০১ মার্চ ২০২২

কবি শরিফুর রহমান এর কবিতা




চলো গাঁয়ে ফিরি
শরিফুর রহমান

ফিরে যেতে ইচ্ছে করে গাঁয়ে
ভাল্লাগেনা স্বার্থপর -এ শহর, 
মেঠো পথে হাঁটবো খোলা পায়ে
মন টেকে না অট্টালিকার 'পর।

সোঁদা মাটির গন্ধ ভালো লাগে
ভাল্লাগেনা কালো বিষের ধোঁয়া,
সবুজবীথি হৃদয় মাঝে জাগে
মন স্বাধে না স্বপ্ন অাকাশ ছোঁয়া।

গাঁয়ের মানুষ বড্ড সরল মনা 
ভাল্লাগেনা মুখোশ পরা আপন,
পল্লী মায়ের বুকে ফলে সোনা
মন চাহে না শহরঘ্যাষা যাপন।

চলো ফিরি নীল-সবুজের কোলে
ভাল্লাগেনা হাজার সিঁড়ির তোপে,
গাঁয়ের স্মৃতি প্রাণে দোদুল দোলে
মন থাকে না ইট-পাথরের খোপে।

মমতা রায়চৌধুরীর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ১১৭





উপন্যাস 


টানাপোড়েন১১৭
ভালো থেকো
মমতা রায়চৌধুরী

সবদিক থেকে একটা কালশিটে পড়া চাপা কষ্ট  যেন অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ছিল ।যেমন করে বেগুন পোড়ালে উপরটা কালশিটে পড়ে যায় আর ভেতরটা নরম।
মনোজের ঘরে সকালবেলা উঁকি দিয়ে ফোনের কথাবার্তাগুলো ভাসা-ভাসা রেখার কানে এসেছিল। স্কুলে গিয়ে সারাদিন সেই কথাগুলো তার মনের আকাশে উঁকি দিয়ে গেছে ।একটা অদম্য কৌতুহল যেনো কাজ করেছে ,ঠিক যেমন করে সামুক যখন ঢাকা খোল থেকে বেরোয় ঠিক তেমন। স্কুলে কাজ করেছে ঠিকই মন বসাতে পারেনি। বারবার শুধু মনে হয়েছে দাম্পত্য জীবনের রসদগুলো কি এভাবেই ফুরিয়ে যায়?
টেবিলে গাদাগুচ্ছ প্রোজেক্টের খাতা জমেছে। 
বেশ কয়েকটা খাতা দেখার পর আর মনেই হচ্ছে না খাতাগুলো দেখে। বারবার মনের ভেলায় পাড়ি দিচ্ছে বেখেয়ালি মন।কর্তব্যনিষ্ঠ শিক্ষিকা হিসেবে সুনাম আছে তার স্কুলে। সারাদিন হয় বই, না হয় ক্লাস, কিছু-না-কিছু বিদ্যালয় সংক্রান্ত কাজ রেখা করতেই থাকে। এজন্য  সারাদিন কাজের শেষে বাড়িতে ঘাড়ে ব্যথা নিয়ে ফেরে। ফিরে কিন্তু সে ঘাড়ের ব্যথাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়। বাড়িতে এসে তার কর্তব্যের কোন অবহেলা হয়না ।রেস্ট বাদ দিয়ে সাংসারিক কাজকর্ম করে যায় নিপুণভাবে ।শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা যেমন সাংসারিক জীবনে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি ,তেমনি করে স্কুলের ক্ষেত্রেও সূর্য ওঠার মতো দৈনিক চিত্র লক্ষ্য করা যায়। শুধুমাত্র নজরের বৃত্ত থেকে সরে যায় তার শরীরের ক্ষেত্র।
শরীরটা যেন তাকে সাথ দিচ্ছে না কিন্তু মনের জোরটা তার এতটাই যে সেগুলোকে উপেক্ষা ক'রে চলে। ট্রেনে উঠে শরীরটাকে এলিয়ে দেয় সিটের সঙ্গে।  আজ যদি রিম্পাদি থাকতো তাহলে অন্তত তার সহমর্মিতার ছোঁয়াটুকু পেতো।হাতটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেখার পিঠে এসে রাখত। বসে বসে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে ।আজ কোথায় রিম্পা দি, কোথায় রেখা। আজও চলছে খাওয়া ,চলছে সবার সঙ্গে হাই-হ্যালো, শুধু পাচ্ছে না মনের খোরাক। তার মাঝেও তৃষ্ণার্ত চাতকের কাছে যেমন এক ফোঁটা বৃষ্টি অত্যন্ত মহার্ঘ্য, ঠিক তেমনি তার তৃষ্ণার্ত মরুভূমিতে তার নেশা লেখা ,লেখনি শক্তি। লেখার মধ্যে দিয়েই ফুটিয়ে তোলে দৈনন্দিন জীবনের চাওয়া পাওয়া দুঃখ কষ্ট ছোট ছোট সুখানুভূতি ,খুনসুটি ।এ সমস্তই তর মনে এসে সঞ্চিত হয়। ট্রেনে আস্তে আস্তে এসবই ভাবছিল রেখা ।
হঠাৎই ফোনের আর্তনাদ শোনা যায়। প্রথমে রেখা ফোনটা রিসিভ করেনি কিন্তু ফোনের আর্তনাদে এবার তাকে ফোনটা ধরতেই হল।
 বলল  'হ্যালো'
ম্যাডাম কালকের পর্ব টা পাঠান নি ।
একটু অবাক হয়ে রেখা বলে' হ্যাঁ পাঠিয়েছি তো'।
হ্যাঁ ,পাঠিয়েছেন। কিন্তু আপনি বলেছিলেন যে দু একটা জায়গায় ভুল আছেএকবার ফ্রেশ করে পাঠাবে ন?'
জিভ কেটে' ও হ্যাঁ ভুলে গেছি ।সত্যি ভীষণ ভাবে দুঃখিত।'
গাব ফল খেতে গিয়ে কাকের গলার ভেতরে যখন আঁটি ঢুকে যায় তখন সে ভাবে, সে খুব ভুল 
করেছে l রেখার ও ঠিক তেমনি অবস্থা হয়েছিল।
ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে ভদ্রলোক বললেন' না ঠিক আছে ।আজকে আপনি তাহলে দুটো পাঠিয়ে দিন।'
'ঠিক আছে। তাই হবে।'
ফোনটা কেটে মনে মনে ভাবছে' বললাম তো পাঠিয়ে দেব কিন্তু খুব চাপ আছে।
শরীরটা তো সাথ দিচ্ছে না। কিন্তু মনের জোর হারালে তো হবে না এই লেখাযই তাকে প্রাণশক্তি জুগিয়ে যাচ্ছে । কাছেই লেখা কমপ্লিট করতেই হবে।'
এসব ভাবতে ভাবতেই তার ভাবনা উড়াল থামিয়ে দেয় ফোনের আর্তনাদ।
একে  তো ট্রেনেতে ভিড় ।তাও রক্ষে যে জায়গাটা পাওয়া গেছে । ব্যাগ হাতরে হাতরে আবার ফোনটা বের করল। বের করতে করতেই গেলো ফোনটা কেটে ।
ফোনটা বের করে নম্বরটা চেক করতে  দেখতে যাচ্ছে কে ফোনটা করেছে ?এমন সময় আবার ফোন বেজে উঠল ।
'ও বাবা, এত রিম্পাদির ফোন।'
"হ্যালো'
"কি ব্যাপার রে ।কোথায় আছিস?'
এখান থেকে চলে যাবার পর তুমি যেন সব ভুলে গেছ। এ সময় কোথায় থাকতে পারি বলো?'
রিম্পা দি তো হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে' হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস ।আমি তো বাড়িতে ।তাই আমি ভাবলাম তুই ও বাড়িতে।'
' তুমি এ সবই ভাবতে থাকো ।কাছে পিঠে চলে গেছ তো ,ওই জন্য বলো ?'
'হ্যাঁ ,এবার তুই ট্রেনে। বুঝতেই পারছি ট্রেনের আওয়াজ, ভিড় ।তারমানে স্কুলে গেছিস ।একদম ঠিক ।
আচ্ছা পিকনিকে যাবি তো ?যেতে কিন্তু হবে ।না করতে পারবি না, আর মনোজকে বলেছিলি?'
' ওর কথা ছাড়ো তো  যেতে হলে আমি যাব কিন্তু আমার শরীরটা জানো তো কিছুদিন ধরে সাথ দিচ্ছে না।
" আরে ছাড় না  মনটাকে ঠিক রাখ , শরীর ঠিক হয়ে যাবে। বলেই হো হো হো করে হাসতে লাগলো।
তারপর বলল' তোর সঙ্গে  যতই হাসি-ঠাট্টা করি না কেন ।তবে একবার তোর ডাক্তার দেখিয়ে নেয়া উচিত। মনোজকে বল। আমি কি তোকে নিয়ে যাব?'
রেখা বলল 'সে দেখা যাবে  ।
দেখি তোর দেখা যাক সেটা কবে হয় আবার এক যুগ পার করে দিস না যেন। আচ্ছা শোন
'তোদের মিড ডে মিল কবে থেকে ?'
ভালোকথা মনে করেছো এই মিড-ডে-মিল নিয়েএকটা না যা কান্ড হয়েছে না, তোমাকে না বললে আমার পেটের ভাত হজম হচ্ছে না ।যদিও এখন পেটে ভাত নেই । ছুঁচোতে পেটে  ডন 
মারছে। বাড়িতে গিয়ে খাবার খেতে হবে।।
 তবুও বলছি অনুরাধা দি   নাকি অসুস্থ । কাল যখন বেরোচ্ছি  ট্রেন ধরবো  বলে তখন বড়দি পঞ্চমীর হাত দিয়ে একটা কপি পাঠিয়ে
 দিলেন ।
আমি বললাম কি এটা?
 ও বলল 'আমি কি দেখেছি নাকি? বড়দি দিতে বললেন তাই আমি ছুটে এসে দিচ্ছি 
আপনাকে ।"
'ওদিকে বড়দি শুনতে পেয়ে জানলা দিয়ে বলছেন এই লেখাটা পঞ্চম শ্রেণীর পোটাল থেকে একটা মেয়েদের লিস্ট বার করে আর ফোন নম্বর বার করে তোমাকে দেয়া হয়েছে। অনুরাধা দি তো অসুস্থ ।মিড-ডে-মিল সংক্রান্ত মেসেজ পাঠাতে হবে ,সঙ্গে ওদের ফোন করে দিতে হবে একটু একটু করে দিও   ।'
'কি বলি বলো তো ?  না করতে পারি না ।আমার হয়েছে যত জ্বালা।'
' সে তো বুঝলাম ।ব্যাপারটা কি হয়েছে
 বাবা  বল না আমার জানতে ইচ্ছে করছে। আমার আর তর সইছে না। উগলে দে তাড়াতাড়ি।'
কোন মা কুকুর তার সন্তানের জন্য খাবার সঞ্চয় করে এনে যেমন উগলে দেয়, উদগ্রীব হয়ে থাকে তাকে খাবার খাওয়ানোর জন্য। ঠিক সে রকম।
রিম্পা দি এমনভাবে কথাগুলো বলল যেন মনে হচ্ছে মনের ভেতরে একটা আকুলি-বিকুলি চলছে কি মজার কান্ড হয়েছে ,সেটা শোনার জন্য। একজন গার্জেনকে যখন ফোন করা হলো। ফোন ধরে কি বলল ' জানো?'

রিম্পা দিয়ে একদম যেন জাঁকিয়ে বসেছে শোনার জন্য কোন দিকে ধ্যান নেই ।তপস্বী যেমন তপস্যা করতে বসলে তার অন্য কোন দিকে ধ্যান থাকে না ।ঠিক সে রকম।'
আরে জানবো কি করে ?কখন থেকে শুধু জানো জানো বলছিস ।বলে ফেল না।'
যেই ফোনটা ধরল ধরে বললো
"হ্যালো"।
জান রিম্পা দি যখন আমি বললাম ভুবন মোহিনী গার্লস হাই স্কুল থেকে বলছি।
 তখন ঐ গার্জেন কি বলল 'জানো ?
 বললো  'কেন ফোন করেছেন বটেক?'
 যখন আমি বললাম' আপনার মেয়ের নাম লক্ষী মুর্মু।'
গার্জেন বলল ' ত আছে বটে।'
আমি বললাম' সামনের মাসে 3 তারিখে মিড ডে মিল দেওয়া হবে।'
গার্জেন একটু অবাক হয়ে বলল''কি আছে বটে?'
আমি যতদূর বুঝলাম এ গার্জেন এর ছেলেমেয়েদের পড়া এবং স্কুল সংক্রান্ত কোন বিষয়ে যোগাযোগ নেই  ।
আমি বললাম চাল আরো আনুষাঙ্গিক বিষয় গুলো  দেয়া হবে।'
সবথেকে অবাক লাগল  কি 'জানো ?'
রিম্পা দি বললো ' কি?'
গার্জেন আমাকে বলছে' তু লিয়ে লে বটেক।,'
আমি তখন বললাম' কি বলছেন আপনি ?নিয়ে নেব মানে?'
তখন বললো 'আমাকে জ্বালাস নি তো বটে।'
আমি বুঝলাম যে আমার কথা বলাটাই বৃথা।
' সে তো রীতিমতো নেশায় বুঁদ হয়ে আছে।'
এমন সময় ফোনে আওয়াজ পেলাম ওর বউ এসে বলছে' তু কার সঙ্গে কথাটো বুলছিস?
দেখি বলছে 'তু কথাটা ক্যানন বুল না'।
তখন সেই মহিলা ফোনটা নিয়ে বলছে 'কে বুলছিস?'
তখন আমি আবার বললাম' আমি স্কুল থেকে বলছি।
তখন দেখলাম একটু সপ্রতিভভাবে বলল 'ম্যাডাম আছিস কেনে?'
আমি বললাম, ' হ্যাঁ, মিড ডে মিল এর জন্য বলছিলাম।'
'কোন দিন টা তো যেতে হবেক দিদিমুনি'
"সামনের মাসের 3 তারিখে।'
"উর কথাটো তো কিছু মুনে করিস নি।
 ও তো লেশা ভান করে আছে লা?
আমি ঠিক পৌঁছেটো  যাবক।'
' ঠিক আছে।'
 ফোনটা নামিয়ে না আমি কি করব হাসবো 
না , না কাঁদবো ,কি করবো? আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না ।'
ওই লোক যখন বলল যে তুই লেলে  বটেক।
আমি ভাবছিলাম যে বড়দি কি দায়িত্ব 
দিলেন ।আজকাল কিনা করতে হচ্ছে আমাদেরকে। '
বললাম বড়দিকেও ।
বড়দি বললেন 'তাহলেই ভাবো। তবে কিছু ভেবো না রেখা ।মানুষের সঙ্গে জনসংযোগটাতো 
হচ্ছে বল। কত ধরনের বিচিত্র মানুষ ,তাদের জীবনযাপন ,তাদের কথা বলার ভঙ্গি স,বকিছুই আমরা জানতে পারছি এটাও দরকার আছে।
সম্পর্কে আরও সমৃদ্ধ হতে পারছি আমরা।'বড়দি আমার চোখ মুখের অবস্থা দেখে নিজেও হাসতে শুরু করলেন আর পিঠে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন' এগিয়ে চলো ,এগিয়ে চলো।'
 রিম্পা দিয়ে বলল' কি কান্ড রে।'
তবে একটা কথা বলি তোর কিন্তু উপন্যাসের চরিত্রগুলো তোর চোখের সামনে ভিড় করছে এবং তাদের ডায়লগগুলো এটাই কাজে লাগিয়ে দে।
ইতিমধ্যেই ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠল মদনপুর স্টেশন ছাড়লো কল্যাণী স্টেশন এর দিকে এগোতে শুরু করলো বললো শোন রাখছি তাহলে পিকনিকে আসছিস কনফার্ম মনে থাকে যেন কোন অজুহাত শুনবো না ভালো থাকিস।
রেখা  মনে ভাবল 'ভালো থাকিস, ভালো 
থেকো ,এই ভাবনাগুলো যতক্ষণ মনের মধ্যে রাখবো ।ততক্ষনে ভালো থাকবো। ভালো থাকাটা তো এভাবেই ।এজন্যই মনের ভেতরে বেশিক্ষণ কষ্ট চেপে রাখতে চাইছি না ।দুদিনের এই পৃথিবীতে এসেছি ।যত কষ্ট চেপে রাখবো ,ততই কষ্ট পাবো.। গানের একটা লাইন মনে পড়ে গেল 'পারবো না ছুঁতে শুধু ,স্বপ্নে এসেই বলব তুমি ভালো থেকো।'টানাপোড়েনের এই জীবনে শুধু এটাই বলব ভালো থাকার মানুষগুলো সবাই ভালো থাকুক। ডানায় ডানায় ভর করে, উড়াল দিয়ে চলুক ভালো থাকার বার্তা।

মমতা রায় চৌধুরীর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ১১৬




উপন্যাস 


টানাপোড়েন ১১৬
মনের হদিস কে বা জানে?
মমতা রায় চৌধুরী

ভোরের দিকে সবেমাত্র চোখটা লেগেছে অমনি ফোন বেজে উঠলো।ফোনের আওয়াজে রেখার বুক ধড়ফড়ানি শুরু হল। আশ্চর্য হয়ে ভাবলোএত সকালে কে করবে? আর কি কারণেই বা প্রথমেই যতসব অশুভ কথাগুলোই মনে আসতে থাকে। তবুও ভয়ে ভয়ে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে। ভাল খারাপ যাই হোক । তার তো সামনাসামনি দাঁড়াতেই হবে । কাজেই বিলম্ব না কোরে ফোনটা তুলে বলে ''হ্যালো'। 
প্রথম দিকটা একটু চুপ থাকে তারপর যখন আবার বলে 'হ্যালো '।
তখন অন্য পক্ষ উত্তর দেয়' দিদি আমি' সমু' বলছি।'
হঠাৎই সোমদত্তার ফোন আসে রেখার কাছে।
একটু অবাক হয়ে যায়। এতদিন পর
ফোন  করেছে, কি ব্যাপার? ভেতরে একটা কৌতুহল থেকেই যায়। একেবারে বিছানায় উঠে বসে রেখা। ঠিক শুনলো তো গলাটা।
সব ভাবনার অবসান ঘটিয়ে বলল কে সমু?
একটু নীরব থেকে উত্তর দেয় ', হ্যাঁ, দিদি।'
'এত সকাল বেলায় ফোন করছিস? সব ঠিক আছে তো? কি হয়েছে? কাকু ,কাকিমা ঠিক আছে?'
 যদিও কালকে কাকু কাকিমার সঙ্গে কথা হলো রাত্রের মধ্যে আবার কি হলো মনে মনে ভাবল।
' হ্যাঁ ,সবাই ঠিক আছে।
 'তাহলে হঠাৎ ফোন করলি?'
একটু চুপ করে থেকে বলে' আজ পার্থর বিয়ে?'
'কার বিয়ে?'
'দিদি, পার্থর বিয়ে।'
'ও পার্থর বিয়ে। তা ভালো কথা তো?'
তুইতো সংসারটা করলি না ।এবার তোর জন্য আর কত দিন ওয়েট করবে বল পুরুষ মানুষ তো।'
'হ্যাঁ ঠিকই বলেছ। যেন যখন আমি ছিলাম ওর সঙ্গে ও যেন কোন মেয়ের দিকে তাকাতো না সবার কাছে তো তার নিজের চরিত্রটা উদার মহৎ নির্ভেজাল একটা ভালো মানুষ হিসেবে   বাজিয়ে গেছে ।যত দোষ সব আমার ছিল।'
হঠাৎ আজ এসব কথা কেন বলছিস? তোকে তো কত দিন বলেছিলাম, কোন সমস্যা থাকলে আমাদের বল ।তখন তো কোন কথাই বলিস নি।'
'হ্যাঁ ,বলি নি এ কারণে ।সবাই আমাকে দোষারোপ করুক ।ভালো থাকুক ও।কিন্তু আমি এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম দিদি ।এবার ওর মুখোশটা তোমাদের কাছে খুলবো।'
'তাতে কি লাভ হবে বল বিয়েটা তো আর আটকানো যাবেনা।'
"আমি বিয়ে আটকানোর কথা বলছি না। তাছাড়া আমি ওর সাথে সংসার ও করতাম না।'
'তাহলে?'
'কার সাথে বিয়ে করছে জানো ?আমি যাকে নিয়ে সন্দেহ করেছিলাম ঠিক তাকে ই।'
'কাকে?'
'ওর অফিসের কলিগ মোনালিসা।'
'মানে?'
'মোনালিসা ও ডিভোর্সি। ওর দুটো বেবি আছে।
জানো ইদানিং কি শুরু করেছিল প্রায় দিনই ড্রাংক হয়ে বাড়ি ফিরত। পাবলো তো এখন বুঝতে শিখেছে ওর বাবাকে ওই অবস্থায় দেখে ভয় পেত। ওকে কোনরকম সামলে নিয়ে বেহুশ অবস্থায় যখন অফিস থেকে গাড়ি করে ওকে দিয়ে যেত তখন ওকে আলাদা ঘরে শুয়ে দিতাম আর জানো আমাদের সঙ্গে যখন শারীরিক মিলন হতো তখন কাকে নাম ধরে ডাকতো মোনালিসা, মোনালিসা , দিদিভাই মোনালিসা। বলেই অঝোরে কাঁদতে থাকে। '
'তুমি ভাবো আমি যখন প্রথম কাউকে ভালোবেসেছিলাম। তাকে তো আমার বাড়ি থেকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আমাকে বিয়ে দেয়া হলো পার্থর সঙ্গে ।আমি তো মেনে নিয়েছিলাম। ওকেই আমি খুশি রাখার চেষ্টা করতাম। কিন্তু তুমি ভাবো যখন দুজন মিলিত হতাম মানে শারীরিকভাবে তখন আমার স্বামী আমার জায়গায় অন্য মহিলাকে এক্সপেক্ট করছে ।ভাবতে পারো শুধুমাত্র যেন একটা যৌন ঋণ কাজ 
করত আমাদের ভেতরে। কেন যৌন ঋণ বলতো শব্দটা ব্যবহার করলাম। মনে হতো ওকে না পেয়ে চোখ বুঝে আমার জায়গায় মোনালিসাকে ভেবে তার শরীরে একটা বিদ্যুত খেলে যাচ্ছে।  মনে হত যেন সেই ঋণ শোধ দিচ্ছে।'
"এসব কি বলছিস সমু?'
'আমি ঠিক বলছি দিদি।'
'স্বামী-স্ত্রীর ভেতরে যে সম্পর্ক ।সে সম্পর্ক থাকতে হবে বিশ্বাসের দিদিভাই, থাকতে হবে 
ভালোবাসার ।বিশ্বাস যেখানে ভেঙ্গে যায়, সেখানে ভালোবাসা কি করে থাকে দিদিভাই?'
রেখা সমুর কষ্ট গুলো বুঝতে পারে।'
' সত্যিই তো ত বিশ্বাস ,ভালোবাসা এসব না থাকলে বন্ধন কিভাবে অটুট থাকবে?'
সমু তখনও বকে যাচ্ছে । আসলে এতদিনের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস টা যেন উপচে পড়ছে। শিব ভেঙেচুরে সব শেষ করে দিতে চাইছে।
'বলছে মনোজদার মতো তো সবাই নয় দিদিভাই।'
রেখাও চুপ করে থাকে।
আর ভাবে' সবাই মনোজকে কত ভালো মানুষ ভাবে। তাই রেখা বললেও রেখার কথা কি কেউ বিশ্বাস করবে?'
আজ পর্যন্ত সমুকে যেভাবে দোষারোপ 
করেছে  ।পার্থকে সেখানে বড় করে দেখানো হয়েছে কিন্তু সমুর ভেতরে জমানো কষ্ট, যন্ত্রণা 
বিশ্বাসভঙ্গের বেদনা আছে সেটা কখনো উপলব্ধি করতে পারে নি।'
'তুই এখন কি করবি ভাবছিস?তুই তো  ওই ছেলেটার সঙ্গে সংসার করবি নাকি?'
"তুমি খেপেছে দিদিভাই ।আমি জানি ও বিবাহিত ওর সংসার আছে। আমি জেনে বুঝে ওর সংসারটাকে নষ্ট করব?'ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।'
রেখা সত্যিই অবাক হয় ।সে কিরে, তাহলে এতদিন যে তুই ওর সঙ্গে ….।'
সমুএকটু ম্লান হেসে বলে
'ভালোবাসার অভিনয়গুলো করেছি। কেমন সুন্দর অভিনয় করলাম বলো? পারফেক্ট না দিদিভাই?
ওটা না করলে যে আমি ডিভোর্স পেতাম না দিদিভাই।'
সত্যিই রেখা আশ্চর্য হয়ে যায় যে সমু ম্যাচিওর হয়ে গেছে ।ওর ভেতরে যে একটা মিথ্যা মিথ্যা খেলা গেছে চলে ,সেটা কেউ ধরতেই পারলাম না।
"এবার তুই কি করবি তাহলে?'
"না ভালোবাসার অভিনয় করলেও, ও কিন্তু আমাকে একটা কাজ দেখে দিয়েছে
 দিদিভাই ।সেজন্য আমি ওর কাছে কৃতজ্ঞ।
তবে হ্যাঁ, ও আমাকে ভালোবাসে দিদিভাই ।কিন্তু আমি সেই ডাকে সাড়া দিতে পারব না। ফাইতফুল গু ধারার মতো আমার ভেতরে বয়ে যাবে কিন্তু প্রকাশটা থাকবে না।আমি বলেছি যদি ভালোবাসো তাহলে আমাকে একটা কাজ দাও যাতে আমি আমার সন্তানকে যথাযোগ্য মানুষ করতে পারি।'
"তা তোর কথা রেখেছে?'
"হ্যাঁ দিদিভাই।'
'যাক যেভাবে ভালো থাকিস ,সেভাবেই থাকার চেষ্টা কর ।না বুঝেই তোকে অনেক কথা বলেছি বোন ।কিছু মনে করিস না।
তবে পার্থর মুখোশ খুলে দিয়ে ভালোই করেছিস। কাকিমা কাকু কে জানাব ব্যাপারটা।'
সমু একটু চুপ থাকে, তারপর বলে "তোমরা কেমন আছ দিদিভাই?'
'এইতো চলছে রে বোন।'
"তুই তাহলে এখন কোথায় থাকবি।'
'আমাকে তো একটা ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছে তবে আমি বলেছি আমি অফিস থেকে যে স্যালারি টা পাবো তার থেকে আস্তে আস্তে টাকাটা শোধ করে দেব।'
"বাহ, কোথায় নিয়েছিস?'
"ও ই  তো গড়িয়ার কাছে।
একদিন এসো দিদিভাই অনেক কথা হবে।'
"হ্যাঁ ,নিশ্চয়ই যাবো রে ।তুই ভালো 
থাকিস ।পাবলোর খেয়াল রাখিস।"
'হ্যাঁ দিদিভাই ,রাখি তাহলে।'
বাপরে ফোনটা ছেড়ে দিয়ে ধপ করে বসে পড়ে বিছানার উপর রেখা ।মানুষের মনের খবর কে রাখতে পারে ? এত কিছু ঘটে গেছে অথচ উপর থেকে ওকে দেখে কিছু বোঝা যেত না ।ওর ডেসপারেটলি এসব কান্ড কারখানা দেখে কত দোষারোপ করা হয়েছে। ঈশ্বর ওকে একটু মনে শান্তি দিন, আনন্দ দিন এই প্রার্থনাই করি।'
রেখা মনে মনে ভাবতে থাকে 'রেখার  ভেতরের যন্ত্রণার কথা  কাকে বলবে?'
বিষন্ন মন নিয়ে জানলার কাছে দাঁড়িয়ে প্রকাণ্ড মাঠখানাকে দেখতে থাকে। মনে হচ্ছে এই  মাঠ পেরোতে পারলে সব বাধা-বিপত্তি উধাও হয়ে যাবে ।
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ মাঠ পেরোনোর আগেই ছন্দপতন। কলিং বেল বেজে গেল' জয় গনেশ ,জয় গনেশ ,জয় গনেশ দেবা।'
রেখা ভাবলো নির্ঘাত মাসি এসেছে।
আস্তে আস্তে বেরিয়ে এসে দরজাটা খুলল।
' বৌমা"আজকে না কাজ করব না।
রেখা বলল 'কেন মাসি?'
আর ব'লো না আমার নাতিটার রাত থেকে পাতলা পায়খানা হচ্ছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি তাই তোমাকে যাবার পথে একটু বলে গেলাম চিন্তায় থাকবে তো?'
'তা বেশ করেছ মাসি। না ,না তোমাকে কাজ করতে হবে না। তুমি নাতিটা টিটমেন্ট করাও গিয়ে।'
কিছুক্ষণ চুপ করে মাসি দাঁড়িয়ে থাকে 
"কি মাসি, কিছু টাকা পয়সা লাগবে?'
মাসি তখনও চুপ করে তারপর বলে' আসলে কখনো তো এভাবে চাইনি।'
"না ,না ছি :ছি :ছি: এভাবে বলছ কেন ?তুমি একটু ওয়েট করো।' বলেই রেখা ঘরে গিয়ে হাজার টাকা এনে মাসির হাতে গুঁজে দেয়।' 
" যাও নাতিকে  ডাক্তারের কাছে  নিয়ে যাও।'
মাসি দুই হাত জোড় করে বললো' তুমি যে কি উপকার করলে বৌমা'।
"না ,না ,এভাবে কেন বলছো মাসি? ঠিক আছে তুমি এস । রেখা খেয়াল করল মাসির দুচোখে চিকচিক করছে জল।
"যদি নাতি ঠিক থাকে। তাহলে বিকেলে আসবো।'
'না, তোমাকে আর বিকেলে আসতে হবে না কাজে।'
"মাসি একটু হেসে চলে গেল।"
'রেখা দরজাটা বন্ধ করে ভেতরে 
আসলো ।তাড়াতাড়ি করে কাজে হাত লাগাল কারণ আজকে তো স্কুলে যেতে হবে। সকালবেলায় প্রাতঃক্রিয়া না সারলে আবার হয় না ।বাথরুমে ছুটল গিজার টা চালিয়ে জলটা গরম করতে বসালো ।তারপর প্রাতঃক্রিয়া সেরে ফ্রেশ হয়ে  রাধা গোবিন্দের ভোগ চাপিয়ে রান্না ঘরে ছোটে।  রান্নাঘরে গিয়ে একদিকে বাচ্চাদের জন্য দুধ গরম করতে বসিয়ে দিল ।আজকে ওরা দুধ বিস্কিট খাবে ।রুটি করার সময় থাকবে
 না ।রাত্রে যে বাসন গুলো ছিল সেগুলো কে বেসিনে সাবান দিয়ে ভালো করে বাসনগুলো ধুয়ে নিল। তারপর ভেবে নিল ঘর মোছার মত আজকে পরিস্থিতি নেই। যা হবে হবে ।এবার আস্তে আস্তে এক এক  করে খাবার  বানাতে শুরু। আগের দিন রাত্রে যে সবজি গুলো কেটে রেখেছে , টোটাল তরকারি সে করতে পারবে না । সময় থাকবে না তাই সে ব্রকলি আর আলু ভাজা , রুটির তরকারি করে নিল অন্যদিকে একটু ডাল ,বেগুন ভাজা আর মাছের ঝাল।'আর বাচ্চাগুলোর মেটের তরকারি।
এতক্ষণ পর ফ্লাক্স থেকে চা টা ঢেলে কাপে নিয়ে বসল খেতে। অন্য আর এক কাপে চা ঢেলে মনোজকে দিতে গেল। গিয়ে দেখছে মনোজ কার সঙ্গে ফোনে কথা বলছে ।ও দরজায় নক করে চায়ের কাপটা সামনে টি টেবিলে রেখে দিয়ে চলে আসল।
রেখা মনে মনে ভাবছে 'কার সাথে এত হেসে হেসে কথা বলছিল ?শুধু রেখার সঙ্গে কথা বলতে 
কষ্ট ।  রেখার সাত সকালে একটা গান ভীষণভাবে মনকে নাড়া দিল' 'মনের হদিস কে বা জানে, সে হদিস কে বা জানে,, কি যে থাকে মনের 
ঘরে। কেউ জানে না ,কেউ জানে না.. যে ধারণ করে।'
তাই রেখা মনে মনে ভাবল' যা হচ্ছে হোক, অত গুরুত্ব দিতে চায় না ।বেশি ভাবলেই বেশি
 কষ্ট । হাতের কাজগুলো দ্রুত সেরে নিয়ে স্কুলে বেরোতে হবে। এত ব্যস্ততার মধ্যেও  সমু আর পার্থর দাম্পত্য জীবনের দৃশ্য টা যেন মনের পর্দায় হাওয়ায়  উড়ছে। কখনো মনে হয়নি তাদের নীলাভ আলোয়অন্ধকার আছে। মনের হদিশ পাওয়া সত্যিই দুষ্কর।

কবি মিতা নূরের কবিতা




শুধুই ভুল বুঝে গেলে
মিতা নূর


শুধুই ভুল বুঝে গেলে
তুমি আমার না পাওয়া গল্প হয়ে রয়ে গেলে , 
কেমন যেন নিঃস্ব লাগে, শূন্য লাগে সব, 
বুকের ভেতর, একটা কষ্ট কষ্ট অনুভূতি হয়, 
অনুভূতি টা ঠিক কষ্টেও না,বেদনারওনা, কেমন যেন একটা চিনচিন অনুভূতি! 
সেই অনুভূতিতে সূক্ষ্ম একটা আফসোস জড়িয়ে আছে, 
অবশ্য এইসব অনুভূতিতে কারোর জীবন থেমে থাকেনি, 
আচ্ছা একটু বলবে আমায়,কি অপরাধে ভুল বুঝে চলে গিয়েছিলে? 
ভেঙে চুরমার করে গুছিয়ে রাখা সপ্ন গুলো!
তুমি সেদিন পেরেছিলে চলে যেতে, কিন্তু আমি পারিনি যেতে, 
আমি চাইনি তোমার থেকে দূরে যেতে,চাইনি এভাবে আমাদের  বিচ্ছেদ  ঘটে যাক।
সেদিন তুমি দিব্যি চলে গিয়েছিলে, একবারও চোখে পড়েনি তোমার, 
আমার চোখের বর্ষন, অথচ এই চোখে সামান্য জল টুকুও তুমি সইতে পারতে না। 
তুমি চলে যাওয়ার পর আমি একটু ভেঙে গিয়ে ছিলাম, ঠিক একটু নয়, 
অনেকটাই ভেঙে গিয়ে ছিলাম, তবে বিশ্বাস করো তুমি, কাউকে বুঝতে দেইনি আমি, আমি যে ভেঙে যাওয়া ভাঙাচোরা একজন। 
প্রতি সকালের আকাশে তোমায় খুঁজতাম, শিশির ভেজা চোখে, 
তোমার মুখটা ভেসে উঠতো কুয়াশার ভীড় ঠেলে, 
তখন আকাশের ডানাভাঙা পাখির মতো ছটফট করে মরতাম।
এমন করে কতটা ভোর কাটিয়েছি, তোমার অপেক্ষায়, 
ভেবে ছিলাম এই বুঝি ফিরবে, সব অভিমান ভুলে! 
একা একা কাটিয়ে দিলাম কুড়ি বছর, কুড়ি'টা  বসন্ত, তবু্ও অন্য কোথাও যাইনি, 
এসেছিল জীবনে অনেকজন, কিন্তু তোমার মতো করে কাউকে আপন করে নিতে পারিনি। 
একলা হেঁটেছি, গরম বালিতে পা পুড়িয়েছি, তবু কারোর হাত ধরে বৃষ্টি ভেজা সুখ নেইনি, 
আজ দুঃখ বিলাসীনী...!
অন্ধকারে  একলা একা আমি, লজ্জায় মুখ ঢেকে রাখি, আমি চাই  কেউ না জানুক, 
কষ্ট গুলো চেপে রাখি, মাঝে মাঝে গোলাপ কাঁটার মতো বুকে বিঁধে। 
তখন রক্তাক্ত হই খুব, তবু আমি পারিনি মন থেকে তোমায় সরাতে, 
হয়তো আর পারবোও না, আবার যেতেও পারবোনা তোমার কাছে। 
একটা শক্ত প্রাচীর  দাঁড়িয়ে আছে, তোমার আমার মাঝে, 
আজও তুমি আমায়, শুধুই ভুল বুঝে গেলে  !