পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অন্তর্জাল ১ম সংখ্যা

ছবি

সমীরণ ঘোষ

কৃষ্ণগহ্বর যা কিছু ছড়ানো আলো ফিরে আসছে আমার ভেতর ক্রমে ক্রমে সংকুচিত, আমার ভেতর এই আমি,কৃষ্ণপরিধি মহাশূন্যের কোলে একা ঘুমিয়ে পড়েছি

মতি গাজ্জালী

হাঁটা ভুলে গেছি আমিও একা নই তুমিও একা নও তবু আমার সাথে কোনো পা হাঁটে না বরং তোমার হাঁটাও কেউ হেঁটে দেয় অথচ আমি নিজেও আজকাল হাঁটা ভুলে গেছি। কথা ছিলো এই মাটি সবার জন্য বুক পেতে রেখেছে আমার ভার বইতে মাটির কষ্ট তোমাকে বুক দেয় স্পষ্ট সবই কি তবে অদৃষ্ট না, ভাগ্যবানদের সৃষ্ট? কথা ছিলো একই কণ্ঠে গাইবো গান একই সুরের লয় তান কণ্ঠ আমার মিলছে না আজ তাই আমায় দিলে বাদ তবু জানাই সাধুবাদ সুর হারায়েও নেই কোনো লাজ। আরও আরও কতো কথা জন্ম থেকেই বিয়োগ ব্যথা শুনছি তোমার বিজয় গাঁথা হারালো আমার ছেঁড়া কাথা হারতে হারতে ন্যূব্জ আমি তবু হইনি বদ হারামি।

স্নিগ্ধসত্তা সুলেখা সরকার

ওজস্বল  পাখি উড়ে গেলে সে কখনো কখনো একটি পালক ফেলে যায়। সেভাবেই পড়ে থাকে আমার সাদা পৃষ্ঠায় কোন এক "ওজস্বল" নাম। কুড়িয়ে নেই না শুধু অপেক্ষা করি তৃতীয় ক্লীবের জন্য। অ... ছেড়ে আসা প্রেক্ষাগৃহে নাট্যদল, গভীর নাটকীয়তা...শকুন্তলার ভর্ৎসনা, আমিও দাঁড়িয়ে থাকি রাই হয়ে কোন সে যুগের যমুনার কূলে, সন্ধ্যা ফেলে যায় রাত, কালোরা ঘরে ফেরে, ক্রমে আমিও কালো হই। কালোকৃষ্ণ, কৃষ্ণরাই..... ধুৎ এসব ও যুগের কথা,  আমার প্রেমে ওজস্বী- হাওয়া চেটে দেয় গাল থেকে চিবুক, ছুঁয়ে দেয় নাক, পাহাড়ি পথে বয়ে যেতে যেতে,  চিমটি রেখে যায় পা-পাতায়। তোমরাও তো জানো এসব রক্ষণাবেক্ষণ,  না না শুনতে শুনতেও নিয়ে নাও অনেককিছু। অনেককিছুর পর তৃতীয় ক্লীব, ফিরে এসে হিসেব করে সবটা নেয়, জলপথ ওপরে তুলে নদীর বুক দেখে... শুধু আঁচড়ের দাগ, নামিয়ে রেখে জল, স্রোতে বয়ে যায় শেষটুকু নিয়ে,  সন্ধ্যা নেমে আসে, পাখি ফিরে যায় ঘরে, সাদা পৃষ্ঠায় সংখ্যা হয়ে থেমে থাকে রাই, মৃত পালক অক্ষর লেখে।

অনুপ কুমার মুখার্জী

ঘুম, ঘুম আসছে না ঘুম ঘুম যে হারিয়ে গেলো এই ক্লান্ত রাত্রির আঁধারে সে বলল ঘুমের গুলি খা আমি গুলি চালিয়ে দিলাম একজন বলল ইতিহাস এর দুঃখ করিস না আমি নিজেকে ইতিহাস থেকে বার করে নিলাম এক এসে বলল এক ঢোঁক খেয়ে দেখ আমি নিজেকে ডুবিয়ে দিলাম গেলাসে বয়স্ক একজন বলল হরি নাম জাপ কর আমি করে দেখে নিলাম আমি ঘুম  খুঁজতে থাকলাম খোলা চোখের পাতা থেকে মৃগ আর মৃগতৃষ্ণার খেলা অন্তহীন চলতে  থাকলো আমি স্বপ্নও দেখতে থাকলাম খোলা চোখের  তারা দিয়েই ঘুম আরো দূরে যেতে থাকলো চোখ বন্ধ হবার অপেক্ষা তে ঘুম আসবে নিশ্চয় আসবে সে এক দিন আর না হোক এক সন্ধ্যা তে আসছে সে জীবনের এক সন্ধ্যা তে আসবে সে চির বন্ধু বন্ধ করবে চোখের পলক শুষে নেবে সব যন্ত্রনা সব  ক্লান্তি সব দ্বিধা  নেমে আসবে নিদ্রার ঠান্ডা স্পর্শ ঘুম আসবে নিদ্রার কোলে ঘুম, ঘুম, ঘুম

আফজল আলি

সুখ তীরবর্তী         আমার কবিতাগুলো ওরকম ছিল না যেরকম তোমরা বলছো নদীচরে জেগে ওঠে ফাল্গুন মাস ২০১৭ সালেই আমি উন্মুক্ত  হলাম যখন মেঘ ডাকছিল খুব আর পিপাসা ছিল অতিরিক্ত আমি নামলাম কয়েকটি স্বরবর্ণ উদ্ধারে অন্যমনস্ক নিয়ে চলে দূরে কোথায়   ঢেউ তো ওখানেই আছে যেখানে ঘুম নিগ্রহ হয় মনের কথা আর কাকেই খুলে বলি মন তো মনের সাথেই লড়াই করছে ঘরে বেদনার প্রলেপ মাখতে চিনির সরবৎ খেয়েছি তবু শব্দযান এগিয়ে আসে বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ ওই সুখ- তীরবর্তী চায়ের কাপ অন্তর্বতী হল  , কাঁপছিল , যারা কাঁপছিল তারা সকলে ভাগ করে নিল            পাকা বেদনার কী দাম বুক স্থবির , আমাকে নিরুপায়ের ঊর্ধ্বে রাখে যদি কোনোদিন দেখা হয় , আমিও ভাগ করে নিতাম -   ওহে দুঃখ কারে কয়

অভিজিৎ রায়

আপেল বিষয়ক উত্তরপত্র নিতান্তই নিজের সাথে লুকোচুরি খেলছি।  আর, তারই মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ছি ক্লান্তিতে।  প্রতিটি শব্দ খুঁজে খুঁজে এনে সাজাচ্ছি অবসর।  তারপর নিজেকেই ঘাড় ধরে বলছি, 'ওঠ,' বলছি 'বোস'। নিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি নিউটনের আপেল মাটিতে পড়ে পড়ুক আমারটা যেন গাছে উঠতে পারে মাটি থেকে।  আমার আপেল যেন কামড়ের অপেক্ষায় থাকে চিরকাল কিন্তু আমি শুধু চিরকাল বই ঘেঁটে ঘেঁটে নিউটনের আপেলেই কামড় মারবো।  আমার আপেল আমার মস্তিষ্কের মতো অক্ষত থাক দেহে, মনে।  মানসিক বা শারীরিক যন্ত্রণা দিতে পারে যে সব দাঁত বা যে সব পিঁপড়ে তারা সেইসব উঁচু ডাল ছুঁতে পারবে না, যেখানে ঝুলিয়ে রেখেছি আমার নিজস্ব আপেল।  যদিও একদিন প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে সে আপেল পচে যাবে, যেমন গিয়েছিল নিউটনের। একদিন কাঠ-মাফিয়া কবিতার বেওসাতি করার লোভে সে আপেল গাছ কাটতে আসবে। নিউটন কিছু কবিতা লিখে ঝুলিয়ে রাখবে আপেলের গাছে আর আমি লুকোচুরি খেলব নিজের সঙ্গে, শব্দের সঙ্গে, আপেলের সঙ্গে, গাছের সঙ্গে, সবার সঙ্গে।  লুকানোর জায়গা পাবো না।  ধরা পড়ে যাব সবার চোখে।  আপেলের চোখে, নিউটনের চোখে, আপেলের কোষ আর মস্তিষ্কের কোষের চোখেও।

সমরেন্দ্র রায়

পাখি ও মানুষ  পাখিদের আবাস আছে, দেশ কাল থাকেনা। উড়ে উড়ে দেখে নেয় নয়াচর, নয়তো পূর্বপুরুষের আস্তানা। কিছুদিনের জটলা, মিলেমিশে একাকার। আদান-প্রদান, আঁকাবাঁকা ছুটোছুটি। যাওয়া-আসা সেরে নিরালায় রাতঘুম। এরা বোঝেনা এপার-ওপার, সমুখে চলে আদিগন্ত। ভোরের উড়ান এসে খুলে দেয় সীমানার দরজা। আমি শুনি ঘুঙুরের শব্দ ব্যাথাতুর প্রতিধ্বনি। মন খারাপ হয়। নিজেকে চিনতে চিনতে দেখি হানাহানি। মেপে রাখি নিরেট হৃদয়ের টানাপোড়েন। অনেকদিন হল হারিয়েছি বটতলার পাঠশালা। এখন দেখি কলরবে মুখরিত ছালচটা পুরোনো দেয়াল। খসে খসে পড়ে যাবতীয় অন্ধকার। ভেবে দেখি যা কিছু অবয়ব সবটাই খোলস। দু-হাত দূরের বাসিন্দারাও ক্রুদ্ধ চাহনিতে দেখে নেয় এপারের বসতি কঙ্কাল। কেননা--- আজ অবধি আমাদের চোখ যাযাবর পাখি দেখিনি।

মোহম্মদ শাহবুদ্দিন ফিরোজ

আব্বুলিস ওই মেয়েটা তোকেই দেখে, প্রথম দিলাম আব্বুলিস পাড়ার মোড়ে গান গেয়ে যাই, বেওয়ারিশ সুরের শিস ঘরের ভিতর উঠোন থাকে উঠোন জুড়ে ছায়ার গাছ সঙ্গে থাকে মাদলে তাল আকাশ জোড়া মেঘের নাচ। জোয়ার নদী নৌকো দোলে দখিন হাওয়ার পাল তোলা ওই মেয়েটা সন্ধে হলো এখনোও তোর চুল খোলা! আলপথের ওই ঘাসগুলো সব শুকিয়ে গেছে রোদপুড়ে চারখান সেই লিখছি চিঠি, দু'একটা রাস্তা জুড়ে। পাড়ার মোড়ের ভাজার ঠেলায় মিটিং সিটিং ঝাড়ের বাঁশ রাত বিরেতেই মস্তানি আর মন্দ লোকের সর্বনাশ। অপেক্ষাতো অনেক হলো,  পারলে তুই জানিয়ে দিস আমরা নতুন ঘর করেছি তাই তোকে দিই আব্বুলিস

গল্প - কবিরুল ইসলাম কঙ্ক

ছবি
স্যান্ডেল স্কুলে   ঢুকে   যারপরনাই   অবাক   হলাম ।   পাকা   একবছর   পর   দিলীপবাবু   এসেছেন ।   অবাক   হওয়ার   কারণ   তার   তার   দীর্ঘ   অনুপস্থিতি   নয় ।   দিলীপবাবুর   পায়ে   নতুন   একজোড়া   স্যান্ডেল ।   উনিশ   বছর   চাকরিজীবনে   তার   পায়ে   স্যান্ডেল   দেখিনি ।   সিনিয়র   শিক্ষকদের   কাছে   শুনেছি   চাকরিতে   ঢুকেছিলেন   খালি   পায়ে ।  অবসরও নিয়েছেন খালি পায়ে। এমনকি   বিয়ে   করতেও   গিয়েছিলেন   খালি   পায়ে ।   কেউই   নাকি   তাকে   কোনোদিন   জুতো   পরতে   দেখেননি । ----- ' কেমন   আছেন ?  অনেকদিন   পরে   এলেন ।   ভেতরে   আসুন । '  দিলীপবাবুকে   বললাম ।   দুবছর   হল   অবসর   নিয়েছেন ।   দুবছরেই   মনে   হচ্ছে   বয়স   অনেক   বেড়ে   গেছে ।   কিন্তু   হাসিটি   তেমনই   আছে ।     ----- ' ভালো   আছি   স্যার ।   পেনসনের   কী   একটা   কাগজ   এসেছে ।   বুঝতে   পারছি   না ।   অবশ্য   বোঝার   কথাও   না । '  বলে   একমুখ   হাসলেন । ----- ' বসুন । ' ----- ' তাই   আপনার   কাছে   একবার   এলুম । '  বলে   দিলীপবাবু   দাঁড়িয়েই   থাকলেন ।   বসার   কোনো