২৮ নভেম্বর ২০২১

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন" ৫৪

কান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক।  তার নিত্যদিনের  আসা  যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কথা  নিয়ে  কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন  চলবে...



টানাপোড়েন (৫৪)

মনজানলা 


                                                                       বৃষ্টিটা কমাতে একটু হাঁফ ছেড়ে যেন রেখা বাঁচল। অথচ এই বৃষ্টির জন্য এক সময় আকুলি- বিকুলি করতো। এখনো মাঝে মাঝে মন আনচান করে।অনেকদিন পর গ্রামে এসে এই বৃষ্টি যেন সবকিছু মেচাকার করে দিচ্ছে। মনে পড়ে একবার বৃষ্টির সময় ঘোষদের বাড়িতে দুর্গাপুজোর পাশাপাশি দুই বোনের পুজো হত মানে কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মী পূজোর সঙ্গে সঙ্গে সরস্বতীর ও বন্দনা হ'ত । ছেলে মেয়েদের ভিড় জমত। এ রকমই একবার সরস্বতী পূজার অঞ্জলি দিতে ঘোষ বাড়িতে গেছিলো রেখা।সেখানে অন্যান্য ছেলেদের মতো নীলুও গেছিল। নীলু তো যাবেই ,যেখানে রেখা গেছে।
বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎই বৃষ্টি ।বড় আমগাছটার নিচে আশ্রয় নিয়েছিল দু'জনা। সেদিন যেন মনে হচ্ছিল বৃষ্টিটা না থামলেই ভালো হয়।
নীলু বলেছিল ' হ্যাঁ ,রে ।তুই তো ভিজে গেছিস? তোর ঠান্ডা লেগে যাবে। এক কাজ কর তুই আমার শার্ট টা নে।'
রেখা বলল'কেন তাহলে তো তুমি ভিজে যাবে?'
নীলু বলেছিল'আমরা পুরুষ মানুষ আমাদের ঠান্ডা সহ্য হয়। আর তোর তো আবার ঠান্ডার ধাত আছে?'
দু'দিন পরে স্কুলে  যেতে পারবি না।'
রেখা বলল  'স্কুলে যেতে পারব না, তাতে তোমার কি?'
নীলু বলল ' তার মানে?'
রেখা বলল  'তার মানে আবার কি ?আমি বাড়িতে রেস্ট নেবো।'
নীলু বলল ' তোর প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলো কে করবে শুনি?'
রেখা বলল  'সে তোমাকে অত ভাবতে হবে না।'
নীলু বলল  'না ,আমি ভাববো না ।তো কে ভাবতে শুনি ?আমি তোর ভালো বন্ধু হই না?'
রেখা বলল  'হ্যাঁ ,তা ঠিকই বলেছ?
নীল বলল  "আমি যেটা বলছি তোর ভালোর জন্যই বলছি। তোকে পড়াশোনা করে বড় হতে হবে।'
রেখা বলল  'আর তুমি?'
নীল বলল'আমাকেও বড় হতে হবে। পড়াশোনাতে নিজেকে সব সময় নিয়োজিত করতে হবে। কিন্তু একটা সমস্যা আমার হয়?'
রীতা বলল 'কী?'
নীল বলল 'তোকে দেখার'
এমন সময় আরও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হল, সঙ্গে বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো।  হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকানোতে রেখা ভয় পেয়ে গেল। আর ভয়েতে নীলুদাকে জড়িয়ে ধরল। নীলুও কেমন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছিলো।
নীলু বলেছিল' ননী তুই ভয় পাচ্ছিস? ভয় পাস না ।আমি আছি তো?
রেখা ও যেন পরম একটা আশ্রয় পেয়েছিল নীলুর বুকে।
একটু যখন বৃষ্টি কমতে শুরু করল ।তখন নীলু বলল  'চল বাড়ি চল।'
রেখা বলল 'আজকে বাড়িতে গেলে মা বকবে?'
নীলু বলল ' কেন রে?'
রেখা বলল  'অনেকটা দেরি হয়ে গেছে তো?'
নীলু বলল  'বকবে না ছাই, আমি যাবো তোর সাথে কাকিমাকে গিয়ে ...।'রেখা নীলুর কথা শেষ করতে না 
দিয়েই বলল ' তোমার সাহস কতদূর আছে ,আমার জানা আছে ।মায়ের সামনে গিয়ে তোতলাতে থাকো।'
নীলু বলল ' হ্যাঁ রে ।কাকিমাকে দেখলে  ভয় লাগে।'
রেখা বলল ' আমার মা কি বাঘ? না ভাল্লুক? যে তোমার ভয় লাগে ।খেয়ে ফেলবে?'
নীলু বললো ' না ,কাকিমার ভেতরে এমন একটা জিনিস আছে,কি আছে ,জানি না ।কাকিমার সামনে কথা বলতে সাহস হয় না। সামনে গেলেই কেমন সবকিছু গুলিয়ে যায়।'
রেখা বলল  'ওরে আমার বীরপুরুষ রে ,অনেক হয়েছে ।যাই ,আমি বাড়িতে গিয়ে বকাটা শুনি।'
নীলু বলল ' চল ,চল, চল তাড়াতাড়ি বাড়ি চল।'
সেদিন বাড়িতে পৌঁছানোর পর রেখাকে অনেক বকুনি খেতে হয়েছে।
বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে রেখার মা বললেন 'এতক্ষণ কোথায় ছিলে?'
রেখা বলল 'ঘোষ জেঠুদের বাড়ি।'
রেখার মা বললেন 'তাহলে ভিজলে কি করে?'
রেখা বলল 'এই তো আসার সময় বৃষ্টিটা পেলাম।'
রেখার মা বললেন  'বৃষ্টির মধ্যে আসলে কেন  ঘোষ দাদাদের বাড়ি থাকতে ?আমরা গিয়ে নিয়ে আসতাম।'
রেখা চুপ করে দাঁড়িয়েছিল।
রেখার মা আরো বললেন ‌'এখন বড় হচ্ছো ।যেখানে সেখানে একা একা যাবে না। দরকার হলে আমরা তোমাকে নিয়ে যাব।'
রেখার মা বললেন 'পার্বতী দি কিছু পাঠায় নি প্রসাদ?'
রেখা জানে এখানে মিথ্যে কথা বলা যাবে না ।আদতে পার্বতী জেঠিমা প্রসাদ নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন ।কিন্তু আমি ভুলে গেছি।'
রেখার মা বলল " কিরে উত্তর দিচ্ছিস না?'
রেখা বলল ' নিয়ে আসতে বলেছিলেন কিন্তু আমি তাড়াহুড়োয় বেরিয়ে চলে এসেছি।'
রেখার মা বললেন ' হ্যাঁ, সে তো ঠিকই ।যেগুলো কাজের মধ্যে পড়ে ,সেগুলো তুমি ভুলে যাও। আর যেগুলো অকাজ সেগুলো করে ঘুরে বেড়াও।'
রেখা বলল 'হ্যাঁ ,সত্যি বলছি।'
রেখার মা বললেন  'ওরে ,আমার সত্যিবাদী যুধিষ্ঠির '।
রেখা যখন রুমের দিকে যাচ্ছে তখন ওর মা বললেন 'শোন ।বলছি এবার আলপনাটা কেমন হয়েছে রে?'
রেখাও খুব গদগদ ভাবে এসে মাকে বললো'  খুব সুন্দর হয়েছে মা।'
রেখার মা বললেন 'প্রায় ২০০ বছরের পুরানো পুজো,।দুর্গাপূজা যেমন হয় তেমনি আবার এই দুই বোনের পুজো হয় সাড়ম্বরের সাথে।'
রেখা বলল' ও মা দুটো ঘট বাঁধা হয় কেন?'
রেখার মা বলল  ' দুটো পুজো  ,তো দুটো  ঘট হবে না?'
রেখার মা বললেন 'ভোগ খেয়েছিস তো?'
রেখা বলল  'হ্যাঁ মা।'
রেখার মা বলল  'কি কি ভোগ দিয়েছেন রে?'
রেখা বললো ' ওই  তো মা ।প্রতিবার যা দেয়া হয় ফলমূল ,লুচি ,সুজি সবকিছুই।'
রেখার মা বলল   'হ্যাঁ রে। বিদেশ থেকে ঝুমুরা এসেছে?'
রেখা বলল  'হ্যাঁ ।মনে হয় ।প্রচুর লোকজন তো?'
রেখার মা বলল ' 'ঠিক আছে। যাও গিয়ে আগে চেঞ্জ করো।
 ঠান্ডা লেগে যাবে।'
রেখা বলল  'হ্যাঁ মা।'
আজ সবই স্মৃতি।
আবার সেই ছাদে উঠে চারিদিকটা দেখতে লাগলো ।ওই তো আমবাগান দেখা যাচ্ছে।
রেখা ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুচোখ ভরে গ্রামটা একটু দেখে নিচ্ছে। এমন সময় কাকিমা এসে বললেন 
''কি করছিস ননী?'
রেখা বলল 'আচ্ছা কাকিমা। ঘোষজেঠুদের আগের মতো সাড়ম্বরে পূজা হয় ,ওই দুই বোনের পুজো'?
কাকিমা বললেন 'আগের মত আশেপাশের গ্রামের মানুষদের আর সেরকম নেমন্তন্ন করা হয় না ,আর্থিক অসঙ্গতির জন্য।'
রেখা বলল   'ও তাই বুঝি?'
কাকিমা বললেন 'আগে যে খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানো হতো এখন সেটা দাঁড়িয়েছে শুধু প্রসাদ বিতরণে।'
রেখা বলল 'আচ্ছা কাকিমা এখনো কি গো জেঠুদের সেই পুকুরেই প্রতিমা বিসর্জন হয়?'
কাকিমা বললেন ' তোর সব মনে আছে? হ্যাঁ এখনো সেই পুকুরেই হয়।'
কাকিমা বললেন 'চল ,চল, ননী ।খেয়ে নিবি।
বিকেলে তো বেরোবো  তোকে নিয়ে?'
রেখা বেরোনোর আনন্দে বললো  'চলো ,চলো 'কাকিমা। 
রেখার মন এখন শ্রাবণ মাসের ভরা নদী ।টুইটুম্বুর করছে স্মৃতির ভান্ডার। মন জানলায় বারবার উঁকি দিচ্ছে।
তাই পুরনো স্মৃতিকে আরেকবার ঝালাই করে নিতে চাইছে।
রেখা বলল 'কাকিমা বুলু জেঠিমার আর খবর পেলে।'
কাকিমা বললেন  'না রে , ভোলা  এসে তো কিছু খবর দেয় নি।,'
রেখা বলল' ও'।
কাকিমা বললেন'বেশ ,চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো।'
রেখা বলল ' আচ্ছা কাকিমা ,নীলুদা কি একদমই আসে না?'
কাকিমা বললেন "এখন কেন আসে না সেটাই বুঝতে পারি না। ওদের কিছু একটা হয়েছে ভাইয়ে-ভাইয়ের।'
কাকিমা কথাটা বলেই নিচে চলে গেল খাবার বাড়তে সঙ্গে রেখা কেউ বলে গেল তাড়াতাড়ি নামতে।
রেখা শুধু মনে মনে ভাবছে আর কি কোনদিনই নীলু দার সঙ্গে দেখা হবে না?
রেখার আরো ভাবছে  'নীলুদার সেই কথাগুলো কোথায় গেল? একবারও কি আমার কথা মনে পড়ে? নাকি বিদেশে গিয়ে মেমসাহেব দেখে সবকিছুই ভুলে গেছে। অথচ রেখা কেন ভুলতে পারে না। রেখার আজ যেন 'পল পল দিল কে পাস তুম রেহতি হো', আঁচড় কাটছে হৃদয়ের ক্যানভাসে।

fgzgg

LOVE

লেখক শান্তা কামালী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "বনফুল"৩১

চোখ রাখুন স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শান্তা কামালী'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "বনফুল" 
 


বনফুল
( ৩১ তম পর্ব ) 


                                                             জুঁই পলাশ শহর থেকে একটু দুরে আশুলিয়ায়....  অনেক নিরিবিলি দেখে একটা গাছের নিজে বসলো ।
জুঁই বললো তোমাকে ছাড়া কীভাবে এতো দিন থাকব জানিনা, পলাশ বললো জুঁই এতো কোথায় মাত্র দুই বছর!  জুঁই বললো তোমাকে ছাড়া একেক  দিন মনে হয় একেকটা বছর.......! পলাশ জুঁইয়ে হাত ধরে বললো জুঁই তুমি এখনি এতো চিন্তা করছো কেন?  আমরা প্রতিদিন ফোনে কথা বলবো তো নাকি! তবুও জুঁইয়ের দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে.... 
পলাশ আস্তে করে জুঁইয়ের মাথা বুকে ধরে চোখের পানি পলাশের হাত দিয়ে মুছে দিয়ে বললো জুঁই তুমি যদি এতো অবুঝ হও তাহলে আমি এদেশের কোনো ভার্সিটি থেকে এমবিএ করে নেব,তোমাকে কোনো রকম কষ্ট দিতে পারবো না। পলাশের মুখে এমন কথা শুনে জুঁই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো, কি যে বলো আমার কোনো কষ্ট হবে তুমি বিদেশ থেকেই  এমবিএ করবে, তুমিইত বললে প্রতিদিন আমরা ফোনে কথা বলবো.... পলাশ বললো হে বলবো তো। জুঁই পলাশের বুকে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে বসে আছে পলাশও জুঁইয়ের সুগন্ধি চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে...... 
পলাশ বললো জুঁই কষ্ট কি তোমার একার হবে, আমার তোমাকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হবে না? জুঁই মুখে কিছু না বলে মাথা নেড়ে সুমতি জানালো হ্যাঁ। পাশ দিয়ে বাদাম ওয়ালা ডেকে যাচ্ছে বাদাম লাগবে বাদাম..... পলাশ ইশারায় বাদাম ওয়ালাকে ডাকলো, জুঁই ঠিকঠাক হয়ে বসলো। পলাশ ত্রিশ টাকার বাদাম নিলো,বাদাম ওয়ালা চলে যেতেই পলাশ বাদামের খোসা ছাড়িয়ে জুঁইয়ের হতে দিচ্ছে... জুঁই বাদাম খাচ্ছে আর পলাশে দিকে নিবিড় চোখে তাকাচ্ছে......  পলাশ প্রশ্ন করলো  এমন করে কি দেখছো? 
জুঁই উত্তর দিলো তোমায় দেখছি।

দেলোয়ার হোসেন সজীব




উন্মোক্ত সম্পর্ক


সম্পর্ক গুলো হোক উন্মোক্ত
পাখি গুলো উড়ুক আকাশে,
সন্দেহের বেড়াজাল মুক্ত
যেখানে ভালোবাসা যুক্ত।

উড়ে বেড়াক গাঙচিল
আপন মনে তেপান্তর,
বেলাশেষে ফিরবে পাখি
আশার দোয়ার খুলে রাখি।

কিছু মুক্ত বাতাস
কিছু সজীব নিঃশ্বাস,
স্বপ্ন গুলো কথা বলুক
স্বপ্ন গুলো স্বাধীন চলুক।

স্বপ্নিল মনে স্বপ্ন নির্মাণ
হোক মানুষ স্বপ্ন সমান,
রটে যাক যা তা যত্রতত্র
সম্পর্ক থাকুক পবিত্র।

সীমা সোম বিশ্বাস

 




কি লিখি তোমায়


নিজের মুখেতে বললে সেদিন 
"একটা কবিতা লেখো আমার জন্য। 
কি লিখি তোমায়? 
জীবনের পড়ন্ত এক বিকেলে 
হলো আলাপ পরিচয়  ।
জীবন অপরাহ্ণে এসে দেওয়া-নেওয়ার কিছু নেই ;
শুধু চেয়ে চেয়ে থাকা
আর ভালোলাগা ।

কবে  কখন হয়ে গেলে
  আমার শুভানুধ্যায়ী 
বুঝিনি তো আমি ।
রোজ বিকেলে তোমার ফোন এলে 
বেখেয়ালী  মন তোমাকে চাই ।
ভেসে আসা মিষ্টি কন্ঠের আবেশ 
জড়িয়ে ধরে গহীন অন্তরে ।
তোমার মিষ্টিমধুর  হাসির সুর
  এসে হৃদয় জুড়ায় ।
কখনো দেখিনি দু চোখের তারায় 
তোমার আদরমাখা  মুখখানি । 
তবু মন ছুঁয়ে যাওয়া বিকেলগুলো 
রোজ অপেক্ষায় থাকে  কথা বলবে ভেবে ।
সময় পেরিয়ে গেলে  আবেগী মন শুধু তোমাকেই খোঁজে, 
কেন জানি না?  

মায়া ভরা কন্ঠে বললে সেদিন, আপনার অভিরুচি অনুসারে 
অদৃশ্য চিত্রকর হয়ে 
এঁকে যাবে আমারে ।
তবু পড়বে না অভ্যাসের বেড়াজালে!
একথা শুনে  বিহ্বল মন
একলা ঘরে শান্ত সন্ধ্যায় ভাসে অশ্রুজলে!
কেউ দেখেনা কেউ বোঝে  না ।

তোমার মনের ক্যানভাসে এঁকেছো যে ছবি 
নিজের রং তুলি দিয়ে তাঁকে নাও গড়ে 
তোমারই মতো করে।
দেখবে তখন শুকতারা হয়ে 
জ্বল জ্বল করে উঠবো তোমার হৃদয় উঠোনে
জীবনের কোনো এক  সায়াহ্নে !

মুন চক্রবর্তী




ভালবাসা হাইজ্যাক হলে


মরশুমি বাহারে ডাক দিলে আপন হয় পৃথ্বী 
ছুটে চলা হেথা হোতা মঞ্জরি গল্প আলাপনে
ফুটেছে হাজার শীতের প্রহর ছুঁয়ে লাল সাদা গোলাপি 
অবুঝ মন বিবাগী পাহাড়িয়া ঝরণার সাথে
মেঘ সাদা উড়ে কেমনে শিশির হয় ঘাসে ঘাসে
আজ বুঝি ভালোবাসা হাইজ্যাক হয় শ্বেত শুভ্র কাননে
তারে দেখেছি কেবল চোখ খুলে কোনো অজনায়
তার কাছে গিয়ে লজ্জায় ফিরে আসি শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপায়
জন্ম যার মাঠে ঘাটে নর্দমায় স্রষ্টার ঘরে তার প্রত্যহ আনাগোনা 
তার ভালোবাসায় ছুটে আসে মৌ নানান অছিলায়
নানা নামে ফোটে অহরহ নন্দন হয় মনের গৃহ কোন।

গোলাম কবির




 ভালবাসা, আসলে তুমি কি


 এখন ভালবাসা একটা সোনার হরিণ! 
 অথচ আমার কাছে তা ছিলো একদিন হঠাৎ 
 একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরাতন সভ্যতার 
 নবতম আবিষ্কারের উল্লাসে ফেটে পড়া!
 মাঝেমাঝে মনেহয় ভালবাসা একটা
 প্রকাণ্ড ভূমিকম্প শেষে গতিপথ 
 বদলে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ! 
 আবার কখনো মনেহয় 
 কোনো একদিন নরম সকালবেলা 
 ঘুম ভেঙে জেগে উঠে শোনা পাখিদের
 কিচিরমিচির আর ফুলের সুবাসে 
 অপার ভাললাগা অনুভবের ডাকনাম। 
 ভালবাসা, আসলে তুমি কি?
 আমার আজো হলো না তা বোঝা!

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক উপন্যাস "অলিখিত শর্ত" পর্ব ২১

 স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শামীমা আহমেদ'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "অলিখিত শর্ত"



শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত 
                                              (পর্ব ২১)
   শামীমা আহমেদ 


                                                     জ সারাদিন শিহাবের কোন সাড়া নেই।
না কোন ফোন কল, না মেসেজ! শায়লা কোনভাবেই কাজে মন বসাতে পারছে না। কোন ফোন এলে খুব আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গেছে কিন্তু না, সেটা শিহাবের কল নয়।তবুও ধরতে হয়, কথা বলতে হয়।
ফোনে কখনো মাছওয়ালা,ইয়া লম্বা বেশ বয়স্ক একজন লোক। সারাক্ষণ আম্মা আম্মা করে কথা বলে।আম্মা ভালো মাছ আছে, আমনে কইলে কাইট্টা পাঠায়ে দেই, আম্মা নদীর মাছ, খাইয়া টাকা দিবেন, এত বয়স হইছে মাছ বেচি কেউ খারাপ কয় নাইক্কা।আবার কখনো মুরগীওয়ালা,সে আবার আন্টি সম্বোধনে মুরগি কেনায় উৎসাহিত করবে।চারটা মুরগির অর্ডার দিলে আটটা দিয়ে যাবে।আন্টি রাইখা দেন। টাকা দেওয়া লাগবো না।আজ রেট কম যাইতাছে।আগামী সপ্তায় দাম বাইরা যাইবো। প্রতিবারই একই কথা।একসাথে আটটা দশটা মুরগী বানিয়ে নিয়ে আসবে। শায়লার আর তা ফিরিয়ে দেয়া হয় না।
কিন্তু শায়লার আজ অন্য কোন ফোন ধরতে ইচ্ছে করছে না।সে একটা কলেরই অপেক্ষায়। মনের ভেতর অস্থিরতা উৎকন্ঠা নিয়ে বিকেল সন্ধ্যা কাটল।কেমন যেন একটা চাপা অভিমানও জমা হচ্ছিল।কি যেন! এক'দিনতো কথাবার্তায় খুব আপন হয়ে উঠেছিল।আজ কেন এই নীরবতা?
শায়লা রাত আটটায় একটা টিভি সিরিয়ালে মন দিতে চাইল।কিন্তু মন বারবার মোবাইলের দিকে চলে যাচ্ছে। বারবার ঘড়ি দেখছে।ঘড়ির কাটা দশটা ছুঁইছুঁই। 
হঠাৎ সব উৎকন্ঠা দূর করে শায়লার মোবাইলের স্ক্রিনে আলো জ্বলে উঠল!
হু, এমএ ওয়াইএ,,লেখা নামটি ভেসে উঠলো। শায়লা মায়া নামে শিহাবের নাম্বারটি সেভ করেছে।অনেক ভেবে এই নাম দেয়া।সে ভেবে দেখেছে শিহাবের জন্য তার মনের ভেতরে অনেক মায়া জমেছে,সেটা কি তার একাকীত্বের জন্য,নাকি তাকে ভালোবাসার আবেগ,নাকি  নিজের শূন্যস্থানটা পূরণ করার আকুতি।শায়লা তাতে দ্বিধান্বিত।। 
তবে এটা ঠিক, দুজনের  প্রায়ই কেমন যেন বেশ কাকতালীয় ব্যাপার ঘটে যাচ্ছে। যেমন, যখনি খুব নিবিষ্ট মনে শায়লা শিহাবকে ভাবে তখুনি তার কল চলে আসে। যখনি বিশেষ কিছু রান্না করছে,তখুনি শিহাবের কল, জানাবে এটা তার প্রিয় খাবার।তখুনি শায়লার মনটা খারাপ হয়ে যায়।
একদিন  চা খাওয়াবে,নিজের সব কথা বলবে,তাও মনে হয় ভুলে বসে আছে।
শায়লা বেশ অভিমান নিয়ে কল রিসিভ করে আর নিজেকে সংযত রাখতে পারেনি।সারাদিন কেন কল করেন নি, কেমন আছেন,কোন ঝামেলা হয়েছে কিনা,কোন সমস্যা কিনা, আরাফ ভালো আছে তো? এমনি একপ্রস্থ প্রশ্নে তাকে জর্জরিত করে উত্তর দেয়ার সুযোগ  না দিয়ে শায়লা অঝোরে কেঁদে ফেলে।
শিহাব নিজেকে খুবই অপরাধী ভাবতে থাকে।বুঝে নিল,তার বিরাট একটা ভুল হয়ে গেছে।তার বুঝা উচিত ছিল শায়লা তার কল না পেলে চিন্তায় থাকবে।শিহাব কোন উত্তর দিতে পারে না।সে বুঝে নেয় শায়লার মন কি চাইছে।আর এটার জন্য সে নিজেকেই দায়ী করছে।দিনের পর দিন কল করে  তার প্রতি শায়লার একটা নির্ভরতা এনেছে। জীবনের কঠিন সিদ্ধান্তের দিকে শায়লা চলে যাচ্ছে। শিহাব নিজের ভেতরেও ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে।সেও রক্ত মাংসে গড়া একটা মানুষ। তার আবেগ অনুভুতিকে সে আর কত গলা টিপে হত্যা করবে আর কত নিজেকে শৃংখলে বেঁধে বন্দি জীবনে হাসফাস করে মরবে।কিন্তু এব্যাপারে সেতো শায়লাকে কখনো কোন স্বপ্ন দেখায়নি।কখনো একান্তে কোন সময় কাটায়নি। সারারাত কোন আবেগী কথায় ভোর করে দেয়নি। শায়লা যা ভেবেছে সেটা একান্তই তার ভাবনায়।
শায়লা একটু স্বাভাবিক হয়ে জানতে চাইল,কোথায় ছিলেন সারাদিন? অফিসের কোন ঝামেলা?
শিহাব অপরাধীর মত অস্ফুট স্বরে কেবল উত্তর দিলো,
না অফিসের কোন ঝামেলা না,আমি ভালো আছি। কয়েকজন বন্ধু মিলে আজ অনেক দূরে একটা খোলা যায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। তিনটি বাইক নিয়ে নয়জন বন্ধু গিয়েছিলাম।সারা মাস কাজ করে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম।এবার শিহাব একটু হালকা হলো।তার মনেও প্রশ্ন এলো, শায়লা, আপনি কেন আমার কোন খোঁজ নেননি।একটা কল করেননি,এতই যদি চিন্তা করেছেন তো একটা কল দিয়ে খোঁজ নিতেন বেঁচে আছি কিনা?
শায়লা এরপর যা বললো তা আগেই আঁচ করতে পেরেছিল শিহাব।
শিহাব, তোমাকে আমি অনেক আপন করে ফেলেছি।আমি নিজেকে মানাতে পারছিনা।তুমি কি বলবে আমি কোন ভুল করছি কিনা?
শিহাব শায়লাকে জানালো,
আমায় আপন করে তুমি কোন ভুল  করোনি।কিন্তু আমায় 'তুমি' ডেকে ভুল করছো।তুমি শব্দটির অনেক শক্তি।রাতারাতি তা এক সমুদ্র দুরত্ব কমিয়ে দেয়।অনেক অধিকার নিয়ে দাঁড়ায়।অনেক চাওয়া পাওয়ার জন্ম দেয়। বহু আগেই শিহাব শায়লাকে কিছু অলিখিত শর্তের কথা জাবিয়েছিল(পর্ব২)।
শায়লা, আমিও সারাদিন তোমার একটা কলের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।বন্ধুদের সাথে গিয়েছি শুধু বন্ধুত্ব রক্ষার্থে।
আর সারাক্ষণ একটা নামের কলের জন্য বারবার মোবাইল  চেক করেছি।একজন বিশেষ কেউ আমায় কল করবে আর "মায়া"
নামটি ভেসে উঠবে। শায়লা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না! এমন কাকতালীয় ভাবে দুজনের নাম মিলে যাবে?
মনে হচ্ছে কে যেন তার সাথে লুকোচুরি খেলছে।আড়াল থেকে শায়লার সাথে দুষ্টুমির ছলে শিহাবের জন্য সে কেমন আকুল হয় সেটা পরীক্ষা করছে।
আমি যে তোমায় কল দেবো কেউ জানতে চাইলে তখন তুমি বিব্রত হতে।
কেন বিব্রত হবো,সাথে তো আমার বন্ধুরা,আমার স্ত্রী তো নয়, যে কিছু লুকাতে হবে।আচ্ছা,কথা হবে।ভীষণ ক্লান্ত।রাখছি বাই।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো।
এই এক স্বভাব শিহাবের হুট করেই বিছিন্ন হয়ে যায়।
শায়লা শিহাবকে নিয়ে গভীরভাবে ভেবে দেখলো লোকটা ফোনের কথায় বেশ ফরমাল।সামনাসামনি বেশ কেয়ারিং,মেসেঞ্জার কলে বেশ আন্তরিক আর মেসেজে যারপরনাই ভদ্র ও বিনীত ।

শিহাব ফ্রেশ হয়ে আজকের এ টু জেড অল 
পার্টস অফ ড্রেসেস ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে দিল।বলতে গেলে শিহাবের ফ্ল্যাটটা স্ত্রীবিহীন একটা সংসার। খুঁজলে সবই আছে। তার সবকিছু নিজের হাতে করতেই ভালো লাগে। 
শিহাব টিভি চালিয়ে দিল।আজকের নিউজ দেখা দরকার।দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের খোঁজখবর নেয়া দরকার।তবে যুগ যুগ ধরে সেই একই স্টাইলে খবর পড়া দেখতে একঘেয়েমি লেগে গেছে। অবশ্য এখন অনেক  চ্যানেল হয়েছে।তাদের খুব চেষ্টা খবরকে যত সাজ সজ্জা করে উপস্থাপন করা যায়। কিন্তু পাঠক পাঠিকারা সেই রচনা পড়ার মত করে মুখস্ত খবর পড়ে যায়। নিজেদের কোন স্টাইল যোগ করে না। শুধু মেকাপের বাহারে নায়িকা সাজে হাজির হওয়া।প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত চ্যানেল, তাই মানও তেমনি।
শিহাব একটা সিগারেট  ধরিয়ে বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ আগে শায়লার সাথের কথাগুলো নিয়ে ভাবছিল।
না, এভাবে আবেগী হয়ে উঠলে তো চলবে না।শায়লা কোন ভুল করে ফেলতে পারে।
শিহাব আর কোন আবেগি সম্পর্কে জড়াবে না, মনকে আবার তা জানিয়ে দিলো।শায়লাকে কল করা কমিয়ে দিতে হবে।
এরপর থেকে শায়লা যতই দূর্বল হয় শিহাব ততই তাকে তাচ্ছিল্য করে, শায়লা  যতই আবেগী  হয় শিহাব ততই বাস্তববাদী কারণ দেখাতে থাকে।অলিখিত কিছু শর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শিহাব শায়লাকে ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে দিতে থাকে।


চলবে.....

রাবেয়া পারভীন




স্মৃতির জানালায় 
(চতুর্থ পর্ব)  


সদ্য গ্রাম থেকে আসা  কৈশোর উত্তীর্ণ  এক নবীন যুবক। শহরের পরিবেশের সংগে যার কোন পরিচিতি নেই।  উচ্চশিক্ষা গ্রহন করে  নিজেকে প্রতিষ্ঠিত  করার দৃঢ় সংকল্প ছিল তাঁর মনে।  মেসের একঘেয়ে জীবন  আর একমনে লেখাপড়া  করা নিয়ে যখন সে ব্যাস্ত তখনি একদিন পরিচয় হলো শবনমের সাথে । তাঁর প্রিয় শিক্ষক রহমান স্যারের  মেয়ে। পড়া বুঝে নেবার জন্য  স্যার বলেছিলেন  সন্ধায় বাসায় যেতে। ঠিকানা খুঁজে খুঁজে সন্ধায় গিয়ে উপস্থিত হল স্যারের  বাসায়। দুরুদুরু  বক্ষে দরোজায় কড়া নাড়লো। সতেরো আঠারো বছরের  কালো ছিপছিপে গড়নের  একটি ছেলে দড়োজা খুলল । মাহতাবকে জিজ্ঞেস করল
- কাকে চান।?
-স্যার বাসায় আছেন ?
-জ্বীনা উনিতো বাসায় নেই !  
- কিন্তু  স্যার আমাকে আজকে সন্ধায় আসতে বলেছিলেন।
- আচ্ছা  আপনি ভিতরে এসে বসেন  আমি একটু  জেনে আসছি।
সুন্দর করে সাজানো বসার ঘর। জুতো খুলে রেখে ভিতরে এসে একটা সোফার এক কোনে জড়সড় হয়ে বসল মাহতাব। মাহতাবকে বসিয়ে ছেলেটি বাড়ীর অন্দর মহলে গেল। পদশব্দে মনে হলো ছেলেটি দোতলায় উঠছে। উপর তলার সিড়িটি সম্ভবত বসার ঘরের ঠিক পাশেই  তাই পদশব্দ খুব সহজেই কানে আসে। মিনিট পাঁচেক পরে আবার পদশব্দ নেমে আসছে  এবং  পরমুহূর্তে  দরোজায় যাকে দেখা গেল  সে ঐ ছেলেটি নয়,  একটি মেয়ে।  সে ভিতরে প্রবেশ করে  হাত তুলে সালাম জানালো মাহতাবকে।  মেয়েটির রূপে ঘর যেন আলোকিত হয়ে গেছে। মাহতাব ভ্যাবাচ্যাকা  খেয়ে  উঠে দাঁড়িয়ে  কোন রকমে ছালাম গ্রহন করলো। মেয়েটির পরনে সালোয়ার কামিজ। সেটা কি রংগের ছিলো এখন আর মাহতাবের মনে পড়েনা। তাঁর ওড়নার এক প্রান্ত  বুকের উপর  লতানো ভংগিতে  ফেলা আর এক প্রান্ত মাথার উপরে  ঘোমটা দেয়া।  বয়স ষোল সতের হবে।  তাঁর দাঁড়াবার ভংগিটিও ভারি চমৎকার।  মাহতাবকে ভ্যাবাচ্যাকা  খেতে দেখেও সে মোটেই হাসলোনা  বরং স্বাভাবিক  ভংগিতে বলল
-দাঁড়াতে হবেনা , আপনি বসুন।
মাহতাব বসল। তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।তখনো তার চোখের সামনে  ঝাপসা কাটছিলো না। ঘরে ফুল পাওয়ারের  বৈদ্যুতিক আলো জ্বলছিল তথাপি বার বার তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিলো। মাহতাবকে বসতে বলে মেয়েটি ঘরের অপর প্রান্তে আরেকটি সোফায় বসল। তারপর সরাসরি মাহতাবকে প্রশ্ন করল
- আব্বা আপনাকে আজকে আসতে বলেছিলেন ? ঢোক গিলে মাহতাব বলল
-জ্বী, স্যার আমাকে আজকেই সন্ধার পরে আসতে বলেছিলেন।
- ও, আপনি বুঝি আব্বার  ছাত্র ?
মাথা দোলাল মাহতাব । এবার মিষ্টি করে হাসল মেয়েটি। বলল
- দেখুন আব্বার কান্ড !  এতো ভুলো মন হয় কারো?  আজকে উনার সময় নেই অথচ আপনাকে আসতে বলেছেন। আজকে আমার মামাত বোনের বিয়ের কথা পাকাপাকি হবার কথা তাই আব্বা আম্মা দুজনেই  সেখানে গেছেন। ফিরতে হয়ত রাত হবে। আপনি শুধুশুধু কষ্ট করলেন কিছু মনে করবেন না। আব্বা প্রায়ই  এমন অনেক কিছু ভুলে বসে থাকেন। আজকে প্রথম দেখলেন  এরপর আরো দেখবেন। আপনাকে আমি আগেই বলে রাখছি। তবে কি জানেন  মানুষ হিসেবে  আব্বার কোন তুলনা হয়না।
মাহতাবের কন্ঠতালু পর্যন্ত  শুকিয়ে গিয়েছিলো  সে কোন কথা বলতে পারছিলো না।  অনেক কষ্টে বলল
- আমি তাহলে আজকে যাই।
- না না  বসুন  চা খেয়ে পরে যাবেন।  
মেয়েটির  কথায় আদেশ ছিলো না অনুরোধ ছিলো  কে জানে !  মাহতাব  আবার বসে পড়ল।  
 

চলবে......

রুকসানা রহমান





শঙ্খলাগা জ্যোৎস্না


টুকরো,টুকরো খোঁড়াদুপুর,বৈরাগী গেরুয়া বসন
আঙ্গিনায় নিঃশ্বাস।
জলহারা নদী গভীর শূণ্যের দিকে চলে যায়। 
চরাচর ছুঁয়ে।

শঙ্খলাগা জ্যোৎস্না।নিরব রাতে ঠোঁটের কবোষ্ণ
কাতরতা রাফওয়ার্ক।
স্বপ্নের অজুহাতে নিরব রাত,কাব্যহীন গৃহস্থ
ভাঙা মগ্নতা নৌকার খোলে।
আচঁল সরালে নদীতে শ্রাবণ,তারচেয়ে ঘোমটা
টানা থাক বাকিটা সময়।