মোবাইলে টাইম পাশ, সম্বৃদ্ধ উল্লাস সাহিত্য হাসি ঠাট্টা খুনসুটি বিন্দাস পড়তে হবে নইলে মিস করতেই হবে। মোবাইল +91 9531601335 (হোয়াটসঅ্যাপ) email : d.sarkar.wt@gmail.com
২১ এপ্রিল ২০২১
চলে গেলেন কবি
দীপ্তি চক্রবর্তী
কবি শঙ্খ ঘোষ স্মরণে
থেমে যায় কতো ছায়াপথ
আকাশে আজ অকাল শ্রাবণ
বাতাসের চোখ দুটি ভারি ভারি
সাহিত্যে আজ আরেক উজ্জ্বল নক্ষত্র পতন
ভেসে যাবে ভেলা দূর থেকে দূর
নিষ্পলক চোখ সময়ের ক্যানভাস
চুপিসারে ভোর আসে
আশীর্বাদের হাতটা রেখো মাথার ওপর
অন্তরের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই
মমতা রায়চৌধুরী
সবার মননে শঙ্খ
(শ্রদ্ধেয় কবি শঙ্খ ঘোষের অমৃতলোকের যাত্রায় শোকস্তব্ধ হয়ে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় আমার কবিতা )
যখন চারিদিক ভয়াবহ প্রতিকূলতায়,
মানুষ বড়ই অসহায়।
চিল শকুনরুপি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির
দাপটে বেঁচে থাকা নিরর্থক।
অসহায় ,বঞ্চনা, সংশয়ে দিশেহারা মানুষ,
তখন আশাহত মনে প্রস্ফুটিত
'পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ', 'প্রহর জোড়া ত্রিতাল'
'সকাল বেলার আলোয় ' আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' র অপরাজেয় শঙ্খ ঘোষ।
আজ অতিমারী ছিনিয়ে নিল নির্ভীক শঙ্খ,
যাত্রা হল সীমাহীন অনন্ত পথে।
অমৃতলোকের যাত্রা হোক শুভ,
সকল প্রতিকূলতা হোক পরাভূত।
আমরাও জেগে উঠি' বাবরের প্রার্থনা',
'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি 'র দৃঢ় প্রত্যয়ে
নির্ভীক সৈনিক মননের শঙ্খে ।
শুভমিতা বিশ্বাস
শঙ্খধ্বনি
সে কি তবে, চলে গেল
বহু চোখের ভাষা ছেড়ে
আমি তো জানি,
শঙ্খ বোবা না
সে এখন জ্বলন্ত,নিবিড় সূর্যালোকের বাসিন্দা
সে এখন সমুদ্র
সে এখন নিদ্রার ভেতরের আলো
গ্রহের বাইরেও আজ শঙ্খের ধ্বনি
অর্পিতা মান্না
তিরোধানে আজ সাহসী কলম
(কবি শঙ্খ ঘোষের শ্রদ্ধায় )
কাব্য বেঁধে শব্দ বুনে,
বেঁচে থাকা এক বুক ।।
আজ কেবলই চললো একা,
রইলো পরে সুখ ।।
আমরা তারই বাঁধন হবো,
আজ থাক সেই কথা ।।
শ্রদ্ধা রাখি, নত মস্তকে,
স্মৃতি হোক মৌনতা ।।
সাহিত্যের এক পাঁজর গেলো,
স্তব্ধ কবির হৃদয়।।
শঙ্খ কলম থমকে গেলো,
বিষাদ সূর্যোদয়।।
কবি তুমি আজ অশ্রু দিয়ে,
রাখলে আঁধার চোখে ।।
সৃষ্টি তোমার অন্তরে নিয়ে,
আজ আমরা শোকে ।।
মৃত্যু এবার শান্ত হও ,
অশ্রু বিন্দু ফেলো ।।
খোঁজ রাখেনা নিয়তির ঘর
কে গেলো কে এলো ।।
আমরা কেবল মুখ গুঁজে চলি,
কর্ম করি নিজের ।।
হত্যা করি, ধ্বংস করি
ধার ধারি না লাজের ।।
ভালো থেকো তুমি তারার দেশে,
সেখানেও লিখো প্রাণ ।।
কবিতার খাতা, কলমের হোক,
সৃষ্টিতে হোক স্নান ।।
অক্ষত থাক তোমার স্মৃতি
অক্ষর অন্তরে,
জন্ম নিও আবারো কবি,
কবিতার বালুচরে ।।
পূর্ণিমা ভট্টাচার্য
নীরব শঙ্খ
শব্দ কথার মায়াজালে
ভরা ছিল শঙ্খ খানি,
ঊর্মিমালীর বক্ষ থেকে
পেয়েছি অমূল্য সব রত্ন মণি।
উঠতো বেজে ছন্দ লয়ে
ভরতো সভা প্রাঙ্গণ
স্তব্ধ যে আজ শঙ্খধ্বণি
শোকের আচ্ছাদন।
না ফেরার দেশে দিলেন পাড়ি,
দূরে অনেক দূরে,
শব্দ তরঙ্গ ফেনিল হবে
দিশেহারা শঙ্খ ঝড়ে।
কবি তোমাকে সশ্রদ্ধ প্রণাম 🙏..টুকুন..
মিলন ভৌমিক
শ্রদ্ধাঘ্য
প্রিয় কবি শঙ্খ ঘোষ।।।
"বিশ্ববাসী শোকস্তব্ধ, বাকরুদ্ধ
তুমি আজ শায়িত,
আকাশে বাতাসে হাজারো মানুষের
কান্নার ধ্বনি, আজ নেই কাছে।
বিষাদের ছায়া শোকে বিহ্বল
দেখতে পাবেনা অমর সৃষ্টি।
পুরাতন কবিতা বন্ধুত্ব করবে
চিরদিন মানবের সাথে,
থাকবে বিশ্বময় অমর হয়ে।
জীবন মানে অনিশ্চয়তা
জীবন মানে নানান অনুভূতি,
এই নিয়ে আমরা বেঁচে আছি।
বিশ্ব আজ মারণ ভাইরাসে
মানুষ গৃহবন্দী,
হৃদয় জুড়ে থাকবে তুমি
নূতন ভারত গড়ি।।।
শ্যামল রায়
কবি শঙ্খ ঘোষ কে
কবি শঙ্খ ঘোষ ছিলেন
শূন্যের ভিতরে নতুন এক ঢেঊ
নামটি শঙ্খ ঘোষ।
বলতে ইচ্ছে করে
কথা কম বলতেন শুনতেন বেশি
শূন্য হলো সৃষ্টির উঠোন
জানাই শ্রদ্ধা শতকোটি প্রণাম।
কখনো প্রতিবাদে,
কখনো মানুষের কথা বলতেন।
তাই শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন তার কবিতায়
আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে।
এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে
সেই এক বলা
কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো
কোনো ভাষা নেই
কেননা শরীর তার দেহহীন উত্থানে জেগে
যতদূর মুছে নিতে জানে
দীর্ঘ চরাচর
তার চেয়ে আর কোনো দীর্ঘতর যবনিকা নেই।
কেননা পড়ন্ত ফুল, চিতার রুপালি ছাই, ধাবমান শেষ ট্রাম
সকলেই চেয়েছে আশ্রয়
সেকথা বলিনি? তবে কী ভাবে তাকাল এতদিন
জলের কিনারে নিচু জবা?
শুন্যতাই জানো শুধু? শুন্যের ভিতরে এত ঢেউ আছে
সেকথা জানো না?
তাই শেষ পংক্তিতে বলছি-----+
আজ ফুলগুলো দিলাম শরীর জুড়ে
বেঁচে থাকুক চিরটা কাল আমাদের হৃদয় জুড়ে।
অলোক দাস
তুমি চলে গেলে কিছু না বোলে
প্রণাম হে কবি, তুমি চলে গেলে কিছু না বোলে I মনটা ব্যাকুল ছিলই, জেনেছি তুমি ভালো আছো I আজ বুজেছি, আমরা কেউ ভালো নেই I বলতে পারি শুধু টিকে আছি I জন্ম মৃত্যু যে স্বাভাবিক, তা আজ প্রমাণিত I তুমি ছিলে কবিতার রাজা I এতো সম্মানে ভূষিত, খুব কমই হয় I সন্ধ্যায় যখন শঙ্খ বাজবে, তোমাকে মোনে পড়বে I তুমি আজ সকলের হৃদয়ের মাঝে I যখন সময় হয়, যেতেই হয় জানি I তাই আজকের দিনটা একটু ম্লান, কি যেন একটা হারিয়ে খুঁজে যাচ্ছি I সেকি তুমি ! প্রণাম হে কবি ভালো থেকো, থেকো শান্তিতে I
মোহাঃ হাসানুজ্জামান
কবি শঙ্খ ঘোষ এর স্মরনে
অ্যাকাডেমি(১৯৭৭) পুরস্কার প্রাপ্ত দুই বাংলা প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ ওরফে চিত্তপ্রিয় ঘোষ আর নেই।খবর টি টেলিভিশন এর পর্দায় দেখে চমকে উঠেছিলাম।দেশে আবারো নক্ষত্র পতন , অপূরণীয় ক্ষতি কারণ মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯। কবির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ দেশের প্রধান মন্ত্রী ,কবি সাহিত্যিক , সকল শ্রেনীর মানুষ ও সাহিত্য প্রেমী দের।বিশ্ব বরন্যের এই কবি জন্মসূত্রে অখণ্ড ভারতবর্ষের বাংলাদেশের চাঁদপুর গ্রামের হলেও তাঁর ছাত্রজীবন ও কর্মজীবন আমাদের দেশে সিমাবদ্ধ। কলকাতার বিভিন্ন কলেজ সহ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় , দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর কর্মস্হল।
পেশায় অধ্যাপক হলেও নেশায় তিনি একজন বাস্তববাদী কবি সাহিত্যিক ছিলেন।তার লেখায় ফুটে উঠতো সমাজের বিভিন্ন চিত্র।এই সাহিত্য কলার জন্য তিনি ১৯৯৯ সালে দেশিকোত্তম সম্মান,২০১৬ সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ও ২০১১ সালে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান *পদ্মভূষনে* তিনি সম্মানিত হন।এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে দুইবার সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার,রবীন্দ্র পুরস্কার সহ অন্যান্য অনেক পুরস্কার।
বেক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সৎ দার্শনিক এর মতো।ছাত্র-ছাত্রী দের সাথে তার বন্ধুত্ব সুলভ আচরন,সহকর্মী দের সাথে সখ্যতা ও নতুন কবি সাহিত্যিক লেখক দের অভিভাবক হিসেবে তার খ্যাতি ছিল চোখে পড়ার মতো।তার মৃত্যু টা যেন সাহিত্য জগৎ এ মহা-বটবৃক্ষের পতনের মতো।অনেকেই তাকে *জাতির বিবেক* বলে অভিহিত করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু কাব্যগ্রন্থের মধ্যে অন্যতম "বাবরের প্রার্থনা" ,"মূর্খ বড় সামাজিক নয়", "পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ" , "দিনগুলি রাতগুলি" ও গান্ধর্ব কবিতা গুচ্ছ প্রমূখ।
রবীন্দ্রনাথ বিশেষজ্ঞ হিসেবেও এই কবির খ্যাতি আকাশ ছোঁয়া।*ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ* আজো গেঁথে সকলের হৃদয়ে ।তাঁর বড় গুন যেটা বরাবর আমাকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে সেটি হলো রাজ্য সরকার অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বরাবর সোচ্চার ছিলেন তিনি।
৮৯ বছর বয়সে আজ তার প্রয়ান।জন্ম গ্রহন করলে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে এটা নিশ্চিত।তিনিও তাঁর বেতিক্রমি নন।আজ একটু অন্যের ভাষায় বলি
"তুমি চলে গেছো আজ
ফিরবেনা আর কভূ স্বশরীরে
তবুও তুমি থাকবে চিরকাল
সারা বিশ্ববাসীর হৃদয় মনিকোঠারে ।"
শেষে শুধু এটুকুই বলার হে মহান সাহিত্য বিপ্লবী আপনার পবিত্র আত্মার স্বর্গবাস হোক এই কামনা করি । জগতে আপনি রবেন সকলের অন্তরে চির উজ্বল ধ্রুবতারার মতো।
-----------–💐------------------