১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কবি দেবব্রত সরকার এর কবিতা "বসন্তের বাসন্তী"











বসন্তের বাসন্তী
দেবব্রত সরকার


বেশ সুন্দর ছবির ভেতর নিষ্পাপ মুহূর্তগুলো
দেখছিলাম খুঁজে খুঁজে 
বেশ মিষ্টি লাগছে
তোমাকে 
ভালোবাসার আতর মেখে কাজে ডুব দিলে
আমি বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখবো প্রেম
তুমি খুঁজে খুঁজে নেবে 
সমস্ত ক্লান্তি উজাড় করে  
বুকের উপর বিছিয়ে দেবে কেশ
পারদ বাড়তে থাকল
তুমিও কখন কাছের থেকে মনে মন মিলিয়ে দিলে

আমাকে কেউ ফুল দেয়নি এখনো
নিশ্চয় তুমি দেবে 
অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে
একদিন দেখা হবে ঠিক
তোমার গৃহ কাজে ডুব দেবার মত
আমিও ভালোবেসে যাবো নিষ্পাপ
সেইদিন বসন্তের শ্বাস শেষ হলেও
তুমি যেন আমাকে ফুল দিয়ে যেও 🌹

কবি হৈমন্তী ব্যানার্জী এর কবিতা "মুহূর্ত পূর্বে..."














মুহূর্ত পূর্বে...
হৈমন্তী ব্যানার্জী


এই দী...র্ঘ অকালগ্রীষ্মে
বহুদূ...র শীতলতার চিহ্নটুকু নেই ;সম্মোহিনী বাঁশির ডাকে
শ্রীরাধিকা উষ্ণ হয় মনে মনে
খুব।
        এ দহন যুক্তি মানে না।
        এ দহন সময়ের দাসত্ব
        মানে না।
রাধার অভিমান বাড়ে। মনোহর ভর্ৎসিত হয়।
দ্বৈতসত্তা জেগে ওঠে অদ্বৈত সাধনের উদ্দেশ্যে।
শোন্ খুকি,
জীবনের অমৃতপ্রাপ্তিতে জগতের
মোহ ভেঙে যায়, খোলস ছাড়তে ছাড়তে রিপু তখন ভগ্নপ্রায়
শ্রীকৃষ্ণ প্রশস্তবক্ষে এরপর শ্রীরাধিকা সোহাগ নামায়, তার নুয়ে পড়া মাথা, তার বিস্তীর্ণ জমিন আবাদকালের জন্য হাট্ হয়ে যায়।
              মিশে যেতে চায় রাধা-
              মিশে যেতে চায়।

কবি রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ এর কবিতা "প্রেম"












প্রেম
রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ 


আমার জীবনের গল্পে
মৃত্যুর শিয়রে রাত জেগে
হাত বুলিয়ে যায় 
বিগত স্বপ্নের প্রেম

কবি আমিনা তাবাসসুম এর কবিতা "ভ্যালেন্টাইনে তুমি ও আমি"















ভ্যালেন্টাইনে তুমি ও আমি
আমিনা তাবাসসুম

জ্যোৎস্নার ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি তুমি ও আমি

যখন পৃথিবী নেই
কেবল একটা গোলকের মধ্যে
                         জন্ম রহস্য

যেভাবে নদীর বুকে লেগে থাকে চিবুকের দাগ
যেভাবে ফুলের রং সবুজ-সোনালী 
আর বইয়ের পাতা গোলাপ হয়ে যায়

কোনো শিলিং তবু দুঃখ ছুঁতে পারেনি

আমরা জোৎস্না খেয়ে বেড়ে ওঠি রোজ
ভালবাসা বড় হয়,
একটা ভ্যালেন্টাইন শুধু কেঁপে কেঁপে
বাতাস হয়ে যায়

কবি সানি সরকার এর কবিতা "সৃষ্টিকাল"














সৃষ্টিকাল 
সানি সরকার 


এখন অনেক কিছু সৃষ্টির সময় 

কিছু তো হচ্ছে ভেতরে
যেভাবে ছটফট করছে পায়রাগুলি 
যেভাবে ডানার আঁচড় কাটছে শালিখ দু’টি
যেভাবে অশ্বক্ষুর মাটি এফোঁড়ওফোঁড় করছে 
এই স্তব্ধতা, দ্যাখো, দ্যাখো… 

একটি গোলকের নিচে বসে 
পুড়তে পুড়তে, জ্বলতে জ্বলতে 
গলে নেমে যেতে যেতে 
আস্ত একটি গাছ থেকে ঝরাপাতা 
বালির ওপর শুয়ে আছি 

একে কী বলবে— নিঃশ্বাস গিলতে গিলতে  
মানুষটি চলমান গণিতের বাইরে ছিটকে গিয়েছে 
এবং রিবন উড়ছে চারপাশে… 

এখন দেহ থেকে বেরিয়ে গিয়ে 
পরম আত্মার সঙ্গে পরশ নেওয়ার দিন
পুড়ে যাচ্ছে দুঃখ, কষ্ট, দ্রোহ, আগুনলিপি… 

এই যে আমরা যেভাবে সোনালী আলোর নিচে 
পরস্পর আলিঙ্গনবদ্ধ বসে আছি 
কান পাতো— বুকের ভেতর দ্যাখো 
কিছু একটি বাজছে

কবি মমতা রায় চৌধুরী এর কবিতা " যদি একবার বল ভালবাসি"




যদি একবার বল ভালবাসি
মমতা রায় চৌধুরী 


যদি একবার বলো ভালবাসি 
নিমিষেই এক নীল আকাশ হয়ে 
বৃষ্টির ধারা বুকে নিয়ে ঝরে পড়বো তোমার  ঊষর ভূমিতে
হতে পারি মেঘলা দিনের এক মুঠো 
বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে সারাদিনের মৌনতা
তবে ঝড় তুলতে পারি উদ্দাম যৌবনাবেগে
নতুন কিছু সৃষ্টিও করতে পারি। 

যদি একবার বলো ভালবাসি, ভালবাসি 
নদীর ধারার যত ফেনিল আছে 
তার উচ্ছ্বাস তোমার বুকের মাঝে দু'কান পেতে
শুনতে পেতে 
হয়তোবা বেদুইনের মত ছুটে বেড়াতাম শুধু তোমাকে পাবার জন্য 
এক মুঠো রোদ্দুর কৃষকের মুখের হাসি 
শত গোলাপের গন্ধ আমার জীবন পদ্মে পেতাম ছন্দ। 

যদি একবার বলতে ভালবাসি, ভালবাসি 
শতবার জন্ম নিতাম তোমার মুখের 
দু’ চোখের ভাষা পড়ে নিতে 
আমি আর কিছুই চাইতাম না 
চাইতাম না আমার একটা ঘর চাই
আমার ব্যালকনির মত বারান্দা চাই
তবে পড়ন্ত বিকেলে বসন্তের আনাগোনা 
কৃষ্ণচূড়ার রক্তিমা তোমাকে মনে করাতো 
আর গোপন মনের ভালোবাসা ধরে রাখতাম আমার অলিন্দে।
যদি একবার বলতে ভালবাসি ভালবাসি 
জীবনানন্দ দাশের’ নাটোরের বনলতার’ মত ফিরে আসতাম হাজার বছর পরেও ।

কবি মহাবীর চৌধুরী এর কবিতা "আমার তুমি"




আমার তুমি 
মহাবীর চৌধুরী

চেয়েছি যাকে আমি, 
দেখিনি তার রূপ,
দেখিনি তার রং,
দেখিনি তার গুণ,

দেখেছি খালি তার, 
উন্মুক্ত ভালোবাসা। 
যে, ভালোবাসা 
প্রকাশ করে না ভাষা,
বয়ে যায় স্রোতের সমান,
দিয়ে যায় অনেক প্রমাণ।
চলার পথে দিয়ে যায়,
হার না মানা বিশ্বাস
এই ভালোবাসা কোনদিনই
শেষ হবার নয়
যতক্ষণ থাকবে নিঃশ্বাস।
 
তুমি শুধুই আমার,
কেবলই আমার তুমি।