০৯ ডিসেম্বর ২০২০

পরাণ মাঝি



জয় হোক সব-ই তার

নীল আকাশে কত তারা খসে যায় চোখের পলকে

অষ্টাদশী চাঁদ ডুবে গেলেও ডেকে যায় তেমন ঝলকে।


যাকে ভালোবেসে করি হৃদয় বিনিময় 

ব্যাথাতুর এ ভাঙা হৃদয় --


সেটাই সব চেয়ে বড় সত্য। হোক না পতন তার 

যুগ যুগান্তর ধরে ভাবি জয় যেন হয় সবই তার।


পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন কবি নাসের হোসেন




চলে গেলেন মানুষ কবি নাসের হোসেন


আশি দশকের অন্যতম প্রধান কবি নাসের হোসেন। জন্ম পঞ্চাশ দশকের দ্বিতীয় অর্ধে।কলকাতায়।

শৈশব ও কৈশোর বহরমপুরে। বি.এস.সি।

প্রথম কবিতা প্রকাশ : ১৯৭০

প্রথম যৌথ চিত্রপ্রদর্শনী : ১৯৭৪ কৃষ্ণনাথ কলেজ, বহরমপুর

একক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা : ২১

যৌথ কাব্যগ্রন্থ : ৭

প্রথম একক চিত্রপদর্শনী : ১৯৮৪ বিড়লা একাডেমি, কলকাতা

প্রথম কাব্যগ্রন্থ : অপারেশান থিয়েটার

পত্রিকা সম্পাদনা সহযোগী : রৌঁরব (১৯৭৫-২০০৪)

পত্রিকা সম্পাদনা : কবিতা পাক্ষিক। চার বছর প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এখন পত্রিকাটি নিয়মিতভাবে প্রতি চৌদ্দদিন পর পর বেরোয়।

ছদ্মনাম : অর্জুন মিত্র। 

          এই ছদ্মনামে কবিতা পাক্ষিক-এ কবিতা সংবাদ ও শিল্পসাহিত্য সংবাদ গদ্য রচনা : কবিতালেখার পাশাপাশি কবিতা চিত্রভাস্কর্য নিয়ে গদ্য লিখছেনে একাধিক ।

অনুবাদ ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ : ২০০৪ আলিয়ঁস ফ্রঁসে। ২০০৮ ম্যাক্সমূলার ভবন ও সাহিত্য আকাদেমির প্রয়াসে ।

সম্মানিত আমন্ত্রিত সদস্য : ২০০৮ থেকে সাহিত্য  আকাদেমি  (নিউ দিল্লি) অ্যাডভাইসরি বোর্ডের সম্মানিয় আমন্ত্রিত সদস্য।

পুরস্কার ও সম্মাননা: ১৯৯৮ কলকাতা বইমেলায় মহাশ্বেতা দেবীর হাত থেকে কবি অনন্য রায় পুরস্কার।

২০০৬ কবি আশেক মহান্তী পুরস্কার।

২০০৭ ‘মনীষা’ পত্রিকা প্রদত্ত সম্মাননা।

২০১২ স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য সম্মান 

২০১৭ সমিধ সম্মান 

১৯৯৪ সালে ভারতবর্ষ কবিতাটি ইউনেস্কা-র সংকলনে প্রকাশ পায়।

এছাড়াও আরো অনেক অনেক সম্মাননা তিনি পেয়েছেন৷

অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ : ফরাসি, স্প্যানিশ প্রভৃতি কিছু ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

৫ পার্ল রোড, বেকবাগান, কলকাতা।

গভীর শোক প্রকাশ করছি স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পক্ষ হতে । 

কবি তুমি ভালো থেকো 

নাসের দা ভালো থেকো 

ও মানুষ ভালো থেকো 

ভালো থেকো ভালো থেকো ভালো থেকো !




সাবিলা রওশন



পরাজিত এক শ্রোতা 


আমি সেই অপেক্ষা আর অবহেলা সেই  নতজানু পরাজিত প্রেম,

যে আজ শূন্য খেয়ায় একলা ভাসমান পথিক,

নেই চাল নেই চুলো নেই খোঁপায় বাঁধা ফুল,

নেই নিশিযাপনের অবকাশের আলতো ছোঁয়ায় চুম্বন,

যে প্রতিনিয়ত করছে প্রত্যাখ্যান,

পূনর্বাসনে পাঠাচ্ছে রোজরোজ,

হারানো বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা দিচ্ছে বারবার তুমি কোথায় তুমি কোথায়।

অথচ চোখের নীচের থমথমে আকাশ চোখে পড়ে না তার।

ঘোলাটে চাঁদে খেলা করে না বেদনার আকুতি!

আমি যে পুড়ছি কেঁদে ওঠা বসন্তেও বোঝে না!

বোঝেনা শরীরের ব্যথাগুলো অনুভবে ভাসে না মন,

এ জনমে তুমি আর আমার হলে না!

অকাতরে বিলীন হলে নিস্ক্রিয় জীবন হতে,

গ্রহণ করলে না সবটুকু ভুলে!

শ্বাস প্রশ্বাসের জায়গায় শুধু দম বন্ধ করে রেখে দিলে আগের সেই চিলেকোঠার বারান্দায়!

যেখানে আমি ছিলেম পরাজিত এক শ্রোতা।

রামদাস মণ্ডল



বৃথা অন্বেষণ 

যে সুখ রয়েছে আপনার ঘরে 

সে সুখ কোথাও নাই,

মনের আগল সরানোর পর 

আঁখির গোচরে পাই ।

এতদিন ধরে অনেক খুঁজেছি 

দেখিনি রয়েছে কাছে,

সে কথা জানাই সকল সকাশে 

প্রয়োজন খুব আছে !

গহন কাননে তটিনীর বুকে 

খুঁজেছি বালুকা বেলা,

নিশিদিন ধরে মননের মাঝে 

একাকী করেছি খেলা!

সাগরের কূলে বেলা অবেলায় 

অযথা সময় যায়,

শহরে নগরে কত না খুঁজেছি 

কোথাও পাইনি তায় !

হিসাব মেলেনি হিসেবের খতে 

বারে বারে হয় ভুল,

পরিশেষে হায় নিজ নিকেতনে 

পেলাম সুখের কূল !

তানভীর হাসান



নারী বিস্ময়

 প্রসব বেদনা সয়ে যায় নারী 

পুরুষ সেজে রয় বীর 

আসলে পুরুষ বোঝেনা যাতনা

ছুড়ে মারে শুধু তীর। 

কামনা বাসনা সুখের বেলায় 

নারী হয়ে যায় রানী 

দুঃখ যাতনা কুঁড়ে কুঁড়ে খায় 

পুরুষ ছুড়ে যে বানী।

আদরে সোহাগে কাতর পুরুষ 

নারী তখন নন্দিনী 

সুযোগে বিচারে নারীকে আবার 

করে রাখে যে বন্দিনী। 

যেখানে ছুঁয়েছো সুখের পরশ 

ধরায় আসার রাস্তা 

লালসার লীলায় অন্ধ পুরুষ 

সে রাস্তা করেছো শস্তা।

নারী কেবলই দুঃখের জোয়ার 

পায় দু'বেলা আহার

ভোগের ক্ষেত্রে নারীই শ্রেষ্ঠ 

বুকে কষ্টের পাহাড়। 

পুরুষ তোমার বিন্দু কোষে 

নারী রক্ত পেটে চুষে 

মৃত্যু কূপের গুহা জয়ে নারী 

গড়েছে তোমায় পুষে।

ওহে পুরুষ আদমের বীজ 

সইবে না মা হাওয়া 

নারী কেবল ভোগেরই নয় 

পৃথিবী জন্ম পাওয়া। 

আদম হয়েই বেঁচে থাকিস 

পুরুষ হয়ে নয় 

হাওয়া করেই পারলে রাখিস 

নারী সৃষ্টিতেই বিষ্ময়।

শ্যামল রায়



দু'পয়সার সাংবাদিক


আমরা সোজা হয়ে হাঁটতে পারি

আমরা কলম তরোয়াল করতে পারি

আমরা অন্ধকার মুছে আলো দেখাতে পারি

আমরা দু'পয়সার সাংবাদিক নই।

এখানেই প্রতিবাদ গর্জে উঠুন

আমরা যারা সকলেই সাংবাদিক।

যিনি বলেছেন সুশিক্ষিতা জ্ঞানীগুণী

জানেন না কিছুই সাংবাদিকতার সংবাদ

নিজে হয়েছেন এখন সাংসদ

নামিয়ে দিতে পারেন কলমের সাংবাদিক।

বলার সাহস কোথায় পান?

সংবাদমাধ্যম মস্ত বড় নীল আকাশ

মস্ত বড় সূর্যমুখী ভোর

অন্যায় কে চুরমার করে দিতে পারে

কলম সাংবাদিকের কলম

আর সমসাময়িক সংবাদ কাগজ।

ছি; ধিক্কার জানাই

আমরা সাংবাদিক কলম লাঙ্গল

ফসল বানাই রোজ

সেইফ আসলে এখনও আমরা আছি বেঁচে

অক্সিজেনকে সর্বক্ষণ।

আমরা দু'পয়সার সাংবাদিক নই

পকেট চুরি ন ই, মানুষকে ফাঁদে ফেলে নই

সাংবাদিক মানে সচ্ছল মানুষ। নির্ভেজাল সংবাদ

ধিক্কার জানাই হৃদয় নিংড়ে ছি:ছি:

আমরা গর্ববোধ করি সাংবাদিক

সংবাদ লিখে অন্ধকারে ঠেলে ফেলেদেওয়া যায়

যত বড়ই ক্ষমতাবান, রাজনীতিবিদ

তোমরা হয়ে থাকো----

দু'পয়সার সাংবাদিক নই

সহস্ত্র মাইলের পর মাইল

আমরা হাটতে জানি পরিবর্তন করতে পারি

আমরা সাংবাদিক আমরা সাংবাদিক

সমসাময়িক সংবাদপত্র

প্রতিবাদ জানাই ধিক্কার জানাই ছি:ছি;।

তাহসান কামরুজ্জামান



তোমার অপেক্ষায়


অপেক্ষা বা প্রতীক্ষার সময় ক্ষণ কখনো

কখনো তিক্ততায় ভরে উঠে! 

কখনো আবার নীরব ভাষায় উৎসবের 

আমেজ তৈরী করে হৃদয়ের মনিকোঠায়! 


যদিও সেই অপেক্ষা হতে পারে সময়ের প্রয়োজনে"

আবার কখনো স্বস্তির নিঃশ্বাসের সুগভীর 

ভাবনার প্রতিফলন ঘটাতে। 


এমনই এক প্রতীক্ষার সমীকরণ মেলানোর চেষ্টায় 

বসে রয়েছি অচেনা পথের পথিক হয়ে। 

যেখানে সবকিছুই অচেনা;খুব ভয় হচ্ছে 

আশেপাশের এলাকার মানুষগুলো দেখে!


কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে, কেউ বা আবার

ভয়ের ব্যাপার কথা বলছে। 

কিন্তু আমার অক্ষিকোটরে অন্য কিছুর প্রতিচ্ছায়া

ঘুরাফেরা করছে প্রতিনিয়ত। 


অদ্ভুত কিছু ভাবনার জগৎ ছাড়িয়ে আছে 

মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষে। 

কি যে চাচ্ছে কিন্তু সেই চাওয়াগুলো নীরবেই 

মৃত্যুরে দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিদায় শব্দ নিয়ে! 


মানতে বাধ্য করছে;অনিচ্ছার আড়ালেও হয়তো

মেনে নিতে পারবো না, কিন্তু এই স্বল্প পরিচয়ের

গল্পের পাতাও ছাড়ছে না।

শফিকুল ইসলাম সোহাগ



অর্থহীন চোখের জল

মাটির মলাট ছিড়ে বাতিল খড়গের হুংকার

দাতাল বেহায়ার চোখ ছানি-পড়া অরক্ষিত স্বাধীনতায়

যারা জানেনা পিতৃত্বের পরিচয় -

জানেনা গাদা- শুদ্ধি হওয়ার পথ

অযাচিত  জবান খোয়ায়  তেলের বাজারে নতুন হিস্যায়

হাদারাম আঙ্গুল নাড়ায় সময়ের ফানুস - শূন্য খতিয়ানে

ক্ষুব্ধমন সান্তনার ভাষা ভুলে যাই এই । 


বেদনার অশ্রুটা তপ্তদাহে বুকে বিধেঁ- মগজ পোড়ায়

অন্ধকার গিলে খাচ্ছে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ঘর

পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইলের দেশে হাঁকায় শকুন শয়তান 


সোনামুখির আচঁড়ে ভাঙ্গে ঐতিহ্যের কুটর

পর্দার আড়ালে নতজানু দর্শনে বিভ্রান্তির উৎসব


আজ চোখের সামনেই হয় প্রকল্পের ভাগ

নিয়মহীন নিদারুণ হাহাকার শুনি জনতার মুখে

হৃদয়ে ফোটেছিল রক্ত ফাগুন - আগুন আগুন

সেদিন রাজপথে ডুবেছিল মানুষ মানুষ-অধিকার আদায়ে


স্বাধীনতার বিজয় আজ স্বাস্থ্যহীন-স্বপ্নহীন শিল্পের ছল

ব্যথাগুলো এখনো সারেনি অর্থহীন চোখের জল ।

সোহেল রানা



ভালোবাসার মৃত্যু

রাত ২টার সময় হঠাৎ খুন, 

তোমাকে পেয়েছি রাতের অন্ধকারে 

অবশেষে ধরা দিলে আমায়, 

রক্তের পরোতে পরোতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে

দুটি শরীর। 

কথার আঘাতে আহত হয়ে পড়ে থাকি পিয়ার কোলে। 

কিছুটা শান্তনা দিলেও, 

দুটি হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে থাকে,

নিশুতিরাতের বিছানায়। 

তবুও তুমি ফিরে আসনি . … 

 ছেড়ে চলে গেলে… . 

রাত ২টায় আমার পবিত্র ভালোবাসাকে খুন করেছিলে।

অলোক দাস




এটাতো জানতাম না 


রোজি যাই প্রাতঃ ভ্রবনে, ঠিকানা নবান্ন, চোখ পড়ে বেশি দোকানে - জুলছে লংকা লেবু I ইচ্ছে করে জানতে, কেন ঝোলে লঙ্কালেবু? ফুলের দোকানে এক বন্ধুকে, জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম, কেন ঝোলে লংকা লেবু? বন্ধু বললো, সে কি ! আপনি জানেন না? লেবু হোলো টক, আর লংকা ঝাল I কেউ দৃষ্টি দিলে, লেবু আগে দেখবে, সঙ্গে সঙ্গে বমি I আর লংকা যেই দেখবে, ঝালে মরে যাবে, দেবে দৌড় যেদিক পানে I