০৭ মার্চ ২০২২

কবি সানি সরকার  এর দুটি কবিতা




সময় 
সানি সরকার 

বাজির ঘোড়া নও, যে কাঁসর বাজিয়ে
পাড়া সুদ্ধ মানুষজনকে বাজি জিতছে 
তা দেখবার জন্যে ভিড় জমাচ্ছে পাশের মাঠে 

এমন হলেও আমি মানতাম না 
আমি তিরস্কার করতাম সেইসব বেহেডগুলিকে 
যাদের মনে স্বচ্ছ সংস্কারের নামে নোংরা-নর্দমা 
যাদের চোখে আলোর নামে হিংস্র লোভ ও নোংরা অন্ধকার 

আমি পাহাড় চিনি 
        জল চিনি 
                সমুদ্র চিনি 

তেমনি 
মাকড়শা কিভাবে জালবোনে, এবং 
ধ্বংসের খেলায় মত্ত হয়ে ওঠে -
এইসব সবই ক্ষণস্থায়ী বালি বাড়ি, 
সুতরাং 
পালকের ওমে তোমার মুখটি এখন গোঁজা 
সেখান থেকে মুখটি বের করো না, দ্যাখো 
সকালের গোধূলির আলো এখন 
            তোমার চোখে মুখে 
আমাদের ঐশ্বরিক চুমুর দাগ পরস্পর ঠোঁটে
চোখের ভেতর দিগন্ত উন্মোচনের উদ্দাম স্বপ্ন 
এ-ই সময় 
কথা বলো, তাদের কথার পিঠে কথা 

তুমি মানে তুমি ও আমি ; 
প্রেমিক-প্রেমিকারা কখনও রেসের ঘোড়া নয়
ধ্বংসের খেলা শেখেনি, কেবল 
সত্যির সামনে, সুন্দরের সামনে করজোড়ে দাঁড়িয়ে 
নত হয়ে হাসতে শিখেছে, এবং 
তিরস্কার ছুঁড়ে দিয়েছে ওই সমস্ত বাজিকরদের 
যারা পবিত্র প্রেমকে আক্ষরিক অর্থেই বানিয়েছে খেলা - 
ভয় পেও না। এখন তো উঠে দাঁড়ানো ও 
তুমি যে বাজির ঘোড়া নও না 
    তা সকলকে বুঝিয়ে দেওয়ার যথার্থ সময় 







রিপু 


এখন পেঁচিয়ে ধরার জন্যে 
কালো রঙের জাল তাড়া করবে, 
উত্তেজিত করবে, ভয় দেখাবে, কিন্তু 
আপনি আলোর সন্তান দাঁত চেনেন, পথ চেনেন… 

এই যে হাজার বছর থেকে অন্ধ করে 
কারা শেকল পরিয়ে রেখেছে চুপচাপ, আর 
আপনাকে অন্ধের মতো ক্রোধ ও ভয়ার্ত 
ক্ষুধার সামনে ভিক্ষুক বানাতে বানাচ্ছে বারবার 
মার্চ মাসের এই রাতে নিজের আত্মার সামনে দাঁড়ায়ে  
জিজ্ঞেস করুন কুসুম, আসল ও সত্যি কোনটা 

একটি ক্ষিপ্র ষাঁড় খাদের কিনারে শিং দোলাচ্ছে 
এখন আপনাকে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা এমনি করে 
ঋতু পরিক্রমণ করানোর জন্যে মাঠে নামবেন 
রেফারি ও চার কোণে চারটি সহ রেফারি 
এমনকী অনবরত আপনার চোখে মাথায়
ও সমগ্র দেহে কাঁদানেগ্যাস ছুঁড়ে 
কাঁদানোর চেষ্টা চলবে, হাসানোর চেষ্টা চলবে
একটি ওটি রুমের ভেতর, এবং 

আপনার জানা দরকার রিপুর তাড়া পেলে লক্ষ মাইল ফলক 
পেরিয়ে ঝড়ের মতন ক্ষিপ্র ষাঁড় দোঁড়ে আসে 
কিন্তু এক্ষুনি আপনাকে অবলোকন করতে হবে 
আত্মার ভেতর আপনারই আঁকা গণ্ডিটিকে, আর 
সূর্যালোকের কাছ থেকে হাত পেতে 
চেয়ে নিতে হবে, রিপু থেকে আত্মরক্ষার রক্ষা কবচ

ভয় নেই কুসুম, আপনার ভয় পেতে নেই

কবি অলোক দাস এর কবিতা




স্মৃতি 
অলোক দাস

  
নীলাজ আকাশ, 
একাকী রোদের কাছে দাঁড়িয়ে, 
এলো আকাশে আবার মেঘ I 
স্মৃতি সব ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে I 
কপালে লেখা অনন্ত, 
মুছে যাচ্ছে বেশ কিছু ধীরে ধীরে I 
কবিতা লেখা দূরত্ব কে নিয়ে, 
কিছু স্মৃতি তবুও থেকে যায় I 
যায়না মোছা রবাটে I 
যে যায়, সে আর ফেরে না I 
কিছু স্মৃতি অমরত্ব পাবে জানি I 
তাই যা হোয়ে গেছে, ভুলে যাওয়াই ভালো I 
আমরা কোনো বড়ো কাজ কোরতে পারিনে I 
যা কোরি ওতি ক্ষুদ্র I

কবি বাহাউদ্দিন সেখ এর কবিতা




ইট আর টিন
বাহাউদ্দিন সেখ


আমি বলেছিলাম তোমায় বহুবার-
             কখনোই ইট আর টিন মিক্স           
করে তৈরি হয় না তেতালা বারান্দার ঘর।

আমি তোমায় বলেছিলাম, 
মাটির উপর যতটা দেখছো আমায়
                তার থেকেও নিচে স্তরে আছি।

আমার ভেতরে যেটা রয়েছে- 
                              সেটিও আমি নয়, 
বাহিরে ও যেটা দেখেছো- 
                               সেটাও আমি নয়
আমি তো এক জটিল সহজ
                             কবিত্বের শ্রষ্ঠা।

যে জীর্ণ জড়ায় প্রত্যাহিক দিনে,
সৃষ্টি করে -
সশব্দে ফেটে যাওয়া চৌচির আকাশ।

কবি মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ এর কবিতা




এই সেই ফাগুন
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ


বছর ঘুরে এলো ধরায়,আবার বসন্তের ফাগুন।
চারিদিকে হৈ চৈ আর,খেলাধুলায় মন উদাসীন।
গাছে গাছে মুকুল ধরে,গৃহবাসীর মুখে হাসি ফোটে।
পুরাতন পোষাক পরিত‍্যাগ করে,গাছও নতুন পোষাক পড়ে।
এই সৌন্দর্য দেখতে লাগে,রুপোবতী কন‍্যার মতো।
যখন আমি লিখছি বসে,খোলা আকাশের নীচে।
মাথার উপর তাকিয়ে দেখি,একদল চামচিকে ঘোরে।
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি,কিচিরমিচির খেলা করে।
সৃষ্টির এই সৃষ্টশীলতা,মুগদ্ধ করে আমার মনকে।
হঠাৎ নয়ন পড়লো সূর্যের দিকে,দেখি সূর্য অস্ত চলে।
পাখিরা সব বাঁসায় ফেরে,ঘোনিয়ে আসবে সন্ধ্যার ভয়ে।
এরপর সন্ধা নেমে এলো,ধরিত্রী মায়ের বুকেতে।
হঠাৎ ঝড় বৃষ্টির উদার হলো,পালিয়ে গেলাম ঘরে।
দেখি মন বসেনা আর লেখায় যে,বন্ধ করেদিলাম তাই।।

কবি কপিল কুমার ভট্টাচার্য্য এর কবিতা




বি এস সি একাডেমী
কপিল কুমার ভট্টাচার্য্য 

        
ইনস্টিটিউট্ ভীষণ মজার
স্যারেরা অতি ভালো
ম্যাডামেরাও অ্যাক্টিভ্ খুব
এটাই শোনা গেল-------   
 সফলতার উৎস হল 
 ইনস্টিটিউট্ এই
স্টুডেন্টরা সব চাকরী পায় 
কোর্স-প্র্যাক্টিসেই,
 পরিবেশটা শিক্ষাসুলভ্
 স্টুডেন্টরা চায় যা 
 ক্লাস শেষ হওয়ার পর 
 খুব পায় মজা---------
মক্ টেস্টগুলো নেন তারা
যত্ন সহকারে 
 তাই তো এত সফলতা
 প্রতিষ্ঠানের দ্বারে-------
  ইনস্টিটিউট্ কর্তৃপক্ষ 
  অনেক করেন কাজ 
 সার্ভিস্-হেল্প-কো-অপারেশনে
 নেই তাদের লাজ----------
 ইন্টারভিউ ক্লাসগুলো
 বড়ই মজাদার
স্টুডেন্টরা সব ক্লাস করে 
পায় ফিউচার্।।

কবি গোলাম কবিরের কবিতা




মন খারাপের একলা দিনে 
গোলাম কবির
   
   মন খারাপের একলা দিনে
  খর রোদেও ঝুম বৃষ্টি নামে, 
  বুকের গহীনে তোমার জন্য 
  একবুক ভালবাসা নিয়ে কান্নার মেঘ 
  জমে বৃষ্টি হয়ে অবিরল ধারায় 
  ঝরতে থাকে আমার উঠোনে। 

   মন খারাপের একলা দিনে 
   তোমাকে নিয়ে কতো সুখস্মৃতি মনে পড়ে,
   বিরহের আকাশে ছাইরঙা মেঘ 
   উড়তে উড়তে হঠাৎ করেই 
   প্রচণ্ড ঝড় হয়ে নিভিয়ে দেয় দিনের আলো। 

   মন খারাপের একলা দিনে
   এবাদুল হক সৈকত ভাই এর বাদন
   শুনতে শুনতে একসময় কখন যে 
   ঘুমিয়ে পড়ি সোফার ওপর পা তুলে দিয়ে। 

   মন খারাপের একলা দিনে
   বুকের ভিতরে সন্ধ্যা নামে ভরদুপুরে, 
   শহরের সমস্ত অলিগলি জনশূন্য মনেহয়,
   রাস্তার মোড়ে মোড়ে একটানা 
  ভেউভেউ করে কান্না করতে থাকে 
   কয়েকটি কুকুর দলবদ্ধ হয়ে। 

   মন খারাপের একলা দিনে 
   আমার মন কেমন করে, 
   আমার মন কেমন করে,
   আমার মন কেমন করে!

কবি সুপর্ণা চ‍্যাটার্জ্জী 'র মুক্তগদ্য




আন্তর্জাতিক নারী দিবস

সুপর্ণা চ‍্যাটার্জ্জী



আজ এই বিশেষ দিনে সারা বিশ্বের সকল নারীদেরকে জানাই আমার পরম শ্রদ্ধা,শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। ভাবলে সত‍্যি অবাক লাগে, যে নারীগর্ভে আমার মায়ের জন্ম তিনি আমার দিদা।আবার যে নারীর গর্ভে আমার জন্ম তিনি আমার মা। আবার সেই আমার গর্ভে যার জন্ম সে তো আমারই কন‍্যা আর তার গর্ভে যার জন্ম সে আমার নাতনি। জীবনের এক এক ধাপে নারী এক এক নামে পরিচিতি।
      আবার বিবাহের পরে প্রথমে এই নারীই বৌমা,তারপর স্ত্রী,তারপর মা, দিদিমা নয়তো ঠাকুমা।এইভাবে চলে আসছে নারীর জীবন।কিন্তু তারই মাঝে এই নারী নিজেদের সীমিত গন্ডীকে এক বিরাট আকার দিয়েছে। দিদিমা,ঠাকুমা ও মায়ের কষ্টকর জীবনের গল্প ও চাক্ষুষ উদাহরণ থেকে নারী তার প্রতিবাদ্ জানাতে আর পিছপা হয় না।
   আজ তারা শুধু পুরুষের ভোগ‍্যবস্তু বা সন্তানের জন্মদাত্রীই  নয়। সংসার ছাড়াও তাদের একটা স্বাধীন জগৎ আছে। যেখানে তারা নিজ সংসার ছাড়াও নিজ সমাজের,নিজ রাজ‍্যের, নিজ দেশের ও দশের এমনকি সারা বিশ্বের দরবারে নিজেদের মূল‍্যবোধকে,নিজ যোগ‍্যতাকে সকলের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
     তবে এখনও বেশ কিছু সংখ্যক পুরুষতান্ত্রিক পরিবার আছে যেখানে নারী নিজেদেরকে অন্ধকার জগতে অলসের মতো কাটিয়ে দিতেই পছন্দ করে। নিজেদের অক্ষমতাকে নিজেদের পরিবারের নারীদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। 
    সুতরাং সব থেকে শঙ্কা ও বিষাদময় বিষয় হল তারা নারী হয়ে আসলে নারীদেরই বড় শত্রু। তাদের ধারণা মহিলারা নাকি বেশী শিক্ষীত হলে তারা মনোযোগ সহকারে সংসার করবে না।যদিও এটা তার শাশুড়ির কথা। আজও তিনি তাতেই বিশ্বাসী এবং এই যুগের নারী হয়েও যা সত‍্যই খুবই লজ্জার বিষয়।
   আসলে এগুলো একধরনের অশিক্ষা যার ঊর্ধ্বে নিজেকে পরিচালিত করতে সক্ষম হননি সেই সমস্ত নারী।তাই এটাই তার অজুহাত।তাই নিজের মেয়ে ও বৌমার ক্ষেত্রে তার একই মানসিকতা। তাঁর জীবনটা তিনি যে লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা সহ‍্য করে কাটিয়েছেন তিনি চান তার পরিবারের নারীরাও একইভাবে তার মতো দুর্বিষহ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই কাটাক। তার বাইরে তিনি নিজেও যাবেন না আর অশান্তি ও সমাজের ভয়ে তার বৌমাও মেয়েও যেতে পারছেনা। তাই এযুগের শিক্ষিত নারী হয়েও নিজেকে বিকশিত করতে ভয় পাচ্ছে।
      অদৃষ্টের এ কি পরিহাস! সে হয়তো তার মা বাবার আদরের একমাত্র কন‍্যা সন্তান যে মানুষ হয়েছে এক শিক্ষিত মধ‍্যবর্তী পরিবারে। যে পরিবারে তার মা একজন পুলিশ অফিসার,কি চাকুরেজীবী অথবা শিক্ষিকা।তাই তাঁরা আজও দুচোখে একটাই স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন যে কবে তাঁরা তাদের একমাত্র মেয়েকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দেখবেন।
    তাই শুধু আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করলেই হবেনা। নারীকে শিক্ষা দিতে হবে জীবনে আবেগবশত কোন ভুল না করে আগে নিজের পায়ে দাঁড়াও, তারপরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হও। তাদের যৌবন বয়সের সাথে সাথে বিভিন্ন আয়ের পথ প্রশস্ত করতে হবে উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি। তাহলে বোধহয় মোহবশত ভুল থেকে তারা বিরত থাকবে।য়
     নারীসমাজ সম্পূর্ণ শিক্ষিত না হলে পৃথিবীর আলো একদিন নিভে যাবে। সুতরাং আসুন নারী পুরুষ সকলে মিলে আমরা নারীজাতিকে শরীর ও মনের দিক থেকে ছোটথেকেই অনেকটা শক্ত করে গড়ে তুলি।যাতে সমাজের একজন নারীকেও চোখের জল মুছতে না হয় গোপনে।
     আরো একটা প্রধান বিষয় হলো প্রাথমিক স্তরে শিশুজীবনে প্রকৃত পঠন পাঠন যা শিশুমনকে বিকশিত করার পক্ষে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক সেই পদ্ধতিই অবলম্বন করা উচিৎ। সে কন‍্যা সন্তানই হোক বা পুত্রসন্তানই হোক। কখনই জোর করে গিলিয়ে দেওয়া অবৈজ্ঞানিক পঠনপাঠন একটা শিশুকে স্বাভাবিক ছন্দে বিকশিত হতে দেয় না। আর তা যদি করা হয় তার ফল ভোগ করবে তার নিজ পরিবার ও সমসাময়িক সমাজ।
     অর্থাৎ অধিক মাত্রায় অবৈজ্ঞানিক সিলেবাসের বোঝা শিশুমনকে ক্রমে ক্রমে দিশেহারা করে তোলে এবং হিংস্র করে তোলে। আর তার জন‍্যইতো সারা পৃথিবীতে এতো ক্রাইম বেড়েছে। যা কিনা অনেতকটা অতিমারির মতো। শিশুদের কোমল মনগুলোকে মেরে ফেলে ধীরে ধীরে নিষ্ঠুরতা, কুকর্ম ও অসৎ জীবনের প্রতি পিতামাতার অজান্তেই আকৃষ্ট করে যা কিনা বতর্মান সমাজের পক্ষে ভয়ানক  ক্ষতিকারক। 
      তাই নারীশক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে প্রথমে সুশিক্ষার প্রয়োজন। আবার সমাজের উপযুক্ত পুরুষের সহযোগিতাও একান্ত কাম‍্য। কারণ একজন নারী ছোট  থেকে তার পিতামাতার সান্নিধ্যেই প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। এখনও তাকে বহুদূর যেতে হবে তবে কখনই তা অহেতুক প্রকৃত পুরুষের  অসম্মান করে নয়,বরং তার সাথে বন্ধুত্ত্ব বজায় রেখে তাঁকে যথাযোগ‍্য সম্মান দিয়েই তা সম্ভব।
     সম্মান সবসময় অর্জন করে নিতে হয়।একজন পুরুষ খারাপ হলে তাদিয়ে সকলকে বিচার করাটা মস্ত ভুল। আর পৃথিবীর ভারসাম্য বজায় রাখতে নারী পুরুষ উভয়েরই প্রয়োজন। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে প্রতিটি নারীর উন্নতির পেছনে তার পিতা, কি ভাই,কি স্বামী,কি পরোপকারী কোনো বন্ধুর নীরব সহযোগিতা ও আত্মত‍্যাগ আছে। 
    শেষে বলি একজন নারীর মধ‍্যে সুবুদ্ধি,সুশিক্ষা,সহ‍্য,ধৈর্য‍্য ত‍্যাগ, বলিষ্ট শারীরিক ও মানসিক প্রকাশ ও সকলকে নিয়ে চলার একটা সুদৃঢ়  মানসিকতা অবশ‍্যই কাম‍্য।
    

কবি শোভা চন্দ এর এই সময়ের কবিতা




পাওয়া
শোভা চন্দ 

আমি তোমার কাছে কখনই মহান হতে চাইনি
হতে চেয়েছিলাম গোধূলিবেলা।
নিজেকে বোঝাবো বলে দুজনে নিস্পলক
ভাসিয়ে দিয়েছি গহন ভাষা।

তোমার কাছে সুধাংশু হতে চায়নি
শ্রাবণের বৃষ্টি হতে চেয়েছিলাম।
চেয়ে ছিলাম বৃষ্টি ধারায় ভেসে যাব।

কেন হবো?
কাল বৈশাখীর ঝড় হতেও চাইনি
শরতের শিউলি ধোয়া বাতাস হতে চেয়েছিলাম
সুখের ঘরে তাকে ধরে
বসন্তের পূর্ণিমা হবো ভেবেছিলাম।

তোমার কাছে কখনও অপরুপা হবো ভাবিনি
শুধু
নিজের ক'রে পেতে চেয়েছিলাম।

কবি সোমা বিশ্বাস এর এই সময়ের কবিতা




যুদ্ধ নামক বিলাসিতা আর নয় 
(রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে)
সোমা বিশ্বাস


মানুষের ভাঙছে হৃদয় বারবার
চারিদিকে শুধু ভয় আর ভয় প্রিয়ঘর প্রিয়জনকে হারাবার;
কোন সৈনিক যুদ্ধ যোগদানের আগে
হয়তো কেউ প্রেয়সিকে দিচ্ছে শেষ চুম্বনের মুগ্ধতায় অনুরাগে-
কোন শিশু হারাচ্ছে প্রিয়জনের হাত বা আঁচল
হচ্ছে যে উদ্বাস্তু কখনো ঝরছে অঝরে চোখের জল!
কালো ধোঁয়ায় ছড়াচ্ছে বাতাসে বারুদের গন্ধ;
চারিদিকে শুধু ধ্বংস আর ধ্বংস প্রাণ হাতে দম বন্ধ-
রাষ্ট্রনায়করা মেতেছে যে আবার যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়;
নিমেষে হয়তো শেষ হবে সব সৃষ্টি, অজস্র মৃত্যু ধারায়-
যুদ্ধ নামক বিলাসিতা ছেড়ে স্বৈরাচারী একটু মানবিক হন?
আর কত লোভ নিজেকে শক্তিশালী বলে দাদাগিরিতে সামিল মন?
একেতো করোনার ছোবল মানুষকে করছে গ্রাস আর নিঃস্ব!
বন্ধ করুন আপনারা যুদ্ধ খেলা বাঁচুক মানুষ, বাঁচুক মন সর্বস্ব।

কবি মিতা নূর এর এই সময়ের কবিতা



ছিল উচ্ছ্বাস

মিতা নূর 


ছিল উচচ্ছ...!
ছিল শংকায় ভরা  চুম্বন, 
ছিল হাসির জোয়ারে ভরা দুটি মন। 
ছিল রুদ্র পলাশ, সোনালী শিমুল, 
ছিল সজ্জিত চারপাশ কৃষ্ণচূড়ার লালে,
ছিল চতুর্দিকে সুবাস ছড়িয়ে হরেক রকম ফুলে। 
আজো ফাগুন আমায় মুগ্ধ  করে, হারাই নিজেকে, 
আছি শূন্য হৃদয়ে, তবু মিথ্যে হাসি মুখে  

কবি মমতা রায়চৌধুরীর এই সময়ের কবিতা




জাগ্রত হোক মানবিক বোধ
মমতা রায়চৌধুরী

মানুষের আগ্রাসী লোভে,
সহজ সাধারন জীবন
রক্তের বন্যায় ভাসে।
চোখমুখ ঢাকা নরপিচাশের দল
হিংস্র ওরা নেকড়ের চেয়েও।
তাই-
দম্ভ - অহংকারের লেলিহান শিখা
নামে আগ্নেয় পাহাড়ের মতো-
সবুজশস্য ,গোচারণভূমি 
নিরীহ প্রাণীর ওপর।
তবুও ওরা-
শিশুর শবের ওপর দাঁড়িয়ে হাসে-
নির্লজ্জ অমানুষিমন।
তাই প্রশ্ন রাখি বিবেক বাণী-
কেন অস্ত্র ?কেন বারুদ ?কেন রক্তপাত?
চেয়ে দেখো দূরে ওই বাজে
সুন্দরের আরাধনা।
সবুজ শস্য হাতছানি দেয় 
কৃষকের ঘরে ঘরে।
প্রেম প্রীতি ভালোবাসা
হাসে নতুন ভোর অপেক্ষমানে।
শুধু জাগ্রত হোক -
মানবিক মূল্যবোধ।
যুদ্ধ নয় ,হানাহানি নয় ,
বিরাজিত হোক-
 চির শান্তির বাতাবরণ।