২৮ ডিসেম্বর ২০২১

কবি নিপুন দাস এর কবিতা





মোহনায় এসে

মোহনায় এসে ক্লান্ত সে নদী 
ফেলে আসা পথে চায়,
সব পথ আজ শেষ হোলো বুঝি 
সাগরের ঠিকানায়।
কত পথ সে পার হয়ে এল
কত দেশ প্রান্তর,
উদ্দাম স্রোতে ভেঙেছে গড়েছে
 কতই না বালুচর।

আজ নেই তার কূলভাঙা ঢেউ নেই সেই স্রোতধারা,
সময়ের স্রোতে ভেসে গেছে সব
ফিকে সব স্বপ্নরা।
পরিচয় তার ছিল যতটুকু 
মুছে যাবে ক্ষনিকেই 
অপার সাগর, অ থৈ জলেতে
হারাবে সে অচিরেই।
সাগরের বুকে জমা হবে তার
বয়ে আনা জলরাশি,
যা ছিল নিজের, রইবে না আর
সব যাবে ঢেউয়ে ভাসি।
এ কী আনন্দ, না কী বিষাদ
ভাবে সেই স্রোতস্বিনী,
নিজেরে হারায়ে সুখ কিছু আছে। 
দুঃখ বা কতখানি ?
চঞ্চল স্রোতে যারা ছিল সাথী
কে কোথায় আজ তারা! 
মোহনায় এসে শান্ত তটিনী
বোবা কান্নায় সব হারা।
জমেছে বুকেতে নুড়ি আর বালি 
ধীরে তাই পথ চলা,যা গেছে হারায়ে, যা গেছে ফুরায়ে
সকলি থাক শুধু না বলা।

মমতা রায় চৌধুরী/৭৯





উপন্যাস 

টানাপোড়েন ৭৯
মিলির মাতৃত্ব
মমতা রায় চৌধুরী



স্কুল  থেকে বেরিয়ে টোটোতে উঠতে যাবে, পেছন থেকে রিম্পাদি বলল 'কিরে হনহন করে একাই টোটোতে এসে উঠে পড়লি, আমাকে ডাকলি না?'
রেখা বলল' ও ডাকি নি বুঝি?'
আমার পাশে এসে বসো জায়গা আছে'। বলেই কেমন অন্যমনস্ক হয়ে গেল। আসলে রেখার মনটা খুবই খারাপ। কিছু ভালো লাগছে না। এটা যেন ওর জীবনের একটা ট্রাজেডি। যাকে বেশি ভালোবেসেছে আপন করার চেষ্টা করেছে, তখনই যেন হঠাৎ করে সবাই দূরে সরে গেছে।
রিম্পা দি পাশে এসে বসলো তারপর বলল 'অনিন্দিতার বিয়েতে যাচ্ছিস তো?'
রেখার অন্যমনস্কতার জন্য কথাটা শুনতে পেল না। রিম্পাদি আবার একটু ঝাঁকুনি দিল। রেখা রিম্পদির দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে  বলল _কিছু বলছো?'
রিম্পাদি বলল 'তোর কী হয়েছে বল তো ?আমি তো কে একটা কথা বলছি ,তুই শুনতে পাচ্ছিস না?'
রেখা বলল '  হ্যাঁ ,বলো কি বলছো?'
রিম্পাদি বলল' অনিন্দিতার বিয়েতে যাবি তো?'
রেখা বললো' ইচ্ছা আছে, দেখি কি হয় ।সব ইচ্ছে আমার  পূর্ণ হয় না।'
টোটোতে ফোন বেজে উঠল রেখার। রিং টোন 'সবাই তো সুখী হতে চায় ...'।ব্যাগ থেকে ফোন হাতরে হাতরে বের করতে গিয়েই ফোনটা কেটে গেল।
আবার রিং হতে শুরু করল 'সবাই তো সুখী হতে চায়..'। 
রিম্পাদি বলল 'কে ফোন করেছে রে ?'
রেখা বলল' কে জানে? দেখি ফোনটাকে বের করে।'
রেখা ফোন বের করে দেখলো মনোজের ফোন ।ইশারায় রিম্পাদিকে বোঝাল। 
রিম্পাদি একগাল হেসে মজা করে বলল' চোখের পলক হারায়।'
রেখা ফোনটা রিসিভ করে বললো' হ্যাঁ বলো।'
মনোজ  বলল 'তুমি কোথায় এখন?'
রেখা বলল 'কেন ?এখন আমি টোটোতে আছি ।স্টেশনের দিকে যাচ্ছি ট্রেন ধরবো।'
মনোজ বলল 'না তাই জিজ্ঞেস করছি।'
রেখা বলল 'সাধারণত তুমি এই সময় ফোন করো না তো,কিছু হয়েছে?'
মনোজকে নিরুত্তর দেখে রেখা আবার জিজ্ঞেস করল 'বলো না কিছু হয়েছে?'
রিম্পাদি রেখার কপালে চিন্তার ভাঁজ দিকে ইশারায় জিজ্ঞেস করল' কি হয়েছে?'
রেখা ইশারায় বোঝালো পরে বলবে।
 রেখা আবার জিজ্ঞেস করল 'মিলি আর ওর বাচ্চারা সবাই ঠিক আছে তো?'
মনোজ বলল 'আজ মিলিকে একটা কুকুরে কামড়েছে।'
রেখা বলল' সে কি?কী করে?'
মনোজ বলল 'আমিও জানি না। একবার চিৎকারের আওয়াজ পেয়েছিলাম ,বাইরে বেরিয়ে শুনি দোকানদারা বলছে' মিলিকে কামড়েছে।'
রেখা বলল 'ক্ষ্যাপা কুকুর নাকি?'
মনোজ বলল-'এটাই তো সংশয় আছে। কেউ বলছে পাগলা কুকুর, আবার কেউ বলছে সেরকম কিছু নয়।'
রেখা বলল 'ওর খুব লেগেছে?'
মনোজ বলল হ্যাঁ চোয়ালের দিকে, অনেকটা কেটে গেছে।'
রেখা বলল 'এ বাবা, কি হবে?'
এর মধ্যে টোটো এসে স্টেশনে থামলো। ব্যাগ থেকে কুড়ি টাকার নোট বের করে দিল।
রিম্পাদি বলল' এই তুই দিলি কেন ?আজকে তো আমার দেবার কথা।'
রেখা বলল ' আরে বাবা একজন দিলেই হল।'
রিম্পাদি বলল ' এটা কিন্তু ঠিক করলি না।'
রেখা বলল 'আমার জীবনটাই তো বেঠিক।
গাড়ির এখনো খবর হয় নি না?''
রিম্পাদি  বলল 'তাই তো মনে হচ্ছে ।সবাই প্লাটফর্মে ঘোরাঘুরি করছে।'
মনোজ তখনও ফোনটা কাটে নি। রেখা বলল 'হ্যালো'
মনোজ বলল' হ্যাঁ বল শুনতে পাচ্ছি।'
রেখা বলল' মন্টু ডাক্তারকে খবর দিয়েছ?
মনোজ বললে 'হ্যাঁ কথা হয়েছে। উনি আউট অফ স্টেশন।'
রেখা বলল 'তাহলে কি হবে?'
মনোজ বলল 'ফোনে 'কথা হয়েছে?'
রেখা বলল'' কি বললেন উনি চিন্তার কিছু কারণ আছে?'
রেখার চোখ  ছল ছল করছে।ব
রিম্পাদি বলছে' কাঁদিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।'
মনোজ বলল উনি বললেন যে ভ্যাকসিন দিয়ে রাখলে খুব ভালো হয় ।কারণ বাচ্চারা যেহেতু এখনও মায়ের দুধ খাচ্ছে। তাহলে চিন্তার কোনো কারণ থাকে না।'
রেখা বলল 'আমার মিলিটা কত ভালো মেয়ে ওর দুই দুবার অ্যাক্সিডেন্ট হল আবার এখনও এই রকম। শুধু  ওর উপরে কেন এরকম হচ্ছে বলো তো?'
কাঁদতে শুরু করলো এবার রেখা প্ল্যাটফর্মের লোকজন দেখতে লাগলো।
রিম্পাদি বলল' চুপ কর, চুপ কর।
এর মধ্যে ট্রেন ঢুকে গেল। 
রিম্পাদি বলল 'চল চল চল ট্রেনে উঠবি।'
রেখা বলল' আমি ট্রেনে উঠে তোমাকে ফোন করছি।'
বাপরে বাপ কৃষ্ণনগর লোকালে যা ভিড় হয়। 
রিম্পা দি বললো' এদিক আয় ,এদিক আয়, জায়গা রেখেছি।'
রেখা রিম্পাদির  কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। রিম্পাদি নিজে বসে রেখার ব্যাগগুলো নিয়ে বলল ' বস।'
এর মধ্যেই সামনের সিট নিয়ে দুই ভদ্রমহিলা সঙ্গে তুমুল ঝগড়া শুরু হলো। এক ভদ্রমহিলা বলছেন আপনারা ডেইলি প্যাসেঞ্জার   করেন বলে সব জায়গা রেখে দেবেন আর আমরা বসতে পারবো না, তা তো হবে না ।আপনাকে  এতগুলো জায়গা রাখতে দেবো না।'
রিম্পাদি বলল' দেখলি সোমাদির কান্ডটা প্রতিদিন এরকম করে।'
রেখার মাথায় কিছু ঢুকছে ওর মাথায় শুধু মিলি আর ওর বাচ্চাদের কথাই ঘুরছে।
মহিলা আবার বলছেন আপনি দেখতে পাচ্ছেন না আমার বেবি আছে। আমি   শিয়ালদা অব্দি যাব। দাঁড়িয়ে যাবো?'
রিম্পাদি থাকতে না পেরে বলল' সোমাদি একটা জায়গা ছেড়ে দাও না।'
সোমাদি বলল-'এই রিম্পা তুমি এরকম বলবে না তো ?আমি আগে জায়গা রেখেছি, আমি ছাড়বো কেন?'
রিম্পাদি বলল'  বাচ্চা নিয়ে আছে না ,ছেড়ে দাও না একটা জায়গা তোমার তো আরো কয়েকটা জায়গা রয়েছে।'
তোড়া ,সহেলি ...ওরা বসবে না?'
রিম্পাদি আর কথা বাড়ালো না ,সোমাদির সঙ্গে পেরে উঠবে না ।
রিম্পাদি শুধু বললো' যা ভালো ,বোঝো করো।'
সোমাদি বলল 'সেটাই তো করছি আগ বাড়িয়ে বার বার তুমি কেন কথা বলতে আসছো?
অন্যযাত্রীরা বলল ' উনি কি খারাপ কথাটা বলেছেন ?দেখছেন তো উনার কোলে বাচ্চা আছে। না কিছুতেই হবে না ।সব একজোট হয়ে বলল 'একটা জায়গা আপনাকে ছাড়তেই হবে।'
কি আর করে বাধ্য হয়ে তখন একটা জায়গা ছাড়তেই হলো।
 অন্য যাত্রীরা বলল' আপনি বসুন তো দিদি ওখানে। ভদ্রমহিলা খুব টেটিয়া আছেন। প্রতিদিনই এরকম জায়গা রাখবেন উনি।'
সোমাদি গজ গজ করতে লাগল।
রিম্পাদি  রেখাকে ধাক্কা দিয়ে বোঝাতে লাগলো আর মুচকি মুচকি হাসতে লাগল।
রেখা র তখনো চোখে জল।
রেখা আবার ফোন লাগালো মনোজকে।
মনোজের ফোনে রিং হতে লাগলো'আমি তো সুখেই আছি, যখন তুমি জানবে...।'
দুবার রিং হয়ে গেল। ফোন ধরছে না বলে রেখা উদগ্রীব হয়ে উঠল। 
রিম্পাদি বলল ' আরে বাবা, দেখ, হয় তো একটু কাজে ব্যস্ত আছে। ঠিক ফোন ধরবে।'
রেখা আবার ফোন করলো'রিং হল 'আমি তো সুখেই আছি..।'
মনোজ হাঁপাতে হাঁপাতে ফোন ধরে বললো 'হ্যাঁ বল ।'
রেখা বলল 'মন্টু দা কী বলেছেন?'
মনোজ বলল'  কালকে মন্টুদা আসবেন ভ্যাকসিন দেবেন।'
রেখা বলল 'আর ব্যাথাটা, রক্ত ঝরল সেটার কি হবে?
মনোজ বলল ' আমাদের এখানে  ওই স্ট্রিট ডগ কেয়ার  করে যারা, আরে আমাদের পাশে  থাকে ওর নাম' সন্দেশ 'ওকে বলেছি। ওরা ওদের টিম নিয়ে সন্ধ্যেবেলায় আসবে।'
রেখা বলল 'ও আসবে?'
মনোজ বলল'' হ্যাঁ আসবে ।এসে ওরাও কিছু ট্রিটমেন্ট করে দিয়ে যাবে।''
রেখা বললো 'আমার মিলির জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে গো?'
মনোজ বলল 'সে তো হবেই?'আজকে গেটটা খোলা ছিল ওই কুকুরটা নাকি বাড়ির ভেতরে ঢুকে গেছিল আর মিলি ছিল বাইরে বাচ্চাদের দিকে আসতে দেখে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। তখনই.....।'
রেখা বলল-'কে গেটটা খুলে রাখে কে জানে? যৌথ বাড়ি হলে যা হয়।'
মনোজ বলল 'তা যা বলেছো।'
রেখা বললো 'বাচ্চা গুলো কি করছে?'
মনোজ বলল'বাচ্চাগুলোকে এই তো সাড়ে চারটেতে দুধ রুটি খাওয়ালাম।
মিলির কাছে যাবে বলে ওরা চিৎকার করছে।'
রেখা বলল 'ওদেরকে সামলানো মুশকিল। সারাদিনে মার কাছে যায় নি ছটফট তো করবেই।'
মনোজ বলল 'হ্যাঁ ,কিন্তু এখন ওদেরকে ছাড়া যাবে না মায়ের কাছে।"
রেখা বললো 'ঠিক আছে। আমার মিলিটা কি করছে?'
মনোজ বলল 'এখন ঘুমোচ্ছে'।
ইতিমধ্যেই ট্রেন এসে মদনপুরে থামল।'
রিম্পাদি বলল 'নে আর কথা বলতে হবে না। বাড়ি  গিয়ে দেখতে পাবি ।এর পরেই তো কল্যাণী স্টেশন।'
রেখা বললো 'হ্যাঁ গো ,রিম্পাদি কি বলবো তোমায় ,বলো?'
রিম্পাদি বলল' আমাকে কিছু বলতে হবে না। আমি সব বুঝতে পারছি, তোর মনের অবস্থা।'
এরমধ্যেই ট্রেন স্টেশনে থামলো ।রেখা তার আগেই সিট  থেকে উঠে গেটের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। ট্রেন থামলে রেখা নামল  ট্রেন থেকে। জানলা দিয়ে রিম্পা দিকে হাত নাড়লো ।'
রিম্পাদি বলল 'সাবধানে যাস।'
রেখা বিধানের অটো দেখতে পেয়ে বলল' এই বিধান দাঁড়াও ,দাঁড়াও ,যাব।'
বিধান ব'লল 'ও দিদি তাড়াতাড়ি আসুন বুক হয়ে যাবে।'
হন্তদন্ত হয়ে অটোতে উঠে বসলো। বসার সঙ্গে সঙ্গেই অটো ছেড়ে দিল।
রেখা শুধু ভাবছে' কত তাড়াতাড়ি বাড়িতে পৌঁছাবে বাচ্চাদের দেখবে? মিলিকে দেখবে।'
বিধান বলল' দিদি ,আজকে আপনি খুব চিন্তায় আছেন?হাসি মশকরা করছেন না।সব ঠিক আছে তো?'
রেখা বলল 'এমনি মনটা একটু খারাপ আছে বলে ভালো লাগছে না কথা বলতে ।টায়ার্ড ও আছি তো?'
বিধান বলল 'হ্যাঁ, সে তো ঠিকই ।সারাদিনের ধকল।'
বিধান গেটের কাছে নামিয়ে দিল।
রেখা ভাড়া মিটিয়ে গেটটা খুলল। তারপর কলিং বেলটা বাজাল" জয় গনেশ, জয় গনেশ ,জয় গনেশ দেবা।"
মনোজ দরজা খুললো রেখা তাড়াতাড়ি ঢুকে গিয়ে আগে বাচ্চাদের দেখলো আর বলল আবার মিলি কোথায় আছে?'
মনোজ বলল' মিলিকে এ জায়গায় না রেখে অন্য জায়গায় ওকে শোবার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।'
রেখা মিলির কাছে গিয়ে মিলিকে ডাকতেই মিলি ওর যেখানে লেগেছে, সেই জায়গাটা দেখাতে লাগলো ।সত্যিই যে কতটা কাছের ,ভালোবাসার হলে তবে এই উপলব্ধি করা যায় । রেখা অবাক হয়ে গেল । একটা পশু কি করে তার যন্ত্রণার কথা ,সে কিভাবে প্রকাশ করছে।
রেখা মিলির গায়ে হাত বুলাতে লাগল আর বলল' না মা ,তোমার কিচ্ছু হবে না ।তোমার সব কষ্ট চলে যাবে দেখো। মিলির ঐরকম করুণা অবস্থা আর ওর  দেখানোর ভঙ্গি দেখে রেখার চোখে জল এসে গেল। রেখা শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল ঈশ্বর যেন কিছু না হয় ওর।ওকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দিও ।আর যেটা ভয় পাচ্ছি সেটা যেন একদমই না হয়।'
মনোজ রেখার জীবনের পরিপূর্ণতা মিলি আর ওর বাচ্চারা ।তাই মিলিদের কিছু হলে মনোজ রেখা কিছুতেই স্থির থাকতে পারে না ‌আর রেখা তো নয় ই ।রেখার হৃদয়ের শূন্যতা  কানায় কানায় পূর্ণ করে দিয়েছে মিলি আর ওর বাচ্চারা। কিছু হলে রেখা র ভেতরটা কুরে কুরে খায়। মিলিতারি সন্তানদের বাঁচাতে আজকে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছে। একেই বলে মাতৃত্ব।

শামীমা আহমেদ/পর্ব ৪২




শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৪২)
শামীমা আহমেদ 



বেশ কয়েকদিন হলো শায়লা আবার  সেই আগের মতই কর্মচঞ্চলতায় ফিরে গেছে।সেই অনিশ্চয়তার দিনগুলির অবসান হয়েছে।এখন সে  নিয়মিত ফুল গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে। খাঁচায় পোষা পাখিগুলোকে গান শোনাচ্ছে।রাতে ঘুমুতে যাওয়া আগে নিজের বেশ যত্ন নিচ্ছে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে মায়ের জন্য অপেক্ষা করছে। নাস্তার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে উঠছে।মায়ের সাথে টুকটাক কথায় কথায় তার অসুস্থতার সময়ে সংসারের যে বেহাল দশা হয়েছিল তা জানছে।শায়লা নিজেও বুঝে উঠতে পারছে না শিহাবের জন্য কেন সে এতটা উতলা হয়ে উঠেছিল! সে কথা ভাবলে কেমন একটা লজ্জাবোধও  কাজ করে। শিহাবতো তাকে আগেই সতর্ক করেছিল যেন দুজনার মাঝে কোন চাওয়া পাওয়ার ইচ্ছেরা উঁকি না দেয়। শায়লা নিজেকে নিজেই চিনতে পারছে না।নাহ! এভাবে কারো ইচ্ছার বাইরে তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা তার ঠিক হয়নি।কিন্তু আজকাল শিহাবের ফোনালাপ, মেসেজ কেমন যেন অন্যকিছুর আভাস দিচ্ছে।কেমন যেন একটা বন্ধনের আলাপন। তবে কি শিহাব নিজের  প্রতিজ্ঞা ভেঙে তার প্রতি দয়া দেখাচ্ছে।যদি সেদিন মরেই যেতাম তবে তো সে-ই দায়ী থাকতো শায়লার এই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার জন্য।তাই কি তার এতটা উদ্বেগ উৎকন্ঠা! কিন্তু শিহাবকে সে যতখানি জেনেছে সে কখনো শায়লাকে কোন ব্যাপারে দয়া দেখানো বা মিথ্যে কোন আশ্বাস দিয়ে কিছু প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষার সম্ভাবনা দেখায়নি। শিহাবের কথার কখনো ভিন্ন অর্থ হয়নি।সে যা বলেছে সবই খুবই পরিষ্কার  এবং সরাসরি বলেছে। তার প্রকাশভঙ্গীর কখনো দুটো মানে হয়নি। কখনো অলীক স্বপ্ন দেখিয়ে মিথ্যে জাল বুনেনি। চারিদিকে প্রেমিক প্রেমিকাদের অস্থিরতা আর প্রতারনায় যেখানে প্রেম ভালবাসাটা আজ একটা নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু শিহাবের মাঝে তেমন কোন ছলনা বা কপট কিছু তো শায়লা দেখেনি।নিজের জীবন, ভালবাসা, স্ত্রী, সন্তান সব কথাইতো সে অকপটে জানিয়েছে।তার প্রতি আস্থা রেখেছে।সব কথা শায়লাকে জানিয়ে মনকে ভারমুক্ত করেছে।সেও তো তবে তাকে একটা ভরসাস্থল ভেবেছে।
এই ভেজালের ভীড়ে শিহাবের মত শুদ্ধতা, তাই তো শায়লার মনকে এতটাই দখল করে নিয়েছে।শায়লার সরল মনে এমন একজন মানুষের সাথে পরিচয়।আর এ জন্যই শায়লা শিহাবের প্রতি এতটা নির্ভরতায় ডুবেছে।
শায়লা এখন আর পিছে ফিরে তাকাতে চায়না।সে তার মনের গহীনের ডাক শুনেছে। আর তাতে শিহাবেও সাড়া মিলেছে।শায়লা সব পিছুটান  উপেক্ষা করে সে, শিহাব,হ্যাঁ,শিহাবকেই সে তার জীবন সঙ্গী করে পেতে চায়।
রাত প্রায় সাড়ে নয়টার দিকে রাহাত অফিস থেকে বাসায় ফিরলো।হাতে  দুটো আড়ংএর ব্যাগে  দুটো শাড়ি নিয়ে।রাহাত নিজের ঘরে না গিয়ে শায়লার রুমে নক করে মায়ের ঘরে গেলো। মা দোয়ার বই পড়ছিলেন।রাহাতকে দেখে থামলেন। রাহাত ব্যাগ দুটো বিছানায় রাখল।শায়লা ততক্ষনে মায়ের রুমে চলে এসেছে। মা আর শায়লার হাতে শাড়ি দুটো তুলে দিলো। দুজনেই ভীষণ অবাক হলো! যদিও দুজনেই বলে উঠলো কেন এখন শাড়ি? কী দরকার ছিল? যদিও শাড়ি উপহার পেলে কোন বাঙালি  মেয়ে ভেতরে আনন্দিত হবে না তা কিছুতেই হতে পারে না। রাহাত জানতে চাইল, শাড়ি পছন্দ হয়েছে? দুজনেই মাথা ঝুকালো। কেবল শায়লাই বলে উঠলো, আমার খুব পছন্দ হয়েছে ভাইয়া।আর মায়েদের তো সেই একটাই কথা কেন এত টাকা নষ্ট করছো?তবে এসব কথায় রাহাত একেবারেই  কান দেয় না। অন্য রসংণংে গিয়ে রাহাত 
শুধু বললো, আপু আজ কী রান্না করেছ? খুব খিদে পেয়েছে, শিগগীর খেতে দাও।এ কথা বলেই রাহাত নিজের রুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। শায়লা মায়ের শাড়িটা আলমারীতে তুলে রাখল আর তার শাড়িটি নিয়ে ঘরে চলে এলো। ঘরে এসে শাড়িটি খুলে নিজের পরনে একটু জড়িয়ে নিয়ে  আয়নায় নিজেকে দেখে নিলো। খুব উজ্জ্বল একটা নীল রঙ! শিহাবের পছন্দের রঙ। শায়লা কল্পনায় শাড়িটি পরে একঝলক শিহাবকে ভেবে নিলো।পরক্ষণেই রাহাতের কথা মনে পড়তেই দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।রান্নাঘরে গিয়ে ডাইনিং এ খাবারের আয়োজনে ব্যস্ত হলো।মাকেও ডেকে নিলো। চলে আসো মা আজ আমরা একসাথে খাবার খেয়ে নেই।মেয়েকে স্বাভাবিকতায় ফিরতে দেখে মা আল্লাহর দরবারে হাজারবার শুকরিয়া জানাচ্ছে। 
রাহাত ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ এসে চেয়ারে বসে পড়লো।খুব গোপনে আপুর গতিবিধি  দেখতে লাগলো।যাক! আপু আবার আগের মত হাস্যমুখে ফিরে এসেছে।
তিনজনই একসাথে খেতে বসলো।খাওয়ার এক পর্যায়ে রাহাত মাকে বললো,কাল আমার অফিস ছুটি।সপ্তাহের মাঝে ছুটি? মা অবাক হলো! রাহাত জানালো কাল  সারাদেশেই একটা সরকারী ছুটির জন্য ছুটি থাকছে। তাই চলো কাল দুপুরের পর তুমি আর আমি নায়লাকে দেখে আসি।  মূর্শেদকেও পাওয়া যাবে।শায়লা আপন মনে খাবার খাচ্ছে।আপু,তুমিও চলো কাল আমাদের সাথে,শায়লার মনযোগ আকর্ষণ করতে রাহাত বললো।

কোথায়?
বুঝা গেলো,রাহাতের কোন কথাই শায়লা শোনেনি।আর কেন যে এত উন্মনা সেতো আর রাহাতের চেয়ে ভালো কেউ জানে না।
রাহাত জানালো,নায়লার বাসায়।
নায়লার বাসায় যেতে  শায়লা বরাবরই একটু
নিম রাজী থাকে। 
না তোমরা ঘুরে আসো। আমি পরে একদিন যাবো।
রাহাত এব্যাপারে আর বেশী পিড়াপীড়ি করলো না।আপুর এখন একটু একা বা নিরিবিলি সময় প্রয়োজন। নিজের সাথে বা শিহাব ভাইয়ার সাথে বোঝাপড়াটা করে নিতে।
ঠিকাছে আপু,তুমি মাকে তৈরি করে দিও।আর নায়লার জিনিসপত্রগুলো গুছিয়ে দিও।
শায়লা মাথা ঝুকিয়ে সম্মতি দিলো।খাবার শেষ করে যে যার রুমে চলে গেলো।
শায়লার মনে আজ অন্যরকম এক উন্মাদনা।রাহাতের এনে দেয়া নতুন শাড়িটি যেন আরো তাতে বেশি আনন্দ যোগ করলো!বারবার আয়নায় নিজেকে আর শাড়িটিকে দেখছে।
আচ্ছা শিহাবের কি শাড়িটা পছন্দ হবে?সেই যে সেদিন শিহাব বলছিল,একদিন দূরে কোথায় বেড়াতে নিয়ে যাবে তবে সেই দিনই এই শাড়িটা পরবে।এমনটি ভাবতে ভাবতেই  শিহাবের কল এলো।
আজ কেমন আছো শায়লা?
আচ্ছা আমি কি  এখনো অসুস্থ নাকি? 
না,তবুও যে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে।
বেশ করেছি।আমাকেও তো তুমি কম আতংক দাওনি।
শায়লা আমার সেদিনের কথাগুলোকে তুমি ভুল ভাবে নিয়েছ।
আমি এ ধরনের কথার জন্য সেদিন প্রস্তুত ছিলাম না।
আমি তোমার ভালো চেয়েছি,তাই বলেছি।
তাহলে আমাকে বুঝতে তুমি ভুল করেছো শিহাব।
শিহাব আর সেই দিনে,পিছনের দিকে যেতে চাইল না।
শিহাব কথার পরিবেশ পালটে নিলো।
আচ্ছা শায়লা তুমি কি কাল ফ্রি আছো?আজ বাসায় তোমার মা আর রাহাতের অনুমতি নিয়ে রেখো।কাল বিকেলে আমি তোমাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বেরুবো।কাল আমার অফিস বন্ধ।একটু সময় পাওয়া গেলো।
তুমি অসুস্থতা থেকে উঠেছো,তোমাকে একটু  খোলা জায়গায় নিয়ে যাবো।
শায়লা বললো কিন্তু ছুটির দিনে তোমার বাবা মা আরাফতো অপেক্ষায় থাকে।
হ্যাঁ,তা থাকে।তবে ওদের শুক্রবারে দেখতে যাবো।এখন আরাফ বাসায় নেই।ভাবীর সাথে ভাবীর বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছে।আরাফ ওটাকেই ওর নানাবাড়ি মনে করে।
যদিও  আমাদের বাসার একই রোডে ওর দাদা আর নানাবাড়ি কিন্তু আমরা আজো তা জানাই নি। শায়লা, এ প্রসঙ্গে কাল কিছু কথা তোমায় বলবো।তুমি  মানসিক প্রস্তুতি রেখো।আর হ্যাঁ,সকালে একটু নিজেকে ফ্রেশ করায় ব্যস্ত থাকবো।কল করে না পেলে আবার টেনশন করোনা।আমি লাঞ্চের পরে তোমার সাথে যোগাযোগ করবো। এখন ঘুমিয়ে পড়ো।রাত জেগোনা।আমিও এই একটা মুভি দেখে এখুনি ঘুমিয়ে পড়বো।বাই।
শায়লা নিঃশব্দের গভীরতায় শিহাবকে অনুভব করে নিলো।কী এক মায়ার টানে শিহাবকে খুব কাছের একজন মানুষ মনে হতে লাগল।

চলবে….

শান্তা কামালী/৫১ পর্ব





বনফুল
শান্তা কামালী
(৫১ পর্ব ) 


এভাবেই সময় এগিয়ে যেতে লাগলো... সৈকত ঢাকা আসার কিছু দিন পরের কথা, অলিউর রহমান বদলি হয়ে ঢাকায় নিজের বাসায়  ওঠেন। মাস দু'য়েক পরে ঘুমের মধ্যে স্ট্রোক করে এক সাইড প্যারালাইস্ট হয়ে যায় সৈকতের মায়ের। অলিউর রহমান সাহেব ভেঙে পড়লেন!  একদিকে অফিস অন্য দিকে স্ত্রী। রাহেলা খাতুনের সেবা যত্ন করেন বাপ ছেলে দু'জনেই। 
মাঝে মধ্যে অহনাও এসে সেবা যত্ন করে।  রান্না ঘরে খালাম্মাকে লোকমা তুলে খাইয়ে,ঔষধ খাইয়ে তবেই অহনা বাসায় যায়। 
মধ্যে মধ্যে রাহেলা খাতুন অহনার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন পরম মমতায়.... 
একদিন অলিউর রহমান অফিস থেকে এসে স্ত্রীর কাছে বসতেই, রাহেলা খাতুন স্বামীকে বললেন অহনা সৈকতের বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দেন,পুরুষ মানুষ বলে কথা।
এতো কিছু মাথায় আসে না কাজের মধ্যে, তাই অলিউর রহমান সপ্তাহ খানেকের ছুটি নিলেন।পরদিন বিকালে অহনাদের বাসায় গেলেন। অলিউর রহমান যাবেন আগেই  বলে রেখেছিলেন।  সেই কারণে মনিরুজ্জামান সাহেব, মানে  অহনার বাবা বাসাতে ই ছিলেন। অলিউর রহমান পরিচয় পর্ব শেষ করে, কোনো রকম ভনিতা না করে বললেন .... আপনি যদি রাজি থাকেন  তাহলে অহনা সৈকতের বিয়েটা অপেক্ষা করে আর ঝুলিয়ে রাখতে চাই না। 
অহনার বাবা বললেন ছেলে মেয়ে যেহেতু একে অপরকে ভালোবাসে সেইখানে না করে কি করব বলেন। 
সৈকতের বাবা বললেন, আপনাদের কোনো দাবিদাওয়া আছে? 
 অহনার বাবা মনিরুজ্জামান সাহেব  বললেন, জ্বি... না ভাই সাহেব আমাদের কোনো রকম দাবিদাওয়া নেই। সৈকতের বাবা বললেন আলহামদুলিল্লাহ......তাহলে কথা পাক্কা।

শহিদ মিয়া বাহার





পরখ কর এ আমাকে 


এখানে একটুখানি বস, চোখের শার্শিতে
রাতের পল্লবী হৃদয় ছুঁয়েছে আমার শরীর 
ওখানে  হাত রাখ, ছুঁয়ে দেখ 
তোমাকে পাবে
কত যতনে  তোমাকে রেখেছি 
শো-কেসে যেমন রাখে প্রিয় প্রসাধনগুলো
একটুখানি বসলেই পেয়ে যাবে বাসন্তিক চোখের শালুক, 
তোমার চুলের তরঙ্গ নহর
আমার অতনু শরীর,  
থরে থরে সাজানো 
সুগন্ধি ভালবাসার পূর্ণ-পেয়ালা শিশির
শিশিরের ভাঁজে ভাঁজে 
 মুক্তা  দানাদের আলোকিত জলমহল ।

একটুখানি হাত ধরো 
অথবা যতটুকু তুমি চাও 
ছুঁয়ে দেখ এ আমাকে 
দেখ তুমি আছো এ হাতে, 
হাতের তালু, তর্জনিতে...
হৃদয়ে-হৃদয়ে
ছুঁয়ে দেখ
পরখ কর এ আমাকে
যতখানি তুমি চাও আমি তাই আছি কিনা। 

এখানে একটুখানি বস 
বৈষ্ণবী হাতে ছুঁয়ে দেখ বুকের চৌকাঠ 
তোমার প্রতীক্ষায়
মন্জিলে মন্থিত চন্দ্রিমা নিলয় আমার।

রাবেয়া পারভীন/২য়পর্ব




দুরের বাঁশি 
রাবেয়া পারভীন
( ২য়পর্ব)



প্রথম  দেখাতেই  শুভকে ভালো লেগে গিয়েছিলো লাবন্যর।  শুভর সাথে যখন প্রথম কুশল বিনিময়  হচ্ছিলো  কি যেন এক অজানা ভালোলাগায় বুক কাঁপছিলো  লাবন্যর। তারপর  কখন সেটা ভালোবাসা হয়ে গেছে  লাবন্য বুঝতেই পারেনি। অথচ  শুভর খুব নিঃস্পৃহ  ভাব। যখনি শুভর দেখা পেত কথা হতো  লাবন্যর চোখের পাতায় কাঁপন  ঠোঁটে কাঁপন  যা বলতে চাইত তা না বলতে পারার কষ্ট  লাবন্যকে উদাসীন  করে তুলতে লাগলো। মনে মনে বলত
-আচ্ছা শুভ  তুমি কি আমার কিছুই বোঝ না ?  নাকি অন্য  কোথাও  ডুবে আছো তুমি ?   
ইচ্ছে করেই কিছুদিন  খবর নেয়না  শুভর । নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে চেষ্টা করে । সে আর খবর নিবেনা। দেখবে ওর মনে পড়ে কিনা লাবন্যকে। একসপ্তাহ কেটে গেল  শুভর দেখা নেই।  অভিমানী চোখে জল গড়ায়। নিজেকে বোঝায় লাবন্য 
- দুর কোথাকার কে ?  না নিল খোঁজ তো বয়েই গেল। সে আমার কে ? মন বলে কিছু নেই লোকটার।
মনটা  যখন ভেংগে পড়ছিলো তখন হঠাৎ শুভর  সাথে দেখা। সেই  সদা  হাস্যময়  মুখ। 
- কেমন  আছেন  লাবন্য ? 
মুহূর্তেই  সব অভিমান  উধাও হয়ে গেল।
- ভালো আছি  আপনি ভালো আছেন তো ? 
স্মিত  হেসে উত্তর দেয় শুভ
- ভালো আছি । তবে অনেকদিন  আপনার দেখা নেই খুব মিস করেছি আপনাকে।  
 -সত্যি ???
- হ্যাঁ সত্যি,  কেন নয়।?   
বিস্ময়ের  ঘোর কাটেনা  লাবন্যর।



চলবে...