উপন্যাস
টানাপোড়েন ৮৫
আঘাত
মমতা রায়চৌধুরী
গতকাল রাতে একটা উত্তেজনার ঘোর ছিল রেখার মনে ।অনিন্দিতার বিয়ে। তাহলে শেষ পর্যন্ত অনিন্দিতার বিয়েতে যেতেই হবে। রিম্পাদি কায়দা করে গিফটা আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। বড়দি সরাসরি নিজের বাড়ি থেকে যাবেন, নিজের গাড়িতে। শুভ্রা, আমি রিম্পাদি , অনুরাধাদি এক গাড়িতে যাব। রিম্পাদি গাড়িটা নিয়ে আসবে অনুরাধাদিকে তুলবে ,তারপর আমাকে, তারপর শুভ্রাকে এই পর্যন্ত কথা হয়েছে। কে কি সাজগোজ করবে সেই প্রস্তুতি চলছে।
রিম্পাদি গতকাল পার্লারে চুলের হেয়ার স্ট্রেটনিং করিয়েছে। শুভ্রা লেয়ার কার্ট ,সঙ্গে স্ট্রেটনিং করেছে।
শুধু আমি চুল কাটাতে পারি নি। যাব কিনা সেটা নিয়েই তো প্রথম থেকে ডিসিশন নিতে পারি নি। যাক গে যা হবে হবে ।সবার মাঝে না হয় একটু নিষ্প্রভ থাকবো। ভাবতে ভাবতেই ওয়ারড্রব খুলে শাড়িগুলো সিলেট করছে কোনটা পড়বে।
রেখা সব শাড়িগুলো ঘাটার পর মনে মনে ভাবছে"ওপারা সিল্ক পড়ব, নাকি কাতান সিল্ক ?'
ভেবে যখন কোনো ডিসিশন নিতে পারল না তখন দুটো শাড়ি নিয়ে গিয়ে মনোজকে দেখাল। মনোজ
তখন ল্যাপটপ খুলে একটা কাজ করছিল মনোযোগের সঙ্গে।ঠিক তখনই রেখা ঢুকলো শাড়ি দুটো নিয়ে ঝড়ের বেগে।
রেখা হঠাৎ গিয়ে মনোজকে বলল' কোন শাড়ি পড়ি বলো তো? '
মনোজ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে বলল 'তুমি যেটা পরবে, সেটাই ভাল লাগবে।'
রেখা আবার বললো 'বলো না কোন শাড়ি টা পড়বো?'
মনোজ বলল' আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছি রেখা।'
রেখা বলল' একবার আমার দিকে তাকাও না? তাকিয়ে বলো।'
মনোজ রেখার দিকে বিরক্তিতে
তাকিয়ে বলল 'ঠিক আছে বলো?'
রেখা এমন ভাবে মনোজের দিকে তাকিয়েছে যে মনোজ হেসে ফেলেছে। ল্যাপটপ টা সরিয়ে রেখে রেখার কাছে এসে বলল 'দেখি শাড়ি দুটো ।নীল শাড়ি টাও ভালো লাগছে, আবার তোমার হলুদ ওপারা সিল্কটাও ভালো লাগছে।মনোজ বলল
'এবার তো আমি কনফিউজড। কোনটা তোমাকে সাজেস্ট করি বলো তো?'
রেখা এবার বলল এভাবে বলোনা আমি নিজেই কনফিউজড।
মনোজ বলে একটা কথা বলব?
রেখা খুব উৎসুক ভাবে বলল বলো?
তুমি এক কাজ করো দুটির শাড়ি তুমি পড়বে?
রেখা বললো তুমি কি পাগল হয়ে গেলে দুটো শাড়ি আবার কিভাবে পড়ে একসঙ্গে?
মনোজ বলল 'আমি কি তাই বলেছি ,দুটো শাড়ি একসঙ্গে পড়বে?'
রেখা বলল' তাহলে?'
মনোজ বলল 'বাড়ি থেকে যখন বেরোবে তখন একটা শাড়ি পড়বে। আর যখন অনিন্দিতার বাড়ি যাবে তখন..।'
রেখা বলল 'তখন আবার আমি শাড়ি চেঞ্জ করবো তাই তো?'
মনোজ বললো 'হ্যাঁ ,একেবারে সিম্পিল পথ দেখালাম।'
রেখা মনোজের মাথায় চুল ধরে একটু ঝাকিয়ে বলল 'সত্যিই তুমি ক্ষেপে গেছ মনে হচ্ছে?'
মনোজ বলল ' কেন আমি কি খারাপ কথাটা বলেছি? অনেকেই তো বিয়ে বাড়িতে গিয়ে শাড়ি চেঞ্জ করে করে না?'
রেখা বললো 'থাক তোমার ওই সাজেশন আমার দরকার নেই ।আমি চললাম।'
মনোজ রেখার হাত দুটো ধরে টেনে বলল'অ্যাই রেখা ,শোনো ,শোনো, শোনো ।রাগ ক'রো না। আসলে দুটো শাড়িই সুন্দর।এ জন্যই তো বললাম এই কথা।'
রেখা এক ঝটকায় হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেল
নিজের ঘরে ।ঘরে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের থেকেই সিলেক্ট করলো হলুদ ওপারা শাড়িটাই সে পড়বে। আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজের মনেই মনোজের কথাটা মনে পড়ে হাসতে লাগল আর ভাবতে লাগলোএক হিসেবে মনোজ ঠিক ই বলেছিল।'
মনোজ চুপিসারে ঘরের দরজার কাছে দাড়িয়ে রেখাকে লক্ষ্য করছিল। শেষে মনোজ রেখার কান্ড কারখানা দেখে গুনগুনিয়ে বলল'তুমি কি এমনি করে থাকবে দূরে আমার এ মন মানে না...।'
রেখা জিভ ভাঙ্গিয়ে বলল 'আমার বয়েই গেছে।'
মনোজ এসে জোর করে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল।
আর বলল 'প্লিজ রাগ করো না।'
রেখা বলল 'না ছাড়ো প্লিজ।'
মনোজ বলল 'আমি খোলা জানালা ।তুমি ওই দখিনা বাতাস ।আমি নিঝুম রাত ।তুমি কোজাগরি আকাশ।'
রেখা বলল' বেশ বেশ বুঝতে পেরেছি। এবার ছাড়ো।'
তারপরে রেখা বলল' আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ...।'
মনোজ বলল 'এবার আমি খুশি হয়েছি।'
রেখা বলল 'ছাড়ো আমি আমার বেবিদের খাবারগুলো দিয়ে আসি ।তারপর নিজেকে রেডি হতে হবে।'
মনোজ বলল 'আমার খাবার করো নি তো?'
রেখা বলল 'বাহ রে তুমিই তো বললে আজকে খাবার করতে হবে না । বিরিয়ানি কিনে এনে খাবে?'
মনোজ বলল' সেজন্যই তো আবার জিজ্ঞেস করলাম।'
রেখা বলল 'আচ্ছা মকা পেয়ে গেলে বাইরের খাবার খাবে ।তোমার রুচি বদল হবে। তোমার বউয়ের রান্না আর ভাল লাগছিল না আজকাল।'
মনোজ আবার রেখাকে ধরে বলল 'অ্যাই আমি কখন বলেছি তোমার রান্না ভালো নয়। প্লিজ এভাবে ব'লো না।'
রেখা বলল 'ঠিক আছে সব বুঝতে পেরেছি ।এবার আমি যাই ছানাপোনাদের খাওয়াতে।'
রেখা তারপর বাচ্চাদের খাওয়াতে গেল ও বাবা আজকাল যা হয়েছে এদের খাবার নিয়ে গেলে আগে ওদেরকে আদর করতে হবে যে যার মত অভিমানে ন শুয়ে পড়ে ।প্রত্যেককে কোলে তুলতে হবে, আদর করতে হবে ,তারপর ওরা খাবে। খাবার নিয়ে গিয়ে
রেখা বলল 'পাইলট, তুলি ,লিলি সব উঠে পড়ো সোনা খাবে।'
ওরাও নিজেদের ভাষায় 'অউ অউ 'আবার কেউ 'ঘেউ ঘেউ' করে উত্তর দিল।
রেখা এদেরকে খাইয়ে তারপর নিজের রেডি হবে বলে মনোজকে বলল 'তুমি যাও না তোমার পাশের ঘরে।'
মনোজ বলল 'কেন আমি থাকলে অসুবিধা কি?'
রেখা বলল 'বাহ রে আমি শাড়ি চেঞ্জ করবো আমার বুঝি লজ্জা করে না?'
মনোজ অবাক হয়ে রেখার কাছে গিয়ে রেখার মুখটি তুলে ধরে বলল' হ্যাঁ ,কি বলছো গো আমার কাছে তোমার লজ্জা?'
এর মধ্যেই রিম্পাদি ফোন করেছে।'রিংটোন বাজতে শুরু করলো'আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল। বাতাসের আছে কিছু গন্ধ...।'
রেখা মনোজকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফোন ধরে বলল 'হ্যালো বলো?'
রিম্পাদি বলল 'কিরে তুই রেডি হচ্ছিস তো?'
রেখা বলল ' রেডি হবো।'
রিম্পাদি বলল' ওকে ।আমরা কিন্তু কাঁচরাপাড়া এসে গেছি।'
রেখা বলল 'ওকে।'
এরমধ্যে রেখা রেডি হতে শুরু করে দিল।
রেখা রেডি হয়ে মনোজকে বলল' ওদের খাবারটা ঠিক সময় দিয়ে দিও। আর মিলিকেও দিয়ে দিও। নিজে খেয়ে নিও।'
মনোজ হেসে বলল 'ওকে ম্যাডাম।'
এমন সময়ে গাড়ি এসে হর্ন বাজাতে শুরু করলো। রেখা বললো 'দেখো নিশ্চয়ই রিম্পাদিদের গাড়ি এসেছে।'
এবার রিম্পাদি গাড়ি থেকে নেমে কলিং বেল বাজাল'জয় গনেশ ,জয় গনেশ ,জয় গনেশ দেবা... মনোজ বলল 'ওই দেখো দেবা গণেশ বাজছে। '
রেখা মনোজকে ধাক্কা দিয়ে বলল'যাও না দরজাটা খোলো না?'
মনোজ বলল' সুন্দরী বউকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না।'
রিম্পা দি আবার ডাকতে শুরু করলো চেঁচিয়ে 'মনোজ ,রেখা রেখাআ.আ।'
মনোজ এবার দরজা খুলে বলল ' আরে দিদি, আসুন ,আসুন ,আসুন ভেতরে আসুন।'
রিম্পাদিয বলল' আরে না রে বাবা ,এখন ঢুকলে হবে না ।হয়েছে রেখার?'
মনোজ বলল' হ্যাঁ ও তৈরি হয়ে গেছে ,আপনাদের ভিতরে নিয়ে আসতে বলল।'
রিম্পাদি গাড়িতে বসা অনুরাধা দিদিদের দিকে তাকিয়ে বলল 'না ,না ,না ভেতরে গেলে হবে না।'
মনোজ বলল 'এত দূর থেকে আসছেন একটু রেস্ট নিয়ে জল মিষ্টি খেয়ে যান।'
রিম্পাদি বলল ''না বাবা ,তাহলে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে আর কি খাব?'
অগত্যা মনোজ রেখাকে ডাকল' রেখা, রেখা , রেখা .আ. আ .
রিম্পাদিরা কিন্তু ভেতরে আসছেন না । 'তোমাকে বের হতে বললেন।'
রেখা বলল" সে কি?
রেখা বাইরে বেরিয়ে এসে বলল এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না রিম্পা দি ,অনুরাধাদি সবাইকে ভেতরে আসতে বলছি।'
রিম্পাদি বলল ' না রে দেরি হয়ে যাচ্ছে। চল চল চল আবার ফিরতে হবে।'
রিম্পাদি রেখাকে হাত ধরে টেনে তুলল গাড়িতে।
গাড়ি ছাড়ার সময় সবাই মিলে মনোজকে হাত নেড়ে বলল 'আসছি।'
তারপর গাড়ি ছুটতে শুরু করল। গাড়িতে তখন গান বাজছে 'আমার পরানো যাহা চায় ,তুমি তাই, তুমি তাই গো...।"
গাড়ি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণনগরে এসে পৌঁছালো। কৃষ্ণনগরে শুভ্রাকে তুলে তারপর গাড়ি ছুটলো বেথুয়া ডহরির উদ্দেশ্যে।
শুভ্রাএকটা ব্লু কালারের বেনারসি পড়েছে খুব ভালো লাগছে দেখতে।
রেখা বলল 'আরে শুভ তোকে তো চেনাই যাচ্ছে না। দেখিস বাবা ,আজকে বিয়ে বাড়িতে নজর না লেগে যায়।'
শুভ্রা বললো' কি যে বলো না দিদি, তোমার কাছে আমি....?'
রিম্পাদি বললো 'ঠিকই বলেছিস।'
অনুরাধাদি বরাবরই চুপচাপ আর রাশভারী প্রকৃতির। তবুও এই কথাতে অনুরাধাদি হেসে ফেললেন।
কথা বলতে বলতে আর বাইরে জানলা দিয়ে দৃশ্য দেখতে দেখতে গাড়ি এসে পৌঁছালো বেথুয়াডহরি ''আপনজন' লজের কাছে ।
গাড়ি থেকে নামার আগে প্রত্যেকে একটু নিজের নিজের চুল আঁচড়ে নিল। শুভ্রা আরেকটু লিপস্টিক ঘষে নিল।
রিম্পাদি গাড়ি থেকে নেমে তাড়া দিতে লাগল' কিরে তোদের হলো?'
রেখা শাড়ি ঠিক করতে করতে বলল '' এই তো হয়ে গেছে।'
অনিন্দিতার বাবা গাড়ির সামনে এসে বললেন 'আপনি রিম্পাদি আর তোমরা রেখা শুভ্রা তাই তো?'
রিম্পাদি বলল 'হ্যাঁ একদম ঠিক ধরেছেন।'
রেখা হাতজোড় করে বলল 'নমস্কার ভাল আছেন তো? '
অনিন্দিতার বাবা একগাল হেসে বললেন ভালো আছি ।তবে তোমরা আসাতে সাথে ভীষণ খুশি হয়েছি।'
ভেতরে যাওয়া হোক
রিম্পাদি বলল 'সেই ভাল।'
গেট দিয়ে ঢুকতেই সঙ্গে দেখা।' কি মিষ্টি লাগছে তন্দ্রা তোমাকে ।'রেখা বলল' তোমাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে'
তন্দ্রা একটু হেসে বলল ' দিদি, চলুন স্টল বসেছে ফুচকার। খাবেন?'
রিম্পাদি আর শুভ্রা ফুচকার নাম শুনে জিভে জল আসতে শুরু করলো। রিম্পাদি বলল 'আর দেরি কেন চলো।,'
রিম্পাদি আর শুভ্রা টপাটপ জল ফুচকা খেতে লাগলো। আর রেখার দিকে তাকিয়ে রিম্পাদি বলল '
একটু দই ফুচকা খা না রে বাবা ।তুই তো বাড়িতে দই ফুচকা নিয়ে গেলে খাস।'
তন্দ্রা বলল 'দিদি এইগুলো খেয়ে দেখুন খুব টেস্টি। এরা আমাদের এখানে সব থেকে বেশি ভালো বানায়। তাই এদেরকেই দিদির বিয়েতে অর্ডার দিয়েছি।'
রেখা বলল 'ঠিক আছে । আচ্ছা, দিন তো আমাকে দুটো ফুচকা।'
তন্দ্রা বলল অসীমদা ' চারটে ভালো করে দই ফুচকা বানিয়ে দিন।'
অসীমদা ঘাড় নেড়ে ভার থেকে দই কাটছিলেন আর তারপর কাজু কিসমিস সমস্ত কিছু বের করে একটা জায়গায় রাখলেন ।এরপর ফুচকা রেডি করে রেখার হাতে দিলেন।
রেখা ফুচকার বাটিটা হাতে নিয়ে একটা মুখে দিলে দেওয়ার পর বুঝল ফুচকাগুলো সত্যিই খুব ভালো। আরও চারটি ফুচকা খেল।'
অসীমদা জিজ্ঞেস করলেন'দিদি কেমন লাগছে?'
রেখা ঘাড় নেড়ে বললো' ভালো।'
অসীমদা বললেন্'আর চারটে নিন না দিদি।'
রেখা বললো 'ঠিক আছে, দুটো দিন।'
অসীমদা খুব খুশি মনে দুটো নয় চারটে ফুচকা দিলেন।
রেখা বলল 'এতগুলো দিলেন?'
অসীমদা একগাল হেসে বললেন 'খান, ভালো লাগবে।"
রেখা বলল' হ্যাঁ ,ভালো তো লাগছে কিন্তু আরও তো কিছু খাবার খেতে হবে?'
রিম্পাদি বলল 'অনিন্দিতার সাজগোজ হয়েছে? নিয়ে এসেছে এখানে।'
তন্দ্রা বলল এক্ষুনি চলে আসবে দিদি। একটু ওয়েট করুন প্লিজ।'
রিম্পাদি বলল 'হ্যাঁ ,সে তো আমরা ওয়েট করব কিন্তু গিফট আগে দিতে পারলে ভালো হতো ।আমরা তো আবার ফিরব এবার খাবার-দাবার খেতে যাব।'
তন্দ্রা বলল 'আসলে দিদি ,পার্লারের মেয়ে একটু দেরি করে এসেছে ,দিদিকে সাজাতে।'
এমন সময় অনুরাধাদি বলে উঠলেন' ওই তো অনিন্দিতা?'
সবাই তখন উৎসুক হয়ে অনিন্দিতাকে দেখছে।
রেখা বলল 'কি ভাল লাগছে ।'
অনিন্দিতা কিন্তু রেখার কথার কোন রেসপন্স করলো ।না ,না হাসলো ও না।'
অনিন্দিতা জিজ্ঞেস করল' কখন এসেছ? '
রিম্পাদিও বলল 'তোমরা কখন এসেছ?'
রেখা বলল 'এই তো একটু আগে।'
এখনো কোন রেসপন্স করলো না অনিন্দিতা।
রেখা রিম্পাদির উত্তরগুলো নিজের কন্ঠে বসিয়েছিল
অনিন্দিতা শুভ্রাকে বলল 'বাবা তুই তো নীল পরী সেজেছিস?'
শুভ্রা শুধু মিষ্টি করে হাসলো। এরপর অনুরাধা দিকে বলল
অনুরধাদিকে বলল' আস্তে কোন অসুবিধা হয় নি' তো?'
এবার রেখা খুব ইনসাল্ট বোধ করলো।
রিম্পাদি ব্যাপারটা খেয়াল করে রেখাকে বলল' আগে খেতে বসি। আরো বললো অনিন্দিতা এই তোর গিফট তোদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক, সুন্দর হোক, মধুর হোক ,এই কামনা করি।'
অনিন্দিতা বলল 'থ্যাংক ইউ দিদি।'
বিয়ে বাড়িতে গান বাজছে ' ও আধো আলো ছায়াতে, কিছু ভালোবাসাতে। আজ মন ভোলাতে, হবে বল কার ? কারোর নয় শুধু যে আমার..।'
কিন্তু রেখা যে প্রাণোচ্ছলতা নিয়ে অনিন্দিতার বিয়েতে এসেছিল মনটা খুবই ভারাক্রান্ত হয়ে গেল অনিন্দিতার ব্যবহারে। মনে মনে ভাবছিল তার থেকে না আসলেই ভাল হত। অনিন্দিতার সাথে এতটাই ক্লোজ ছিল রেখা কিন্তু আজকে নিজের বিয়ের দিনে যেভাবে রেখাকে আঘাত করলো ,এই অপমানের জ্বালা কিছুতেই ভুলতে পারছে না রেখা। সময় চলে যাবে অনেক কিছু বদলে দেবে কিন্তু এই ব্যবহার রয়ে যাবে।