২৯ মার্চ ২০২১

মমতার রায়চৌধুরী




মা তোমায় মনে পড়ে



মনের অলিন্দে কষ্টের চোরাবালির

পাহার জমে যখন উঠেছে বারবার।

মাগো, তুমি এসেছো ভরসার,

হাতছানি নিয়ে জীবনে বারবার।

সংসারের যাঁতাকলে চলেছি ঘুরে 

হতাশা যন্ত্রনাকে নিত্য সঙ্গী করে।

তখন আঁকড়ে ধরে প্রাণপণে ,

 বাঁচতে চেয়েছি  মনপ্রাণে,

শুধু মরীচিকা হয়ে গেছে ।

মাগো , তোমায় বড্ড মনে  পড়ে।

জানি আজ আমি অনেক দূরে,

 হৃদয়ে ছবি অাঁকি স্নেহসুধা ভরসা করে।

তোমার আশীষে অন্ধকার সরে,

ছড়িয়ে সূর্যমুখী আলোর ভোরে।

মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ




 চুরি বাঁচাও



ছুটছাট কারনে কেনো করি,দলাদলী আর তান্ডব।

সমাজ কলুষিত হয়,বুঝেও বঝোনা সব।

নিজে নিজেরাই মাতি রক্তের হুলি খেলায়

পিতৃ মাতৃর গর্ভে দেখো,অন্তরে অশ্রুজল।

এই ভেবে,এই ভেবে গাধার দলেরা বুঝবে কবে।

দেশ চুরির উৎপাত বাড়ছে যে দেশে

এ খবর ক'জন নেয়,ক'জনই বা জানে!

স্বপ্নের বাসভবন করবে চুরি অন্যজন।

মানুষ নয় ওরা,মানুষ নামে নরপিচাস

এতে নেই মাথা ব‍্যাথা,নেই কি নয়নে জল?

নেশার ঘোর কাটবে কবে,কবে হবে উওাপ

আগুন জ্বালাও অন্তরে অগ্নিকুন্ঠে।


মুশারি(মশারি) ছিদ্র থাকলে,প্রবেশ করে মসা।

রক্ত চুসে নিলে,তবেই হয় বেঘুমের হুঁশ।

জানতে,তবু হয়নি ক্ষমতা তোমার সারা।

তাইতো নিলো চুসে, এক ফোটা রক্তের কনা।

দেশ আজ হচ্ছে,মুশারির মতো

কি হবে পরে,একবার ভেবে দ‍্যাখো।

সমস্ত ছিদ্রটাকে মারো তালি

বাঁচাও স্বপ্নের দেশ মাতৃ ভূমি।

চাল চোরের পিছনে দিতে গিয়ে সময় 

দেখো দেশ চুরি করছে,গড়ছে সন্ত্রাস।

আর নয়,আর নয় গর্জে ওঠো সব

মাতৃভূমির রক্ষার জন‍্য,করো তীব্র প্রতিবাদ।

তাতে,দিতে হয় দেবো আত্মবলিদান

তবু মাতৃভূমিকে হারাতে দেবোনা প্রান।।

মোহাঃ হাসানুজ্জামান

 


  মমতাময়ী


অসাধারণ তুমি সদাই তুলনাহীন

নেই তোমার মনে কোন বিদ্বেষ,

বিধাতার কৃপায় মমতাময়ী রুপ

সবার প্রিয় তুমি আমার শ্রদ্ধাভাজন।



থাক সর্বক্ষণ সংসার স্রোতে ব‍্যাস্ত

ঈশ্বর প্রেরিত সুখের কাণ্ডারি,

অক্লান্ত পরিশ্রম করো সারাজীবন

তুমি ধরণীর অপরাজেয় সৈনিক।



শুভ্র বরফের মতো নির্মল হৃদয়

তোমার স্পর্শে আলোকিত ত্রিভূব,

স্বার্থের গোলকধাঁধায় নিশ্চিহ্ন হও না কভূ

অন্তরে পরিপূর্ণ তোমার মূল‍্যবোধ।


ভাবনার আকাশে উজ্জ্বল মনোবৃত্তি

অপূর্ণতাও যেন পায় পূর্ণ রূপ,

মনের সীমানায় তোমার সফলতার সুত্র

নীরবে কর শুধু শান্তির খোঁজ।


সৌন্দর্যের রানী তুমি হৃদয় ভরা মায়া

গর্ভজাত সবাই তোমার পরিপূর্ণ বসুন্ধরা,

ন‍্যায় নীতি তোমার বিশ্ব-কোষে

তোমার স্নেহে অতিবাহিত হোক সবার জীবন।

পার্থ ব্যানার্জ্জী




ভোটের লড়াই


মাঠে মিষ্টি করে দুষ্টু হেসে

বললো মোটা দাদা,

আমার দলে নাম লেখা রে

মনটা আমার সাদা।

আমার ডিফেন্স ভীষণ ভালো

গুজরাটেতে দেখিস,

হাফলাইনটা আসানসোলের

দেখে একবার আসিস।

ফরওয়ার্ডে মেদিনীপুর আর

হাওড়া জুটি জোর,

যখনতখন গোল করবে

কাটবে দিদির ঘোর। 


ওদিক থেকে চেঁচান দিদি

আমিই গোলে আছি,

আমায় পার করবে কে রে

দেখি, আসুক কাছাকাছি।

মাঠের যেথায় তাকাবি বোকা

সব জায়গায় আমি,

ভুসো-ধুসো প্লেয়ার পালায়

সামনে আমার ড্যামি।

ইস্টুপিটরা ভাবছে কেবল

চেঁচিয়ে করবে মাত,

বাংলার মেয়ে আমিই কেবল

সতর্ক দিন-রাত। 


আরেকটা দল জোট করেছে

নামবে লীগের খেলায়,

নিঃশব্দে ভীড় বাড়িয়ে

একসাথে দল চালায়।

দিনাজপুর আর মুর্শিদাবাদ

আটকাবে সব খেলা,

হুগলি আর বর্ধমানের

আসবে তরুণ পোলা।

স্ট্রাইকারটার বয়স বেশী

অভিজ্ঞতায় ভরা,

অনেকদিনই খেলছে ভালোই

তবু থাকছে গোল ছাড়া। 


পাঁচ বছরের ট্রফিখানা

কার দখলে যায়,

দলগুলো সব যতই চেঁচাক

মানুষ দেবে রায়।

জনতা না-কি রেফারি হবে

পাহারা দেবে পুলিশ,

জমবে খেলা একপক্ষের

ভয় পেলে সব ভ্যানিশ।

ভোটের খেলা ঘোটের খেলা

জোটের খেলা ভারি,

বেচাকেনা দরাদরি দখলদারির

দেখছি বাড়াবাড়ি।

         

সোমা বিশ্বাস



2020 সাল

শুধু বিষ শুধু বিষ দাও 

অমৃত চাইনা !


(শিল্পী নচিকেতার কথা ও গানটা আরও অনুভূত হল এই বছরে)


অনেকগুলি শব্দ বা বিশেষণ পুরানো হলেও; নতুন করে 

বার বার আরও জমাট বাঁধল, ধাক্বা  মারল বা মারছে....

ছলনা, মিথ্যে, প্রতিশ্রুতি, কৃত্রিমতা, অসহায়তা,

হারানো ভালবাসা বা প্রিয়জন, চাহিদা, চটুলতা,

লোভ, কৃতজ্ঞতা, অন্ধকার, কর্মহীনতা, রাগ

কেমন যেন আশে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে

যেখানে হ্নদয় বা আন্ত‍রিকতার বড়ই অভাব!

তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখায় -যদিও এটির অন্তমিল

অনেক তাৎপর্যপূর্ণ; বিস্তর ফারাক -ও!

ঠিক যেন আদিখ্যেতা আর আন্তরিকতার যতটা পার্থক‍্য-

হাসি, এটি জীবনের স্ফুলিঙ্গ, তাই কখনো হাসতে ভূলনা যেন;

আজই হঠাৎ , রাস্তাপার হতে গিয়ে জুতোর শোল খুলে যাওয়া-

তারপর পেছন থেকে কিছু ব‍্যক্তি বা বাইকের কাছে দাড়িয়েথাকা;

ব্যক্তিটির সিগারেট খেতে খেতে অদ্ভুত হাসি! এরকম; 

আজ থেকে দশ বছর আগে ঘটলে নিজেকে বোকা মনে হত!

এখন এগুলো বেশ উপভোগ করি; নিজেও হেসে ফেললাম।

আসলে, মন খুলে হাসাটাও একটা টনিকের মত কাজ করে!

2020- এর  শেষে এসে মনে হচ্ছে 'করোনা' - অনেককিছু

বদলে দিয়েছে,সেই সঙ্গে অনেকিছু শিখিয়েছে; যা বাস্তব!

শুধু এতো বিষন্নতার মাঝে, মুগ্ধতা যে বড্ড কম হোয়ে গেল!-


(বিশেষ দ্র্যস্টব্য: লেখাটি পুরোটা ব্যক্তিগত নয়, অন্যদের অনুভূতি বা অভি‍জ্ঞতা নিয়েও লেখা ☺️)

শ্যামল রায়




চোখে ধরা পড়ে


উত্তরের হাওয়ায় জানালার পর্দাটা

সরালে দেখা যায়

নানান ধরনের গাছপালার ফাঁকে

গজিয়ে ওঠা নতুন পাতাদের

জোসনা রাতে ভারি মজা লাগে।

আর চারপাশে একাধিক কয়েক তালার বাড়ি

কাছাকাছি ছাদে হঠাৎ দেখা হয়েছিল

সদ্য বিবাহিত নারীকে

দু চোখে ধরা পড়েছিল তার মুখ।

নতুন । ভিতরে আতঙ্ক কাজ করছিল

অথচ দেখতে পেয়েছিলুম তার ইশারা

আমাকে ভাবিয়েছিলো, ঘুম আসেনি 

একদিকে যমুনা ছিল অন্যদিকে গঙ্গা ভাগিরথী

দুয়ের মাঝে ঢেউ খেলেছিল সারাটি রাত

দু চোখে ধরা পড়েছিল তার মুখ।

হঠাৎ মুখোমুখি

নতুন কিছু করার নতুন কিছু বলার থাকে

এসব উধাও। সময় নেই বিবাহিত স্বামীর

সময় কাটে না, ভিতরে যন্ত্রনা

এ যেনো ঘন একটা অন্ধকারের জালে জড়িয়ে পড়া 

শুধুই আলোর পথ খুজছিলাম

তুমি যদি আলো হও আমি হব দিশা।

আমার বেড়ানো ছাদ হয়ে উঠুক

বৃষ্টিতে ভেজা নীল শাড়ির আঁচল

তুমি থেকো সারাক্ষন চোখে চোখ রেখে

শুধুই আমার জন্য --+।

ওয়াহিদা খাতুন




সনেট চরিত্র


গভীর আত্মবিশ্বাস,চিন্তার বিকাশ

স্বতঃস্ফূর্ত মনোভাব নৈতিক চরিত্র

আদর্শ মতাদর্শী সর্বদায় পবিত্র ;

 মনের জগত যার বিস্তীর্ণ আকাশ ;

সংকীর্ণতার উর্দ্ধে যে করে বিচরণ--

স্বার্থত্যাগী,প্রতিবাদী অন্যায় সমরে;

উন্নত মস্তকে চলে কভু নাহি ডরে;

সাম্য-মন্ত্রে প্রজ্বলিত তার আচরণ--!


অপবাদের কলঙ্কে কিবা আসে যায়--

শ্যেনের পিছু না ছুটে স্পর্শে দেখো কান;

কুত্তার কামড়ে দিয়োনা নিজ সম্মান;

বিকৃত মনুষ্যত্বের এ কাঠগড়ায়--


ব্যক্তিত্বহীন চরিত্র-ই কাপুরুষতা--!

যতো দুর্বল হবে হারাবে কদর্যতা--!!


রচনাকালঃ-২৬/০২/২০২১ দুপুর ১২টা ১ মিনিট (সনেট নং ৯১)!

স্বপন কুমার ধর

 


প্রতিদিনের জীবন


সূর্য যখন ডুবি ডুবি,

আঁধার এগিয়ে দিচ্ছে উঁকি,

নামবে সে যে ঘনিয়ে কালো,

দুর হবে সব দিনের আলো।


ফুটবে তারা আকাশেতে,

ছড়িয়ে দিতে আলো।

জোনাকীর মত মিটমিটিয়ে,

দেখতে লাগে ভাল।


শ্রমের শেষে ক্লান্ত দেহে,

মানুষ যখন ঘুমায়,

বন্য পশু রাত্রি জেগে,

নিজের খাদ্য জোগায়।


গ্ৰাম্য নদী শান্ত বেগে,

চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে,

এগোচ্ছে যে বলতে কথা,

সাগর-মোহনার পানে।


ছড়াবে সুবাস ভোরের আলোয়,

ফুটবে অনেক ফুল,

গাইবে পাখি আনন্দেতে,

উড়ে নদীর দু-কূল।


রবির কিরন আসবে দোরে,

শুরু হবে নতুন দিন,

এমনি করেই শুরু হচ্ছে,

আমাদের প্রতিদিনের জীবন।

তহিদুল ইসলাম




আমার ভয় করে




তুমি বলে ছিলে, বৃষ্টি ভালোবাসো

কিন্তু বৃষ্টির সময় আশ্রয় খুঁজে নাও।

তুমি বলে ছিলে, সূর্য ভালোবাসো

কিন্তু সে যখন জ্বলজ্বল করে জ্বলে

তুমি ছায়া খুঁজে পাও।

আমি বড় চিন্তিত, তুমি যখন বলো,

" আমি তোমাকে ভালোবাসি"।


তুমি বলে ছিলে ,চাঁদ ভালোবাসো

আবার পূর্ণিমা রাতে  কলঙ্ক খুঁজতে চাও।

তুমি বলে ছিলে, গোলাপ ভালোবাসো

কিন্তু তার কাঁটা দেখে থমকে দাঁড়াও।

আমার ভয় করে তুমি যখন বলো,

" আমি তোমাকে ভালোবাসি"।

                

আবদুস সালাম




মুক্ত গদ্য টি পাঠালাম ওতার সাথে দুটো কবিতা



বর্ষ শেষের ডায়েরী

  


“বিদায়” শব্দটা তিন অক্ষরের হলেও এটার বেদনা কত টুকু তা আমরা এখন বুঝতে পারছি।। বিদায়ে এত বেদনা কেন? কেন এত কান্না, এত কষ্ট? এত হাহাকার? কেন? বিদায় মানে কি তবে বিরহ? বিদায়ের অন্য অর্থ কি তবে বিচ্ছেদ? বিদায় মানে কি প্রিয় মানুষটিকে চিরতরে হারিয়ে ফেলা? বিদায়ের ক্ষণটি সে জন্যই কি ব্যথাভরা? সে জন্যই কি বিদায়বেলায় কারো ‘সজল করুণ নয়ন’ নত হয়ে থাকে বেদনায়? কিন্তু আমরা যে চাই হাসিমুখে বিদায় নিতে। কারো চোখের পানিতে বিদায়ের পথটি ভিজে কর্দমাক্ত হয়ে উঠুক, তা যে চাই না। সে জন্যই কি আকুতি- ‘মোছ আঁখি, দুয়ার খোল, দাও বিদায়।’ সে জন্যই কি চোখে জল আর মুখে হাসি নিয়ে বলি- ‘শুভ বিদায়’?



 

বিদায়েরও কি তবে কিছু দায় থাকে? বিদায়ে কি শেষ হয়ে যায় সব? নাকি বিদায়ের পর শুরু হয় আরেক নবতর যাত্রা? অনেক জিজ্ঞাসা, অনেক প্রশ্ন। সব প্রশ্নের উত্তর থাকে না। জীবনভর কত বিদায়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয় আমাদের! শৈশবকে বিদায় দিয়ে কৈশোরে পৌঁছাই; কৈশোরকে বিদায় দিয়ে যৌবনে। যৌবন বিদায় হলে প্রৌঢ়ত্ব, আর প্রৌঢ়ত্বকে বিদায় জানিয়ে আসে বার্ধক্য। সবশেষে অনিবার্যভাবেই এই ইহজীবনকে বিদায় জানিয়ে না-দেখা কোনো অনন্ত জগতের পথে যাত্রা! যে জগৎ থেকে ফিরে এসে কেউ কখনো জানায়নি- কী আছে ওই পারে। ফলে ওই বিদায়ে সীমাহীন অনিশ্চয়তার ভয় থাকে। থাকে দ্বিধা, থাকে অনিচ্ছা। কিন্তু হায়! তবু নিতে হয় বিদায়। ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় অংশ নিতে হয় নিঃশেষ হবার প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায়। এভাবেই দিন আসে দিন যায়।

ক্যালেন্ডারের পাতায় লেখা হয় নতুন সংখ্যা।

বাড়িতে টাঙানো ক্যালেন্ডারটির উপর নতুন ক্যালেন্ডার টি শোভা দেয় । এমন করে পুরাতন দিনের সব কথা বাক্সবন্দী হয়।

নতুনদের ছেড়ে দিতে হয়  সব----