১৪ জানুয়ারী ২০২১

ফাহমিদা ইয়াসমিন ( ইংল্যান্ড)



কবিতার ছন্দ


সাদা কালো এ জীবনের মাঝে

তুমি শুধু করেছো আমায় রঙ্গিন। 

তোমায় নিয়ে লেখা কবিতায় দিয়েছি কত উপমা কত আবেগী আবেশ।


আমার হাতের মুঠোয় রেখেছি তোমার উষ্ণ হাত। 

ভোরের আলোর মতো উজ্জ্বল হয়ে ফুটেছে প্রেমের লাল ফুল।


কত রাত তোমার সান্নিধ্য চেয়েছি 

কতবার চেয়েছি তোমার স্পর্শ অসীম।


তুমি তো দিয়েছো আমায় লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের বেণি। খোঁপায় বেধেছি রাঙা ভোর।


আমি  বসেছিলাম নিয়ে শুধু গানের সুর

তুমিই তো আমার আঁধার আলো

তুমিই আমার সুর কবিতার ছন্দ।

ড: সৈয়দ আজিজ


হৃদয়েশ্বরী


কৈলাশ হতে কেশর এনে মাখাবো তোমার মুখে 

ফুলরেণু ঘ্রাণে পরেশ সুবাসে চিত্তানন্দে সুখে 

সূর্য হতে আনব আবীর, মাখাবো কেশর সাথে 

জোছনা লুটবো ফুটফুটে ঐ মাঘী পূর্ণিমা রাতে 

অসীম আকাশ সসীম নীলের পরাবো কাঁচলখানি 

কণ্ঠে পরাবো মুক্তার মালা সিন্ধু সেঁচিয়া আনি

লু-হাওয়াতে নেকাব পরাবো ধূলার পর্দা টানি 

কোনো দুরাচার যেন স্পর্ধায় কভূ নাহি ডাকে হাতছানি 

সোনার বাংলা শ্যামলিমাতে শ্যামল মাখাবো গায় 

অরুন্ধতীর টিপ পরাবো স্বর্ণালি সন্ধ্যায়,

রংধনু থেকে লাল রং আনি আলতা পরাবো পায়

কুরঙ্গী চোখের কাজল মাখাবো তোমার আঁখির বায় 

নারাঙ্গী রসে সিক্ত করবো আপন যুগল সৃক্কণী 

কবি হৃদয়ের অধীশ্বরী শত কোহিনুর মণি।

মিলন ভৌমিক


কল্পনার দেশ


"'পৃথিবী যদি কল্পনার দেশ হতো

মানবজাতি থাকত সুখে।

সীমাহীন দারিদ্রতা পৃথিবীতে

যদি না থাকতো, থাকতো মহাআনন্দে।

দুঃনীতি,কম'হীন,দূবলশ্রেনী

যদি না থাকতো, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ,ধম'ঘটে,

 হতোনা গণআন্দোলন।

সাইকোথ্যাব যদিনা থাকতো

ওরা অনেক বছর বাঁচত।

শক্তিধর রাষ্ট্রযন্ত্রের দাদাগিরি

শোষনও শাষনে যদিনা থাকতো

ছোট্ট রাষ্ট্র গুলো শান্তি পেত।

বুদ্ধিজীবীরা পৃথিবীময় যদি একহতো

স্বর্গের দেশ হতো।

মহাভারতে রথের কল্পনা থেকে

রকেটের যদি হয় সৃষ্টি,

যুগের শেষে কল্পজগৎ

হতে পারে বাস্তব মুখী।

কল্পদেশে থাকবো বেঁচে

অনন্তকাল ধরে,

বিদায় চাইনা পৃথিবীর কাছে।

মমতা রায়চৌধুরী


অমলিন অনুভব


জীবনে ভালবাসার রং এখনো

ধূসর হয়ে যায় নি ।

ঝড় ঝাপটায় অস্পষ্ট হয়নি-

প্রথম কথা বলা,কাছে আসার 

অনুভবের সুখস্মৃতি।,

তোমার হৃদয়ের উষ্ণতা সর্বত্র ছড়িয়ে  ,

তাই অন্য তাপ নেবার প্রয়োজন হয় নি।

জীবন তরঙ্গে  দু'জনে এখন অনেক দূরে..

তবু ভালোবাসার প্রতিধ্বনি ,প্রতিচ্ছবি 

স্বপ্নে আসে বারবার ঘুরেফিরে।

প্রথমবারের ছোঁয়ায় আজো খুঁজে

, পাই পারদ জড়ানো সেই স্পর্শ, গন্ধ।

হাজার বছর  পথ হাঁটবো এভাবে  নস্টালজিকে।

তাই ফ্যাকাশে হয় নি কিছুই আমার কাছে।

একটুখানি ‌ হাত বাড়াও ,একটু হৃদয় দিয়ে

অনুভব করো ,বুঝতে পারবে ষোলআনাই খাঁটি,

তোমার আমার ভালোবাসার দিনলিপি।

অলোক দাস




উদয় 


 আমাদের প্রভাতদা রোজ প্রভাতে সাইকেল নিয়ে যান হাওড়া স্টেশনে I প্রতিদিনের কাগজ আনতে, ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে I প্রভাতদা আমাদের কাছে রানার I বয়েস তিয়াত্তর ছুঁই ছুঁই, লোকে বলে মোনের জোর I শীত, গ্রীষ্মে, বর্ষায় কোনো কামাই নেই I এখনো লড়াই কোরে যাচ্ছেন I কাজের শেষে এপাড়া ও ওপাড়া করেন বাড়তি কাজের আসায় I কার কলে জল আসছে না, কার টালি দিয়ে জল পড়ছে, কার জানলা, কপাট রং করতে হবে, কার রেডিও, ঘড়ি খারাপ - সবাই দেখি চিৎকার কোরে ডাকে " প্রভাতদা ও প্রভাতদা I" তাই ভাবি সবায়ের ছুটি আছে, প্রভাতদার ছুটি নেই I তিনি যে সুপ্রভাত I

ফাতেমা ইসরাত রেখা



অনুভূতির ছোঁয়া 


ঘুম আসছে না তোমার কথা ভেবে 

ঘুম নেই এই দেশ আর এই সময়ের কথা ভেবে। 

মুঠো ভর্তি দুঃস্বপ্ন দু'চোখের পাহারাদার 

রাতের আকাশে এখন আর চাঁদ হাসে না আগের মতো 

কেমন করে ঘুমাই এত মন খারাপের ভিড়ে, বলো! 

শরতের নীল আকাশে টুকরো টুকরো মেঘ ভেসে বেড়ায়

চারিদিকে থমথমে অন্ধকার, যাত্রা বিরতি সুসময়ের।

সভ্যতার নিলামে একটি নাটকীয় অসভ্যতার হাতছানি কেবল

এমন পীড়নে আমি যে ঘুমাতে পারি না,আমার ঘুম আসে না। 


চুপিসারে দূরে রাখা সম্পর্কের ভিত 

ক্ষয়ে যায় ধীরে ধীরে, ভেঙে পড়ে ভিতরে ভিতর।

শহরের অলি গলিতে, পদশব্দে কেঁপে ওঠে বহুতল ঘুম

হারানো শোকে কিংবা হারানোর ভয়ে আঁৎকে ওঠে রোজ 

রোদ খোঁজে একটু ওম পেতে, খোঁজে কিছুটা সবুজ। 

সবুজ রাষ্ট্র খোঁজে দীন রাজপথ, সুখ খোঁজে জীর্ণ মানবতা 

হাহাকার, চিৎকারের এত সোরগোলে ঘুম আসে না আজকাল

দু'চোখে কেবলই কেতাবী অন্ধকার, ঘুমহীন রাত। 


অকাল বিপ্লব এখন সভ্যতার সুনামে দুর্নামে

জীবন শব্দটাও খেলা করে মৃত্যুর কুট কৌশলে 

কি করে এড়াবে তুমি সংকেতে সম্ভোগের নিদারুণ চিত্রমালা! 

যদি জীবনের অধিকার এতই নির্জীব ছায়া ফেলে জলে 

যৌবন ঘুমিয়ে থাকে নিস্ফল মাইলফলক বুকে চেপে, 

তবে এই পৃথিবীর মানচিত্রে একটি বিদগ্ধ চেতনা

আর ঘুমাতে পারবে না কোনদিন শুধুই রাত্রি যাপনে। 

এই বাড়ন্ত রাতের অন্ধকারও প্রতিদিন মরে একবার যন্ত্রণায়

আমি মরি বার বার তোমার অভাববোধে।

নাজনীন নাহার




একদিন কবে


সে আমার অবয়বই বটে!

মানুষের ভিড় ঠেলে নদীর পাড়ে

নির্জন ঢেউয়ের কানে মানুষেরই মতো

কিছু একটার শব্দ পেয়েছিলে ঠিকই 

কিন্তু অন্ধকার বাতাসে ঢেউয়ের যে আলোড়ন;

তোমার অস্থিরতা স্পর্শ করতে পারেনি 

তার শরীর স্মৃতি।

কি আর করার!

ফাগুন রাতে তোমার স্বপ্নে আসা 

আর এই পৃথিবীর নির্জন পাতার মতো

রুগ্ন স্বপ্নে হারিয়ে যাওয়া!

সেই একদিন কবে; পৃথিবীর সমুদ্র পারে

একসাথে অনেক রাতের নক্ষত্র পানে

রাত্রি আর দিন ভুলে যাওয়া, 

একদিন কবে..!

মাঝরাতে; হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে এখনো শুনতে পাও

তোমার শরীরের হাতছানি?

রক্তের ভালোবাসায় সেই যে মিটিয়েছিলে কার পিপাসা, তোমার পিপাসার্ত শরীরও জুড়িয়েছিলো বটে!

আমার শরীর আজ মৃত্যুর বনে ঘুমিয়ে!

তোমার শরীর না হয় কাঁপুক পৃথিবীর বনে।

পৃথিবীর ভালোবাসা সে যে বড় অস্থিরতা

মৃত্যু গহ্বরে জীবনের বেদনা প্রেমের মতন শান্ত,

তাই জীবনকে চাহিতে নয় মৃত্যুতে মন ব্যাকুল,

অধীর বাতাসে কাঁপুক পৃথিবী, আকাশে তারারা জ্বলুক, তবুও নয়ন মলিন হবে মৃত্যুতে একদিন কবে...!

এন এ আলম ( সীমু )




কুমারী 


নক্ষত্রখঁচিত আমার বাসভবন

অমর উজ্জ্বল দেবতারা

পথ দেখাবে তোমায়...

কুমারী,

আমার এ গৃহে তোমায় স্বাগতম।


বাতেসের গতি শান্ত শীতল...সুর্যতাপ স্নিগ্ধ

কোমল বিস্তৃত এক বাতাসের অঞ্চল। 


হে কুমারী,

এ সবি তোমার জন্যে স্বর্গলোকে আমার

নূতন সংযোজন....।


ঈশ্বর সীমারেখা অতিক্রম করে

দখলে নিয়েছি আরও বিস্তৃত অঞ্চল !


তোমার জন্যে সুর্যের আলো সেথায়

একদম সুশীতল...


রাজকীয় ভাবে পালিত দেবালয়ের নীল পরীরা  যাবে

তোমায় করতে নিমন্ত্রণ...


রাজার রাজারা যেথায় ব্যস্ত নিয়ে রাজসিংহাসন

তা ডিঙিয়ে আমার প্রাসাদোপম বাসভবন..


হে কুমারী,

কেবল তোমাকেই স্বাগতম।

গোলাম কবির



আমার কবিতার রহস্য "


আমি কী আসলে কোনো কবিতা
 লিখি! নিজেকেই যখন প্রশ্ন করি,
 উত্তর আসে - না, এগুলো কোনো
 কবিতাই নয়! এগুলো হচ্ছে আসলে
 আমার পৃথিবী জোড়া বিশাল ক্যানভাসে অক্ষরের এলোমেলো
আঁচড়ে আমার আনন্দ ও বেদনার
 নীল উপাখ্যান, আমার স্বাধীন
 মতামত প্রকাশের সুনীল কক্ষপথে
 ঘুরে ঘুরে তোমাদের কাছে পৌঁছে
 দেয়া, কখনো আমার বুকের ভিতরে
 জমাট বাঁধা কষ্ট ও গভীর প্রেমে পড়ে
 বিরহের কষ্টের মেঘ গুলো পৃথিবীর বুকে বৃষ্টির আশায় ছড়িয়ে দেয়া 
 যেনো একসময় সবুজ ফসলের মাঠে
 পৃথিবী হেসে ওঠে আনন্দে। 
কেউ কেউ হয়তো বলতে পারেন
 আমার কবিতা গুলো কোনো
 কবিতাই নয়!  কোনো কাব্যিকতা
 নেই, চোখ ধাঁধানো অদ্ভুত সুন্দর
 কোনো উপমা, চিত্রকল্প কিংবা
 নিদেনপক্ষে ভাষাটাও তো তেমনই
 কাব্যিক না হয়ে একদম সাদামাটা
 চোখের সামনে দেখা কথা কিংবা
 বিষয়গুলোই উঠে আসে কবিতায়।
 আমিও মানছি তা শতবার! 
আসলে আমার কাছে মনে হয়
 বর্তমান জটিল জীবনের ঘুর্ণিপাকে
 পড়ে জীবন হয়ে গেছে একদমই
 একসময় রামপুরা টু সদরঘাট যাওয়া
 মুড়ির টিনের বাসের মতো, 
তাই এতো জটিল করে আমি দেখি না
 কিছু, যা কিছু দেখি তা সব একদম ফকফকা সকালের মতো স্নিগ্ধ সুন্দর
 এবং সরল, কখনো আবার প্রগাঢ়
 অন্ধকারের বিষয় গুলো দেখি তাও
 পুরানো ঢাকার চেনা  অলিগলির
 মতোই সহজ করে, রহস্যটা এটাই!


আফসানা সিকদার



অণুকাব্য


প্রেমের প্রথম আবেশে সারা তনু মন,

মুখে নাহি বাণী, 

হৃদয় পলুকিত অনুক্ষণ, 

প্রেম 

যেনো উদাস মনের উপচে পরা

প্লাবন।

 অ