ঘরের ভিতর থেকে কবি ধরেছেন দৃশ্যকথা গদ্যের ভাষায় ধারাবাহিক ভাবেই প্রকাশিত হয়ে চলেছে তাঁর অসাধারন সৃষ্টি। লিখতে সহোযোগিতা করুন লাইক ও কমেন্ট করে । পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল পাঠক পাঠিকা লেখক লেখিকা সকলের জন্য রইলো অনন্ত শুভেচ্ছা
সহধর্মিণীর হুঁশিয়ারী বার্তা
(৭ম পর্ব)
মনের কথা নিজের মনের গহীনে রাখলে অপরে জানবে কি করে? অনেকে বাক্যহীনভাবে আজীবন কাটিয়ে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। আবার অনেকেই বক্তব্যের ফুলঝুরি আওড়াতে আওড়াতে অনেক সময় পাগলের প্রলাপ বকতে থাকে। মধ্যম পন্থাটাই কিন্তু বাস্তবে শ্রেয়। তবে স্বল্প কথায় বা অল্প শব্দে অধিক প্রকাশের মাধ্যমে ভাল লেখকের পরিচয় পাওয়া যায়।
ইদানিং সহধর্মিণী আমাকে প্রয়োজনের চেয়ে অধিক কথা বলার ব্যাপারে প্রায়শই সতর্ক করেন। মানুষ মধ্য বয়স কিংবা তার একটু বেশী বয়স পেরোলে নিজেকে জ্ঞানী ভাবে হয়তবা আমার ক্ষেত্রেও তা হয়। তবে বিষয়টি আমি পজিটিভভাবে গ্রহণ করে নিজেকে এ বিষয়ে বেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আসলে কোন মানুষই নিজের ভুলটি সহজে ঠাহর করতে পারে না।
সহধর্মিণী ধর্মপালণেও অনেক সুক্ষ তাই ধর্মকর্ম করার প্রক্রিয়ায় তিনি আমাকে প্রায়ই টোকাই করেন, ভুল ধরে শুধরিয়ে দেন। প্রথম প্রথম নিজেকে সবজান্তা ভেবে তাঁর দ্বারা আমাকে এমন ভুল ধরাটা মোটেই পছন্দ করতাম না। কালক্রমে ধৈর্যের পরিধিটা অনেক বেড়েছে তাই সবজান্তা শমসের ভাবটি এখন আমার মন থেকে দূর হয়ে গেছে।
সহধর্মিণীর উপর এখন এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যে, ডাক্তার সাহেব দীর্ঘকালীন কোন ঔষধ খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিলে সে ঔষধের নাম মনে রাখার দায়িত্বটা কালের প্রবাহে তা সহধর্মিণীর কাঁধে যেয়ে বর্তিয়েছে। অবশ্য তিনি বিয়ের শুরু থেকে এ বিষয়ে বেশ মনোযোগী এবং সহধর্মিণীর যে এ বিষয়ে স্বতন্ত্র একটা আগ্রহ জন্মেছে সেটা তাঁর আচরণেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
তিনি নিজে দূর্বলসিংহ বা তালপাতার সেপাই হলেও গৃহকর্তা ও ছেলেমেয়ের রাত জাগার ব্যাপারে তার হুঁশিয়ারী বার্তা বেশ কড়া। দারুনভাবে লক্ষণীয় যে, তিনি নিজে কোনসময় কোন জিনিস যেমনঃ দামী কাপড় চোপড় কিংবা সোনা গহনা কেনার ব্যাপারে কোনসময় কাউকেই বলেন না বা ইচ্ছে পোষণও করেন না। অতিশয় সাধারণ একজন মানবী জিনিস শুধুমাত্র স্বামী, সংসার আর ছেলেমেয়ে বলতে একদম পাগল।
কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলানো কিংবা কারো ব্যাপারে নিন্দা কিংবা গীবত করা স্বভাব তাঁর চরিত্রে একেবারেই যেন নেই। নিজের যা সীমিত কিছু সম্পদ আছে তার থেকে গরীব দুঃখীদেরকে দান খয়রাত করার ব্যাপারে আমি বেশ অনুপ্রেরণা পেয়েছি সহধর্মিণীর কাছ থেকেই।
ভাল খারাপ গুণ নিয়েই মানুষ। অামরা কেউ ভাল বা খারাপের উর্ধে নই। তবে যে মানুষ তার নিজের দোষত্রুটিটি সত্বর বুঝতে পারে বা অনুধাবন করতে পারে সে নিশ্চয় একজন ভাল মানুষ। সহধর্মিণীর হুঁশিয়ারী বার্তা হোক সেটা নিজের জন্য কিংবা পরিবারের সার্বিক কল্যাণের জন্য সেটা সব সময়ই আমি পজিটিভভাবে দেখি ও তাঁর পরামর্শ মোতাবেক সদা চলার আপ্রাণ চেষ্টা করি। আসলে একজন সহধর্মিণী সংসারের চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে থাকেন।
ক্রমশ