২৭ নভেম্বর ২০২১

কংকা চৌধুরী গুপ্তা ( ইংল্যান্ড )





নীরবতা
     

মৌনতা ছুঁয়ে যায় —
নিবিড় প্রেমের আলিঙ্গনে
তোমার পায়ের শব্দ শুনি 
নিশীথের নীরব দ্বারে।
 
শব্দরা আজ নিস্তব্ধ নিঝুম রাতে
স্বপ্নরা আগোছালো নির্ঘুম রাতে
অবাক করা এই পৃথিবী 
অনন্ত প্রশ্নের জবাব খুঁজে।

তুমি আজ ও নিশ্চুপ ব্যস্ত জীবনে
হারিয়ে যাওয়া সেই মুহূর্ত 
নিরুদ্দেশে হারিয়ে গেছে 
জীবন মরুর মাঝখানে।

হটাৎ ঝড়ো হাওয়ায় 
মনের দরজাটা খুলে যায় 
প্রতিধ্বনিত হয় অনুচ্চারিত শব্দের
নীরবতাই হোক সম্পর্কের জয়।
         কংকা চৌধুরী গুপ্তা

লেখক শান্তা কামালী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "বনফুল"৩০

চোখ রাখুন স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শান্তা কামালী'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "বনফুল" 





বনফুল
( ৩০ তম পর্ব ) 


                                                      জুঁই সাজগোজ করে নিচে নেমে এলো।
 জুঁইয়ের আম্মু জানতে চাইলো,জুঁই মা তুমি কি কোথাও বেরোচ্ছ ? 
জুঁই উত্তরে বললো হ্যাঁ আম্মু আমি আর পলাশ আজ বাইরে লাঞ্চ করবো, তাই একটু তাড়াতাড়ি না বেরোলে জ্যামে পরে যাবো। জুঁই অনেকটা আগে বেরিয়ে যথারীতি পলাশকে পিক করে নিলো.....

ড্রাইভার জুঁইয়ের পছন্দের রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল। দুজনের পছন্দের খাবারই অর্ডার করলো জুঁই.. …..।

সৈকত বাসায় পৌঁছতে তিনটা বেজে গেল।বাবা-মা দুজনেই সৈকতের আসার অপেক্ষায় উদগ্রীব হয়ে ছিলো। সৈকতের রেজাল্টে বাবা-মা দুজনেই ভীষণ খুশি সৈকত ও যে ফার্স্টক্লাস পেয়েছে। 
সৈকত ব্যাগ রেখে ওায়াশ  রুমে ঢুকে শাওয়ার নিয়ে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে এসে পাঁচ মিনিট নিজের ঘরে বসে।তারপর  বাবা-মারের সাথে  বসে লাঞ্চ করে নিজের রুমে ঢুকে অহনাকে ফোন দিলো।
 অহনা ফোন ধরে জানতে চাইলো রাস্তায় কোন সমস্যা হযনি তো?  সৈকত বললো এই ট্রেনে সচরাচর কোনো রকম সমস্যা হয় না। আমি ঠিক ভাবে পৌঁছে শাওয়ার  করে খেয়ে তবেই তোমাকে ফোন দিচ্ছি।
 তুমি কি করছো ডিয়ার, খেয়েছো?  
অহনা উত্তরে বলল, না। সৈকত বুঝতে পেরেছে ওর চলে যাওয়ার কষ্ট টা অহনা মানতে পারছে না । সৈকত বললো অহনা তুমি আগে যাও খেয়ে এসো,তারপর   আমাকে ফোন দিও। 
পলাশ ও জুঁইয়ের খাওয়া প্রায় শেষ। জুঁই বললো পলাশ চলো আজ আমরা বিকাল টা নিজের মতো করে ঘুরি। পলাশ ও বললো, হ্যাঁ চলো। 




চলবে....

রিটন মোস্তফা





হবে কি সময় তোমার


একটু হবে কি সময় তোমার,
আমার জন্য? 
আমাকে আপন ভেবে
খুব যত্নে ভালোবাসবার?
বুকে রাখবার?
দু'একটা স্বপ্ন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার?
হবে কি সময় তোমার,
ব্যস্ত প্রহরে একটু সময়?
এই আমাকে বুক পাঁজরে
চিরস্থায়ী আবাস দেবার?

ফাল্গুন হয়ে
আগুন জ্বালাবে কি অন্তরে?
অথবা
বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে ভেজাবে শুষ্ক বুক? 
আঁকাবাঁকা নদী হয়ে
দেখাবে কি জীবনের মুখ?

একটু অবসর হবে কি তোমার?
ভালোবাসার?
ভালোবেসে বড্ড আবেগে
খুব যত্ন করে জড়িয়ে ধরার?
হবে কি একটু ফিরে দেখা?
পেছনের পথিকেরে
কে আছে 
এক আকাশ প্রম দু'হাতে তুলে তোমাকে দিতে?

যদি একটু ইচ্ছে হয়,
মনটা গলে, তবে ভালোবেসে
তুমি ডেকো আমায় আবেগে,
পাশে নিও, সাথে নিও 
আসবো আমি,
পৃথিবীর তেপান্তরের বিশৃঙ্খলা উপেক্ষা করে....

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"৫৩

কান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক।  তার নিত্যদিনের  আসা  যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কথা  নিয়ে  কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন  চলবে...






টানাপোড়েন ৫৩

মায়ের রূপ


সবেমাত্র মনোজের ফোনটা রেখা কেটেছে, তখনই ভোলা কাকা এসে বলল" ছোট বৌদি বুলু বৌদির পাগলামিটা আবার বেড়েছে।'
কাকিমা বললেন  'কেন রে হঠাৎ করে আবার বাড়লো মাঝে তো বেশ একটু মনে হচ্ছে ঠিক হয়েছিল?'
ভোলা কাকা বলল  'কি জানি, কিছু বুঝতে পারছি না ।এখন তো বাড়িতে যাওয়া আসায় অনেক বিধিনিষেধ হয়েছে ।ফলে ভেতরে কি হচ্ছে ,না হচ্ছে কিছুই জানা যায় না।'
কাকিমা বললেন ' হ্যাঁ ,তা যা বলেছিস ,।বাড়িটা কত সুন্দর ছিল ‌পঞ্চা'দা  মারা গেলেন বুলুদিও কেমন যেন হয়ে গেলেন।'
ঘরের ভেতর থেকে কাকা বললেন ' কি হয়েছে রে ভোলা ?কি হয়েছে?'
কাকিমা  ভোলাকে একটু রেগে বললেন  'কথাটা একটু আস্তে বলতে পারিস না  হতচ্ছাড়া।জানিস তো একজনের কান কতটা খাড়া। এবার নাও ঠ্যালা বোঝো?'
ভোলা বলল ' হ্যাঁ, ছোটবৌদি ভুল হয়ে গেছে। আসলে ওই কথাটা শোনার পর,  আর উত্তেজনা চেপে রাখতে পারি নি।'
কাকিমা বললেন ' না ভুল আমিও করেছি , তোর ওপর মিছিমিছি রাগ করলাম। কি করব বল আমরা তো প্রত্যেকে ভালোবাসি। তাই আপন জনের কিছু হলে সত্যিই খারাপ লাগে?'
কাকু আবার বললেন  'তোমরা আমাকে কিছু বলবে কি হয়েছে, ননী ননী?'
রেখা তো কাকিমার মুখের দিকে তাকাল আর ইশারায় বোঝাতে চাইল কি বলবে কাকাকে?
কাকিমা বললেন ' ননী এখানে নেই। কি চাইছো বলো তো?'
কাকা বললেন ' কিছু চাইছি না ।কি হয়েছে সেটা জানতে চাইছি?'
কাকিমা বললেন 'কোথায় কি হয়েছে? তুমি আজকাল একটু বেশি শুনছো মনে হচ্ছে? কিছুই হয়নি।''
কাকা বললেন , 'ভোলা এসে,কি বলছিল?'
কাকিমা বললেন, '  বলছিল,  ননীকে নিয়ে বুলু দিদির বাড়ি যাব কিনা?'
কাকা বললেন ' ও, আমি ভাবলাম আবার বুলু বৌদির কিছু হল কিনা? দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।'
কাকিমা এবার রেখার দিকে তাকিয়ে বললেন  'দেখলি তোর কাকার অবস্থা?'
রেখা একটু হাসল আর ভাবল ' কাকিমা কিভাবে এতসব কিছু ম্যানেজ করে ।সত্যি বাবা ,কাকিমা বলেই সম্ভব।'
কাকিমা বললেন 'কি রে ননী,কি ভাবছিস ? আয় তো চটপট খাবারটা খেয়ে নে মা।'
ভোলা কাকা বলল 'একটু বৃষ্টিটা ছাড়লো  । কাল থেকে যেভাবে বৃষ্টি ।কোথাও কেউ বের হতে পারছে না।'
কাকিমা বললেন  'তা যা বলেছিস ভোলা ?মেয়েটা এসেছে ।একটু গ্রামটা ঘুরে ঘুরে দেখবে ,একদিনে তো সম্ভব নয়?'
ভোলা কাকা বললেন 'হ্যাঁ, মামনি। এতদিন পর আসলো ওর তো সত্যিই দেখতে ইচ্ছে করবে?'
রেখা বলল  'ভোলা কাকা, ময়নাদি কেমন আছে গো '
কাকিমা ইশারায় রেখাকে বোঝাতে চাইলে এসব ব্যাপারে কথা না বলতে?
কাকিমা এবার ভোলাকে বলল  'ভোলা ব্যাগ নিয়ে যা দেখ তো,বাজারে কি ভালো জিনিস আছে ?একটু মাশরুম ‌ পাওয়া যায় কিনা ,দেখিস তো? ননী,মাশরুম খেতে খুব ভালোবাসে'।
ভোলা বলল – হ্যাঁ ,এই যাই ছোটবৌদি ।বাজারের ব্যাগটা..?
কাকিমা বললেন  ,ভোলা আজকাল দেখতে পাচ্ছি তোদের সবার বয়স হয়েছে ।শুধু আমার বয়স বাড়ে নি ।'
ভোলা হেসে বলল  'তা অবশ্য ঠিকই বলেছ ছোট বৌদি।'
কাকিমা বললেন 'বাজারে যাবার আগে খেয়ে যাবি ।আবার কখন আসবি তো ঠিক ঠিকানা নেই ।
এদিকে তো গ্যাস অম্বলে ভুগছিস?'
ভোলা বলল 'পরে এসে খাই ছোট বৌদি?'
কাকিমা বললেন 'না ,একদম না। খেয়ে যা ।দেখ ,এমনিতে  দাদাকে নিয়ে ... এরপর
 যদি তোর কিছু হয় , তাহলে আমার কি অবস্থা হবে বল তো?'
ভোলা কাকা কথা না বাড়িয়ে বলল  'ঠিক আছে। দাও।'
ভোলা কাকাকে খাবারটা দিয়ে কাকিমা এবার রেখাকে বলল' নে,ননী। তুইও খেয়ে নে।'
রেখা বলল  'তুমি খাবে না?'
কাকিমা বললেন  'ওরে বাবা, আমি ঠিক খেয়ে নেবো ।তোরা খা না?'
ভোলা কাকা বলল  'না মামনি, ছোটবৌদি এরকমই বলে ।ছোট বৌদি এখন আর টাইমে কিছু খাবার খেতে পারে না । কাজ কাজ করে?'
কাকিমা বললেন 'নে,তোকে আর শিবের গাজন গাইতে  হবে না । তাড়াতাড়ি বাজারে যা।'
রেখা বলল ' না কাকিমা ,এটা কিন্তু একদমই ঠিক নয় ।তোমাকে তো সুস্থ থাকতে হবে বল?
কাকিমা বললেন  'হ্যাঁ রে ,বাবা ।আমি সুস্থই আছি ।অত ভাবিস না তো।'
রেখা মনে মনে ভাবছে' সত্যিই মানুষটা অন্নপূর্ণা। মা যখন বেঁচে ছিল, তখনও দেখেছি সেই একই রকমভাবে এরা এই ভাবেই সংসারের জন্য কাজ করতেন,এখনো সেই একই ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। কি করে পারেন? কোথা থেকে এত স্ট্যামিনার আসে ?মনের জোর অনেক বেশি কাকিমার।'
কাকিমা বললেন  'ওই যে বসে বসে ভাবছিস  ননী? এত কি আকাশ-পাতাল ভাবছিস বল তো?'
রেখা বলল 'না কাকিমা। আমি শুনবো না ।আমি এই দু'দিন আছি। তোমাকে আমার সঙ্গে খেতে হবে। নইলে কিন্তু আমি খাব না?'
কাকিমা বললেন  ' কাজের সময় যদি তোরা এরকম আবদার করিস ,ভালো লাগে বল?'
রেখা বলল 'আমি একদমই শুনবো না,যদি তুমি..? আমি খাব না?'
কাকিমা  বললেন 'ঠিক আছে, নে বাবা,। খেতে আয় ,আমারও নিয়েছি।'
এবার রেখা হেসে বলল  'ঠিক আছে। তুমি আগে খাও ।তারপর আমি খাবো?'
কাকিমা বললেন 'কোথা থেকে আমার পাকা বুড়ি মা এসেছেন রে ,মেয়ের যত্ন নেবার জন্য ।কতদিন পর আসলে মা?'
রেখা বলল  'না কাকিমা। সত্যি সময় পাই না ।এবার আসব?'
কাকিমা বললেন  'ওখানে গিয়ে আবার আমাকে ভুলে যাবি না ?আসবি তো মা ঠিক?'
রেখাবলল ' হ্যাঁ কাকিমা ।আসতে তো আমাকে হবেই তোমরা যে অবস্থায় আছো ,তোমাদেরকে কে দেখার কে আছে বল,,,?'
কাকিমা বললেন  ''ননী ,তুই  যে এই কথাটুকু বলেছিস মা ,তাতেই আমরা খুশি ।তোরা ভালো থাকিস এটুকুই চাই।'
রেখা কাকিমার চুলের দিকে তাকিয়ে বলল  'কাকিমা তোমার চুল এ দু'দিনে তো দেখা হয় নি ।আজ দেখছি এখনও সে রকমই ঘন লম্বা ,শুধু একটিমাত্র জিনিস চেঞ্জ, পাক ধরেছে এই যা।'
কাকিমা বললেন '  আর চুল চুলের যত্ন নিতে কোথায় পারি রে?'
রেখা বললো 'ভগবান যত রূপ,গুণ , সব তোমাদের দিয়ে রেখেছে ।মেয়েদের তো একটু দিতে পারতো বলো?'
কাকিমা এবার রেখার কাছে এসে, রেখাকে কাছে টেনে নিয়ে বললো  "দেখো আমার ক্ষ্যেপি মেয়ের কথা ।তোরা কত সুন্দর ?কে বলে রে আমার মেয়েরা সুন্দর নয়, গুণ নেই।'
রেখা হেসে বলল ' সে যাই বলো না কেন ,?কাকিমা তোমার মেয়েদেরকে দেখতে তোমরা সবথেকে ভালো মেয়ে বলবে কিন্তু..?'
কাকিমা বললেন  'কিন্তু নয় ননী? বিশেষত আমার এই মেয়ে সম্পর্কে যদি কেউ কিছু বলে সেটা তো মেনে নিতে পারবো না ।'
রেখা কাকিমার কোলে মাথা দিয়ে বলতে লাগলো  'এ যেন স্বর্গীয় সুখ কাকিমা। এ সুখ কোথায় পাবো?'
কাকিমা রেখার চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলল ' চুল গুলো এরকম হয়ে গেল কি করে মা?  কত  চুল ছিলো তোর মাথায়?'
রেখা বলল  'অনেক স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেতে হয়েছে কাকিমা। তোমাদের তো কিছু জানাই নি।'
কাকিমা বললেন 'সে কিরে?'
রেখা বললো  'হ্যাঁ, কাকিমা ।'
কাকিমা বললেন 'কি হয়েছিল?'
রেখা বলল ' অন্যসময় ,সময় করে বলব। এখন তো তোমার প্রচুর কাজ?'
কাকিমা বললেন' হ্যাঁ রে ,বেলা বয়ে যাচ্ছে। তারপর ভোলাকাকার দিকে তাকিয়ে' এই ভোলা তুই বসে বসে এখনও আমাদের কথা শুনছিস ?কখন বাজার করবি ?কখন রান্না করবো?'
ভোলা কাকা জিভ কেটে বলল 'এক্ষুনি যাচ্ছি ছোট বৌদি?'
কাকিমা বললেন 'দেরি হলে, আজকে তুই রান্না করবি?'
ভোলা কাকা বলল  'সে তো আমি রান্না করতে চাই ।তুমি অসুস্থ হলেই রান্না করতে দাও না ,আর এখন তো  মামনি এসেছে ।তুমি রান্না করতে দেবে আমাকে?'
কাকিমা বললেন  'সে তো ঠিকই। আমার মেয়েটা এতদিন পরে এসেছে ।আমি নিজে হাতে রান্না করে খাওয়াবো ।অন্যকারো হাতে তো ছাড়তেই পারবো না।'
ভোলা কাকা বলল 'মামনি কথাটা মিলে গেল তো?'
কাকিমা বললেন' আর মেলা বকিস না । '
রেখার চোখে জল দেখে, কাকিমা বললেন' কী হয়েছে রে, ননী। কাঁদছিস কেন?'
রেখা শুধু মাথা নাড়িয়ে বলল 'এমনি ‌।'
আরবলল' মা তো মা ই হয়। তুমি আমার আরেক মা।
'কাকিমা রেখাকে বুকে টেনে নিয়ে বললেন'যতদিন বেঁচে আছি ততদিন কোন কিছুতেই টেনশন করবি না। নিজেকে দেখিয়ে বললেন' আছি তো?'

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক উপন্যাস "অলিখিত শর্ত" পর্ব ১৯

 স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শামীমা আহমেদ'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "অলিখিত শর্ত"
 ভুল করে ২০ তম পর্ব প্রকাশ হয়ে যায় ।   ১৯ তম পর্ব  আগে না প্রকাশ হবার জন্য সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি পত্রিকার পক্ষ হতে , সম্পাদক দেবব্রত সরকার। 

শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত 
                                              (পর্ব ২০)
   শামীমা আহমেদ 



                                                                শাওয়ার থেকে বেরিয়ে শিহাব দ্রুত তৈরি হয়ে নিলো।সারাদিনের কাজের ম্যাপটা একবার এঁকে নিলো মনে মনে। শায়লার সাথে দেখা করা, হসপিটালে যাওয়া, কুরিয়র অফিসে গিয়ে আবার বাসায় ফেরা তারপর গুলশানে যাওয়া। আপাতত দিনের প্রথম ভাগে যা যা করণীয় তার ছক কেটে মাথায় বসিয়ে নিল ।শিহাব কোন কিছুই ঝোঁকের মাথায় করে না।খুব ধীর স্থিরভাবে ভেবে চিন্তে করে। রিশতিনাকে নিয়েও তার কোন তাড়াহুড়া ছিল না কিন্তু কিভাবে কি ঘটে গেলো!  আজ তাই  পরিস্থিতি সবকিছুর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলো।
পোষাকের ব্যাপারে ভীষণ চুজি শিহাব,
বাইকে লং ড্রাইভে যেতে হলে ধুলাবালি এড়াতে জিন্সের ভারী শার্ট প্রেফার করে। শার্ট আয়রন করাই ছিল। সাথে ব্ল্যাক প্যান্ট। আজ কেডস পরতে মন চাইছে। সাদা নীল কম্বিনেশনের নতুন এডিডাস কেডস প্যাকেট থেকে বের করে নিলো। হায়! নয়টা বেজে গেছে! শিহাব চট করে তৈরী হয়ে এক ঘড়া পারফিউম ঢেলে  দ্রুতই ছুটলো গন্তব্যের দিকে। আয়নায় তাকানোর সময় নেই।শিহাব রুম লক করে নীচে নেমে এলো।
পথটা শায়লার চেনাই ছিল ।রিকশা একটানে চলে এলো।শুধু শায়লার মনের ভেতরের অস্থিরতা উৎকন্ঠা সামনের সবকিছুকে অদৃশ্য করে রাখল।
আফা কোন গেটে নামবেন? রিকশাওয়ালার কথায় শায়লা নিজেকে রিকশায় আবিষ্কার করলো!
ওহ! এখানেই এখানেই।রাখেন রাখেন।
শায়লা রিকশাভাড়া চুকিয়ে নামল।
আশেপাশে উৎসুক মানুষের দৃষ্টি। এটা এই দেশে খুবই কমন দৃশ্য। একজন মহিলা দেখবে আর তাকাবে না সেটা আমাদের দেশে খুবই রেয়ার ঘটনা।শায়লা দেখলো হ্যাঁ, কোনায় একটা চায়ের টং ঘর দেখা যাচ্ছে জনাকয়েক মানুষ দাঁড়িয়ে  তবে কোনো  মুখ চেনা লাগছে না। শায়লা তাই সেখানেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। 
অনেক অফিসযাত্রী মানুষজন কর্মক্ষেত্রে ছুটছে। শায়লার নিজের অফিস টাইমের কথা মনে পড়লো।
হঠাৎই  উল্কার বেগে একেবারে উর্ধ্বশ্বাসে একটা লেটেস্ট মডেলের বাইক এসে থামল। শায়লা খুবই নিখুঁত  দৃষ্টি ফেলে  হেলমেটের আড়ালের মুখটা চিনে নেয়ার চেষ্টা করছে। লোকটি বাইকটা সাইড করে স্টার্ট বন্ধ করলো।চাবিটা হাতে  নিয়ে  হেলমেট খুলে সানগ্লাসে ঢাকা চোখের একটা লুক এদিক সেদিক ঘুরছে। শায়লা এফবির পিকের সাথে মেলাতে চাইছে। হু, বুঝা গেলো ইনিই সেই কাংখিত ব্যক্তি। শায়লার ভেতরে ধক ধক শব্দ স্পষ্ট! দেখলো অপূর্ব মুখশ্রী! হিরো হিরো টাইপ।নীল জিন্স শার্টের সাথে শুভ্র মুখখানি যেন এক খন্ড শরতের আকাশ! বেশ পরিপাটি পোষাকের  ব্যক্তিটি তার দিকেই এগিয়ে আসছে আর সুগন্ধি তা জানান দিচ্ছে। শায়লা কিছুক্ষণের জন্য  যেন এই মহাবিশ্বের বাইরে ছিটকে পড়েছিল।একেবারে ভাবলেশহীনতায় হাত পা অবশ হয়ে আসছিল।
শায়লার কাছে এসে বেশ কনফিডেন্স নিয়েই লোকটি বললেন, আমি শিহাব। আসতে একটু দেরি হয়ে গেলো, আমি দুঃখিত! অনেক রাতে ঘুমিয়েছি।উঠতে তাই লেট হয়ে যায়।
শায়লা বলে উঠল,না না, ঠিক আছে। আমি শায়লা।
আমি বুঝেছি।
কিভাবে বুঝলেন,শাড়ির রংতো বলিনি।
ফেসবুকের ছবির সাথে মিলিয়েছি। কোন ধরণের ভনিতা বা অতিনাটকীয় কোন ভাব নেয়নি বলে শায়লা খুব দ্রুতই সহজ হয়ে গেলো।
দুজনে টি স্টলের দিকে এগিয়ে গেলো। আশেপাশে মানুষের চোরাচাহনী, চাপা হাসি, হাত আড়াল করে বিড়বিড় করে পাশের জনকে কিছু বলা।যেন তারা অনেক কিছুর সাক্ষী হয়ে যাচ্ছে। কার বউ আর কার স্বামী আজ ঘর পালিয়ে এখানে দেখা করতে এসেছে তারা যেন তার চাক্ষুষ সাক্ষী হয়ে রইল!
মামা, দুই কাপ চা দেন, বলে শিহাব  শায়লাকে লক্ষ্য করে কথা বলতে শুরু করলো, ওদের আদা লাল চা  খুব ভালো হয়। আমি সকালে কাজে বেরুলে এখানে একটু থেমে যাই।
পারিপার্শ্বিক পরিবেশের  লোকজনের তুলনার শায়লা আর শিহাবের বেশভূষা বেশ উন্নত। বুঝাই যাচ্ছে এমন একটা যায়গায় তারা এসেছে লোক চক্ষুর আড়াল হয়ে নিছক সময় কাটাতে।
ধোঁয়া ওড়া চা এলো।হাত বাড়িয়ে শিহাব প্রথম কাপ হাতে নিয়ে শায়লাকে এগিয়ে দিল। শায়লা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে শি্হাবকে এক নজর দেখে নিল।বেশ সাবলীল ভঙ্গীতে কথা বলছে। আর হাইটটাও  তার বরাবরই মনে হচ্ছে।শায়লাও নিজেকে স্বাভাবিক করে নিল। আড়ষ্টতা নিয়ে থাকলে শিহাবকে মানুষ খারাপ ভাবতে পারে। জনসমক্ষে মানসন্মান রক্ষা করা শুধু যে মেয়েদের জন্যই, সেটা নয়, ভদ্র পুরুষদেরও সেটা রক্ষা করতে হয়। আর যাদের আত্মসম্মান জ্ঞান নেই তারা তো চিরকালের বেহায়া।সমাজ সংসার এদের কাছে তুচ্ছ।ব্যক্তিত্বহীন এইসব পুরুষের কর্মকান্ডে লজ্জিত হয় হয় দেশ সমাজ তথা পরিবারের লোকজন। সন্তানের নিস্পাপ মুখটাও এরা ভুলে যায়।

শিহাব নীরবতা ভাঙল,
আপনার মা কেমন আছেন? কি হয়েছে উনার?
শায়লা বললো, না না তেমন কিছু না, রুটিন একটা চেকাপের জন্য টেস্টগুলো করা।
শিহাব বললো, তাও তো ভালো! আমার মাকে তো চেকাপের জন্য রাজীই করানো যায় না।
এরপর টুকটাক কিছু কথা হলো। এই পারিবারিক অন্য খোঁজ খবর নেয়া । 

আপনারা কতদিন উত্তরায়? কোথায় পড়াশুনা করেছেন?বাবা কী করতেন? কবে মারা গেলেন?
শায়লা একের পর এক উত্তর দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু শিহাবকে নিয়ে তার কোন প্রশ্ন মনে আসছে না। নাকি শিহাবই তাকে নিয়ন্ত্রণ করছে?
স্টলের ক্রেতা বিক্রেতা সবাইকে স্বাভাবিক দেখালেও কানটা কিন্তু তাদের দিকেই খোলা!কোন প্রেমালাপ হচ্ছে কিনা কিংবা কথা থেকে কোন ক্লু ধরা যায় কিনা? এরা যে স্বামী স্ত্রী নয় সেটা তারা শতভাগ নিশ্চিত। বিদেশে হলে এসব ওরা একেবারেই ওভারলুক করে।
কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের প্রতিবেশীর ঘর নিয়েই বেশি কৌতুহল।  
শায়লা চায়ের পোকা হলেও খুব গরম চা সে খেতে পারে না৷ প্রচন্ড গরম কাপটা ধরে সে দাঁড়িয়েই আছে। 
শিহাব চায়ে চুমুক দিতে দিতে কথার ফাঁকে ফাঁকে শায়লাকে আপাদমস্তক দেখছে। যদিও সানগ্লাসের আড়ালে তার চোখের দৃষ্টি বুঝা মুশকিল।
ছেলেরা কিন্তু খুব সহজেই মেয়েদের স্টাডি করে নিতে পারে।যেখানে মেয়েরা শুধু তাদের ড্রেস আপ আর প্রেজেন্ট করা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সেখানে ছেলেরা একটা মেয়েকে পাঁচবার এসেস করে ফেলে।
শিহাব বুঝে নিলো শায়লা খুবই সিম্পল  এবং সহজ সরল একটা মেয়ে। পোশাকের শালীনতায় সভ্যতা ভব্যতা স্পষ্ট হয়। একটা শাড়ি পরার ধরণেই একটা মেয়ের চারিত্রিক গুনাবলী বুঝা যায়। অবশ্য যদি সে সেটাতে  কোন চালাকির আশ্রয় না নেয়।
শিহাব ইশারায়  শায়লাকে খেয়াল করিয়ে দিল, চা খেয়ে নিতে। শায়লাকে চায়ে ব্যস্ত করে আবার এক ঝলক দেখে নিল শায়লাকে।নেভি ব্লু শাড়িটায় শায়লাকে খুব সুন্দর লাগছে। চোখ দুটোতে বেশ গভীরতা আছে। ফিগারের ব্যাপারে অতটা সচেতন না হলেও অতিরিক্ত কিছু চোখে পড়ছে না।হাইট নরমাল বাঙালি মেয়েদের তুলনায় একটু লম্বাটে ধরা যায়, যেহেতু পায়ে ফ্ল্যাট জুতা।
শিহাব শায়লার মুখটায় রিশতিনাকে ভেবে নিলো। এমনি হয়তো লাগতো রিশতিনাকে।
যদিও শাড়ি পরায় রিশতিনা অতটা এক্সপার্ট ছিল না। 
শায়লা  চায়ে চুমুক দিলো। নিজের বোকামিতে লজ্জা পেল। দুজনে চা শেষ  করলো। খুব বেশি ব্যক্তিগত কথায় শিহাব যেতে চাইল না। শত হলেও একেবারেই অচেনা একজন মহিলা । আর এখানে ওরা স্থায়ী বাসিন্দা। 
শায়লার চা খাওয়ার অপেক্ষায় শিহাব বলে উঠল, চলেন লুবানার দিকে যাওয়া যাক।আপনাকে নামিয়ে আমার কুরিয়র অফিসে যেতে হবে।
শায়লা ইতস্তত করছিল।কিভাবে  অচেনা একজন মানুষের সাথে বাইকে চড়ে যাবে!  
না না! আমি চলে যেতে পারবো। আপনি কুরিয়র অফিসে চলে যান।
আরে নাহ! মায়ের রিপোর্টটা জেনে যাই। আসেন। শায়লা বুঝতে পারলো আশেপাশের লোকজন থেকে বাঁচতে শিহাব তাড়া দিচ্ছে।শায়লা শিহাবকে অনুসরণ করে  এগিয়ে এলো। শায়লার বাইকে চড়ার অভিজ্ঞতা একেবারেই নেই।কিভাবে মানুষ খোলাভাবে এত স্পীডে বাইক চালাতে পারে সে অবাকই হয়। যখনি রিকাশায় করে কোথাও গিয়েছে পাশে সিগনালে কোন বাইক থামতে দেখলেই খুব ইচ্ছে হতো একটু চড়বার! 
আজ অজান্তেই তা ঘটে যাচ্ছে। শায়লা পিছনের সীটে উঠে বসলো।শিহাব তাকে বেশ ফ্রি করে দিলো।বললো  ভয় পাবেন না। আমাকে শক্ত করে ধরে বসবেন। শায়লা শিহাবের জিন্সের শার্টের কলার শক্ত হাতে খামচে ধরল।খুব স্বল্প সময়ের পথ। শিহাব চোখের পলকে একেবারে রকেটের বেগে লুবানার গেটে পৌছে গেলো। 
খুবই সাধারণভাবে নেমে দুজন রিপোর্ট কালেকশন বুথে গিয়ে  রিপোর্টগুলো কালেক্ট করলো। শিহাব একে একে সব কয়টা রিপোর্ট খুলে দেখলো। শিহাব কোন জড়তা বোধ করলো না বা অনুমতি নেবার প্রয়োজন মনে করলো না। তারওতো মা আছে।একজন মায়ের মেডিকেল রিপোর্ট পুত্রসম সন্তান শিহাব তা  দেখতেই পারে।
শিহাব সব দেখে শায়লাকে জানালো, আলহামদুলিল্লাহ,আপনার আম্মার সব রিপোর্ট ভালো এসেছে। আল্লাহ উনাকে দীর্ঘজীবী করুন। 
শিহাব সব কয়টি রিপোর্টের প্যাকেট নিজের সাথে নিয়ে নিলো।
দুজনে বেরিয়ে এলো। একটা রিকশা ডেকে শায়লাকে ইশারায় উঠতে বললো। শায়লা ধন্যবাদ দেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। রিকশায়  উঠতেই হাতে প্যাকেটগুলো দিয়ে বললো, সাবধানে যাবেন।আপনার আম্মাকে আমার সালাম জানাবেন। আবার দেখা হবে। বলে নিজের বাইকের দিকে এগিয়ে গেলো।
সো মাচ কেয়ারিং পার্সন!! 
শায়লা একরাশ মুগ্ধতা আর কৃতজ্ঞতার অনুভুতিতে বিগলিত হয়ে  গেলো! মুখে বিজয়িনীর হাসি ফুটে উঠল!
আফা কোনদিকে জাইবেন?
ওহ! সাত নম্বরে চলো।
শায়লা দ্রুত মিলিয়ে যাওয়া বাইকটির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো,,,,( চলবে)।

শিবনাথ মণ্ডল





হাঁদার ব্যামো 


পচা হাঁদার পেট খারাপ 
গিয়েছিল ডাক্তার বাড়ি 
ডাক্তারবাবু ওষুধ দেন    
গোটা কয়েক বড়ি। 
ডাক্তারবাবু আদেশ দেন 
হালকা খাবার খেতে 
পচা হাঁদা ভাবতে লাগল 
পথে যেতে যেতে। 
ভাত রুটি তরকারি 
সবই তো ভারী 
হালকা খাবার কী খাব  
চিন্তা করে মরি! 

হালকা খাবার খেতে আমার 
বুদ্ধি এল মাথায়
সোনপাপড়ি আর পাপড় ভাজা 
কিনব পাব যেথায়। 
হালকা খাবার খাচ্ছি যত 
পাচ্ছি ততো কষ্ট 
পেটের মধ্যে হড় মড় হড় মড়  
কাপড় হচ্ছে নষ্ট। 
ডাক্তারকে বলছে হাঁদা
আর কত খাব বড়ি 
জলের মতো পাতলা হচ্ছে 
বাড়িময় ছড়াছড়ি।।

জয়তী কাঞ্জিলাল




বাবা,তোমাকে...


এই চলে যাওয়া কতটা সহজ বলো
এখনও কি সেই সহজিয়া গান গাও
স্নেহ লেগে থাকা বাসা জুড়ে কান্নার...
বিষাদ মাখানো ভায়োলিন বেজে যাও। 

ছায়ারা যখন মুছে যায় চিরতরে 
পুড়ে যেতে হয় নিদারুণ বেদনায় 
অসহায়, বড়ো অসহায় এক মন
পুরনো দিনের স্মৃতি আজও বয়ে যায়।।

পৃথা রায় চৌধুরী




স্পন্ডাইলোসিস

অ্যাক্সেন্টেড বাংলা, প্রচুর পারফিউম ফ্রম প্যারিস, 
জার্মান চকো
রাম দাদার গায়ে গায়ে বসি 

এখনও এই মধ্য চল্লিশে
ভেসে আসে এক্কাদোক্কা গন্ধ
আর ওদেশের বিয়ার শ্যাম্পু চুলের থেকে 
পেখম মেলে দেয় তুলো তুলো মন্দিরমাঠ বিকেল

পাড়া জুড়ে কেমন ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশী পাড়া
ষাটের মায়ের হাতে ভার 
স্পেশাল গেজেটস... বালাই ষাট্‌!
সব লেপটে যায় দু দশকের তিল তিল অবহেলায়

বৃদ্ধ বাবার ঘাড়ে ভার স্পেশাল ফাইবারের বালিশ
ঝলমলে ছানি চোখ হাসে, 
দুই দশকের ক্রমশ ঝুঁকে যাওয়া ঘাড়ের,
ঘুমোতে ঠেকনো লাগে না।

চৈতালী ব্রহ্ম




চাওয়া 


হাতে আছে ঈশ্বরের হাত, 
মগ্ন আমি আমাতে দেখেছো?
পরিপূর্ণ  সমর্পণের পরে
দুটি বিন্দু অশ্রুকে রেখেছো
বিষণ্ণতা মুছে দেবে বলে।
ঘন করে কাজলে লুকালে
হাসির  আড়ালে থাকা চোখ।  
আর কি কি আছে সে আড়ালে?
কাছে এসো, জীবনের ঘ্রাণে 
দুটি দণ্ড তীব্র বেঁচে নাও।
সঙ্গী করো আকাশের তারা, 
যেদিকে ইচ্ছে চলে যাও।
উত্তর আকাশে চেয়ে দ্যাখো, 
প্রিয়তম নক্ষত্রের দল
ফুটে আছে কাছে নেবে বলে, 
মৃগশিরা নক্ষত্রের জল
আমারো দুচোখে নেমে আসে।
ভরণী কৃত্তিকা ডাকে এসো,
কে বলেছে কেউ কাছে নেই?
ঐ তারাটির পাশে বোসো।
দ্যাখো আজ আর দুঃখ নেই।
সব ভেসে গেছে প্রতিপদে। 
স্থির অমা অপেক্ষাও করে,
ফিরে পাবে তাকেও প্রচ্ছদে।