পোস্টগুলি

নভেম্বর ৬, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সৌমিত বসু

ছবি
মেঘদুটো অসুখ পেরোলো একটা মানুষ হেঁটে চলেছে  আকাশের দিকে তার পেছনে পেছনে সমস্ত পৃথিবী গাছপালা থেকে বের হয়ে আসছে কান্নার মতো রোদ ভোরগুলো ঝুলি থেকে  বের করে আনছে পোকামাকড় রাতের পর রাত গেঁথে তৈরি করা বাড়িগুলো হাত বাড়িয়ে মুখের মধ্যে পুরে নিচ্ছে ঝাঁক ঝাঁক পাখি একটা মানুষ ক্রমাগত একা হতে হতে নদীর তীরে এসে দাঁড়িয়েছে। সম্পর্কের নদী। ওপারে দাঁড়িয়ে তুমি মেপে নিচ্ছ জমিজিরেত দুহাতে আপ্রাণ রিফু করে চলেছ ফুটো ফাটা পুরোনো রাতগুলো খুঁজে খুঁজে এনে সাজিয়ে তুলছো তাকে যে মেঘ একদিন বাষ্প হয়ে নেমে এসেছিলো তোমার চোখে যে চোখ দিয়ে তুমি নিজের মতো  বানিয়ে নিতে সাঁকো যে সাঁকো ধরে একদিন তোমার কাছে পৌঁছে যাবে অঝোর শ্রাবণ তুমি ভিজবে, আর চোখ থেকে  গলে গলে মুদ্রাগুলি নেচে উঠবে ছাদে, আকাশে, গ্রহতারকায় একটি নিঃস্ব মানুষের  আঙুলগুলো সম্বল করে তুমিও মিলিয়ে যাবে ভোরের বাতাসে। চারিদিকে অজস্র গন্ধ। শুঁকে শুঁকে এগিয়ে চলেছে দুটি প্রাণ মানুষ চিনতে চিনতে এগিয়ে চলেছে মরাবিকেলের দিকে সন্ধ্যা নামার আগেই তারা পূর্ণ হবে নাগাল এড়িয়ে।

তৈমুর খান

ছবি
  আনন্দের বাড়ি  বহুদিন থেকে নষ্ট পৃথিবীতে আছি  দালালেরা ছুরি হাতে রোজ আসে  ফিরে যায়  অপেক্ষাও করে  যদিও প্রার্থনা নেই বেঁচে থাকবার  প্রতিবাদও সব ভাষা হারিয়ে ফেলেছে  আনন্দ মরেছে বহুদিন  এখন আগলাই শুধু আনন্দের বাড়ি  স্মৃতির পালক কিছু সাজানো আছে  ইতিহাস যদিও মলিন  পূর্বপুরুষের ঘাম, রক্ত লেগে আছে তাতে  ঝরনার নিকটে আর যাই না  সে এখন অন্য পাহাড়ের কাছে থাকে  তার সমূহ মাধুর্য এখন তারা লুঠ করে  ছেঁড়াখোঁড়া ব্যাকরণ বহু বাক্য ব্যয় করে  গার্হস্থ্য বিষাদ মেখে এখানে পড়ে আছে  কথাহীন আমরা সবাই, দুর্গা বানাই অন্ধকারে…. 

সন্তোষী ব্যানার্জী

ছবি
  বন্ধু মানে বন্ধু মানে, একমুঠো খোলা আকাশ, মুহুর্মূহু বয়ে চলা, বাসন্তী দখিনা বাতাস-- মনের দরজা হাট করে দেওয়া যায় অনায়াসে, সত্যিকারের বন্ধু যে জন ,সে যদি থাকে পাশে, বন্ধু মানে ঝিরঝির ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিতে, ঠান্ডা লাগা ভুলে অবিরাম ভেজা যায় হাতটা দিয়ে হাতে, বন্ধু মানে চোখ বন্ধ করে অন্তহীন বিশ্বাস, সারা জীবন পাশে থাকার এক অলিখিত আশ্বাস, বন্ধু মানে, সাথে থাকলেই উচ্ছ্বাস বাঁধনহারা, হিরোসিমা দিনে একসাথে নীরবতা পালন করা, বন্ধু মানে এলোমেলো পথ চলা, আর বিনা কারনে ঝগড়া হাজারটা ভুলেও, হাসিমুখে চট করে ক্ষমা করা!

দেবাশিস সাহা

ছবি
 দু-গাছি কান্না ও জল-আকাশ ওয়াশরুম পেরিয়ে  নদীর দিকে নেমে যাচ্ছে  সরু রোগা লিকলিকে হাড় জিরজিরে দু-গাছি কান্না নদীর পা নেই মানুষের কান্নাগুলো দিয়ে গয়না করে ভর্তি করেছে শরীর  শরীর ভর্তি অলংকার আর অহংকার নিয়ে ছুটে যাচ্ছে মহাসাগরের দিকে মহামানবের মহামিলন ক্ষেত্র এই জল-আকাশ

সুপ্রীতি বিশ্বাস

ছবি
শুধু কবিতাকে  জীবন্ত অক্ষরের মতো  সবুজ দুর্বার মখমলে  অক্ষরে অক্ষরে গড়ে ওঠে ইমারত  গড়ে ওঠে বর্ণে বর্ণে  সাজিয়ে শব্দের উদ্যান  প্রশ্ন জাগে মনে এ সব কি আমার জন্য , আমি যখন জানালার ধারে বসে  ওই নীল আকাশটাকে দেখি  ছুটন্ত বাস কিংবা ট্রেনে  চলেছি একাকী কোথাও কোন খানে  তখন কন্ঠস্বর ভেসে আসে কানে  আবেগে হারিয়ে যাই সুদূর দিগন্তের ... মোহময় কোন এক অস্পষ্ট আলোয় ! সেই আলো বুকে নিয়ে পরে আছি   শুধু কবিতাকে ভালোবেসে

কবি মিশ্র

ছবি
  প্রতিবেশী  আমরা ছিলাম অতি কাছাকাছি-পাশাপাশি কেউ কারো খোঁজ রাখি না... এক ওড়া পতঙ্গ খবর দিলো এপাড়ায়... কিছু আগন্তুক এসেছে ,করছে আলোচনা.. দেখাটাই সব হোলো, অন্তর ফাঁকা থামো থামো কেন করো , ধ্বংসের গান... অসহ্য কুঠারাঘাতে শেষ হল আরো কিছু প্রান... হা হা কারে ভরে গেল প্রকৃতির কান... প্রানপনে চিৎকারি, ফিরে আয় ওপাড়ার তুই... সুখে দুখে মোরা থাকি ভাই ভাই... দিন যায়, রাত যায়, বছরের শেষে সব ঋতু বুঝি বরণ করল এসে... ছুটে এল ওপাড়ার নীড় ভাঙা পাখি... আবার এসেছে ফিরে , কলতানে ভরে উঠে আঁখি... নতুন পাতা , ফুলে,  ফলে উঠল ভরে ও পাড়ার ঘর... সুখে দুঃখে দুজনেই ..আমরা দোসর...

হাননান আহসান

ছবি
  স্বপ্ন উড়ান আকাশটা নীল, ফুরোয় না যে পাহাড় একা সবুজ মাখে চোখ জুড়োনো দৃশ্যপটে  অজান্তে দূর তুষার ঢাকে। ছুটছে ফেনিল নদীর খাতে আমোদিত জলের ধারা শেষ বিকেলের রামধনু রোদ ইচ্ছেডানায় মেলছে পাড়া। আলতো বাতাস বুলোয় পরশ ক্রমান্বয়ে মেঘরা খেলে পলক পড়ার আগেই খুশি আনন্দ কেউ দিচ্ছে ঢেলে। দুধ সাধা রং চতুর্দিকে ঘুম ছুটে যায় পক্ষী-তানে বৃক্ষ সুবাস গুলঞ্চ ভোর কী অপরূপ বাজছে কানে। কোথায় এমন স্বপ্ন উড়ান ভিতর বাহির অহমিকা  একটা টিকিট কাটুন দাদা পৌঁছে যাবেন ঝিকিরঝিকা।

শান্তিব্রত চট্টোপাধ্যায়

ছবি
  ঝাঁকড়া ভালু আলুথালু একটা ভালু আলুথালু একলা একা কাঁপছে জ্বরে ধুলোয় শুয়ে দিচ্ছে গড়াগড়ি হঠাৎ উঠে তড়বড়িয়ে দাঁত খিঁচিয়ে কড়মড়িয়ে মৌজ করে চেবায় রাঙা আলু। বন ছেড়েছে কবেই ভালু  এখন শুধু হেলেদুলে ঘুঙুর বাজায় ঢেঁকুর তুলে এই গলি আর সেই গলিতে বোল ওঠে যেই ডুগডুগিতে  থপথপিয়ে কোমর দোলায় কালু।   নাছোড় মালিক বড্ড চালু  সকাল বিকাল সন্ধ্যাবেলা নাচার কালুর চলছে খেলা  সবাই খুশি, খুশির ঝড়ে ঝনঝনিয়ে পয়সা ওড়ে  ঝরনা চোখে দেখতে থাকে ভালু।  আর পারে না ক্লান্ত কালু দাওনা ওকে বিদায় ছুটি করুক না হয় লুটোপুটি সেই সে গহন নিজের বনে মুক্ত সুখে আপন মনে ঝাঁকড়া ঝামর ভালুক আলুথালু।

পরাণ মাঝি

ছবি
  দূরত্ব যেখানে  তুমি সেখানে আমি , আমরা সবাই  এক পৃথিবী । দূর কেন বলো ? দূরকে নিকট করতে জানলে ভয় কিসের ? পুরোটাই তো তোমার --

সৌগত রাণা কবিয়াল

ছবি
 যদি জানতেম .... তুমি অধরে দিলে যন্ত্রণা.. আমি সেই নেশা নিয়ে অনন্ত অঙ্গন পরিপূর্ণ করে ঘরে ফিরলাম... তখন আমার পায়ে শ্রান্ত যৌবনের ক্ষত.. কিন্তু দৃষ্টির কৃষ্ণগহ্বরে অনবদ্য প্রাপ্তির আলো... তুমি নির্বাক-ধূসর শূন্যতা রেখা ধরে উমাবতী মুখ তুলে চাইলে আমার শরীরের বিবর্ণ প্রজাপতি ডানায়.... আমি আমার হৃদয় সহবাসের সুখময় স্মৃতি পাঁজরের আড়ালে লুকিয়ে কাঁপা দু-হাত উমা অঞ্জলির জন্য মৃত্তিকা নত করে এগিয়ে দিলাম... তুমি অস্ফুটস্বরে অবজ্ঞার ক্যাকটাস গায়ের হলুদাভ পাপড়ির মতো আমার দিকে তাকিয়ে করুণার তরঙ্গ ছুড়ে দিলে দেহে নিয়ে শতপারিজাত রুপ... তারপর সুদীর্ঘ একটা মিথের চাদর... আমি আমার অদূরে নিজের উপহার হিসেবে নিজেকেই দেখতে পেলাম... অমর মহাকাব্য শুধু একটি পরিহাস মাত্র.. এরপর আর কোনদিন পৃথিবীর কোন মানুষের মুখে আমি স্বমর্পনের সুখ দেখিনি.....!! এখন আমি, জানালার কাছে তোমার স্থীর চিত্রের বদলে প্রতিদিন ভোরে একটি করে মৃত প্রজাপতি স্কচটেপে আটকে উৎযাপন করি সময়ের উপযুক্ত বিসর্জ্জন...!