কবির বারান্দা
মুক ও বধির হয়ে থাকি...
যেমন ওই গাছ, ওই শীতল প্রাচীর,
ঠাণ্ডা জলের মতন অতল ছুঁয়ে আছি
আর কী নেবে
খুব শান্ত ও ধীর আমাদের চাষাবাদ
খাদানের ভেতর নেমে আসি
ওই আমাদের শস্যবীজ
ওই আমাদের অনন্ত কাঁচা মাটির গন্ধ
ওই আমার শস্যদেবী পাথর হয়ে গিয়েছে
এখন মাঠের মধ্যিখানে খেলা করছে সার্কাস বালক
রিং নিয়ে, ঘোড়া নিয়ে, প্রাচীণ দড়ির ওপর
আর কুচকুচে কালো বুক ফুলে আছে
হাসি লেগে আছে ঠোঁটের সমস্তটায়
এতটাই চঞ্চল সে, পৃথিবীটিকে হাতের ওপর নিয়ে
ঘুমন্ত মানুষের মতো ক'য়েকবার ঘুরিয়ে দিল
এইসব তোমার গোচরে আসে না
তবলার স্থির তালের ভেতর
আস্তে-আস্তে চাঁদের দু'পিঠ পরিক্রমণ করলে এক্ষুণি
এতটা-ই আস্তে, যেন মাথা থেকে পা-বেয়ে
একটি-একটি করে সরীসৃপ যাতায়াত করল
এবং তুমি কিছুই টের পেলে না মুহূর্তের জন্যেও
মুক ও বধির এই বিদ্যানিকেতনে
কেন যে কোনও ব্ল্যাকবোর্ড নেই, নৌকো নেই…
শুধু একটি ব্ল্যাকহোল, যে-যেমন আসে
আর তেমনি চলে যায়
কবিতার মুক্তির পথের দিকে
কবির তর্জনী নির্দেশ করা...
এইভাবে কবির কলঙ্ক জমা হয়
আত্মা ও পরমাত্মার মাঝের বারান্দায়
কবির সার্কাস বালক ঘুমকে সিলিংয়ে টাঙিয়ে
ট্রেনের হুইশেল আর দেয়াল ঘড়ির শব্দ গুনছে
রাত্রি পৌঁনে চারটেয়...