২১ এপ্রিল ২০২২

মমতা রায়চৌধুরীর ধারাবাহিক উপন্যাস ১৫৮




উপন্যাস 

টানাপোড়েন ১৫৮
ওয়ার্কশপ ও ভদ্রলোক
মমতা রায়চৌধুরী



বাপরে বাপ আজ কালীনারায়নপুরের আগে এসে ট্রেনটা এতটাই লেট খাইয়ে দিল। যার ফলে কৃষ্ণনগর স্টেশনে পৌঁছে রেখা ছুটতে শুরু করল অটো ধরার জন্য ।ওয়ার্কশপের টাইম ছিল সাড়ে দশটা । স্টেশনেই10:30 রেখা অটোতে গিয়ে বসলো ।অটোওয়ালাকে তাড়া দিতে লাগল' দাদা একটু তাড়াতাড়ি চলুন না ।'
অটোওয়ালা বিরক্ত হয়ে বলল" এই আপনাদের দোষ দিদি। সারা দুনিয়ায় লেট হলে কিছু বলবেন না ।ট্রেন তো লেট ছিল ট্রেনের ড্রাইভারকে কিছু বলেছেন? বা ব্যাংকে গিয়ে লেট হয় ,ব্যাংকে গিয়ে তাড়া দেন ?হসপিটালে গিয়ে লেট হলে তাড়া
 দেন ?যত তাড়া আপনাদের আমাদের গাড়িতে উঠলে।
রেখা দেখল কথাগুলো বেঠিক কিছু বলছে না। তবুও বললো 'এমনি ,এমনি কি আর তাড়া দিচ্ছি বলুন ?ট্রেন লেট ছিল বলেই তো ,আমার ওয়ার্কশপে পৌঁছাতে লেট হয়ে যাবে,
 দাদা ।সেজন্যই।'
অটওয়ালা বলল 'তাহলে অন্য অটোতে যান।'
লেখা মনে মনে ভাবল কি চ্যাটাং চ্যাটাং কথা রে বাবা।
রেখা বললো ' দেখুন আপনার সঙ্গে আমি তর্কে যেতে চাইনা ।আপনি যেতে পারবেন না ব্যস ,এত কথা বলেন কেন ?তাছাড়া আপনি তাহলে লিখিত দিন যে আপনি অটো চালাবেন না ।আমি অন্য অটোতে গিয়ে বসি।'
অটোওইয়ালা এবার চুপ করে গেল । এবার একটু নরম সুরে বলল' আসলে দিদি আমি তো কয়েকজন প্যাসেঞ্জার নেব?'
'ঠিক আছে ,এই কথাটা তো আপনি ভাল ভাবে বলতে পারতেন ।এতগুলো অকারণ  বাজে কথা।'
মেজাজটা বিগড়ে গেল রেখার । কিন্তু কিছু করার নেই ,বসেই থাকতে হবে।
অন্য অটোতে গেলেও একই হাল  হবে আর তাছাড়া এদের তো আবার লাইন আছে।
কি করবে আর রেখা চুপ করে বসে রইল। লেট এমনিতে হয়েই গেছে ,যা হবে ,হবে।
অটোওয়ালা হাঁক তে লাগলো' ডন বক্স স্কুল,কলেজস্ট্রিট , নেদেরপাড়া , বেজি খালি…।'
আস্তে আস্তে প্যাসেঞ্জার হতে লাগলো এবার অটোওয়ালা গাড়ি স্টার্ট করল।
রেখা দুর্গানাম জপতে লাগলো ।
ডন বক্স স্কুল এর কাছে না এসে অটো বেশ খানিকটা দুরে দাঁড় করিয়ে দিল। বলল 'দিদি নেমে যান।'
রেখা বললl' আর যাবেন না?'
"না আর যাবে না?"
অটওয়ালা যেভাবে কথাটা বলল রেখার আর কথা বাড়াতে ইচ্ছে করলো না।
রেখা ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে দ্রুত হাঁটতে লাগলো। বুকটা কেমন ঢিপ ঢিপ ঢিপ  করতে লাগলো।
"তার কি একাই লেট হল?' রুমে ঢুকতে 
 লজ্জা করছে।
রেখা মনে মনে সাহস আনলো। লজ্জার কি আছে ট্রেন লেট থাকলে রেখার তাতে দোষ কী।
আবার পরক্ষণেই ভাবছে লাস্ট একটা সেমিনারে একজন লেট করে ঢুকছিলেন বলে অনেক কথা শুনিয়েছিলেন আর  পি।
সে কথাটা মনে হতেই ভেতরে ভেতরে আবারো প্যালপিটিশন শুরু হয়ে গেল।
রিসেপশনরুমে ঢুকেই স্কুলের নাম নিজের নাম এন্ট্রি  করল।
তারপর জিজ্ঞেস করল কত নম্বর রুমে ওয়ার্কশপ শুরু হয়েছে?
একজন বললেন দোতালায় 10 নম্বর রুম।
তারমধ্যে দেখা গেল আরও কয়েকজন তারাও ভুলে 10 নম্বর রুমে?
রেখা এবার মনে মনে একটু সাহস পেল তার একার লেট হয়নি।
এবার যেন তেজোদীপ্ত ভঙ্গিতে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগলো।
10 নম্বর রুমে কাছে গিয়ে বলল'আসবো?'
একজন তাকিয়ে হেসে বললেন 'আসুন।'
রেখা নিজের জায়গা বেছে নিয়ে বসলো।
এখনো শুরু হয়নি ভেবে রেখা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রুমাল বের করে ঘাম মুছতে লাগলো ।
অন্য কয়েকজন জিজ্ঞেস করলেন আসবো ?
ভদ্রলোক আবার হেসে বললেন 'আসুন ,আসুন।'
এবার ভদ্রলোকের দিকে তাকালেন এভাবে বলছেন । রেখাতাকিয়ে দেখছে তার চেনা পরিচিত পাশের স্কুলের মাস্টার মশাই ওই জন্য এরকম হাসছেন।
রেখানএবার খুশি হল।
ওয়ার্কশপটা ছিল কোভিদ সিচুয়েশনে স্কুল ছুটের সংখ্যা বেড়েছে তাদেরকে আবার কিভাবে স্কুলমুখী করা যায়। সে প্রসঙ্গে আলোচনা।
প্রথমে  গ্রুপ ঠিক করে দেয়া হল ।প্রতি গ্রুপে 5 জন 6 জন করে টিচার থাকবে।সেই গ্রুপ থেকে উক্ত বিষয়ের উপর একটা কাল্পনিক সার্ভে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হলো।তারপর সেই বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনা। সমস্যা ,সমাধান সিদ্ধান্ত এই তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া হলো।
প্রতি গ্রুপে নিজের নিজের গ্রুপ লিডার ঠিক করে নিল। সার্ভে রিপোর্ট করার পর একটা প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হলো।
আর সার্ভে রিপোর্ট করার পর টিফিন আওয়ার্স একটু বিরতি দেয়া হলো।
প্রত্যেকে মধ্যাহ্নভোজন পর্ব শেষ করে প্রতিবেদন সাবমিট করার কথা বলা হলো ।প্রতিবেদন সাবমিট করা হলে , সর্বপর্যায়ে একটা সিদ্ধান্তে আসা হলো ।এই সিদ্ধান্তের ওপর বেস করে নিজে নিজে স্কুলের ক্ষেত্রে সার্ভে রিপোর্ট তৈরি করা ,কতগুলো ছাত্র বা ছাত্রী স্কুলছুট হয়েছে ,তাদের একটা লিস্ট তৈরি করা ।দরকার হলে তাদের বাড়ীতে যাওয়া ,বাড়িতে গিয়ে গার্জেন কে বোঝানো ,স্টুডেন্টকে বোঝানো যে করেই হোক তাদের মোল্ড করে স্কুলে আনা।
এবং কতজন স্টুডেন্ট স্কুলে আনা যাচ্ছে, কতজন যাচ্ছে না ,সে বিষয়ে এস আই অফিসে সার্ভে রিপোর্ট পাঠানো।'
বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সব কিছু মিটতে মিটতে সাড়ে পাঁচটা বেজে গেল এদিকে ছটাতে ট্রেন আছে।
রেখা জিজ্ঞেস করল "ওয়ার্ক শপ কদিনের জন্য?'
" আজকের যে বিষয়টা ওপর ওয়ার্কশপ ছিল, তা আজকেই শেষ হয়ে গেল ।নেক্সট আবার ওয়ার্কশপ আছে ।সেটা প্রতি স্কুলকে জানিয়ে দেয়া হবে ।সেটা অন্য বিষয়ের উপর হবে।'
রেখা বলল ok
রেখার একটু সাহস করে বলল' এবার কী আমরা যেতে পারি ?আসলে আমাদের ট্রেন আছে তো (ঘড়ির দিকে তাকিয়ে।)
'হ্যাঁ ,হ্যাঁ আসুন আসুন ।ট্রেন মিস করলে অনেকটা সময় পর ট্রেন আছে ।আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আজকের ওয়ার্কশপে অ্যাটেন্ড করার জন্য।"
প্রত্যেকে এবার বেরিয়ে যাবার উপক্রম করলে উনি (আর পি)আর একবার বললেন 'শুনুন ,শুনুন আপনাদের জন্য একটা সার্টিফিকেট থাকবে, সেটা জানিয়ে দেয়া হবে কবে দেয়া হবে। আমরা স্কুলেও পাঠিয়ে দিতে পারি ।না হলে এই স্কুলে থাকবে ।আপনারা এসে কালেক্ট করে নেবেন।"
রেখা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল ওরে বাপরে অলরেডি 5:35 বেজে গেছে তাড়াতাড়ি সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগলো।
তার মধ্যে একজন ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন "আপনি ট্রেন ধরবেন?"
রেখা বলল ' হ্যাঁ'
ভদ্রলোক বললেন"ট্রেন ধরবো তো ,দেখুন ,এখন  সঙ্গে সঙ্গে সব জিনিস খেলে তবে তো ট্রেনটা পাবো ,না হলে মিস করলেই বুঝতে পারছেন?'
রেখা মনে মনে ভাবল বুঝতে পারছেনা তারপর বলল" হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন।'
ভদ্রলোক বললেন "ভালোই হলো দুজনে একসঙ্গে তাহলে অটো ধরতে সুবিধা হবে  ওরা তো আবার প্যাসেঞ্জার ছাড়া যেতে চায়না।"
রেখা বললো" ঠিকই। চলুন ,চলুন।"
গেটের কাছে আসতে দেখল একটা অটো দাঁড়িয়ে আছে অটো ওয়ালা কে বলল" স্টেশনে যাবেন?'
"হ্যাঁ যাবো ।"
রেখা ভালো করে অটোতে উঠতে উঠতে তাকিয়ে দেখল আয়নায় অটো ওয়ালার মুখ দেখা 
যাচ্ছে ।' এ তো যে অটোতে এসেছিল,সেই অটোওয়ালা। আর মনে মনে ভাবল এ কি আবার ভোগাবে নাকি?'
এরই মধ্যে ওই ভদ্রলোক বললেন' আপনি চলুন দাঁড়িয়ে রইলেন কেন?'
'কয়েকজন দেখি?''
'মানে আমরা ট্রেন পাব না বুঝতে পারছেন?
'আপনারা ট্রেনের একদম মুখোমুখি টাইমে আসবে আর বলবেন ট্রেন পাবেন না ।সে দায়িত্ব আমার নয়।"
রেখা এবার মুখ খুলে বলল 'আজকে জানেন দাদা আসার সময় উনার অটোতে এসেছি ,এই একই রকম কথাবার্তা।'
ভদ্রলোক বললেন 'আপনি মানুষের সুবিধার জন্য রয়েছেন তো , অসুবিধা হলে আপনার অটোতে লোকে যাবে কেন বলুন তো?'
"তাহলে নেমে যান।'
রেখা বললো 'দেখলেন কি মেজাজ !এদের 
দাদা ।চলুন ট্রেন পাব ,না,পাব, তবু এর অটোতে যাব না ।চলুন তো নেমে যাই।'
ঠিক বলেছেন' চলুন দেখি টোটো তে যাব।'
এরই মধ্যে এক টোটোওয়ালা হাঁকছে' স্টেশন স্টেশন ,ট্রেন ধরাবে দ্রুত।"
রেখা নামতে যাচ্ছে তখন অটোআলা বলল নরম সুরে 'আমি তো এক্ষুনি ছাড়বো।'
"তখন থেকে আমরা বলছি ছাড়ুন আপনি তো ছাড়ছেন না।"
এবার অটোওয়ালা স্টার্ট দিল তখন রেখা ঈশারায় ভদ্রলোককে বললেন "চলুন।'
এবার অটোআলা খুব দ্রুত ছোটালো এবং দেখা গেল যে ঠিক ট্রেন ঢোকার 5 মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছে গেল।
রেখা আর ভদ্রলোক ভাড়া মিটিয়ে দ্রুত হাঁটতে শুরু করল ।ঠিক তখনই অটোওয়ালা বলল "ট্রেনটা তাহলে ধরালাম তো দাদা ,দিদি?'
রেখা আর ভদ্রলোক পিছন ফিরে তাকালো না।
রেখা ভদ্রলোককে বলল 'দেখলেন এদের মেজাজ কত?'
ভদ্রলোক বললেন' যা বলেছেন। এদের মেজাজ লাটসাহেবকেও হার মানায়  ।দুজন হো ,হো ,হো ,করে হাসতে লাগলেন।'
ভদ্রলোক বললেন' ওই দেখুন দু'নম্বরে খবর হয়েছে। দ্রুত পা চালান।'
রেখা বললো' ও বাবা'।
ভদ্রলোক বললেন আপনি কি লেডিসে  উঠবেন?'
রেখা বলে "আমি তো লেডিসেই …
রেখার কথা সম্পূর্ণ না হতেই ভদ্রলোক বলেন "প্রতিদিন লেডিসে  ওঠেন ঠিক আছে,আজকে না হয় জেনারেল কম্পার্টমেন্টে উঠলেন গল্প করতে করতে যাব।
রেখা মনে মনে ভাবল তা অবশ্য ঠিক কারণ ডেলি প্যাসেঞ্জার যারা আছে প্রত্যেকে তো সাড়ে 4 টার ট্রেনে চলে গেছে একাই যেতে হবে।
রেখা একটু নিজের ওয়েট বাড়ালো তারপর বলল "আসলে আমি বরাবর লেডিসের উঠে অভ্যস্ত তো তাই কেমন একটু অস্বস্তি হয়। অন্য কম্পার্টমেন্টে  উঠতে।'
ভদ্রলোক আবার জিজ্ঞেস করলেন' চলুন না'।
রেখা আর কথা না বাড়িয়ে বগির কাছে আসতেই ভদ্রলোক বললেন ', আসুন, আসুন বলতে গেলে হাত ধরে টেনে তুললেন।'
কেমন একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো
 রেখা ।তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে পড়ল না উঠে উপায়ও ছিল না ।এমন জোরে হাত টেনে তুললেন ।এদিকে ট্রেন ছেড়ে দেবার হুইসেল বাজিয়ে দিলো।
ভদ্রলোক জায়গা পেয়ে রেখাকে জায়গা দিলেন এবং নিজেও জায়গাটা নিলেন।
"আপনি জানলার ধারে টা পছন্দ করেন 
তো "ভদ্রলোক বললেন।
রেখা অবাক হয়ে বলল" আপনি কি করে জানলেন?"
ভদ্র লোক হেসে বললেন' এগুলো তো জানা কথাই মেয়েরা স্বাভাবিকভাবে জানলার কাছে বসতে চায় ।পুরুষরা যে জানালার কাছে বসে না সেটা কিন্তু বলছি না। আসলে এখানে জানলার ধারে সিট পাওয়া গেছে ,অফার করা হচ্ছে ন্যাচারেলি আপনি জানলার ধার বেছে 
নেবেন ।কি রাইট ?আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন।"
রেখা বেশ ভদ্র লোকের কথায় মুগ্ধ হল।
"একদম ঠিক বলেছেন আমি জানালার ধার টাই নেবো।'
ভদ্রলোক বললেন "বসুন ,বসুন ,বসুন।"
এরমধ্যে ট্রেন ছেড়ে দিল ভদ্রলোক মুখিয়ে রয়েছে রেখার সঙ্গে কথা বলার জন্য ।ঠিক সেইসময় রেখার ফোন বেজে উঠল ।রেখা ফোনটা রিসিভ করে বললেন "হ্যালো"
"কে বলছেন,?"
"আমাকে চিনতে পারছেন না ম্যাডাম?"
"ও আপনি ?আসলে এখানে একটু কথা হচ্ছে তো আমি ভালো বুঝতে পারছিনা।"
"বলুন ।"
"শুভ সন্ধ্যা ম্যাডাম।'
"হ্যাঁ শুভ সন্ধ্যা।"
"আপনার লেখা রেডি তো?"
"হ্যাঁ পুরোটা হয়নি।'
"কেন ম্যাডাম এনার্জি পাচ্ছেন না।"
ঠিক তা নয়। আসলে গতকাল একটা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, ফলে ফিরতে দেরি হয়েছে। আর আজকে আবার একটা ওয়ার্কশপ থেকে ফিরছি। সেই জন্য ।ঠিক আছে ,আমি বাড়ি গিয়ে দেখছি।"
"ঠিক আছে, তাহলে আর কথা বাড়াবো 
না ।আপনি সাবধানে আসুন।"
পাশের ভদ্রলোক রেখার দিকে' মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন "আপনি লেখালেখি করেন?
আমি একজন লেখিকার সঙ্গে যাচ্ছি।'
রেখাএকটু মুচকি হাসল।
ভদ্রলোক বিশ্বাসের সঙ্গে বললেন"আপনার কন্টাক্ট নাম্বারটা দেয়া যাবে?"

Vghh

LOVE

কবি আইরিন মনীষা  এর কবিতা "বেদনার বালুচরে"





বেদনার বালুচরে
আইরিন মনীষা 

বেদনার বালুচরে আছি একাকী 
বেঁচে থাকা দায়
ভালো থাকার আয়োজনে নেই
আর  কোনো সায়।

ভাঙা মনে নেই আজ
আর কোনো শান্তি
ফেলে আসা দিন যেনো
শুধুই এক ভ্রান্তি।

সুখ পাখি রয়ে গেলো
এখনো সেই অধরা
ক্লান্ত শ্রান্ত মনে  তাই
নেই শান্তির  পসরা

দিন যায় রাত আসে
চোখে নেই ঘুম
ফেলে আসা দিনে যেনো 
স্মৃতি কথার ধুম।

আশা নেই তবু দেখি
স্বপ্নের এক ভোর
খুলে যদি কভু আবার
খুশি মাখা দোর।

কবি অনিক রায় এর কবিতা "বাক্সবন্দি  চিঠিগুলো"




বাক্সবন্দি  চিঠিগুলো
অনিক রায় 

১.
আমি দেয়ালে কার কপাল ভেবে চুমু খাই 
ঠোঁট ভ'রে যায় চুনে 
আমার একাকিত্ব, তুমুল হেঁসে হেঁসে শেষে ম'রে যায়
আমার কার্যকলাপ শুনে।

২.
আমার রক্তের ফেনায় না-পাওয়ার ক্লেদ 
শহরের শেষ রাত্রির অলিগলির মতো ব্যর্থ শূন্যতা।

৩.
কালো চোখের জল যাবি আর কোথা বল
আমার নরম দুই গাল ছেড়ে !  
যেদিকেই দৌড়ে যাই লুকাতে পারি নাই 
দুঃখরা ধেয়েছে আমাকে তেড়ে ।

৪.
জীবনানন্দ আমাদের চোখের সামনে 
বাদামের ঠোঙা হয়ে যাচ্ছেন।

৫.
আমার গোটা জীবন তার খসড়া খাতা ছিল তাই
হিসেব নিকেশ শেষে আমি কাগজের দরে 
কারওয়ান বাজারের ফুটপাতে বিক্রি হয়ে যাই।

৬.
মৃত্যু এসে বুকের কপাটে যদি কোনোদিন কড়া নাড়ে, 
পাঁজরের ভেতরে ইরারে ছাড়া সে পাবে আর খুঁজে কারে !

৭.
স্বর্গের সব অপ্সরীদের অবহেলায় রাখতে পারি 
এমনকি ত্রিলোকশ্রেষ্ট-সুন্দরী উর্বশীকেও দ্বিধাহীন, 
কিন্তু একটিবার তোমাকে না দেখিলে নারী 
নতুন নতুন মৃত্যুতে আমি ম'রে যাই প্রতিদিন।

৮.
আমার মতো ক'রে বুক কাঁপানো নিভৃতে অন্ধকার;
মোম জ্বেলে দেখেছি কি কেউ ইরার—
রক্তকরবীর মতো তাজা টকটকে লাল চোখ আর ?

শামীমা আহমেদ এর ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ৯৫





ধারাবাহিক উপন্যাস 


শায়লা শিহাব কথন 
অলিখিত শর্ত (পর্ব ৯৫)
শামীমা আহমেদ 

শায়লাদের বাড়ির মুখোমুখি "স্বপ্নবাড়ি" এপার্টমেন্টের সামনে এসে  শিহাব তার বাইক থামালো। স্টার্ট  বন্ধ করে বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে  শিহাব মোবাইলটা  হাতে নিলো। বেশ অনেকটা সময় যাবৎ মোবাইল দেখা হয়নি। অন করতেই, আজ সন্ধ্যা থেকে রাহাত আর শায়লার এতগুলো  মিসড কল দেখে সে ভীষণ অবাক হলো ! বিকেল থেকেই তার মোবাইলে একেবারেই চার্জ ছিল না।আর দোতালার হাসান সাহেবের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত থাকায় চার্জে দিতেও দেরি হয়ে গিয়েছিল। শিহাব এর জন্য ভীষণ আফসোস  করতে লাগলো! কি জানি  কেন ওরা এত কল করেছিল ? তাহলে বাসায় কি অন্যরকম  কিছু ঘটেছে ? শায়লা কি তবে নোমান সাহেবকে মেনে নিতে না পেরে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে ? সে কি তবে আমাকে খুঁজেছে ?শায়লাতো আমার বাসা চেনে সেখানে চলে এলেইতো হতো। বিল্লাল তাকে ঘরে বসাতে পারতো ।  বিল্লালের কাছে তো ফ্ল্যাটের  চাবি দেয়া আছে। তবে কি  রাহাতও শায়লার খোঁজ পেতে তাকে এতবার কল করেছিল ? শিহাবের মনে নানান প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে আর পাশাপাশি নিজের উপর ভীষণ রাগ লাগছে। তারই জন্য  বারবার শায়লা তার কাছে এসেও ফিরে যাচ্ছে। শিহাব দেখল এতরাতে চারপাশে সুনশান নীরবতা। শিহাব একাই রাস্তায়  দাঁড়িয়ে আছে। যে কোন সময় টহল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জেরার মুখে পড়তে পারে কিন্তু শিহাব তার জন্য একেবারে ভীত নয়। সে ভাবছে শায়লা বা রাহাতকে কি এত রাতে কল ব্যাক করবে ? কিন্তু  শায়লা এখন যদি তার বাসায় থাকে। হয়তো তার স্বামীর সাথে থাকবে। আর অন্য কোথাও  গেলে সেটাও জানতে হবে।শিহাব ভাবনার কোন কূলকিনারা করতে পারছিল না।  একটু পরে শিহাব মোবাইল থেকে মুখ তুলতেই দেখতে পেলো শায়লাদের দোতালা বাড়িটি  নানান রঙের বাতিতে লাইটিং করা হয়েছে । সে এতক্ষণ  একেবারেই এসব খেয়াল করেনি। শায়লাদের বাড়ির মেইন গেট বিয়ে বাড়ির মত করে সাজানো হয়েছে। শিহাব বুঝে নিলো বর আগমনের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতিই নেয়া হয়েছে।আর হবেই বা না কেন ? বাড়ির বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা !  সবার মাঝে তো আনন্দ থাকা স্বাভাবিক । সুদূর কানাডা থেকে বড় জামাই আসছে। অবশ্যই তাকে সর্বোচ্চ সন্মানিত  করা হবে। শিহাব তার সাথে নিজেকে তুলনা করে ভাবলো তার হয়তো এই মূহুর্তে  বিদেশ যাবার কোন প্রস্তুতি  নেই তবে শায়লাকে আর আরাফকে নিয়ে তারা কোনদিন বিদেশে কোথাও তো বেড়াতে যেতেই পারতো। এমন রঙিন ভাবনা মনের ভেতর খেলে গেলেও শায়লাকে না পাওয়ার উৎকন্ঠায় তা যেন ম্রিয়মাণ হয়ে গেলো। শিহাব  এবার মনস্থির  করলো, যা-ই হউক না কেন, সে এক্ষুনি  শায়লাকে কল দিবে। যদি সে তার স্বামীর সাথেও থাকে তবুও। প্রয়োজনে তার স্বামীকে জানাতে হবে, শায়লা আর সে দুজন দুজনকে  ভালবাসে। উনি চাইলেই তাকে কানাডায় নিয়ে যেতে পারেন না। এমনটি ভাবতেই হঠাৎ  শিহাব দেখলো একটা ছায়া তার দিয়ে ধেয়ে আসছে।  ছায়া থেকে উপরে মুখ তুলতেই শিহাব দেখলো একটা ছেলে রাস্তার ওপাশ থেকে ক্রস করে আসছে।মুখটায় আলো না পড়াতে  ঠিক বুঝা যাচ্ছে না কে ওমন করে দৌড়ে  আসছে।কিছু পরেই ছায়াটা তার কাছে আসতেই মুখটি স্পষ্ট হলো। শিহাব ভীষণ চমকে গেলো !  আরে এ যে রাহাত! কিন্তু  সে এমনভাবে দৌড়ে আসছে কেন ? 
কি এমন হয়েছে ? এখনতো তার আপু আর নতুন দুলাভাইকে নিয়ে আনন্দে সময় কাটানোর কথা! রাহাত এখন একেবারেই কাছে চলে এলো। রাহাত শিহাবের সামনে এসে দাঁড়িয়ে  ভীষণ ভাবে হাঁপাতে লাগল। কিছুটা সময় নিয়ে বললো, শিহাব ভাইয়া আপনি মোবাইল কল রিসিভ করছে না কেন ? আমি আর আপু আপনাকে সেই সন্ধ্যা থেকে কল করে যাচ্ছি।ফোন বন্ধ রেখেছেন কেন ? কি হয়েছে আপনার ? আরাফ কেমন আছে ? আপু আপনাকে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা করছে । কোথায় ছিলেন সারাদিন ? এখানে কখন এসেছেন ? শিহাব রাহাতের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে রইল। রাহাত উত্তর শোনার জন্য অপেক্ষা না করে একের পর এক  প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। শিহাবও যেন  উত্তর দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তার ভাবনায় সে কিছু বলার মত উত্তর আসছে না। কেবল ভাবছে কেন এত হন্যে হয়ে দুই ভাইবোন তাকে খুঁজছে ? শিহাবের ভেতর থেকে অস্ফুট স্বরে কিছু একটা বেরিয়ে এলো, কেন, কেন তোমরা আমাকে এমন করে খুঁজছো ? শায়লার কি কিছু হয়েছে ?  শিহাবের মন অজানা আশংকায় ভীত হয়ে উঠলো !  তবে কি শায়লা আত্মহত্যা !  না,না,ছিঃ  এসব কি ভাবছে ? 
এবার রাহাত বলে উঠলো, আপুর কি হবে?আপু ভালো আছেন। শিহাব যেন একটু আশ্বস্ত হলো।রাহাত শিহাবকে সহজ করতে বললো, আপনার কোন  সাড়া না পেয়ে আপু একেবারে  অস্থির হয়ে আছে। নানান দুশ্চিন্তা করছে। শিহাবের ভেতরে একরাশ অভিমান জমা হলো। অনুযোগের সুরে বললো, এখন
তোমার আপু আমাকে নিয়ে কেন ভাববে ? তোমার আপুরতো এখন আর, আমায় নিয়ে, ভাবনায় ডুবে থাকার কথা নয়।
রাহাত খুব বুঝতে পারলো, শিহাব ভাইয়ার এই অভিযোগের তীর তারই প্রতি ছুড়েছে।রাহাত আজ সবই মেনে নিবে। এমন করে শিহাব ভাইয়াকে পেয়ে যাওয়া! এ যে সৃষ্টিকর্তার অসীম দয়া। রাহাত প্রতিটা ক্ষন অনুশোচনায় পুড়েছে। আজ তার কারণেই ঘটনাটা এত জটিলতায় এসে দাঁড়িয়েছে।  কিন্তু রাহাত এটা-ই ভীষণ অবাক হয়েছে কেমন করে নোমান সাহেবের কানাডা থেকে না আসা আশ্চর্যজনক ভাবে সবকিছু পালটে দিলো। সে শিহাবকে বললো, শিহাব ভাইয়া, এখানে না, আপনি বাসার ভেতরে চলুন। আপা, আপনার জন্য অপেক্ষায় আছে । শিহাব বুঝতে পারছে না,  এখন কেন সে ভেতরে যাবে ? বাড়িতে নতুন জামাই এসেছে। তার সামনে এভাবে তাকে নিয়ে যেতে চাইছে ! নাকি, শায়লা তার জন্য নোমান সাহেবকে গ্রহণ করায় সম্মতি দিচ্ছে না। নাকি, আমি গিয়ে বুঝালে শায়লা তাকে গ্রহণ করে নিবে।আজ রাহাতের এই ভিন্ন আচরণে শিহাব কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না।  যেখানে, এই রাহাত তাকে এড়িয়ে সবকিছু করেছে । আবার আজ কোনো ট্রিকি গেম খেলছে নাতো ? নোমান সাহেবের কাছে নিয়ে তাকে 
অপমানিত করবে নাতো? শিহাব নানান ভাবনায় স্থির হয়ে রইল। কিন্তু  রাহাতের যেন আর ত্বর সইছে না।  পরক্ষনেই সে ভাবলো এখন যদি শিহাব ভাইয়াকে বলা হয় নোমান সাহেব আসেননি এখন আপনার সাথে আপুর বিয়ে হবে। এই কথাটিতে শিহাব ভাইয়া  আমাদের অন্যরকম ভাববে।  তবে যে করেই হউক, এবার আপু আর শিহাব ভাইয়াকে  মিলিয়ে দিতে হবে।মিথ্যে করে কিছু বলে হলেও তাদের চার হাত মিলিয়ে দিতে হবে। রাহাত তাই নোমান সাহেবের বিষয়টি এমনভাবে শিহাবকে জানালো, যেখানে আর কথার মাঝে কোন  ফাঁক রইল না।সে এবার মুখ ফস্কে  বলেই ফেললো,কানাডা থেকে নোমান ভাইয়া আসেননি,মানে আপু  তাকে আসতে নিষেধ করে দিয়েছে। সে জানিয়েছে, আপনাকে সে ভালবাসে, সে আর কাউকে গ্রহন করবে না। কানাডা যাবে না। কথাটিতে শিহাবের কেমন যেন খটকা লাগলো, সে রাহাতকে বললো,কিন্তু আমি তো জানি উনি ফ্লাইটে উঠে গিয়েছিলেন। রাহাত তৎক্ষনাৎ বুদ্ধি বাৎলে বললো,না, বাসার সবাইকে সান্ত্বনা দিতে এটা বলেছিলেন। উনি আসলে ফ্লাইটে উঠেননি। 
এবার রাহাত শিহাবকে আর কোন সন্দেহের প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে একেবারে খপ করে শিহাবের হাত ধরে ফেললো,  খুবই বিনীতভাবে বললো, শিহাব ভাইয়া আমার জন্যই আপনাদের এত ঝামেলায় পড়তে হয়েছে।আমি এর জন্য দুঃখিত।আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আপনি ভেতরে চলুন। আপনার বাইক স্টার্ট দিয়ে বাসার কাছে নিয়ে আসুন। এখন অনেকরাত।এরপর বাইরে থাকলে আপনার আমার  অন্য ঝামেলায় পড়তে হবে। 
রাহাত এবার ওদের বাসার ছাদের দিকে তাকালো। দেখলো,বুবলী তেমনি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখেমুখে বিস্ময়! কি হচ্ছে এসব! দূর থেকে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। ঐ লোকটি কে ? যার সাথে রাহাত এত কথা বলছে ? আবার তাকে হাত ধরে অনুরোধ করছে ? এবার রাস্তা থেকে বুবলীর ফোনে রাহাতের কল এলো, বুবলী তা রিসিভ করতেই  রাহাত যেন  খুশির আবেগে কিছুই বলতে পারছিলো  না। বুবলী জানতে চাইল, রাহাত ভাইয়া কী হয়েছে ?  ঐ লোকটি কে ? 
রাহাত এবার নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, আরে এটাই শিহাব ভাইয়া! তুমি শায়লা আপুকে জানাও শিহাব ভাইয়া এসেছে। বাসার সবাইকে জাগিয়ে তোল।আমি এখুনি শিহাব ভাইয়াকে নিয়ে বাসায় আসছি। বুবলী ভাবলো এও কি সম্ভব! তবে অসম্ভবও কিছু নয় ! যেভাবে শায়লা আপু শিহাব ভাইয়ার জন্য ভেঙে পড়েছে আর এত রাতে শায়লা আপুর জন্য যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, তাদের দুজন দুজনকেই তো পাবে। এ এক দারুণ হৃদয়টান! বুবলীর মনের ভেতর পুলকিত হলো! সে দেখলো, বেশ হ্যান্ডসাম একজন লোক, উনিই তাহলে শিহাব সাহেব ! প্রথম দেখায় যে কেউ এমন লোকের প্রেমে পড়বে। তাইতো শায়লা আপু এত প্রেমে ডুবেছে।লাইটপোস্টের ঝকঝকে আলোতে দেখা যাচ্ছে নেভি ব্লু চেক শার্টে বেশ ক্যাজুয়াল পোষাকে কিন্তু বেশ স্মার্ট লুকের একজন মানুষ বাইকে স্টার্ট  দিচ্ছে। রাহাত তার খুব কাছে একেবারে লেপ্টে দাঁড়িয়ে আছে। যেন কিছুতেই হাতছাড়া  হয়ে না যায় ! রাহাতের কান্ড দেখে বুবলীর বেশ হাসি পাচ্ছিল। পরক্ষণেই ভাবলো, হবেই বা না কেন ? রাহাত ভাইয়া তার নিজের ভুলের জন্য যেভাবে বারবার নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছিল। সেই ভুলের সংশোধনের জন্য এটুকুতো করতেই হবে। যেন সে  শায়লার কাছে পণ করেছে, শিহাব ভাইয়াকে পাইয়ে দেয়ার।
বুবলী  দোতলায় নামার জন্য  পিছন ঘুরতেই দেখতে পেলো শায়লার হলুদের স্টেজটা  নানার রঙিন ফুলে যেন হাসছে ! বুবলী কল্পনায় সেখানে শায়লা আর শিহাবকে দেখতে পেলো যেন ! বুবলী নিজের মনের এমন ভাবনায় নিজের মনেই হেসে উঠলো ! সে ভাবলো, শায়লা আপুকে এক্ষুনি খবরটা দিতে হবে। সে  মুচকি হেসে , সিঁড়ি দিয়ে গটগট করে দোতলায় নেমে এলো। সে শায়লার ঘরের দরজায় বেশ অনেকবার নক করেও শায়লার কোন সাড়া না পেয়ে চিন্তিত হলো। বাড়ির সব লোকজন গভীর ঘুমের অতলান্তে। বুবলী বেশ অনেকটা সময় দরজায় নক করে হাতের মোবাইলের দিকে খেয়াল হলো। সে কন্ট্যাক্ট লিস্টে শায়লার নাম্বার খুঁজে নিয়ে শায়লাকে কল করলো। কিন্তু একের পর এক কল বেজেই যাচ্ছে। শায়লা কল রিসিভ করছে না। শায়লা কী ঘুমিয়ে না অন্যকিছু ? বুবলী ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলো। 
চলবে....