২৩ ডিসেম্বর ২০২১

কবি সালমা খান এর কবিতা




উড়ো চুল




এলোমেলো উড়ো 
হাওয়ায়, 
ঝাঁকড়া চুল?
তুমি আমার
ভোরের আলোয়
শুভ্র ঘাসফুল।
কখনো কি মনে 
পড়েছে আমায় ?
যদি মনে পড়ে
চিঠি লিখো
গোপনে, 
উড়ো নামে
সবুজ খামে,
ওতে শিশির 
দিও এক 
ফোঁটা,
কচি ঘাসের
ডগায়,
ভোরের আলোয় 
শুষে নেব, 
সূর্যের রঙে
সিঁদুর আভায়।

মোঃ হা‌বিবুর রহমান /১২তম পর্ব





ইউএন মিশ‌নে হাই‌তি‌তে গমন ১২তম পর্ব
মোঃ হা‌বিবুর রহমান

যাত্রার শুরু থে‌কে শেষাব‌ধি প্র‌তি‌টি ভ্রম‌ণেই প্র‌তি‌দিনই ইউএসএর সা‌র্জেন্টরা আমা‌দের যাত্রায় সঙ্গী হ‌'তেন। চলার প‌থে তা‌দের দে‌শের সেনাবা‌হিনী সম্ব‌ন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্র‌য়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদান করা ছাড়াও পরস্পর ভাব বি‌নিময় ছিল যেন প্র‌তি‌দি‌নের রু‌টিন একটা কাজ। প‌কেট ভ‌র্তি স্মৃ‌তি তৈরী হ‌'য়ে‌ছি‌লো যা খন্ডাকা‌রে আমি পরবর্তী‌তে আ‌লোচনা করবো ইনশাল্লাহ্। 

একটি কথা তা‌দের রাজধানী সান‌জোয়ান সম্ব‌ন্ধে না ব'ল‌লে বু‌ঝি ঠিক যেন এক ধর‌নের অ‌বিচারই করা হ‌বে। ঐ‌ যে শুরুর দিকে আ‌গেই ব‌'লে‌ছিলাম ‌যে, এখানকার মে‌য়েরা গাড়ী চালায় আর জোয়ান জোয়ান বেটা ছে‌লেরা পা‌শে ব‌সে শুধু জাবর কা‌টায়।

কিছু সামা‌জিক রী‌তিনীতি আ‌ছে যেগু‌লো বি‌ভিন্ন সময় আ‌মরা রাস্তায় ও বি‌ভিন্ন পা‌র্কে ব‌সে প্রত্যক্ষ ক‌'রে‌ছি যা লজ্জায় এই মূহুর্তে ঠিক ব'ল‌তেও পার‌বো বা লিখ‌তেও পার‌বো না, তাই আ‌মি আ‌গেভা‌গেই মাফ চে‌য়ে নি‌চ্ছি। ত‌বে সুন্দর ব্যাপার‌টি হ‌লো ‌যে, সান‌জোয়ান নগরী‌টির সৌন্দর্য্য স‌ত্যিই চোখ-জোড়ানো এবং নয়না‌ভিরাম। সর্বদা ‌যেন মন ছু‌ঁয়ে যায়। 

সৃ‌ষ্টিকর্তা আল্লাহতায়া'লার দেওয়া বু‌দ্ধি‌তেই মানু‌ষের সৃ‌ষ্টি এ নগরী যেন অপূর্ব ঠিক কেউ বু‌ঝি নিজ চো‌খে না দেখ‌লে তা বর্ণনা ক‌'রে বুঝানো সম্ভবপর নয়। 

সা‌রি সা‌রি অট্টা‌লিকা যেন র‌শি ধ‌রে লাইন সোজা ক‌'রে যোগ্য ই‌ঞ্জিনিয়ার সা‌হেবরা নি‌জেরা সর্বদা সার্বক্ষ‌ণিক হা‌জির থে‌কে অ‌তি সয‌ত্নে সেগু‌লো তৈরী ক‌'রে‌ছে আর‌ কি! অদ্ভূত ব্যাপার হ‌লো,  প্র‌তি‌টি গগনচুম্বী অট্টা‌লিকার প্র‌তি‌টি ফ্লো‌রে প্রাই‌ভেট গাড়ীসমূহ হরহা‌মেশা সহ‌জেই উঠতেও পা‌রে আবার নাম‌তেও পা‌রে তাই যাত্রী‌রা যেন মহাস‌ুখী। 

আর এদের আ‌মোদ-প্র‌মো‌দের ধরনই যেন অন্য রকম। সে সবই এখন স্মৃ‌তি। পথ-প‌রিক্রমায় বোধ ক‌'রি বিশ্বায়‌নের যু‌গে নিশ্চয়ই এত‌দি‌নে সানজুয়ান‌দের আরও বু‌ঝি এক ধাপ উন্ন‌তি হ‌'য়ে‌ছে এরই ম‌ধ্যে।

একটা মজার কথা ম‌নে প‌ড়ে গে‌লো এমূহু‌র্তে। আমরা বেশ ক‌য়েকজন অ‌ফিসার মি‌লে হঠাৎ ক‌'রেই খা‌য়েস ক'রলাম যে, প্র‌ত্যে‌কে এক ডলার ক‌রে সানজুয়া‌নের ‌যেকোন একজন ফ‌কির‌কে ভিক্ষা দে‌বো। আর য‌া‌বে কয়? যে কথা সেই কাজ। তাই শুরু হ‌'য়ে গে‌লো আমা‌দের পদব্র‌জে ফকির খোঁজা অ‌ভিযান। 

ফ‌কির আদ‌তেই এ শহ‌রে নেই, না‌কি ইদা‌নিং ফ‌কির উচ্ছেদ অভিযান প‌রিচালনা ক‌'রে এ‌ই দে‌শের সরকার কর্তৃক অন্যত্র স‌‌রি‌য়ে নেওয়া হ‌'য়ে‌ছে ‌তা নি‌য়ে মোটা‌মো‌টি একটা বি‌শ্লেষণধর্মী তা‌ত্ত্বিকতা যেন মূহু‌র্তের ম‌ধ্যে শুরু হ‌'য়ে গি‌য়ে‌ছি‌লো রী‌তিমত আমা‌দের ফ‌কির অনুসন্ধানকারী দ‌লের ম‌ধ্যে।

শান্তা কামালী/৪৭ পর্ব




বনফুল
(৪৭তম পর্ব ) 
শান্তা কামালী





ঘড়ি তে তখন এগারোটা, হায়দার সাহেবের নাম্বারে ফোন বেজে উঠল, তাও আবার আন-নোন নাম্বার থেকে। ফোন রিসিভ করতে ওপাশ থেকে পলাশের কণ্ঠস্বর শুনে হায়দার সাহেব আনন্দে আত্মহারা হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা তুমি ঠিক ভাবে গিয়ে পৌঁছেছো ?  কোনো রকম সমস্যা হয়নি তো? কিছু খেয়েছো ? প্রশ্নের পর প্রশ্ন,পলাশ বললো হ্যাঁ বাবা, খেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ কোনো সমস্যা হয়নি।  বাবা ফোনটা আম্মুকে দাও, হায়দার সাহেব  স্ত্রীর হাতে ফোন দিতেই ফোন ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলেন।আসলে মা'য়ের মন তো।  বলছেন বাবা তোকে ছাড়া একটা দিন মনে হচ্ছে একটা  বছরের চেয়ে বেশি। পলাশ বললো আম্মু তুমি যদি এমন করো তাহলে আমি কি করে  থাকবো? আমার জন্য দোয়া করো , দেখতে দেখতেই দুই বছর কেটে যাবে। 
আম্মু তুমি  তিথি আর শিমুলকে ফোনটা দাও। তিথি দৌড়ে এসে ফোন ধললো। পলাশ বললো কেমন আছিস তিথি?  উত্তরে তিথি বললো আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া, তুমি কেমন আছো? কোনো সমস্যা নেই তো? পলাশ বললো না-রে, সবকিছু ঠিক আছে। তুই বাবা-মার দিকে খেয়াল রাখিস। তিথি বললো, ভাইয়া এই নিয়ে তুমি একদম চিন্তা করো না । শিমুল অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভাইয়ার সাথে কথা বলার জন্য... 
তিথি শিমুলের কাছে ফোন দিলো।
 শিমুল আসসালামু য়ালাইকুম ভাইয়া বলতেই পলাশ ও প্রত্যুত্তরে  ওয়ালাইকুম আসসালাম বলে সালাম জানায়। শিমুল এখন কিন্তু  তোমার অনেক দায়িত্ব বাবা-মা, বোনকে দেখাশোনা করা সাথে আর মন দিয়ে পড়াশোনা করবে। রেকর্ড মাকর্স পেতে হবে। 
পলাশ বললো এখন ফোন রাখছি  পরে  ফোন দেবো।এখানে কল চার্জ কি রকম জানি না। পরে বুঝেশুনে জানাবো। এই বলে ফোন কেটে দিলো।

শামীমা আহমেদ /পর্ব ৩৮




শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত 
(পর্ব ৩৮)
শামীমা আহমেদ 



----এসির ঠাণ্ডা পরিবেশে শায়লা দুপুরে বেশ একটা ঘুম দিলো। যদিও রাহাত বারবারই শায়লাকে রুমে একা রেখে এসে বেশ চিন্তিত
হচ্ছিল । আর এর মাঝেই নিজের রুমে রাহাতও একটু ঘুমিয়ে নিলো। মায়ের ঘরেও মা ঘুমাচ্ছে।এক'দিন সবাই ভীষণ একটা মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে গেছে।সারাক্ষণ উৎকন্ঠায় সময় কেটেছে।আজ বাসায় একটু স্বাভাবিক পরিবেশ লাগছে। সন্ধ্যার একটু আগে আগে শায়লার ঘুম ভাঙল। খুব আরামদায়ক একটা ফিলিংস অনুভুত হচ্ছে। রাহাত আপুর দরজায় নক করলো। আপু,এসো একসাথে নাস্তা করবো। শায়লা খুব আস্তে করেই বললো, আসছি। এইতো একটু ঘুমিয়েছিলাম। দাঁতব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে আসছি।  রাহাত অনলাইনে পিজ্জার অর্ডার দিয়ে রেখেছিল। 
শায়লাকে চমকে দিতে! ডাইনিংএ এসে সত্যিই শায়লা অবাক হলো! মাকে নিয়ে ভাই বোন মনে হচ্ছে অনেকদিন পর আজ একসাথে নাস্তা করা হচ্ছে। নাস্তা পর্ব শেষ করে রাহাতই চা বানিয়ে আনলো।মা বোনকে আর রান্নাঘরে যেতেই দিলো না।যদিও মাকে আটকে রাখা খুব কষ্টকরই হচ্ছিল। তবুও রাহাত কিছুতেই মাকে রান্নাঘরে প্রবেশের অনুমতি দিলোনা। 
তিনকাপ চা নিয়ে বসতেই নীচতলার রুহি খালা এলো।রাহাত দ্রুতই আরেককাপ চা বানিয়ে এনে মা আর রুহি খালাকে আলাপে বসিয়ে দিলো।আর শায়লাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিলো।নয়তো নানান প্রশ্নে শায়লা জর্জরিত করতে পারে।
রাহাত শায়লার দিকে তাকিয়ে বললো, আপু চায়ের কাপ নিয়ে চলো ছাদে যাই।অনেকদিন ছাদে যাওয়া হয়না।
রাহাত যখন যা  যেভাবে বলছে শায়লা সেভাবেই রাজী হচ্ছে।অনেকদিন পর ভাইবোনের এমন সুন্দর সময় কাটানো। ছাদের ঐ উত্তর কোণটিতে নীচ থেকে উঠা আসা একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের ডালপালায় ছেয়ে গেছে।দিনের বেলা লালসবুজের মিশেল দেখতে খুবই চমৎকার  লাগে।ভাইবোন সেখানটাতে গিয়ে দাঁড়ালো।রাহাত খুব বুঝতে পারছে,আপু নিশ্চয়ই এখন শিহাব সাহেবের কথা ভাবছে।আমি না হয়ে এখানে এখন যদি শিহাব ভাইয়া থাকতেন নিশ্চয়ই আপুর খুব সুন্দর সময় কাটতো! রাহাত বুঝতে পেরে তাই শায়লাকে বলেই  বসলো, আচ্ছা আপু এখন এখানে শিহাব ভাইয়া এলে তোমার খুব ভাললাগত।তাই না? আমরা একসাথে চা খেতাম, গল্প করতাম। অবশ্য যদি উনি আসতে রাজী হতেন তবেই! 
শিহাবের প্রসঙ্গে শায়লা বরাবরই একটু কাতর হয়ে পড়ে।শিহাবের উপস্থিতিটা বেশ অনুভব করে। শিহাবের গোছানো কথাগুলোতে  কোন দোষ খুঁজে পাওয়া যায়না।স্বচ্ছ পরিপাটি বাক্যবলয় কেমন যেন সম্মোহনের মত টেনে নেয়। 
রাহাত খুব বুঝতে পারল আপু শিহাব সাহেবের ভাবনায় ডুবে গেছে। তাইতো এমন শীতল নীরব। রাহাত ভালো করেই জানে চোখ থেকে মন আর মন থেকে ভাললাগাটা রক্ত প্রবাহে মিশে যায় যা ভীষণভাবে অনুভব অনুভুতিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ  করে।
রাহাত নীরবতা ভাঙল। চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, আপু তোমার চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। শায়লা  ভাবছে সে একটা  ট্রেনের কামরায় বসে আছে চলন্ত ট্রেনটি যে কোন স্টেশনে থামলেই আচমকা শিহাব উঠবে! আর শায়লাকে দেখে ভীষণ অবাক হবে! আর শায়লার  চোখে মুখে অপ্রত্যাশিত একটা প্রাপ্তির আনন্দ খেলে যাবে!
রাহাত শায়লার ভাবনায় ছেদ ঘটালো। সরাসরি প্রশ্ন ছুড়ে দিলো, আচ্ছা আপু শিহাব সাহেব কি দেখতে খুব সুন্দর!
শায়লার তৎক্ষনাৎ উত্তর,হ্যাঁ, শিহাব দেখতে খুব হ্যান্ডসাম। 
নোমান ভাইয়ার চেয়েও?
সেভাবে তুলনা করে দেখিনি কখনো।শায়লা নোমানের নামটি এড়িয়ে যেতে চাইছে।রাহাত খুব বুঝতে পারছে, যদি আপাকে এখন অপশন দেয়া হয়,আপু  এখন শিহাব ভাইয়াকেই বেছে নিবে। 
রাহাত একে একে  প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। আসলে এটা একধরনের মনোচিকিৎসা।  সাইকোথেরাপি। 
কেউ যখন কারো ভাবনায় ভীষণভাবে ডুবে থাকে, সে তখন শুধু তার কথাই বলতে বা অপরপ্রান্ত থেকে শুনতেই পছন্দ করে।রাহাত চাইছে আপুর মনে শিহাব ভাইয়াকে নিয়ে যত কল্পনা ভাবনা স্বপ্ন ভাললাগা জমেছে সেগুলো শুনতে চেয়ে চেয়ে মন থেকে তা বের করে আনতে হবে।তবেই আপুর মন হাল্কা হবে। মনের কথাগুলো বলে নিযেকে ভারমুক্ত করবে। 
রাহাত ভেবে নিলো, এভাবেই আপুকে প্রতিদিন একটু একটু করে স্বাভাবিকে নিয়ে আসতে হবে। আর মনে মনে ঠিক করে নিলো, আজ রাতেই শিহাব সাহেবের সাথে কথা বলতে হবে।তারওতো কিছু বলবার থাকতে পারে।আর তা যদি আপুর ভাবনার সাথে মিলে যায় তবে রাহাত আপুর ব্যাপারে ভিন্ন কিছু ভাববে। যে যাই বলুক, রাহাতের কাছে আপুর সুখটা সবচেয়ে বড়।আপুর মুখে হাসিটাই তার সবচেয়ে  কাঙ্ক্ষিত। 
একঘন্টা পর ভাইবোন নীচে নেমে এলো।
ড্রইং রুমে সোফায় বসে একসাথে টিভি দেখলো! আপু মাঝে মাঝে কেমন যেন  গভীর চিন্তামগ্ন হয়ে যাচ্ছে। শায়লাকে সহজ করতে রাহাত টিভিতে নিউজ রিডারটিকে দেখিয়ে বললো, আচ্ছা আপু শিহাব সাহেব কি এই লোকটির মত দেখতে! শায়লা একঝলক চোখ বিস্ফারিত করে টিভি স্ক্রিনে তাকালো!অবচেতন মনেই ভেবে নিলো,  নাহ,তাই কি আর হয়!  পরক্ষণেই বুঝলো, রাহাত আসলে তার সাথে দুষ্টুমি করছে। এবার শায়লা বেশ জোরেই একটা হাসি দিয়ে উঠলো! শায়লা রাহাতের চালাকিটা বুঝতে পারলো। সাথে সাথে তার চোখ দুটো জলে ভরে গেলো! রাহাত বুঝতে পেরে আপুকে হাত দিয়ে বেড়িয়ে ধরলো। শায়লাও ছোট্ট বোনটির মত, কিছু বায়না করার ছলে রাহাতের কাঁধে মাথা রাখলো।রাহাত খুব বুঝতে পারলো তার প্রতি এটা আপুর কিছু একটা নীরব  চাওয়া। রাহাত মনস্থির করে ফেললো,যদি আপু আর শিহাব সাহেবের ভাবনা একহয় তবে যত বাধাই থাকুক আমি আপুর ইচ্ছে চাওয়ার পূর্ণতা দিবো। 
রাহাত আজ রাতের খাবার খাওয়া পর্যন্ত শায়লার সাথে রইল।সবশেষে আপুকে তার রুমে দিয়ে এলো আর আপুর হাত ধরে বললো, আপু আমি চাইছি তোমার মোবাইলটা কিছুদিন আমার কাছে থাকুক। তুমি পুরোপুরি সুস্থ হলে তখন দিবো। শায়লা মাথা কাত করে লক্ষী মেয়ের মত সম্মতি জানালো।শায়লার ঔষধগুলো আর পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। শায়লার পাশে রাহাত বসে রইল। এসির পয়েন্ট সেট করে দিয়ে আপুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।ছোট ভাইটার এতটা ভালবাসায় শায়লার চোখ বন্ধ হয়ে এলো। হঠাৎ চোখের কোন বেয়ে জলের ধারা নেমে এলো।রাহাত বুঝতে পারলো এ কান্না কার জন্য।এ অনুভব কাকে ঘিরে,এ কান্নায় কোন চাওয়াটা লুকিয়ে আছে।খুব শীঘ্রই ঘুমের ঔষধের প্রভাবে শায়লা ঘুমের কোলে ঢলে পড়লো।রাহাত রুম থেকে বেরিয়ে এলো।আপুর রুম লক করা নিষেধ করা আছে।  আপু যেভাবে শিহাব সাহেব ভদ্রলোকটিকে ভেবে এত কাতর হয়ে যাচ্ছে, উনার কী তা জানা আছে? উনিও কী এতটা গভীরে নিয়ে আপুকে ভাবে?
আজ ফোন করে কথা বলে তা জেনে নিতে হবে।রাহাত নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যেতেই অজান্তেই  তার মনটা বিষন্ন হয়ে গেলো।


চলবে...

মোঃ আরিফ রেজা।





একাকীত্ব 


সেদিন গোধূলীর লগ্নে দাঁড়িয়ে ছিলাম, 
ধুলোয় মলিন মলাটে হিজল গাছের নীচে।

একাকীত্ব মন বিদায়ের বারতা নিয়ে আসে রুদ্ধশ্বাসে! 
পড়ন্ত বিকেলের রঙ্গিন হাতছানি। 

ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছি-- জল ভরা চোখে,
খাম-খেয়ালীপনার অবচেতন মনে।

হৃদস্পন্দন কিটকিট করে উঠে ভাবনার অন্তরালে।

আমার দিবা সেজেছে রক্তিম আলোর ঝলকানিতে,
সেখানে দাগ দিতে গিয়ে উড়ে যায় সর্বনাশা ঝড়ে। 

হৃদয় স্পর্শ না করার কি অসহ্য যন্ত্রণা দগ্ধ করে আমাকে। 

বারবার চুমু দিতে যায় লাল দু'টি ঠোঁটে।

মোহময়ী স্নিগ্ধ হাওয়ায় উথালপাতাল করে স্রোতস্বিনী,
পাখির দল ফিরে আসে তার আপন ঠিকানায়। 

সৃষ্টিলোকের অপার লীলা বুঝিনা আমি।

বাড়িয়ে দিয়েছি আমি দু'হাত প্রসারিত করে অবগহন মনে! 

আমি নিশ্চিত, হারিয়ে যাবে তুমি ক্ষুদ্রাকার পিপীলিকার মত।

তবুও বলবো, তুমি ধরা দিয়ে যাও, অনিবার্য আমার কবিতা হয়ে
যাব আমি তোমার সনে।

দিবা-আজ পরম শুণ্যতার হাওয়ায় ভাসে কালের হলে
মহা সমুদ্রের গর্জনে।

মমতা রায় চৌধুরী/৭৫




উপন্যাস 

টানাপোড়েন ৭৫

ভোরের স্বপ্ন
মমতা রায় চৌধুরী

উপন্যাস টানাপোড়েন ৭৫

ভোরের স্বপ্ন
মমতা রায় চৌধুরী

আজকের রাতটা রেখার ভালো ঘুম হয় নি। ভেবেছিল পার্থর মা মানে মাসীমা আর মনোজ দুজনাই ভালো আছে তো মনের দিক থেকে একটু শান্তি পাবে ।আজকের রাতটা ভালো করে ঘুমাতে পারবে কিন্তু না মেয়েদের প্রজেক্ট এর চিন্তা , গল্পটা ভালো লাগবে কিনা পাঠকদের? সেই নিয়ে একটা চিন্তা ছিলো।তার দেখা ভোরের স্বপ্ন কি সফল হবে?'সে যাই হোক রেখার দুশ্চিন্তা আরও গ্রাস করল।
 'কি অদ্ভুত এতবার মেসেজ করা সত্ত্বেও এই মেয়েগুলো প্রজেক্ট জমা দিল না ।আবার ফোন করা হচ্ছে তো ফোনের গলা শুনেই সুইচড অফ করে দিচ্ছে ।ভাবা যায় ?যাও বা কেউ ফোন ধরছেন বলছেন' তার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে ।''
রেখা এক অভিভাবককে তখন বলল 'আমরা তো ভাবতেই পারছি না ,একি রে বাবা ।কবে ,কেন বিয়ে দিলেন?এখন তো আপনাদের পড়ানোর কোনো অসুবিধে নেই ।তারপরও আপনারা মেয়ের 18 বছর হয় নি বিয়ে দিয়ে দিলেন?'
একজন ভদ্রলোক তো বলেই দিলেন '18 বছর হতে দুমাস মতো বাকি আছে । 18 বছর হয়ে যাবে। '
রেখা যখন জিজ্ঞেস করল 'আপনার বিয়ে দেবার জন্য এত তাড়া কিসের?'
ভদ্রলোক বললেন' ' দিনকাল ভালো না ।মেয়ে বড় হচ্ছে ।আশেপাশের লোকজন নানা কথা বলে ।এইজন্য ।আমরা তো সাধারন মানুষ?'
রেখা বলল 'আপনি পাড়ার লোকের কথায় কান দিলেন ?আর আমরা টিচাররা যে বলছি মেয়েকে লেখাপড়া শিখে স্বনির্ভরশীল হতে দিন।'
ভদ্রলোক বললেন 'সে তো বুঝতে পারছি কিন্তু..?'
রেখা বলল 'কিন্তু, কিন্তু কি?'
ভদ্রলোক নিরুত্তর।
রেখা বলল 'আমরা জানেন কন্যাশ্রী ক্লাবে জানালে আপনার মেয়ের বিয়ে আটকে যাবে আর আমরা কিছুতেই  বিয়ে হতে দেবো না?'
ভদ্রলোক কাকুতি-মিনতি করে বললেন' দিদিমণি, এই কাজটি করবেন না।'
রেখা তো রেগে  গেল এবং বলল 'আপনি জানেন না এটা অপরাধ?'
ভদ্রলোক বললেন 'একটা ভালো সম্বন্ধ পেয়েছি দিদিমণি।'
রেখা বললো 'ভালো সম্বন্ধ ?কি ভালো সম্বন্ধ?'
ভদ্রলোক বললেন 'দেখুন আমরা খেটে খাই, ছেলেটার মুদির দোকান আছে।'
রেখা বলল 'শুধু মুদির দোকান দেখেই মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দেবেন?'
ভদ্রলোক বললো 'তা ছাড়া আর কি  করি বলুন 'আমাদের অত টাকা পয়সা কোথায়? খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকলেই হল।'
রেখা বললো' তা ঠিক জয় গোস্বামীর 'নুন' কবিতাটা মনে পড়ে গেল। যদিও সেটার মানে আপনাকে বোঝানো যাবে না ।কবিতার লাইনটা এরকম
 'আমরা তো অল্পে খুশি, বলো আর অধিক কে চায়?
হেসে খেলে ,কষ্ট করে, আমাদের দিন চলে যায়।'
ভদ্রলোক বললেন 'যিনি লিখেছেন তা একদম আমাদের মনের কথা।'
রেখা এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে কি উত্তর দেবে তার ভাষা খুঁজে পেল না  ।তারপর মনে মনে ভাবতে লাগল তাই তো কোথায় আমি ওনাকে বোঝাতে গেলাম, উল্টে উনি আমাকে বুঝিয়ে দিলেন তাদের জীবনালেখ্য।'
ভদ্রলোক আবার বললেন' দিদিমণি ,আমার মেয়ের বিয়েটা যেন বন্ধ করবেন না ।বুঝতেই পারছেন ,আমরা সমাজে থাকি ।বিয়ে ভেঙে গেলে আমার মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারব না।'
রেখা এ কথার কোন উত্তর দিতে পারল না ।আর মনে মনে ভাবতে লাগল' এখনও আমরা কোথায় পড়ে আছি। কোথায় আমাদের বিদ্যাসাগর মহাশয় ,কোথায় আমাদের রাজা রামমোহন রায় ?তাদের দেখানো পথে আমরা কবে হাঁটতে পারব?'
শুধু বললো 'কিন্তু আপনার মেয়ের বিয়ে নিয়ে আপনি ভাবছেন ?সরকার তো এখন অনেক ব্যবস্থা করেছে লেখাপড়া শেখালে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় টাকা পাবে। আর 18 বছর হলে তো 25000 টাকা এককালীন  পাবে।লেখাপড়ার তো আপনাদের কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।'
ভদ্রলোক বললেন 'হ্যাঁ ,সে জানি।'
রেখা বললো 'তাহলে কেন আপনি মেয়েকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিচ্ছেন বলুন? আমাদের তো সরকার এই জন্যই বাল্যবিবাহ রোধ করার জন্যই তো এই প্রকল্প আর তাছাড়া যাতে মেয়েরা স্বনির্ভরশীল হতে পারে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে?'
ভদ্রলোক বললেন 'আসলে আমার তিনটি মেয়ে বুঝতে পারছেন ?ওই বড় এখনো দুজনে ঘাড়ের উপর ।এরকম করে থাকলে আমরা তো খেটে খাওয়া মানুষ ।আগেই বললাম।
রেখা বলল' তা ছাড়া মেয়েদের বিয়ের জন্য রূপশ্রী রয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে দিলে তো রূপশ্রী প্রকল্পের আওতায় আপনারা টাকা পেতেন?'
ভদ্রলোক চুপ করে রইলেন।
রেখা বলল' ঠিক আছে মেয়েকে পরীক্ষাটা দেওয়ার ব্যবস্থা  অন্তত করুন।'
ভদ্রলোক বললেন' ঠিক আছে আপনি যখন বলছেন তাহলে বলবো পরীক্ষাটা দিতে।'
রেখা বলল 'সেজন্য তো বলুন মেয়েকে প্রজেক্টটা যেন জমা দিয়ে যায় ।ঠিক আছে।'
ভদ্রলোক বললেন ' আচ্ছা, দিদিমনি আমি বলব।'
ফোনটা কেটে রেখার ভাবতে সময় কেটে গেল অনেকটা। কি করে এই মানুষদের বোঝানো যেতে পারে, কি করে?'
এখনো কয়েকটা মেয়ের বাকি আছে ফোন করার।
রেখা মনে মনে ভাবতে লাগল মেয়েটার বিয়ে আটকানোটা জরুরী ছিল কিন্তু ভদ্রলোক এমন অসহায় ভাবে বললেন, সেখানে রেখা যেন আটকে গেলো।
রেখাকে নিজের প্রতি খুব অসহায় মনে হল।
সঠিক সিদ্ধান্ত কোনটা সেটা জেনেও আজকে রেখাকে চুপ করে মেনে নিতে হচ্ছে। প্রতিনিয়তঃ আমাদেরকে এই ভাবেই মেনে নিতে হয়।
এর পরবর্তী ফোন নম্বর রেখা ডায়াল করলো
*******২৪৩২
দুবার তিনবার বেজে গেল কিন্তু ফোন তুললো না।
রেখা এবার নেক্সট নম্বর ডায়াল করলো******৪৩২৬
এই ফোন নম্বরে ডায়াল করার পর দু-তিনবার বাজার পর ফোনটা রিসিভ করে ভারিক্কি গলায় বললেন  'হ্যালো'।
একটু ঘাবড়ে গিয়ে রেখা বলল,' এটা কি অনিন্দিতা বালার ফোন নম্বর? আমি স্কুল থেকে বলছি।'
ভদ্রলোক বললেন 'না" না না ও পড়াশোনা করবে না।'
রেখা রীতিমতো ভাবাচ্যাকা খেয়ে গেল।
রেখা বুঝতে পারল 'নিশ্চয়ই অন্য কোন দিদিমণি ফোন করেছিল?
ভদ্রলোক বললেন 'একবার তো বলে দিয়েছি যে আমার মেয়ে পড়াশোনা করবে না ।তারপরও আবার ফোন করছেন?'
রেখা বলল না না আমি অন্য সাবজেক্টের টিচার বলছি।
ভদ্রলোক বললেন' আপনি আবার কি বলতে চাইছেন?'
রেখা বলল প্রজেক্ট এর ব্যাপারে কথা বলতে চাইছি।
ভদ্রলোক বললেন' ওই দিদিমনিও  তো প্রজেক্ট এর ব্যাপারে বললেন।'
রেখা বলল ' হ্যাঁ,ও দিদিমণি অন্য সাবজেক্টের কথা বলেছেন।'
ভদ্রলোক বললেন 'ঠিক আছে বলবো?কবে  দিতে হবে?'
রেখা বলল 'এই সপ্তাহের মধ্যে।'
ভদ্রলোক বললেন ও তো নেই বাড়িতে। এ সপ্তাহে কি করে দেবে?''
রেখা বলল' মেয়েকে খবর দিন, এখনো তো সময় আছে।'
ভদ্রলোক বললেন" ঠিক আছে ফোন করে দেখবো?'
কিন্তু ও তো পড়তে চাইছে না।'
রেখা ভদ্রলোককে বুঝিয়ে বলল' মেয়েকে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে বলবেন। বোঝানোর দায়িত্ব আমাদের।'
ভদ্রলোক বললেন' ঠিক আছে বলব?'
ফোনটা রেখে রেখা বিরক্তির স্বরে বললো 'বাপ রে, বাপ ।ওরে বাবা ,এ যেন টিচার এর দায় হয়ে গেছে সব ব্যাপারে।'
মনোজ এসে বলল' কি হয়েছে? তুমি আপন মনে কথা বলে যাচ্ছ?'
রেখা বললো 'আর কি বলি বলো তো ?এতজন মেয়ের গার্জেনকে ফোন করে জানতে জানতে, তাদের অসুবিধার কথা জানতে জানতে আমার সময় নষ্ট হয়ে গেলো। দেখো কটা বাজে?(ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
এবার কি হবে বলো তো প্রজেক্ট যদি না পাই?'
মনোজ বলল 'আর মাথায় চাপ নিও না তো ,যা হবে হবে।'
এরমধ্যে আবার ফোন বেজে উঠল'আমি কার, কে আমার ,কী যে তার আমি হই..।'
মনোজ বলল' কার ফোন বাজছে?'
রেখা বলল' আমার ফোন?'
মনোজ বললো' বাপ রে ,তুমি আবার রিংটোন চেঞ্জ করেছ?'
রেখা হেসে উঠল' হ্যাঁ করেছি। তো?'
মনোজ বলল 'না না। আমি এমনি বললাম।'
রেখা বলল 'তাই বলো? আমি ভাবলাম তুমি আবার কি ভাবছ কে জানে?
মনোজ হো হো করে শুধু হাসতে লাগলো।
আবার ফোন বেজে উঠলো'আমি কার, কে আমার
কী যে তার আমি হই...।'
রেখা ফোনটা রিসিভ করে বলল' হ্যালো।'
অপরপ্রান্ত থেকে এক ভদ্রলোক বললেন' ম্যাম আমি পত্রিকা থেকে বলছিলাম।'
রেখা বললো' কোন পত্রিকা?'
ভদ্রলোক বললেন "'আমি' সিঁড়ি' পত্রিকার সম্পাদক বলছিলাম।"
রেখা হাসতে হাসতে বলল ' ও  নমস্কার'।
সিঁড়ি পত্রিকার সম্পাদক বললেন' এখন চিনতে পারছেন তো?'
রেখা  হাত জোড় করে  বলল 'কিছু মনে করবেন না ।আমি লজ্জিত। আসলে...
সম্পাদক বললেন 'আপনার কোন দোষ নেই ।আমি অন্য নম্বর থেকে ফোন করেছি।'
রেখা বললো 'এগজ্যাক্টলি। সেজন্য ই বুঝতে পারছিলাম না।'
সম্পাদক মহাশয় হাসতে লাগলেন আর বললেন 'কেমন চমকে দিলাম বলুন?'
রেখা ও হাসতে হাসতে বললো' তা আর বলতে?'
সম্পাদক মহাশয় বললেন' এবার কাজের কথায় আসি ম্যাম।'
রেখা বলল 'হ্যাঁ বলুন'।
সম্পাদক বলেন' আপনার 'ওদের যন্ত্রণা 'গল্পটি কিন্তু লোকে ভীষণ ভাবে খাচ্ছে?'
রেখা বললো' মানে?'
সম্পাদক বলেন 'ও ম্যাম, সরি ।আসলে মানুষের চাহিদার মধ্যে রয়েছে গল্পটি।'
রেখা বলল 'তাই?'
সম্পাদক বললেন 'মনে হচ্ছে এই গল্পটির জন্য আপনার কিছু প্রাপ্তির..
রেখা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল' আমি ভীষণভাবে আপ্লুত।'
সম্পাদক বলেন 'আমরাও আপনার কাছে কৃতজ্ঞ যে আপনি এ ধরনের লেখা আমাদের পত্রিকায় দিয়েছেন।'
রেখা বলল 'দেখুন ,এটা আমাদের নিত্য ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা নিয়ে আমি লিখেছি ।মানে সময় ,বাস্তবতা নিয়ে লেখা একটা ঘটনা এতটা আমার মনে আঘাত হেনেছিল ।যার থেকে আমার লেখা ।যাক পাঠকের ভালো লেগেছে ।এজন্য সত্যিই আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।'
সম্পাদক বললেন' ঠিক আছে ম্যাম, এই গল্প তো রইলোই ।এই গল্পের জন্য একদিন আলাদা ভাবে আপনার কাছে সাক্ষাৎকার নেয়া যাবে। আজকে রাখছি। আপনার কলমে এভাবে এগিয়ে চলুক ।শুভকামনা থাকলো।'
ফোনটা রেখে এতটা উত্তেজিত হয়ে গেছিল যে মনোজকে জড়িয়ে ধরে, আর আনন্দে ওর মন নেচে গান গেয়ে ওঠে ''শুধু তোমায় ভেবে ভেবে কত দিন রাত গেছে বয়ে..শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে..।'নাকি
 থেকে যাবে সাজবাতির রূপকথা হয়ে।
মনোজ বলল 'তাহলে কি এখন তোমার সেই ভোরের স্বপ্ন বাস্তব হচ্ছে।'
রেখা হাত দিয়ে ঈশ্বরের দিকে দেখায়।