২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

মোঃহা‌বিবুর রহমান এ‌র লেখা "সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা"৭

ঘরের ভিতর থেকে কবি ধরেছেন দৃশ্যকথা গদ্যের ভাষায় ধারাবাহিক ভাবেই প্রকাশিত হয়ে চলেছে তাঁর অসাধারন সৃষ্টি। লিখতে সহোযোগিতা করুন লাইক ও কমেন্ট করে । পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল পাঠক পাঠিকা লেখক লেখিকা সকলের জন্য রইলো অনন্ত শুভেচ্ছা




সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা 
                                                              (ম পর্ব)
 

ম‌নের কথা নি‌জের ম‌নের গহী‌নে রাখ‌লে অপ‌রে জান‌বে কি ক‌রে? অ‌নে‌কে বাক‌্যহীনভা‌বে আজীবন কা‌টি‌য়ে দি‌য়ে পরপারে পা‌ড়ি জমান। আবার অ‌নে‌কেই বক্ত‌ব্যের ফুলঝু‌রি আওড়া‌তে আওড়া‌তে অ‌নেক সময় পাগ‌লের প্রলাপ বক‌তে থা‌কে। মধ‌্যম পন্থাটাই কিন্তু বাস্ত‌বে শ্রেয়। ত‌বে স্বল্প কথায় বা অল্প শ‌ব্দে অ‌ধিক প্রকাশের মাধ‌্যমে ভাল লেখ‌কের প‌রিচয় পাওয়া যায়।

ইদা‌নিং সহধ‌র্মিণী আমা‌কে প্রয়োজ‌নের চে‌য়ে অ‌ধিক কথা বল‌ার ব‌্যাপা‌রে প্রায়শই সতর্ক ক‌রেন। মানুষ মধ‌্য বয়স কিংবা তার একটু বেশী বয়স পে‌রো‌লে নি‌জে‌কে জ্ঞানী ভা‌বে হয়তবা আমার ক্ষে‌ত্রেও তা হয়। ত‌বে বিষয়‌টি আ‌মি প‌জি‌টিভভা‌বে গ্রহণ ক‌রে নিজে‌কে এ বিষ‌য়ে বেশ নিয়ন্ত্রণ কর‌তে পে‌রে‌ছি। আস‌লে কোন মানুষই নি‌জের ভুল‌টি সহ‌জে ঠাহর কর‌তে পা‌রে না। 

সহধ‌র্মিণী ধর্মপাল‌ণেও অ‌নেক সুক্ষ তাই ধর্মকর্ম করার প্রক্রিয়ায় তি‌নি আমা‌কে প্রায়ই টোকাই ক‌রেন, ভুল ধ‌রে শুধ‌রি‌য়ে দেন। প্রথম প্রথম নি‌জে‌কে সবজান্তা ভে‌বে তাঁর দ্বারা আমা‌কে এমন ভুল ধরাটা মো‌টেই পছন্দ করতাম না। কা‌লক্রমে ধৈ‌র্যের প‌রি‌ধিটা অ‌নেক বে‌ড়ে‌ছে তাই সবজান্তা শম‌সের ভাব‌টি এখন আমার মন থে‌কে দূর হ‌য়ে গে‌ছে। 

সহধ‌র্মিণীর উপর এখন এতটাই নির্ভরশীল হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছি যে, ডাক্তা‌র সা‌হেব দীর্ঘকা‌লীন কোন ঔষধ খাওয়ার জন‌্য ‌পরামর্শ দি‌লে সে ঔষ‌ধের নাম ম‌নে রাখার দা‌য়িত্বটা কা‌লের প্রবা‌হে তা সহধ‌র্মিণীর কাঁ‌ধে যে‌য়ে ব‌র্তিয়ে‌ছে। অবশ‌্য তি‌নি বি‌য়ের শুরু থে‌কে এ বিষ‌য়ে বেশ ম‌নো‌যোগী এবং সহধ‌র্মিণীর ‌যে এ বিষ‌য়ে স্বতন্ত্র একটা আগ্রহ জ‌ন্মে‌ছে সেটা তাঁর আচর‌ণেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।

তি‌নি নি‌জে দূর্বল‌সিংহ বা তালপাতার সেপাই হ‌লেও গৃহকর্তা ও ছে‌লে‌মে‌য়ের রাত জাগার ব‌্যাপা‌রে তার হুঁশিয়ারী বার্তা বেশ কড়া। দারুনভা‌বে লক্ষ‌‌ণীয় ‌যে, তি‌নি নি‌জে কোনসময় কোন জি‌নিস যেমনঃ দামী কাপড় চোপড় কিংবা সোনা গহনা কেনার ব‌্যাপা‌রে কোনসময় কাউ‌কেই ব‌লেন না বা ই‌চ্ছে পোষণও ক‌রেন না। অ‌তিশয় সাধারণ একজন মানবী জি‌নিস শুধুমাত্র স্বামী, সংসার আর ছে‌লে‌মে‌য়ে বল‌তে একদম পাগল।

 কারো ব‌্যক্তিগত বিষ‌য়ে নাক গলা‌নো কিংবা কা‌রো ব‌্যাপা‌রে নিন্দা কিংবা গীবত করা স্বভাব তাঁর চ‌রি‌ত্রে এ‌কেবা‌রেই ‌যেন নেই। নি‌জের যা সী‌মিত কিছু সম্পদ আ‌ছে তার থে‌কে গরীব দুঃখী‌দের‌কে দান খয়রাত করার ব‌্যাপা‌রে আ‌মি বেশ অনু‌প্রেরণা পে‌য়ে‌ছি সহধ‌র্মিণীর কাছ থে‌কেই। 

ভাল খারাপ গুণ নি‌য়েই মানুষ। অামরা কেউ ভাল বা খারা‌পের উ‌র্ধে নই। ত‌বে যে মানুষ তার নি‌জের দোষত্রু‌টি‌টি সত্বর বুঝ‌তে পা‌রে বা অনুধাবন কর‌তে পা‌রে সে নিশ্চয় একজন ভাল মানুষ। সহধ‌র্মিণীর হুঁ‌শিয়ারী বার্তা‌ হোক সেটা নি‌জের জন‌্য কিংবা প‌রিবা‌রের সা‌র্বিক কল‌্যা‌ণের জন‌্য সেটা সব সময়ই আ‌মি প‌জি‌টিভভা‌বে দে‌খি ও তাঁর পরামর্শ মোতা‌বেক সদা চলার আপ্রাণ চেষ্টা ক‌রি। আস‌লে একজন সহধ‌র্মিণী সংসা‌রের চা‌লিকা শ‌ক্তি হি‌সে‌বে কাজ ক‌রে থা‌কেন।


ক্রমশ

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"১২

অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করবার মতো আকর্ষণীয়  মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন" পড়ুন ও অপরকে পড়তে সহযোগিতা করুন 




                     টানাপোড়েন (পর্ব ১২)

                               কষ্ট


                                   সারারাত রেখা দু'চোখের পাতা এক করতে পারে নি। ভোরের দিকে একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন এসেছে। ঠিক তখনই ফোনে একটা ম্যাসেজ ঢুকলো,। সেই আওয়াজে ফোনটা সঙ্গে সঙ্গে বালিশের কাছ থেকে তুলে নিয়ে দেখল। গ্রুপে মেসেজ ঢুকেছে। চোখটা রোগরে নিয়ে  দেখল। আরে সাংঘাতিক ব্যাপার।
একদিক আনন্দের দিন  -এই কারণেই 26 শে সেপ্টেম্বর 'বাংলা গদ্য সাহিত্যের জনক এবং নারী শিক্ষার মূল কান্ডারী ,বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের ঋত্বিক পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় 'এর জন্মদিন । তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য বিদ্যালয় এর তরফ থেকে ক্ষুদ্র আয়োজনের দায়িত্ব রেখার উপর পড়েছে। অন্যদিকে আরেকটি মেসেজ ঢুকেছে রিম্পদির ট্রান্সফারের রেকমেন্ডেশন এর।কালচারাল ফাংশন এর দায়িত্ব রেখার উপর বরাবরের জন্য পড়ে ,সঙ্গে রিম্পাদি ,পায়েল ,অনুরাধা সকলে সহযোগিতা করে। রিম্পাদির সঙ্গে রেখার জীবনটা এতটাই জড়িয়ে আছে যে ,‌রেখা এই মেসেজটা মন থেকে মানতে পারছে না। ভীষণ কষ্ট হচ্ছে ।তবুও ভাবছে রিম্পাদি এতদূর যাতায়াত করে ট্রান্সফার এর প্রয়োজন আছে ।কিন্তু রিম্পাদিকে যে এত সব কথা শেয়ার করে ,কখনো কখনো রেখার জীবনের পরামর্শদাত্রী হয়ে উঠেছে। সেখানে রেখা ভাবতেই পারছে না রিম্পাদি আর রেখার পাশের চেয়ারে বসবে না আর কখনও আদর করে গিয়ে বলবে না  'আয় তোর মাথাটা টিপে দি ,চা খা ফ্রেশ লাগবে,কখনো বলবে না তোর মনটা কি খারাপ ?আমাকে বল দেখ জলের মতো সব সহজ করে দেবো। জীবনের ঘটে যাওয়া দিনটির কথা গত রাতে যেভাবে মনে অনুরণন তুলেছিল।আজকে স্মরণ করতে পারছে না ।আজ তার হৃদয়ে বিদ্যালয়ে কিভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দায়িত্বটা যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করবে ,সেই দিকটার প্রতি তার ধ্যান ।অন্যদিকে রিম্পাদির‌ চলে যাবার মেসেজ তার জীবনে এনেছে এক দুঃসহনীয় কষ্ট ।রেখা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না ,তার কি করা উচিত ?রেখা আজকের সকালে কোন কাজে মন দিতে পারল না । রিম্পাদিকে ফোনে মেসেজ করতে পারলো না। রেখা সকাল থেকে কোনো রকমে যেটুকু কাজ না করলে নয় ,সেটুকু করে নিয়ে তাড়াতাড়ি স্কুলের জন্য বেরিয়ে গেল । ওদিকে কাজের মেয়েটির খবর নেওয়া সম্ভব হয় নি। স্কুলে গিয়ে রিম্পাদি দেখছে গেটের কাছে একগাল হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু সেই হাসির ভেতরে ছিল মলিনতা ,ছেড়ে চলে যাওয়ার কষ্ট । আসলে এতদিন ধরে তো একটা আত্মিক বন্ধনে আবদ্ধ ছিল । রেখা রিম্পাদিকে দেখার পর গেটেই জড়িয়ে ধরল ,ছাত্রীরা কোথায় ? সেদিকে কোথাও তার নজর নেই আর ঝর ঝর করে চোখ থেকে জল পড়তে লাগল ।রিম্পাদিও কেঁদে ফেলল। 
রিম্পাদি বললো  'দেখ ,যেতে তো আমাকে হতোই ।মেয়েটাকে একটু সময় দিতে পারি না ।তোর দাদাও অফিসে চলে যায় ।আমি সারাটা সময় এখানে পড়ে থাকি ।মেয়েটাএখন উঁচু ক্লাসে উঠছে বুঝতেই পারছিস ।কিন্তু এত দ্রুত যে ট্রানস্ফারটা হবে এটা আমিও কল্পনা করতে পারি নি । দীর্ঘদিনের এই বিদ্যালয়ে কাজ করা (তাকে), অন্যান্য কলিগ এবং এবং স্নেহের ছাত্রীরা, সঙ্গে তোকে ছেড়ে যাবার কষ্ট ,যন্ত্রণা প্রতিক্ষণে  অনুভব করছি ।এই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কালচারাল অনুষ্ঠান ,ক্লাস,বিভিন্ন ধরনের কম্পিটিটিভ পরীক্ষার ডিউটি দেয়া , টিফিন আওয়ার্স, অফ টাইম,তার ফাঁকে দুজনার গল্পগুজব ,কখনো এই ফাঁকেই আধ ঘন্টা সময়ের জন্য ব্রেক, বেরিয়ে পড়া,মারকেটিং ,কত মজা, আড্ডা ,সাংসারিক নানা দুঃখকষ্ট শেয়ার ।নতুন স্কুলে গিয়ে মানিয়ে নিতে একটু অসুবিধা হবে ।কিন্তু রেখা তোকে আমি বলি মনের টানটা কোনদিনও শেষ হবে না ।মনের মন্দিরে এই টান সব সময চিরভাস্বর হয়ে থাকবে ।আর পারিবারিক বন্ধন তো আমাদের তৈরি হয়েই গেছে । মাঝে মাঝে আমার বাড়িতে চলে আসবি ।আমিও তোর বাড়িতে আসব ।শত ব্যস্ততায় অন্তত একদিন যেন আমরা পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে কথা বলা ,অন্তত মেসেজ করে জানা-এই ব্যাপারগুলো যেন আমরা রাখতে পারি ।এটা ধরে রাখিস। নে, চোখের জল মোছ।চল আজকে আমাদের নারী শিক্ষার অগ্রগতির ঋত্বিক ,আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের অনুষ্ঠান খুব সুন্দরভাবে পালন করি ।
রেখা বলল,'আমি আজকে কিভাবে সঞ্চালনা করব রিম্পাদি ।আমার কন্ঠ বাকরুদ্ধ, চক্ষু অশ্রুসিক্ত ,হৃদয় বেদনায় ভারাক্রান্ত ,বলো আমি কি করবো?
আমি বড়দিকে বলবো আজকের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে পারবো না।'
রিম্পা দি বলল  'রেখা কখনো এরকম কাজ করতে পারে না। যে মহান আদর্শ পুরুষের জন্য আজকে আমরা এই শিক্ষার আলোতে আসতে পেরেছি এবং আমাদের কর্ম জীবনে আমরা স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি, পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে একটা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছি ,সবই ওনার জন্য ।তাই আমার মত একজন ক্ষুদ্র নারীর জন্য আজকের দিনটাকে অবহেলা করতে পারিস না ।রেখা চল তোকে নতুন উদ্যমে আজকের অনুষ্ঠান খুব সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে হবে। আমি তোর পাশে আছি। রেখাকে রিম্পাদি নিয়ে স্টাফরুমে আসলে ,বড়দি বললেন  'মেইল চেক করতে গিয়ে এই কথাই ভাবছিলেন।কী আর করবে।আসা যাওয়া এটাই তো নিয়ম। তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন স্টেডি হ ও ।' 
এরপর রেখাও অনুষ্ঠানের কাজ করতে গিয়ে দেখে অর্ধেক কাজ গুছিয়ে রেখেছে রিম্পিদি।বিদ্যাসাগর মহাশয় এর প্রতিকৃতি ভালো করে সাজান ,বাকি কাজগুলো রিম্পাদি আগেই করে রেখেছে ।আর যে দায়িত্বটুকু ছিল সেটুকু রেখা বুঝে নিয়ে তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠান শুরু করে দিলো ।বড়দিকে প্রথমে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এর মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা এবং আগুনের পরশমণি গান দিয়ে উদ্বোধনী সংগীতে এই মহতী দিনের তাৎপর্যকে সামনে রেখে পরবর্তী অনুষ্ঠানটি ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করল ।এরপর প্রতিটি শ্রেণীর থেকে এবং শিক্ষিকাদের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য ,মাল্যদানের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হলো ,তারপর বক্তৃতা ,গান এবং বিদ্যাসাগরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য একটা ক্ষুদ্র কুইজের অনুষ্ঠান করা হয়েছিল ।বিদ্যাসাগরের জীবনকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্নোত্তর ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে রাখা হয়েছিল এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ।সমগ্র অনুষ্ঠানটি শেষ হয়ে যাবার পর রেখা আবার কান্নায় ভেঙে পড়ে ।
বড়দি আসলেন ও স্নেহের সুরে বললেন  
'রেখা কাঁদছো কেন ? রিম্পার খুব দরকার ছিল ।এটা তোমাকে বুঝতে হবে ।'
রিম্পাদি বলল  'আমিও তো সে কথাই বলছি দিদি। দূরে সরে গেলেই কি আমরা মন থেকে মুছে যেতে পারি ?তা তো নয় ।আমরা তো পারিবারিক এক মিষ্টি বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছি ।আমরা নিশ্চয়ই পরস্পর পরস্পরের প্রতি সে দায়িত্ব পালন করব ।
রেখা বলছে  'বড়দি আমার মন মেজাজ ভালো নেই ।আমি কিছু ভাবতে পারছি না  ।'
বড়দি বললেন  'দেখো ,তোমাকেও একদিন হয়তো ট্রানস্ফার নিতে হবে? 
এতদিন তুমি ভাবো নি ।এবার ব্যাপারটা নিয়ে ভাবো ।কারণ দেখো তোমার প্রথম ইস্যুটা মিসক্যারেজ হয়ে গেছে ,এতদূর যাতায়াত এটা তো একটা তোমার জীবনে বড় বাঁধা তাই না ?তুমিও এবার ভাবো।'
 সত্যিই রেখা এতদিন ভেবে দেখে নি । মনোজ অনেকবার রেখাকে এটা বোঝাতে চেয়েছে। এমন কি টিপ্পনী পর্যন্ত কেটেছে , 'তুমি কার মোহে এতদূর যাতায়াত করো? '
আসলে রিম্পাদি সঙ্গে এতটা মনের মিল খুঁজে পেয়েছিল। কখনো ভাবতে পারে নি ।রিম্পাদি যখন চলে যাচ্ছে ,এবার হয়তো রেখাও করবে এপ্লাই। যদি পাওয়া যায় কাছেপিঠে। কিন্তু সেই নতুন জায়গায় ,নতুন পরিবেশে নতুন করে সকলকে মানিয়ে নেয়া কি সম্ভব? রিম্পাদি শুধু স্কুলের কলিগ নয় ,একজন পরামর্শদাত্রী, দিদি, বন্ধু । অনুষ্ঠান শেষ করে রেখা স্টাফ রুমে  মাথা নিচু করে বসে থাকল। শুধু মনে হচ্ছে সে সম্পূর্ণ একা ।উত্তাল সমুদ্রে কম্পাস বিহীন যেন একটা দিকভ্রান্ত জাহাজ, সামনে যেন ডুবো পাহাড়।
রিম্পাদি হিম গলায় এসে বলল 'তুই কি পাগল হয়ে গেলি? আমি কি বিদেশ চলে যাচ্ছি?'
রেখা জলভরা চোখে আর ভারাক্রান্ত কন্ঠে বলল  'তা হয়তো নয় কিন্তু আমার থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছ ।ইচ্ছে করলেও আর প্রতিদিনকার মতো আমি তোমাকে স্পর্শ করতে পারবো না ।তোমার বুকে মাথা রেখে হিম শীতল ছায়ায়  শ্বাস নিতে পারব না। স্নেহের হাত ‌দুটিকে মাথায় রেখে আমাকে কে আশ্বাস যোগাবে বলো?-বলেই হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো আর রিম্পাদিকে কাছে টেনে বললো ' তুমি আমার বুকের কাছে কান পেতে শোনো ,দেখো কি রকম কষ্টের ধুকপুকুনি।'


ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"১২ ক্রমশ

জাফর রেজা'র ছোট গল্প "ক্ষণিক বসন্ত " ২য় পর্ব

আজ  থেকে শুরু হলো নতুন ধারাবাহিক লেখক জাফর রেজার ছোট গল্প "ক্ষণিক বসন্ত 



ক্ষণিক বসন্ত
                                ২য় পর্ব 



                               য়তো পারবো। বাসার ঠিকানা দিয়ে বললাম আপনি কাল সকাল ৯ টায় আমার বাসায় চলে আসুন, একসাথে বের হব। ৯ টার একটু আগেই বুলা চলে এল। ঘরে ঠুকেই আমার আগোছালো রুম দেখে বলল আপনি এভাবে থাকেন কিভাবে? বললাম অভ্যাস হয়ে গেছে, তাছারা আমার কোন অসুবিধা হয়না। বুলা কিছু না বলে আমার ঘর গুছাতে লেগে গেল, আমার দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিলনা। আমি বললাম বুলা দেরি হয়ে যাবে চলুন বের হওয়া যাক, আমার কথার উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনার অন্যরুমে কেহ থাকেনা? বললাম থাকে আমার বন্ধু, আজ ওর রাতের সিফটে ডিওটি, তাই ঘুমাচ্ছে। আমি মন্টুর দরজায় ধাক্কা দিতেই সারা দিল, বললাম উঠে আয় একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই, বুলার যদিও আপত্তি ছিল ওর ঘুম ভাঙাতে। পরিচয়ের পালা শেষে আমি রান্না ঘরে গেলাম কফি বানাতে। কয়েকদিন কেটে গেলো।
আমার বন্ধুর ট্রাভেল এজেন্সিতে বুলার কাজ হয়ে গেছে , সাপ্তাহিক বেতন ১৫০ পাউন্ড। আমার ভাল লাগলো যাক এখন ও ভালো ভাবে চলতে পারবে। বুলা ত দারুন খুশি। বলল চলুন আপনাকে কফি খাওয়াবো, বুলা আমার দেরি হয়ে গেছে আমাকে যেতে হবে, অন্য আরেকদিন আপনার কফি খাব। বুলা কাজ করছে,  বন্ধুর কাছে জানলাম ওর কাজে বন্ধু আমার খুশি। প্রতি রাতে বুলা কল করে, কেটে যাচ্ছে সময়, এগিয়ে যাচ্ছে দিন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলিতে আমরা চলে যাই বিভিন্ন জায়গায়, তবে ওর সবচেয়ে পছন্দের জায়গা টেমসের তীর।  একদিন টেমসের পারে হাটছি হঠাৎ  করেই ও বলল এই যে আমরা আজ এই নদীর তীরে  হাটছি।  আমাদের এই একসাথে পথ চলার সাক্ষী  কে জানেন, বললাম না জানিনা, বলল এই যে সীমাহীন আকাশ দেখছেন আর এই নদী , আমরা চিরদিন থাকবনা কিন্ত ওরা থাকবে, ওরাই সাক্ষী  হয়ে থাকবে আমাদের এই পথ চলার। দিন যায় মাস যায় সময় এগিয়ে যায়।  আমার মধ্যে কি যেন কাজ করে, আমি বুলার কলের জন্য অপেক্ষা করি, ওর সাথে দেখা হবার দিন অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকি।  মনের কোথায় যেন কি একটা অনুভব করি। একদিন গিয়েছিলাম হাইড পার্কে। সেদিন জানলাম ও বাঁশি  বাজাতে পারে, বাঁশি  ওর খুব প্রিয়, কিন্ত এখানে এসে বাজাতে পারছেনা, বললাম - বুলা,  বাশি এখানে পাওয়া যায় তবে অনেক দাম। আমি ২/১ সপ্তাহের মধ্যে দেশে যাবো আসার সময় আপনার জন্য বাঁশি  নিয়ে আসবো বুলা অবাক হয়ে বললো আপনি দেশে যাবেন, আমাকে বলেননি তো ! বললাম এই যে বললাম। ও হয়তো কষ্ট  পেয়েছে, বললাম আসলে এখনো টিকেট কেনা হয়নি, তাই বলিনি, ভেবেছি টিকেট নেবার পর বলবো। কতদিন থাকবেন? ৪ সপ্তাহ। ঠিক ৪ সপ্তাহ তো ? বললাম হ্যাঁ । দেখুন ৪ সপ্তাহের বেশি হলে আমি কিন্ত রাগ করবো , বুলে অনেকটা অভিমানী কণ্ঠে  বললো আমি এই ৪ সপ্তাহ থাকবো কিভাবে,  বললাম কাজের মধ্যে সময় কেটে যাবে, তাছাড়া আমিতো দেশ থেকে কল করবো । ও কিছু বললো না।  হটাৎ  করেই ওর সহজাত হাসি খুশি মুখটা মলিন হয়ে গেল। আমারা চুপচাপ হাটছিলাম, হঠাৎ  করেই আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল, আচ্ছা এই যে সমাজ, সমাজ ব্যাবস্থা এইসব তো আমাদেরই গড়া  না কি?  বললাম হ্যাঁ । তবে সমাজ কেন মানুযের সুন্দর স্বপ্নে বাধা হয়ে দাড়ায়। কি উত্তর দেব ওর প্রশ্নের, বললাম চলুন ফেরা যাক। ধরা গলায় বললো আরেকটু থাকিনা।


ধারাবাহিক "ছোট গল্প " ক্রমশ 

শাহনাজ পারভীন




কিছু অনুযোগ


কি নিয়ে কবিতা লিখবো ভেবে পাই না
প্রেম-ভালোবাসা,না মানবিকতা?
অবচেতন মনে প্রশ্ন জাগে
কেন লিখছি কার জন্য লিখছি
আদৌ কোন ভূমিকা কি রাখতে পারবে
কারো মনের আনন্দে সমাজ সংস্কারে?
নবীন কবিদের কবিতার খোঁজে
একাত্মতার বড়ই অভাব
এই যে হৃদয়ের উৎসার এতো প্রচেষ্টা
নতুন আঙ্গিকে খুলবে কি দ্বার?
আস্তে আস্তে হেঁটে যাই পড়ন্ত সূর্য্যের দিকে
মিনিট পনেরো অপেক্ষা
অবশেষে সমস্ত টাই অস্পষ্ট রয়ে যায়!
এরপর দেখি অস্তিত্ব সংকটে ভূপাতিত হবার কিছু উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
কল্পনার বর্ণিল ফানুস হয়ে
ঊষার আকাশে দেখি জাফরানি রঙের মেলা
রংধনু রঙে আঁকা কাব্যের রুপকথা।

রুকসানা রহমান




আমার ভিতর একটা তুমি          


 থাকতো যদিএকটা তুমি
 চিলেকোঠার  জানালাতে শ্রাবণ হয়ে,তোমায় নিয়ে
 ভিজতে, ভিজতে এক পৃথিবীর ধারাস্নানে
 অমরাবতীর মায়ার ঘাটে ঐ -উজানে
রাজহংসীর নায়ের পালে, উড়িয়ে আাচঁল 
সিগ্ধ পাখায়  ঘুচিয়ে দিতাম ক্লান্তি সকল। 

কৃষ্ণাভ ঢেউ চুলের ডগায় ঝুলিয় দিতে  ফিনিস্ক পাখি।
ভেসে যেতাম থইথই সেই জ্যোৎস্নাদ্বীপে  
আলোর সাথে মায়ার খেলায়, সব অভিযোগ যেতাম ভুলে।
কোথায় তুমি, কোথায় তুমি..?

বাহারো ফুল বরষায়ে মেরি শ্বাসো কা হাওয়া
নেহি শুনরাহ্যা ম্যয়নে তড়পাই আপকি বিন ইহ্যাঁ। 
মওসুম কা রূপ বদল যায়ি চান্দ পে আপকি সকল
তব কিউ পাস নেহি আতি।
ইশকা এবাদত কিউ গলদ কাহ্যাঁ ইয়ে দুনিয়া
তব কিউ মরতা হ্যায় ইশকে দিওয়ানি হাররোজ।
আপকি বিন ইহ্যাঁ ক্যায়সে জিউ,ইয়ে জনম
হামারা আখেরি জনম 
কাহ্যাঁ  আপ,কাহ্যা ছুঁপ গায়ি ইশকে সফর
সে দুর...!
তুম জানো ওর না জানো
একটা তুমির দীর্ঘশ্বাসে আমি এখন রৌদ্র বিহীন
আনত এক অভিমানী সূর্যমুখী তপন বিহীন
 তুমি ওকি আমার মতন, বৃষ্টিবিহীন মরুধূলি...?

কে আমাকে বুকের মাঝে সোহাগ করে রাখবে বলো
কি মমতায় যত্ন করে সব ম্লানতা ভুলিয়ে দিবে। 
 একটা তুমির অমরত্মায় কানপেতে যে শুনবো 
তখন অতলস্পর্শে পেলবতার ঐ-হৃদয়ে উথাল-পাথাল 
ভালোবাসার আত্মহারা শাশ্বত সেই অপারধ্বনি। 

যদি থাকতো একটা তুমি
অনাড়ম্বর এই নির্বাসনের নির্জনতায়, বইয়ে দিতে  
 অম্লজানে
সৌরতাপে আবেগবিহীন রাত্রিগুলো উন্মাতালে
 উষ্ণতারই মগ্নশ্বাসে...! 
তৃষ্ণাতুর এই খন্ডপ্রহর যেতাম ভুলে একটা তুমি থাকলে কাছে।

একটা তুমি থাকতে যদি
অনুরাগের ছোঁয়াছুঁয়ির বাহুডোরে জীবনটা এক কাব্য হতো।
মানুুষরুপি ডাহুক গুলো, চায় ভুলাতে মায়ামন্রে
তন্ময়মন খুঁজে তখন একটা তুমি আছো নাকি
 খুব কাছে কি বৃন্দাবনে...?
আমি তখন হতাম রাধা, জল তুলিতে যেতাম যখন
নদীর ঘাটে
বাশিঁর সুরে ডাকতে আমায় আকুল হয়ে।

আজও আমি একটা তুমির আশায় আছি
নিরব-নিথর, ভাবনা নিয়ে উদীয়মান সূর্যতীরে
মরুরবাঁকে একটা তুমি ছায়াবাহু, যায় কি - ছোঁয়া ? 
ঐ -আকাশের তারার মতন, একলা কবি
ডুবে থাকি বিমর্ষতায়।

কেন  আমি দাড়িঁয়ে থাকি, ঐ অলিন্দে চাঁদের আলোয়
, রাতের ভিতর ফিরে দেখা,সেই- একটা তুমি ;
অন্য রকম নীলকাব্য ছায়ার ছায়ায় গভীর মাঠে হারিয়ে যেতাম,
তোমার কাঁধে মাথা রেখে শিশির ঝরা
 নৃত্যরত সমীরণের সুরের দোলায়। 
একটা তুমি ছন্নছাড়া সাথী আমার, তাইকি তোমার
বাধঁনহারা একলা জীবন দিশেহারা।

তবুও কেন  পাইনা আমি, ঐ-আষাঢ়ে নয়ন মেলে
খুজঁতে থাকি সপ্তলোকে আমার কলম লিখতে থাকে
 লিখতে পারে,কেবল শুধু অসামাপ্ত জীবনবোধর
রক্তারক্তি কষ্ট কাহন।

তবু কেন স্বপ্ন দেখি দুঃখের ভিতর একটা তুমি
আমার ভিতর ভ্রমন করো অনায়াসে
তোমার চোখের মায়ার ছায়া হীরকদ্যুতি  হয়ে কেন
গেঁথে  আছো আমার অনামিকায় ! 
এবার বুঝি দেখবো তোমায়, আমার  ভিতর উঠবে জেগে।
তখন তুমি দেখতে পাবে প্রেমময়ী সেই রূপের ভিতর
এই আমিটা সেই জনমের একই আমি।
ঘুম ভেঙে যায়  তাকিয়ে দেখি বিবশ হাতে
শূণ্য আমার অনামিকা।
মন মানেনা, জেগে কেন, স্বপ্ন দেখি 
ভাবনাকে তাই ছড়িয়ে দিলাম, হাওয়ার কানে।

আটকুঠিরের একটা চাবি ভুল করে যে ছিলো পরে
ভাসিয়ে দিলাম সাগর জলে দেখবে তখন
জলতরঙ্গ বলবে ডেকে
লে যাও চাবি খুল য্যায়েগা দিলকা মকান আভি 
 খুলবে যখন   বন্ধ তালা খুঁজবে তখন উদাস আঁখি দিশেহারা প্রেমময়ী ঐ-কুঠিরে
চলছে সেথায় আজও দেখো রুহের সাথে রুহেরখেলা
ফিরে দেখা কক্ষপথে করছি ভ্রমন হৃদ মাঝারে 
একটা আমি-আমার ভিতর একটা তুমি।

সংহিতা রক্ষিত।




ভোকাট্টা সময়
                 

অদ্ভুত সময় হাত ধরতে শেখেনি কারো
শুরুতেই শেষের ঘন্টা বাজিয়ে দেয় 
এযেনো সাপ লুডো,খেলতে খেলতে ------
এক্কেবারে সাপের মুখে, তারপর------
সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক কষতে কষতে ---
জীবনটা ক্লান্ত বড়ো।
স্বপ্নের সিঁড়ি গুলো ভেঙে গেছে কবে।
অঙ্ক মেলে না, জীবনও।
এখন ফাঁকা ময়দানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে 
উদোম আকাশ দেখা।

ডালিয়া মুখার্জী




শুধু স্মৃতি 


তবে তাই হোক,
দুঃখগুলো চিরস্থায়ী হোক,
রঙ তুলি দিয়ে আঁকা তোমাকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন গুলো,
ভিজে যাক, মুছে যাক,
তবে তাই হোক।
আমার ভালোবাসায় 
তুমি হও জীবাশ্ম, 
যখন নতুন পৃথিবী হবে সৃষ্টি 
নতুন প্রজন্ম জানুক,
আমি ভালোবেসেছিলাম তোমাকে,
সব পাওয়ার আড়ালে 
থমকে থাক তুমিহীন শূন্যতা,
কোনো একদিন ডেকো আমায় 
তোমার দেওয়া ডাকনাম ধরে, 
থেকে যাক এইটায় প্রাপ্তি, 
আমার শেষ ঘুম পবে চিরশান্তি, 
তবে তাই হোক। 
কোনো একদিন এ বুকের ক্ষতগুলো ছুঁয়ে যাক তোমার চিবুক,
লেগে থাক তোমার ঠোঁটে হাসি
তবে তাই হোক।

হামিদুল ইসলাম


 

হদিশ 
             
                

স্বপ্নগুলো ভেসে যাচ্ছে নদীর জলে 

কুড়িয়ে আনবার চেষ্টা করছি 

পারছি না কিছুতেই  ।।


এখন পরজীবী ঘুমে আচ্ছন্ন দুচোখ 

স্মৃতির ঘাটে পড়ে থাকে 

মৃত শুকতারা 

কবিতায় আঁকা প্রাচীন শৈশব  ।।


খরস্রোতা জলে কাগজের নৌকো 

ডুবছে জীবন 

ডুবছে মৃত‍্যু 

সাজানো অশ্রুজলে প্রতি মুহূর্তে মৃত‍্যুর কথকতা  ।।


ঢাকের বাদ‍্যি

প্রতিমা বিসর্জন 

প্রতিমাকে খুঁজছি বারবার 

আজও খুঁজি তাকে। হদিশ পাই না তার  ।।

আপেল মাহমুদ




তুমি'ময় বসন্ত
 

বসন্ত এলেই 
মনে পড়ে তোমাকেই 
ওই পলাশ দেখলেই 
মন ভাসে তোমাতেই,
ওই শিমুলের রঙে
আমি যেন হারাই
তোমার'ই সঙ্গে,
কৃষ্ণচুড়া বৈকালী মেলা
ঠিক যেন বাসন্তীর খেলা,
এ খেলা শুধুই খেলা নয়
রঙে রুপে এ যেন 
ফাগুনের পুর্ন বারতা... 

তোমার মাতাল হাওয়ায়
মন হারানোর সুখে আমি যেন
বার বার শত সহস্রবার 
তোমাতেই হারাই.... 

শুধু তোমার মত করে
সত্য লুকোতে পারিনা
মিথ্যের চাদরে...
তাইতো অকোপটেই
বলতে ইচ্ছে করে
হ্যাঁ হ্যাঁ তুমি'ই আমার হাহাকার 
তুমি আমার চিৎকার,
তুমি'ই আমার পুর্নতার.... 

এবার খুশি তো!!! 

আর আমার খুশি আমার হাহাকারে
আমার আনন্দ আমার চিৎকারে 
কেন জানো!!! 
কারন নতুন বসন্তের নতুন নতুন হাওয়ায় 
তোমার মত করে ফুরিয়ে ফেলিনি তোমায়....... 

এ বসন্তেও  তুমি'ই আমার অনন্য 
তুমি'ই আমার অনন্ত 

তুমি'ই আমার নীরব হৃদয়ে
সরব প্রিয় বসন্ত......

T

LOVE

Kkk

LOVE