১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সৌরভ তালুকদার

যদি বৃষ্টি হতাম

যদি বৃষ্টি হতাম!
কি করতি বৃষ্টি হলে?
আমার দুঃখে জল হয়ে ঝড়তি?
আমার দু নয়ন বেয়ে?
না রে পাগলি...
যদি বৃষ্টি হতাম,
সাদা আকাশের ধবধবে মেঘ হতাম;
তবে তোকে হাত না লাগিয়েই ছুয়ে নিতাম,
তোর ওই গাল গুলোকে বসন্তের রঙে রাঙ্গিয়ে দিতাম,
তোর দুঃখ আমার গায়ে মেখে নিতাম।
পলাশের বনে যখন তুই প্রজাপতি কুড়োতে যেতি;
সেখানে আমি ঘাসের শিশির হতাম।
তোর পায়ের নুপুর হতাম।
ইস আর বলিস না,
ঘাসেরা রাগ করতো না বুঝি?
তারা রাগ করবে কেন?
তারাও যে প্রেমে কাতর,
তোর পাশে আমাকে দেখার জন্য কাতর,
তারা রাগ করবে না।
তাই বুঝি, তবে সেই প্রজাপতিরা
তারা যে তোর স্পশে হারিয়ে যেত
না রে পাগলি, সে ও যে ভালোবাসার প্রতিক,
আমি ভালোবাসা পাবার জন্যই তো বৃষ্টি হতাম।
তোর পায়ের নুপুর হতাম।
সাদা আকাশের মেঘ হতাম।



সৌরভ ব্যাটবল

যখন দূর্বা লাল

আলটপকা স্বভাব সাথে সৌজন্যের অভাব
তার বাড়ির যত দূর্বা সবই লাল,
রাতের তারা গোনে, স্বাধীন রংচটা রিংটোনে,
বুকসেল্ফে জমায় রঙিন সাতসকাল।

মন ভরায় অক্সিজেনে, যখন দুঃখগুলো কেনে,
রোজ রাস্তা থেকে কুড়োয় ভালোবাসা,
ভেজা বাতাস নিয়ে খেলে, সে যে রঙ চেনেনা জলের,
তার পকেট ভর্তি ঘুর্ণি সর্বনাশা।

রোজ দেওয়ালে পেরেকে, নতুন ফুল ফোটাতে শেখে,
তার হাতের রেখায় লাট্টু অমিতাভ,
এই জংধরা পৃথিবীর যখন জল ঝরানোর জিগির
তার বৃষ্টি ভিজে মরচে হবার খোয়াব।

তাই বৃষ্টিদিনের শেষে যখন প্রত্যেকে অভ্যেসে
ভেজা বর্ষাতিতে গুছিয়ে নিচ্ছে কাল,
সব পাগলাটে ইচ্ছেরা, খোঁজে রাস্তা বাড়ি ফেরার,
শুধু দূর্বাগুলো একইরকম লাল।

সায়ন্তনী ধর

একটা অন্য মেয়ের গল্প

সত্যবাদী হতে চেয়েছিলাম আমি,নারীবাদী নয়,
সত্যিকথা বলতে চেয়েছিলাম, সব সময়ের জন্য
আমি যে স্বাদ পেয়েছিলাম সত্যের,
তোমরা যারা মিথ্যে কথা বল,
সাজিয়ে ফেল নিজের দুনিয়াটা মিথ্যে দিয়ে
তারা জানো, মিথ্যে বলাটা ঠিক কতটা কষ্টের,কতটা রং মাখিয়ে বললে মিথ্যেটা সত্যির মত লাগে,
আর তাইই আমি হয়ে চেয়েছিলাম সত্যবাদী।
এই সত্যি কথা বলার অভ্যেসটা মায়ের সাথেই থাকতে তৈরি হয়েছিল আমার,
মা বলত আমি শুনতাম,আর তৈরি করছিলাম নিজের সেই ক্ষমতা,
ঘরে-বাইরে আমাকে নিয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে মা –কে,
হয়ত আমার একটা দিদি আছে বলেই আমাকে নিয়ে এত সংশয় ।।
খুব ঘটা করে লক্ষ্মী পুজো হত,আমাদের বাড়ীতে
কিন্তু মা ছাড়া আর সকলের উপরেই বোধ হয় এই লক্ষ্মী-ই ভারী হয়ে গেল,
তাই আমি মেয়ে জেনে বাবা মা-কে সত্যিটা সাহস করে বলতে পারল না,
আমি মরে যাওয়ার আগে মায়ের পেটেই মেরে দিল আমায়
বলল- আমি নাকি আগেই মরে গেছি, সত্যি বললে যে আরো একটা লক্ষ্মী এসে যেত
কিন্তু আমি বেঁচেছিলাম বিশ্বাস কর,আমি নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম মায়ের সাথেই
ওই ডাক্তারটা কুচি কুচি করে ফেলল আমায়,
কিন্তু সেদিন মা জানত সত্যিটা,আমি মরিনি ,
আমি মেয়েছিলাম তাই-ই আমাকে মরার আগেই মরতে হল
আজও আমি ওদের দেখি, সবাই ভালই আছে নিজের খুশীতে মিথ্যের চাদরে নিজেদের ঢেকে
শুধু মা ভাল নেই,
কিন্তু মা, আমি ভুলিনি তোমার শিক্ষা -
“যে সত্যির নিজেই নিজের রঙে রঙিন, ওর আলাদা করে কোন রঙ লাগে না
সত্যির স্বাদ শুধু তারাই জানে যারা এটাকে উপলব্ধি করে”
কিন্তু মা এই সত্যির জন্যই যে শেষ অবধি আমার আর শেষ রক্ষা হল না।