০৯ এপ্রিল ২০২২

মমতা রায়চৌধুরীর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ১৪৮






উপন্যাস 


টানাপোড়েন ১৪৮
আমরা সবাই রাজা
মমতা রায়চৌধুরী

মনোজ আর রেখা, একান্তে বসে দুজনে কথা বলছে ঠিক তখনই  কলিংবেল বাজানোর আওয়াজ "জয় গনেশ ,জয় গনেশ ,জয় গনেশ দেবা"। 
রেখা বলে 'এই সময় কে আসলো দেখো?'
মনোজ বলল 'তাই তো ।দেখি তো ।আবার কলিং বেল বাজানোর আওয়াজ "জয় গনেশ, জয় গনেশ ,জয় গনেশ দেবা।"মনোজ সোফা ছেড়ে উঠতে উঠতে বলল "বাপরে বাপ ,যাচ্ছি ,যাচ্ছি।'
দরজা খুলেই মনোজ অবাক হয়ে যায় 'পার্থ তুমি এত রাত্রে কি ব্যাপার?'
'আরে বাবা ,দরজার বাইরে দঁড়িয়েই সব 
বলবো? না ভেতরে ঢুকবো?'
মনোজ বলে "ছি :ছি :ছি :ছি :তাই তো 
এসো ।ভেতরে এসো।'
পার্থর হাতে প্যাকেট দেখতে পেল। মনোজ  বলল "কি ব্যাপার, আবার কিছু হলো নাকি?"
"অনেক কিছুই ।এক ,সোনাই খুব খুশি সোনার হারটা পেয়ে ।তাই দাদা বৌদির কাছে আমরা একটা ট্রিট চেয়েছি।'
মনোজ বলল' বাহ এতো দারুন ব্যাপার।'
'সে তো দারুণ ব্যাপার তবে আপনারাও বাদ যাচ্ছেন না ।ওটা আপনাদের কেও থাকতে হবে।'
আর এই প্যাকেটে রেখা বৌদি অনেকদিন আগে ইলিশ মাছের কথা বলেছিল ,যে গঙ্গার ইলিশ মাছ খাবে, তা আজকে হঠাৎ করে বাজারে গঙ্গার ইলিশ মাছ দেখতে পেয়ে নিয়ে আসলাম।"
রেখা খুব উৎসাহের সঙ্গে বলে উঠলো 'কই দেখি,
দেখি "
মনোজ বলল" তাই তো দেখি। রেখা আর মনোজ দুজনেই গভীর উৎসাহে ব্যাগটা খুলে দেখে তারপর রেখা বলে ওঠে" আরিব্বাস।"
'থ্যাংক ইউ পার্থ।'
"মাছটা বেশ বড়ো মনে হচ্ছে।"
মনোজ বললো, দেড় কিলো হবে নাকি পার্থ?"
পার্থ বলল , না নাএক কিলো৩৭৫ গ্রাম।'
রেখা বলল "এই মাছটা নিয়ে আমার দেশের বাড়ি কাকু কাকিমার কাছে যাব।"
'ঠিক আছে বৌদি ,রাত হয়ে গেছে তো আসছি আমি।'
'হ্যাঁ এসো পার্থ ভাই।
কাকিমার শরীর ঠিক আছে পার্থ?'
"হ্যাঁ আছে ।tওই বাতের ব্যথা কষ্ট পাচ্ছে।
ও ভালো কথা বৌদি ,মা তোমাকে কিন্তু যেতে বলেছে ।ভুলেই গেছিলাম বলতে ,দেখেছ, কথায় কথায় এবার বাড়ি গেলেই মা জিজ্ঞেস করত বলেছিস রেখাকে।'
সবাই মিলে হো হো করে হেসে ওঠে।
ঠিক আছে আসছি মনোজ দা, বৌদি।
মনোজ রেখা দুজনেই বললে" হ্যাঁ ,এসো, এসো।'
পার্থ চলে গেলে দরজাটা বন্ধ করে দিল।
এবার রেখা বলল মিলিদের খাবারটা দিয়ে দিয়েছো 
"হ্যাঁ গো"
রেখা  বলল 'অনেকক্ষণ তো গল্প করলাম এবার বল খাবে কি,?
'আজকে আর কষ্ট করে কি রান্না করবে? 'তারচেয়ে ওটস খাও একটু। কোন কষ্ট করতে হবে না।'
"ঠিক আছে ।তাই হবে।"
"তবে জানো তো মিলিরা আর ছোট ঘরে থাকতে চাইছে না সারাদিন সামনের স্যাটারটা খোলা থাকবে। প্রয়োজনে ওরা ওখানে শুতে পারবে।
রেখা বলল" তাহলে আজকেই ওদেরকে ছেড়ে দিই।"
"তাই হোক ।
আজ থেকে ওরা মুক্ত।"
তবে জানো তো ভয় ভয় ও কাজ করছে। ছুটে রাস্তায় যদি চলে যায়।'
মনোজ বলল  প্রকৃতির নিয়মে ওদেরকে থাকতে দাও।
চলো যাই আজ ওদেরকে ছেড়ে দিয়ে  প্রকৃতির মুক্ত অঙ্গনে।"
রেখা কাছে গিয়ে বলল' মিলি আজ তুই আর তোর বাচ্চাদেরকে ছেড়ে দিলাম। এমনিতেও বাইরে থাকতিস শুধু বাচ্চাদের জন্য ভেতরে এখন আছিস। এখন তোদের সবাইকে ছেড়ে দিচ্ছি।
এতদিন শুধু আটকে রেখেছিলাম তোর বাচ্চাগুলো যাতে সেভ থাকে। তোরা বড় হয়েছিস তোরা কি আর বাঁধা থাকতে পারিস? কেমন যেন মনে হয় তোদেরকে শৃঙ্খলে অর্থাৎ বেডই তে বেঁধে রেখেছি। কেন তোদেরকে বেঁধে রাখব বল?
'আজ তোরা সবাই রাজা…..।"
"স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে ,কে বাঁচিতে চায়।"
বলেই গেটটা খুলে দিতেই ওরা যে যার মত বেরিয়ে পড়ল রাস্তায়। কতক্ষণ যে ওরা ছুটল 9 ঠিক ঠিকানা নেই। মনোজ আর রেখা দু 'চোখ মেলে দেখতে লাগলো।
অনেকক্ষণ ছোটার পর বাচ্চাগুলো হাঁপাতে লাগলো। তারপর ওদের নাম ধরে ডাকতেই ভেজ নেড়ে এসে চলে এলো তার বসে পড়লো।
নিজের মতো করে ঘুরতে ফিরতে দেখে সত্যি ভালো লাগলো।
মনোজ বলল চলো অনেক রাত হল ভেতরে যাই।
রেখা বলল "এই যা।'
মনোজ  বলল' কি হল আবার?'
রেখা জিভ কেটে বললো, পার্থ কে তোর টাকা দেওয়া হলো নাম আছে যা মাছের দামটাও তো জিজ্ঞেস করা হলো না।
ঠিক আছে অতো টেনশন নিচ্ছ কেন ফোন করে জেনে নেব। এখন না না না ফোন করে জানাটা ঠিক হবে না ঠিক আছে কালকে জেনে নেব। দাম দিয়ে দিলেই হবে।
তাছাড়া আমাদের পার্থ এরকম ছেলেও না।
তা যা বলেছ একদমই তাই। এ যুগের ছেলে ওর কোন রকম নেশা নেই দেখেছো?
একদমই তাই।
তুমি ভেতরে ঢুকেছে আমি দরজাটা লাগিয়ে দিচ্ছি।
ও বাবা এই দেখো গেট বন্ধ করতে দিচ্ছে না।।
রেখা ও এগিয়ে আসলো। কি হলো তোদের কি হল তোরা যে বাইরে বেরোবি বলে ছটফট করছিলি? এখন আবার কি ভেতরে কি বাইরে থাকো সোনা আমাদের লাগাতে হবে তোমরা পাহারা দাও কেমন?
তুলি মিলি পাইলট সকলে ঘেউ ঘেউ করে ওরা ওদের ভাষায় কিছু বলল।
"খারাপও লাগছে গো গেটটা দিতে।"
তাছাড়া দিতে তো হবেই।"
অভ্যাস হয়ে গেলে আবার দেখবে ওরা এসব বায়না করবে না।'
'ঠিক আছে রেখা একটু কটা বিস্কিট দাও না।
দাঁড়াও নিয়ে আসছি।'
'গেট খুলে ড্রয়িং রুমে কৌটোতে রাখা ব্রিটানিয়া বিস্কিট। আট দশটা বিস্কুট নিয়ে আসলো।
বিস্কিট গুলো ভেঙে ছড়িয়ে দিল ওরা দিব্যি কি সুন্দর খেতে লাগলো।
এবার মনোজ ইশারায় রেখাকে বলে ভেতরে যেতে বলে। আর মনোজ গেটটা লাগায়।
সব কটা মিলে একটু তাকিয়ে দেখল আবার নিজেরা খাওয়াতে মনোনিবেশ করল।
কলাপসিবল গেট লাগাতে লাগাতে মনোজ রেখাকে বলল 'তোমার একটু কাজ কমলো।
রেখা রান্না ঘরের দিকে যেতে যেতে বলল কি "কাজ কমলো গো?"
"কেন এখন তো আর ওরা ভেতরে পটি করবে না"
হ্যাঁ তা অবশ্য ঠিক।
"এ বাবা আমারও মাথা খারাপ হয়েছে দেখো।"
"কেন?"
"রান্নাঘরে খাবার তৈরি করতে যাচ্ছি তারা কিন্তু ফ্রেশ হতে হবে ভালো করে হাত মুখ ধুতে হবে,হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে।"
"হ্যাঁ আমিও তাই অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম।"
বলতে বলতেই রেখা ওয়াশরুমে গেল ভালো করে হাত মুখ ধুয়ে বেরতে যাবে তখন বলল আমাকে একটু টাওয়াল টা দাও না?
এই দি ই।
টাওয়ালটা রেখাকে দেবার পর রেখা মুখ মুছতে মুছতে বলল'তুমি ওটস এ কলা খাবে তো?'
মনোজ ওয়াশরুমের দিকে যেতে যেতে বললো, "হ্যাঁ খাবো কিন্তু আপেল খাব না।"
কেন একটু ফ্রুটস খেলে কি হয় গো?
মাংস আর মাংস।
মনোজ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে বলল "এই মাংস খাওয়া নিয়ে একটা মজার ঘটনা আছে জানো?'"
রেখা, উদগ্রীব হয়ে বললো' কি?'
'জানো মাংস খেতে এত ভালবাসতাম আমি আমার বাবা, জ্যাঠারা ।তো বাবা  বলেছিল জানিস আমরা গত জন্মে বাঘ ছিলাম?'
রেখা হো , হো, হো করে হেসে উঠলো বললো' 'কি?
'হ্যাঁ গো'।
'পারো বটে তোমরা।'
মনোজ এবার সোফাতে খুব আরাম করে বসে
রসিয়ে রসিয়ে বলতে লাগলো।
'জানো তো আমাদের এখানে মিলনদার' সুইট কেবিন 'আছে রেস্টুরেন্ট।
হ্যাঁ।
আমাদের এখানে প্রথম মিলন দায়ে এই রেস্টুরেন্ট বানান। মিলন দার তখন রমরমে অবস্থা। আমাদের সব বন্ধুরা আড্ডা দিতাম মিলন দার সুইট কেবিনে।
চলতো জমিয়ে আড্ডা আর খাওয়া-দাওয়া।
একদিন মিলন দা আমার সঙ্গে বাজি ধরলেন।
এই মনোজ তুই যদি কাঁচা মাংস খেতে পারিস তাহলে তোরে এক মাসের খাবার ফ্রি।
আমি তো আলহাদে আটখানা। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলাম।
তখন সুরো বলছে"এ মনোজ এই নিয়ে বাজি ধরার কোন দরকার নেই তোর?'
আমি বললাম' আমি বাজি লড়বো হারকিপটে মিলন দা, এক মাসের খাবার দেবে ফ্রিতে ভাবা যায়?'
মিলনদাও তখন বারবার বলে যাচ্ছেন' কিরে এত চিন্তা করছিস কেন বাজি ধর।'
আমি বললাম 'আমি রাজি।'
তখন আমাকে না  পেরে মিলনদা কে বললো তুমি একজন বয়জ্যেষ্ঠ ।তুমি কেন ওর সাথে এভাবে বাজি ধরছো বলতো?'
মিলন দা বলছে" আমাকে সবাই হারকিপটে বলে আমি এই নাম ঘুচাবো।'
'ঠিক আছে, তার জন্য তোমাকে বাজি ধরে কিপটে নাম গোছাতে হবে কেন তুমি এমনি আমাদেরকে খাইয়ে দাও না এক মাস ধরে।'
কি বলছিস সুরো?
ইতিমধ্যেই ভোলা দা মাংস নিয়ে ঢুকেছে। মনোজের তখন থেকেই জিভ ে জল এসে গেছে।
একবার জিভটা দিয়ে বেশ করে আপন মনে চেটে নিল।
ভোলা দা ভালো করে মাংসগুলো ধুজছে, ধোঁয়ার শেষে নুন হলুদ মাখিয়েছে কোরমা বানাবে বলে। ঠিক তখনই মনোজগ গিয়ে ভোলা দা কে বলল দাও আমাকে মাংস দাও।
ভোলা দা তো অবাক তুমি কাঁচা মাংস খাবে?
মনোজের তখন শরীরের রক্ত গরম তখন সে হুংকার ছেড়ে বলে 'তোমাকে যা বলছি তুমি সেটাই কর।'
অগত্যা ভোলা দা মাংস দিলো প্রথমে এক পিস।
মনের সেটাও খেয়ে ফেলল।
ভোলা দা আবার এক পিস দিল। সেটাও সাবার।
পরে ভোলাদা আবার এক পিস দিল।
এবার মিলন দা বেগতিক বুঝে ভোলাকে বললেন "আর মাংস দিবি না ওকে"।
"আমি বললাম কেন দেবে না কেন?'
"আমি হার স্বীকার করে নিচ্ছি তুই পারবি খেতে।'
"তাহলে আমারে এক মাসের খাবার ফ্রি। পাক্কা তো?"
মিলন দা কাঁদো কাঁদো ভাবে বললেন"চেয়ে নিচ্ছি আমাকে ক্ষমা কর। বাজিতে হেরে গেছি তুই জিতে গেছিস এক মাসের খাবার আমি ফ্রিতে খাওয়াতে পারব না।'
এবার আমার বন্ধুরা সবাই মিলে বলল এটা কি ব্যাপার হল কথার খেলাপ করলে মিলন দা।
মিলন দা তখনো কেঁদে যাচ্ছেন। অ্যাক্টিংটা ভালো করতে পারেন মিলন  দা।
আমাকে পথে বসিয়ে দিস না তোরা, তোদের আমি কাছে জোর হাত করে ক্ষমা চাইছি আমাকে ক্ষমা কর।।
"ছি: ছি: ছি:!! তুমি একজন রেপুটেড বিজনেসম্যান তার কথার কোন দাম থাকবে না অমিত বলল।'
"আমি সব মানছি কিন্তু আমি এক মাস ফ্রিতে খাওয়াতে পারব না রে।'
রেখা বলল" কি সাংঘাতিক কান্ড গো? ভদ্রলোক কথার খেলাপ করলেন?'
আজ বলো তাহলে আর বলছি কি? কি হবে? আমাদের মনটা গলাতেই হল।
সুরো বললো 'ছাড়তে পারি, আজকে তোমার কেবিনে যা যা ভালো খাবার হবে আমাদের এই বন্ধুদের খাওয়াতে হবে।"
মিলনদা দেখলেন বেকায়দায় পড়ে গেছেন এটুকু না করলে তো ছাড়বে না এরা ।তখন তাতেই রাজি হয়ে গেলেন অতি কষ্টে।
রেখা তখন হো হো হো করে হাসছে।
"আরে তখন তো বিয়ের আগে আমরা মাঝে মাঝেই এরকম গিয়ে আড্ডা মারতাম মিলন দার সুইট কেবিনে।"
সেই সোনালী দিনগুলোতে আমরা ছিলাম যেন সবাই রাজা। আমরা প্রত্যেকে গান গেয়ে উঠেছি "আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে….।"ওই একদিনের ট্রিট পাওয়াতে। নেই মামার থেকে তো কানা মামা ভালো।
আর এখন আমরা বন্ধুরা জীবন জীবিকার উদ্দেশ্যে কে কোথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলাম।
রেখা বলল সত্যিই তাই বিয়ের আগে তখন সাংসারিক দায়-দায়িত্ব থাকে না প্রত্যেকের একটা আলাদা ইমেজ তৈরি হয়। প্রত্যেকেই যেন সবসময় চার্জ থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তো বয়স বেড়ে যায় বলো, সাংসারিক দায়-দায়িত্ব বেড়ে যায় সাংসারিক বন্ধনে বাঁধা পড়ে যাওয়াতে।
একদমই তাই।
যাক কথা প্রসঙ্গে তবু অনেক কথা বেরিয়ে আসলো একটু হা হা হি করে নিলাম। তখনো গুনগুনিয়ে গান গাইছে "আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে। নইলে মোদের রাজার সনে মিলব….।"

কবি সুবর্ণ রায় এর কবিতা "বসন্তমাস"




বসন্তমাস



গাছগাছালিতে আগুন লাগা। 
ভালোবাসায় রক্তাক্ত মন।
চুড়ান্ত শিল্পটির নাম বসন্তমাস।

কবি সেলিম সেখ এর কবিতা "হাসি"




হাসি
সেলিম সেখ

তোমার ওই হাসি মুখটি
দেখতাম আমি যখন,
কোথায় যেন হারিয়ে যেতাম
থাকতো না হুঁস তখন।

মুক্তমনের মুক্ত হাসি
জুড়াতো মোর প্রাণ,
তোমার হাসিতে চাঁদের হাসি
হত যে তখন ম্লান।

যখন দেখি তোমার মুখে
থাকতো না কোনো হাসি,
মন চাইতো তোমার কাছে
যেনো ছুটে ছুটে আসি।

মিষ্টি-মধুর কথার ছলে
কেড়েছিলে মোর মন,
সময়ের ক্রমে নিয়েছো জায়গা
আমার হৃদয় কোণ।

মোর হৃদয়ে তোমার নাম
রয়েছে খোদাই করা, 
থাকবে সেথা চিরকাল
আসুক যতই খরা।

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ৮৪




ধারাবাহিক উপন্যাস 


শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৮৪)
শামীমা আহমেদ 



গাড়ি থেকে নেমে শায়লার চলার গতি ধীর হয়ে যায়। কেমন যেন পায়ে বাধা নিয়ে চলছে। বুবলী ঠিক বুঝতে পারছে না শায়লা আপু কেন এতটা ম্রিয়মান হয়ে আছে।আজ এতদিন পর তার হাজবেন্ড আসছে তারতো অনেক হাসিখুশি থাকবার কথা। গাড়িতে না হয় রাহাত ভাইয়া আর  ড্রাইভার ছিল কিন্তু এখনতো আপুর মধ্যে একটু আগ্রহ আসা উচিত।বুবলী যেন শায়লার অনিচ্ছাতে পার্লারে এনেছে। ও ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না কেন আপু এতটা নীরব ! বুবলী শায়লার হাত ধরে লিফটের দিকে এগিয়ে নিলো।কিন্তু শায়লা বারবার যেন পিছনে ফিরে কাউকে দেখবার চেষ্টা করছিল। লিফটে উঠে ওরা আটতলায় পার্লারে নামলো।  পার্লারে ঢুকতেই হেল্পিং মেয়েগুলো এগিয়ে এলো। তারা কি করতে চাইছে জানতে চাইল। বিয়ের সাজ না কোন পার্টি প্রোগ্রাম,না ম্যারিজ এনিভারসারি ? নাকি হলুদ না  পরিবারের কারো বিয়ে ? নাকি আজ বৌভাত, এটা কি নতুন বউ নাকি বাড়িতে  কোন আকদের আয়োজন ? তাদের মধ্যে কে বিয়ের কনে ইত্যাদি ইত্যাদি নানান প্রশ্নবাণে ওরা ওদের ক্লায়েন্টকে কাজে উৎসাহী করে তুলতে চাইছে। তারা দুজন কে কি করতে চায়।পার্লারে নানান রকম প্যাকেজ অফার শোনাতে লাগলো। বুবলী একা সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। সে চাইছিল শায়লার ইচ্ছে মতই সব কিছু হউক। কিন্তু  বুবলী লক্ষ্য করছে আপুকে কেমন যেন অন্যমনস্ক লাগছে । বুবলী জানে মেয়েরা বিয়ের দিন একটু আপসেট থাকে।জন্ম থেকে চেনা বাবার বাড়ির পরিবেশ থেকে অচেনা একটা মানুষকে তার পরিবারকে আপন করতে হয় এতে মেয়েরা একটু আবেগপ্রবণ হয়ে উঠে। কিন্তু শায়লা আপুর মুখটায় ঠিক সে রকমের কোন উৎকন্ঠা না তবে অন্য কেমন যেন মনটা ভার হয়ে আছে। 
তবুও যার বিয়ে তার ইচ্ছের তো মূল্য দিতে হবে। বুবলী শায়লাকে এক ঝাকুনি দিয়ে বললো, আপু তোমার কি হয়েছে ? ওরা এত রকম অফার দিচ্ছে তুমি কিছুই বলছো না ?  
কোনটা কি করাবো বুঝতে পারছিনা তো। 
পরক্ষনেই শায়লা কথা বলে উঠলো। বুবলী তুমি যেটা ভালো মনে করো সেটাই করো। এবার বুবলীর পক্ষে সিদ্ধান্ত  নিতে সহজ হলো। সে তার অনেক বান্ধবীর সাথে এভাবে বিয়ের আগে পার্লারে গেছে। তার অভিজ্ঞতা থেকে তাই বুবলী জানিয়ে দিলো,আজ আপুর হাজবেন্ড এক বছর পর কানাডা থেকে দেশে ফিরছেন। আপু একটু ফ্রেশ হতে চাইছেন। পার্লারের মেয়েরা এবার বুঝে নিলো কি করতে হবে। ওরা জানিয়ে দিল মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত যা যা করনীয় ওরা তা করে দিবে। বুবলী এবার একটু সুস্থির হলো । ওদের ওপর সব কিছু ছেড়ে দিলো। শুধু জানতে চাইলো  টোটাল কত খরচ পড়বে ? উত্তর শুনে  বুবলী কাজ শুরু করে দিতে বললেন। রাহাত আগেই বুবলীকে বেশ মোটা অংকের টাকা দিয়ে রেখেছিল গাড়িতে আসার সময়। বুবলী মোবাইলে রাহাতকে জানিয়ে দিলো যে কতটাকা লাগছে আর কতটা সময় লাগবে।রাহাত দুটোতেই সম্মতি জানিয়ে কাজে এগিয়ে যেতে বললো। যদিও নোমান সাহেব প্রতি মাসে নিয়মিতই শায়লার একাউন্টে বেশ মোটা অংকের টাকা পাঠাতো
স্ত্রীর  প্রতি খুবই মহান একটা দায়িত্ব  সে পালন করেছে । তবে শায়লা কখনো সেই একাউন্টের টাকা ধরেও দেখেনি। এই দেড় বছরে বেশ অনেক পরিমাণ টাকাই জমেছে। শায়লার কখনো সে টাকা ছুঁয়েও দেখেনি।আসলে শায়লা কখনোই মন থেকে নোমান সাহেবকে আপন করে নিতে পারেনি। আর তা সম্ভবও নয়। যেখানে শিহাব তার পুরোটা  মন জুড়ে দখল করে আছে।  কাজের শুরুতে প্যাকেজের আওতায় যা যা করতে হবে ওরা কয়েকজন মিলে তা শুরু করে দিলো।বুবলী দেখছে শায়লা আপু খুবই চিন্তামগ্ন। ওর সাথেও খুব একটা কথা বলছে না। বুবলী নিজের জন্য টুকটাক কিছু কাজ সিলেক্ট করে সেও বসে গেলো।  হঠাৎই দেখলো শায়লার একটা মেসেজ এলো। মোবাইলে তাকিয়েই শায়লার সারা মুখে হাসির দীপ্তি ছড়িয়ে গেলো ! বুবলী ভাবলো নিশ্চয়ই দুলাভাইয়ের মেসেজ। তাইতো আপু এত খুশি হলো। হয়তো এজন্যই আপু মন খারাপ করে ছিল এতক্ষন। কিন্তু বুবলী বুঝতে পারছে না কিভাবে মেসেজ এলো ?  দুলাভাইতো এখন ফ্লাইটে । সে কিভাবে মেসেজ পাঠাবে ? বুবলী মনের ভেতর প্রশ্নটা নিয়ে আয়নায় তাকালো।
কেমন যেন ঘটকা লাগছে তার কাছে। মনে হলো আপুকে একটু জোর করেই যেন পার্লারে আনা হলো। বুবলীর সব কেমন যেন এলোমেলো লাগছে। সে নিজের দিকে মনযোগ আনলো। হ্যাঁ চুলটা একটু স্ট্যাইল করে কাটতে হবে। নয়তো ভাল লাগবে না।
যদিও এখন সবকিছুই শায়লার ইচ্ছার বাইরে করতে হচ্ছে কিন্তু এইমাত্র শিহাবের মেসেজ পেয়েই শায়লা যেন উজ্জীবিত হয়ে উঠলো !
শিহাবের চমৎকার মেসেজ ! 
তোমার যতক্ষন ইচ্ছে সময় নাও।আমি নিচে তোমার জন্য অপেক্ষায় আছি । তুমি নেমে আমার বাইকে চলে আসবে।আমরা আজ ঢাকার বাইরে চলে যাবো। 
শায়লার চোখ আনন্দে হেসে উঠলো ! সে শুধু লাভ রিয়াক্ট দিয়ে  সম্মতি জানিয়ে মোবাইল  ব্যাগে তুলে রাখলো। মেয়েগুলো  একেকজন শায়লার  হাত পা চুল নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিলো। তারা শায়লার ম্যানিকিওর পেডিকিওর হেয়ার অয়েল ট্রিটমেন্ট করছে। হেয়ার মাসাজ হবে এরপর। তাছাড়া এখনোতো ফেসিয়াল ভ্রু প্লাক আরোমা স্পা বডি মাসাজ  আর হেয়ার সেটিং বাকী। সব মিলিয়ে দু'ঘন্টা লেগে যাবে। নিশ্চয়ই  শিহাব তার জন্য অপেক্ষা করবে। শিহাব মেরুন রঙা শার্ট পরা ছিল আজ।শায়লা একঝলক দেখেছে।আর সেটাই যেন চোখে লেগে আছে। শায়লা সামনের বড় আয়নায় তার দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো। ভেবে নিল, আজকের এই সাজটা যদি শিহাবের জন্য হতো তবে যেন শায়লা হতো পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানবী। কিন্তু সেকি পারবে রাহাতকে এড়িয়ে শিহাবের কাছে যেতে ? এ কথা ভাবতেই তার চোখ জলে ভরে গেলো।

শায়লা আর বুবলী  গাড়ি থেকে নেমে যেতেই রাহাত ড্রাইভার মুনীরকে  আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ি রাখতে বলে সে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো। রাহাতের ইচ্ছা শিহাবের সাথে কথা বলার। আর তা ড্রাইভার মুনীর যেন দেখতে না পায়। রাহাত সবসময়ই ড্রাইভার দারোয়ান কাজের লোকদের থেকে সাবধান থাকে। ওরা নানানজনে কথা ছড়ায়। 
রাহাত শিহাবের দিকে এগিয়ে গেলো।রাহাত দেখলো  মেরুন রঙা শার্টে শিহাবকে দারুণ হ্যান্ডসাম লাগছে। রাহাত সালাম দিয়ে দুজনেই হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে নিলো।
শায়লার কারনে দুজনে একসময় খুব কাছাকাছি এসেছিল। শিহাবের চাওয়াকে বাস্তব রূপ  দেয়ার জন্য রাহাত প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে রাহাত নিযেকে পালটে  ফেলেছে।বলা যায় শায়লা আর শিহাবের সাথে সে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।অবশ্য এতে শিহাবের কিছু আসে যায় না। শায়লাকে আপন করে পেতে সে একাই যথেষ্ট।  
কেমন আছেন শিহাব ভাইয়া ? রাহাত খুবই নমনীয় ভাষায় কথা বললো।
শিহাব রাহাতকে তার মনের দৃঢ়তা প্রকাশ করতে জানালো, আমি এই মূহুর্তে খুব ভালো আছি। আমি শায়লার জন্য অপেক্ষায় আছি।এটাই আমার সবচেয়ে মধুর সময় রাহাত। আর তুমি এটা খুব ভালো করেই জানো তোমার আপু আমার কাছে কতখানি ভালোবাসার। রাহাত নিজেকে যেন সবকিছুর জন্য অপরাধী ভাবছে।তবুও পরিবারের সম্মানের দিক বিবেচনায় তাকে এতটা  কঠোর হতে হয়েছে,জানালো রাহাত।
শিহাব তাতে এতটুকুও বিচলিত না হয়ে বললো, তুমি চিন্তা করোনা রাহাত, তোমার আপু আমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালবাসতে পারবে না কোনদিন। সংসার করাতো দূরের কথা।
রাহাত এবার যেন ভেঙে পড়লো।  যদিও শিহাবকে রাহাতের নিজেরও খুবই ভালো লাগে কিন্তু তার কিছুই করার নেই। রাহাত বললো, ভাইয়া,  আপনার আর আপুর সম্পর্কটা যদি আপুর বিয়ের আগের হতো তাহলে আমি নিজেই আপুকে আপনার হাতে তুলে দিতাম। কিন্তু একজন বিবাহিতা নারী অন্যের দাবীদার। সেটাতো আমি ছিনিয়ে নিতে পারি না।
শিহাব যেন শায়লার হয়ে আজ তার বক্তব্য রাখছে। শিহাব আবার বলতে শুরু করলো, 
রাহাত শায়লার বিয়েতে তোমরা নিজেদের স্বার্থটাই দেখেছো। তাইতো শায়লার মত না নিয়ে ওকে তোমরা বিয়ে দিয়েছো। বিয়ের আগে না পরে জানিনা, আমি শায়লাকে ভালোবাসি।আর শায়লাও আমাকে ভালবাসে।সে কানাডা যেতে চায়না। সে দেশে থাকতে চায়, সে  আমাকেই চায়। আমরা এক হবোই। 
এবার রাহাত ভীষণভাবে ভীত হয়ে গেলো।সে হাত জোড় করে শিহাবের কাছে নানান আকুতি রাখছে। আমাদের পরিবারের মান সম্মান নষ্ট হবে শিহাব ভাইয়া, ছোট বোনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন বোনকে কথা শুনাবে। আত্মীয় স্বজনের কাছে আমরা ছোট  হয়ে যাবো। সেই দূরদেশ থেকে নোমান  ভাইয়া আসছে তার স্ত্রীর প্রতি তার পূর্ণ অধিকার আছে। সে এবার আপুকে নিয়ে যাবে।
শিহাব রাহাতের কথা খন্ডন করে বললো, সে কি শায়লাকে স্ত্রী হিসেবে নিবে না তার দুই সন্তানকে লালন পালনের জন্য নিবে ? হ্যাঁ, আমারো সন্তান আছে। তবে শায়লাকে আমি আগে ভালোবেসেছি তারপর আরাফের মা করে নিতে চেয়েছি। এখানে আমরা দুজন দুজনকে আগে চেয়েছি শুধু ভালোবেসে।
রাহাত বলেই চলেছে, শিহাব ভাইয়া একটু বুঝতে চেষ্টা করুন। বাসা ভর্তি মেহমান এসেছে, নোমান ভাইয়া আজ আসছেন তাকে অপমান করা কোন ভদ্রজনোচিত কাজ হবে না 
শিহাব ভাইয়া। 
সে আমি জানতে চাইনা।তোমাদের উচিত ছিল তাকে দেশে আসতে নিষেধ করা।  শিহাব রাহাতের প্রতিটি কথা খুব ঠান্ডা মাথায় খন্ডন করে দিচ্ছে। সে রাহাতকে জানালো, দেখো রাহাত,  তোমার আপু আমার সাথে অনেকবার দেখা করেছে। আমিও তাকে দেখতে চেয়ে আসতে বলেছি। আমি চাইলে কিন্তু তখন তাকে আটকে ফেলতে পারতাম।আমি জোর করলে তোমার আপু থেকে  যেতো।আর সেটাই হতো  তোমাদের পরিবারের জন্য  অসম্মানের। আর তুমি যখন বুঝতে পেরেছো  আমি আর শায়লা পরস্পরকে ভালবেসেছি, ভাই হিসেবে তোমার উচিত ছিল নোমান সাহেবকে বুঝিয়ে বিয়ের সম্পর্কটা ওখানেই শেষ করা। কিন্তু তুমি তোমরা বেচারী শায়লাকে সেই দূরদেশে ওর চেয়েও অনেক বয়সের ব্যবধানের এমন একজনের সাথে বিয়ে দিয়েছো। তুমি নিজে ভাল থাকবার জন্য  শায়লার মন মত কোন কিছুর দিকে তাকাচ্ছো না। এটা খুব অন্যায় হচ্ছে।
কিন্তু শিহাব ভাইয়া এগুলো এখন বলে আর কি হবে ? 
কেন ? শায়লা তোমাকে বলেনি নোমান সাহেবকে আসতে নিষেধ করে দাও। তোমরা সেটা শুনোনি। তবে জেনে রাখো, শায়লা আমার এবং সে আমার সাথেই তার বাকী জীবন কাটাবে। সে নামলেই আমি তাকে বাইকে তুলে নিবো। আমার  বাসাতেই নিয়ে যাবো।তোমাকে ঠিকানা জানাবো বোনকে দেখে আসবে।
আমি সবকিছুতেই খুব স্বচ্ছতা পছন্দ করি রাহাত। শিহাবের কথাগুলোতে রাহাত ভীষণ অবাক হয়ে যাচ্ছিল। 
রাহাত বুঝতে পারছে না কিভাবে শিহাব ভাইয়্য এতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলছে। তবে কি ভালবাসার শক্তি সবকিছু জয় করার সাহস যোগায়। শায়লা আপুও যেন পরিবার স্বামী সব কিছুকে উপেক্ষা করছে।রাহাত বুঝতে পারছে না সে এখন কি করবে ?  আর কয়েক ঘন্টা পরেই নোমান সাহেব চলে আসছেন। এখন শিহাব ভাইয়াকে কি দিয়ে থামাবে? তবে রাহাত ভাবছে, সে চাইলে এখুনি শায়লাকে শিহাবের হাতে তুলে দিতে পারে।কিন্তু বৃদ্ধ মা, আত্মীয়স্বজন, পারিপার্শ্বিকতা মান সম্মান কিভাবে এগুলোর মোকাবেলা করবে ? অপরাধবোধে রাহাতের মনের ভেতর কুরে করে খাচ্ছে। সে গভীর চিন্তায় ডুবে গেলো !
হঠাৎই  শিহাবের মোবাইল বেজে উঠলো ! ওপারের খবর শুনে ধবধবে উজালা শিহারের মুখখানি নিমেষেই কালো অন্ধকারে ডুবে গেলো।
রাহাত ওপ্রান্তের খবরটা জানতে উদগ্রীব হয়ে রইল।


চলবে....

কবি ফারজানা  আফরোজ এর কবিতা " সেলফি"




সেলফি
ফারজানা  আফরোজ 

সেলফি তুলছি নদী,সাগর,পাহাড়ে
সেলফি তুলছি ঘরে কভু বাহিরে
সেলফি তুলছি হাটে-ঘাটে,বাজারে
সেলফি তুলছি পার্কে,উদ্যানে
সেলফি তুলছি গাড়িতে ঘুরতে।
সেলফি তুলছি গ্রামে আর শহরে
সেলফি তুলছি খেতে খেতে টেবিলে
সেলফি তুলছি একা বা দল বেধে
সেলফি তুলছি আলোচনা,পোগ্রামে
সেলফি তুলছি কবরে বা শশ্বানে।
সেলফির সাথে দিই কত রকম ক্যাপশন
সেলফি তুলতে কভু ঘটে  অঘটন।
সেলফি তুলতে সবাই যে অস্থির,
সেলফির মত যেন নিজ নিয়েই ব্যস্ত।
সেলফির এই যুগে রাখে কে কার খবর,
সেলফির মত একা কভু লাগে এখন।
সেলফিতে ভেসে ওঠে কত শত প্রিয় মুখ,
সেলফিতে রয়ে যায় চলে যাওয়া বহু ক্ষণ।

Nj jsu

LOVE