পথ
সবাই যেমন মেপে পা চালায়
আমি তেমন কোনও ছন্দ শিখতে পারিনি ;
পারিনি ব'লেই আমার সঙ্গে আর পাঁচজনের মেলে না;
মেলে নি ব'লেই তো আমি অন্যদের থেকে একটু আলাদা ;
আলাদা বলতে তেমন কিছুই নয়--
তাদের মতই চোখ, নাক-কান; এমনকি মাথাটাও অনেকটা এক
আবার গায়ের রংটাও কারও কারও সঙ্গে হুবহু মিলে যায়!
আবার অদ্ভুত হলেও সত্যি যে অনেকের মতই কবিতা লিখি;
জীবনানন্দ পড়ি; রবীন্দ্রসংগীত, মেঘমল্লার শুনি
খুব হাসিতে লুটিয়ে পড়ি, আবার ভীষণ কান্না পেলে কেঁদেও ফেলি;সবার অলক্ষ্যে!
অলক্ষ্যে বলতে তুমি লক্ষ্য করনি তাই --
আসলে এগুলো তো লক্ষ্য করার মতো কিছুই নয়
যাকগে, আলাদা কেন সেটাই এখনও বলিনি তাই তো?
তোমাদের সঙ্গে চলতে চলতেই হঠাৎ আমি উল্টো দিকে হাঁটি
বেরসিকের মতো এলোপাথাড়ি ছুটতেই থাকি
কখনও ভীষণ একগুঁয়ে, বড্ড জেদি
তখনই তোমাদের, বিশেষত তোমাকে আমার নিজের পথে চালাতে চেষ্টা করি;
এখানেই ঘটে বিপত্তি।
বিপত্তি ঘটেই চলেছে। চলেছে বলেই এতবার তোমাদের সঙ্গে গোলযোগ বাঁধে;
যেকারণেই আমাকে নিয়ে তোমাদের এত এত অভিযোগ; এমনকি আত্মিক বিয়োগ!
শুধু কী অভিযোগ?
কত রাগ, তীব্র ঘৃণা, গালাগাল শুনতে হয় আমাকে!
এত ভর্ৎসনায় এতটুকু দমি না আমি
আর দমে যাই না বলেই
আবারও নতুন করে স্বপ্ন দেখি
সে স্বপ্নে বাসা বাঁধে সংসারে হোঁচট খাওয়া কিছু উন্মাদ;
যেখানে অবাধে মিলেমিশে এক হয় লালন সাঁইয়ের মাটির হাঁড়ি;
স্বপ্নের উঠোনজুড়ে সূর্যটা রোজ বনবন ঘোরে
ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যায় চাঁদ এসে উপচে পড়ে ঘরের বারান্দায়
অথচ তুমি সেই বারান্দায় দু'দন্ড ব'সে আজও
ভেজা স্বপ্নগুলোর গল্পই শোননি!
শোননি বলেই না এত গোলমাল হচ্ছে
গোলমেলে দেখাচ্ছে সূর্যের রং এখনও লাল নাকি খয়েরি, ফিঁকে!
গোলমেলে দেখাচ্ছে চাঁদের আদল ঠিক কার সঙ্গে মেলে!
আমি এসব দ্বান্দ্বিক সভা উপেক্ষাই করি
উপেক্ষা করি আমাকে ঘিরে তোমাদের যত সংশয়! ঘৃণা, বিদ্বেষ কিংবা আক্রোশ।
বারবার তবু তোমাদের নিয়েই স্বপ্ন দেখি। বিশেষত তোমার কাছেই বারবার আশ্রয় চেয়ে উপশম খুঁজি।
খুঁজতেই থাকি, হাতড়াই, হোঁচট খাই!
তবু পথ মেলে না কিছুতেই!