পোস্টগুলি

নভেম্বর ৩, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শারমিন সুলতানা রীনা

ছবি
  অনন্ত নিদ্রা  নিথর দেহে শুয়ে আছি সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে একটু একটু করে ক্ষয়ে যায় শরীরি অবকাশ,  হৃদয় সচল,চোখ দুটোয় খেলা করে তীব্র অনুভুতি। তুমি কেন আগুনের লেলিহান শিখায় নিজকে পোড়াও উঠে এসো অনন্ত নিদ্রায় থাকো আমার পাশে মরনের শিতলতায় মিশে যাই একসাথে...

সৌগত রাণা কবিয়াল

ছবি
  সাজ পেয়ারী জোনাকি... প্রিয় বৈষ্ণবী, আমাকে জাগতে দিও প্রতি রাত.. সত্যের স্বরলিপি যখন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে তখন জনারণ্যে তোমার জন্য শুধুই ভালোবাসা...! সবারই কিছু একান্ত সুখ থাকে মনে... মহাজাগতিক বৈরাগী স্বভাবটা কি নিপাট তুমি  মাঝে মাঝে কপট অঞ্জলি করে ছুঁড়ে দিতে পারো  তোমার স্ববিরোধী জাগতিক সুখের কাছে মাথা নত করে...; তবুও এসো তুমি, সন্ধ্যে হলে শ্রান্ত পায়ে এসো আমার দুয়ারে.. আমি আশির্বাদের ঘাস ফুলের মাদুরে তোমার জন্য শান্তি পেতে রাখবো...! প্রিয়, বৈষ্ণবী,  সারাদিনের ধুলোমাখা ক্লান্ত তোমার মন আমি নিজ হাতে  চন্দন জলে ধুইয়ে দেবো আমার বুকের পটে রেখে....! সারারাত আকাশ সামিয়ানায় তারাদের আলোয়  হৃদয় ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে প্রানবন্ত তোমার শরীরে সুখী ভোর এলে.. তখন তোমায় আমি আমার সকল আশির্বাদের ডালি দিয়ে আবার না হয় বৈষ্ণবী সাজিয়ে  নিজ হাতে তোমার হাত ধরে এগিয়ে দেবো  আরও একটি দিনের জন্য তোমার পার্থিব সমৃদ্ধির দিকে.. আর আমি আবার প্রার্থনায় বসবো  তোমার তিলক-চন্দনের কপট রঙ মুছে দেয়ার শক্তি অর্জনে...! মন প্রহেলিকা হলেও যে ভালোবাসা অহর্নিশ প্রদীপের শিখা...!

স্বরূপ মণ্ডল

ছবি
  ধর্মের অন্তর আমাকে হত্যা করো অজানা বিষের ক্রিয়া আনো স্নায়ুর অন্তরে গোত্র লেখো আলিম্মান তোমার অন্তরে লিখো বুদ্ধ জপমালা জড়িয়ে ধরেছি দুঃখ স্বয়ংবর সভায়

ফটিক চৌধুরী

ছবি
  বটগাছ গাছ মানে ছায়া ছায়া মানে শান্তি স্নিগ্ধতার এই মায়া দূর করে ক্লান্তি। সবাই কি গাছ হতে পারে? যার শিকড় মাটিতে প্রোথিত! আমি জানি জীবনে যে হারে পরাজিত বলে সে কথিত। ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে আছে বট আশ্রয়ে থাকে কত সব পাখি মাঝে মাঝে যাই আমি তাহার নিকট পূর্বপুরুষ বলে আমি তাকে ডাকি। যদি কোনদিন ঘটে পরমাদ বটগাছ আমার মাথার ছাদ।

কাকলী দাস ঘোষ

ছবি
  অক্টোপাস   আমি এক শব্দনগর  যেখানে জলবিছুটি পাতা আমার শরীরকে আঘাত করে সেখানে আমি চুপ হয়ে যাই  আমি এক শব্দনগর আমি তো  ঘৃণা করতে শিখিনি  আমি সোজা -সাপের মত এঁকেবেঁকে চলতে শিখিনি  তবু আমার ফাটা ছাদে জল পড়ে  আমি ভিজতে ভিজতে চুপ হয়ে যাই  ভীষণ বৃষ্টিতে ওই দূরের বড় বাড়ির ছাদে অ্যান্টেনায় বসা চুপসানো কাকটা  আর আমি একাকার হয়ে যাই  এই জগতে যা কিছু ম্রিয়মাণ যা কিছু নির্বাক তাদের সঙ্গে আমার তো সখ্যতা হবার কথা ছিল না  আমি যে শব্দ নগর  আসলে আমি জানতামই না একটা শব্দ নগরও ভাঙতে পারে-হেরে যেতে পারে-চুপ হতে পারে।    খিদে -ভীষণ খিদেতে যখন শরীর কুঁকড়ে ওঠে  আমি বোবা হয়ে যাই  গুঁড়িয়ে যেতে যেতে মাটিতে মিশে যাই  তোমরা-এই যে তোমরা -আমার চারপাশের মাটি-জল-হাওয়া তোমরা কেউ জানতে পারলে না  কখন -কখন  আমি ছিলাম  আর কখন কবে আমার গলা বুজে এসেছিল  ভীষণ -ভীষণ  যন্ত্রণার একটা অক্টোপাস আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচাতে পেঁচাতে কখন যেন আমাকে বাধ্য করেছিল  একেবারে নিরুত্তর হতে -নিরুত্তাপ হতে  আর তারপরেই কাতরাতে কাতরাতে -গুমরাতে গুমরাতে  চিরকালের জন্য এক্কেবারে নিশ্চুপ হয়ে যেতে। 

হুমায়ুন গালিব

ছবি
  মনের কাবা সূর্যের আলো নক্ষত্রের আলোর নেই ক্ষয়  জেগে থাকে গহীনে প্রেমিক হৃদয় সুর উঠে তানসেনের প্রেমের জিকির আমি তোমার নামেই করি বন্দনা ফিকির  ফুটে সোনালি রোদের আভা চুমু খাই ভেবে আমার মনের কাবা।

দুর্গাদাস মিদ্যা

ছবি
অশেষ   মেঘের হাত ধরে মেঘ হতে চাওয়া কিছু নতুন কথা নয়  এ যেন ঠিক স্বপ্ন নিয়ে খেলা করে স্বপ্নময় মন। চলো এক ফাঁকে গিয়ে বসি নদীটির তীরে  কান পেতে শুনি নদী কি কথা বলে শীতল সমীরে। চোখের সামনে দেখি বয়ে  যায় নদী  একদিন দুদিন  নয় বয়ে চলে শতাব্দী।  তবু তীর যেন কোনোদিন তৃপ্ত নয় বর্ষার আগমনে আরও বেশি উচ্ছল হয় |   উদ্দামে ভাসিয়ে দেয় দুই পাড়  তবুও শেষ হয়না চাওয়া পাওয়ার। এটা ঠিক ভালোবাসা যদি অশেষ  হয়  তবে চিরস্থায়ী হয় সেই পরিণয়।

কবি মিশ্র

ছবি
  আমার আমিত্ব আমি একা হাঁটছি আল পথ বেয়ে আমার আমিত্ব ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে  আস্তে আস্তে-- ব‍্যাকুল হয়ে বললাম, কেন আমায় ছেড়ে যাচ্ছো? সে বলল,এটাই যে নিয়ম- আমি বললাম, আমি বড় একা আমায় ছেড়ে যেয়ো না! আমার আমিত্ব সরতে সরতে আর ও দীর্ঘায়িত হল আমি দু চোখ বন্ধ করে অঝোরে কাঁদতে লাগলাম ভেতরের সমস্ত আমিত্ব ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে.. এক সময় চোখ মেলে দেখলাম দীর্ঘায়িত আমিত্ব আর নাই সব আমিত্ব আমার ভেতরে আনন্দে চিৎকার করে বললাম আর যেয়ো না,আমার যে অনেক লেখা বাকি সে বলল,কেন?এবার আমায় নিয়ে লেখ আমি এখন তোমার মধ্যে আছি- অনেক ভাষা, অনেক শব্দ, অনেক ছবি সব মনের মধ্যে ভেসে উঠল। কিছুক্ষনের জন‍্য আমিত্ব আমার সঙ্গ দিয়ে ছিল আমার সব দুঃখ,কষ্ট, যন্ত্রণা, অভিমান ভুলিয়ে হাজার শব্দ মালায় গেঁথে দিয়ে গেল। আবার সে সরতে সরতে দীর্ঘায়িত হতে লাগল ও যে আমার প্রতিচ্ছায়া , প্রতিবিম্ব এ ভাবে ই ঘটে চলে অবিরাম, চিরন্তন--

আশিস চক্রবর্তী

ছবি
 সুপ্ত নিশি     ভিড় ভেঙে ফিরে আসি যবে রাতে, নিশাচর যত ছিল পথে, ডেকেছিল শিহরনে। একরাশ নক্ষত্রের নীচে চলি আমি, আর চলে পুরাতন চিরসাথী এ দেহ। হরীতকী গাছের ছায়ায় দেখি  'সহজ পাঠ' পুড়িয়ে উষ্ণ করে ফ্যান,এক শিশু,  পিতাভ রঙের নুইয়ে পড়া পেটে খিল ধরে আটকে আছে ,প্রাগৈতিহাসিক খিদে! মুখের আমঠা স্বাদ পায় নাতো আর, কেবল সন্ধিকালে সারা উঠোন ময় ঘুর ঘুর করে , সলতে পোড়া প্রদীপের ঘ্রাণ। অথচ শঙ্খ শুভ্র ,আতপের মত ছিল তার হাত। এককালে, কড়ির মতো চোখে চেয়ে ছিল প্রান্তরের উড়ন্ত শকুনের ডানা ঝাপটানোর শব্দে। হিজলের গাছে ,শেষ পেঁচার ডাকে ,চেয়ে দেখি ক্ষয়িষ্ণু,মৃতপ্রায়  ছায়া ক্রমশ প্রসারিত পদতলে।

হাননান আহসান

ছবি
  মিষ্টি মা মা ভালো খুব গল্প বলেন সূর্য নদী চাঁদের রবিঠাকুর মাদামকুরি এবং কাহ্নপাদের। গল্প বলেন হাজার রকম মমি পিরামিডের দই জিলিপি ফুলকো লুচি এবং তাজা ক্ষিদের। টাইটানিকের করুণ কথা কিংবা সোঁদরবনের ব্যাটে কেমন ফুল ফোটাতেন গল্প বলেন ডনের। বলতে বলতে অনেক কথা মা হয়ে যান মিষ্টি যে বাইরে তখন বাদল মেঘের ঝিকিরমিকির বৃষ্টি যে!

পরাণ মাঝি

ছবি
  গাছ   আমার ভুল ছিল  কারো কোনো দোষ ছিল না  সব আমার ছিল  সারারাত জেগে ক্লান্ত গাছটা ভাবেনি এভাবে হঠাৎ ছিন্নমূল হবে, এভাবে কাটা যাবে তার সযত্নে গড়া সবুজ শাখা প্রশাখা ! ঝড় নেই , অতি বর্ষন নেই , নেই কোনো বন্যার পূর্বাভাস  কেবল মানুষ তার দরকারে গাছ রোপণ করবে আবার নিজের সুবিধার্থে নিধন করবে  ভোরে উঠে বিড়বিড় করে বলছিল গলা কাটা গাছের লাশটা  গাছ কী আর মানুষের মন বোঝে  অবলার কত কথা বলা , ব্যথা-তুরের হাহাকার কে আর বোঝে  বিশ্বাস নামের বহুতলে কবুতরের বাস  মালিকের ইচ্ছে হলে মরে যাবে সবুজ ঘাস  আন্তরিক প্রেমের বিচ্ছেদ মৃত্যুর সমান   কূলে এসে আছড়ে পড়ে কত সমাধান  শান্তির আঁচল ছিঁড়ে যায় মলয় পবনেও  মনের মরণ নেই বড় বেচারা সেও  জীবনের ধাপে ধাপে বিষাদ সিন্ধু  ভালোবেসে ছেড়ে গেলে বন্ধু  ব্যথার ছাঁদে কত চাঁদ ওঠে  গাছ তো  ফুল ফল দেয় আর শেষে জ্বালানি হয়ে পোড়ে  বিশ্বাস না হয় একবার গিয়ে দাড়াও যে কোনো রাস্তার মোড়ে ।