রুগণ ঢেঁকিটির ওপর ভোরবেলার রোদ বসে আছে
ঘুম ঘুম চোখে সকলে চলেছে ধানখেতের দিকে
কচি সবুজ ধান ছুঁয়ে ছুঁয়ে এখানে বাতাস বাজায় সরোদ
এমন উল্লাসেও বন্যার কথা মনে এলে খুব ভয় করে
যুবতী এক কেমন নরম নরম করে তুলে নেয় ডগা কলমির
আরেকটি মেয়ে তারে বোনা সাজিতে তুলছে স্থলপদ্মগুলি
চড়ুইয়েরা অকারণ ঠোঁটে রোদ নিয়ে লাফালাফি করে
এখন উল্লাস খুব, বন্যার কথা কেউ এখন মনে এনো না
বকুলতলায় মোষ দুইছে এতোয়ার দুই নম্বর বউ
লাইফবয় মেখে স্নান করছে কাঠকলের মাদ্রাজি শ্রমিকেরা
আর ঢেঁকির ওপর যে রোদ বসে বসে ওম নিয়েছিল
সে এখন ধীরে ধীরে তাড়ি হচ্ছে বীরেনকাকুর খেজুরের রসে
পাপক্ষয়
তুলসিপাতাকেও জলে ধুয়ে পবিত্র করে নিতে হয়
তাহলে পবিত্র লুকিয়ে আছে জলের ভিতর
তাহলে আমাদের দুজনেরই অনেক পবিত্রতা আছে
রোজ দুবার করে পার হই আংরাভাসা নদী
রোজ ওপারে যেতে হয় হাঁটুজল মেখে
রোজ ফিরেও আসি আরও কিছু হাঁটুজল মেখে
তাহলে এই বনও পবিত্র হবে বলে বাষ্প হয়ে ওঠে
জল হয়ে গড়িয়ে যায় আস্ত আকাশ
পাহাড় তাই মেঘ হয়ে উঠছে নভোনীলে
তাহলে তোমার চোখের জলে আমারও কিছু পাপক্ষয় হলো
হ্যালুসিনেশনের টিলা
যে-হাতে ছিঁড়েছি জীবন, সেই কালকুচ্ছিত হাতে হাত রেখে
তুমি ছুটে যাচ্ছ ভাত ও ভালোবাসার দিকে
এ এক মিছেবাস্তব, হ্যালুসিনেশন, যে-আয়না চৌচির হবে
এই যে দীর্ঘ পথ তুমি এলে মৃত্যুহিম গাঢ় অন্ধকারে
প্রত্নমানুষী যেন, রুক্ষ ফুসফুসে কিলবিল করছে তোমার আঙুল
ছুঁয়েছ রক্তে গভীর মড়ক, স্বেচ্ছাচারিতা, জুয়া
ঢুকে গেছ ভাতের গুহায়, অন্ধবাদুড়ের আস্তানায়
এবার ফের আসবে শীত, মুখোমুখি হব ভাঙা আয়নার
হ্যালুসিনেশনের এই টিলা, খাদে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে মিছেসংসার