শায়লার মোবাইলের মেসেঞ্জারে সবগুলো তেমনিভাবেই আছে। শায়লা ভেবেছিল নোমান সাহেব এলে তাকে সব দেখাবে। তার জন্য শিহাবের মনে কতখানি ভালোবাসা আছে তা জানাবে। সেও যে শিহাবকে পাওয়ার জন্য কতটা আকুল হয়ে আছে নোমান সাহেবকে সেটাও বুঝিয়ে দিবেন। আর এসব দেখে নিশ্চয়ই উনি আর শায়লাকে কানাডায় নিয়ে যেতে চাইতেন না। কিন্তু অসম্ভব এক সুসংবাদে এসবের কিছুরইতো প্রয়োজন পড়েনি। নোমান সাহেব স্বেচ্ছায় সরে গেছেন। উনি এতে শায়লার কাছে ক্ষমা চাইলেও এটা তো শায়লার জন্য শাপে বর হয়েছে । আর এতো বিধাতারই খেলা। আর এতেই শায়লা বুঝে নিয়েছে আর কোন বাধা রইল না। শিহাব শুধু তারই হবে। কিন্তু শায়লা ভাবছে সবকিছু এত সহজেই সমাধান হলেও এত কাছে থাকা দুটো মানুষ কেন এক হতে পারছিনা ? কেন একটা দমবন্ধ করা পরিস্থিতিতে তাদের পড়তে হচ্ছে। শায়লা এটা খুবই খেয়াল করছে যে বুবলী আপ্রাণ চেষ্টা করছে সবকিছুকে একটা সমাধানে আনতে কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। শায়লা জানে না কেন তার জীবনটা সরলরেখায় চলছে না। কেন বারবার তাকে বাধার সন্মুখীন হতে হচ্ছে। কই,নায়লার জীবনটাতো আর দশটা মেয়ের মতই এগুলো।পড়ালেখা, প্রেম, বিয়ে, ধনী পরিবারের বউ, স্বামীকে নিয়ে সুখী সংসার আর এখন অনাগত সন্তানের আনন্দে বিভোর ! যদিও নায়লার এই সুন্দর জীবনের জন্য শায়লাকে তার জীবনের অনেক স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে । শায়লা জানেনা, কেন কিছু মানুষের জন্য সুখটা চিরকাল মরীচিকা হয়ে থাকে।শায়লা শিহাবের মেসেজগুলো দেখছিলো আর কান্নায় ভেঙে পড়ছিলো।
শিহাব বারান্দায় বসে একে একে বেশ কয়েকটি স্টিক একের পর এক টেনেই যাচ্ছিল। ধীরে ধীরে আশেপাশের বাড়ি ঘরের বাতিগুলো নিভে যাচ্ছিল।মানুষ ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। কিন্তু শিহাবের চোখে একফোঁটাও ঘুম নেই।রাস্তায় নাইটগার্ডদের বাঁশি বাজিয়ে রাস্তা টহল দেয়া শুরু হয়ে গেছে। কিছু কুকুর একটানা ঘেউঘেউ করেই যাচ্ছে। শিহাব বুঝেনা এত নাইট গার্ডদের পাহারাতেও কেমন করে কুকুরগুলো ডেকে যায় ! অবাধ্য কুকুরগুলো হয়তো কিছুর প্রতিবাদ জানায়। শিহাব ভাবলো তবুওতো ওরা ওদের গলার স্বর উচ্চরবে কিছু বলতে পারে কিন্তু সে ? তার সামনে দিয়ে শায়লা আজ অন্যের বাহুলগ্না হয়ে গেলো কিন্তু সে কোন প্রতিবাদই করতে পারলো না।এই সমাজ সংসারকে চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে বলতে পারলো না,তোমরা ভুল করছো। দুইটি সুন্দর মনের চাওয়াকে তোমরা গলা টিপে হত্যা করছো। শিহাবের চোখের সামনে বারবার শায়লার মুখটি ভেসে উঠছে ! আজ সকালে শায়লাতো চলে আসতেই চেয়েছিল।তার ভুল সিদ্ধান্তে আজ তার শায়লাকে হারাতে হলো। শিহাবের নিজের ভুলের কারণেই সবটা নয়,এতে রাহাতের বিশ্বাসঘাতকতাও দায়ী। তার মনটা রাহাতের প্রতি ভীষণ অভিমানী হয়ে উঠলো। কেন রাহাত তার বোনের মনের দিকটায় দেখলো না। কেন সবকিছু জানানোর পরেও রাহাত তাকে এড়িয়ে গেলো।শিহাবের ভেতরে শায়লার জন্য অসহিষ্ণু মনটা ছটফট করতে লাগলো। আরেকটি সিগারেট ধরিয়ে সে গভীর ভাবনায় ডুবে রইল। কিন্তু হঠাৎই কোথা থেকে যেন তার মনটা বিদ্রোহী হয়ে উঠলো।
প্রতিবাদে ভেতর থেকে সাড়া মিললো। নাহ ! যে করেই হউক শায়লার একটা খবর তার নিতেই হবে। সেই দুপুরে একটা মেসেজ হয়েছে।মানুষের জীবনে মিরাকল অনেক কিছুইতো ঘটে! নিশ্চয়ই শায়লা এখনো তারই অপেক্ষায় আছে । শিহাবের দৃঢ় বিশ্বাস শায়লা কিছুতেই কানাডায় যাওয়া মেনে নিবে না। নিশ্চয়ই জোর করে কেউ তাকে নিয়ে যেতে পারবে না।শায়লাকে এতটা জানার পড়েও যদি এখন সে নীরব থাকে তবে সারা জীবন এর জন্য পস্তাতে হবে। শিহাব ভাবলো, তার কি কোথাও কোন ভুল হচ্ছে ? তার এই আজকের ভুল যদি ভবিষ্যতে তাকে শায়লার কাছে কোন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় ? যদি তাকে অপরাধী করে ? এই দোটানায় যদি শায়লা যদি অন্যরকম কোন সিদ্ধান্ত নেয় ? তবেতো সে কোনদিন শায়লার ক্ষমা পাবে না।নাহ, শিহাব আর ভাবতে পারছে না। সে চট করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। নাহ, তার মন বলছে শায়লা তার জন্য আকুল হয়ে আছে,তার মন বলছে শায়লা তারই পথপানে চেয়ে আছে । শিহাবের মন বলছে শায়লাকে একান্ত করে শুধু তারই পাবার অধিকার আছে কেননা সে শায়লাকে অনেক ভালোবাসে। সে এখুনি শায়লাদের বাসায় যাবে এবং যা হবার হবে,চাইলে ওরা থানা পুলিশও করতে পারে, শিহাব তার পরোয়া করবে না। শায়লা যদি স্বেচ্ছায় তার কাছে আসে কেউ তাকে ফেরাতে পারবে না। মনের ভেতর এমনি
এক সাগর ভালোবাসার আবেগের শক্তির জোরেই সে শায়লাকে তার করে নিবে। শিহাব তৎক্ষনাৎ তার হাতের জলন্ত সিগারেটটি এস্ট্রেতে গুঁজে নিয়ে দ্রুততম পায়ের চলায় তার বেডরুমে চলে এলো। আলমারি খুলে নেভিব্লু ফুল স্লিভ একটি শার্ট
বের করলো সাথে আয়রন করা অফ হোয়াইট কটন ফেব্রিকের একটা প্যান্ট। শিহাব খুবই ক্যাজুয়াল ভাবে শার্টটি পড়ে নিলো। শার্টের ফুল স্লিভ তিনটি ভাঁজ করে গুটিয়ে নিলো।আজ আর শার্ট ইন করে পরার ইচ্ছে নেই। শিহাব তৈরি হয়ে আয়নায় একবার তার চোখ পড়তেই নিজেই যেন নিজের চোখের কাছে শপথ করে নিলো।শায়লাকে আমার করতেই যাচ্ছি। শায়লাকে নিয়েই আজ আমি ফিরবো। শিহাব মোবাইল চার্জার থেকে খুলে হাতে নিলো। পায়ে ক্রস বেল্টের জুতা পরে নিলো।বাইকের চাবি,হেলমেট নিয়ে দরজা লক করে চাবি পকেটে পুরে সিঁড়ির দিকে এলো। বাড়ির লোকজন ঘুমের অতলান্তে। এত রাতে লিফট বন্ধ থাকায় শিহাব একে একে সিঁড়ির বাতি জ্বালিয়ে নীচতলায় চলে এলো।কেয়ারটেকার বিল্লাল তার ঘরে গভীর নিদ্রায়। আজ হাসান সাহেবের বাসায় বেশ ভালোমন্দ খেয়ে আরামের ঘুম দিচ্ছে । শিহাব তাকে ডেকে তুললো।যদিও তার চোখেমুখে বিস্ময় ! এতরাতে স্যার কোথায় যায় ? তবে কি তার মায়ের বাড়ির কোন খারাপ খবর ? বিল্লাল শিহাবের দিকে তাকিয়ে কোন প্রশ্ন করার সাহস পেলো না। সে চাবি নিয়ে এসে দৌড়ে গেট খুলে দিলে শিহাব বাইকে স্টার্ট দিয়ে হর্ণ বাজিয়ে নিজের বাসা উত্তরা সেক্টর চোদ্দ থেকে সেক্টর সাতের দিকে ছুটে চললো। এত রাতে রাস্তা বেশ ফাঁকা। শিহাবের পৌঁছাতে পাঁচ মিনিটের বেশী লাগবে না। কিন্তু নাইট গার্ডের প্রশ্নের কাছে আজ তাকে একটা মিথ্যা কারণ দেখাতে হলো। শিহাব ভাবলো, ওদেরকে বললে ওরা বুঝবে না তার জীবনে এই রাতটায় কি ঘটে যাচ্ছে, কিভাবে তাদের বুঝাবে আর একটু সময় ক্ষেপণ করলে তার জীবনটা মূল্যহীন হয়ে যাবে। শিহাব ঊর্ধ্বশ্বাসে বাইক নিয়ে এগিয়ে গেলো।
শায়লাদের বাসায় ছাদে গায়ে হলুদের স্টেজ করা হয়েছে।তা কাঁচা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। বাড়ির লোকজন সবাই যার মত জায়গা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। শুধু রাহাত আর বুবলী ছাদের এই ফাকা হলুদের স্টেজের সামনে চেয়ার পেতে বসে আছে । দুজনেই শায়লাকে ভেবে বেদনায় ডুবে আছে। রাহাত শায়লার আজকের এই পরিণতির জন্য বারবার নিজেকে দায়ী করছে । বুবলী তাকে বুঝানোর চেষ্টা করছে।আশা ছাড়তে নিষেধ করছে। সে শুধু বলছে আমরা আরেকটু অপেক্ষা করি। নিশ্চয়ই কোন কারণে শিহাব ভাইয়ার মোবাইল বন্ধ আছে।আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।এত রাতে আর নয় সকাল হলে আবার কল দিয়ে দেখতে হবে কল রিসিভ করে কিনা। মোবাইলটা কোন কারণে মিসিংওতো হতে পারে। বুবলীর কথা রাহাত কানে তুলছে কিনা বুবলী তা বুঝতে পারছে না। রাহাত আর বুবলী দুজনে পাশাপাশি বসে আছে, এতে যেন বুবলীর মনে অন্যরকম এক ভাললাগা কাজ করছে। এতটা কাছে এমন রাতের নির্জনতায় রাহাতের সাথে কোনদিন তার সময় কাটবে সে তা কোনদিনই ভাবে নি।যদিও সে ছোটবেলায় কল্পনায় রাহাতকে নিয়ে সে অনেককিছুই ভেবেছিলো। ইশারা ইঙ্গিতে তা বুঝিয়েও ছিলো। কিন্তু তখন রাহাতদের পরিবারে এক দুঃসময় চলছিল।রাহাতের বাবার মৃত্যু তাদেরকে হঠাৎই দারিদ্র্যের মাঝে ফেলে দিয়েছিল। বুবলী তার মায়ের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সেই দুঃসময়ে রাহাতের পাশে দাঁড়াতে পারেনি।তাদের স্বচ্ছল পরিবারের পক্ষ থেকে এতটুকুও সহযোগিতা করতে পারেনি।কিন্তু তবুও আজো রাহাতের প্রতি বুবলীর সুপ্ত ভালোবাসাটা তা জানান দিয়ে যায়। যদিও আজ রাহাতদের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে আর সেই সাথে রাহাতও কেমন যেন বদলে গেছে। আর তার জীবনেও পাভেল এসেছে । তাকে ভালবাসার কথা জানিয়েছে। তবে বুবলী তাকে ফিরিয়ে দেয়নি।বুবলী জানে কেউ যখন কাউকে ভালোবাসার কথা জানায় মনের কতটা গভীর থেকে তা জানায় আর তার সাড়া না মিললে মনটা কতটা ভেঙে চুড়ে যায়। তাইতো বুবলী পাভেলকে ফিরিয়ে দেয়নি।পাভেল যেন তাকে পেয়ে জীবনের পূর্ণতা পায় বুবলীর সেটাই চাওয়া।তাইতো বুবলীর আঙুলে পাভেলের মায়ের পরিয়ে দেয়া আংটিতে সে ভালবাসার বন্ধন ধরে রেখেছে। বুবলী আর পাভেল ওরা সহপাঠী । মাস্টার্স শেষ হলেই ওদের বিয়ে। তবে আজ রাহাত ভাইয়ার এত কাছাকাছি এসে শায়লা যেন তার সেই অতীতেই বারবার ফিরে যাচ্ছে।
শায়লার প্রতি এমন একটা ভুল করে রাহাত বুবলীর কাছে সান্ত্বনা খুঁজে ফিরছে । এক সময় সে কান্নায় ভেঙে পড়ে।যদিও রাহাত ভাবছে তার এই নির্ভরতায় বুবলী আবার অন্য মানে করছে কিনা। তাহলেতো আবার অন্য কোন ভুল বুঝাবুঝি হতে পারে। কিন্ত রাহাত নিজেকে কিছুতেই প্রবোধ দিতে পারছে না। একসময় সে ভীষণ আপ্লুত হয়ে বুবলীর হাতে হাত রাখে। বুবলী চমকে উঠে ! তবে এটা যে রাহাত তার অবচেতন মনেই করেছে বুবলী তা বুঝতে পারে। বুবলীর এক কাজিন রাহাতের কলীগ।তার কাছ থেকেই বুবলী জেনেছে,রাহাত তার অফিস কলীগ একটি মেয়ের সাথে ভীষণ ভাবে ইনভলভড।হয়তো তারা বিয়ে করবে।মেয়েটির নাম দিহান। বুবলী সবটা জেনেই রাহাতের প্রতি তার দূর্বলতাটাকে মন থেকে সরিয়ে ফেলতে চাইছে। রাহাত তখনো বুবলী থেকে হাত ছাড়িয়ে নিচ্ছে না। এতরাতে ছাদে দুজনে একাকী হাত ধরে বসে থাকাটা কেউ দেখে ফেললে ভীষণ একটা হৈচৈ পড়ে যাবে। বুবলী হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,চলো রাহাত ভাইয়া আমরা ওখানে ছাদের কিনারার দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে গল্প করি। রাহাতের যেন সম্বিৎ ফিরে এলো ! সে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে একটু দূরত্ব করে দাঁড়ালো।এরপর দুজনে হেঁটে হেঁটে ছাদের কিনারায় গেলো। দোতালার ছাদ থেকে বাসার সামনের রাস্তার বাতিতে সবই দিনের আলোর মত ঝকঝক করছিলো। রাহাতদের বাড়ির বিপরীতে "স্বপ্নবাড়ি" এপার্টমেন্টে র সামনেই একটা লাইটপোস্টে র বাতিতে বাড়ির সামনে আলোর বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎই রাহাত দেখলো, বাইকে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে শিহাব মোবাইল দেখছে !
শিহাব তার মোবাইল হাতে নিলো। সে অনেকক্ষণ পরে তার মোবাইল চেক করছিলো, সে ভীষণ অবাক হলো ! তার মোবাইলে সন্ধ্যা থেকে রাহাতের পাঁচটি মিসড কল আর শায়লার তিনটি মিসড কল। কেন ওদের এত কল শিহাব বুঝতে পারছে না। তার মনে নানান ভাবনার উঁকি দিচ্ছে। তবে কি ওদের পরিবারে কিছু ঘটেছে ? তা জানতে এত রাতে কল দেয়া কি ঠিক হবে ?
শিহাবকে বাসার সামনে দেখে রাহাত আর এক মূহুর্তও দেরী না করে বাতাসের বেগে নিচে রাস্তায় নেমে এলো। বুবলী রাহাতের এমন কান্ডে অবাকের চেয়েও আরো বেশী কিছু হয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে রইল।
চলবে....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much