২৩ এপ্রিল ২০২২

মমতা রায় চৌধুরীর ধারাবাহিক উপন্যাস ১৬০





উপন্যাস 


টানাপোড়েন ১৬০
নানা রকম
মমতা রায় চৌধুরী



আজ এতটাই ট্রায়াড ছিল রেখা যে বিছানায় শুতে না শুতেই ঘুমিয়ে পড়ল। মনোজ ড্রইংরুমে বসে খেলা দেখছিল টিভিতে। তারপর যখন ও শোবার ঘরে আসলো দেখল রেখা নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে ভোস ভোস করে। মনোজ আপন মনে বলল আমাকে বলে আমি নাকি নাক ডাকি। আর আজ যে ম্যাডাম নাক ডাকছে তার প্রমান রাখতেই হবে। বলেই ফোনটা নিয়ে ভিডিও করলো।
তারপর রেখাকে ডাকলো 'কি গো এত নাক ডেকে ঘুমোচ্ছ?"
কোনো আওয়াজ  না পেয়ে  রেখাকে ধাক্কা মারলো।" কিগো এত নাক ডাখছ কেন? তুমি  নাকি ঘুমানোর সময় নাক ডাক না?"
রেখা অবাক হয়ে তাকিয়ে ঘুমের ঘোরে বলল "বেশি বাজে ব'কো না তো? আমি নাক ডাকি না তোমার মত।"
মনোজ  খুব জোরে হো হো হো করে হেসে উঠলো কিন্তু তাতেও রেখার কোনো হেলদোল নেই ।তখন ও ঘুমিয়ে যাচ্ছে ,সঙ্গে নাক ডাকছে।
মনোজ বলল "আজকে আর কিছু বলছি না । ঘুমাচ্ছে ঘুমাক।যেদিন আবার তাকে (মনোজকে) বলবে, এই ভিডিওটা দেখাবে। এটাই মনোজের ব্রম্ভাস্ত্র।"
মনোজও সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ল।
রেখা আজকে এতটাই ঘুমিয়েছে যে মাসি আসার আগেই ঘুম ভেঙে গেল। ঘুম থেকে উঠে পরলো। বেশ ঝরঝরে মনে হচ্ছে শরীরটা। চনমনে মন। রেখা সকাল সকাল প্রাতঃক্রিয়া সেরে, ফ্রেশ হয়ে গোপালভোগকে ভোগ চাপিয়ে রান্নাঘরে ঢুকলো।
চায়ের জল গ্যাসের চুলায় বসাতে না বসাতে কলিং বেলের আওয়াজ,"ওম জয় মা লক্ষী মাতা…।"
রেখা তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজাটা খুলল"দেখল মাসি নয় মাসির বৌমা এসেছে। কি ব্যাপার তুমি ?মাসি কোথায়?"
কাজের ব্যাপারে মাসির বৌমার চেয়ে মাসি অনেক বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
মাসির বৌমা বলল "মায়ের খুব জ্বর কাজে আসতে পারবেনা তাই বলতে আসলাম।"
ওমা তাই বুঝি? কখন থেকে?"
"রাত থেকে।"
"ওষুধ খাওয়াও নি মাসিকে?'

"হ্যাঁ ওষুধের দোকান থেকে বলে নেয়া হয়েছে"।
"ঠিক আছে দেখো। মাসি কেমন থাকে আমাকে খবর দিও।"
"আচ্ছা।"
রেখা দেখল মাসির বৌমার চোখ মুখ শুকিয়ে যায়। সত্যিই তো তাই। গরীবের সংসার নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তারমধ্যে স্বামী অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শাশুড়িমার রোজগারে সংসার চলছে। বাড়িতে এতগুলো প্রানী।
রেখা মাসির বৌমার চলে যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে রইল খানিকক্ষণ। তারপর হঠাৎ মনে হল এই যা কিছু টাকা দিয়ে দিলে হতো? যাক চলে যখন গেছে পরের দিন আসলে ,দিয়ে দেবে'। প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে রেখার মনে হলে অনেক কাজ পড়ে আছে।
না যাই গিয়ে কাজে হাত লাগাই।'
এর মধ্যেই মিলি আর  তার বাচ্চাগুলো এসে রেখার চারপাশে ঘুরঘুর করতে লাগল আর ওদের ভাষায় কিছু বলতে লাগলো। রেখা ওদেরকে ধরে একটু আদর করলো তারপর ভাবলো যা প্রতিদিন মাসিকে বলা হয় বিস্কিট দিতে। আজ তো আর মাসি আসবে না।তাই রেখা  বিস্কুট দিলো।
ভাগ্যিস আজকে তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙেছে নইলে যে কি হতো?'
রান্নাঘরে গিয়ে চটপটএকদিকে মিলিদের জন্য খাবার বসাল ,অন্যদিকে নিজেদের, সিমে দিয়ে বাকি কাজগুলো করতে লাগলো।
কাজ শেষে একবার   ঘরে গিয়ে মনোজকে ডাকলো"কিগো আজকে কি ঘুম ভাঙবে না কি ?
মনোজ ঘুমের জড়তা নিয়ে বলল" হ্যাঁ ,উঠব না কেন?"
" উঠছো না কেনো তাহলে ? ওঠো,।
আমার কিন্তু অত সময় নেই ডাকার। চা রেখে গেলাম খেয়ে নিও।"
আজ আবার মাসি আসবে না।'
 মনোজের কানে কথাটা যেতে লাফিয়ে উঠল" হ্যাঁ
সে কি কথা?কি  হয়েছে?'
"মাসীর শরীর খারাপ। জ্বর এসেছে।'
তুমি যদি তাড়াতাড়ি না উঠ, আমি খাবার দাবার গুছিয়ে দিতে পারব না ।আমার নিজের স্কুল আছে।"
"অ্যাই না ,না আমি উঠে পড়ছি।"
"ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি করো।'
এরমধ্যে আবার কলিং বেলের আওয়াজ "ওম জয় মা লক্ষী মাতা…।"
রেখা বলল "দরজাটা খোলো"।
মনোজ সিগারেট ধরিয়ে ছুটল বাথরুমের দিকে।
রেখা বুঝল নির্ঘাত বড় বাথরুম পেয়েছে।
অগত্যা রেখাতেই দরজা খুলতে হলো?
দরজা খুলে রেখা তো অবাক 'একি পার্থ এ সময়? 
এই জানো তো আমার লজ্জার শেষ নেই। সেদিন থেকে তোমার ইলিশ মাছের দাম আর পাটশাকের দাম দেয়া হয়নি।"
পার্থ বলল "সে সব পরে হবে ।আগে বলো তো দাদা কোথায়'?"
"ও তো  বাথরুমে ঢুকলো।"
"ও ও ও"
"কেন কিছু হয়েছে
ভেতরে এসে বসো।'
'হ্যাঁ হয়েছে ,মানে দাদাকে বলা হয়েছিল না ,সেই ডাক্তারের ঠিকানা টা দেওয়ার জন্য।"
বৌদি তো এখন ভেঙে পড়ছে আস্তে আস্তে।'
'কেন ভেঙে পড়ার কি আছে সব ঠিক হয়ে যাবে। 'ভয় পেয়েছে হয়তো কোন কারনে। বাচ্চা তো?
"সব আমরা বুঝতে পারছি বৌদি । কিন্তুযে বাচ্চা এত কথা বলে, এখন আস্তে আস্তে কথা বলছে না।"
"ওমা সেকি গো ?"
"হ্যাঁ,তবে আর বলছি কি?"
এমনিতেই সারা বাড়ি ও মাথায় করে রাখে দেখেছো তো ?আমাদেরকে কাকু কাকু বলে অস্থির করে রাখত আর সেই বাচ্চা যদি এখন কথা না বলে ,কেমন খারাপ লাগে বলো?'
"হ্যাঁ ,সে তো একটা চিন্তার ব্যাপারই বটে।"
"দাদা ,বৌদি তো দুজনারি প্রায় মাথা খারাপের মত অবস্থা।"
'তো ,হবেই না? মা বাবা তো?'
রেখা বললো "একটু ওয়েট করো ।আমি ওকে তাড়া দিই। বলি পার্থ এসেছে ।তবে তাড়াতাড়ি বের হবে।"
পার্থ একটু  ম্লান হাসলো।
রেখে আস্তে আস্তে বাথরুমের দিকে এগোলো তারপর বাথরুমের দরজায় কড়া নেড়ে বলল" কি গো একটু তাড়াতাড়ি করো?'
মনোজ ভেতর থেকে জলের কল টা খুলেছে , তার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তারই মধ্যে বলল কেন আমাকে বাথরুমে ঢুকতে দেখলেই তাড়া দাও কেন?"
"দিচ্ছে কি আর সাধে পার্থ এসেছে চিৎকার করে বলল।"
"কে এসেছে.এ.এ ."মনোজ ভেতর থেকে বলল।
*"পার্থ।"
"ও আচ্ছা, বেরোচ্ছি।”
মনোজ ভেজা টাওয়ালটা জড়িয়ে এসে বলল " কি হয়েছে পার্থ ?"
আরে দাদা ওই ডাক্তারের ফোন নম্বর টা।
"এ বাবা ,আমার তো ফোন করা হয়নি।'
'ঠিক আছে, তুমি বসো ,আমি এক্ষুনি ফোন করছি।"
মনোজ সুরঞ্জনকে ফোন করল। রিং হয়ে গেল ধরল না আবার ফোন করল। এবার রিং হতেই অপরপ্রান্ত থেকে বলল ''হ্যালো"
"এই আমি মনোজ বলছি'।
"হ্যাঁ বল কেমন আছিস সবাই?"
"ভালো আছি ।তোরা!?'
"হ্যাঁ ভালোই আছি।"
"বলছি তোর একটা হেল্প লাগবে?"
"কি বল না?'
বলছি একটা বাচ্চার কাউন্সেলিং করাবে । ভালো ডাক্তারের নাম বলতো আর তার ফোন নম্বর ঠিকানা।"
 ডক্টর রাধাকান্ত দেব। কন্টাক্ট নম্বর########২৩৬৪
"অসংখ্য ধন্যবাদ রে।'
"বাবা, এর জন্য ধন্যবাদ   কবে থেকে এত ফরমালিটি শিখেছিস?'
মনোজ হো , হো,হো করে হেসে উঠলো।
"না রে খুব উপকার হলো"।
"কার জন্য দরকার?'
আরে না ,না আমাদের পাশের বাড়ির পার্থর ভাইপোর জন্য.
"ও ঠিক আছে ।সবাই ভালো 
থাকিস ।ছাড়ছি রে?"
"হ্যাঁ, হ্যাঁ রাখ।"
পার্থকে ফোন নম্বরটা দিয়ে দিল আর বলল' যোগাযোগ করে নিতে তাড়াতাড়ি।'
পার্থ মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল।
ইতিমধ্যে রেখা পার্থর সামনে এক কাপ চা বিস্কিট এনে হাজির করল।
পার্থ এসে বলল 'বৌদি আবার চায়না হাজির করলেন।'
রেখা বলল "তা বললে তো হবে না ।তুমি প্রতিদিনই এড়িয়ে চলে যাচ্ছ।"
"আচ্ছা, দিন।'
মনোজ ঘর থেকে ড্রেস পরতে পরতে বলল' রেখা ,আমার ব্রেকফাস্ট রেডি করো।'
"রেডি করা আছে ।
তাড়াতাড়ি এসো।"
পার্থ বলল'বৌদি আসছি আমি  ।অন্য সময় হলে আরেকটু থাকতাম।'
"ঠিক আছে এসো ভাই আর কি বলব। যাও তাড়াতাড়ি গিয়ে কন্টাক নম্বরে যোগাযোগ করো।'
'বৌদি দরজাটা লাগিয়ে দিন।'
"ঠিক আছে যাচ্ছি।'
"তোমার হল?"রেখা দরজা বন্ধ করতে যেতে গিয়ে তাড়া দিল 
'আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা….।'
ড্রেস পরছে আর মনোজ গান করছে।
'ঠিক আছে ,তোমার গান করা শেষ হলে এসে খেয়ে নিও আমি গিয়ে তৈরি হচ্ছি।'
মানুষ তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে টাই বাঁধতে বাঁধতে এসে বলল' এই না,না, না, খাবার দিয়ে যাও।'
"তুমি দেখছো যে আমি নানা রকম কাজে ব্যস্ত থাকি এতকিছু করার পর এবার নিজেকে তো তৈরি হতে হবে বল ,এত বায়না করলে তো হয় না?'"
'আরে বাবা রাগ করছ কেন? তোমার নিজের হাতে যত্ন করে বেড়ে দেওয়া  খাবার না খেলে আমার পেট ভরে না জান না ?"

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক উপন্যাস ৯৭




ধারাবাহিক উপন্যাস 


শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৯৭)
শামীমা আহমেদ 



শায়লার বিয়ের উদ্দেশ্যে বিয়ে বাড়িতে আগত আত্মীয়স্বজনেরা ভীষণ  একটা ভ্যাবাচ্যাকা পরিস্থিতিতে পড়ে গেলো। এত রাতে এমন একটা খবরে তারা বুঝে উঠতে পারছে না কি ঘটতে যাচ্ছে! তারা বুঝতে পারছে না আজ দুপুরে কানাডা থেকে নতুন জামাই আসবে না জানালো কিন্তু  আবার কিভাবে সে এতো রাতে চলে এলো! তবে কি আগের খবরটা ভুল ছিল? নাকি ফ্লাইটের কোন ঝামেলা হয়েছিল। মুরুব্বিরা নানান প্রশ্নে বুবলীকে জর্জরিত করতে লাগল। বুবলী ভাবলো এইসকল প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে এখন তার রাত কাবার হয়ে যাবে। এর মাঝে যে কত ক্লাইমেক্স আর টানাপোড়েন গিয়েছে তা শুধু বুবলীই জানে। তবে এখন সে নিজের করণীয় কাজে মনযোগী হলো।  সে একটা দ্বিধার মধ্যে পড়ে গেলো। এখন সে কোনদিকে যাবে ? এদিকে শায়লা আপু শিহাব ভাইয়ার জন্য  নিজেকে আলুথালু বেশে ভাবলেশহীন হয়ে একেবারে আশাহীন হয়ে গিয়েছিল। এখন তার মনে আবার আশার আলো জাগাতে হবে। তাকে নতুন করে বাঁচবার পথে আগ্রহী করে তুলতে হবে।
তাকে হলুদের সাজে সাজাতে হবে। আবার ওদিকে নিচে শিহাব ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছেন।এইমাত্র রাহাত তাকে নিয়ে আসতে নেমে গেলো। উপরের চেঁচামেচিতে সে শিহাবকে নিচে রেখেই চলে এসেছিল। বাচ্চাদের পাওনা আদায়ের পর সবাই আনন্দে হৈচৈ করে উপরে উঠে এসেছে। বুবলী শায়লাকে আর একা না রেখে তার মায়ের ঘরে বসিয়ে রেখে গেলো।  শিহাবকে রিসিভ করতে  ঘরের ফুলদানি থেকে একগোছা রজনীগন্ধা নিয়ে দ্রুত  সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই সে দেখতে পেলো শিহাব মেইন গেট পেরিয়ে বাসায় ঢুকেছে। রাহাত শিহাবের বাইকটি বাসার গ্যারাজে রাখছে। বুবলী  সামনাসামনি শিহাবকে দেখে কিছুটাক্ষন থমকে দাঁড়িয়ে রইল। এমন একজন হ্যান্ডসাম মানুষ তার সামনে দাঁড়িয়ে!  বুবলী  তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।জাস্ট সিম্পলি শার্ট প্যান্ট পরা তবুও যেন মনে হচ্ছে একজন স্মার্ট হিরো! শিহাব এগিয়ে আসতেই বুবলী নিজেকে সামলে নিয়ে হাতের একগোছা রজনীগন্ধা শিহাবের হাতে তুলে দিলো। শিহাব ফুলের গোছা গ্রহণ করে
বুবলীকে ধন্যবাদ জানালো। বুবলী যেন কন্ঠস্বর শুনে আরো ফিদা হয়ে গেলো।তার মনে শায়লা আপুকে একটু একটু হিংসা হতে লাগল। সে ভাবতে লাগলো, ইস! কী দারুণ একজন হাজবেন্ড পেতে যাচ্ছে শায়লা আপু! সাথে সাথে বুবলীর নোমান সাহেবের কথা মনে হলো।তার মনে বেশ রাগ হতে লাগলো রাহাতের জন্য।কেন অমন একজন বয়সী মানুষের সাথে শায়লা আপুকে বিয়ে দেয়া হয়েছিল ! যাক, এবার তো সব ঝামেলা মিটেছে। বুবলী শিহাবকে উপরে যাওয়ার জন্য বললো। শিহাব চোখে সম্মতি জানালো। রাহাত বুবলীকে,আমার কাজিন, বলে  শিহাবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।  এবার সামনে বুবলী  আর পিছনে রাহাত যেন গার্ড অফ অনার দিয়ে শিহাবকে উপরে নিয়ে যাচ্ছে।দোতলায় উঠতেই দরজার সামনে অতিথিদের ভীড়। নতুন জামাইকে এক নজর দেখার জন্য চাচী খালা মামীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।  তাদের চোখে মুখে বিস্ময়!  অনেকেরই কোথায় যেন একটা খটকা লাগছে। আগে তারা কানাডার জামাইকে যেমন দেখেছে এবার যেন তার চেয়ে বয়স অনেক কমে গেছে ? তাদের  বিস্মিত চোখ ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে যেন! দিন দিন মানুষের বয়স কি বাড়ে না কমে ? এ আবার অন্য কেউ আসেনিতো ? অতিথিদের এমন আচরণে, এমন ঘোলাটে  পরিস্থিতিতে শিহাব ভীষণ লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করেই উপরে উঠে এলো। বুবলী সবাইকে আশ্বস্ত করতে লাগলো,এটাই শায়লা আপুর আসল হাজবেন্ড। তার নাম মিস্টার শিহাব। রাস্তায় জ্যামের কারণে, আমাদের বাসায় পৌঁছুতে একটু রাত হয়ে গেছে। বলেই বুবলী চট করে শিহাবের হাত ধরে অতিদ্রুত অতিথিদের কবল থেকে রক্ষা করতে শিহাবকে এক টানে ড্রইংরুমে নিয়ে বসালো।রাহাত তাকে অনুসরণ করে ভেতরে গিয়ে শিহাবের পাশে বসলো।বুবলীর কথায় স্বজনেরা খুব একটা সহজ হলো না। তাদের মনে চোখে মুখে একটা কিন্তু রয়েই গেলো। 
বুবলী সবাইকে জানালো, একটু পরে শায়লা আপু আর শিহাব ভাইয়ার গায়ে হলুদ হবে। সবাই তৈরি হয়ে নাও।শায়লা আপুর হলুদের জন্য যে যেমন পোশাক এনেছিলে পরে নাও আর ছাদে গিয়ে  তোমাদের গান নাচ প্র‍্যাকটিস করে নাও আর মুরুব্বিরা আপনারাও তৈরি হয়ে নেন।আপুকে হলুদ ছোঁয়াতে হবে। এ কথায় সবার মাঝে আনন্দের ঢেউ বয়ে গেলো! ভীষণ এক চটপটে মেয়ে বুবলী। যেমন তার বুদ্ধিমত্তা তেমনি সে করিৎকর্মা!  এক সাথে সবদিক সামাল দেয়ার অনন্য এক দক্ষতা তার। একই সাথে সে সবদিক ম্যানেজ করে চলছে। এবার এক দৌড়ে সে কিচেনে ঢুকে গেলো।চট করে দুই কাপ চা বানিয়ে ট্রে সাজিয়ে  নিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে  এলো। রাহাত তখনো শিহাব ভাইয়ার হাত ধরে বসে আছে।যেন নীরবে এখনো সে শিহাবের কাছে ক্ষমা চাইছে। শিহাব লজ্জাবনত হয়ে মাথা নিচু করেই বসে আছে। বুবলী দুজনকে সহজ করতে চায়ের ট্রে নিয়ে হাজির হলো।দুজনার হাতে চায়ের কাপ এগিয়ে দিতে চাইলে শিহাব আগে পানি খেতে চাইলো। বুবলী ফিক করে হেসে দিলো ! কি ? টেনশনে কি গলা শুকিয়ে গেছে ? গলা ভিজিয়ে নিতে হবে ? বুবলীর দুষ্টুমিতে শিহাবের মুখে লজ্জায় লাল আভা ফুটে উঠছে! বুবলী  শিহাবকে আর ঘাটালো না।তাকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিতেই শিহাব প্রায় এক নিঃশ্বাসে গ্লাসের পানিটা শেষ করলো।সবকিছু দেখে রাহাত ভাবলো, আহা,বেচারা,আপুকে পাওয়ার জন্য কতইনা ঝামেলা পোহালো। সে শিহাবকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিলো। তবে শিহাবের টেনশন দূর করতে  এখন একটা বেনসন স্টিকের অভাব ফিল করছে। একটা দুটো টান দিলে মাথাটা হালকা হতো।কিন্তু এ অবস্থায়  তা একেবারেই সম্ভব না।খুবই অনিচ্ছায় সে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চায়ের কাপে ঠোঁট ছোঁয়ালো।  বুবলী ইতিমধ্যে শায়লার কাছে গিয়ে হাজির ! সেখানে এক নদী ভাবাবেগে যেন কান্নার সাগর বইছে।শায়লার মা,মানে বুবলীর ফুপু মেয়ের এই অকস্মাৎ জীবনের মোড় ঘুরে যাওয়াতে অতি উচ্ছ্বাসে হত বিহ্বল হয়ে পড়েছেন।বিয়ে নিয়ে মেয়ের জীবনের উত্থান পতনে তিনি যেন আর কোন সমাধান খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কেবলমাত্র সৃষ্টিকর্তার কাছেই তিনি এই বিপদ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজেছিলেন।বিধাতাও সদয় হয়ে যেন তার কথা শুনেছেন।তাইতো আজ শিহাবের মত এমন  রাজপুত্রের মত ছেলে তার মেয়ের জীবনসঙ্গী হবে। শায়লাও যেন তার আবেগ ধরে রাখতে পারছে না।একদিকে শিহাবের আগমনে সে আনন্দে দিশাহারা অন্যদিকে আবার শিহাবকে হারানোর ভয় ! বুবলী নানান কথায় মা মেয়ের এই যুগলবন্দী কান্না থামালো। বুবলী বললো, আপু,শিহাব ভাইয়া তোমাকে নিয়ে যাবার জন্য এসেছেন।ঐতো,ড্রইংরুমে বসে আছেন।তোমাকে এখুনি হলুদের সাজে তৈরি হতে হবে। বুবলীর এঘর ওঘর দৌড়াদৌড়ি বেড়ে গেলো। মায়ের ঘরের দরজা লাগিয়ে
সে খুব দ্রুতই  শায়লাকে ফুলের গহনা আর শাড়ি পরিয়ে দিলো। শায়লা একেবারে  নিশ্চুপ হয়ে রইল।তার ভেতরে অপার এক আনন্দ কিন্তু সারাদিনের উৎকন্ঠার মিশেলে কেমন যেন মিশ্র অনুভব ! শায়লাকে ফুলের গহনা আর হলুদ শাড়িতে যেন অপরূপা লাগছিল।
আজ সকালের পার্লারের সেই ফ্রেশনেশটাতে শায়লার  সৌন্দর্য যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। শায়লার মা অবিরল ধারায় কেঁদেই যাচ্ছেন। এযে আনন্দাশ্রু তা বুঝতে বুবলীর আর বাকী রইল না। এবার বুবলী ছুটলো ড্রইংরুমের দিকে। শিহাব ভাইয়াকেও  একটু তৈরি করতে হবে। কিন্তু এখন কেমন করে তা সম্ভব।তার জন্যতো কিছুই কেনাকাটা হয়নি। শিহাবের দিকে চোখ পড়তেই বুবলী যারপরনাই মুগ্ধতায় ডুবে গেলো! সেতো খেয়ালই করেনি সিম্পল একটা নেভিব্লু চেক শার্টে এত রাতেও শিহাব যেন সাদা খইয়ের মত ফুটে আছে! এই রুমে আসার উদ্দেশ্যই সে ভুলে গিয়েছে যেন! রাহাত যেন তাকে চেতনায় আনলো, কি হলো বুবলী ? আপুকে রেডী করেছো ? তাহলে চলো ছাদে হলুদের স্টেজে আপুকে নিয়ে যাও আমি শিহাব ভাইয়াকে নিয়ে আসছি। বুবলী যেন চেতনায় এলো! সে বলে উঠলো কিন্তু শিহাব ভাইয়াকেতো নতুন কিছু পরাতে হবে। রাহাত বুঝতে পারছে না কি করবে। বুবলী দুরদর্শিতার কাছে রাহাত যেন বারবার পরাজিত হচ্ছে।বুবলী রাহাতকে টেনে শায়লার ঘরে নিয়ে এলো। বিয়ের এত্ত এত্ত শপিংগুলো কি এমনিই থাকবে ? এক্ষুনি এখান থেকে সিল্কের ঘি রঙা পাঞ্জাবীটা শিহাব ভাইয়াকে পরিয়ে দাও আর হলুদের সবকিছু ছাদে পাঠিয়ে দাও।রাহাত ছোঁ মেরে পাঞ্জাবিটা নিয়ে গেলো আর শিহাবকে তা পরার জন্য অনুরোধ করতেই শিহাব তা পরে নিলো। শিহাব ভাবলো, এমনিতেই এই পরিবারটি আজ সারাদিন নানান দুশ্চিন্তার মাঝ দিয়ে গেছে। যার জন্য সেও অনেকটা দায়ী। এখন যদি তার সবকিছুতে একটু সম্মতি আর সহযোগিতা  ওদের আনন্দ দেয় শিহাব তা সানন্দেই গ্রহন করবে। রাহাত  ড্রইংরুম থেকে বেরিয়ে এলো।শিহাব পাঞ্জাবিটা পরে নিলো।
তাকে ভীষণ অবাক করে দিয়ে পাঞ্জাবিটা চমৎকারভাবে তার গায়ে ফিট হয়ে গেলো! রাহাত ভেতরে ঢুকেই আশ্চর্য হয়ে গেলো। পাঞ্জাবিটা সে নিজে কিনেছে কিন্তু তখন ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি এটা শিহাবের জন্যই যেন বানানো হয়েছে! আর ঘি রংএ শিহাব ভাইয়াকেতো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। বুবলী  ওদের দরজায় নক করে জানান দিলো যে আমরা তৈরি, তোমরা তৈরি তো ? এত রাতেও শিশুদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক বয়ে যাচ্ছে।সবাই যার যার মত তৈরি  হয়ে নিয়েছে। মুরুব্বিরাও কম যায় না! তাদের সাজগোযে সবারই বয়স অর্ধেক কমে গেছে ! আর এই পরিবর্তিত রূপে কেউ যেন কাউকে চিনতে পারছে না। সবাই সবাইকে দেখে অবাক  হচ্ছে আর সারা বাড়িতে হাসির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কিশোরী মেয়েদের মেকাপ বক্সের আজ অর্ধেকটাই যেন খালি হয়ে গেছে। কিশোর ছেলেগুলো ওদের পিছনে লেগেই আছে। নানান টিপ্পনীতে ওদের অতীষ্ঠ করে তুলছে। কিছুতেই ওদের পিছু ছাড়ছে না। এই মাঝ রাতে সারা বাড়িতে বিয়েবাড়ির আমেজ ফুটে উঠেছে ! সারাদিনের প্রচন্ড খরার পরে যেন মধ্যরাতে মুষলধারায় বৃষ্টি নেমেছে আর সেই প্লাবনে সারা বাড়িতে আনন্দের জোয়ার  বয়ে যাচ্ছে ! হতাশাগ্রস্ত অতিথিরা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে ছাদের দিকে চলছে। বুবলী এবার শায়লাকে তার মায়ের ঘরের দরজায় আনতেই রাহাত শিহাবকে ড্রইংরুমের দরজায় এনে দাঁড় করালো। মূহুর্তেই খুবই আশ্চর্যজনক ব্যাপার  ঘটে গেলো।  দুজনেই মুখোমুখি ঘরের, মুখোমুখি দরজায় দাঁড়িয়ে। যা এক অবিশ্বাস্য ঘটনা ! দুজনেই দুজনকে দেখে চমকে গেলো ! দুজনার চোখে রাজ্যের ভালোলাগা,ভালোবাসা, অভিমান প্রশ্ন জিজ্ঞাস্য অবশেষে এতটা কাছে আসার আনন্দে যেন বাকহীন হয়ে পড়েছে। রাহাত আর বুবলী  দুজনে যেন এই চার চোখের মহামিলনের সাক্ষী হয়ে রইল।শিহাব শায়লার  হলুদ শাড়িতে আর ফুলের সাজে দেখে মুগ্ধতায় আছন্ন হয়ে গেলো। সে থমকে দাঁড়িয়ে রইল। শায়লা ও অবাক দৃষ্টিতে শিহাবকে দেখছে। সে আজ পর্যন্ত শিহাবকে পাঞ্জাবিতে দেখেনি।ঘি রঙা পাঞ্জাবিতে শিহাবকে খুঁজে  পাওয়াই ভার! কেমন করে এমন হলো ? শায়লার চোখে বিস্ময় মিশ্রিত প্রশ্ন ! কেমন করে এই পোশাক তারই হলো ! রাহাত আর বুবলী  অপলক দৃষ্টিতে দুজনের দিকে তাকিয়ে রইল। হঠাৎই  সেই গেট ধরার দলনেতা কিশোরীটির আগমনে ওদের ধ্যান ভাঙলো।  
কি হলো তোমরা কখন উপরে আসবে ? আমরা তোমাদের নাচ গান দেখাবো।বলেই মেয়েটি শিহাবের হাত ধরে টানতে লাগলো। এবার রাহাত আর বুবলী  ওদের নিয়ে গুটি গুটি পায়ে ছাদের সিঁড়ির দিকে আগালো। শায়লা  আর শিহাব এখন এক সুতা পরিমাণের ব্যবধানে দাঁড়িয়ে। দুজন যেন দুজনার স্পর্শ  পাচ্ছে,দুজন যেন দুজনার ঘ্রাণ শুষে  নিচ্ছে। শিহাবের  সংস্পর্শে শায়লার ভেতরে যেন গরম জলের নহর বয়ে গেলো আর শিহাবের ভেতরে যেন ভুমিধ্বসে বিরাট এক গহবর তৈরি হলো! দুজনের মনে একই ভাবনা, আজ থেকেই কি তবে আমরা দুজন দুজনে খুব নিবিড় করে পাবো!এতদিনের কষ্টের কি আজ অবসান হবে? পিছনে রাহাত আর বুবলী দাঁড়িয়ে। ওদেরও ইচ্ছে করছে ঠিক এই সময়টা অনন্তকাল ধরে চলুক।দুজনার ভেতরের নির্বাক কথা চলুক আজীবন। অথচ পরক্ষণেই এই নীরবতা কে খানখান করে ভেঙে দিয়ে  শিহাবের মোবাইল বেজে উঠলো ! এত রাতে কার ফোন ? শিহাবের মন অজানা আশংকায় কেঁপে উঠলো! আরাফ বা মায়ের কিছু হয়নি তো ! সে  মোবাইলে তাকাতেই দেখতে পেলো,  বন্ধু  রোমেলের কল! এত রাতে রোমেল। কেন কল করলো ? শিহাব কল রিসিভ করতেই,রোমেলের উত্তেজিত  কন্ঠস্বর! শিহাব, আমার কাজিন, তোমার সন্তানের মা  রিশতিনা একটু আগে  লন্ডনে  ওর বাসায় অনেক ঘুমের ওষুধ খেয়ে সুইসাইড  করেছে। তোমার প্রতি অভিমানে সে এই কাজ করেছে। যদি ওর কিছু একটা হয়ে যায় তবে এর জন্য তুমিই দায়ী থাকবে। আমি তোমাকে  ছাড়বো না।পুলিশকে  সব জানাবো। বলেই শিহাবের কোন উত্তর না শুনেই সে খট করে কলটা কেটে দিলো। ওপ্রান্তে কি খবর এলো! রাহাত আর  বুবলী যেন থমকে গেলো। শিহাব স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে  রইল। শায়লা শিহাবের মুখের অভিব্যক্তি দেখে তার কাছে খুব ঘনিষ্ঠ  হয়ে শক্ত করে তার হাতটা  ধরে চোখের ভাষায়  কিছু একটা সান্ত্বনা দিতে চাইলো।


চলবে....

Kjh

LOVE

কবি শরিফুর রহমান এর কবিতা "জীবন - তরী"





জীবন-তরী 
শরিফুর রহমান


এ জীবন-তরী কত করেছে আপন
ভালোবাসা কত প্রেম উছল-যৌবন, 
একে একে শুষে নিলো উতল-মৌবন
বেলা শেষে ধোঁয়াশায় বিরহ যাপন।

নিয়তির ছেঁড়া পালে নাবিক আশায়
জীবনের তরীখানি সাগরে ভাসায়,
বিষাদের বায়ু তেড়ে অকুলে শাসায় 
তবু দূরে আশা-দ্বীপ তরীকে হাসায়।

বড় বড় ঢেউগুলো ভেঙে পরে বুকে
শত ঘায়ে তরী তবু ঢেউ দেয় রুখে,
ধীরে ধীরে পঁচে কাঠ; ফুটো গলে ঢুকে
জলে ভরে তরী; তবু চলে হাসি মুখে।

গোধূলির পানে সাঁঝ দু-হাত বাড়ায়,
তরীখানি ভেসে ভেসে অকূলে হারায়।

কবি নাছিমা মিশু এর কবিতা "কদমে কদমে"





কদমে কদম 
নাছিমা মিশু


কদমে কদম মিলিয়ে চল না
এই আমার সাথে 
থমকে কেন দাঁড়িয়ে গেলে 
পাতা ঝরা খোলা প্রান্তরে
কন্ঠ মিলাও না
এই আমার সাথে 
বলতে পারি দুরন্ত কোনো হাওয়া ভাসিয়ে নিবে না
তোমার কন্ঠ রোধে
হাতে রেখে হাত চল না বরফ জড়ানো পথে 
এই আমার সাথে 
জমে পাথর হবে না 
শৈল চূড়া রশ্মি ছোঁয়ায় তুমি সরব রবে
কথাদের দিয়ে দাও ছুটি 
আবেশ অনুভবে খানিকটা হৃদয় ছুঁয়ে দাও না
গহীন অতলান্ত গহীন বাঁকে 
তোমায় খুঁজে পাবে 
যতটা এগুনো ততটা পিছন ফিরো না
অসম বেসুরো এক রেখা অস্পষ্ট মুছা মুছা 
নয়ন গোচর হবে 
আমার অস্পৃশ্য সুধা, তোমার অস্পষ্টতা 
তোমায়  আনন্দ কুঞ্জ সুধা আহরিত ঝিরিঝিরি আবেশী করে তুলবে 
তোমাতে দুঃসাহসী মুগ্ধ হওয়া 
এ যেন চলতি পথের দমকা হাওয়া
এই আমারি তিয়াসী বাসনায় ঠোকাঠুকি করত
ভেসে ভেসে যাওয়া 
আরশি ধর না
এই আমার আড়াল হয়ে 
গহীন গভীর হৃদ ছায়ায় দেখতে পাবে 
যেথায় ছিলে সেথায় আছো
মধ্য কিছু সময় গেলো 
এমনি কিছু অজয়া সময় কখনো কখনো থমকে দাঁড়ায়
ধরিত্রী তারে আপন করে তুলে নেয় আপন গহ্বরে
অভিযোগ অভিমান বিহীন বিশুদ্ধতায় তোমায় নির্দোষ রাজা সাজিয়ে।