লেখকের এই ধারাবাহিকতাকে কুর্নিশ জানাই । স্বপ্নসিঁড় সাহিত্য পত্রিকা'র পক্ষ হতে আপনাকে হার্দিক অভিনন্দন । ১৫০ তম দিন ।
উপন্যাস
টানাপোড়েন ১৫০
টান
মমতা রায় চৌধুরী
রেখার হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙে যায় কোনরকমে হাত ঘড়িটা হাতরে হাতরে নিয়ে টাইম টা দেখে সাড়ে চারটে বাজে । মনে মনে ভাবছে, মনোজকে কি ডাকবে? না ,ডেকেও কোন লাভ নেই। ওর ঘুম হচ্ছে কুম্ভ কর্ণের ঘুম। অসময়ের ডাকে আরো কাজের ব্যাঘাত ঘটবে। বরং ও একটু ঘুমোক তারপরে নয় ডাকব। এই বলে রেখাও পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে। হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ" জয় গনেশ, জয় গনেশ, জয় গনেশ দেবা।
রেখার কানে আওয়াজটা গেল কিন্তু গুরুত্ব দিলো না তারপর আবার কলিং বেল বেজে ওঠে, জয় গনেশ জয় গনেশ জয় গনেশ দেবা ।প্রথমে রেখা ভাবছিল স্বপ্ন দেখছে। পরে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে , কান খাড়া করে শুনছে, না এ তো বাস্তব স্বপ্ন নয় ।এ বাবা মাসি এসে গেছে। কত বেলা হয়ে গেছে ।মনোজকে ধাক্কা দিয়ে দু চারটে কিল মেরে দিল। মনোজ তো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল' কি করছো তুমি?'
"কি করছি মানে ?তোমার জন্য আজকে আমার দেরি হয়ে গেছে?'
'মানে?'
"মানে মাসি এসে গেছে, এখনো রেডি হতে পারলাম না। কখন যাবো বলো?'
"যাবে তো?'
" কোথায়?'
"মানে? তুমি সব ভুলে গেছো?'
"আমাকে ঘুমোতে দাও রেখা, কানের কাছে বাজ খাই গলায় এত চিৎকার করো না তো, ভালো লাগছে না বিরক্ত করো না। বলেই ভোস ভোস করে নাক ডাকতে শুরু করল।
"আমি পাগল হয়ে যাবো তো লোকটাকে নিয়ে। এ বাবা নিজেই সব ভুলে গেছে। কি ,কোথায়, কখন কিভাবে যাবে?"
বকবক করতে করতে রেখা গিয়ে দরজাটা খুললো।
মাসি বলল" কিগো বৌমা? আজ দেরি করলে এতো?"
"আর বোলো না মাসি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।"
"তা বেশ করেছিলে।"
দরজাটা বন্ধ করতে করতে রেখা বললো" মাসি তুমি একটু তাড়াতাড়ি কাজগুলো সেরে নাও আজকে এক জায়গায় বেরোবো?"
'কোথায় যাবে?'
"আমার দেশের বাড়িতে কাকু কাকিমার কাছে।"
"ও তাই বুঝি যাও ঘুরে এসো।"
"কিন্তু..
"আর কিন্তু কিন্তু করো না তো তোমার বাচ্চাদের নিয়ে তো আর চিন্তা নেই, আমি আছি তো।'
"সে তো আমি জানি মাসি ।'
" তাহলে আবার কিন্তু কিন্তু করছ কেন?'
"যার সাথে যাব তারই তো এখনো ঘুম ভাঙ্গলো না।"
"যাও গিয়ে তাড়াতাড়ি ছেলেকে তোলো।
"একটু সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ো।'
রেখাও খুব খুশি হল। মাসি নিজের থেকেই বলাতে রেখা চলে গেল নাচতে নাচতে মনোজের কাছে মনোজকে ডাকল "কিগো ওঠো, যাবে তো !না যাবে না?"
হুঁ
*মানে যাবে না?"
"কখন বললাম আমি?"
"তাহলে।"
"যাব তো।"
রেখা কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি রান্না ঘরের দিকে ছোটে মাসির জন্য এবং নিজেদের জন্য চায়ের জল বসিয়ে দেয় অন্যদিকে ফ্রিজ থেকে ময়দা বের করে পরোটার লেচি কাটতে শুরু করে পরোটা বাজবে বলে অন্যদিকে ক্যাপসিকাম আলু ভাজার সবজি কেটে নেয়। চা হয়ে গেলে মাসিকে ডেকে চা-বিস্কিট দেয়।
তারপর রেখা বলে 'মাসি তুমি পরোটা এখানে খাবে তো ?"
মাসির চা খেতে খেতে চুপ করে থাকে কোন জবাবই দেয় না।
রেখা সমস্তটা বুঝতে পারে মাসির সংসারে অভাব নিজের খাবারের ভাগটা যদি নাতি নাতনিদের দিতে পারে তাহলে অনেকটা সাশ্রয় হয় ।সেজন্যই কোন কথার উত্তর দেয়নি। রেখা বলল,' ঠিক আছে ।তুমি এখানে দুটো খাও আর দুটো নিয়ে যাবে।'
মাসিnখুব খুশি হলো ।তারপর বলল "আমি তাড়াতাড়ি কাজগুলো গুছিয়ে নিচ্ছি তারপর বাড়ি যাই ।'
রেখা বলল" হ্যাঁ বাড়িতে কি কি জিনিস আনার আছে সেটা নিয়ে চলে এসো।"
"মাসি বাচ্চাগুলোর খাবারটা একটু দিয়ে যাও না।"
মাসি বলল' হ্যাঁ দাও আমি খাবারটা দিয়ে যাচ্ছি। 'তাহলে তুমি এদিকে তাড়াতাড়ি রেডি হতে পারবে।'
রেখা খুব খুশি হল এবং আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে শাড়ি পরে নিল।।
মনোজ ঘর থেকে বলল' তুমি রেডি হয়ে গেছো?'
রেখা বললো হ্যাঁ।
বলেই মনোজের কাছে এসে দাঁড়ালো।
মনোজ আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করে বলল' তুমি শাড়ি পড়ে যাবে?'
রেখা বলল' মানে? শাড়ি পড়েই তো যাব।:
"তুমি শাড়িটা খুলে সালোয়ার কামিজ করে নাও।"
"কেন?"
"আরে বাবা সালোয়ার কামিজ করে বাইকে গেলে সুবিধে বেশি।"
রেখা অভিযোগের সুরে বলে' তাহলে তুমি আগে বলনি কেন?"
"তুমি তো দেখতে পাচ্ছ কতটা ব্যস্ত থাকি।'
মনোজ রেখাকে কাছে ডেকে বলল" তোমাকে শাড়ি পড়ে খুব সুন্দর লাগে, এত সৌন্দর্য তুমি কাকে দেখাবে,।"
রেখা গাল ফুলিয়ে বলল" তার মানে আমাকে সালোয়ার কামিজের ভালো লাগেনা?*
"আমি আবার সেটা কখন বললাম।'
'ঠিক আছে ,ঠিক আছে ।আমি যাচ্ছি চেঞ্জ করে নিচ্ছি।"
* বৌমা আমি যাচ্ছি।'
রেখা বললো" হ্যাঁ, মাসি, যাচ্ছি বলতে নেই। এসো তাড়াতাড়ি এসো।'
মনোজ বলল'আমার চা টা দিয়ে যাও।,'
রেখা বললো "ফ্লাক্সে আছে একটু ঢেলে নাও না।"
চা খেয়ে মনোজ ওয়াশরুমে গেল।
এরমধ্যে আবার কলিং বেল বেজে উঠলো ।রেখা ,বললো "এখন আবার কে আসলো উফ কি জ্বালা।"
রেখা দরজা খুলতে গিয়ে দেখে মাসি
"ও মাসি তুমি এসে গেছ।"
মাসি যাও আমি রান্না ঘরে কিছু খাবার রাখা আছে আগে খেয়ে নাও। আর শোনো তরকারি করা আছে তুমি তোমার মত করে ভাত করে নিও কেমন।'
আর্ ঠিক সময়ে তুমি আমার ওই বাচ্চাদেরকে খেতে দিও ।ওদেরকেখেতে দেওয়ার পর দেখবে আরো কিছু বাচ্চা আসে ওপার ও পাড়া থেকে ওদেরকেও দিও।
ঠিক আছে
ওদেরকে কি বাইরে ছেড়ে দিয়েছো?
হ্যাঁ মাসি, ওরা আর ভিতরে থাকতে চাইছিল না।
শুধু শুধু আরও ভেতরে রেখে কি করব বাইরেটা থাকবে আর গ্যারেজের দরজাটা খোলা থাকবে সারাদিন ওখানে এসে শুতে পারবে।
ভালোই করেছো।
আসলে এতদিন রেখেছিলাম তো বাচ্চাগুলো নিরাপত্তার কথা ভেবে আর রাখা যাবে না।
তোমরা কখন বেরোবে তাড়াতাড়ি বেরোও।
হ্যাঁ মাসি।
মনোজ ঘর থেকে বলল আমার প্যান্ট জামাটা কোথায় রেখেছো?
দেখনা, বের করে নিতে পারো না একটু।
মনোজ ঘর থেকে বলল 'তুমি তো জানো…।!
"দেখো সোফার উপরে রেখেছি।'
রেখা মাসি কে বলল" মাসি ফ্রিজ থেকে ইলিশ মাছটা আছে ওটা প্যাকেট কর আমরা যাবার সময় আমাকে দেবে ওটা হাতে।।
মনোজ রেডি হয়ে বলল "আমি কিন্তু রেডি ।নাও চলো চলো তাড়াতাড়ি বেরোও।'
"হ্যাঁ, তুমি এগোও, আমি আসছি।"
মনোজ বাইরে থেকে হাঁক দিল 'তোমার হেলমেটটা নিয়ে আসবে।'
"ঠিক আছে।"
রেখা গিয়ে বাইকে বসলো।
মাসি এসে বলল "এই নাও ব্যাগটা ,মাছের ব্যাগটা নাও।"
বাইক স্টার্ট করলো
রেখা হঠাৎ হাসির দিকে তাকালো, তখন বলল মনোজকে ওয়েট ওয়েট ওয়েট।
"কি হলো?"
রেখা বাইক থেকে নেমে মাসির কাছে এসে বললো " মাসি তুমি ঘামছো কেন?'
"বোধহয় তাড়াহুড়ো করেছি তো এইজন্য।"
'না ,না তোমার তো প্রেসার আছে তুমি ওষুধ খেয়েছো তো?'
"মাসি চুপ করে আছে।'
বুঝতে পেরেছি তুমি ওষুধ খাও নি।
মাসি বললো 'আসলে ওষুধটা শেষ হয়ে গেছে "কিনতে পারিনি গো বৌমা।'
"ঠিক আছে আমি পার্থকে বলে দিচ্ছি ও ওষুধ এনে দেবে ।তুমি কি ওষুধ খাও মনে করতে পারবে?
"আরে আমি তো তোমাদের এই যে সামনের দোকান সঞ্জীবনী ওখান থেকে ওষুধ কেনেও না ওখানে গিয়ে বললেই উনারা জানেন আমি কি ওষুধ খাই।"
'ঠিক আছে, আমি পার্থকে বলে দেব কোন চিন্তা করো না আর এই যে ছোট ফোনটা রেখে গেলাম আমরা প্রয়োজনে ফোন করে নেব আর তোমার যদি এমনি কোন অসুবিধা হয় তাহলে পার্থ আছে সামনে সেন্টুদা আছে পাশের বাড়ির চৈতীর মা আছে ঠিক আছে কোন টেনশন করো না।
না গো বৌমা তোমরা সাবধানে এসো।
ঠিক আছে তাহলে আসছি।
মনোজ গাড়ি স্টার্ট করলে রেখা পেছনে বসে।
মাসি বলতে থাকে "দুগ্গা দুগ্গা দুগ্গা।"
রেখা ভাবতে থাকে সত্যিই ঈশ্বরের অশেষ করুনা মাসির মত একজন বিশ্বস্ত লোককে রেখার কাছে পাঠিয়েছে। আর কত আন্তরিকতার সঙ্গে সবকিছু করে, যেন আপনার জন।
মনোজ কিছুদূর যাবার পরে এমন জোরে ব্রেক কষে রেখা আরেকটু হলে পড়েই যেত ।মনোজকে জড়িয়ে ধরে।।
"মনোজ হো হো হো করে হাসতে থাকে এই জন্যই তো ব্রেকটা কষে।'
"যেন মনে হচ্ছিল পরের বউকে নিয়ে বাইকে যাচ্ছি।'
রেখা বলল" মানে?'
"হ্যাঁ সেরকমই তো তুমি এত দূরে বসে আছো বাইকে বসেছি কোথায় আমাকে জড়িয়ে ধরবে চালানোর সময় একটা গতি আসে আমার।"
রেখা বলে "কি করে জড়িয়ে ধরবো সামনে ব্যাগ আছে ব্যাগটাইতো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
মনোজ বলে "দেখো, যদি মনের ইচ্ছে থাকে কোন বাধাই কিন্তু বাগ মানে না।'
রেখা মনোজকে জড়িয়ে ধরে বসলো আর মনোজ গান গাইতে থাকলো "এই পথ যদি শেষ না হয় তবে কেমন হতো তুমি বলতো….?"
এভাবে বাইক শহর ছাড়িয়ে ক্রমশ গ্রামের দিকে রেখাদের নির্মল গ্রাম গাছ-গাছালি পুকুর দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ পেরিয়ে ,পঞ্চা কাকাদের বাড়ি, বুলু কাকিমা দের বাড়ি ছাড়িয়ে নিজের ভিটে বাড়ির গেটের কাছে এসে দাঁড় করালো।
গেটটা ভেজানোই ছিল।
এ কাজটি করে খুলতে গিয়ে আওয়াজ পেল কাকিমা রান্নাঘরে কিছু একটা করছে আর এদিকে ভোলা কাকার সাথে বকবক বকবক করছে।
হ্যাঁ রে ভোলা, দিনকে দিন তোর বয়স কমছে না
বাড়ছে তোর এখনো খাবার টাইম হলো না?'
'এইতো ছোট বৌদি হয়ে গেছে যাচ্ছি।"
হ্যাঁ রে ভোলা গেটে আওয়াজ হলো না?
, রাশুর মা আসলো।
আরে ,মামনি!
কাকিমা বলল তুই কি জীবনেও শোধরাবি না এখন কত বয়স।'
"কেন আমি আবার কি করলাম?'
রাখাল আর বাঘের গল্প শুনেছিস?
রাখাল রোজ গরু চরাতে যেত আর বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতো। আর প্রত্যেকে আওয়াজ শুনে ছুটে আসলে হো হো করে হাসত।
দিন সত্যি কারে যখন বাঘে ধরল তখন চেঁচানো সত্বেও কেউ আসেনি। তাকে বাঁচানোর জন্য।
রেখা চুপি চুপি রান্নাঘরের কাছে গিয়ে বলল কাকিমা।
রেখা কিছুক্ষণ পর আবার ডাকতে থাকে কাকিমা।
পিছন ফিরে তাকাতেই কাকিমা আনন্দ উল্লাসে বলে ওঠে তুই?
"কিগো ব্যাগটা নিয়ে এসো।"
রেখা বলল "যাচ্ছি।"
"আর হাতে ওটা কি?"
ইলিশ মাছ আছে।
"কাকু খেতে চেয়েছিল না।"
ভোলা নিয়ে যা তোর দাদার কাছে ওদেরকে।।
দেখো কারা এসেছে।
কাকু বলল "কে ননী?'
আয় আয় আয় আমার বুকে আয় মা।
ভোলা দেখ কি টান।'
কাকিমা বলল' ইলিশ মাছ এনেছে।'
তাই মা আমার কবে থেকে গঙ্গার ইলিশ খেতে ইচ্ছে করেছিল রে মা।"
"তুই একাই এসেছিস? মা গাড়ি এসেছে?"
"না না তোমাদের জামাই এসেছে বাইকে এসেছি।
কিগো এদিকে এসো।"
মনোজ এসে কাকাকে প্রণাম করলো।।
কাকিমা বলল "আমি ওদিকে যাই।রান্নাবান্না গুলো করি।'
হ্যাঁরে, রাশুর মা আসলো?
ভোলা বলল "খেয়াল করিনি আসলে তো দেখা করতো।"'
রেখা বলল 'রাশুর মা টা কে? কাকিমা । নতুন কাজের লোক।"
"তোর মনে আছে কিনা জানিনা আমাদের বাড়িতে বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে সাবিত্রী কাজ করতে এসেছিল তোর মনে আছে?'
রেখা বললো মানে সাবিত্রী জেঠিমা যে বাঙ্গাল ভাষায় কথা বলতো আর ঠাকুমাও বাঙ্গাল ভাষায় কথা বলতো।'
একদম ঠিক ।তোরা তখন খুব ছোট ছিলিস।
তোর তো স্মৃতিশক্তি বেশ ভালো।
হ্যাঁ, ওই সাবিত্রির সঙ্গে ওর মেয়ে আসত। নাম সতী।'
"এই সতী হলো রাশুর মা।'
"ও তাই বুঝি?'
এসে হাতে পায়ে জড়িয়ে ধরেছে একটু আশ্রয়ের জন্য আমাদেরও তো এই হাল তারপরেও দেখলাম যে থাক কাজকর্ম করবে একটু খাবে?'
রেখা বলল ঠিকই করেছ।'
'
তবে জানিস তো ননী, আমি সতীকে বলেছি আমাদের গ্রামে আশেপাশে বাড়িগুলোতেও কাজ করে দেবে। তাতে ওর হাত খরচাটা আসবে।
ইতিমধ্যেই গেট দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বকবক করতে করতে আসছে কি দ্যাশ আসইলাম। দয়া মায়া নাই।"
ভোলা বলল" ছোট বৌদি এসে গেছে।
রেখার কাকিমা বলল সতী এসে গেছো ?
কি কমু এই দ্যাশ মানুষ বাস করে।
কি হয়েছে সত্যি?
আরে পাশের বাড়ির কাম করি বউডারে কইলাম একটু জল খাবার দাও
কথা হুইনা আকাশ থেইকে পইড়লাম।
কয় কি জল খাবার দিবার কথা তো হয় নাই।
কাকিমা বলল'ঠিক তুমি আজকে খাবারই খাওনি।"
"ননী দেখ তো কি কি আছে ঘরে দে তো ওকে খেতে। "
রেখা ঘরে গিয়ে মুড়ি আর রেখা রাজি মিষ্টি নিয়ে ছিল দুই সেটা দিল।
সতী বলল "এইডা কে?'
কাকিমা বলল "আমার মেজো ভাসুরের মেয়ে ।'
"কি মিষ্টি মাইয়া ,যেন চান্দ নাইমা আইছে।'
তারপরেই আবার বাংলাদেশের কথা আপন মনে বলছে।
"কি দ্যাশ ছাইরা কি দ্যাশে আইলাম।'
রেখা মনে মনে ভাবে নাড়ির টান এমনই। ও দেশ থেকে ছিন্নমূল অবস্থায় এসেও এ দেশটাকেও নিজের দেশ ভাবতে পারল না।। ও দেশের কথা মনের ক্যানভাসে স্বর্ণাক্ষরে আটকে আছে।
তারপর আপন মনে গান গাইতে থাকলো'আমার হাত বান্ধিবী, পা বান্ধিবী মন বান্ধিবী কেমনে ….. পরান বান্ধিবী কেমনে।'
কাকিমা বলল ছেলেটাকেও হারিয়ে স তী যেন আরো একা হয়ে গেছে।
সতীর দিকে তাকিয়ে রেখা ভাবতে লাগলো সত্যিই তাই শিকড়ের অস্তিত্ব মাটির অনেক গভীরে চলে গেছে তার থেকে উপ ড়ে ফেলা অতো সহজে নয়।।
রেখার ও অস্তিত্ব এই গ্রামের সাথে এই মাটির সাথে এমন ভাবে মিশে গেছে, যার টানে বারবার ফিরে আসে।
কাকিমা বলল ননী, আয় মা ফ্রেশ হয়ে নে।