আসলে ফেরার কোন ডেট ছিলোনা
আমাদের সঙ্গে একটা মানুষ এসেছিল তুমি জানো বাবা ?
বাবা উত্তর করে, কই না তো !
সেকি ! তুমি দেখোনি ?
কই না তো !
তাহলে আর কিছু বলবার নেই। আমি মা দিদা দাদা সকলেই তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে এসে গিয়েছি বাড়ি । কখন যে এসে পড়েছি বুঝতেই পারিনি। কি আশ্চর্য বলো!
হ্যাঁ তা ঠিক ! কিন্তু আমি দেখতে পেলাম না কেন ? আমি কি তোদের সঙ্গে ছিলাম না ?
না ছিলে না! তুমি তো সারাক্ষন ফোন নিয়ে ব্যস্তই ছিলে ! ভদ্রজন কতবার তোমায় বল এই যে শুনছেন স্যার ! শুনছেন স্যার! তুমি তো শুধু তাকে হাত দেখালে মাত্র।
সে কি ! কখন?
ওই তো, যখন তিনি তোমাকে ডাকছিলেন। উনি না থাকলে আমরা যে কোথায় থাকতাম কে জানে !
মানে ?
মানে আর কি তোমার মাথায় তো কিছুই ঢোকে না। শুধু ফোন ফোন ফোন ! উফ পারিনা বাপু !
৬ বছরের ছেলেটার কথা শুনে বাবা হু হু করে হাসতে হাসতে চলে গেলো ঘরের বেডরুমে। কিন্তু মাথা থেকে কিছুতেই তার খেয়ালটি পালিয়ে গেলো না। ঘরে ঢুকেই ল্যাপটপ খুলে দেখতে শুরু করল যে তাদের ফেরার ডেট কবে ছিল। আসলে তার মাথা থেকে সব হারিয়ে গিয়ে ছিল। বাচ্চা ছেলে হলে কি হবে ! সে এমন ভাবে বলে গেল কেন ? নিশ্চয় এর কোন কারণ আছেই আছে। ভাবতে ভাবতে অনলাইনে খুঁজতে থাকে তাদের টিকিটের ডেট। কিছুতেই তার ল্যাপটপে খুঁজে পাইনা। টকিটটি মেইল এ চেক করতে গিয়ে দেখছে সেখানেও কেমন যেন আবছা। বুঁদ হয়ে কি যেন ভাবতে থাকে সে....
২
ত্রিপা স্নান সেরে বাথরুম থেকে ঘরে ঢুকেই দেখে দুৰ্লক চিন্তিত অবস্থায়ই বসে আছে। পাশে এক কাপ গরম চা কখন কে দিয়ে গেছ তাও জানে না। চা ঠান্ডা হয়ে জল হয়ে গেছে। ত্রিপা মাথায় তোয়ালে দিয়ে চুল ঘষতে ঘষতে জানতে চাইলো - আচ্ছা বলতো তোমার কি হয়েছে ? কয়েকদিন ধরে তোমায় একটু অন্য্ রকম দেখছি। পূজার ছুটি শেষ এবার পরশু থেকে আবার অফিস টু বাড়ি বাড়ি টু অফিস। মানে অফিসের কাজ শুরু। আর এখন তুমি কেমন যেন কবিদের মত্ উদাস হয়ে বসে।
দুৰ্লক ত্রিপার কথায় বুঝতে পারল সে আসলে সত্যিই উদাস হয়ে গেছে। অথচ সে কোনদিনও কবিতা কি একটি ছড়াও লেখেনি। তবুও তাকে কবিদের মতো লাগছে। কি আশ্চর্য এই ভুবন !