২০ অক্টোবর ২০২১

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"২৮

কান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক।  তার নিত্যদিনের  আসা  যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন "


 

                                  টানাপোড়েন পর্ব ২৮

                                        মন আনচান করা স্বর্ণালী সন্ধ্যা

শিখার সপ্তমীর সকালটা এবার অন্যরকম। শরতের শুভ্র কাশফুল ,শিউলির সুঘ্রান আর শিশিরস্নাত সকালবেলা কি অসাধারণ লাগলো। তাই মানুষ বটে বারবার ভেসে ওঠে,গ্রামের পুজো মন্ডপ সত্যিই অন্যরকম ।সকলে কি সুন্দর আপন করে নেয় ।শিখা তো পুরো অচেনা কিন্তু গ্রামের মানুষগুলো মাধুর ননদ জেনেই সকলে হাসি ঠাট্টা ,মজা শুরু করে দিল। আর বললো সপ্তমীরতে দুপুরের খাওয়া -দাওয়া ,সন্ধ্যেবেলায় আড্ডা ,ধুনুচি নাচ ,আমাদের নতুন অতিথিরাও কিন্তু এতে অংশগ্রহণ করবে। গ্রামের একজন দাদা (আশুদা )ভীষণ ভালো মানুষ। বেঁটে- খাটো ,কালো কিন্তু তার ব্যবহার তার গায়ের রংকে হার মানিয়ে সকলের কাছে প্রিয় করে তুলেছে। 
আশুদা এসে বলল 'তুমি এসো। এদিকে এসো একটু। তোমরা তো কলকাতার মেয়ে অনেক কিছু আমাদের ভুল ত্রুটি থাকতে পারে ।সেজন্য তোমরা আমাদের ক্ষমা করে দিও ।আর শোনো আমাদের অষ্টমীতে কুমারী পুজো হয় ।বাচ্চাদের সাজানোর দায়িত্বটা তোমাকে দিলাম। '
পাশে কল্যান  ছিল, বলল ' হ্যাঁ ঠিক ব্যক্তির কাছেই দায়িত্বটা দেয়া হলো ।আপনারা নিশ্চিত থাকুন"।
আশুদা বলল  'আপনিও বাদ যাবেন না ।আপনাকেও দায়িত্ব নিতে হবে। আপনাকে কিন্তু সন্ধ্যেবেলায় ধুনুচি নাচেতে অংশগ্রহণ করতে হবে।'
কল্যানদা বলল'  আমি ওসব পারি নাকি?'
শিখা তখন বলল  'সঠিক ব্যক্তিকেই আপনারা নির্বাচন করেছেন।'
কল্যান একটু মুচকি হেসে শিখার দিকে তাকালো। আর মনে মনে ভাবল তখনকার খোঁচাটা এখন নিজেরই লাগলো।
কল্যান বলল 'দেখি পারি কিনা?'
বৌদি এসে বলল .'পারবে না মানে।কল্যাণ ভালো ধুনুচি নাচে। আমি শুনেছি। তবে দেখার সৌভাগ্য হয় নি ।আজকে সেই মনের আশা পূর্ণ করব।'
শিখা মনে মনে ভাবল ও তার মানে একটু ওয়েট বাড়ানো হচ্ছিল ।ঠিক আছে।
সবাই যে যার মত হাসি ঠাট্টাতে মগ্ন। শিখার বৌদি শিখা আর কল্যাণকে লক্ষ্য করছিল। শিখাকে সত্যিই যেন গ্রামেতে একটু অন্যরকম লাগছে। একটু খুশি খুশি লাগছে ।সেই উদাসী বাউল মনটা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারছে ।ওর দাদাকে ধাক্কা দিয়ে বললো  'দেখ শিখা আর কল্যান কিরকম পরস্পর পরস্পরের দিকে তাকাচ্ছে ।
শিখার দাদা বললো  'ভালোই তো খারাপ কি?'
হঠাৎ শিখা পুজো মণ্ডপ ছেড়ে বাড়ির ভেতরের দিকে গেল ।
মাধু বলল  'কিরে কোথায় যাচ্ছিস?'
 শিখা বলল  'একটু আসছি  বৌদি।'
কল্যান যেন ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
একটু পর কল্যাণ বাড়ির দিকে পা বাড়ালো।
 মাধু বলল ' তোমার আবার কি হলো ?'
কল্যান বলল 'আমিও একটু আসছি বৌদি।'
শিখা চোখে মুখে জল দিয়ে ড্রইং রুমে এসে দেখে কল্যান বসু বসে। শিখা যেন ভূত দেখার মত দেখল।
কল্যান নিজে যেচে পড়ে ও জিজ্ঞেস করল  'আপনি উঠে আসলেন কেন? শরীর খারাপ লাগছে?'
শিখা বলল  'একটু দরকার ছিল।'
কল্যান বলল ' ভাবলাম কোন কারনে রাগ হয়েছে কিনা?'
শিখা বলল-'কেন? কার প্রতি রাগ হবে?'
কল্যান বলল ' আমি গেস করেছিলাম।
ঠিক আছে ।তাহলে চলুন পুজো মণ্ডপে।
শিখা বলল  'না, এখন  যাব না।  আপনি যান।'
কল্যান বলল ' এখানে নতুন আমিও তাই, নতুন বন্ধু দুজন একসঙ্গে না থাকলে ভালো লাগে বলুন তো?'
শিখা বলে' কেন ,এটা তো আপনার দিদি জামাইবাবুর‌ বাড়ি।আপনি নতুন কেন ?আপনি আসেন নি এর আগে? কল্যান বলল 'অনেক আগে একবার এসেছিলাম ।দীর্ঘদিন পর আসলাম।
কল্যান বল ল 'চলুন না।'
আপনি আমাকে এত জোরাজুরি করছেন কেন।
কল্যান বলল একটা সত্যি কথা বলবো? আপনি থাকলে ভালো লাগবে।'
শিখার কথাগুলো শুনে গা শিউরে উঠলো। এ কথা তো এর আগেও শুনেছে । কিন্তু অন্য রকম অনুভুতি হচ্ছে কেন?
কল্যাণ বলল  'কিছু বলছেন না?'
আপনাকে কিন্তু লং লালচে স্কার্টে  দারুন লাগছে।
থ্যাঙ্ক ইউ।(শিখা বলল)
কল্যাণ বলল 'দাঁড়িয়ে কেনো?বসুন না?'
শিখা বলল  'আপনি চলে আসলেন যে, পুজো মণ্ডপে যান। '
কল্যাণ বলল 'এখন ভালো লাগছে না পূজা মন্ডবে যেতে।'
শিখা বলে ' তাহলে আপনি বসুন। বই পড়ুন ।আমি আসি।'
কল্যান বললো  ,'আরে, যাই মানে?আমি তো .. এরই মাঝে এসে মাধু বলল  'কিরে শিখা ,তোদের সবাই মণ্ডপে খোঁজ করছে, চলো। '।
কল্যাণ ভাবল ভাগ্যিস বৌদি চলে এসেছে ।কথাটা কি করে বলতাম যে,পুজোমণ্ডপে যাব। হ্যাঁ, এই তো যাই।'
এখন দুপুরের খাওয়া-দাওয়া পর্ব। চল না আশুদা তোমাদের দেবে?'কল্যান বলল 'কেন বৌদি আমরা কি করেছি?'পরিবেশনের দায়িত্ব পড়বে চলো।'
কল্যান হো করে হেসে উঠলো।মাধু বলল ' এখানে সপ্তমীর দিন খিচুড়ি ,আলুরদম ,একটা চচ্চড়ি ৫ রকমের ভাজা,চাটনি,পায়েস হয়।'
আশুদা কল্যাণের হাতে ধরিয়ে দিলো খিচুড়ির বালতি আর শিখার হাতে ধরিয়ে দিলো ,৫ রকমের ভাজা পাত্র।
খাওয়া দাওয়া মিটতে মিটতে ৫টা বেজে গেলো  ফ্রেশ হয়ে সন্ধ্যেবেলার পুজো আরোতি। ধুনুচি নাচ। মহিলাদের লাখ বাজানোর প্রতিযোগিতা।')

সবাই ফ্রেশ হয়ে পুজোমণ্ডপে হাজির ধুনুচি নাচ আর শাখ বাজানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল ।
 মাধু বলল 'খুব সুন্দর ধুনুচি নাচে কল্যা।, মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছিল সাদা ধবধবে পায়জামা-পাঞ্জাবি তে দারুন লাগছিল কল্যাণকে।:

শিখা দিব্যেন্দুর সঙ্গে সপ্তমীর দিন শুধু প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে কিন্তু একটি পুজোমণ্ডপে থেকেও যে এতটা আনন্দ করা যায় ,ঠিক গ্রামীণ ঘরোয়া পরিবেশে না আসলে কল্পনা ও করা যেত না ।বারবার মনে মনে বৌদি ভাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাল। তারপর চলে পুজোর মন্ডপে  গানের আড্ডা। শিখাকে প্রথমে গানের জন্য অনুরোধ করলো  ।
মাধু বলল ' শিখা তো ভালো গান করে ।আজকে না করে কোনো ছাড় নেই ।করতেই হবে।
 শিখা গান ধরে 'এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়। একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু ...? 
সবাই আপ্লুত হয়ে গেল ।কল্যান মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইল শিখার দিকে। শিখার চোখ পড়তেই লজ্জা পেয়ে গেল । 'এ যেন চোখে চোখে কথা নয় গো বন্ধু ।আগুনে আগুনে কথা।'
মাধু বলল  'অনেক হয়েছে এবার সভা ভঙ্গ ।কালকে আবার সকাল বেলায় অষ্টমীর অঞ্জলি আছে। সুতরাং আজকে আর নয় ।এবার খাওয়া দাওয়ার পর্ব সেরে যে যার মতো শয়নে'।
রাত্রিতে একবার কিসের টানে ড্রইংরুমে শিখা আসে এবং দেখে  কল্যান দাঁড়িয়ে জানলার কাছে ।যেন শিখার জন্য ই  অপেক্ষা করছিল ।
কল্যান বলল ' অপূর্ব !অপূর্ব !আপনার কন্ঠ বাঁচিয়ে রাখুন ।আপনি তো শিল্পী মানুষ ।অনেক কিছু দিতে পারবেন ।
শিখা বলল 'আগে করত এখন তো ছেড়েই দিয়েছে ।'।
কল্যান বলল 'ছেড়েছেন কেন ?শিল্পীসত্তা যদি চলে যায় ,তার নিজস্বতা কি থাকে? আপনি গান করবেন ।আপনার গানের গলা খুব সুন্দর । '
শিখা 'থ্যাঙ্কস জানায়।'
 কল্যান বলল ' অষ্টমীর অঞ্জলি আছে ।দেখা হবে কাল মণ্ডপে ।'
শিখা বলল  "কেন শুধু মণ্ডপে দেখা হবে কেন আর কি দেখা হবে না বলে শুধু হাসলো।'
উদাসী বাউল এর চোখে তাকালো শিখার দিকে এবং মুচকি হেসে বেরিয়ে গেল।
শিখা রাত্রিতে শুতে গিয়ে কল্যাণের কথাগুলো ভাবছিল ।সত্যিই তো ,দিব্যেন্দু কখনো এভাবে জোর করে নি  গানের জন্য। কথাগুলো যেন একটা মনের ভেতরে অসম্ভব টান অনুভব করছিল ।কখন সকালটা হবে ?কোন কিছুর জন্য একটা প্রত্যাশা মনের ভেতরে রয়েছে। মনে হল যেন আজকের রাত্রি সত্যি সুন্দর। বৌদি হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে বলল   'শিখা এখনো ঘুমাস নি ?কালকে কিন্তু অঞ্জলি আছে ।সকাল সকাল উঠতে হবে ।বুঝতে পারছিস তো বাড়িতে প্রচুর লোক বাথরুম পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে ।ঘুমিয়ে পড়।
ওদিকে কল্যাণের মনের মধ্যে সব সময় যেন মনে হচ্ছে একটা অস্থিরতা ভাব ।কোন কিছুকে দেখবার জন্য বারবার মনটা আনচান করছে। আগে কখনো তো এরকম অনুভব হয় নি।


ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"২৮ক্রমশ

সজল কুমার মাইতি




স্মৃতির টান

মনে পড়ে ছোটোবেলায় যখন সকাল ইস্কুল থাকত। আমরা 
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়তাম। চোখে তখনও ঘুমের
রেশ কাটেনি, কৌটৌয় মুড়ি নিয়ে সঙ্গে কোনদিন বাতাসা কোনদিন 
ছোলা। প্রায় দৌড় লাগিয়ে ইস্কুল পৌঁছে যেতাম। টিফিনের সময় 
দল বেঁধে কৌটৌ খুলে টিফিন খেতে বসে যেতাম। ছুটির পর বাড়ি
 ফিরে বইব্যাগ ইস্কুল ড্রেস ছেড়ে দৌড়ে পুকুরের পাড়ে বটগাছের 
লম্বা ডালে উঠে বসতাম। সঙ্গে থাকতো টক ঝাল মিষ্টি আচার। ডাল 
থেকে একে একে ঝপাঝপ লাফ দিতাম আমাদের বড় পুকুরে।
চলতো ঘন্টার পর ঘন্টা জলকেলি। কখনো সখনো বাবা কাকাদের 
বকুনিতে লাল চোখে দৌড়ে হাজির হতাম ভাতের থালায়। বিকেলে 
মাঝেমধ্যে খুড়তুতো দাদা ভাইদের সঙ্গে ছিপ নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম।
 মাঠে মাছ ধরতাম। চ্যাং ল্যাটা, কখনও ভেটকি ও উঠতো। বেশি 
সময় থাকতো কেবল চ্যাং মাছ। ছিপে মাছ পড়লে কি আনন্দ সবার। 
নতুন উদ্যমে আবার ঝাঁপিয়ে পড়তাম। মাঝে মাঝে ভাইদের সঙ্গে আমাদের
বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটা ছোট নদী আছে। সেখানে যেতাম লম্বা 
সূতোয় বঁড়শি বেঁধে সেই নদীর জলে ফেলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতাম।
কখনো দু একজন লোক যেত নদীর ওপার দিয়ে। অথবা জেলে জাল ফেলতে 
ফেলতে এগিয়ে যেত। কখনও দু একটা মাছ পড়তো কখনও বা শূন্য হাতে ফিরতো। 
শূনশান এই জায়গায় জেলেদের ছোটো ছোটো কুঁড়েঘর এদিক ওদিক ছড়িয়ে
ছিটিয়ে আছে। পরতে পরতে তাতে দারিদ্র্যের ছবি আঁকা। সন্ধে হলেই জায়গাটা
কেমন গা ছমছম করে। তখন দৌড়ে বাড়ি ফিরে আসি। নদী কিন্তু কলুকুলু রবে
 বয়ে যায়। তার তো ছুটি নেই! সেই নদী দিয়ে কত জল যে বয়ে গেছে। কত বসন্ত 
পেরিয়ে গেছে। কত আত্মীয় স্বজন হারিয়েছি। কত হাসিকান্না, কত সুখদুঃখ 
আজ অতীত। আজ প্রৌঢ়ত্বে অর্থ আছে সুখ নেই, প্রাচূর্য আছ শান্তি নেই, 
অহংকার আছে ঔদার্য নেই। শুধু অশান্তি, অ-সুখ, হিংসা আর আছে দারিদ্র্য।

আমিনা তাবাসসুম





গড গিফটেড 

 

অনন্ত অন্ধকারের পরে এই আলো

পচা শশা, নগ্ন কলিজা, বিমূর্ত অবিশ্বাস
ক্রমশই ধোঁয়া হয়

ঈশ্বর নেমে আসেন এই বিছানায়
কাচের সিঁদুরে তখন ছটফট করে
                       যন্ত্রণা, অবজ্ঞা, উদাসীনতা

আসলে কোনও জন্মই আমার একার না
এবং
"আমি" বলে কোনো শব্দ নেই

এখন সময় অপেক্ষায় আছে
কারণ সেও জানে
        তুমি লাল কালো চাঁদ নও

তবু বুকের ভেতর ধকধক করে একটাই শব্দ
                                       গড গিফ্টেড!

রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ




আগুন



ব্লাকবোর্ডে ঢলছে চিত্রের কল্পনা
দৃশ্যের আঁচড়ে ভাবনার ডগায়
খুঁটছে বাঁশ কোড়ল...

অলীক ঘাসে নির্মিত সংকল্প
ছুঁয়ে আছে বিচ্ছিন্ন আগুন

নিঘাত করিম




নীরবতা


আমরণ স্তব্ধতায় আমি ঠিক নীরব হয়ে যাবো 
একেবারে নীরব , স্তব্ধ 
সূর্যোদয়ের মতো
নিঃশব্দে গড়িয়ে পড়া শিশিরের মতো
কোন বাক্য আর নিঃসৃত হবে না 
আমার কণ্ঠে
যেসব কথা শ্রুতিকে আলোড়িত করে
মধুর শব্দমালা যাতে হৃদয় উদ্ভাসিত হয়
আমার কোন কথায় বা শব্দে আর ঝরে পড়বে না ভালোবাসার বাক্য
আর কোনদিন সরব হবো না ঘুণাক্ষরে 
একেবারে নীরব হয়ে যাবো
সন্ধ্যার মতো গোধূলির মতো
আঁধারে ঢাকা রাতের মতো 
আমি আবার ঠিক নীরব হয়ে যাবো
আগের মতো যখন আমার দিনগুলো ছিলো নির্জন নীরব শান্ত চাঁদের মতো !

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক গল্প




                                                               অলিখিত শর্ত 
                                                                                   (পর্ব)
                                                                 শামীমা আহমেদ
                                                                    শায়লা শিহাব কথা

            
                                      শিহাব এক ঝটকায়  শপিং ব্যাগগুলো নিজের হাতে নিয়ে নিলো, শায়লা কিছু বুঝে উঠবার আগেই! ক্যাশ কাউন্টারে পেমেন্ট সেরে ক্রেডিট কার্ডটি ওয়ালেটে রাখতে না রাখতেই আচমকা এটা ঘটে গেলো! শায়লা বেশ অপ্রস্তুতই হলো! কারণ শপিংগুলো তারই ছিল। শিহাব বললো," চলো তোমাকে এগিয়ে দেই।" দুজনে নীরবতায় ধীর পায়ে লিফটের দিকে এগিয়ে যায়।শিহাবের এই কেয়ারিং দিকটিতে শায়লা বেশ আনন্দিত হয়। যে কোন ধরণের সহযোগিতায় সশরীরে না হলেও ফোনে চটজলদি সমাধান বাৎলে দিবে।এমন একজন কেয়ারফুল পার্সন কার না কাঙ্ক্ষিত! যখন একজন কেয়ারলেস লাইফপার্টনারের সাথে শায়লা দিন কাটাচ্ছে।তখন এধরণের প্রাপ্তিটাতো হঠাৎ বৃষ্টির মতই মনটাকে ভিজিয়ে দেয়। একটা চাপা আনন্দে পুলকিত হয় শায়লা! এই সময়টাকে তাই সে জীবনের পরম প্রাপ্তির একটি সময় ভেবে নিল।
শিহাবকে শুধু কিছু জেন্টস এক্সেসরিজ পছন্দ করে দেয়ার জন্যই শায়লা আসতে বলেছিল। শিহাবেরও এদিকটায় একটা কাজ পড়ে যাওয়াতে শায়লার অনুরোধে সে একেবারে চটজলদি রাজী হয়ে গেলো। দুজনের দেখা করার সময়টা খুব একটা মেলে না। কর্মক্লান্ত দিনের শেষে শিহাব যখন ঘরে ফেরে শায়লার যেন তখনই বাইরে বেরুনোর একটু অবসর মেলে।সুপার শপে প্রাত্যহিক কেনাকাটা কিংবা বাসার কাছের পার্কটিতে এক বিকেল হাঁটতে যাওয়া, প্রয়োজনে  ধারে কাছের পার্লারে নিজেকে একটু ফ্রেশ করে নেয়া। আজ যেন কাকতালীয়ভাবে সময়টা মিলে গেছে! যদিও অনেকদিন শায়লার অনেক অনুরোধ থাকে একটু দেখা করবার জন্য কিন্তু  শিহাব নানান অজুহাতে তা এড়িয়ে যায়। তবে আজ যেন শিহাব বেশ আগ্রহ দেখিয়েই চলে এলো।হয়তো একটা দায়িত্ববোধ কাজ করেছে। অনেকভাবেই শিহাবের এ দিকটির প্রমাণ পেয়েছে সে।
শায়লা অপেক্ষা করছিল শপিং মলটির সামনে। উৎসুক চোখে শিহাবকে নয়, শিহাবের বাইকটিকে খুঁজছিল আর অবশ্যই সেখানে  চোখে সানগ্লাস  সেঁটে দেয়া একজন  সুদর্শন ব্যক্তি থাকবে সে ব্যাপারে শায়লা একেবারে নিশ্চিত ছিল। আসলে শিহাবের সাথে  প্রথমদিনের সেই  দেখা হওয়ার  দৃশ্যটা শায়লার মনে একেবারে গেঁথে গেছে। প্রায়শঃই স্বপ্নেও সে দেখে সে মুখখানি। কালচে নীল শাড়িতে শায়লা টি স্টলটির সামনে অপেক্ষায় ছিল। জিন্স শার্টের নীল রঙ আর শিহাবের শুভ্র মুখখানি যেন শরতের এক টুকরো আকাশ! শায়লা মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল।তবে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে শিহাবের এই দর্শন দেয়া।শর্ত ভঙ্গ হলে সে নিজেকে গুটিয়ে নিবে চিরতরে।সব শর্ত মেনে নিয়ে উৎসুক শায়লা শুধু একবার তাকে দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিল।---এইসব নানান ভাবনায় ডুবে থেকে শায়লা কেন বা কোথায় দাঁড়িয়ে আছে তা একেবারে  ভুলেই গিয়েছিল। হঠাৎ সম্বিত ফিরে এলো!ঘড়ি দেখলো শায়লা। চারটা বিশ। এতক্ষনে তো শিহাবের চলে আসার কথা!  তক্ষুণি মোবাইল ফোন বেজে উঠল, শিহাবের কল,,কী হলো কোথায় তুমি? 
এইতো শপিংমলের ফোয়ারাটার সামনে দাঁড়িয়ে।তোমার জন্য অপেক্ষায়। 
---কি বলো? আমিতো সেই কখন থেকে 
ফেব্রিক্স শপের ফ্লোরে চলে এসেছি।
আহ! তাহলেতো আজ শিহাবের বাইকে আসার দৃশ্যটা মিস হয়ে গেলো!
শায়লা খুব দ্রুত লিফটের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। উফ! লিফট ওপরে উঠে গেছে।শপিং মলটি ষোলতলা। একেবারে টপ ফ্লোরে ক্যাফে,খানাপিনা আর আড্ডার জায়গা। টেইলারিং এন্ড ফেব্রিক্স  শপটি আটতলায়।
শায়লা রাতেই জানিয়ে রেখেছিল শপটির কথা।সেটা সে একেবারেই ভুলে বসে আছে। 
শিহাব আবার এসব ক্ষেত্রে ভীষণ পাংচুয়াল।
লিফট নেমে এলে শায়লা উঠে গিয়ে নাম্বার এইট বাটনে প্রেস করলো। ভেতরে কেমন যেন একটা ভালোলাগা অনুভুতি।শায়লা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না কেন এমন করে দিনগুলো এগুচ্ছে? দিনে দিনে শিহাবের প্রতি নির্ভরতা বাড়ছে।অবশ্য শিহাব এ ব্যাপারে একেবারেই নির্বিকার। শুধুমাত্র একজন পরিচিত মহিলা কোন সাহায্য চেয়েছে সে কারণেই তার এগিয়ে আসা।কি জানি শায়লা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না অচেনা একজন মানুষ হঠাৎ পরিচয়ে  কিভাবে এতটা আপন হয়ে উঠতে পারে!
লিফট আট তলায় এসে থামতেই দরজা খুলে গেলো। সরাসরি শপটিতে তাকাতেই শিহাবকে দেখতে পেলো।দারুণ হ্যান্ডসাম লাগছে তাকে।পরনে কালো শার্ট সাথে কম্বিনেশনে ঘি রঙা প্যান্ট আর চোখে সেই কাঙ্ক্ষিত  সানগ্লাসটি সেঁটে দেয়া। অবশ্য আজ পর্যন্ত সানগ্লাস খুলে কথা বলেনি শিহাব। নাহ, তাকে দেখতে  চাওয়াটা মিস হয়নি।শায়লা এগিয়ে গেলো। শিহাব খুব মাপা হাসিতে শায়লাকে ওয়েলকাম করলো।কেমন আছো কিংবা অবান্তর কোন গল্পে সময় ব্যয় করার মত ব্যক্তিটি তিনি নন। মেয়েদের সাথে গায়ে পড়ে কথা বলার স্বভাব তার একেবারেই নেই।শায়লা এর আগেও লক্ষ্য করেছে শিহাবের মুখে এক ধরনের বিষন্নতার ছাপ।না, কখনো কিছু জানতে চাওয়া হয়নি। ঐ যে, মেপে হাসি আর মাপা কথায় যেটুকু জানিয়েছে শুধু সেটুকুতেই সন্তুষ্ট আছে শায়লা। আর এমন কোন অধিকার পাওয়া হয়নি যে সবকিছু জানতে চাওয়া যাবে।তবে এদিক দিয়ে শায়লা তার উল্টোটায়।সবকিছু বলতে পারলেই যেনো হালকা হয়।এজন্যই হয়তো মেয়েদের পেটে কথা জমে থাকে না।
শিহাব জানতে চাইলো,  কী ধরণের কাপড় সে কিনতে চাইছে? ছেলেদের কাপড় কেনার কোন অভিজ্ঞতা শায়লার নেই।ছোটবোনটির বিয়ে হয়েছে ছয় মাস হতে চলেছে। শীত আসি আসি করছে।মা চাইছে জামাইকে একটা কম্পলিট সুটপিস পাঠাতে।

শায়লাকেই তা কিনতে হবে আর এব্যাপারে শায়লা শিহাবের সহযোগিতা চাইতেই শিহাবের সম্মতি মিলেছে।নয়তো একটা দুপুর কিংবা একটা বিকেল শায়লাকে সময় দেয়া কোনদিনই তার হয়নি, শায়লার শত  অনুরোধ উপেক্ষা করে শিহাব নিজের বাসায়তেই ফিরে গেছে।তাইতো আজ দুপুরের ঝকঝকে রোদে শায়লা  নিজেকে একজন সুখী মানুষ ভেবে নিলো।



                                                                                                                 চলবে....

রহমান মিজানুর




গাধা ও বলদ


গাধা বলে বলদেরে ডেকে মিয়া ভাই
এ ভূবনে তুমি বিনে আত্মীয় নাই।
আমি ভারী বোঝা বই, তুমি টানো ঘানি
কতো ব্যাথা বুকে চেপে সেতো আমি জানি।
তবু কিছু ভালো আমার জীবনের ধরন
বুড়ো হয়ে মরি আমি; স্বাভাবিক মরন।
কি যে পরিনতি তোমার বুড়োকালে হায়,
মানুষেরা কেটেকুটে ঘটা করে খায়!
মৃদু হেসে বলদে বলে ছোট ভাই,
যা বলেছো ঠিক কথা; সন্দেহ নাই।
তবে কিনা এ দুনিয়া অস্থায়ী জানি-
পরকালে সুখ পাবো; এই কথা মানি।
তাই দুখ সয়ে সয়ে করে যাই সেবা,
পরোপকার না করে বড় হলো কেবা?
উপকার করি বলে গালাগাল শুনি
প্রাণ দেই, না হয়েও আমি ঋষি-মুনি।
'বলদা' বলে যারা আমারে দেয় গাল
তাদের না হয় যেন করুন এই হাল।
মানবের তরে আমি যদিও বা মরি, 
তবু তারা সুখে থাক, এই দোয়া করি।

ইয়াসমিন রাহমান শিউলি




পূর্ণিমার আলো তোমরা


তোদের ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে চাই না আমি,
তোমরা ছাড়া জীবন আমার শূন্য মরুভূমি।
 তোমরা ছাড়া মা লাগেনা আমার একটু খানি ভালো।
তোমরা যে আমার আঁধার ঘরের পূর্ণিমার আলো।

জীবন যুদ্ধ তোরাই জন্য, 
তোদের নিয়েই আশা,
তোমরা আমার স্বপ্নের নীড়,
আশা ভালোবাসা।
তোদের কিছু হলে আমার প্রাণ পাখি যায় উড়ে,
তোদের ছাড়া বন্দী জীবন নিগূঢ় অন্ধকারে। 

সারাজীবন থাকিস রে বাবা মা
 দেশ ও দশের সেবায়, 
থাকিস রে বাবা  মা ন্যায়ের পথে
জড়াসনে মা কান্নায়। 
সৎ পথ যদি হয় বাবা মারে,
তোদের জীবনের সাথী, 
ভুলিস না মা কষ্ট আমার,
জলাঞ্জলি দিস না কভু নীতি।

ইকবাল বাহার সুহেল ( ইংল্যান্ড )




অবাঞ্ছিত কথাকাব্য


একটি কথা কি জানো 
আমিই আমার সব লেখার অনিবার্য পাঠক !

অবাক হইনি তোমার প্রতীচ্য পুরাণ পাঠে ! কালি, কলম, মন কষ্ট শরীরের, মনের নয় সেতো জানি  

প্রেমের সহবাসে তোমার "উছৃঙ্খল জীবনের পেছনেই কি ছিল আলোর আভাস" ওই লাইনটা ঘুরেফিরে বারবার ভাবি !

তোমাকে একবার পাইবার পর, নিতান্তই মাটির মনে হবে না জানি ! মনে হবে না তুমি সেই সোনার মোহর’ খানি ..

মানুষ এমন ভাবে বদলায়া যায়, ক্যান যায় জানো ?
পুন্নিমার চান হয় অমাবস্যা সাধের পিনিস ক্যান জানো ! রঙচটা রদ্দুরে মন শুকায় ক্যান জানো ..

বেশ্যাকে বসাইয়া কোলে মিয়াভাই, কী জিগান জানো ? হাবিজাবি, বাতি নিবায়া দিমু নাকি থাকব কতক কন ! কেন জিগান জানো ?

আমি কবি নই যে জন্মে জন্মে বারবার কবি হয়ে ফিরে আসব এই বাংলায় , জন্মে জন্মে যেন কবি হয়ে জন্ম নিই এই বাংলায় !

যে চোখ কাঁদে, সে চোখ ভিজে যায় ভেসে যায় ! অতঃপর কবির চোখ আবারও কাঁদে ,চোখও কাঁদে, অবিরাম ভিজে আসে, ভেসে যায় ভেসে যেতে থাকে। অতঃপর এই কথাকাব্য পড়ে , এই কথাকাব্য পড়ে তুমি যদি মুগ্ধ, গ্রস্ত, সমাহিত, নিমজ্জিত বোধ কর তবেই আমি সার্থকতা পাবো !

মোঃ হা‌বিবুর রহমান



সম‌য়ের চাকা



নদীর স্রো‌ত আর বিদ‌্যুত গ‌তি‌তে যেন সময় চ‌লে যায়,
বৈদ‌্যতিক পাখার গ‌তিটা স্ম‌রি‌য়ে দেয় সম‌য় হা‌তে নাই।
সময় গত হয় দি‌নের আ‌লো নি‌ভে যাবার সা‌থে সা‌থে,
দিন রা‌তের নিত‌্য প‌রিবর্তনে সম‌য়ের চাকা‌টি ঘো‌রে।
প্রতি‌টি নিঃশ্বাস প্রশ্বা‌সে সময়ের হি‌সেবটি মাপা যায়,
দি‌নে ভাবনা আর রা‌তে স্ব‌প্ন দেখে সময়‌টি চ‌লে যায়।
আষা‌ঢ়ে গ‌ল্পে মূল‌্যবান সময় ‌নিশ্চু‌পে হা‌রি‌য়ে যায়,
দিন, সপ্তাহ, মাস ও বছর পে‌রি‌য়ে সময় চ‌লে যায়।
জীবন এভা‌বেই শেষ হ‌য়, মানুষ হা‌রি‌য়ে যায় চিরত‌রে,
ফেরে না তারা কভু ওপার গন্তব্যের চিরন্তন পথ হ‌তে।
সম‌য়ের চাকার আবর্তনে ধী‌রে ধী‌রে সবই ঘ‌টে যায়‌,
সময় চ‌লে গে‌লে ফি‌রে পাওয়া যায় না কভু তা আর।
সময় এভা‌বেই ব‌য়ে যায়, জীবন এক‌দিন হা‌রি‌য়ে যায়,
মানু‌ষের মু‌খের সুমি‌ষ্ট কথা ও স্মৃ‌তিকথা শুধু র‌য়ে যায়।

রুকসানা রহমান এর ধারাবাহিক উপন্যাস "উদাসী মেঘের ডানায়,

 চলছে নতুন  ধারাবাহিক  উপন্যাস "উদাসী মেঘের ডানায়
লেখাটি পড়ুন এবং অন্যদের  পড়তে সহযোগিতা করুন  লেখককের মনের অন্দরমহলে জমে থাকা শব্দগুচ্ছ একত্রিত হয়েই জন্ম  লেখার। 
আপনাদের মূল্যবান কমেন্টে লেখককে  লিখতে সহযোগিতা করবে। 





                   উদাসী মেঘের ডানায়      
                                                                                                      পর্ব তেরো


অফিস ছুটি হবার,সময় হয়েছে সামিয়া সব গুছিয়ে
বের হবে এমন সময় সৈকতের ফোন, রিসিভ করতেই
বললো- তাড়াতাড়ি বাসায় যেয়ে রান্না করো আমার তিনজন বন্ধু ওদের  বউ নিয়ে আসবে রাতে খাবে
সকালে নাস্তা করে তারপর যাবে।
সামিয়ার মুখটা শুকিয়ে গেলো ভয়ে আজ কয়দিন
ওর র্শরীরটা ভালো যাচ্ছেনা, সৈকত জানে তবু ও
দাওয়াত দিলো কাল তো শুক্রবার দুপুরে বললে কি হতো।  
কি আর করা বাসায় ফোন করে বুয়াকে সব গুছাতে বলে ফোনটা রেখে দিলো।
বাসায় এসে আর শাড়ি পাল্টানো হলোনা হাত মুখ ধুয়ে,সোজা রান্না ঘরে ঢুকলো পাচঁ ছয়টি আাইটেম শেষ না হতেই সৈকত বন্ধুদের নিয়ে বাসায় এসেই
চায়ের অর্ডার দিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে ড্রইংরুমে ঢুকলো।
সামিয়া চা,নাস্তা দিয়ে একটু কথা বলে নিজে চলে এলো শাওয়ার,নিতে।
ড্রইংরুমে এসে দেখে ভাবিরা সহ তাস খেলায় ব্যাস্ত
ও ওর রুমে চলে এলো বুয়াকে ডাইনিং  টেবিলে
প্লেট গ্লাস সব গুছিয়ে দিতে বলে।
রাত,এগারেোটার সময় সবাই ডাইনিংএসে খেতে বসলো। ডিনার সেরে আবার চায়ের পর্ব চলতে চলতে
তাস নিয়ে বসলো। 
আজ সারারাতই চলবে শরীরটা খারাপ লাগছে বুয়াকে ঘুমাতে বলে সৈকত কে বললো
ও বেডরুমে  চা লাগলে যেনো ডাকে।                   
পরদিন সকালে এক ভাবে বমি করছে সামিয়া সারাশরীরে রেশ বের হয়েছে আর পারছেনা বড়আপা,কে ফোন করে জানালো বোন এসে বিকেলে
ডাক্তারের কাছে নিয়ে,গেলো।
ডাক্তার রোগী দেখেই বললো মারাত্মক জন্ডিস ভর্তি
করাতে হবে হাসপাতালে সেলাইন দিতে হবে আর কিছু টেষ্ট করাতে হবে।
বড়আপা ভর্তি করিয়ে,সাগরকে জানালো সাগর রেগে
বললো -জন্ডিস হলে হাসপাতালে ভর্তির দরকার ছিলো আমার সংসার,বাচ্চাদের কে দেখবে
বড়আাপা- আমি দেখবো ঠিক আছে।
তিনদিন ধরে রোজই অফিস থেকে হাসপাতালে এসে
সামিয়াকে আখ খাওয়ায় সবার সামনে।
সবাই চলে গেলে বলে -ডাক্তার কে বলো ছেড়ে দিতে
নয়তো ডিভোর্স দিবো বলে।
সামিয়া অবাক হয়ে,মুখের দিকে তাকিয়ে,থাকলো।
রাতে প্রফেসার এলো বললো সামিয়া বাসায় যাবার,কথা বলতেই বললো,- কিভাবে যাবেন আপনার বিলোরোবিন এখনো হাাই,ছাড়া যাবেনা।
পরদিন সেই,একই ঘ্যানঘ্যান আজও বললো যখন
 ডাক্তার সাহেবকে বললো যান তবে সমস্ত রিপোর্ট ডাক্তারের কাছে,থাকবে সুস্থ্য না হওয়া পর্ষন্ত
তাই রাজি হলো সামিয়া বাসায় চলে এলো। 
সামিয়া আস্তে আস্তে সুস্থ্য হলো বড়আপা চেকআপে
নিয়ে যায় বিলোরোবিন নিল হওয়ার,পর ডাক্তার সাহেব রিপোর্ট সব বুঝিয়ে দিলো।
সংসারে ঝগড়া,মান অভিমান কত কিছুই হয় সামিয়ার
জীবন ইটের দেয়ালের ভিতর যেনো কালো এক ইতিহাস যা আঁধারেই থাকবে কেউ জানবেনা দেখবেনা এসব নাটকীয়তার গোপন গল্প কথা।
চলবে...