০৭ এপ্রিল ২০২১

শুভমিতা বিশ্বাস




প্রেমাদর


পাহাড়তলির অন্ধকারে

 খেপার সাথে যাব

নির্জন সেই রাস্তাধারে 

একসাথে মেঘ হবো


বৃষ্টিমাখা আমার হাতে 

ভিজবে যখন খেপা

বাঁধনছাড়া হয়ে যাবে

মাধবীলতার খোঁপা


ভাঙবে চুড়ি পূর্ণিমাতে

নদীর মনে ঢেউ 

আমার খেপার উদাস চোখে

 কাব্য লেখে  কেউ

জারা সোমা




নির্বাসন


 ইচ্ছেনদীতে ভাঁটা পড়লেই 

আকাশে চাঁদ ওঠে থালার মতো


বেবাগ শব্দেরা ঘুরে বেড়ায় প্রজাপতির ছদ্মবেশে 


 মধ্যবিত্ত জীবন পাতে কাঁটা বাছতেই

    রাত গড়িয়ে পড়ে ঘন আঁধারের গায়ে


    তখন  জোনাককে নক্ষত্র ভেবে ভ্রম হয় 


 ভ্রমণকারী বাতাসে যে মেয়েটা সামলাতে থাকে বেণী        সেও আঁচল পাতে জোছনা প্রেমে


 কিন্তু একবার সর্বনাশা  মেছো নেশায় পেলেই


   চৈতী মেয়ের কপালে কালাপানি নির্বাসন।।


 

শাহারা খান ( ইংল্যান্ড )




গাঁয়ের বধু

 


গাঁয়ের বধু নায়ে চড়ে 

যাচ্ছে বাপের বাড়ি।

মুখে তার মিষ্টি হাসি,

পরনে ঢাকাই শাড়ি।


ঘোমটা দেয়া বধুকে আজ,

লাগছে দেখতে বেশ।

বাপের বাড়ি যাচ্ছে বধু,

খুশির নাইরে শেষ।


এতদিন পরে মুক্ত হাওয়ায়,

আজ ঘুরবে ইচ্ছে মতো।

শশুর বাড়ির বাঁধা নিষেধ,

পরোয়া করি নাতো।


কোথায় তোরা শৈশব সাথী,

আয়রে ছুটে আয় সবাই।

হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি,

আবার ফিরে পেতে চাই।


রাখাল ছেলের বাঁশি শুনবো,

বটতলায় বসি পাশাপাশি।

প্রাণ খুলে কইবো কথা,

দুঃখ ভুলে করবো হাসাহাসি।


শশুর বাড়ির রাজপ্রাসাদে,

বন্দিনী লাগে আমায়।

বাবার বাড়ির স্বাধীনতা,

বল কোথায় পাওয়া যায়?

শ্যামল রায়




 চোখে ধরা পড়ে


উত্তরের হাওয়ায় জানালার পর্দাটা

সরালে দেখা যায়

নানান ধরনের গাছপালার ফাঁকে

গজিয়ে ওঠা নতুন পাতাদের

জোসনা রাতে ভারি মজা লাগে।

আর চারপাশে একাধিক কয়েক তালার বাড়ি

কাছাকাছি ছাদে হঠাৎ দেখা হয়েছিল

সদ্য বিবাহিত নারীকে

দু চোখে ধরা পড়েছিল তার মুখ।

নতুন । ভিতরে আতঙ্ক কাজ করছিল

অথচ দেখতে পেয়েছিলুম তার ইশারা

আমাকে ভাবিয়েছিলো, ঘুম আসেনি 

একদিকে যমুনা ছিল অন্যদিকে গঙ্গা ভাগিরথী

দুয়ের মাঝে ঢেউ খেলেছিল সারাটি রাত

দু চোখে ধরা পড়েছিল তার মুখ।

হঠাৎ মুখোমুখি

নতুন কিছু করার নতুন কিছু বলার থাকে

এসব উধাও। সময় নেই বিবাহিত স্বামীর

সময় কাটে না, ভিতরে যন্ত্রনা

এ যেনো ঘন একটা অন্ধকারের জালে জড়িয়ে পড়া 

শুধুই আলোর পথ খুজছিলাম

তুমি যদি আলো হও আমি হব দিশা।

আমার বেড়ানো ছাদ হয়ে উঠুক

বৃষ্টিতে ভেজা নীল শাড়ির আঁচল

তুমি থেকো সারাক্ষন চোখে চোখ রেখে

শুধুই আমার জন্য --+।

মুনা ইসলাম




আলু,পটল সবজি



আমি করলা হবো 

তিতার মাঝে মিঠা।

মিছে বেগুন হলে পরে

চুলকানিতে সাজা। 


আলু হলো ফ্যাটের রাজ্য

ওজন বৃদ্ধির বাপ,

বেশি হলে মোটা ভুড়ভুড়ি

দেবে অভিশাপ।।


কচুর মত হলে পরে

বাঁশ দিতে মজা,

দুষ্ট মরিচ প্রতিরোধে

থাকবে না আর বাঁধা।


লবন হলো সেরা পুষ্টি

গোল্ডেন A+

কম বেশি হলে পরে

কল  শুধুই মাইনাস। 


মিষ্টি কুমড়া নামে মিষ্টি

চিনি লাগে তাতে,

আড়ালে যে দেয়াল হাসে

জানে শুধু কাকে।


পটল হলো আদর্শ সবজি

যাহার নেই তো কোন দোষ।

ইলিশ মাছে হেসে বলে

বেশ...বেশ...বেশ....

গোলাম রববানী




বেশি মনে পড়ে



ভুলতে পারি নে,

ভুলতে চাইলেই ভোলা যায় না।

অতীত যায় চলে 

আসলে অতীত চলে যায় না।

অতীত থেকে যায় সংগোপনে 

মনের কোণে খুব যতন করে। 


আলোতে ভালো দেখা যায় না,

কালোতে আলো হয়ে জ্বলে মনে।

কখনো অন্ধকারে কখনো বা একাকিত্বে,

চমৎকার এক অনুভূতি টেনে হৃদয় ক্ষরণে!


ভুলতে পারি নে,

ভুলতে চাইলেই বেশি মনে পড়ে।

আবদুস সালাম




 নপুংস

 


আকাশ কেঁদে চলেছে সারা রাত

তারারা খসে পড়ছে অজান্তেই

দুঃখের নিশান বয়ে আনছে হোটিটির দল

ভাগ্য দেবতা চোখে পট্টি বেঁধে বসে আছে


আলোর রোশনাই ভেসে চলেছে ভ্রান্ত আসকারা

অন্ধকারে গুমরে মরছে নির্বাসন দন্ড

মিথ‍্যের খাঁচায় আছে বন্দী হয়ে আছে স্বপ্ন

ভালোবাসার আকাশে বয়ে চলেছে মরুঝড়


সৌভাগ‍্যের বিছানায় শুয়ে আছে করোনা

হাওয়ায় ভাসছে মারণাতঙ্ক

সভ‍্যতার ক্ষত ধুয়ে দিচ্ছে রক্ত


মানবিক স্কুলে ছেলেদের আমরা পাঠায়না

আকাশের তারারা তাই কাঁদে

ফুলেরা  সুবাস ছড়াবে না বলে দিয়েছে

আমরা নপুংসক হয়ে চলেছি দিন দিন।

মোঃ সরোয়ার হোসেন




অলৌকিক দামি 


অজান্তেই কেন দুঃখ দিলাম তোমাকে

চাই-নিতো হতে কারো, কষ্টের কারণ 

তাহা মন কেন করে, যা করা বারণ

কেন অপরাধ বোধ তাড়ায় আমাকে?

যাহা চাই অন্ধ চোখে, মিছে অকারণ

মন চঞ্চলিয়া উঠে,ছুটে তার ডাকে

সে পরাণে যদি প্রেম, অবশিষ্ট থাকে

তব_ মিনতি তোমাতে, করিও স্মরণ।


কী ব্যাকুল তিয়াসা রে, মনে কত সাধ!

এই ভালোবাসাহীন, মানুষটি আমি

তোমার নয়নে মুগ্ধ! স্বাধীন অবাধ 

জেনো,আমি হতে পারি প্রণয় আসামি 

চাইলে ভাঙ্গতে পারি, সব বাঁধা বাঁধ।

তুমি যে আমার কাছে, অলৌকিক দামি!

স্বপন কুমার ধর




অদৃশ্য উপন্যাস



অনেক দিনের ইচ্ছা, একটা

কবিতা লিখি তোমার জন্যে,

কেবল তোমারই জন্য,

তোমার ঠোঁটের জন্য।

আবার কখনো ভাবি, একটা

গল্প লিখি তোমারই জন্যে,

কেবল তোমারই জন্য,

তোমার কাছে শুনবো বলে।

কখনো কখনো মনে হয়, একটা

গান লিখি তোমারই জন্যে,

কেবল তোমারই জন্য,

তোমার কন্ঠে শোনার জন্য।


লিখতে বসে সবার আগে ভাবি,

সব লিখব, মন খুলে লিখব,

কেবল তোমারই জন্যে,

শুধুই আমাদের জন্য।

লিখতে বসে দেখি, কলম সরে না,

কি লিখবো, কিভাবে লিখবো,

যা কেবল তোমারই জন্যে,

শুধুই আমাদের জন্য।


তবে কী ইচ্ছেটা অপূর্ণ থাকবে!

এত বসন্ত কাটিয়েছি যার সাথে,

তার প্রতিটি ক্ষণ যেন,

এক-একটি পাতা, যার

প্রতিটি শিরা-উপশিরায় আছে,

হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, সান্নিধ্যের

মান- অভিমান, প্রেম-ভালোবাসা,

আরো কত কী! যা দাম্পত্য,

জীবনের সাথে প্রবহমান,

এ তো স্বরচিত কোন কবিতা নয়,

গল্প ও নয়, গান ও নয়, একটা

চলমান সমগ্ৰ উপন্যাস, যা অদৃশ্যভাবে

লিখে চলেছি, মনের কলম দিয়ে,

হৃদয়ের পাতায়, লিখবো ও আজীবন।

বাহাউদ্দিন সেখ




 শিল্পীর আঁকা ছবি



তোমার রঙে শিল্পী হয়ে আঁকতে চেয়েছিলাম ছবি

স্মৃতির হয়ে রইল যেন কষ্ট ব্যথা সবই

কবির ডাইরির পাতায় পাতায় শিল্পীর 

শিল্প কথা

বুকে ভরা অপুষ্ট তরুণ কাঁচা প্রেমের 

রক্তের সঙ্গে চলছে যেন ব্যথা।

তুমি ছিলে আমার রক্তে ভরা ঊষা 

গোলাপি ফুলের শাখা

সেকালের কথা মনে পড়ে, পড়ছে অশ্রুজলে রক্ত মাখা।

বিরহের পথে স্বপ্নে শুনি তোমার কন্ঠে গানের ছন্দ

ভাসছে না যেন আজ তোমার আমার 

প্রেম-প্রীতির সুগন্ধ।

আমার আত্মা আমার কাছে মন যেন

 আজ তোমার

জীবন যেন রয়েছে শিল্পীর প্রেমের আঁকা ছবি হাহাকার।

পাহাড়ের বক্ষস্থলে বন্দনী রয়েছে লুপ্ত গুপ্তধন।

কাল বৈশাখী তাণ্ডব প্রলয়ে দিয়ে গেলে কষ্টে ভরা মন।