০৮ অক্টোবর ২০২১

কবি অমিত কাশ্যপ এর কবিতা



স্বপ্নসিঁড়ি



বড় হয়ে ফুটে ওঠা নলিনীদা 
সাধারণ কেরানী জীবন থেকে হঠাৎ 
কেমন বড় হয়ে একদিন সুখ-দুঃখ
মিশিয়ে দেখতে থাকলেন রাতের স্বপ্নে

চারপাশে কোনো বন্ধু থাকবে না 
চারপাশে কোনো প্রিয়জনও নয়
সবাই ঈর্ষা করে, নিজের বলে ওইটুকু
স্বপ্নটুকু, ফুটে ওঠার স্বপ্ন, রাতের 

একা মানুষ, কত কেউই তো জুটে যায় 
সাবধানে এড়িয়ে এড়িয়ে এগন
রাস্তা বড় এবড়ো-খেবড়ো, জানেন
জানলে কি হবে, ওই স্বপ্নটুকু ভরসা 

সিঁড়ি আর স্বপ্ন, অন্যভাবে স্বপ্ন আর সিঁড়ি 
স্বপ্নের সিঁড়ি সাবলীল হয়তো নয়
বড় হয়ে ফুটে ওঠা নলিনীদা ওঠেন 
ওঠেন, আরো ওঠেন, আরো আরো ওঠেন

লেখক শান্তা কামালী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "বনফুল"৭

চোখ রাখুন স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শান্তা কামালী'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "বনফুল"




                                                                          বনফুল
                                                                                 ( ম পর্ব ) 


রাত জেগে পলাশ ভাবলো কি উত্তর দিবে? পলাশেরও জুঁইকে ভীষণ ভালো লাগে এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই, ভিতরে ভিতরে জুঁইকে প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলেছে। এইদিকে জুঁই পলাশকে নিয়ে অনেক কিছু ভেবে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে টের পায়নি, যখন ঘুম ভাঙ্গলো দেখতে পেলো ঘড়িতে আটটা তিরিশ বাজে। তবু কিছু সময় গড়াগড়ি করে উঠে দাঁত ব্রাশ করে, ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হলো,চুল আঁচড়ে চোখে কাজল, ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক দিয়ে পুরো রেডি হয়ে নীচে নেমে এলো, বুঝলো বাবার চা খাওয়া শেষ, নিউজ বুলেটিন গুলো দেখছেন। মেয়েকে দেখে বুঝে গেলেন ভার্সিটিতে যাবে। জুঁই বললো বাবা চলো নাস্তা খেয়ে নিই, বলতে বলতেই দেখে ময়না টেবিলে নাস্তা পরিবেশন করে দিচ্ছে সাথে জুঁইয়ের মা ও এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছেন। জুঁই নাস্তা শেষ করে এক কাপ চা খেয়ে মা বাবাকে বললো আমি বেরোলাম। বাবা বললেন সাবধানে যেও মা, ততক্ষণে গাড়ি গেটে অপেক্ষা করছে। সে গাড়িতে উঠে বসে  ড্রাইভারকে বললো ভার্সিটিতে যাবেন।
ক্লাস শুরুর বেশ কিছুক্ষণ আগে পৌঁছে গেলো। জুঁই গাড়ি থেকে নেমে একবার পুরো ক্যাম্পাস  দেখে নিলো,কোথাও পলাশকে দেখতে পেলো না.... ক্যাম্পাসে শতশত ছেলে মেয়ে, জুঁই একটা সাইডে বসলো,কিছুক্ষণ পরেই জুঁই পলাশকে দেখতে পেলো গেট দিয়ে ঢুকছে,দেখতে পেয়ে জুঁই সামনে এগোলো পলাশ ই প্রথম জিজ্ঞেস করলো কেমন আছো? 
-ভালো আপনি? 
-হুম ভালো,আমার ইম্পর্ট্যান্ট  ক্লাস আছে দুটো, সেগুলো সেরে তোমার সাথে কথা বলবো, এই বলে সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেলো পলাশ। জুঁইয়েরও দুটো ক্লাস আছে সেরে নিতে পারবে ভালোই হলো। 
জুঁইও ক্লাসে চলে গেল, প্রায় একই সময়ে দু'জন নীচে নামল, পলাশ জুঁইকে বললো চলো  ক্যান্টিনে বসে কফি খেতে খেতে কথা বলা যাবে। 
দুজনেই ছোট্ট একটা টেবিলে বসলো পলাশ দুটো কফির অর্ডার করলো, জুঁইকে বললো তুমি কি কিছু স্ন্যাকস  খাবে?  উত্তরে জুঁই বললো না। কফি খেতে খেতে পলাশ জুঁইকে বললো তুমি আমাকে ভালোবাসো এই বিষয়টা কি তোমার বাবা মা মেনে নেবেন ? আমি অতি সাধারণ পরিবারের ছেলে, আর তুমি হলে ধনীর দুলালি, তখন জুঁই পলাশকে বললো আমার আম্মু আব্বুর উপর বিশ্বাস আছে, আমার পছন্দকে ডিনাই করবে না,আপনি এই ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকুন।




                                                                                                                    চলবে....

রুকসানা রহমান এর ধারাবাহিক উপন্যাস "উদাসী মেঘের ডানায়,৯

 চলছে নতুন  ধারাবাহিক  উপন্যাস "উদাসী মেঘের ডানায়
লেখাটি পড়ুন এবং অন্যদের  পড়তে সহযোগিতা করুন  লেখককের মনের অন্দরমহলে জমে থাকা শব্দগুচ্ছ একত্রিত হয়েই জন্ম  লেখার। 
আপনাদের মূল্যবান কমেন্টে লেখককে  লিখতে সহযোগিতা করবে। 




ঊদাসী মেঘের ডানার
( পর্ব নয়) 


একদিন বিশ্রাম নিয়ে তৃষ্ণা অফিসে এসেই সামিয়াকে
বললো-কি ব্যাপার ঢাকায় এসে আমাকে ঠিক মতন
পৌচ্ছলে কিনা না জানিয়ে ফোনের সুইচ অফ করে
রেখেছো কেন?
-আমি চাইনি তোর আনন্দটা নষ্ট করতে তাছাড়া তুইতো ড্রাইভার কে কল করে জেনেছিস।
-তা জেনেছি,কোন প্রবলেম হয়নিতো
-পরে শুনিস এখন কাজ আছে।লান্ঝের সময়
সব শুনে তৃষ্ণা নিজেকে অপরাধী ভাবতেই,সামিয়া
বললো- না,এটা উছিলা,,অফিসের কাজ শেষ করে
ফিরে আসিনি এটার জন্য, বাদ দে ও
ওরকমই।তাছাড়া তুই জানিস আমি ওকে খুব ভালোবাসি তাই সহ্য করি একদিন ঠিক হয়ে যাবে
ও সেই সুযোগটা নিয়েছে যা খুশি তাই করবে আমি
ওকে ফেলে যাবোনা, তাই শাসন করা ওর অভ্যাসে
পরিনিত হয়েছে, কি আর করা।
তৃষ্ণা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো সামিয়ার দিকে
আর ভাবলো কতটা সহ্য,ধোর্ষ বিধাতা কোন কোন
নারীদের একটু বেশিই দেয় তার জলজ্যান্ত প্রমান
সামিয়ার। ওর কাজের টেবিলে যেয়ে বসলো
মন লাগছেনা কাজে কক্স বাজারে বেড়াতে না গেলে
হয়তো সামিয়ার এমন হতেনা ওর জন্যই বেচারী আজ
অশান্তি।মনটা,খারাপ,হয়ে গেলো কাজে মন বসছেনা
তবুও কাজ করে ছুটির পর সামিয়াকে লিফট দিলো
বরাবরের মতন,গাড়ি আছে ওর স্বামি দেয়না
ছুটির পর উনি মাস্তি করে বেড়ায়, ঘরে ঢুকে অশান্তি
করে আগেই যাতে সামিয়ার মুখ বন্ধ থাকে।
কি বিচিত্র এই সংসার জীবন। 
চলবে....

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"২৩







                 টানাপোড়েন (২৩)

                                                                     ক্রাইসিস


তৃপ্তি বেশ কয়েক দিন ধরে ভাবছে শেখরকে রাধার কাজে না আসার ব্যাপারে বলবে।কিন্তু শেখর সব সময় এড়িয়ে যায় ব'লে ,বলি বলি করে বলা হয় না।তাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে।তাছাড়া অফিসে যায় বলে শেখরের নজরে আসে নি বোধহয়।আজ ছুটির দিন অনেকটাই সময় ওর হাতে।ভাবছে ব্রেকফাস্ট টেবিলে কথাটা তুলবে ।
 হঠাৎ শেখর রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে বলে ' খাবার রেডি?' 'অনেক দিন পর শেখরকে এই মুডে দেখে তৃপ্তির ভালো লাগলো।মনে পড়ে গেলো প্রথম বৌ হয়ে যখন এ বাড়িতে আসে ,তখন প্রায় ই কোনো না কোন অজুহাতে রান্নাঘরে আসতো,শুধু মাত্র তৃপ্তিকে দেখার জন্য।আসলে যৌথানপরিবার তো সেজন্যই।এক পলক একটু দেখা।সারাদিন অফিস করে একেবারে রাত্রিবেলায় দেখা।এখন যৌথাপারিবারও  ভেঙে গেছে।একক পরিবারে থেকে ও আগের মত আকর্ষণ অনুভব করে না। পুরোনো দিনে ফিরে যায় তৃপ্তি।
আবার শেখর বলে  'তৃপ্তি ব্রেকফাস্ট রেডি?'
তৃপ্তি চমকে ওঠে ,একটু লজ্জা পেয়ে বলে ''হ্যাঁ।,তুমি খাবার টেবিলে বসো।'
শেখর বলে  'আজ কি রাধা আসবে না বলে গেছে,,?'
তৃপ্তির কাছে মেঘ না চাইতে জল।তৃপ্তি ব্রেকফাস্ট দিতে দিতে বলল ' ও তো আজ কদিন ধরেই আসছে না।'
শেখর অবাক ও বাঘ্রভাবে বলল ' তুমি এ ক'দিন নিজে  কাজ করেছো,আমাকে বলো নি কেন?'
তৃপ্তি হেসে বলল  'আসলে,তোমার অফিসে এত চাপ,তাই আর বলি নি।'
শেখর বলে   'তাতে কি?তুমিও তো আমার কাছে ইম্পর্টেন্ট।'
তৃপ্তির বুকটা হঠাৎ ছাৎ‌করে উঠলো।আর অবাক চোখে তাকিয়ে রইল।
শেখর বলল 'তোমার কষ্ট হলে ,আমার কষ্ট লাগে না?ঠিক আছে। আমি একটা জরুরী কাজে যাচ্ছি।ফিরে এসে খবর নেব।টেনশন নিও না ।'
তৃপ্তি মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
শেখর আবার বলে  'সারাদিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থেকো না।'
তৃপ্তি অবাক হয়ে যাচ্ছে।কোনো স্বপ্ন নয় তো?তাই একবার নিজের শরীরে  চিমটি কাটল।না তো এটা একেবারে বাস্তব।
শেখর আবার বলল  'আসছি।'
তৃপ্তি একটু হাসলো।
তৃপ্তি ভাবছে আজ সকাল থেকে কি  যে হচ্ছে?তৃপ্তি সৌরভের ব্যাপারটা নিয়ে দোটানায় পড়ল।
শুধুমাত্র সন্তান না হওয়ার জন্য শেখরকে ছেড়ে যাবে?হঠাৎ সৌরভ আসতেই কি জীবন অন্যদিকে মোড় নিতে যাচ্ছে?এরকম সাতপাঁচ ভাবছে, এমন সময় ফোন বেজে উঠল,নুতন কলার টিউন' ডোন্ট ক্রাই বেবি,ডোন্ট ক্রাই ।আই অ্যম দিস কামিন...
আমি আসছি।'।তৃপ্তির কাছে পরিচিত এই গান।অনেক দিন পর বাজছে।এটা যে  শেখরের  কল ,সে জানে ।
পুরনো সুখস্মৃতি বড্ড নাড়া দেয়।
তৃপ্তি খুশি মনে ফোনটা রিসিভ করে বলে   'হ্যালো'।
শেখর বলে  'নিউজ দেখেছ?'
তৃপ্তি অবাক হয়ে বলে  'না তো?কেন কি হয়েছে?'
শেখর একটু উত্তেজিত হয়ে বলে 'তোমার রাধার খবর পেয়ে যাবে?'
তৃপ্তি বলে  'কোন চ্যানেল?'
শেখর বলে  'কলকাতা লোকাল নিউজ?'
তাড়াতাড়ি তৃপ্তি রিমোট টিপে নিউজ চ্যানেল খোলে।অবাক কাণ্ড বারবার দেখাচ্ছে  '১০ দিনের দুধের  কন্যা সন্তানকে মহালায়ের পুণ্য তিথিতে গঙ্গায় বিসর্জন দিলেন,এক মা।দেবী পক্ষের আগমনে , দেবশিশু র বিসর্জন।
তৃপ্তি অবাক হয়ে যায়,রাধা এই কাজ করেছে?অথচ লাস্ট বার যখন  ও প্রেগন্যান্ট ',।
তখন সে বলেছিল, 'রাধা ঘরে তো সন্তানের অভাব নেই,তা সত্ত্বেও আবার কি দরকার ছিল?.'
তাতে সেদিন রাধা তৃপ্তির মাতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।খুব খারাপ লেগেছিল।মনের ওপর ঝড় বয়ে গেছে।ঝড় আবার আজ উঠলো।মা হয়ে কি করে সন্তানকে,বিসর্জন দেয়?আর ভাবতে পারছে না। সত্যি সত্যি তৃপ্তির হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। একটা সন্তানের জন্য একটা পরিবার ভেঙে যায়, ভালোবাসার মানুষ দূরে চলে যায় ।একটা সন্তান না থাকার জন্য পরিবার সমাজের কাছ থেকে কত রকম কটুক্তি শুনতে হয়।
রাধা কেন এরকম কাজ করলো ।ভেবেই পাচ্ছে না তৃপ্তি। 
রাধা তো বলেছিল  'স্বামীকে বেঁধে রাখার জন্যই এই সন্তানের ভীষণ দরকার।'
তাহলে সেই দরকারটা এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে গেল। নাকি ভেতরে ভেতরে রাধা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। 
কোন ক্রাইসিস বোধ থেকে এরকম কাজ করেছে ।যাই হোক না কেন তৃপ্তি এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না ।মা হয়ে রাক্ষসীর মত কাজ। কন্যা সন্তান হয়েছে বলেই কি এই কাজ করল? রাধার ভিতর কোন্ ক্রাইসিস কাজ করছিল ?তৃপ্তি ভেবেই পাচ্ছে না।
এরইমধ্যে শেখরের আবার ফোন 'রাধাকে থানায় নিয়ে গেছে।'
তৃপ্তি বলল 'কেন যে রাধা এরকম কাজ করলো?'
শেখর বলল এই নিয়ে আবার ভাবতে বসো  না।'
দেখি অন্য কাজের মেয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। রাখছি।
তৃপ্তির আজকের সোনালি মধুর মুহূর্তে একরাশ মন খারাপ করা অন্ধকার গ্রাস করল।

সালাম তাসির




সমুদ্র মন্থন 


পথিক জানে 
পথ ভুলে যাওয়া পথের ক্লান্তি শুধু একার।

ঝড়ের পাখির মতো মৃত্যুর মুখোমুখি 
অন্তর দহনে পুড়ে পুড়ে বেঁচে থাকার কি যন্ত্রনা
লখীন্দর ছাড়া আর কেউ জানেনা।

আত্মরক্ষার তাগিদ
আত্মহননের পথকে প্রসস্থ করে দিলে মনে হয়
গঙ্গাজলে ডুবে বেঁচে যাওয়া এক সন্যাস জীবন।

আত্মার বন্ধনহীন যে জীবন 
আত্মতৃপ্তিতে পৃথিবী হলেও ; পৃথিবী কারো একার নয়।

একটা প্রশ্নবোধক চিহ্নকে আঁকড়ে ধরে
যদি বলি আমি কে? 
পথ ভুলে যাওয়া পথের ক্লান্তি শেষে রূপসী রাতের দুঃখ নিয়ে যে সামনে দাঁড়ায় সেকি তুমি নও?

চলো সত্যের কাছে যাই
অমৃতের সন্ধানে সমুদ্র মন্থন করি 
পথের ক্লান্তি বুকে নিয়ে সামনে দাঁড়াই ; যদি ভুল পথে সত্যের দেখা পাই।

একদিন তুমি বলেছিলে
ভুল পথে ভুল মানুষের যাত্রা কখনই কষ্টের হয় না।

আলেয়া আরমিন আলো




নৈঃশব্দ্য এবং একাকীত্ব



দিনের আলোয় ঘুমন্ত বোধগুলো নিশি প্রহরেই কেবল জেগে ওঠে...
নৈঃশব্দের সাথি হয়ে একে অন্যের নিকট সুখ দুঃখের কথা বলে,
অহেতুকই পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশে নৈশ প্রকৃতির নিঃশ্বাস ভারি করে।
যাপিত জীবনের অতৃপ্তিগুলো ঘুমহীন রাতের নিস্তব্ধতায় আঁধারের স্রোতে থমকে দাড়ায়,
অব্যক্ত ব্যথা কিংবা বহুকাল ধরে কুয়াশার মতো 
বুকে জমে থাকা অভিমানগুলোও জানালার 
স্বচ্ছ কাঁচে বিন্দু বিন্দু শিশিরে ঝরে 
ঝাপসা করে তোলে সম্মুখের দৃষ্টি! 
সন্তর্পণে অতীতের করোডোর ছুঁয়ে বয়ে আসা স্মৃতির বাতাসে ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে 
নাড়িয়ে দিয়ে যায় "এককালের সুখ"!
যা অবহেলার ধূলোতে অযত্নে ঢাকা পরে আছে বহমান বর্তমান 
অতঃপর রাতের শরীরের ভাঁজে ভাঁজে জমা পরে আহত হৃদয়ের তপ্ত দীর্ঘশ্বাস!
বিষাদ দহনে আগ্নেয়গিরির মতোই নিঃশব্দে চৌচির হয় বুক।

মোহাম্মদ সোহেল রানা




টাকা

শুনেছি টাকা ওয়ালার মুখ 
নাকি হয় বাকা,
টাকা ছাড়া এই দুনিয়া
সব লাগে ফাঁকা,

স্বার্থের পৃথিবীতে এখন টাকা
রাখে সবাইকে সুখে,
টাকা নেই যার অনাহারে তার
দিন যায় দুঃখে । 

টাকার জন্য ছেলে বাবার 
গলায় মারে ছুরি,
সন্তান অনাহারে তাই বাবা
গলায় দিয়েছেন দড়ি।

দুনিয়ায় পথ চলতে গেলে
প্রয়োজন হয় টাকা,
টাকা থাকলে ঘুরে বন্ধু
এখন ভাগ্যের চাকা।

চাকরীতে পদোন্নতি দ্রুত হয়
ঘুষ পেকেটে দিলে, 
নীতির বিসর্জন হয় দেখো
টাকা হাতে পেলে।

এই দুনিয়ায় কাড়ি কাড়ি 
টাকা আছে যার,
পৃথিবীর মাঝে সবকিছু যেনো
হাতের মুঠোয় তাঁর।

টাকা থাকলে স্ত্রী সন্তানরাও
মধুর সুরে ডাকে,
শূন্য পকেটে বন্ধু বান্ধব 
অনেক দূরে থাকে। 

গ্রাম ছেড়ে এসে শহরে সবাই
খুঁজে অনেক টাকা,
বাতাসে নাকি টাকা উড়ে 
আমাদের শহর ঢাকা।

টাকার জন্য বন্ধুত্বের মাঝেও
সম্পর্ক হয় নষ্ট,
অবৈধ অর্থ অর্জন করলে
সন্তান হয় পথভষ্ট। 
মোহাম্মদ সোহেল রানা 

টাকা দিয়ে প্রভুর আমাদের 
পরীক্ষা করে ঈমান,
হে টাকাওয়ালা!গরিব দুঃখীকে
করিও টাকা দান।

তানভীর আজীমি ( গ্রিস, এথেন্স )




তোমার জন্য তুলে রেখেছি

সুপ্ত জীবনের স্বপ্নগুলো তুলে রেখেছি মলাটের বাঁধনে,
তোমার জন্য তুলে রেখেছি বর্ষার এক টুকরো মেঘ,
শরতের ঝরা পাতার ঝুন'ঝুন ছন্দ মেখে।
তুলে রেখেছি বসন্তের ডালে কৃষ্ণচূড়ার রক্ত ঝরা বিকেল,
মেঘহীন আকাশে জ্যোৎস্নায় প্লাবিত মাধুবী রাত,
গ্রীষ্মের সোনালী রোদে ভেজা তপ্ত দুপুর।
শীতের শিশির সিক্ত রজনীগন্ধার স্নিগ্ধতায় ভরা সকাল,
গোধূলির রুপালি আবির জড়ানো দুপুরের মৌনতা,
ঝুমকা ফুলের ঘোমটা উঠানো মধুর প্রহর।
ঘাসফুলে ঢাকা বর্ণিল সবুজ প্রান্তে পিদিম জ্বালানো সন্ধ্যা,
ঝিনুক ছড়ানো তটিনীর পারে শুভ্র মেঘের ভেলা,
হিমেল বাতাসে দোলা দেয়া শাপলার দীঘি।
হৃদয়ের মাঝে বিমোহিত মায়াময় বাঁশির সুরের আহ্বান,
অচেনা পুলক ছুঁয়ে যাবে এমন কিছু প্রেমের ঘ্রাণ,
মনের মাধুরী ঢালা ভালোবাসার কলতান।
আরো তুলে রেখেছি প্রজাপতির ডানায় সোনালী যৌবন,
অজস্র বছর পুরাতন একটি না বলা কথার মায়া,
নিপুন বাক্যে বাঁধা স্বপ্ন স্বর্গ সুখের বাসর।

মোঃ মুনির উদ্দীন




চাঁদনী রাতের দান 
    

আধেক রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় 
বাইরে দেখি এসে, 
পূর্ণিমা চাঁদ জোছনা ছড়ায়
কতই ভালোবেসে। 

চাঁদনী রাতে নীল আকাশে 
কোটি তারার মেলা, 
শিউলি বকুল বেলী জবা 
করছে নিত্য খেলা। 

গাছগাছালি চাঁদের আলোর 
করছে সুধা পান, 
স্বর্গীয় এই পরিবেশটা 
খোদা করছে দান। 

মৃদু হাওয়ায় আসছে ভেসে 
হরেক ফুলের গন্ধ, 
সবার মাঝে মিশে আজি 
পেলাম নতুন ছন্দ। 

আমায় আপন করতে ওরা 
ব্যস্ত সারাক্ষণ, 
ওদের তরে সঁপে দিলাম 
আমার পাগল মন।

মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ




বাঁচাও ভারতবর্ষ 
 

দেশটা কারোর বাপের নয়,যা খুসি তাই করবে।
শহীদের রক্তে হয়েছে স্বাধীন,আমার ভারতবর্ষ রে।
গরীবের রক্ত মিশে আছে এই বাংলার মাটিতে।
দেশের সম্পদ বিদেশ কেনো!যাচ্ছে রে সব চলে।
দেশের মানুষের উপর হচ্ছে কেনো অন‍্যায় অবিচার।
আর চুপ থেকোনা,চুপ থেকোনা জাগোরে সবাই।
সব জাতির এ যেন এক চরম অপমান।
তবুও বাংলার মানুষ কেনো ফুটবলের মতো সট খায়।
দেশটা কারোর গোলাম নয়,যেমন খুসি তেমন সাজাবে।
হাজার শহীদের রক্তেকেনা,গরীব দুখীদের এই বাংলাকে।
দেশটা কারোর বাপের নয়,যা খুসি তাই করবে।।
শহীদের রক্তে হয়েছে স্বাধীন আমার বাংলারে।
ভিনদেশী সন্ত্রাসদের সাথে,কেনো কালো হাত মেলালিরে।
জবাব চাই,জবাব চাই,আমরা জবাব চাই।
তোদের কারনে স্বাধীন বাংলার চারিদিকে আজ যে।
হাজার মায়ের কান্নায় ভেসে যাচ্ছে আমার বাংলা রে।
দেশটা কারোর বাপের নয়, যা খুসি তাই করবে।।
শহীদের রক্তে হয়েছে স্বাধীন,এই আমার বাংলারে।।