০৮ ডিসেম্বর ২০২১

কবি দেবব্রত সরকার এর কবিতা




সূর্যিয়াকে


তোমাকে যদি আমার মরার নিমন্ত্রণ দিয়ে যায় 
তুমি কি আমায় একলা ভেবে নেবে 
ভয় পেলেও অবাক হবো না
কারণ ভালোবাসার আতর আছে লেগে

নতুন কিছুই ভাবারই ছিল কই
তোমার চোখের উপর শুধুই দেখা
 আমার যাবার সময় তোমার
একটা শুধু দিনের অপেক্ষা

তুমিই আমার গভীর যন্ত্রনা 
তোমায় আমিই বলতে পারছি বেশ্যা
তুমি বড্ডো সরলতাই ভর্সা 
এসব দেখে নিত্য করে আমার আমাবস্যা

কবি শুভমিতা বিশ্বাস এর কবিতা



ভাবগপ্প 

জানো,
ভালোবাসা কি চায়?


ছায়াভরা হাত,
মাথার ওপর তোমার প্রতিবিম্ব 


ভালোবাসলে,
খড়ের ছাউনির ছোট্ট ঘরটুকুও 
হীরে হয়ে যায়!

hggg

LOVE

grdh

LOVE

মোহাম্মাদ আবুহোসেন এর সেখ অনুগল্প




শকুন
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

এক শকুনের বাচ্চা তার বাপের কাছে বায়না ধরলো, -- "বাবা, আমি মানুষের মাংস খাব, এনে দাও না প্লিজ!!!"
শকুন বলল--"ঠিক আছে বেটা, সন্ধ্যার সময় এনে দেব। শকুন উড়ে গেল আর আসার সময় ছেলের জন্য শুকরের মাংস নিয়ে এলো। বাচ্চা বলল--"বাবা, এটা তো শুকরের মাংস, আমি মানুষের মাংস খেতে চাই।"
বাপ বলল --"ঠিক আছে বেটা, এনে দেব।"
শকুনটা উড়ে গেল আর আসার সময় এক মরা গরুর মাংস নিয়ে এলো।
বাচ্চা বলল --"আরে এটা তো গরুর মাংস নিয়ে এসেছ, মানুষের মাংস কোথায়? তখন শকুনটা উড়ে গিয়ে, শুকরের মাংস একটা মসজিদের পাশে আর গরুর মাংস একটা মন্দিরের পাশে ফেলে দিয়ে চলে এলো!! কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কয়েকশ মানুষের লাশ পড়ে গেল, আর বাপ-বেটায় মিলে খুব তৃপ্তিতে মানুষের মাংস খেল।
বাচ্চাটা খেতে খেতে জিজ্ঞেস করছে-- "বাবা, এত মানুষের মাংস এখানে কি করে এলো??"
শকুন বললো -- "এই মানুষ জাতটাই এরকম। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বানিয়ে জন্ম দিয়েছেন, কিন্তু ধর্মের অপব্যখ্যা দিয়ে এদেরকে জানোয়ার থেকেও হিংস্র বানানো যেতে পারে!!! " বাচ্চা বললো- "তোমার অনেক বুদ্ধি, বাবা.."
শকুন -- "আরে, ধুর!!! এটা তো আমি মানুষের কাছ থেকেই শিখছি, এদের একটা অংশ যখনই কোন অনিষ্ঠ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয় তখনই সহজ রাস্তা হিসেবে ধর্মকে ব্যবহার করে..."।

মমতা রায় চৌধুরী ৬৩




টানাপোড়েন ৬৩

থাবা


উদাসী বাউল মনটাকে রেখা যতই রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে ,ততই যেন বাঁধন আলগা হয়ে যাচ্ছে। গ্রামের নস্টালজিক স্মৃতিকে সরিয়ে দিয়ে এখন নগরজীবনের ব্যস্ততা, ধোঁয়া ধূসরতা...। স্বপ্নগুলো শুধু ফিকে হবার পালা। সারা রাস্তা আসার সময় রেখা গাড়িতে বসে এসবই ভাবছিল। 
আবার সেই শহর। শহর জীবনের ব্যস্ততা ,নাগরিক ক্লেদাক্ততা,অসুস্থতা ।কেমন যেন একটা পাগল পাগল ভাব। গাড়ি এসে যথাসময়ে বাড়িতে পৌঁছালো ।রেখা কলিং বেল টিপল আওয়াজ হলো -জয় গনেশ, জয় গনেশ, জয় গনেশ দেবা ..। যে প্রত্যাশায় দরজা খোলার আওয়াজে  মন পুলকিত হয়ে ওঠে, আজ সে দরজা খুলবে পার্থ ।
যথারীতি দরজা খুলে গেল।দরজা খুলে দিলে পার্থকে মনে হল এক দিনে কতটা পরিপক্কতা লাভ করেছে, কি একটা দুশ্চিন্তা তার মনকে গ্রাস করেছে  স্পষ্টই বোঝা যায়।
 দরজা খুলেই পার্থ বলল' আপনি এসেছেন বৌদি, এবার আমি নিশ্চিন্ত।'
রেখা বলল' পার্থ ভাই ,তুমি কাল রাত্রে যদি দাদার পাশে না থাকতে, কি যে করতাম? সেটা আমি ভাবতেই পারছি না।  তাই ধন্যবাদ দিয়ে তোমাকে আমি ছোট করবো না, তুমি তার অনেক ঊর্ধ্বে। তুমি কৃতজ্ঞতায়, ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ থেকো চিরকাল।"
পার্থ বলল 'আমার মায়ের অসুস্থতার সময় দাদা যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তা অন্য কেউ করবেন না?'
রেখা বলল' তা হলেও।'
পার্থ বলল 'এভাবে বলবেন না আমরা তো প্রত্যেকেই মানুষ ,প্রত্যেকের জন্যই আমরা। একটা কথা আছে না সকলের তরে সকলে মোরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে। "
রেখা বলল' দাদা কি করছে?'
 এবার  পার্থ বলল 'দাদা একটু ব্রেকফাস্ট করল, এখন একটু রেস্ট নিচ্ছ ।'
রেখা বললো' দাদা খুব চিন্তায় আছে ,না পার্থ?'
 পার্থ বলল ,'দাদাকে দেখে তো সেটা বোঝা যায় না ।তবে কিছু তো একটা চিন্তা তার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, তা বোঝা যায় ।'
রেখা ভালো করে বাইরের জামাকাপড় সব ছেড়ে হাত মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে ,স্যানিটাইজার ইউজ করে রুমে ঢুকলো।
মনোজ শুয়েছিল চোখ বুজে ।
রেখা যেন কিছুই হয় নি এইভাবে প্রশ্ন করল 'কিগো মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে আছো?'
মনোজের মুখ শুকনো ।ভেতরে একটা চিন্তা সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।
মনোজ বলল ' টেস্ট রিপোর্ট কি আসবে কে জানে?'
রেখা বলল 'যা আসবে সেটাকে হাসিমুখে মেনে নিতে হবে ।'
মনোজ বললো 'মিলিদের সঙ্গে দেখা করেছ?'
রেখা হেসে বলল 'না।'
মনোজ বলল 'যাও ওদের সঙ্গে দেখা করে এসো।'
রেখা হেসে বলল 'যাচ্ছি।
মনোজের কথামতো রেখা গেল মিলি ও তার বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করতে। রেখা গেটের কাছে গিয়ে বলল'কইরে আমার baby's কোথায় ?'
সঙ্গে সঙ্গে চারটে বাচ্চা ওদের ভাষায় ওরা ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো।গেটটা খুলতেই রেখাকে দেখে বাচ্চাগুলো যে কতটা খুশি হয়েছে, সেটা বোঝানোর জন্য রেখাকে বাচ্চাগুলো দুহাত দিয়ে রেখার গাল দুটো ধরে গাল চেটে তার প্রমাণ দিল। তারপর ওদের সঙ্গে একটু কথা আর খুনসুটি করতে করতেই মনোজের আওয়াজ শুনতে পেল," রেখা, রেখা,..।
 সঙ্গে সঙ্গে রেখা মনোজের ঘরে এসে উপস্থিত হলা। এসে দেখছে মনোজ থর থর করে কাঁপছে একটা অসহায় দৃষ্টি নিয়ে যেন কারো দিকে তাকিয়ে আছে।
রেখা ভয় পেয়ে বলল 'কি হয়েছে ?কি হয়েছে?'
অনেকবার বলার পর মনোজ ফোনটা দেখিয়ে  ...?'
রেখা ফোনটা নিয়ে মেসেজ চেক করে দেখলো"
Manoj ** your COVID-19 test result was positive. If you you are in home isolation and you have any symptoms like high fever, cough or difficulty in breathing immediately call COVID-19 helpline *****for medical advice and admission in government hospital. Is there marks and stay in isolation.'
রেখা বলল 'তুমি মেসেজটা দেখে এরকম করছ?'
নিরুত্তর আর অসহায় ভাবে রেখার দিকে তাকিয়ে।
এবার মনোজের কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে রেখা বলল' মনের জোর হারাবে না ,আমি আছি তো তোমার সঙ্গে ।তুমি ঠিক হয়ে যাবে।'
মনোজের চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল আর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
রেখা বললো 'আমি তো জানতাম যে তোমার মন এতটা দুর্বল নয় ।কত রকম বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা জীবনে আসে ,সেগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করাটাই তো আমাদের কাম্য, তাই না?'
মনোজ রেখার বুকে মাথা রেখে ঘাড় নাড়লো।
এদিকে পার্থ চলে গেছে ওর বাড়িতে।
রেখা কালবিলম্ব না করে ইমিডিয়েট ডাক্তার বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করল এবং টেস্টের রিপোর্ট টা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাল।
ডাক্তার বাবু সঙ্গে সঙ্গে কাল বিলম্ব না করে ওষুধ প্রেসক্রাইব করে পাঠালেন।
1 cab azithral 500 mg once a day 5 days
2 ***
3 ***
4 ***
5 ***
রেখা নিজেই মেডিকেল শপে গিয়ে ওষুধগুলো সব নিয়ে আসল। মনোজের ওষুধ চালু করে দিল।
সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দিকে নজর দিল। কাজের মেয়ে সুমিতাকে কাজে আসতে বারণ করে দিল। এমনিতেই সুমিতার কামাই।
মনোজ  বলল 'সুমিতাকে কাজে বারন করে দিলে?'
রেখা বলল' ও এমনি কাজে কামাই করে। তার থেকে থাক না কিছুদিন রেস্টে।বাইরের লোককে ভেতরে ঢোকানোর কোন দরকার নেই।'
মনোজ বললো 'আর তুমি এত কাজ..?'
রেখা বলল' আমার কথা এখন তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি এখন তোমার সেফটি এবং তোমার দিকেই ধ্যান দিচ্ছি।'
মনোজ বলল' তোমার স্কুল?'
রেখা বলল' স্কুলে যাব না তো? জানিয়ে দেবো ব্যাপারটা।'
মনোজ বলল 'ও'।
রেখা বলল'আমি নিজে হাতে তোমার সেবা করব?'
মনোজ কথাটা শুনে হাসলো।
রেখা বলল 'হাসছো যে, প্রমান দেবো  তো।'
মনোজ বলল'  তোমাকে প্রমান দিতে হবে ?আমি তোমাকে জানি না?'
রেখা বলল' পজিটিভ ভাবো। ভালো ভালো গান শোন,ভালো কথা চিন্তা করো।'
মনোজ বলল 'হ্যাঁ ,সেটাই করব।'
রেখা বলল 'দাঁড়াও এক্ষুণি বড়দিকে ফোন করে জানিয়ে দি।'
রেখা ফোনের নম্বর ডায়াল করল**
ফোনে রিং হতে শুরু করল।
ফোন কেটেও গেল।
রেখা আবার ট্রাই করলো এবং ফোন বেজে উঠল
 এবার ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে ভারী গম্ভীর গলায় বললেন' হ্যালো'।
রেখা  তো ফোনে  গলার আওয়াজ শুনে একটু চমকে উঠলো। তারপর বলল আমি কি বড়দির সঙ্গে কথা বলতে পারি?'
ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে বললেন 'কে বলছেন আপনি?'
রেখা বলল ' বড়দি যখন উচ্চারণ করেছি তাহলে উনার  স্কুলের  কোন কলিগ ই  হবো।'
ওই ব্যক্তি আবার বললেন'তবুও নাম তো আছে, নামটা বলুন না?'
রেখা বলল 'ও শিওর। রেখা।'
এর মধ্যে দেখা গেল ফোনে গলা শোনা যাচ্ছে, বড়দি বলছেন' কার সঙ্গে কথা বলছ তুমি?'
ভদ্রলোক উত্তর দিলেন 'তোমার স্কুলের কলিগ ফোন করেছে । নাম রেখা।'
বড়দি  বললেন 'হ্যাঁ, ফোন টা আমাকে দাও।'
বড়দি ভদ্রলোকের  কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে বললেন 'হ্যালো'।
রেখা বলল 'বড়দি আমি রেখা বলছি।'
বড়দি বললেন 'হ্যাঁ রেখা ,তোমার মনে আছে তো কত তারিখে বলেছিলাম এন্টি ড্রাগের ওপর একটা প্রোগ্রাম আছে ।তোমাকে কিন্তু সেখানে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে?'
রেখা বলল 'বড়দি আমি এ কদিন স্কুলে যেতে পারবো না।'
বড়দি একটু বিরক্তির স্বরে বললেন 'এই তোমাদের দোষ জানো তো ?এত দিন ছুটি খেলে '..?'
রেখা অন্য সময় হলে কিছু কথা বড়দিকে বলতেন কিন্তু আজকে কোন প্রবৃত্তি নেই ।কোন কথা বলতে। বড়দি আবার বললেন'আর এখন ক্লাস শুরু হয়েছে ।এখন তুমি ছুটি নেবে?'
রেখা অবাক হয়ে বলল 'আমার বিশেষ অসুবিধা আছে।'
বড়দি বললেন'কি অসুবিধা?'
রেখা বলল' আমার  husband covid-19 positive.
বড়দি অবাক ব্যাঘ্রভাবে বলল -সে কি?'
রেখা বলল'ওই জন্যই আপনাকে  ফোনটা করলাম?'
বড়দি বললেন' তোমাকে স্কুলে আসতে হবে না। এই থাবা আর কতজনকে বসাবে কে জানে?'
রেখা বললো 'হ্যাঁ , ভগবানই জানেন?'
বড়দি বললেন'তুমি একটি এপ্লিকেশন দিয়ে রেখো।'
রেখা বললো' নিশ্চয়ই'।'
বড়দি বললেন 'তোমরা কেউ ভেঙে প'ড়ো না। মনের জোর রাখো ।ট্রিটমেন্ট সঠিক করাও ,আর covid 19 বিধি মেনে চলো।'
রেখা বলল' তা আর বলতে?'
 বড়দি বললেন'সারা পৃথিবীতেই যেন থাবা বসাচ্ছে?'আমাদেরকে প্রস্তুতি নিতে  হবে এর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য। মনোবল হারালে হবে না কিন্তু ।আমরা সবাই'উই শ্যাল ওভার কাম, উই শ্যাল ওভার কাম ,উই শ্যাল ওভার কাম...।'
রেখা বলল 'একদমই দিদি।'
বড়দি বললেন' স্কুল নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না ‌তুমি তোমার হাজবেন্ডের প্রতি নজর দাও।'
রেখা বলল 'থ্যাংক ইউ দিদি।'

অলোক কুমার দাস





সে আর ফিরবে না

সূর্য রোজ অস্ত যায় বটে 
আবার সে ওঠে পূর্ব আকাশে, 
চির সুন্দর হোয়ে, 
মরু ভূমির ওপর যখন 
সে বিকসিত হয়, 
মনে হয় কে জানো 
সূর্য, চন্দ্র ও তারা একই

সোনা ছড়িয়ে দিয়েছে।

আকাশে থাকে।

আকাশ চিরস্থায়ী চিরকাল, তবুও ডাকে সুখতারা,

 মানুষের জীবন একবার, 
পর আর জাগে না। 
দেহ হয়ে যায় একমুঠো মাটি।

যেহেতু সে মৃত্যুর


রাবেয়া পারভীন।





স্মৃতির জানালায় 
(৭ম পর্ব)
রাবেয়া পারভীন।

এভাবে  শবনমের সান্নিধ্যে  থেকে যদি জীবন কাটানো যেত তাহলে কানায় কানায় পূর্ন হয়ে যেত এ জীবন। একদিন অফিসে যাবার জন্য  তৈরি হচ্ছো মাহতাব,  শিপলু এসে হাজির।
- মাহতাব ভাই  আজকে সন্ধায় আম্মা  আপনাকে আমাদের বাসায় যেতে বলেছেন।
ভ্রু নাচাল মাহতাব।
- কেন,  ভূরিভোজন  আছে নাকি ?
হাসলো শিপলু
- ভূরিভোজন  তো আছেই,  তা ছাড়া  আরও ব্যাপার আছে।
- কি ব্যপার ?
- আমি  অতসত জানিনা। আপনি গেলেই দেখতে পাবেন। যাবেন কিন্তু,  মিস করবেন না
- আচ্ছা,
শিপলু চলে গেলে মাহতাব চিন্তা করল ব্যপারটা কি হতে পারে?  হঠাৎ জরুরী তলব কেন ?  প্রতিদিন  পত্রিকা অফিস থেকে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যেত  কিন্তু সেদিন বিকেলেই অফিস থেকে ফিরল মাহতাব  তারপর ফ্রেস হয়ে শবনমদের  বাসায় গিয়ে পৌঁছাল।  বসার ঘরে সাত আট জন মেহমান। রহমান  স্যারকে খুব ব্যস্ত মনে হলো। মাহতাবকে  দেখে  স্যার। এগিয়ে এলেন।
- এই যে মাহতাব  এতো দেরি করলে কেন ?  উপরে গিয়ে দেখো তো  ওদের কতদুর হলো । একটু তারাতারি করতে বলবে।
কিছু বুঝতে না পেরে  মাহতাব চিন্তিত মনে  সিড়ি ভেংগে  দোতলায় উঠতে  লাগলো । সিড়ির মাঝখানে  শিপলুর সংগে দেখা হয়ে গেল। লাফাতে লাফাতে নীচে নামছিলো  শিপলু।  মাহতাবকে দেখে  ব্যস্ত হয়ে বলতে লাগলো
-ইশ  মাহতাব ভাই, এতো দেরি করেছেন।?  এদিকে বিকেল থেকে আপা আমাকে  বকাঝকা করছে ।
- কেন  ?
-আমি নাকি আপনাকে খবরই দেইনি।
শিপলুর খুব কাছাকাছি  দাঁড়িয়ে  মাহতাব  নীচু স্বরে  জিজ্ঞেস  করল
- ব্যাপার। কি শিপলু ?
মাহতাবের  চোখের দিকে চেয়ে  মুচকি হাসল  শিপলু। বলল
- বসার ঘরে  মেহমান  দেখেন নি?  
- হ্যা দেখলাম  তো,  ওরা কারা ?
এদিক  ওদিক  তাকিয়ে  প্রায়  ফিস ফিস করে  শিপলু বলল
-ওরা আপাকে দেখতে এসেছে , পছন্দ হলে  আপার বিয়ে হবে ।
অদৃশ্য  একটা চাবুক পড়ল যেন মাহতাবের  শরীরে । ওর মুখ ফুটে ছোট্ট  একটা শব্দ বেরিয়ে এলো
- ওহ্ ! 
- যান  উপরে গিয়ে  সব খবর নিন  গিয়ে । আমি নীচে যাই।
সিড়ি  দিয়ে  লাফাতে লাফাতে  শিপলু নেমে গেল।
  চলবে...